দ্বিতীয় বসন্ত পর্ব-০৭

0
137

#দ্বিতীয়_বসন্ত
#লেখা_Bobita_Ray
পর্ব- ০৭

আবিরের বুকের রক্ত ছলকে উঠল। এইমাত্র কী বলল মেয়েটা? আবিরের জন্য সুপ্তি অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে? এত বড় কথাটা এত অকপটে বলতে পারল সুপ্তি? ও কী জানে! আবিরের বুকের দুই ইঞ্চি গভীরে একটা কোমল হৃদয় আছে। সেই হৃদয়ে তুমুল ঝড় উঠেছে। সুপ্তিকে হাপুস নয়নে কাঁদতে দেখে, বেসামাল হয়ে গেল আবির। মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। শুধুমাত্র আবিরের জন্য সুপ্তির গায়ে কলঙ্কের দাগ লাগুক! আবির স্বপ্নেও ভাবতে পারে না। কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু কী করবে আবির? ভেবে ভেবে পাগল হয়ে যাবার জোগাড় হয়েছে৷ মস্তিষ্কও সুস্থ ভাবে কাজ করছে না।
কারেন্ট নেই। ঘরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। আবির প্রাণপনে শান্ত থাকার চেষ্টা করল। ফোনের লাইট জ্বেলে দিয়ে, সারাঘরে এক পলক চোখ বুলিয়ে নিল আবির। একটা পরিত্যক্ত আলমারির পেছনে একটা জানালা দেখা যাচ্ছে। আবির এগিয়ে গেল। আলমারিটা ঠেলে সরাল। থাই গ্লাসের জানালা খুলে দিতেই দেখল, জানালায় কোন গ্রিল দেওয়া নেই। আবির চোখ বন্ধ করে, বুক ভরে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল। ক্লান্ত গলায় বলল,
-‘এই ঘরের জানালায় গ্রিল দেওয়া নেই। আপনি জানতেন না সুপ্তি?
সুপ্তি চোখ তুলে তাকাল। অতিরিক্ত ভয়ে মস্তিষ্ক কিছু সময়ের জন্য নিস্ক্রিয়, অচল হয়ে গিয়েছিল। এই ঘরের কোথায় কী আছে! কিছুই স্মৃতিতে জমা ছিল না। ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক সচল হলো। জানালা দেখে, খুব অল্প সময়ের জন্য সুপ্তির ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। আবার খানিক বাদেই সুন্দর, মিষ্টি হাসিটা হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মিলিয়েও গেল। এই মেয়েটার মায়াবী মুখের স্নিগ্ধ হাসির দৃশ্য দেখে, থমকে গেল আবির। আর কতভাবে আবিরকে মুগ্ধ করবে?
জানালাটা একটু উঁচুতে। সুপ্তি চোখের জল মুছে, দৌঁড়ে গিয়ে, জানালা বেয়ে উঠতে লাগল। কিন্তু ঠিকঠাক ভাবে কিছুতেই উঠতে পারল না। আবির আস্তে করে বলল,
-‘আমি হেল্প করি?
সুপ্তি ঝটপট উত্তর দিল।
-‘শিওর।
আবির ধীর পায়ে হেঁটে গিয়ে, সুপ্তির ঠিক পেছনে দাঁড়াল। কাঁপা হাতে আলতো করে সুপ্তির কোমর জড়িয়ে ধরল। হাতের বাঁধন ধীরে ধীরে সুপ্তির কোমরে এঁটে বসল। সুপ্তিকে শূন্যে তুলে দিল। সুপ্তির কোমল শরীর স্পর্শ করার পর থেকে আবিরের বুকের ভেতর প্রবল বেগে, ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে, সবকিছু ভেসে যাচ্ছে। এই প্রথম নারী শরীর গভীর ভাবে স্পর্শ করল আবির। নিজের শরীর খুব টলছে। হৃৎস্পন্দন শব্দ তুলে ধুকপুক ধুকপুক করছে। মাথা ঝিমঝিম করছে। নিঃশ্বাসের গতি বেগ দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে।
সুপ্তি তাড়া দিয়ে বলল,
-‘আর একটু উঁচু করে ধরুন?
চাবি দেওয়া পুতুলের মতো মোহাচ্ছন্ন হয়ে, সুপ্তির কথা মতো আর একটু উঁচু করে ধরল আবির। তারপর খুব সাবধাণে নামিয়ে দিল।
সুপ্তি ছাদের ফ্লোরে লাফিয়ে নেমে, বুক ভরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। মুখে সত্যিকারের হাসি ফুটে উঠল। বলল,
-‘বড় বাঁচা বাঁচালেন। ধন্যবাদ। দরজা কী খুলে দেব?
আবির ক্লান্ত গলায় বলল,
-‘না প্লিজ। আপনি চলে যান।
-‘ওকে।
সুপ্তি নূপুর পরা পায়ে রিনিঝিনি ছন্দ তুলে, ধীর পায়ে চলে গেল। আবির ধীরে ধীরে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিল। আবিরের হাতে, বুকে, মুখে সুপ্তির স্পর্শ লেগে আছে। সুপ্তির শরীরের মন মাতানো মেয়েলি ঘ্রাণ আবিরের শার্টে লেগে আছে। আবিরের হাত-পায়ে কোন বশ নেই। বুকের ভেতর তোলপাড় করছে। মনটাও খুব নাজুক। বিড়বিড় করে বলল,
-‘এ তুমি কেমন সুখ দিয়ে গেলে সুপ্তি? তোমার কোমল শরীরের গাঢ় স্পর্শ মেখে, আমি এখন ঘুমাব কীভাবে? আমার যে কিছুতেই ঘুম আসছে না। খুব অস্থির লাগছে। এতটা কাছে আসার পরও আমি যদি তোমাকে না পাই। তাহলে আমি সত্যি সত্যিই পাগল হয়ে যাব সুপ্তি। “তুমি আমায় ভালোবাসবে তো?”

সুপ্তি ঘরে গিয়ে, সময় নিয়ে স্নান করল। ঝর্ণার নিচে একমনে দাঁড়িয়ে ভিজতে গিয়ে মনে হলো, তখন আবির ওর কোমর গভীর ভাবে স্পর্শ করেছিল। আবিরের মুখটা সুপ্তির পিঠে গাঢ় ভাবে লেগেছিল। আবিরের পুরুষালি স্পর্শে তখন প্রচণ্ড ভয়ে, কোন অনুভূতি না হলেও, এই ঝর্ণার নিচে দাঁড়িয়ে, ভেজা শরীরে সুপ্তির বুকের ভেতর অজানা শিহরণে, কাঁপন ধরে গেল। একরাশ লজ্জা এসে সুপ্তির চোখে, মুখে ভর করল। ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠল চিরচেনা লাজুক হাসি। ইশ, তখন মানুষটার গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য বার বার চোখের পাতায় ভাসছে।

-‘সুপ্তি দরজাটা খুল?
সুপ্তি ভেজা মাথা মুছতে মুছতে ঘরের দরজা খুলে দিল। মা ক্লান্ত হয়ে সুপ্তির বিছানায় শুয়ে পরল। ঘুমে বুঁজে আসা কণ্ঠে বলল,
-‘এত রাতে স্নান করেছিস কেন?
সুপ্তি মায়ের পাশে বসে বলল,
-‘এমনিই মা।
-‘অনেকটা সময় তোকে দেখিনি। কোথায় ছিলি?
সুপ্তি আস্তে করে বলল,
-‘ছাদে ছিলাম মা।
-‘ওতরাতে একা একা ছাদে গিয়েছিলি কেন? বিয়েবাড়ি। কত মানুষজন এসেছে।
সুপ্তি বিষণ্ণ গলায় বলল,
-‘ এত কোলাহল ভাল লাগছিল না।
মা সুপ্তির মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
-‘আমাদের ক্ষমা করে দিস রে মা। দীপ্তির বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়ে যাক। আমরা তোর জন্য একটা রাজপুত্রর ধরে আনবো, দেখিস?
তাছাড়া বিয়ের আসরে না গিয়ে এক হিসাবে ভালোই করেছিস। তোকে বিয়ে না দিয়ে ছোটমেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এই নিয়ে সবাই খুব ফিসফাস করছিল। তিক্ত কথাগুলো শুনতে তোর অবশ্য ভাল লাগতো না। যা হয় ভালোর জন্যই হয়। এখন ঘুমা।
মা কথা বলতে বলতে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল। শুধু ঘুম নেই সুপ্তির দুচোখে। আকাশ-পাতাল ভেবে ভেবে দীর্ঘ রাতটা একটু একটু করে কেটে গেল।

শৌভিকের মেজাজটা খিটখিটে হয়ে আছে। গতকাল রাত থেকে ওর বন্ধুরা বলছে, “তোর জন্য বিশাল সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে মামু। শুধু সকাল হতে দে! দেখবি, আসল মজা কাকে বলে!
সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলল! অথচ সারপ্রাইজ দেওয়ার কোন নাম, গন্ধ নেই। সে যাগগে, গতকাল রাত থেকে সুপ্তিকে একবারের জন্যও দেখেনি শৌভিক। অথচ অবুঝ মন, ব্যাকুল হৃদয়, সুপ্তিকে এক পলক দেখার জন্য চাতক পাখির মতো অস্থির হয়ে আছে। পাশে নতুন বউ বসে আছে। সেদিকে শৌভিকের কোন ধ্যাণ-জ্ঞান নেই। এই মুহূর্তে দীপ্তিকেও খুব বিরক্ত লাগছে।
বিদায় বেলাও সুপ্তি সামনে এলো না। শৌভিকের মাথাটা ধীরে ধীরে গরম হয়ে উঠছে। দীপ্তির ন্যাকা কান্না অসহ্য লাগছে। চিৎকার করে সুপ্তিকে ডাকছে ইচ্ছে করছে। বলতে ইচ্ছে করছে,
“এই সুপ্তি এই? তুমি আমার সামনে আসছো না কেন? তোমাকে না দেখে, আমি জাস্ট পাগল হয়ে যাচ্ছি।”

বরযাত্রীরা নতুন বউ নিয়ে চলে গেল। শুধু গেল না আবিরের বাবা-মা। ড্রয়িং রুমের সোফায় সুপ্তির বাবা-মায়ের সামনা-সামনি বসে আছে। সুপ্তির বাবা ইতঃস্তত করে বলল,
-‘বেয়াই চা টা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। দয়া করে নিন?
আবিরের বাবা স্মিত হেসে বলল,
-‘অবশ্যই.. অবশ্যই।
আবিরের মা চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,
-‘সুপ্তি মামণি কোথায়?
-‘ওর তো আজ পরিক্ষা। বাসায় নেই।
-‘ওহ। যা বলতে চাইছিলাম, আমার ছেলে আবির কে তো দেখেছেন?
সুপ্তির মা বলল,
-‘হ্যাঁ..হ্যাঁ দেখেছি। বড় ভাল ছেলে আপনার।
তৃণারানী গলা পরিষ্কার করে নিয়ে, বলতে শুরু করল,
-‘আমার ছেলের একটা কালো অতীত আছে। বছর দুই আগে, খুব শখ করে, বেশ ধুমধাম করে আবিরের বিয়ে দিয়েছিলাম আমি। মেয়েটা দেখতে ছিল আগুন সুন্দরী। চোখ ধাঁধানো রুপ। বিয়ের পর থেকেই দেখতাম, আমার ছেলেটা কেমন মন মরা হয়ে থাকে, আগের মতো হাসে না, কথা বলে না, বাসায় বেশিক্ষণ থাকে না। গভীর রাতে বাড়ি ফিরে। এই নিয়ে প্রশ্ন করলেও আবির মুখ খুলতো না। শুধু বলতো, কিছু হয়নি মা। ও নতুন তো। তাই ওকে সময় দিচ্ছি।
নতুন বিয়ে করলে, দুজন থাকবে হাসি-খুশি। মিলমিশ থাকবে। দুজন ঘুরে বেড়াবে আরও কতকিছু। অথচ ওরা দুজন ছিল মুদ্রার উল্টো পিঠ। কেউ কারো সাথে প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথাও বলতো না। আমাদের সামনে যা একটু কথা বলতো। আমার অনুমানকে সত্যি প্রমাণ করে দিয়ে, মেয়েটা বিয়ের দুই মাসের মাথায় আমাদের সোনা-দানা, টাকা পয়সা চুরি করে একজন পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে গেল। অনেক পরে শুনেছি। দীর্ঘদিন না কী ওদের প্রেম ছিল৷ মেয়েটার বাবা ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে, রীতিমতো ছেলেটাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে, ঘরে আটকে রেখে, মেয়ের প্রেমঘটিত ব্যাপার গোপন রেখে, মেয়েকে আমার আবিরের সাথে বিয়ে দিয়েছে। যদিও এই কথা আমরা অনেক পরে জেনেছি। তারপরও ওরা খুব চেষ্টা করেছে, ওদের মেয়েকে আমার ছেলের কাছে গছিয়ে দিতে। কিন্তু আবির আর ওই মেয়ে নিয়ে সংসার করতে রাজি হয়নি। ওদের সেপারেশন চলছে!
সেই থেকে আমার ছেলেটা দ্বিতীয় বিয়ে করতে বড় ভয় পায়৷ কত বুঝিয়েছি! কিছুতেই আমার ছেলেটা আর বিয়েতে রাজিই হলো না। এভাবে কী জীবন চলে, আপনারই বলেন? আপনাদের বড়মেয়ে সুপ্তিকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে দিদি। ওকে আমার আবিরের জন্য দিবেন?
শেষের কথাটা খুব বিনয়ের সাথে বলল তৃণারানী।

সুপ্তির বাবা-মা দুইজনই অবাক বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। তারা মনস্থির করেছিল। দীপ্তির বিয়ের পর পরই সুপ্তিকে ভাল পাত্র দেখে, বিয়ে দিয়ে দেবে। কিন্ত এত তাড়াতাড়ি সুপাত্র পেয়ে যাবে। স্বপ্নেও ভাবেনি। শৌখিকের কাজের জায়গায় খোঁজ নিতে গিয়ে আগেই জেনেছে, শৌভিকের মামার বিশাল অবস্থা। ঢাকায় বাড়ি, গাড়ি, বড় বড় দুটো শো-রুম আছে। শৌভিকদের থেকেও অবস্থাসম্পূর্ণ তারা। এতবড় ঘর থেকে সুপ্তির জন্য এত তাড়াতাড়ি বিয়ের প্রস্তাব আসবে। তারা স্বপ্নেও ভাবেনি। দুজনের চোখ-মুখ আনন্দে চকচক করে উঠল।
তৃণারানী একটু থেমে বড় করে দম নিল। বলল,
-‘সুপ্তি মামণির সাথে দেখা হলো না। ওকে আবিরের বিষয়ে সবকিছু জানাবেন। নিজের ছেলে বলে বলছিনা দিদি। আমার ছেলেটা খাঁটি সোনা। আপনারা খোঁজ, খবর নিলেই জানতে পারবেন। যদি আমার ছেলের অতীত জানার পর সুপ্তি মামণি আমার ছেলেকে বিয়ে করতে আগ্রহ দেখায়। তবে আমাদের অবশ্যই জানাবেন। আমরা আর দেরি করব না। এই মাসেই ওদের চার-হাত এক করে দেব। এই যে আমাদের কার্ডটা রাখুন? সুপ্তির মতামত জেনে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন।
আবিরের বাবা-মা চলে গেল। আনন্দে সুপ্তির মায়ের চোখে জল এসে গেল। নিহারবাবুকে বলল,
-‘সুপ্তিকে জানানোর দরকার নেই। আবিরের আগেও বিয়ে হয়েছিল। আমরা এখানেই সুপ্তির বিয়ে দেব। এত ভাল সম্বন্ধ যেচে-পড়ে যখন এসেছে। কিছুতেই হাতছাড়া করব না।
নিহারবাবু ইতঃস্তত করে বলল,
-‘কিন্তু মেয়েকে আবিরের প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে, বিয়ে দেওয়া কী ঠিক হবে?
-‘কেন ঠিক হবে না? ওদের কী বাচ্চা আছে? নেই তো। তোমার মেয়ে সুখেই থাকবে দেখো।
-‘দ্যাখো.. যা ভাল বুঝো! এই নিয়ে পরে যেন অশান্তি না হয়।

শৌভিক- দীপ্তির বৌভাতের অনুষ্ঠানেও সুপ্তি এলো না। আবির খুব আশা করে বসে ছিল, এই বুঝি সুপ্তি আসবে! কিন্ত আবিরের আশাকে নিরাশা করে দিয়ে সুপ্তি এলো না।

রাত বারোটার দিকে বাসরঘরে ঢুকে, শৌভিক প্রথম কথা বলল,
-‘তোমার বড় বোনকে বিয়েতে দেখলাম কেন দীপ্তি? না কী ভয় পেয়েছে?
দীপ্তি কী উত্তর দেবে ভেবে পেল না। দীপ্তি জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিল। দীপ্তির র্নিলিপ্ততা সহ্য হলো না। শৌভিক রেগে গেল। বোধহয় নেশা করেছে। এক ধাক্কায় আচমকা দীপ্তিকে বিছানায় ফেলে দিল। সুপ্তিকে না দেখে এমনিতেই মাথায় আগুন ধরে গেছে। এখন দীপ্তিকে দিয়ে এর সমস্ত ঝাল মেটাবে শৌভিক।
অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে, দীপ্তি ছটফটিয়ে উঠল। শৌভিক এত জোরে দীপ্তির হাতদুটো চেপে ধরেছে, ব্যথায় চিৎকার করে কেঁদে দিল দীপ্তি। শৌভিক উন্মাদের মতো দীপ্তির গায়ের কাপড় দিয়ে হাত-মুখ বেঁধে ফেলল। তারপর ঠাণ্ডা চোখে দীপ্তির বুকের দিকে তাকিয়ে, কেমন করে যেন হাসল। দীপ্তির শরীরে চেপে বসে, শীতল কণ্ঠে বলল,
-‘ফিল্মি স্টাইলে আজ বাসর করব আমরা। প্লিজ এনজয় সুপ্তি।
দীপ্তির নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। একরাশ ভয়, আতঙ্ক চোখে, মুখে ভর করেছে। বিয়ে নিয়ে যে রকম ফ্যান্টাসিতে ভুগতো দীপ্তি। প্রথম রাতে তার কিছুই হলো না। উল্টো দীপ্তির শরীরে জোঁকের মতো কিলবিল করা মানুষটার প্রতি, বড় বেশি বিতৃষ্ণা এসে গেল। জ্ঞান হারানোর আগে আরও একটা কথা দীপ্তি স্পষ্ট শুনেছে, মানুষটা কেমন আকুল হয়ে তখন ‘সুপ্তি’ বলে ডাকছিল, দীপ্তিকে।

(চলবে)