নির্বাসিত ফুল পর্ব-০৩

0
12

#নির্বাসিত_ফুল
#কলমে_তানজিলা

৩.

সব কার্যক্রম শেষ করে আমি চললাম আমার পথে। তৎক্ষণাৎ হাঁপাতে হাঁপাতে আমাকে কেউ ডাকল। থামলাম; দেখলাম, আমার শ্বাশুড়ি। প্রাক্তন শ্বাশুড়ি। উনি আশেপাশে দেখছেন, বোঝা গেল লুকিয়ে এসেছেন। আমি কিছু বলব তার আগেই উনি ওনার ব্যাগ থেকে কাপড়ে মোড়ানো কিছু হাতে দিলেন। আমার বুঝতে বাকি রইল না। গহনা হবে এগুলো। আমি বেশ অবাক হলাম। বিহ্বলিত দৃষ্টিতে তাকাতেই উনি বললেন, ‘এগুলো তোমার হক। আমানত ছিল, তোমার কাছে দিলাম।’

আমার চোখ ছলছল করে উঠল। শ্বাশুড়ি মা সত্যি ভালো মনের মানুষ। নির্যাতন, অত্যাচারের কবলে পড়লেও ওনার ভেতরকার ভালোটা কোথাও লুকিয়ে পড়েছে, তবে বেঁচে আছে। ওসব অমানুষের চাপায় পড়ে আছেন উনি, যেখান থেকে বেরোনোর পথ নেই ওনার।

শ্বাশুড়ি মা চটজলদি চলে গেলেন। আমি অপলক তাকিয়ে সবগুলো ঢুকালাম। এখন বুঝলাম, মোহরানার কথা বলতে কেন প্রাক্তন শশুর বলেছিলেন, সব আমার আমার কাছেই আছে। তখন ভেবেছিলাম, মিথ্যে বলছেন। কিন্তু নাহ! যাক, দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি চললাম আমার নতুন পথে…

আমি গিয়ে উঠলাম আপার বাড়িতে। আপাতত আপার বাড়িতেই থাকতে হবে। এরমধ্যে আপার ডেলিভারি হলো। ফুটফুটে পুত্র সন্তান হলো। আপার বড় মেয়েও আছে। হাসপাতালে আমি শুধু দুলাভাইকে দেখছিলাম, কী অস্থিরতা তার। আপার শশুর শ্বাশুড়িও কী যত্নশীল। যদি আপার একটা দেবর থাকতো, তবে বিনাদ্বিধায় এ বাড়িতেই আমি বিয়ে করতাম। কিন্তু নেই, আফসোস রয়ে গেল।

আজকে বাবা এসেছেন হাসপাতালে। কি হাসিখুশি মুখখানা। আমাকে দেখতে মুখটা ভার হলো। আমি দৃষ্টি সরিয়ে নিলাম। ওনার মুখটা দেখতে ইচ্ছে করেনা, ঘৃণায় নয়। কষ্টে!
সেদিনটা আমি হাসপাতালে থাকলাম না। সন্ধ্যারাতে বাড়ি ফিরলাম। ফেরার পথে আমি কাদলাম। ভীষণ কাদলাম। বাড়িতে মানুষের সামনে কাদতে পারতাম না। আজ মনখুলে কাদলাম। এমন কান্না আমি শেষবার, মা মরার সময় কেঁদেছিলাম। জীবন কী বিচিত্র! দুজনে আপন বোন অথচ জীবনের কী তফাৎ। এমন জীবন আমার হলো না কেন? বাচ্চা কোলে নিলে মনটা নিমিষেই ঠান্ডা হয়ে যায়।

নিজেকে শক্ত করতে লাগলাম। ভেঙে পড়লে চলবে না। আমি আজ ভেঙে পড়লে, নিজের সঙ্গে নাহয় মানিয়ে নিলাম কিন্তু সমাজ? সমাজ আঙুল তুলবে, বলবে—খুব তো ঢং করে ডির্ভোস নিল, এখন কী বিড়ম্বনা? আমার কারণে আর চার পাঁচটা মেয়ের উপর আঙুল উঠবে, তারা সাহস পাবেনা। আমার জন্য তাদের কথা শোনানো হবে। না, এটা হতে দেয়া যাবেনা।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের মনকে শক্ত করলাম। অতি আবেগী হতে নেই। আবেগ একটাসময় নিজের কাল হয়ে দাঁড়ায়, তাই যথাসম্ভব নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। আমিও নিজেকে নিজে প্রতিজ্ঞা করলাম, হালাল পথেই নিজেকে গড়ে তুলব। যাতে আমার সিদ্ধান্তকে কেউ আঙুল তুলতে না পারে।

বাবু হওয়ার পর আপা অসুস্থ হয়ে পড়ল। দুটো বাচ্চা সামলা চারটিখানেক ব্যাপার নয়। আপার শশুর শ্বাশুড়ি বয়স্ক মানুষ। নানান রোগব্যাধি লেগেই আছে, অসুস্থ মানুষ। দুলাভাই তো সারাদিন অফিসে থাকছেন, যেহেতু আপার ডেলিভারির সময় এক্সট্রা ছুটি কাটিয়েছিলেন। আমি এর মধ্যে যেতে চাইলাম, কিন্তু সকলে আমাকে বারণ করল। অবশ্য এতে আমারও ভালো হলো। ঠিকঠাকভাবে নিজের ব্যবস্থা করার সময় পেলাম।

আপার শ্বশুরবাড়িতে থেকে বুঝলাম, প্রকৃত সুখ কখনই টাকায় পাওয়া যায়না। টাকাতে কোন সুখ নেই। আমাদের দেশের অধিকাংশই ধারণা মেয়ের বড় বাড়ি, টাকা পয়সাওয়ালা বাড়িতে বিয়ে দিলে মেয়ে সুখী হবে। কিন্তু এ ধারণা ভুল। বরঞ্চ ভালো মানসিকতা হলে তবেই সুখ পাওয়া যাবে। এইযে, আমার শ্বশুরবাড়িতে শশুর স্বামী দুজনই ইনকাম করত অথচ বাড়িতে একটা ভিক্ষুক আসলে তাকে খুচরো টাকা দেয়ার মত হাতে টাকাপয়সা টুকু থাকতো না। মাঝেমধ্যে একটু আধটু পাওয়া যেত, তাতেও কম কথা শুনতে হতো না।
অন্যদিকে আপার সংসার শুধুমাত্র দুলাভাইয়ের টাকায় চলে। নিজের বাবা-মা, আপা সবাইকে দুলাভাই টাকা দেন। তারা কত সুখী, কত খুশি। কারণটা আসলে টাকা নয়, কারণটা মানসিকতা। আপার পরিবারের মানসিকতা উন্নত, আর আমারটায় ছিল সংকীর্ণ।

আপার বাড়িতে থাকা অবস্থাতেই আমি চাকরির খোঁজ লাগালাম। অনার্স যেহেতু কমপ্লিট ছিল। কিন্তু চাকরির বাজার কী এত সহজ? মানুষ পাবলিকে পরেও পায়না, সেখানে আমি ন্যাশনাল। চাকরি পেলাম শো রুমের সেলস ম্যানের। কিন্তু সেসবে গেলাম না। আমার গয়নাগুলো বিক্রি করে বেশ ভালো টাকা পেলাম। হিসেব অনুযায়ী পাঁচমাস চলতে পারব। অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটা টিউশনি পেলাম, সেই সূত্র ধরে কিছুদিনের মধ্যেই আরেকটা টিউশনি পেলাম। বাসায় গিয়ে পড়াতে হবে, চারহাজার টাকা পাওয়া যাবে। তবে পড়াতে হবে দুঘন্টা করে, দুটো সাবজেক্ট। চার ঘণ্টা যাবে, আবার বাড়িও বেশ দূরে, অলিগলিতে। তাদের ডিমান্ড অনুযায়ী টাকা কম ছিল, তবুও এই সময়ে আমার কাছে এটাই বড় মনে হলো, তাই না করিনি। কথায় আছে, ‘নাই মামার থেকে কানা মামা ভালো।’ এমন অবস্থাই আমার।

টিউশনি পাওয়ার পর আপাকে জানালাম। আপা খুশি হলো। আমি আলাদা বাসা দেখেছি। পুরোপুরি বাসা বললে ভুল হয়, ওখানে ফুল ফ্যামিলি থাকে একটা। তাদের বাড়ি। বাড়তি ঘর থাকায় মেয়েদের ভাড়া দিয়েছে। দুজন থাকছে সেখানে। আমিও ওখানেই জয়েন করব। আপা মানতেই চাচ্ছিলেন না, কিন্তু উপায় নেই। আপার ডেলিভারির একমাস পেরিয়েছে। আর কতদিন পড়ে থাকব এখানে? পরে না, আপার শ্বশুরবাড়ির উপর বোঝ হয়ে যাই। যদিও এখনও তারা কিছুই বলেনি। তবুও আমার বিবেক সায় দিচ্ছে না এখানে থাকার। আমার জন্য যদি আপাকে কথা শুনতে হয়? একা হাতে দুলাভাই সংসার চালাচ্ছে। সেখানে এতদিন কেই বা থাকতে দেয়? তারা যা করেছে, তার ঋণ শোধ হবেনা কখনও। সুখের সময় সবাইকে পাশে পাওয়া যায়, দুঃখের বেলা কজনে থাকে?

তারপর এল আমার বিদায়ের পালা। আপা কাদছেন। যাওয়ার আগ মুহূর্তে দুটো স্বর্ণের দুল হাতে দিলেন। চিনতে ভুল হলো না আমার, এগুলো আমার মায়ের। বাবা বিয়ে করার জন্য আপা এগুলো নিয়ে রেখেছিল। আপা আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘এগুলো রাখ তোর কাছে। প্রয়োজনে যা করার করিস, কষ্ট করে থাকিস না। মায়ের বালা দুটোও আছে, লাগলে ওগুলোও নিস।’

আমি আপাকে বললাম, ‘এসব তোর কাছেই রাখ আপা। আমার কাছে টাকা আছে। লাগলে নেব।’
আপা নাকচ করলেন, ‘না, এগুলো বিক্রি করিস, যা যা লাগে সব কিনিস। আমাদের মায়েরই। আমার কাছেই কেন রাখব শুধু? এগুলো আমাদের দুজনের হক। এসময় তোর বেশি প্রয়োজন।’
আমি নিলাম। আপা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তোর আপার সবসময় আছে। যেকোন সমস্যা হলে জানাবি।’
আমি ক্ষীণ হাসলাম। ‘আচ্ছা’ বলে চললাম। নতুন জায়গায় শিফট হলাম। বাকিদুজন রুমমেট ওরা আমার জুনিয়র। সবে অনার্সে উঠেছে। কথাবার্তা বলে ভালো মনে হলো।

আমার গয়নাগুলোর বিক্রির টাকা থেকে দশহাজার টাকা আমি আপাকে দিলাম। মায়ের গয়না গুলো বিক্রি করলাম না আপাতত, যেহেতু টাকা আছেই। আপা টাকা নিতে নাকচ করছিলেন কিন্তু আমি জোর খাঁটিয়ে দিলাম, মায়ের গয়নায় তারও হক আছে। আমি আরেকটু বেশি করে দিতে চাইলাম, কিন্তু আপা মানছিলেন না। তাই দশ হাজার টাকাই জোরপূর্বক দিয়ে দিলাম। আমার উপর অনেক খরচ হয়েছে এ কদিনে, তবুও যে দুলাভাই তাকে একটা কথাও শোনায় নি, এমন সৌভাগ্য কজনের হয়? আমি আমার যাবতীয় জিনিসপত্র কিনলাম। অনেক টাকা খরচ হলো।

আমার দিনগুলো খুব একটা সুখের ছিল না। প্রচণ্ড একাকিত্ব লাগতো, চিন্তা ভাবনা সারাদিন কাটত।বিয়ের প্রথমদিকের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। নিজের জীবন নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। ডিভোর্সী শব্দটাকে মানুষেরা সংকীর্ণ, অন্যরকম দৃষ্টিতে কেন দেখে? আমি ডিভোর্সী জানার পর মেয়ে দুটো বেশ অবাক হয়। কথা বলা কমিয়ে দিচ্ছে। তাদের পরিবর্তন ধরতে অসুবিধা হয়নি আমার।
এরপর বাসায় থাকা ফ্যামিলির আন্টিও জানলো। মূলত তিনি তার কোন আত্মীয়ের জন্য আমাকে পছন্দ করেছেন। তারপরই তাকে বললাম। খুব আগ্রহ নিয়ে কারণ জানতে চাইলেন। আমি স্বাভাবিক বললাম। অথচ তিনি কত সহজেই বললেন, ‘ওই একটু আধটু হয়, এতটুকু সংসারে মানিয়ে নিতে না পারলে সংসার টিকবে না। তোমারও টিকে নি। একটু সেক্রিফাইজ করতেই পারতে। এখন জীবন দেখো!’
আমি হতবিহ্বল হয়ে ছিলাম। সমাজটা এমন কেন? কেন এসব ভায়োলেন্সকে এত ছোটভাবে দেখে? আমি ছোট বাচ্চা? যে আমাকে শাসন করে বুঝাবে? আচ্ছা মেনে নিলাম, মারুক, কিন্তু যৌক্তিক কারণ দেখাক? আমি পরকীয়া করেছি? নাকি ওর অবাধ্য হয়ে চলাফেরা করেছি? কোনোটাই তো করিনি। শুধু নিজের স্বস্তির জন্য মাঝেমধ্যে বলতাম, তাতেও পোষালো না তাদের!
যদিনা এসব করতাম, আমাকে মারাটা আমি মেনে নিতাম। কিন্তু খালি খালি, কারণ ছাড়া, কথার অমিলহলেই আমি কেন মার খাবো? একটা ছোট বাচ্চাকেও তো তার বাবা মায়েরা গুরুতর কারণ ছাড়া গায়ে হাত তোলে না, সেখানে স্বামী স্ত্রীর মতো পবিত্র সম্পর্কে গায়ে হাত তোলাটা কিভাবে জাস্টিফাই করে মানুষ? বর্তমান কিছু মানুষের জন্যই ইনিয়ে বিনিয়ে একটু আধটু হাত তোলাটাকে নরমালাইজ করা হয়েছে। ওই একটু থেকে একসময়, ভয়ঙ্কর রূপে যেতে শুরু করে। অথচ তারা বুঝেনা।

যাইহোক এ বিষয়ে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করেনা। আমি শুধু নিজের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি। আমার মতন হাজারো মেয়েরা আছে, যারা আরও অসহায়। তাদের কিছু নেই, কোথাও যাওয়ার, না আর্ন করার সোর্স। একারণেই তো দেখি বাচ্চা নিয়ে কত মেয়েরাই ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। ভবিষ্যতে তাদের জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছে আছে। দেশে বৃদ্ধা আশ্রমের অভাব নেই, অথচ অসহায় নারীদের জন্য কোন আশ্রম নেই। আমি চাই তাদের জন্য কিছু করতে। এর জন্য আগে আমাকে নিজের ক্যারিয়ার দার করাতে হবে।

টিউশনি করছি। পাশাপাশি চাকরির প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। এছাড়াও আমি মাস্টার্সে ভর্তি হয়ে গেলাম। কয়েকটা মাস গেল। মাস্টার্সের বই- চাকরির জন্য বই কিনতে আমার অনেক টাকা গেল সে মাসে। যত সাশ্রয় করে চলব ভেবেছিলাম, ততটা হয়নি। প্রথম প্রথম, তাই বেশি টাকা গেছে। ধীরে ধীরে আমি একটা কোচিং সেন্টারে জয়েন করলাম। কিন্তু টাকা একটু কম। কষ্ট হলেও করলাম। দুই- আড়াইমাস যেতেই আমি উপলব্ধি করতাম, আমার পক্ষে একসঙ্গে মাস্টার্স, চাকরি, টিউশনি, কোচিং সম্ভব নয়। কী করব ভেবে উঠতে পারলাম না, তাই তখন শুধু চাকরির প্রস্তুতিটাই ভালো করে নিতে লাগলাম কারণ প্রাইমারীর শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার ছেড়েছিল। মনে প্রাণ এক করে পড়তে লাগলাম। যে কারণেই হোক চাকরীটা আমাকে পেতেই হবে। চাপ বেশি লাগছে বলে, টিউশনিটা দুটো ছেড়ে দিলাম। সময় ঘনিয়ে এল চাকরির পরীক্ষা। অবশ্য তার জন্য ভালো একটা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। পরীক্ষা দিলাম, মনে আশা রাখলাম ইন শা আল্লাহ আমার চাকরিটা হবেই হবে। পরীক্ষা ভালো হয়েছে। সময় কাটতে লাগল আপন গতিতে। রেজাল্টের সময় ঘনিয়ে এল। এরই মধ্যে আমার জীবনে আরেকটা দুঃসংবাদ এল। কোচিংয়ের চাকরিটা চলে গেল। মনে মনে হতাশা হলো। এখন আমি কী করব? গয়নার যা টাকা আছে, তাতে বড়জোর টেনেটুনে এক দেড় মাস যাবে। তবে একটা বিষয় আশ্বাস পেলাম, চাকরিটা তো নিশ্চয়ই হবে। অত চিন্তার কিছু নেই। কোনরকম দুটোমাস চললেই হবে আমার। দেখতে দেখতে রেজাল্টও বেরিয়ে পড়ল। আমি খুব আশা নিয়ে প্রসন্ন মন নিয়ে দেখলাম। রেজাল্ট পেতেই আমার ভেতরটা কেঁপে উঠল। শরীর অসাড় হয়ে এল। জীবনে আবারও ধাক্কা পেলাম। না, আমি পারলাম না। আমি পারলাম না। ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। এখন আমি কী করব? কী হবে আমার? আসলেই কী আমার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল? আমি হেরে গেলাম? রাতের অন্ধকারও যেন আমার চিৎকারে কেঁপে উঠল। অথচ কুকুর শিয়াল ছাড়া শোনার কেউ নেই।

চলবে~