নরপিচাশ ফুফি পর্ব-০৫

0
1345

#নরপিচাশ_ফুফি
#পর্ব_৫ম
#লেখক_আরিয়ান

~~~~~আরিয়ান কথা বলেই কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছেনা অন্তরার। কারণ ওদিকে তার একমাত্র ছোট্ট মেয়ের তনুকে নিয়ে চিন্তায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। যখন কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছিনা তখন আরিয়ান দ্রুত ওয়াশ রুমে চলে যাই এবং দেখতে পাই তনু বেহুশ এবং তার সাথে সাথে অন্তরাও। জোরে একটা চিল্লানি দেয় আরিয়ান। আরিয়ানের চিল্লানোর শব্দ শুনে এদিকে আরিয়ানের বাবা-মা সবাই আরিয়ানদের রুমের দিকে চলে আসলো। এসে দেখতে পেল তার বৌমা এবং তার ছোট্ট নাতনি বেহুশ অবস্থায় পড়ে আছে।

সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্স খবর দিল এবং দ্রুত সাথে তনুকে এবং অন্তরাকে হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করলো।

ডক্টর বললেন তনুকে দ্রুত ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটারে নিতে হবে। এদিকে অন্তরার জ্ঞান ফিরে আসলো জ্ঞান ফিরে আসার সাথে সাথে সে প্রশ্ন করলো আমার মেয়ের তনু কোথায়?

আমার মেয়ে তনু কি ঠিক আছে?

হ্যা ঠিক আছে তুমি প্লিজ টেনশন করবে না। তখন আবারো প্রশ্ন করল অন্তরা -আমার মেয়ের তনু কোথায় আমি তাকে দেখতে চাই।

অন্তরা কান্নায় ছটফট করতে লাগলো আর বলতে লাগলো তোমরা সবাই মিথ্যে কথা বলছো?
আমার মেয়ে তনু ভালো নেই। অন্তরা কান্না করতে করতে বলতে লাগলো আমার মেয়ে বাঁচবে তো? আমার মেয়ের যদি কিছু হয় আমি কিন্তু কাউকে ক্ষমা করব না।

তখন আরিয়ান বলল তুমি টেনশন করবে না আমাদের মেয়ে তনু ঠিক আছে। কোথায় আছে আমাকে নিয়ে যাও।

তখন অন্তরাকে তনুর যেখানে অপারেশন করতেছে তার দরজায় সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর বললো ডক্টর কি বলছে?

ডক্টর বলেছে অপারেশন করতে হবে। ওখানে নাকি ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে। যদি অপারেশন না করা হয় মেয়ের সবচেয়ে বড় একটা সমস্যা হতে পারে।

এজন্য তনুকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্লিজ অন্তরা তুমি আল্লাহকে স্মরণ করো আর বলতে থাকো আল্লাহ আমাদের এই ছোট্ট মেয়েটা যেন তাকে নেক হায়াত দান করুক।

যে বিচার হোক সেটা আমরা বাড়িতে যেয়ে করব ইনশাআল্লাহ আমার বোন বলে পার পেয়ে যাবে না অবশ্য তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।
আমার বোন হয়ে কিভাবে তার আপন নিজের ভাইয়ের মেয়ের সাথে এই কাজটা করতে পারে। এর শেষ এবার আমিও দেখতে চাই। সে আমার বোন আমি ভুলে যাব। এতটুকু একটা অবুঝ বাচ্চার সাথে এই ধরনের যৌ*ন হয়রানি কিভাবে করে। একটিও বিবেকে বাধা দেয় নাই।

ওকে আমি সবচেয়ে আদরের রাখতাম আমার ছোট বোন বলে। যখন যেটা চেয়েছে তখন তাই আমি দিয়েছি। কখনো কোন জিনিসের অভাব বোধ করতে দেইনি। কারন সে আমার ছোট বোন তামান্না। বাবা মায়ের অনেক আদরের মেয়ে ছিল। বাবা যখন স্টক করে তখন থেকে আমি ওকে সবকিছু দেখভাল করতাম। কখনো বোন মনে করতাম না। নিজের মেয়ের মতন করে ওকে বড় করেছি।

তামান্নাকে সবসময় আগলে রাখতাম জেনারেল কখনো ভর্তি করা হয় নাই। যদি বন্ধু বান্ধবের সাথে চলে খারাপ হয়ে যাই। এতে আমাদেরই মান সমান হানি হবে। এজন্য ওকে মাদ্রাসাতে ভর্তি করি। আর সব সময় পর্দার থাকার আদেশ করতাম।

আর সেই বোন এই পর্দার আড়ালে এতটা খারাপ হতে পারে এটা আমি কল্পনাও মেনে নিতে পারছি না।

প্লিজ অন্তরা তুমি শান্ত হও আমি এর শেষ অবশ্যই দেখবো। এরমধ্যে বাবা-মা জেনে গিয়েছে তনুর সাথে কি হয়েছে। মা অনেক রেগে আছে।
মা এক কথায় বলে যাচ্ছেন আমার নাতনির এত বড় সর্বনাশ কে করেছে আমি তার নামটা শুনতে চাই।

আমি এখনো কিছু বলি নাই। যদি বলি আমার মা অনেক কষ্ট পাবে এই মুহূর্তে। আল্লাহর কাছে মিনতি করো আমাদের মেয়ে সুস্থতার সাথে আমাদের মাঝে যেন আবার আসে।

এরই মধ্যে ডক্টর অন্তরকে ডাক দিল। যেহেতু আমাদের মেয়ে তনু। সেক্ষেত্রে এই অপারেশনটা করবে একটা মেয়ে ডক্টর।

অন্তরা যখন ডাক দিল তখন অন্তরা ডক্টরের সাথে দেখা করতে গেল।
ডক্টর কিছু প্রশ্ন করল।
ডক্টর -আচ্ছা ম্যাম আপনাকে কিছু প্রশ্ন করি?
অন্তরা জি অবশ্যই করতে পারেন।
কিন্তু একটা কথা আপনি আমাকে বলবেন আমার মেয়ে তনু কি অবস্থায় আছে এখন একটু বলবেন প্লিজ।

তখনই ডক্টর রাজিয়া বেগম বললেন এত বড় একটা বাজে কাজটা কে করেছে?
এটা কি আপনাদের জানা আছে?
যে করেছে আমার মনে হয় সে নরপিচাশ ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
একটা মানুষ জীবনেও একটা মানুষের এভাবে ক্ষতি করতে পারে না।

মেয়েটা কান্নায় ছটফট করতেছে আমারি দেখে নিজের চোখে পানি চলে আসছে। এতোটুকু একটা ছোট্ট মেয়ের সাথে কেমনে করতে পারলো।

আপনারা কি থানায় জিডি করেছেন?
অন্তরা তখন বলল দেখেন ডক্টর এটা আমাদের নিজেদেরই মানুষ।
আগে আমাদের মেয়ে সুস্থ হয়ে ফিরুক তারপরে এর বিচার অবশ্যই হবে।
আগে বলেন আমার মেয়ের কি অবস্থা আছে এখন?
তখনই ডক্টর বললেন ঘুমের ওষুধ দিয়ে এসেছি?
কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার মেয়েকে অপারেশন করতে হবে।

ইনশাআল্লাহ আপনার মেয়ে ভালো হয়ে আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসবে।

ডক্টর রাজিয়া বেগমের কথা শুনে অন্তরা জানে একটু পানি আসলো। অন্তরা অনেক টেনশনে ছিল তার মেয়েকে নিয়ে সে শুধু ভাবতে লাগছিল যে আমার মেয়ের যদি কিছু হয়ে যায় একটা সবই উপরওয়ালার ইচ্ছা ইনশাল্লাহ আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে আবার আসবে।

ডক্টর রাজিয়া বেগম বললেন আপনার মেয়ের তনুকে এখনই আমরা অপারেশন করতে নিয়ে যাবো।
আল্লাহকে ডাক দেন।
আমরা তো শুধুমাত্র ডাক্তার বাঁচানোর মালিক কিন্তু ওই উপর আল্লাহ।

তখনই অন্তরা বললেন আমার এই মাসুম বাচ্চাকে ঠিক উপর আল্লাহ বাঁচিয়ে দিবেন ।

এই বলে ডক্টর অপারেশন করতে নিয়ে চলে গেল তনুকে!!!

#চলবে (কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌❌❌)