নীড়ের খোজে পর্ব-১৫ এবং বোনাস পর্ব

0
302

#নীড়ের_খোজে♥
#পর্বঃ১৫
#জান্নাতুল_বিথী

শৈবাল আমার হাতটা শক্ত করে ধরে কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে চলে আসে!হাত ছেড়ে ধ*মক দিয়ে বললো,

‘কি সমস্যা তোমার?’

হাত ছাড়া পেয়ে বুকে দুই হাত গুজে গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললাম,

‘কই কি সমস্যা হবে?’

আমাকে এতো গা ছাড়া ভাব নিয়ে কথা বলতে দেখে শৈবাল রেগে গেলো!রেগে দু বাহু শক্ত করে ধরে বললো,

‘শাড়ি পরতে কে বলছে তোমাকে?আর এসব কি হ্যা এতো সাজলে কেনো?’

কথাটা বলতে বলতে সে তার পকেট থেকে ট্যিসু নিয়ে আমার চোখের উপরের আইসেড মুছে ফেলে,এর পর আইলেনার মুছে কপাল থেকে টিপ টা খুলে ফেলে দেয়,টিস্যু দিয়ে ঘষে ঘষে আমার ঠোট থেকে লিপিস্টিক মুছতে মুছতে বললো,

‘আমি তোমাকে সাজার অনুমতি দিয়েছি?এতো সাজলে কেনো হ্যা?ছেলেদের দেখাতে ইচ্ছে করছে বুঝি নিজের চেহারা?আমি দেখি তাই কি যথেষ্ট নয়?’

শৈবালের এসব কথায় রা*গে আমার শরীর জ্ব*লে উঠে,সে আমার সব সাজ মুছে ফেলেছে তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই কিন্তু তার হঠাৎ এই কথা গুলো খুব বাজে ভাবে আঘাত করে আমার বুকে!তাই নিচের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করি,চোখ বন্ধ করতেই বন্ধ চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি গাল বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ে।আমি কোনো কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকি,আমাকে চুপ থাকতে দেখে শৈবাল আরো রেগে যায়,

‘এ্যাই মেয়ে কথা বলছো না কেনো তুমি?এখনি রুমে গিয়ে শাড়ি চে*ঞ্জ করে থ্রি-পিচ পরবে,কথাটা যেনো দ্বিতীয় বার বলা না লাগে।’

তার শেষ কথাটা শুনে রাগে অভিমানে আবারো চোখ ছল*ছল করে উঠে,আমি তার মুখের দিকে এক পলক তাকিয়ে দৌড়ে বাড়ির মধ্যে ডুকে যাই।তার হঠাৎ এমন আচরনের কোনো কারন খুজে পাচ্ছি না আমি।ওই আন্টি টাকে কথাটা বলে সে আমার হাত ধরে এখানে নিয়ে এসে আমার সাথে রাফ ব্যবহার করতে থাকে।তার কাছ থেকে এমন আচরন প্রত্যাশার বাহিরে ছিলো আমার!রুমে এসে শ*ব্দ করে দরজা বন্ধ করে দেই আমি,অতঃপর মেঝেতে দুই হাটু একসাথে করে বসে তার উপর মাথা রেখে ডু*করে কেদে উঠি আমি!আজ প্রথম আম্মু আমাকে এতোটা যত্ন,ভালোবাসার সহিত শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে।কতো খুশি ছিলাম আমি তা নিয়ে,মিহা আপু নিজে জো*র করে আমাকে সাজিয়ে দিয়েছে।আমি কি তাকে বলছি নাকি আমাকে এভাবে সাজিয়ে দিতে?এখানে আমার দো*ষ কোথায়?সে কেনো আমার সাথে এভাবে কথা বললো?আমি যে দুনিয়াতে সবার বা*জে কথা হ*জম করতে পারলেও তার একটা ধ*মক ও সহ্য করতে পারিনা।সে কি বোঝে না এটা?কথা গুলো ভাবতেই আরো জোরে কান্না আসে।
.
প্রায় ত্রিশ মিনিট পর নিজেকে সামলে লাগেজ থেকে একটা থ্রি-পিচ নিয়ে চেঞ্জ করে নেই।অতঃপর বাহিরে এসে রান্না ঘর থেকে একটা দেয়াশলাই নিয়ে পুনরায় রুমে এসে হলুদ শাড়ি টা নিয়ে বাড়ির পেছন দিকে চলে যাই।বাড়ির এদিকে একটা মাঝারি আকারের পুকুর আছে।সিড়িও বাধাই করা আছে।এদিক অনেকটা জন*মানবশূন্য,তবে এদিকেও লাইটিং করা আছে।আমি এগিয়ে গিয়ে একটা সিড়িতে বসে শাড়িটা নিচে ফেলে তাতে দেয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বা*লিয়ে দেই।আগুনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি,

‘জীবনে বেচে থাকতে আর কখনো এই শরীরে কোনো শাড়ি প্যাচাবো না।’

কথাটা মনে মনে ভেবে উঠে চোখ মুছতে মুছতে আবারো রুমে চলে আসি।পুরো রুমের লাইট অফ করে অন্ধ*কারাচ্ছন্ন বারান্দায় দাড়িয়ে আছি আমি।বাগান থেকে মানুষের হাসাহাসি নাচ গানের শব্দ ভেসে আসছে,আবারো কান্না আসছে কারনে ঠোট কামড়ে কা*ন্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি!এতো হাসি আনন্দের মাঝেও আমার মুখে হাসির লেশ মাত্রও নাই।

ঘন্টা খানেক পরে রুমের দরজা ঠেলে রুমে আসে শৈবাল,পুরো ঘুর অন্ধকার দেখে আপনা আপনি ভ্রু যুগল কুচকে যায় তার।লাইট জ্বালিয়ে রুমে তুহাকে না দেখে নিজের মাঝে একটা অপরাধ বোধ কাজ করে,অবশ্যই এই অপ*রাধ বোধটা তুহার সাথে খারাপ আচরনের পর থেকেই অনুভব করছে!তার সাথে একটু বেশিই খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছে,কিন্তু এতে তার দোষ কি?সে তখন ওই কথা গুলো স*হ্য করতে না পেরে সেই রাগ তুহার উপর ঝেড়েছিলো।ভেবেই এক হাত দিয়ে চুল টেনে বারান্দায় এসে তুহার পাশে দাড়ায়।

পাশে কারো উপস্থিতি অনুভব করতেই তার দিকে তাকাই,শৈবাল কে দেখে চোখ ফিরিয়ে আবারো সামনের দিকে তাকাই।শৈবাল হয়তো কিছু বলতে চাইছে বুঝেও না বুঝার ভান করে বাহিরেই তাকিয়ে থাকি।মিনিট খানেক পরে শৈবাল গলা ঝেড়ে পরিষ্কার করে বললো,

‘অনুষ্ঠানে আর যাওনি যে?’

কথাটা শুনে তা*চ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম,

‘অনুষ্ঠানে যাওয়ার ইচ্ছে মরে গেছে তাই।’

কাঠকাঠ গলায় জবাব পেয়ে শৈবাল কিছুটা থতমত খেয়ে যায়।পরক্ষনেই নিজেকে সামলে বললো,

‘তুহা…’

তাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে আমি বারান্দা থেকে রুমে চলে আসতে নিতেই সে আমার হাত টেনে ধরে।বারান্দার রেলিংয়ে হেলান দিয়ে আমাকে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে পেছন থেকে কোমড় জড়িয়ে ধরে।অতঃপর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলো,

‘আ’ম স্যরি বউ,খুব বেশি হার্ট হয়েছো?সত্যিই এত্তো গুলা স্যরি।’

কানের কাছে ঠোট নিয়ে কথা বলার সময় বারবার তার ঠোটের স্প*র্শ কানে লাগতেই কেপেঁ উঠি আমি।কিন্তু তা মনে না এনে জেদকেই প্রশ্রয় দেই।তার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বললাম,

‘আপনার স্যরি আপনার কাছেই বস্তা ভরে রেখে দিন লাগবেনা আমার।ছাড়ুন আমাকে এতো আ*হ্লাদ করতে হবেনা।’

কথাটা শুনে মুচকি হাসে শৈবাল,আরো একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,

‘তুমি তখন ওইভাবে শাড়ি পরে সেজেগুজে বের হওয়াতে সব ছেলেরা তোমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো,তাকিয়ে থাকা অব্দি সীমা*বদ্ধ ছিলো না,ওরা তোমাকে নিয়ে বা*জে মন্তব্য করা শুরু করে।তোমাকে নিয়ে কেউ একটা খা*রাপ কথা বললেও আমার মাথা ঠিক থাকেনা সেখানে ওই ছেলে গুলোর এতো বা*জে মন্তব্যে আমি হিতাহিত জ্ঞা*ন শূন্য হয়ে পড়ি।বিশ্বাস করো তুমি যদি ওইসব কথা শুনতে ম*রে যেতে ইচ্ছে করতো তোমার,সেখানে আমি নিজেকে অনেক কষ্টে ক*ন্ট্রোল করে তোমার কাছে যাই!তারপর ওই আন্টিটার কথা সব মিলিয়ে মাথা ঠিক ছিলো না।আমি সত্যিই স্যরি বউ।আর জীবনেও এমন হবে না!প্রমিস করছি তোমাকে!’

শৈবালের কথা শুনে অবাক হয়ে যাই আমি,তার মানে লোকটা এইজন্য আমার সাথে এভাবে কথা বলেছে ভাবতেই মনের সব মান অভিমান হাওয়ায় মিশে যায়!তার মধ্যে স্থান করে নেয় একরাশ ভালোলাগা,ইশশ লোকটা আমার কতো দিকে খেয়াল রাখে আর আমি কি না এতোসব ভেবে বসে আছি!মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতে নিজের গালে একটা থাপ্পড় বসাই।কিন্তু এতো সহজে তার কাছে হার মানবো না,তাকে আমার রাগ এতো সহজে ভাঙ্গতে দিবো না ভেবে নেই।তাই চুপচাপ তার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকি!

চলবে,,,,,,,,,

#নীড়ের_খোজে♥
বোনাস পার্ট
#জান্নাতুল_বিথী

কোলাহল পূর্ন আজকের সকাল,ঘুম ভাঙ্গে বিয়ে বাড়ির চিৎকার চেচামেছিতে!চোখ বন্ধ রেখে বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে চোখ খুলে সামনে তাকাতেই রীতিমতো হা হয়ে যায় আমার মুখ।শৈবাল আষ্টে-পৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে আমায় তার বাহুডোরে,তার সামনের চুল গুলো চোখের উপর পড়ে আছে সে কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। আমি একহাত দিয়ে তার চুল গুলো কপাল থেকে সরিয়ে দেই,এই চুল গুলোকেও হিংসে হয় আমার তার কপাল চোখ সব সময় ঢেকে রাখে।আমি চুলের ভেতর আঙ্গুল দিয়ে নড়াচড়া করতে করতে ফিসফিস করে বললাম,

‘শুনুন,আপনার এই চুল গুরো কেটে একটু ছোট করতে পারেন না?আপনার চোখ গুলো দেখতে আমার বেশ সমস্যা হয়।সব সময় চশমা আর চুল দুটোই আপনার চোখ গুলো ঢেকে রাখে,উফ কি যে বিরক্তি লাগে আমার আপনি বুঝবে না সেটা!’

কথাটা বলে তার খোচা খোচা দাড়িতে ঠোঁটের স্পর্শ একে দিয়ে উঠে পড়ি তড়িগড়ি করে,ভাগ্যিস সে ঘুমাচ্ছে নয়তো কেমন বেহায়া মনে করতো আমাকে ভেবেই ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ি।শৈবাল কাল রাত্রে কখন রুমে আসছে দেখিনি আমি,আমার সাথে কথা বলার ফাকে তার ডাক পড়ায় তাকে চলে যেতে হয়!তারপর তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ি আমি।
.
হিমেলের পাশে দাড়িয়ে আছি ছেলেটা সেই কখন থেকে গাল ফুলিয়ে বসে আছে,তার একটাই কথা আমি এখন আর আগের মতো ভালোবাসিনা তাকে।যদি সত্যিই ভালোবাসতাম তাহলে তার খোজ খবর নিতাম,কাল থেকে অবশ্যই তার খোজ তেমন নেওয়া হয়নি!আমি ব্যাস্ত ছিলাম আমার কাজ নিয়ে আর সে ব্যাস্ত ছিলো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান নিয়ে।তাই তার খবর নেওয়া হয় আর তাই সে গাল ফুলিয়ে বসে আছে।আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকে পর্যবেক্ষন করছি,ছেলেটা সত্যিই রাগ করছে ভাবলেই প্রচুর হাসি পায় আমার!আশে পাশে একবার তাকিয়ে হাসি দমিয়ে নেই,অতঃপর ওর দিকে তাকিয়ে করুন সুরে বললাম,

‘আচ্ছা বাবা স্যরি বলছি তো,তার পরেও রাগ করছো কেনো এই যে দেখো কানে ধরছি আর কখনো এমন হবে না!’

দুই কানে হাত দিয়ে মুখটা ইনোসেন্ট করে বললাম তাকে,সে তখনো গাল ফুলিয়ে বললো,

‘সত্যি তো?আর কখনো এমন করবে?’

আমি ওইভাবেই কানে হাত দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললাম,হিমেল হেসে দেয়।চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,

‘গুড গার্ল, লক্ষী আপু আমার।’

তাকে স্বাভাবিক ভাবে কথা দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলি আমি।দুজনেই গল্পে মেতে উঠি আবার,শৈবালের বড় মামা হিমেলের কাছে এসে জানতে চায়,

‘এই হিমেল রিজুর দলকে দেখেছিস?কোথায় গেলো হা*রামি দল কতো কাজ পড়ে আছে এদিকে।’

হিমেল মাথা নাড়িয়ে বললো,

‘রিজু ভাইয়ের পুরো গ্যাং হাসপাতালে চিৎফটাং হয়ে আছে।’

‘মানে কি হয়েছে?’

‘জানিনা,তবে শুনেছিলাম রিজু ভাইয়ের গ্যাংকে, কে বা কারা যেনো পিটিয়েছে।সৈকত ভাইয়া সহ হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

‘কে মারবে ওর মতো ছেলেকে?আমাদের এলাকার কারো সা*হস হবে না ওকে মারার।তাহলে কে এই দুঃসাহস করলো?আর কেনো পিটালো ওদের?’

আহাজারি করে বলতে থাকে বড় মামা,আমি নিরব দর্শক হিসেবে সবটা দেখছি।পাশ দিয়ে একটা ছেলে যেতে যেতে বললো,

‘রিজু ভাইয়ের দল শুনেছিলাম কোনো মেয়েকে দেখে বা*জে কথা বলছে,তাই ওদের পিটিয়েছে দুইটা ছেলে।কিন্তু ছেলে গুলোর মুখ দেখিনি কেউ।’

কোনো মেয়েকে নিয়ে বা*জে কথা বলছে কথাটা শুনে চ*মকে উঠি আমি,আচ্ছা কোনো মতে আমাকে নিয়ে বা*জে কমেন্ট করার কারনে কেউ ওদের মারে নাই তো?পরক্ষনেই নিজের ভাবনাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেই,দুইটা ছেলে আসবে কোথা থেকে ওদের মারার জন্য?তাই এটা নিয়ে আমি আর না ভেবে ভেতরে চলে আসি।ভেতরে আসতেই বড় আম্মু বললো,

‘কি হয়েছে তুহা তুমি এখনো রেডি হওনি কেনো?বারোটার বেশি বেজে গেছে কখন রেডি হবে আর কখন যাবে?’

‘এখুনি যাচ্ছি বড় আম্মু।’

শৈবাল নিশ্চয় ছোট মামার কাছে তাকে রেডি হতে সাহায্য করছে।আমি বরং রেডি হয়ে নেই তার দেখা আজ পাবো বলে মনে হচ্ছে না,ভাবতে ভাবতে রুমে এসে দেখি তিথী সহ রেডি হচ্ছে।আম্মুও সেখানে উপস্থিত ছিলো,আমাকে দেখতেই ধ*মক দিয়ে বললো,

‘কোথায় কোথায় ঘুরিস তুই?কান্ড জ্ঞান হবেনা কখনো না?রেডি হবি কখন তোর সাথের সকাই রেডি হয়ে বসে আছে।’

আম্মুর কথা শুনে তার দিকে গার ফুলিয়ে তাকাই সে আমাকে তাড়া দিয়ে বললো,

‘যা তাড়াতাড়ি গিয়ে রুম থেকে শাড়ি নিয়ে আয়,আমি পরিয়ে দিচ্ছি। ‘

‘আমি শাড়ি পরবো না,ভালো কোনো জামা পরলেই হবে!’

কথাটা বলতে বলতে রুম থেকে বেরিয়ে আসি আমি,একবার যেহেতু বলেছি শাড়ি পরবো না তাম মানে কখনো পরবো না!ভেবেই রুমে এসে দরজা বন্ধ করে লাগেজের কাছে গিয়ে একটা সুন্দর জামা বের করে নেই!জামাটা নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখি শৈবাল আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে,তাকে হঠাৎ এভাবে রুমে দেখে হকচকিয়ে যাই আমি।সে আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত থেকে জামাটা নিয়ে আগের জায়গায় রেখে দিয়ে আমার সামনে ঝুকে দাড়িয়ে বললো,

‘নাও পাঞ্জাবির বোতাম গুলো লাগিয়ে দাও!’

‘পরবো না আমি।’

কথাটা শুনে সে বিরক্ত হয়ে আমার দু হাত এগিয়ে নিয়ে বুকের উপর রেখে ইশারা করে যেনো বোতাম গুলো লাগিয়ে দেই।তার ঘাড় ত্যাড়ামি দেখে আমি ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকাতেই বড় সড় একটা ক্রাশ খাই!তার গায়ে মেরুন রঙের পাঞ্জাবি জড়ানো,চোখে চশমা নেই চুল গুলো আগের তুলনায় ছোট করা!তার এই লুক দেখে আমি টাস্কি খেয়ে যাই,এতো দিন তাকে দেখে ব্রিলিয়েন্ট ব্রিলিয়েন্ট মনে হতো,আর এখন হিরোর মতো লাগছে।আমি ড্যাব ড্যাব করে তার দিকে তাকিয়ে আছি!আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে শৈবাল বললো,

‘জামাইটা তোমারই ব্যাক্তি গত সম্পদ তাই যেকোনো সময় দেখতে পারবে,এখন ঝটপট্ বোতাম গুলো লাগিয়ে দাও তো।’

তার কথাটা শুনে তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে নেই আমি,বোতাম গুলো লাগাতে লাগাতে বললাম,

‘আমি মোটেও আপনাকে দেখছি না,আমি তো ব্যস যাই হোক সেসব বাদ দেন চুল কাটলেন কেনো হঠাৎ?’

‘ইচ্ছে করছে তাই!’

কথাটা শুনে আমি আর কথা বাড়াই না তার বোতাম গুলো লাগিয়ে সরে আসি সামনে থেকে।একটু পর সে আবার আমার সামনে এসে হাতে একটা শাড়ি দিয়ে বললো,

‘এটা পরে রেডি হয়ে নাও!’

শাড়ি দেখে আমি চমকে উঠি,তাকে শাড়ি টা ফেরত দিতে দিতে বললাম,

‘আমি শাড়ি পরবো না!’

‘কেনো?’

‘ইচ্ছে করছে না তাই!’

‘তোমার ইচ্ছেতেই সব হবে?’

‘হ্যা!’

‘তুহা ত্যাড়ামি করবে না,তুমি জানো আমি কতো কষ্ট করে তোমার সাথে ম্যাচিং করে পাঞ্জাবি কিনলাম আর তুমি বলছো পরবে না?এটা আবার কেমন কথা?’

‘আমার ভালো লাগছে না প্লিজ জোর করবেন না!’

‘কালকের জন্য স্যরি বলছি তো,পরে নাও তাড়াতাড়ি!’

আমি তার দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে বললাম,

‘বলছি তো পরবো না!’

‘রাগাবে না আমাকে তুহা খুব খারাপ হবে কিন্তু বলে দিলাম,বিশ মিনিট সময় দিলাম তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আসো আমি অপেক্ষা করছি।’

কথাটা বলে সে আমার হাতে শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।আমি শাড়ি টার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বের হয়ে আম্মুর কাছে চলে আসলাম!সে যেভাবে রেগে রুম থেকে বের হলো শাড়ি না পরলে নির্ঘাত খু*ন করবে আমাকে।

চলবে,,,,,,,,