#দেওয়া_নেওয়া_সানাই
পর্ব:14
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
মামমাম আমার সোনাপাখি মামমাম হতে চলেছে।(ইফরাজ)
সত্যিই এতো খুশির খবর এমন ভাবে কান্না করছিস কেন?কিগো বসে আছো কেনো মিস্টি কিনে আনো।আমাদের ইফু টা বাবা হবে আমার কি যে খুশি লাগছে।ঐশানী মা তুই আমাদের অনেক অনেক আনন্দ দিয়েছিস।তোকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো।কল দে বেয়াই বেয়ানকে তারাও খুব খুশি হবে।(মামমাম)
আরে কান্না করি কি সাধে?আমি ওকে কথা দিয়েছিলাম যেদিন শুনবো আমাদের বেবি হবে আমি একেবারে সুধরে ভদ্র হয়ে যাবো।সেই ভেবেই তো কান্না আসছে।(ইফরাজ)
তুই পাগল মানুষ হবিনা।সরতো সর মা বল তোর কি খেতে মন চাইছে?(মামমাম ঐশানীর হাত ধরেই)
কিছুনা মামমাম। ইফরাজ ফুচকা এনেছে আপাতত ঐটাই খাই।আর এখন আব্বু আম্মুকে বললে তারা এই রাতেই আসতে চাইবে।কালকে বলি।(ঐশানী)
আচ্ছা ঠিক আছে।তাহলে ফুচকা খেয়ে বসে থাক।আমি রাতের খাবার পাঠিয়ে দিবো।সিড়ি দিয়ে বেশি উঠানামা করতে হবেনা।আজকের থেকে খাবার উপরে দিয়ে যাবো।আর ইফরাজ এর আব্বু এখন ও যাওনি মিস্টি আনতে?(মামমাম)
তোমার অসভ্য ছেলেটা বাবা হবে এটা তো আমি ভাবতেই পারছিনা।আমি শুধু ভাবছি ও আর ওর বেবি একসাথে আমাদের বউমার মাথা না খেয়ে ফেলে।যেই লেভেল এর ফাজিল ও।(আব্বু)
আব্বু।(চিৎকার করে ইফরাজ)
এই চিৎকার করলি কেন?(আব্বু অবাক হয়ে)
তুমি আমার ইজ্জত আমার বেবির সামনে পানচার করতে পারোনা।আমার মতো ভদ্র,শান্ত ছেলে আর আছে এই দুনিয়াতে?মামমাম আব্বুকে বলো যেনো আমাকে লজ্জা না দেয় আমার ময়নাপাখির সামনে।(ইফরাজ)
ময়নাপাখি আবার কে?(মামমাম)
আমার মেয়ে।(ইফরাজ ভাব দিয়ে)
পাগল ছাগল তোর সাথে কথা বলাই বৃথা।আমি বরং ঐশানীর জন্য কিছু বানাই গিয়ে।মেয়ের বেবি লন্ডনে হয়েছে ওকে তো লালন পালন করতে পারিনাই।আমার ইফরাজ আর ঐশানীর বাবুকে আমি লালন পালন করব।ঠিক আছে মা?তুই কিন্ত এখানে থেকে বেবির ডেলিভারি হওয়াবি।(মামমাম)
দুই মা ছেলে কি শুরু করলা?মাত্র এইতো জানছে মেয়েটা।কোথায় আদর যত্ন করবে তানা এখনি ডেলেভারির চিন্তা করছে।চলোতো আমার বউমার জন্য ওর পছন্দের কিছু রান্না করতে।আমি যাই মিষ্টি নিয়ে আসি।আর এই যে আমার গুনোধর সন্তান ফাজলামো করিস ভালো কথা কিন্তু এই সময় বউমার অনেক যত্ন নিতে হবে।ওকে খুশি রাখার জন্য সব কিছু করতে হবে।আর কালকে গিয়ে হসপিটাল থেকে গাইনি ডাক্তার এর থেকে চেকাপ করিয়ে আসিস।কাজের কাজ তো কিছু করেই না খালি খায় আর ঘুরে।(আব্বু)
থাক কিছু বললাম না।আমার শোরুম গুলোতো আসমান থেকে পড়ছে।কাজের কাজ বলে কিছু করিনা।এই ময়নার মা দেখো তোমার স্বামীর অপমান করছে তোমার শশুর কিছু বলো।আমিকি তোমার যত্ন কম করি বলো?এত্ত এত্ত যত্ন করি বলে তো আজকে বাবা হবো তাইনা?(ইফরাজ)
অসভ্য বেসরম পুরুষ চুপ করো আল্লাহর অস্তে।(ঐশানী হালকা রাগ করে)
বুঝলাম না সবাই রাগ কেন করছো?কত্ত খুশির একটা সংবাদ দিলাম।কোই আমাকে বাহবাহ দিবা তোমাদের দাদা দিদা বানাতে হেল্প করলাম তানা তখন থেকে বকেই যাচ্ছো।(ইফরাজ)
অসভ্য ছেলে চুপ কর বাপ।এই চলতো এখানে যত্তক্ষন থাকব এই ছেলে থামবেনা আর।(আব্বু)
বেয়াদপ,অসভ্য, নির্লজ্জ ছেলে হয়েছে আমার।অকে নিয়ে আর পারিনা।থাক মা আমরা নিচে যাই।(মামমাম)
আচ্ছা। (ঐশানী মাথা নিচু করে)
কিছুক্ষণ পর
ও ময়নাপাখির মা শোন না তোমাকে দেখে এখন আমার আদর আদর পাচ্ছে একটু আদর করি?(ইফরাজ ঐশানীকে জড়িয়ে )
আমি কোন কথা না বলে ওর হাতে পিঠে কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলাম।এই ছেলের জন্য সব সময়ই লজ্জা পেতে হয়।বুড়া হয়েছে হাতে পায়ে বয়সে।অথচ কোন বুদ্ধি হয়নি।(ঐশানী রাগ করে)
কি করলাম ময়নাপাখির মা মারো কেন?(ইফরাজ হাত ধলে নিজের)
কথা বলবানা অসভ্য পুরুষ।(ঐশানী)
বউ আই লাভ ইউ।রাগ করোনা অনেক দিনের অভ্যাস তো চেঞ্জ করতে একটু সময় লাগবে।আর সবার সামনে লজ্জা দিবোনা সোনাপাখি।(ঐশানীকে জড়িয়ে ইফরাজ)
মনে থাকবে?(ঐশানী)
হুম ময়নাপাখির মা।(ইফরাজ)
দুর কি নামে ডাকো?(ঐশানী)
কেন পছন্দ হয়নি?(ইফরাজ)
ময়নাপাখি কেন যদি ছেলে হয় তখন?(ঐশানী)
ছেলে হোক বা মেয়ে সাপলাই তো আমার পক্ষ থেকেই হয়েছে।সেটা বেপার না।আদর করে ডাকছি ময়নাপাখি।একজন হলেই হলো।(ইফরাজ)
আবার অসভ্য কথা?(চোখ রাঙিয়ে ঐশানী)
কি বললাম আবার?(ইফরাজ)
সাপলাই মানে কি?(ঐশানী)
ঐ একটা কথার কথা বলছি।আচ্ছা শোন না?(ইফরাজ)
হুম বলো শুনছি।(ঐশানী)
আদর করি একটু।(ইফরাজ)
না।
কে শুনে কার কথা ইফরাজ তো ইফরাজ এই আমাকে কোলে বসিয়ে সারা মুখে চুম্বন এর বর্ষণ শুরু করল।একটা সময় আমার অধর জোরা নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো।বেশ সময় নিয়ে সে থামল।তারপর নিজেই গেলো ফুসকা বানাতে।আর এনে খাইয়ে দিতে লাগল।খাওয়ার পর আমরা বেশ কিছুক্ষন টিভি দেখলাম।মামমাম ইফরাজ কে কল করে খাবার নিয়ে যেতে বলল।কিছুক্ষণ এর মধ্যেই মামমাম আমার প্রিয় ফ্রাইড রাইস আর চিলি চিকেন বানিয়ে ফেলেছে।চিকেন ফ্রাই মেরিনেট করা ছিলোনা নাহলে ঐটাও বানাতো।তার বদলে ফ্রোজেন ফিস ফিংগার,চিকেন নাগেটস বেজে দিয়েছে।ইফরাজ আর মামমাম দুইজন মিলে খাবার নিয়ে উপরে আসল।ইফরাজ আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।মামমাম ইফরাজ কে কয়েকটা উপদেশ দিয়ে চলে গেল।যেমন রাতে যেনো আমার উপর পা না তুলে দেয় আরো অনেক কিছুই।আমি নিজ হাতে খেতে চাইলেও ইফরাজ নিজে আমাকে খাইয়ে দিলো জোর করে।মামমাম চলে যাওয়ার পর ইফরাজ ও ওর খাবার খেয়ে নিলো।আমি সোফাতে বসে ওর খাওয়া দেখছি।ওর খাওয়ার শেষে প্লেট গুলো ধুয়ে আমার সামনে আসল।(ঐশানী)
চলো ঘুমাতে যাওয়ার আগে আধা ঘন্টা হেটে নাও।(ইফরাজ)
আজকে তোমার একটা পরীক্ষা নিবো দেখি তুমি আমাকে কত্তটা ভালোবাসো?(ঐশানী)
দেখি কি পরীক্ষা নেয় আমার সোনাপাখি?বলো কি করব?(ইফরাজ)
আমাকে কোলে নিয়ে আধা ঘন্টা হাটতে হবে তাও পুরো রুমে।(ঐশানী)
ওকে।
বলেই ওকে কোলে নিয়ে হাটাঁ শুরু করলাম।তবে খাবার খেয়ে সাথেসাথেই হাটার কারণে পনের মিনিট এই একটু হয়রান হয়ে গেলাম।বেশ কিছুক্ষন থম মেরে দাড়িয়ে আবার হাটা দিতেই ঐশানী আমার গালে একটা কিস করে দিলো।আমি মুচকি হেসে আবার হাটতে লাগলাম। (ইফরাজ)
নামিয়ে দাও।হয়েছে আর হাটতে হবেনা।কি হলো নামাও।
কে শুনে কার কথা ও হেটেই যাচ্ছে তো হেটেই যাচ্ছে।আর কিছুক্ষণ পরপর একটা করে চুমু খাচ্ছে গালে।পুরো চল্লিশ মিনিট পর আমাকে নিয়ে বেডে শুইয়ে আমার পাশে ও শুয়ে পড়ল।
কত্তক্ষন ধরে বললাম নামাতে।নামাও নাই এখন হাত ব্যথা করলে?(ঐশানী উঠে বসে)
পরীক্ষার ফলাফল বলো সোনাপাখি?(ইফরাজ)
আই লাভ ইউ অসভ্য পুরুষ।(ঐশানী ইফরাজ এর হাতে শুয়ে)
আই লাভ ইউ টু সোনাপাখি আর ময়নাপাখির মা(ইফরাজ ঐশানীর কপালে কিস করে)
Good night ইফরাজ (ঐশানী চোখ বন্ধ করে)
Good night সোনাপাখি।(ইফরাজ ঐশানীর কপালে ঠোঁট ঠেকিয়েই।)
________
(জেবা)হসপিটাল এর কেভিন এ বসেই নামাজ আদায় করে নিলাম।দুই ঘন্টা পর সিজার করানো হবে।আমার জন্য তেমন টেনশন না হলেও বেবির জন্য খুব টেনশন হচ্ছে।সিজার এর পর বেবিকে ধরার মতো ও কেউ নেই।অফিস এর একজন কলিগ কে কল করে আসতে বলেছি।মেয়েটা খুবি ভালো।হেল্প করে সবার এই।আমি শুধু আজকেই ওর হেল্প চেয়েছি।নামাজ শেষে বসে তসবি পড়ছিলাম।হঠাৎই ঐ মেয়েটার আগমন।ও আসতেই ওর হাতে বিশ হাজার টাকা ধরিয়ে দিলাম যাতে ডাক্তার এর বলার সাথে সাথেই সব ব্যবস্থা করতে পারে।
দুই ঘন্টার পর অটি তে নেওয়া হলো।সুই দেয়ার পর তেমন কিছু মনে নেই।শুধু বেবির কান্নার শব্দ পেয়েছিলাম।বেশ কিছুক্ষন পর মুখের সামনে একটা ছোট্ট পুতুল টাওয়াল এ পেচানো ধরতেই ওর কপালে চুম্বন করলাম। এরপর আর মনে নেই। (জেবা)
কিছুক্ষন আগেই হসপিটাল এ আসছি রেগুলার চেকাপ এর জন্য।9 সপ্তাহ চলছে।প্রতি মাসে একবার চেকাপ করার পরামর্শ দিয়েছেন আব্বু।ইফরাজ আমার পাশে বসে আছে।বেশ লম্বা সিরিয়াল এ পড়তে হয়েছে।হঠাৎই একটা মেয়েকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখলাম।এখানে সেখানে কিছু জিজ্ঞেস করছে।হঠাৎই আমাদের সামনে আসল।(ঐশানী)
আসলামুআলাইকুম আপু ও ভাইয়া। আমার একজন অফিস কলিগ এর ডিলেভারী হয়েছে।সিজার এর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ এর ফলে ওর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ।আপনাদের মধ্যেই কারো কি O+ রক্ত আছে?(মারজান)
হ্যা আমার O+ রক্ত।চলুন আমি রক্ত দিবো।(ইফরাজ)
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চলুন ভাইয়া। (মারজান)
চলো আমার সাথে বসবে।এখানে তোমাকে একলা রেখে যেতে পারবনা।(ইফরাজ ঐশানীর হাত ধরেই)
চলো।
তারপর আমরা অটির সামনে গেলাম।একজন নার্স এসে ইফরাজ কে নিয়ে গেলো রক্ত নেওয়ার জন্য। আমাকে মারজান নামের মেয়েটার সাথে বসিয়ে।যাওয়ার আগে কয়েক বার বলে গেছে যেনো ওর বউ কে দেখে রাখে।মেয়েটা আমার পাশে বসে আছে।বেশ কিছুক্ষন পর নার্স একটা বেবি নিয়ে বাইরে আসল।(ঐশানী)
মিসেস জেবা ফারাজ এর পরিবারের কে আছেন?(নার্স)
আমি নামটা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম।হঠাৎই কি মনে করে আমি দাড়িয়ে বেবিটাকে চাইলাম।নার্স আমার কোলে বেবিকে দিয়ে অটিতে চলে গেলো।আমি এসে চেয়ার এ বসে বেবিটাকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম। ফারাজ এর মতো দেখতে পুরো।এ যেন ফারাজ এর কার্বনকপি।মারজান মেয়েটা বেবিকে চাইলো আমি বেবির কপালে হালকা ভাবে কিস করে ওর কোলে দিয়ে দিলাম।
45মিনিট পর ইফরাজ আসল।তারপর আমার সাথে বসে বেবিকে কোলে নিলো।মারজান মেয়েটা বলে গেল এখানে একটু থাকতে।তারপর কিছু ঔষধ আনতে গেলো।
ও ফারাজ আর জেবার বেবি।(ঐশানী)
তুমি কিভাবে জানলে?(ইফরাজ)
নার্স তখন নাম নিয়েছিল।(ঐশানী)
ভালোতো।কিন্ত ফারাজ বা ওর পরিবারের কেউ নেই কেন?(ইফরাজ)
তা আমি কিভাবে বলব?(ঐশানী)
তাও ঠিক।এই যে বেবি কেমন লাগছে দুনিয়াতে এসে?শোন একদম আব্বু আম্মুর মতো হবেনা।আমার সোনাপাখির মতো হবে ঠিক আছে।ওকি ছেলে না মেয়ে?(ইফরাজ)
কেনো?(ঐশানী)
আজান দিতে হবে তাই।(ইফরাজ)
ছেলে।(ঐশানী)
আচ্ছা আমি কানে আজান দিয়ে দিচ্ছি। ওদের বলে যাবো পরে যেনো মসজিদে আজান দিয়ে দেয়।(ইফরাজ)
আচ্ছা।
তারপর ইফরাজ আজান দিলো বেবির কানে।মারজান মেয়েটা এসে বেবিকে নিলো।আমি শুধু ভাবছি ফারাজ আর ওর ফেমেলির লোক কোথায়?মেয়েটা একলা তার অফিস কলিগ নিয়ে কিভাবে কি করবে?
কিছুক্ষন পর ইফরাজ আমাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসল।ডাক্তার দেখিয়ে আমি ওকে বলে আবার ওখানে গেলাম।সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে অথচ এখন ও কেউ আসেনি।জেবা কে বেডে দেওয়া হয়েছে।ওর জন্য আয়া রাখা হলো।রাত আটটা পর্যন্ত থেকে আমরা চলে আসি বাসায়।
কিন্তু আমার বেবির টেনশন এ ঘুম আসছিলনা। ইফরাজ সকালে নিয়ে যাবে বলে অনেক জোর করে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।(ঐশানী)
_________
পরের দিন সকাল নয়টার দিকেই আমরা হসপিটাল চলে আসলাম।ইফরাজ কে বাইরে দাড় করিয়ে আমি ভেতরে ঢুকতেই দেখি জেবা বেবিকে খাওয়ানোর ট্রাই করছে।আমাকে দেখে যেন বেশ অবাক হলো।
এখন কেমন লাগছে জেবাপু?(ঐশানী)
ভালো।তুমি এখানে?কিভাবে জানো আমার ব্যাপারে?(জেবা)
কালকে আমার হাজবেন্ড তোমাকে রক্ত দিয়েছে জেবাপু।আচ্ছা তোমার স্বামী আর শশুড় বাড়ির লোক কোথায়?(ঐশানী)
তারা আছে তাদের মতো।ধন্যবাদ বলে দিও তোমার হাজবেন্ড কে আমাকে বাঁচানোর জন্য। জদিও উচিত হয়নি কারণ তার বউকে কষ্ট দিয়েছি যে আমি।(জেবা কান্না করে)
কান্না করোনা স্টিস এ সমস্যা হবে।আর শোন যা হয়েছে হয়েছে সব ভুলেই গেছি আমি।বেবি কে দাও না একটু।আর তুমি যদি বলো ইফরাজ এখানে আসুক একটু ও বেবিকে নিতে চাইছিল। (ঐশানী)
ইফরাজ কে?(জেবা)
আমার হাজবেন্ড। (ঐশানী)
অবশ্যই। ওর মায়ের জীবন বাঁচানোর পেছনে যেই লোক আছে তার থেকে এই টুকু আবদার কিভাবে মানা করতে পারি।(জেবা)
ইফরাজ ভেতরে আসো।
বলতেই ও ভেতরে এসে আমার পাশে বসল।(ঐশানী)
এখন শরীর কেমন আছে আপনার ভাবী?(ইফরাজ)
ভালো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার জীবন বাঁচানোর জন্য।নাহলে আমার ছেলের কি যে হতো।(জেবা)
ধন্যবাদ দিতে হবেনা।এটা আপনার জন্য আমার সামান্য উপহার ধরে নিন।এইযে আমার সোনাপাখি উপস মানে ঐশানীকে পাওয়ার পেছনে আপনাদের অবদান অপরিসীম। তাই ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবেননা।দেওতো বেবিকে একটু কোলে নেই।(ইফরাজ)
ফারাজ কোথায় জেবাপু?(ঐশানী)
আমেরিকা চলে গেছে একেবারের জন্য। (জেবা)
বেবির ব্যাপার এ কি জানাও নি নাকি?(ঐশানী)
থাকনা বোন কিছু কথা না জানা।ভাইয়াকে নিয়ে আসলে কি যে খেতে দিবো?(জেবা)
তুমি রোগি মানুষ এত্ত পেরা নিওনা।আচ্ছা ভালো থেকো চলো ইফরাজ বাসায় যাবো আমার শরীর ভালো লাগছেনা।(ঐশানী)
কি হয়েছে সোনাপাখি?(ইফরাজ উদ্বিগ্ন হয়ে)
এমনেই ভালো লাগছেনা চলো।আচ্ছা আপু আসি দোয়া করো আমাদের অনাগত সন্তানের জন্য। (ঐশানী)
তুমি প্রেগনেন্ট?(জেবা)
হ্যা। (ঐশানী)
কত্তদিন চলে?(জেবা)
9 সপ্তাহ। আচ্ছা থাকো আসছি।আর এইটাকা দিয়ে বেবিকে কিছু কিনে দিও।(ঐশানী)
কি করছো এসবের দরকার নেই।(জেবা)
এটা আমার অধিকার জেবাপু।ওর জন্য কেনার টাইম পাইনি।তুমি প্লিজ সুস্থ হলে ওকে কিছু কিনে দিও।না করোনা।(ঐশানী কিছু টাকা জেবার হাতে দিয়ে)
আচ্ছা। (জেবা)
আসছি।(ঐশানী)
আবার এসো।(জেবা)
ট্রাই করব।সিওর বলতে পারছিনা।চলো ইফরাজ (ঐশানী)
চলো।আসি ভাবি।বায় পুচকু।
বলেই ঐশানীকে নিয়ে বের হয়ে আসলাম।গাড়িতে ও হেলান দিয়ে বসে আছে।হয়তো ফারাজ এর কথা মনে পরেছে।আমি চুপচাপ গাড়ি ড্রাইভ করছি।হঠাৎই ও এসে আমার এক হাত জড়িয়ে ধরল।আমি মুচকি হেসে ওর কপালে চুমু খেয়ে ড্রাইভ করছি।(ইফরাজ)
আই লাভ ইউ অসভ্য পুরুষ। (ঐশানী চোখ বন্ধ করেই)
আই লাভ ইউ টু সোনাপাখি।(ইফরাজ)
************(চলবে)************