#নরপিচাশ_ফুফি
#পর্ব_৬
#লেখক_আরিয়ান
।
।
।
ডক্টর তনুকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার পরে এদিকে সবাই ব্যস্ত তনুকে নিয়ে, কিন্তু সবাই আরেকজনকে দেখতে পাচ্ছে না।
বাড়ির একজন সদস্যকে সেটা কে হতে পারে নিশ্চয়ই তামান্না। বাড়িতে এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তামান্নার আগমন এখনো ঘটে নাই এই হসপিটালে। অন্তরা বারবার বলতেছেন তার স্বামীকে আরিয়ান তুমি যদি এর বিচার না করো আমি কিন্তু আইনের সহায়তা নিতে বাধ্য হব।
এত বড় জঘন্য কাজ তোমার বোন কিভাবে করতে পারে এই ছোট্ট বাচ্চা আমার মেয়েটার সাথে? তোমার বোনকে তুমি কত ভালবাসতে তনুর আব্বু। আর সেই বোন নর পিচাশ মতন করে আমার এই ছোট্ট মেয়েটার সাথে এ কাজটা করল।
“কিভাবে,কিভাবে,কিভাবে ”
সত্যি আমি আর নিতে পারছি না। অন্তরা এই বলতে বলতে আবার অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেছে। এরই মধ্যে নার্সকে ডাক দিল আরিয়ান। সাথে সাথে নার্স এসে অন্তরাকে নিয়ে গেল বেডে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে আবার অন্তরা জ্ঞান ফিরে এলো।
জ্ঞান ফিরতেই বলতে লাগলো দেখছো তোমার বোন কতটা নিষ্ঠুর আমার এই ছোট্ট মেয়ে মৃ*ত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে অথচ এখনো এই হসপিটালে তাকে দেখতে আসলো না । কতটা জঘন্যতম কাজ করেছে তবু যদি একবার হসপিটালে তনুকে দেখতে আসতো তাও নিজেকে সান্তনা দিতে পারতাম।
আমি সত্যিই তোমার বোন তামান্নাকে আমি ছেড়ে দেবো না । তুমি যদি এর মধ্যে বাধা দিতে আসো তাহলে তোমাকেও ছাড় দেবো না। ভুলে যাবো তুমি আমার স্বামী।।!!
আরিয়ান তখন বললো তোমার কিছু করা লাগবে না।
ওর জন্য আমি কি করি নাই। জীবন আমার এই ছোট্ট মেয়েটার সাথে এই কাজটা করলো?
এদিকে অন্তরা কানতাছে আর বলতেছে তার স্বামী আরিয়ানকে। আর বারবার বলতেছে আল্লাহ তুমি আমার এই ছোট্ট মেয়েকে অতি দ্রুত সুস্থ করে দাও।
অন্তরা বারবার অপারেশন যে রুমে হচ্ছে সেই রুমে সামনে আল্লাহকে ডাকছে আর কান্না করতেছে। অন্তরা বলতেছে আল্লাহ তুমি আমাকে নিয়ে যাও তবু আমার এই ছোট্ট মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখো।
ওদিকে শাশুড়ি কান্নায় ছটফট করতেছে। কারণ আমাদের মেয়ে তনু অনেক বছর পরে হয়েছে। প্রথমে আমাদের কোন সন্তান হচ্ছিল না। এ নিয়ে আমাকে অনেকে অনেক কথা বলেছিল। আল্লাহর কি রহমত আমাদের বিয়ের ঠিক দশ বছর পরে আমার এই মেয়ে তনু পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন।!
।
।
আমার মেয়ের তনু যখন পৃথিবীতে আসলো বাড়িতে মনে হচ্ছিল আকাশ থেকে নেমে পরী এসেছে আমাদের বাড়িতে। আমার শাশুড়ির তো দুই নয়নের মনি আমার মেয়ে তনু। শাশুড়ি এদিকে অনেক কষ্ট পাচ্ছে তবুও আমার কাছে এসে বলতেছে বৌমা তুমি টেনশন করো না দেখো ঠিক আমাদের তনু আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবে। আর এই কাজটা আমাদের ছোট্ট মেয়ের তনুর সাথে কে করছে অবশ্য খুঁজে বের করতে হবে। এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে এমন কাজটা অন্য কারো সাথে আর না করতে পারে।
অন্তরা মনে মনে ভাবতে লাগলো আম্মা এই কাজটা কেউ করে নাই তোমার মেয়ে তামান্না করেছে।
কিন্তু এই কথাটা বলতে পারছে না তার শাশুড়িকে।
অন্তরা ভাবতেছি আর মনে মনে ঠিক করতে লাগলো তার মেয়ে তামান্না এই কাজটা করেছে এ কথাটা সে বলবে। শাশুড়ি আমার সাথে কথা বলার পরে আমাকে বললো তামান্না কে দেখছি নাতো ও আসে নাই বৌমা?
মেয়েটা যে কি করে সারাদিন এত বড় একটা বিপদ তবু তাকে দেখছি না এই হসপিটালে। আচ্ছা বৌমা তুমি একটা কাজ করো তো তামান্নাকে কল করো?
ওর সাহস কি করে হয় এখনো পর্যন্ত বাড়িতে কি করে আমার কলিজা নাতনী মৃ*ত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে। আর ও এখনো বাসায় রয়েছে কেন?
তুমি দ্রুত ফোন দাও আর আমার সাথে কথা বলতে দাও।
তখন শাশুড়ি আম্মার কথা শুনে অন্তরা কে দ্রুত কল দিলে তামান্নাকে।
তামান্না কল রিসিভ করলো শাশুড়ি তখন কথা বলল।
এই তুই কোথায় রে?
তোর সাহস কি করে হয় এখনো পর্যন্ত তুই হসপিটালে আসোস নাই কেন ?
তুই জানোস না হসপিটালে আমাদের আদরের নাতনি আজ মৃ*ত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে?
তামান্না কোন কথা বলতেছে না।
তামানা বললো মা আমার একটু কাজ আছে এই কারণে আমি এখনো হসপিটালে আসতে পারি নাই।
তবে আমি খুব দ্রুত হসপিটালে আসতেছি।
তুই কি বললি তোর কাজ আছে আমার আদরের নাতনির থেকে তোর কাজ আগে?
বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ কান্নাকাটি করতে করতে অবস্থা খারাপ আর তুমি ওদিকে কাজ নিয়ে আছো।
যেই ভাই ভাবী( কারণ অনেকে কপি করতেছে আমার এই গল্পটা তাই লেখকের এর রিয়েল পেজ সবাই ফলো করবেন👉@ নিস্তব্ধ শহর ) তোর জন্য কত কিছু করছে এমনকি তুই যখন ছোট ছিলি তখন থেকে তোর ভাই দেখ ভাল করতেছে। আর এদিকে তনু হসপিটালে আর তুই বলছিস কাজ আছে বাহ তামান্না। তুই কিভাবে এত নিষ্ঠুর হতে পারলি।
ভুলে যাসনে এখনো পর্যন্ত তোর ভাইয়ের খরচে লেখাপড়া খাওয়া-দাওয়া সব কিছু করছিস। এমন কিছু করিস না ভুলে যাই তুই আমার মেয়ে।
তোর ভাবি অলরেডি অজ্ঞান হয়ে পড়েছে দুইবার। তোর ভাইয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না। সবার একই অবস্থা আর তুই ওদিকে কাজ নিয়ে রইছোস।
আমার যেন বাসায় না যেতে হয়। যদি বাসায় যেতেই হয় তাহলে কিন্তু তোর খবর আছে।
এই বলে শাশুড়ি আম্মা কল কেটে দিল।
কিছুক্ষণের মধ্যে ডক্টর অপারেশন শেষ করল। ডক্টর যেই অপারেশন রুম থেকে বের হল তখনই সবাই দ্রুত ছুটে গেল ডক্টরের কাছে, অন্তরা ডক্টর কে বলল কান্না করতে করতে আমার মেয়ে তনুর কি অবস্থা?
ডক্টর তখন বললেন আলহামদুলিল্লাহ অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। কিন্তু একটা দুঃখের সংবাদ আছে?
সবাই ছটফট করতে লাগলো কথাটা শোনার জন্য ,
সবাই বললেন আচ্ছা ঠিক আছে কি কথা বলেন তো?
ডক্টর তখন বললেন এতটাই ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে যে এই ছোট্ট মেয়ে তনু যৌ*ন জায়গাটায় তাই কখনো সে মা হতে পারবে না বিয়ে হলে।
ডাক্তার বললেন,কিন্তু আপনাদের কাছে একটা রিকোয়েস্ট এই কথাটা কাউকে বলবেন না।
যদি বিশেষ করে এই ছোট্ট মেয়েটা শুনে তাহলে সে অনেক কষ্ট পাবে।
এ কথাটা শোনার পরে বাড়ির সবাই আল্লাহকে ডাকতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন আল্লাহ তোমার কাছে কি অন্যায় করেছিলাম আমরা এত বড় শাস্তি আমাদের ছোট্ট মেয়েকে দিলে।
অন্তরা তখন ডক্টর কে জিজ্ঞাসা করলেন কতক্ষণ পরে আমার মায়ের সাথে আমরা দেখা করতে পারব?
ডক্টর বললেন অর জ্ঞান ফিরতে ফিরতে সকাল হয়ে যাবে। আপনারা এক কাজ করেন বাইরে ঘুমায় যান। অনেক কারণে আর রাত জাগবেন না।
নার্স ওখানেই থাকবেন যদি জ্ঞান ফিরে অবশ্যই আপনাদেরকে ডাক দিবেন।
ডক্টর আরো একটা কথা বললেন আমার জীবনে কখনোই এমন অপারেশন করি নাই আজকে আমার জীবনের ফার্স্ট এই ছোট্ট মেয়েটা কে অপারেশন করা।
মেয়েটাকে অজ্ঞান করেছিলাম কিন্তু যখন অপারেশন করি চিল্লান মেরে কান্না করতে লাগলো।
আমিও তখন কান্না থেমে রাখতে পারলাম না। তখন মেয়েটাকে আমি বললাম আম্মু তুমি টেনশন করো না ভালো হয়ে যাবা। আল্লাহর অশেষ রহমত ভালোভাবে অপারেশনটা করে নিজের কাছে নিজে ভালো লাগতেছে।
আর এই ছোট্ট মেয়েটার সাথে যে নিকৃষ্ট কাজ টা করেছেন। দোয়া করি তার শাস্তি আল্লাহ অবশ্যই দিবেন। আর আপনারা কি করবেন সেটা আপনারাই ভাল জানেন।
এই বলে ডক্টর আমাদের সামনে থেকে কান্না করতে করতে চলে গেলেন।
ডক্টরের কথা শুনে এবং কান্না দেখে অন্তরকে আর ঠেকানো যাচ্ছে না সে তার মাথা ওয়ালের সাথে বাড়ি মারতে লাগলো আরিয়ান দ্রুত এসে থামালো। আর বলল তুমি এভাবে ভেঙে পড়ো না। অবশ্যই এর বিচার আমরা করব।!!
কিন্তু যখন মাথা ওয়ালের সাথে মারতে লাগলো আর তামান্নার কথাটা মুখ থেকে বেরিয়ে যায়। কথাটা স্পষ্ট তার শাশুড়ি শুনতে পায়।
শাশুড়ি কিছু বলতে যাবে তখনই?!!!
#চলবে? ( কপি সম্পূর্ণ নিষেধ ❌❌❌)