#দোসর
#পার্ট_৫
#মৌসুমী_হাজরা
প্রায় ১০/১২ দিন পার। বিয়ের সব কথাবার্তা পাকা। হাতেগোনা আর কয়েকটা দিন। ঋষভ ফোন করে নি। সোমাশ্রীও নিজেকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছে। এখন সে ঘরবন্দী। অফিসেও যায় না।
এখন সোমাশ্রী এই বাড়ির সকলের ব্যবহার দেখে আর অবাক হয় না। সবাই তাকে এত ভালোবাসা দেখালেও, আসলে সবটাই সে জানে। যাক! এই বাড়ির লোকেরা এখন অন্তত সোমাশ্রীকে আপন করেছে। যদিও সেটা কদিনের জন্য। বিয়ের পর যে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না সেটা সে ভালো করেই জানে।
ফোনে এখন আর ফোন আসে না। সারাদিন চ্যাটিং হয় না। ঋষভ ভালো থাকুক। অনেক জ্বা’লিয়েছে সে ছেলেটাকে। কিন্তু সেদিন ওইভাবে বলার পর সোমাশ্রীর ভীষণ কা’ন্না পেয়েছিল। কঠোর তো হতেই হবে। ঋষভ ওর জন্য কী করতে পারে তা ওর ভালো করেই জানা আছে।
ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো নয়নার নাম।
ফোনটা রিসিভ করবে কিনা ভাবতে ভাবতেই ডিসকানেক্ট হয়ে গেল।
মেঘ এসেছে। চারিদিক অন্ধকার। বিকেলবেলায় এমন মেঘ দেখলে সোমাশ্রীর বি’ষণ্ণতা আরও বাড়ে। ঋষভকে খোঁজে। ইচ্ছে করে, জোর করে আটকে রেখে বলতে, আমরা এত অবুঝ কেন? কেন আমাকে আটকে রাখলি না?
কলেজের দিনগুলো খুব মনে পড়ে তার।
একসাথে স্কুলের গণ্ডি পার করে যখন কলেজে উঠলো, তখন দুজনের পথ একটু আলাদা হলো। বাড়ির লোকের কথা মতো সোমাশ্রী ভর্তি হয়েছিল উইমেন্স কলেজে।
ঋষভ বাড়ি ফেরার সময় কলেজ থেকে একটু দূরে অপেক্ষা করতো। সোমাশ্রীকে দেখতে পেয়ে, হাত নাড়ালে, সোমাশ্রী ছুটে যেত ওর দিকে। বন্ধুরা কতবার এই নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করেছে। অথচ সোমাশ্রী তখন ঋষভকে বন্ধু ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নি।
তাহলে এখন কেন কষ্ট হচ্ছে?
নয়নার কথা আবার মনে পড়তেই দেখলো, আবার ফোন করছে সে। এবার ফোনটা রিসিভ করে বললো,
… হ্যাঁ নয়না বলো।
… দেখা করতে চাই তোমার সাথে।
… কেন? কী হয়েছে?
… দরকার ছিল। সব কথা তো ফোনে ফোনে হয় না। তাছাড়া তুমি আমার ঋষভকে কেড়ে নিয়েছো আমার থেকে। তোমার সাথে সামনাসামনি আমার একটু বোঝাপড়া আছে।
… তুমি কী বলছো নয়না? আমি কেন কেড়ে নেবো ঋষভকে তোমার থেকে? তোমাদের যখন ব্রেকাপ হয়, তখন তো আমার সাথে ঋষভের যোগাযোগও ছিল না। হ্যাঁ এটা ঠিক, আমাদের বন্ধুত্ব বরাবর ছিল, সেটা কথা হোক বা না হোক। আমার খা’রাপ সময়ে আমি সবসময় পাশে পেয়েছি ওকে।
… তাহলে আজ কেন এত স্বার্থপর হলে?
… মানে? কী বলতে চাও তুমি?
… দেখা করো। বাকি কথা তখনই হবে।
… ঠিক আছে৷ আমার বাড়ির ঠিকানা দিচ্ছি, তুমি এসো, আমার বাড়ি থেকে বেরোতে ইচ্ছে করছে না।
এক ঘন্টার মধ্যে নয়না উপস্থিত হলো সোমাশ্রীর বাড়িতে। সোমাশ্রীর মা কফি দিয়ে চলে গেছেন।
দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ নীরবতা।
নয়না সেই নীরবতা ভে ঙে বললো,
… নিজের কী হাল করেছো সোমাশ্রী?
… কদিন শরীরটা ভালো নেই, তাই এমন লাগছে।
… আর মন? মন ভালো আছে তো?
… হ্যাঁ। ভালো থাকতেই হবে। সামনেই বিয়ে।
… কেনাকা’টা হয়ে গেছে?
… না চলছে। তুমি তখন ফোনে আমায় কী বললে? আমি ঋষভকে তোমার থেকে কেড়ে নিয়েছি?
… (নয়না হাসলো) একটু ভুল বলেছি। তুমি কেড়ে নাও নি, তুমি তো ঋষভকে আমায় কোনোদিন দাও-ই নি।
… মানে? কী বলতে চাও তুমি?
… তোমরা জানতে ঋষভ আর আমার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। সেটা একদম ভুল। এটা ঠিক যে, আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। কিন্তু পাই নি।
… নয়না আমাকে ঠিক করে বলো, তুমি কী বলতে চাইছো?
… তোমার আর অনির যখন সম্পর্ক শুরু হয়। তখন ঋষভ প্রচণ্ড একা হয়ে যায়। ও আমাকে সব বলেছিল। আমি একটা ভা’ঙাচোরা মানুষকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম। জানো? ও আমাকে সব দিয়েছিল, সম্মান, সময়, যত্ন। কিন্তু ও নিজেকে আমাকে কোনোদিন দিতে পারেনি। আমি যা বলতাম ও করতো। একটা সময় মনে হলো, ও আমার হাতের পুতুল শুধুমাত্র। আমি যেভাবে নাচাবো, সেভাবে নাচবে। কিন্তু আমি তো ওকে চেয়েছিলাম। মানুষ ঋষভকে চেয়েছিলাম, পুতুল না। তখন ভেবে দেখলাম, ওর সব কিছু তো তুমিই রেখে দিয়েছো।
… দেখো নয়না। আমি চাইনা আমার জন্য তোমাদের কোনো অ’শান্তি হোক। তাই আমি সরে এসেছি।
… সেদিন তুমি রেস্টুরেন্টে এসেছিলে, আমি তোমাকে দেখেছিলাম। ঋষভ যখন আমার হাতটা ধরেছিল, তখন দূর থেকে তোমার চোখে জ্বলন আমি দেখেছিলাম। আমার ভালো লাগছিল। তোমাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য নয়। তুমি ঋষভকে এর থেকেও বেশি ক ষ্ট দিয়েছিলে, তাই তোমাকে জ্ব’লতে দেখে আমার ভালো লাগছিল।
… আজ এইসব কথার কী মানে হয়?
… ঋষভ ভালো নেই। ও নিজেকে একদম গুটিয়ে নিয়েছে সব কিছু থেকে। ও এতটাও ক ষ্ট পাওয়ার মতো কিছু করে নি। সবার উপকার করে। আপদে-বিপদে ওকে আগে পাওয়া যায়। সবার কথা ভাবে ও। তাই বলছি ওর জীবনে তুমি ফিরে যাও।
… তুমি আছো তো।
… থাকতেই তো চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই জায়গাটা শুধু তোমার। সেদিন ও আমার হাতটা ধরে এটাই বলছিল যে, ও আমার বন্ধু হয়ে থাকবে, আমার কোনো সমস্যায়, ওকে আগে পাবো আমি। বেশ এইটুকুই। আর এই হাতটা ধরা দেখেই তুমি কত কী ভেবে নিলে। যে এতগুলো মাস আমার কাছে ছিল, তাতে আমি পেলাম না। আর ওইটুকু সময়ে আমি পেয়ে যাবো তাকে? যাক! জানতে তো পারলাম, তোমার মনেও ঋষভের জন্য অনুভূতি তৈরি হয়েছে। আর দেরি করো না। ছেলেটা তোমার ফোনের অপেক্ষায় আছে।
… (সোমাশ্রী কাঁ’দতে কাঁ’দতে) তা আর হয় না নয়না। সামনেই আমার বিয়ে।
… এখনও দেরি হয় নি। সময় আছে। এমনকি তুমি বিয়ের মণ্ডপ থেকেও যদি ঋষভকে ফোন করো, তাহলেও সে এসে তোমাকে নিয়ে যাবে।
… আমাকে বিয়েটা করতেই হবে।
… কেন? কে তোমাকে এত চাপ দিচ্ছে? তুমি আমাকে সবটা বলো।
… অনেক কারণ আছে।
… একটা অন্তত বলো। বাকিটা আমি বুঝে যাবো।
… আমার মায়ের জন্য।
… তোমার বিয়ে হলে মায়ের কী লাভ হবে?
… আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিল, তখনই একটা উইল করেছিল। তাতে লেখা ছিল, আমার বিয়ে না হওয়া অব্দি, সব সম্পত্তির মালিক আমি থাকবো। আমার বিয়ের পর সম্পত্তি দুই ভাগ হবে, একভাগ আমার আর একভাগ আমার মায়ের।
… ওওও এবার বুঝলাম।
… বাড়ি থেকে চায়, আমার বিয়েটা হয়ে যাক তাড়াতাড়ি। আমার মায়ের এই পক্ষের হাজব্যান্ড তিনি আমাকে কোনোদিনই আপন করতে পারেন নি। কিন্তু এখন তিনি চান, আমার বিয়েটা হয়ে যাক।
… বোকা দেখেছি, তোমার মতো এতটা বোকাও দেখিনি। নিজের সর্বনা’শ নিজে ডেকে আনছো। তুমি কি মনে করো? তোমার বিয়ের পর ওনারা তোমাকে এতটা প্যাম্পার করবেন? এখন সম্পত্তির জন্য এত ভালোবাসা উথলে উঠেছে। প্লিজ সোমাশ্রী এমন করো না। নিজেও ক ষ্ট পাচ্ছো আর ঋষভকেও দিচ্ছ।
… তুমি ঋষভকে কিছু বলবে না প্লিজ। আমি নিরুপায়। আমি আর ওর উপর বোঝা হতে চাই না। এখন এই বিয়েটা না হলে আমার বাড়ির লোক ওকে অপমান করবে, যেটা আমি একদমই চাই না। প্লিজ নয়না এইটুকু কথা আমার রাখো।
নয়না অনেক আগেই সোমাশ্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। ঋষভকে সবটা জানাতেই হবে। ওদের মধ্যে আর কোনো ভু ল বোঝাবুঝি না থাকায় ভালো।
ফোনটা বের করে ঋষভকে ফোন করতেই, ঋষভ ফোনটা রিসিভ করলো।
নয়না বললো, ফোনটা হাতেই ছিল নাকি? একবার রিং হতেই রিসিভ হলো।
সিগারেটটা অ্যাশট্রেতে ফেলে ঋষভ বললো, হ্যাঁ, বাড়িতে আছি তো, তাই ফোন ঘেঁটে সময় পার করছি।
নয়না বললো, কেন? অফিস যাও নি?
ঋষভ বললো, না শরীরটা ভালো নেই। তাই আজ আর যাই নি।
নয়না এবার ব্যাঙ্গ করে বললো, উফফ কারোর শরীর ভালো নেই, কারোর মন ভালো নেই। মাঝখানে আমি মেসেঞ্জার হয়ে গেছি। অথচ মিল হলেও আমি হারাবো আর না হলেও আমি পাবো না। কোনো দিকেই আমার লাভ নেই। তাও বন্ধুর জন্য যতটা পারি করার চেষ্টা করবো।
ঋষভ এবার অবাক হয়ে বললো, কী বলছো? আমি বুঝতে পারছি না।
নয়না বললো, সোমাশ্রীর বাড়ি থেকে এই বের হলাম। অনেকক্ষণ ওখানে ছিলাম।
এরপর নয়না সমস্ত কথা ঋষভকে জানালো।
ঋষভ সেই আগের মতোই চুপ করে থাকলো।
নয়না বললো, তুমি কিছু করবে না?
ঋষভ বললো, না। ও নিজে থেকে না ডাকলে আমি যাবো না। তুমি ওর ভু ল ভা’ঙিয়ে দিয়ে এসেছো। এবার ও না ডাকা অব্দি আমি যাবো না। তাতে যতই ক ষ্ট হোক আমার।
পরের দিন অফিস টাইম সোমাশ্রীর ফোন এলো।
প্রথমে ঋষভ নিজের চোখকে বিশ্বাসই করতে পারে নি। বুকের মধ্যে একসাথে যেন অনেকগুলো ড্রাম বাজছিল। উত্তেজিত নিজেকে সামলে নিয়ে ফোনটা রিসিভ করে বললো,
… হ্যাঁ শ্রী বল।
… কোথায় আছিস?
… অফিসে, একটু পরে তোকে কল ব্যাক করি?
… এই শুয়োর, তোর এত কিসের ব্যস্ততা? আগে তো অফিস টাইমে যতবার ফোন করেছি, ঠিক কথা বলার সময় হয়েছে তোর।
ওষুধ টা খেতে গিয়ে রেখে দিল ঋষভ, কদিন তার জ্বরভোগ হয়েছে। ওষুধটা খেয়েই সোমাশ্রীকে ফোন করতো। কিন্তু এখন ওষুধ খাওয়ার চেয়ে ওর সাথে কথা বলাটা বেশি দরকার। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। সেটা প্রায় ১০/১২ দিন পর। এতদিন যেন ওর কাছে সব হারিয়ে গিয়েছিল।
… কী রে শুনছিস?
… হুম বল। শুনছি।
… বিয়ের কেনাকা’টা করতে যাবো। তুই আমার সাথে যাবি।
… কেন? আমি তোর ড্রাইভার নাকি?
… এটা জানতিস না আগে? তুই ড্রাইভার শুধু না, তুই আমার….
… কী? আমি তোর কী?…
… কিছু না, সন্ধ্যের সময় যাবো। আমাকে নিতে আসিস।
… ঠিক আছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটু হেঁটে আসিস। আমি ওখান থেকে তোকে নিয়ে যাবো।
… পারবো না হাঁটতে। আমার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াবি। ওখান থেকে তোর সাথে যাবো।
… কাকিমা বারণ করেছে, তোর সাথে দেখা করতে।
… যা বলছি করবি। বেশি কথা বলবি না।
সন্ধ্যের সময়…
বহুদিন পর সোমাশ্রীকে দেখছে ঋষভ। বাইকে বসার পর, সোমাশ্রীকে নিয়ে চলে গেল। ছাদে দাঁড়িয়ে সবটা লক্ষ্য করছিলেন সোমাশ্রীর মা।
… কোথায় যাবো আমরা শ্রী?
… আগে তো এই প্রশ্ন করতিস না। যাইহোক শাড়ির দোকান যাবো। বিয়ের শাড়ি কিনবো।
… তাহলে তোর হবু বরকে ফোন কর।
… কেন আমার হবু বর শাড়ি পরবে? পরবো তো আমি। চুপচাপ বাইক চালা তো। কথা বললেই মাথা গরম হয়।
আবারও মুচকি হাসলো ঋষভ। তবে এই সময়টা বেশ অন্যরকম। ভবিষ্যতে কি হবে তা জানা নেই। এই যে এখন সোমাশ্রী কাছে আছে, এতে সব চিন্তা ভুলে যাওয়া যায়।
পছন্দ মতো অনেক শাড়ি কেনা হলো। সাথে আরও কিছু কেনাকা’টা হলো। সোমাশ্রী বললো, চল মোহনদার চায়ের দোকানে যাবো।
ঋষভ ওর কথা মতো, নিয়ে গেল।
দুকাপ চা নিয়ে পাশাপাশি বসলো দুজনে। দুজনের মধ্যে নীরবতা।
সোমাশ্রী মনে মনে ভাবলো, একবার ঋষভ বলুক, তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। এই বিয়েটা করিস না। তাহলে সে সব কিছু ছেড়ে ঋষভের কাছে ফিরে যাবে।
এইদিকে ঋষভ মনে মনে ভাবছে, একবার সোমাশ্রী বলুক, আমি তোকে ছাড়া ভালো নেই, আমাকে তুই নিয়ে চল এখান থেকে।
তাহলে ঋষভ কারোর কোনো কথা শুনবে না। সোমাশ্রীর হাত ধরে নিয়ে চলে যাবে।
কিন্তু দুজনেই নীরব….
বাড়ি ফিরে গেছে দুজনে একে অপরকে মনের কথা না বলে। সোমাশ্রী অপেক্ষা করছে ঋষভের ফোনের। কিন্তু ঋষভ ফোন করলো না। তাই নিজেই ফোন করলো। ঋষভ ফোনটা ধরতেই সোমাশ্রী বললো, ম রে গিয়েছিলি নাকি? ফোন করিস নি কেন?
ঋষভ শান্ত সুরে বললো, ফোন করবো বলেছিলাম? কই আমার তো কিছু বলার ছিল না তোকে।
সোমাশ্রী রা গ দেখিয়ে বললো, আমারই ভুল হয়েছে তোকে ফোন করাটা।
ঋষভ নিজের হাসিকে কন্ট্রোল করে বললো, বেশি রাত জাগিস না। সামনেই বিয়ে, চোখের তলায় ড্রাক সার্কেল পড়ে যাবে।
সোমাশ্রী এবার উত্তেজিত হয়ে বললো, তোকে এত ভাবতে কে বলেছে রে? রাখ তুই ফোন। অসভ্য ছেলে একটা।
সোমাশ্রী নিজেই ফোনটা রেখে দিল রাগ করে। ৫ মিনিট পর আবার ফোন করলো ঋষভকে। ফোনটা রিসিভ হতেই, সোমাশ্রী বললো,
… বাহ্ অনেক উন্নতি হয়েছে তোর। আমি যে ফোনটা রেখে দিলাম, তুই ঘুরে কলব্যাক করলি না তো?
… তুই তো রাখলি। আমি কী করবো?
… তা বলে তুই ফোন করবি না?
… আচ্ছা বেশ আমি করছি একটু পরে। মা অপেক্ষা করছে৷ ডিনারটা করে নিই।
… না তুই ফোন রাখবি না। কথা বলতে হবে না। তুই আন্টির সাথে বসে খাবি। আমি ফোনটা ধরে থাকবো।
… আচ্ছা বেশ, বোর হলে তোকে আমাকে ঝাড়িস না।
ঋষভ ইশারা করে ওর মাকে বললো, ফোনে সোমাশ্রী আছে। মা বুঝতে পেরে মুচকি হাসলেন।
খাবার টেবিলে মা বললেন, শ্রীর তো বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এবার তুই কবে করবি? আমি আর একা একা কতদিন এই বাড়িতে থাকবো বল তো?
কথাটা বলেই মা আবার মুচকি হাসলেন ঋষভের দিকে তাকিয়ে।
ঋষভ বেশ জোর গলাতেই বললো, তুমি মেয়ে দেখো মা, আমি বিয়ে করে নেবো।
কথাটা শুনতে পেয়েই সোমাশ্রী আরও জ্ব’লে উঠলো। মনে মনে বললো, তোর বিয়ে আমি করাচ্ছি।
ফোনটা নিজেই ডিসকানেক্ট করে দিল।
অনেক রাত অব্দি সোমাশ্রী অপেক্ষা করলো ঋষভের ফোনের। কিন্তু ঋষভ ফোন করলো না।
ওইদিকে ঋষভ ফোনের গ্যালারিতে সোমাশ্রীর ছবিগুলো দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লো।
ভুল ত্রুটি মার্জনীয় 🙏