#দুখীফুল
#আফসানা_মিমি
#পর্ব_১২
আদিল রাতেই সাগরিকাকে নিয়ে বের হয়ে গেল। আগামীকাল তার স্টুডেন্টের বিয়ে। আদিলও বিয়েতে অংশগ্রহণ করবে। সাগরিকার বাবার বাড়িতেই থাকবে। সাগরিকা চলে যাওয়ার আগে ফুলের কাছে আসলো। ফুল তখন তার শাশুড়ির সাথে বসে ছিল। সাগরিকা এসে বলল,” যাই গো, ফুল। তোমার জিনিসপত্র পাশের ঘরে রেখে এসেছি।”
ফুল প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকাল। ফুলের শাশুড়ি বলতে শুরু করল, ” আমি তোদের অনুষ্ঠান করে আবার তোদের বিয়ে দিব।”
ফুল বলল,” এতো ঝামেলা করার কী প্রয়োজন? ”
” প্রয়োজন, অপ্রয়োজন বুঝি না। তোরা আমার বাড়িতে পূর্ণ মর্যাদা পেয়েই আসবি।”
ফুল কী বলবে ভেবে পেল না। এমনও কপাল কোনো মেয়ের হয়! ফুলের তো এখনো বিশ্বাস হয় না, সে এতো ভাল শ্বশুর বাড়ি পেয়েছে। মনে হয়, স্বপ্ন দেখছে। আবার মনে হয়, তার দুঃখময় শেষ হয়ে সুখের সময় চলে এসেছে। ফুলকে বিদায় জানিয়ে সাগরিকা চলে গেল। ফুল বাড়িতে একা রয়ে গেল। ফুল, তার শাশুড়িকে বিশ্রাম নিতে বলে চলে আসলো। সিঁড়ি ডিঙিয়ে উপরে উঠে প্রথমে শুভর ঘরে গেল কিন্তু ফুলের বাবু বরকে পেল না। ফুল লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল। আজ তার সবকিছু থেকেও একা লাগছে, ভীষণ একা।
ফুলের ঘরটা খুব পরিপাটি করে সাজিয়ে দিয়েছে সাগরিকা। ব্যাগের জামা কাপড় ব্যতীত সবকিছুই গুছিয়ে দিয়েছে সে। আলমারি খুলে ফুল জামাকাপড় গুছিয়ে নিল। ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেতেই ফুলের চোখ শিউলিফুলের মালার দিকে গেল। মুহূর্তেই ফুলের মুখে হাসি ফোটে উঠল। শিউলি ফুলের মালা নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে দেখল, ফুলের নিচে একটা চিরকুটও আছে। সময় অপচয় না করে ফুল পড়া শুরু করল,
শিউলি ফুল
শিউলির সাথে কিন্তু তোমার নামটাই যুক্ত করেছি। ভেবো না, ফুলের জাতকে সম্মোধন করেছি। বাইকে বসে দেখলাম, আমার বাবার বানানো প্রাচীরের দিকে তোমার কোনো মনোযোগ নেই। তোমার মনোযোগ অযত্নে বড়ো হওয়া শিউলি গাছের দিকে। একজন মানুষ তখনই বিশেষ ফুলের দিকে আকৃষ্ট হয় যখন সেই ফুল তার পছন্দের হয়। চটকরে বুঝতে পারলাম, শিউলি ফুলের রাণীই আমার ঘরের রাণী।
এই ফুল, আজ কী হয়েছে জানো? হাসপাতালে একজন বৃদ্ধা মহিলা পথ হারিয়ে ফেলেছিল। আমি সেই দাদীকে পথ দেখিয়ে দেই। দাদী তখন খুশি হয়ে কী বলেছে জানো! বলেছে, আমি নাকি অনেক ভাল স্বামী হব। তোমারও কী তাই মনে হয়?
আমার দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ তোমার জন্য রেখে দেই। সেই সময়ে তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো ভাবি, তোমাকে চিঠি লেখি। কিন্তু আজকের পর থেকে নিয়ম পাল্টে যাবে। তুমি খরগোশের বাচ্চার মতো চোখের সামনেই ঘুরঘুর করতে থাকবে। আমি তো আর ইতিহাসবিদ না যে, সারাদিনের প্রতিটি মুহূর্ত নিয়ে ইতিহাস গড়তে যাব!
ফুল, ওপরওয়ালা যেহেতু আমাদের এক করেছেন। আমাদের উচিত আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার। পড়াশোনা করে আমাদের সমাজের মানুষদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিতে হবে। এই যে, তোমাকে এখন চিঠি লেখছি, আমার পরবর্তী কাজ কী জানো? পড়তে বসা।
আমার ঘরের পড়ার টেবিলের উপর এখন দুইটা চেয়ার রাখা আছে। আমি চাই, তুমি আমার সাথে পড়ো। আমরা পড়ব আর অল্প অল্প কথা বলব। কি রাজি?
সন্ধ্যা থেকে শিউলি ফুলের মালা বানাতে বসেছি। তুমি জানো, আমার এত বছর বয়সে কখনো সুই সুতায় হাত লাগাইনি। আমার কেনো যেনো তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করতে হচ্ছে করে। আমার তো মনে হয়, তুমি যদি সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড় করে কিছু আনতে বলো সেটাও এনে দিতে পারব। তোমার মুখে আলাদা এক মায়া আছে, ফুল। এরজন্য আজ তোমার আরেকটা নাম দিলাম ‘মায়াফুল’
তোমার পছন্দের প্রশংসা করতে হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, শিউলি ফুলের ঘ্রাণ আমার সারা শরীরে ছড়িয়ে গেছে। একবার ভাবলাম, গোসল সেড়ে নেই। পরে মনে হল, শিউলি ফুলের মালা তোমার কাছে পৌঁছালে যেই ঘ্রাণ থাকবে আমার গায়পও সেই ঘ্রাণ থাকবে। দুইয়ে দুইয়ে মিলে এক হয়ে গেল না!
এখন আমি পড়তে বসবো। তোমারও পড়াশোনা করা উচিত। কি ভেবে আমার ঘরে থাকলে না, জানি না। তবে তোমার জন্য আমার ঘরের উহু ঘরের নয় মনের দরজা খোলা।
আজও কাঙ্খিত নামে ডাকলাম না। অসুস্থ ছিলে তো! তোমার রোগা রোগা চেহারার সাথে নামটা যাবে না।
ইতি
এক নতুন ফুলের বর
সময় নষ্ট করা ভাল না। ফুলও সময় নষ্ট করল না। খুশিমনে শুভর ঘরের দিকে চলল। শুভ হয়তো ফুলের জন্য অপেক্ষা করছিল। চোখ পড়ার টেবিলে থাকলেও দরজার দিকেই মনোযোগ ছিল তার। ফুলকে দেখে হেসে বলল,” এসেছো? চলো, ইংরেজি রচনা পড়ি।”
——————–
ফুলের শ্বশুর বাড়ির মধ্যে তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হয়ে গেল শিউলি ফুলের গাছের নিচে। সকাল সকাল ফুলের ঘুম ভেঙে গেলে শিউলি ফুলের গাছের কাছে চলে আসলো। লম্বা লম্বা ঘাসের উপর ফুল পড়ে আছে। ফুল খুশিতে গদগদ হয়ে ফুল কুড়াতে শুরু করল। ওড়না ভরে ফুল নিয়ে তবেই থামল। ঘাসের ওপর বসে ফুলগুলো ছুঁয়ে দিতে দিতে গতকাল রাতের চিঠির কথা মনে পড়ে গেল। ফুল লাজুক হেসে বাড়ির দিকে তাকালে এলোমেলো অবস্থায় শুভকে এদিকেই আসতে দেখল। দেখে মনে হচ্ছে, ঘুম থেকে উঠেই ফুলকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলে এসেছে। শুভ চোখ কচলে ধপ করে দূরত্ব রেখে ফুলের পাশে বসে পড়লো। হাই তুলে দুইহাত উপরের দিকে তুলে ডানে বামে দুই তিনবার বাঁকাল। ফুল সবটায়ই লক্ষ্য করে বলল,” মনে হচ্ছে, ঘুম হয়নি। আরেকটু ঘুমিয়ে নাও।”
শুভ ঘুম জড়ানো সুরে উত্তর দিল,” স্বপ্ন দেখছিলাম, তুমি পালিয়ে গেছো। সত্যি কী না যাচাই করতে তোমার ঘরে গেলাম। এক মুহূর্তের জন্য মনে হল, সত্যি সত্যিই আমার অ’ত্যা’চা’রে অতিষ্ঠ হয়ে চলে গেছো।”
ফুল অবাকের সুরে প্রশ্ন করল,” কখন অ’ত্যা’চা’র করলে?”
শুভর গলার স্বর পরিষ্কার করল। ফিসফিস করে বলল,” তুমি যা ভাবছো তা নয়। আমি কিন্তু অন্যকিছু মিন করিনি।”
কথাটা বলে শুভ নিজেই হা হা করে হাসতে লাগল। ফুল শুভর কথা বুঝতে পেরে লজ্জা লাল নীল হল। শুভ আবারো বলল,” তুমি হলে অস্থিরতায় আচ্ছান্ন ফুল। সারাক্ষণ মনের মধ্যে অস্থিরতা চেপেই থাকে। কখনো স্থির চাহনি দেখার সৌভাগ্য হবে বলে মনে হচ্ছে না।”
ফুল মিনমিন সুরে বলল, ” ঘরে যাব।”
শুভ নাকচ করে বলল,” একদমই না। আমার তোমার সাথে গল্প করতে ইচ্ছে করছে।”
বকশি কাকা মাত্রই প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করল। ফুল ও শুভকে বসে থাকতে দেখে আওয়াজ করে শুধাল,” বাবু, বাজারে যাবে?”
ফুল ফিক করে হেসে ফেলল। নিচু সুরে আওড়াল,” বাবু, ফিটার খাবে?”
কথাটা বলে আবারো কিটকিটিয়ে হাসতে লাগল। শুভ নাক ফুলিয়ে ফুলকে এক পলক দেখে বলল,” আজ যাব না, কাকা। তুমি গেলে আমার জন্য মজা নিয়ে এসো।”
ফুল এবার নিজের হাসিকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। খিলখিল করে হাসতে লাগল। তর বাবু বর এতোটা আদুরে যে, ফুলের তো মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে গালদুটো টেনে দিতে। শুভ মাথা চুলকে ফুলের হাসি দেখতে লাগল। ফুলের হাসি থামার নামও নিচ্ছে না দেখে শুভ বলল,” হয়েছে তো! এবার হাসি থামাও, ফুল! আমার মনে কেমন ভয়ংকর ইচ্ছে জাগছে।”
শেষের কথাটা বিড়বিড় করে বলার কারণে ফুল শুনতে পেল না। সে হেসেই বলতে লাগল,” বাবুর জন্য বাজার থেকে কী মজা আনা যায়!”
শুভ শিউলি ফুল, ফুলের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল,” আরেকটা বউ।”
ফুলও শুভর দিকে ফুল ছুঁড়ে দিল। হাসির ছলে বলল,” আরেকটা আসলে জানে মে’রে ফেলব।”
শুভ ফুল ছুঁড়া বন্ধ করে অবাক হয়ে বলল,” তুমি তো বেশ বিপজ্জনক মেয়ে, ফুল!”
ফুল উঠে দাঁড়াল। শুভর মাথার উপর সবগুলো শিউলি ফুল ঢেলে বলল,” বাবু বর, শুধু আমার বাবু বর। অন্য কোনো মেয়েকে কাছেও ঘেঁষতে দিব না।”
ফুল হেসে দৌড়ে পালাল। শুভ কথাটা বুঝতে পেরে পিছু দৌড়াতে লাগল। সকাল সকাল একজোড়া চড়ুই পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ পেয়ে সবার ঘুম ভাঙল।
————-
পরেরদিন,
আজ ফুলদের কলেজের নবীন বরন অনুষ্ঠান। খুব ভোরে শুভ পা টিপে টিপে ফুলের ঘরে আসলো। ফুল তখন গভীর নিদ্রায় শায়িত ছিল। দরজার নব ঘোরাতেই দরজা খুলে গেল। শুভ আশ্চর্য হলো। বিড়বিড় করে বলল,” তোমার আরেকটা নাম যুক্ত করলাম, বোকা ফুল।”
ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দিতেই ফুল চোখ মুখ কুঁচকে নিল। চোখের উপর এক হাত রেখে আবারো ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো। শুভ অবাক হল। মেয়ে মানুষের এতো ঘুম ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল। শুভর হঠাৎ চোখ গেল ফুলের ঠোঁটের দিকে। শুষ্ক ঠোঁট জোড়ায় মাত্রই ফুল জিভ ছুঁয়েছিল। শুভর তখন হাসফাস রোগটা আবার দেখা দিল। বুকের বাম পাশে হাত বুলিয়ে বিড়বিড় করে বলল,” কন্ট্রোল শুভ, কন্ট্রোল। তোর বউ এবং তুই এখনো ছোট। মনের মধ্যে দুষ্ট ভাবনা আনিস না।”
চোখ বন্ধ করে লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে কয়েকবার ফুল বলে ডাক দিল। ফুল হু বলে নড়েচড়ে পাশফিরে শুয়ে পড়লো। শুভ নিজের উপরই দয়া হল। এতো সুন্দর পরিপাটি ছেলের দিনদিন কেমন বেহাল অবস্থা হচ্ছে তার খবর কী তার বউ রাখে?
শুভ এবার জোরে ডাকল, ” এই ঘুমন্ত ফুল?”
ফুল ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো। চোখ কচলে সামনের দিকে তাকিয়ে তার বাবু বরের মিইয়ে যাওয়া মুখখানা দেখতে পেল। ফুল বুকে হাত রেখে বলল,” কি হয়েছে? খারাপ লাগছে?”
শুভ বিছানায় বসে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলল,” তোমার হাতে বিশ মিনিট সময় আছে। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। আমরা কলেজে যাব।”
জানালায় উঁকি দিয়ে দেখল, এখনো বাহিরে অন্ধকার। ফুল ঠোঁট উলটে বলল,” পাগল হয়ে গেছো? মধ্যরাতে জাগিয়ে আবল তাবল বলছো।”
শুভ হাতঘড়িতে দেখল, পাঁচটা পয়তাল্লিশ বাজে। কিছুক্ষণ পরই ভোরের আলো ফুটবে। শুভ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,” তাড়াতাড়ি তৈরি হও, আলসে ফুল। তুমি জানো না, সকাল সকাল বাচ্চাদের ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করতে হয়!”
শুভ চলে গেল। ফুলের ইচ্ছে করল, আরো ঘুমিয়ে নিতে কিন্তু তার বাবু বর যদি রাগ করে! অগত্যা অনিচ্ছা থাকা স্বত্তেও বিছানা ছাড়লো ফুল।
————-
ফুলের শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠার আগেই সকাল খাবার তৈরি হয়ে গেল। ঘুম থেকে উঠে রান্নাঘর থেকে চামচের টুংটাং শব্দ শুনতে পেয়ে ফুলের শাশুড়ি সামনে আগাল। ফুলকে রান্নাঘরে দেখে রাগ দেখিয়ে বলল,” তোকে রান্না করতে বলেছে কে? মাত্রই তো অসুস্থ থেকে উঠলি।”
” রান্না হয়ে গেছে, মা!”
ফুল এই প্রথম শাশুড়িকে মা বলে ডাকল। ফুলের শাশুড়ি খুশি হয়ে ফুলের কপালে চুমু খেয়ে বলল,” আমার আদুরী, মা। কি বানিয়েছিস শুনি?”
ফুল চালের রুটির সাথে গোস্তের কালা ভুনা করেছে এইটুকু সময়ের মধ্যে। তরকারি এখনো চুলায়। ফুল সোফার ঘরের দিকে উঁকি দিয়ে সময় দেখে নিল। শাশুড়ির উদ্দেশে বলল,” আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিবে, মা! ও বলেছিল, আজ শাড়ি পরতে।”
ফুলের শাশুড়ি লক্ষ্য করল, তার ছেলের কথা বলতে গিশে ফুল লজ্জায় নুয়ে পড়ছে। ফুলের শাশুড়ি হেসে উত্তর দিল, ” কোনটা পরবি, আমার ঘরে নিয়ে আয়।”
ফুল চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে চলে গেল। ফুলের শাশুড়ি ফুলকে খুব সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দিল। গয়নার মধ্যে কানে ছোট ঝুমকো, গলায় চিকন চেইন পরালো। দুইহাত ভরে চুড়ি পরিয়ে দিল। চোখে গাঢ় কাজল পরিয়ে ঠোঁট রাঙিয়ে দিল কৃত্রিম রঙে।
ফুলকে দেখে মাশাআল্লাহ বলে উঠলো তার শাশুড়ি। গালে হাত রেখে বলল, ” খুব সুন্দর লাগছে, মা!”
ফুল লজ্জা পেল।
প্রায় দশ মিনিট পর শুভ, ফুলের উদ্ভট সব নামে ডাকতে ডাকতে নিচে নামল। খাবার সাজানো টেবিলে বসে বলতে শুরু করল,” মা, আমাদের বেড়িয়ে যেতে হবে। ফুল কোথায়? ভাইয়া আসেনি?”
এমন সময় আদিলের মোটরবাইকের আওয়াজ শোনা গেল। শুভ বিড়বিড় করে বলল,” বস কা নাম নিয়া তো বস আ গায়া।”
আদিল এসে সরাসরি খাবার টেবিলে বসলো। মোবাইল ফোন বের করে গতকালকের খবর দেখতে লাগল।
ফুলের শাশুড়ি ফুলকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে ছেলেদের উদ্দেশে বলল,” দেখ তো, আমার মেয়েটাকে কেমন লাগছে?”
শুভ আনমনে ঘুরে তাকাল। তার হাতে চামচ ছিল, ফুলকে দেখা মাত্র সেটা হাত ফসকে পড়ে গেল। খবর পড়ায় ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য চোখ তুলে তাকাতেই ফুলকে দেখতে পেল। শুভর বোকা কান্ড দেখে ধমক দিয়ে বলল,” নিজেকে সামলে নে, গাধা। পৃথিবীতে তুই একাই এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হোসনি। আমরাও হয়েছি।”
শুভ তড়িঘড়ি চামচ তুলে চেয়ারে চুপটি করে বসল। যেনো সে কিছুই করেনি। তার দ্বারা মাত্র কোনো অঘটন ঘটেনি। বড়ো ভাইয়ের কথা কানে আসতেই দুষ্ট হসলো শুভ। গলার স্বর নামিয়ে বলল,” কি! হিংসা লাগে?”
আদিল বিরক্ত হল। তার ছোট ভাইটা আস্তো বজ্জাত। আদিলকে খোঁচা দিতে সময় নষ্ট করে না। চোখ কান নাক একদম সটান থাকে সর্বদা।
খাবার টেবিলে ভিন্ন স্বাদের খাবার খেয়ে আদিল প্রশ্ন করল,” আজ কে রান্না করেছে?”
ফুলের শাশুড়ি উত্তর দেয়ার আগেই বুক ফুলিয়ে শুভ উত্তর দিল,” আমার বউ।”
আদিল শুভর দিকে তাকালো। বদ ছেলেটা মিটিমিটি হাসছে। আজ তার বউ বাড়ি নেই বলে যা ইচ্ছে তাই করছে। আকিল বিড়বিড় করে বলল,” বউ আসুক। আমিও আমার বউ বলে বলে তোর কান ফাটাবো।”
চলবে…………..