নীরদ ক্লেশের অন্ত পর্ব-২৯+৩০

0
54

#নীরদ_ক্লেশের_অন্ত
[পর্ব-২৯]
লেখিকা-নামীরা অন্তিকা

[প্রাপ্তমনস্কদের জন্য উন্মুক্ত]

“তোমার এই হ’টনেস দেখেই তো তোমায় সুদূর বাংলাদেশ থেকে পুনরায় কানাডায় টেনে আনলাম। আই ওয়ান্না স্পেন্ড ওয়ান নাইট উইথ ইউ ব্যব।”(ধীরে ধীরে)

পায়ের উপর পা তুলে সোফায় অভীক মাহমুদের মুখোমুখি বসে ছিল আদিত। অভীক ঈগলের দৃষ্টিতে আদিতের দিকে চেয়ে অ্যালকোহল পান করছিল অভীক। বহুদিন পর আদিতের নাগাল পেয়েছে অভীক। আদিত কঠোর দৃষ্টিতে শক্ত হয়ে বসে ছিল এর মাঝেই পেছন থেকে কে আদিতের কাঁধে হাত রেখে উক্ত কথা বলে উঠলো। আদিত প্রতিক্রিয়া দেখালোনা। মুহূর্তেই কর্ণপাত হলো কোনো তীক্ষ্ণ নজরবিশিষ্ট নারীর ধারালো মুখশ্রীর হাসি।
বেশ নাটকীয় ভঙ্গিতে নারীটি অভীকের পাশে সোফায় ধপ করে বসে পড়লো। নিজে উদ্যোগে টি টেবিলে থাকা একটা গ্লাস তুলে নিয়ে অ্যালকোহল ঢাললো। আদিতের দিকে ইশারা করে বললো,,

“খাবে ব্যব? দারুন এনার্জি পাবে।”

আদিত বিরক্ত হলো, দৃষ্টি অভীকেই নিবদ্ধ রাখলো। কীয়ৎক্ষন সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আদিত ধারালো স্বরে বলে উঠলো,,

“তোমাদেরও ড্রামা শেষ হলে মেইন পয়েন্টে কথা বলি। বাবা কোথায়?”

অভীক ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো,,

“বাবা কোথায় মানে? তুই নিজে হাতেই তো আমার বাবাকে খু’ন করলি।”(ভ্রু কুঁচকে)

আদিত নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে নিশ্চুপ থাকলো। মিনিট দুয়েকের মতো অতিবাহিত হতে অ্যালকোহল পান করতে করতে নারীটি বলে উঠলো,,

“ব্যব এতো হাইপার কেন হচ্ছ? আমার প্রস্তাব ভালো লাগেনি বুঝি? উত্তর না দিয়েই দেখি বাবার কথা বলছো। বাবার পায়ের নিচে থাকতে বুঝি বেশ লাগে?”(মুখ বাকিয়ে)

অভীক পাশে বসে থাকা নারীটির দিকে চেয়ে বলে উঠলো,,

“অ্যালকোহল তোর জন্য আনিনি রেবা। এতো পান করছিস কেন?”

রেবা স্মিত হেসে আদিতের দিকে চেয়ে বলে উঠলো,,

“এমন চুম্বককে দেখে দেখে অ্যালকোহল পান করার মজা লুফছি। এতো কথা কেন বলছো? বহুদিন পর হট একটা আইটেম দেখতে পারছি।”(স্মিত হেসে)

অভীক ভ্রু কুচকালো। একপ্রকার ধমক দিয়ে বলে উঠলো,,

“হট আইটেমের মজা পরেও নিতে পারবি, আপাতত ডিল করে নি-ই। ততক্ষন চুপ থাক।(আদিতের দিকে চেয়ে) এ হচ্ছে আমার স্টেপ সিস্টার রেবা মাহমুদ।”

“নাটক শেষ হলে বাবাকে এখানে আনো। তোমাদেরও নাটক পরেও করতে পারবে।”(গম্ভীর কণ্ঠে)

আদিতের ভরাট কণ্ঠস্বর শুনে রেবা, অভীক দুজনেই থামলো। অভীক বাঁকা হেসে বললো,,

“এতো তাড়া কিসের? ধীরে ধীরে কার্যক্রম পূর্ণ করি। প্রথমেই বলি তোর উপর আমার কোনো রাগ আমার বাবাকে খু’ন করেছিস বলে। আমার ওনার সাথে কোনো লেনদেন ছিলোনা, ছিল ওনার টাকার উপর এবং এখনো আছে। গত দুই বছর ধরে ওনাকে খু’ন করে সব সম্পত্তি আমি আর রেবা নিতে চাইছিলাম সেই সাথে এসজে গ্রুপের লিডার হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনোভাবেই সফল হইনি, যা তোর জন্য হয়েছি। শালা খু’ন করলিটা কিভাবে? এতো সিকিউরিটি থাকার পরেও! তোর উপর আমার একটাই রাগ আমার বাবাকে খু’ন করলি ভালো কথা এতো টাকা লোকশান কেন করলি? ড্রাগস্ স্মাগলীন, নারী পাচার এছাড়াও আরো অনেক অন্যায় উপায়ে অর্জিত টাকার প্রায় অর্ধেক টাকা তুই অনাথ আশ্রম, হাসপাতাল, স্কুলের পেছনে খরচ করে ফেললি। কেন রে তুই কি সরকার যে ফ্রি তে সমাজসেবা করে বেরিয়েছিলি? কতগুলো টাকা তুই শেষ করে ফেলেছিস ফালতু কাজে! মেজাজটা যা গরম হয়েছিল, তোর বাপকে উঠিয়ে একধাপ থেরাপি দিয়েছিলাম। রাগের বহিঃপ্রকাশ করলাম আরকি, এটা দেখিয়েই তোকে বাংলাদেশ থেকে কানাডা নিয়ে এসেছি। মূলত তোকে মা’রার আমার ইচ্ছে নেই। আমার বাপের এতো সিকুউরিটি থাকার পরেও খু’ন করে ফেললি এটি দক্ষ ভাবে। ভাবলাম তোর মতো একজন হিটম্যান পার্টনার এসজে গ্রুপের দরকার। তাই আরকি তোর সাথে এই বৈঠক। আমাদের পার্টনার হলে এখান থেকে বাপ নিয়ে জানে বেঁচে যেতে পারবি আর না হলে তোর উপরের টিকেট আমি কাটবো। আমি যে কি এর নমুনা তো পেয়েছিসই, তোর পাখির এমন অবস্থা করেছি বেচারী জীবন্ত লা’শ হয়ে আছে।(বাঁকা হেসে)

আদিত ভেতরে ভেতরে হতভম্ব হলেও বাহিরে নিজেকে কঠিন দেখালো। ইলার কথা ভাবতেই আদিতের ভীষণ রাগ উঠলো। মন চাইলো এখনই অভীককে খু’ন করে ফেলতে। তবুও নিজেকে শান্ত রাখলো আদিত, পুরো একমাস হয়েছেন কানাডা আসার। এতদিন পর নিজ ইচ্ছাতেই আজকে সে ধরা দিয়েছে অভীকের কাছে। অভীকের ধ্বংসের ব্যবস্থা করেই এখানে এসেছে সে। এদিকে আদিতকে একই ভঙ্গিতে বসে থাকতে দেখে অভীক ভাবলেশহীন কণ্ঠে বলে উঠলো,,

“পাপের রাজ্যে পাপেরই আগমন ঘটে। আমার বাপ পাপের রাজ্য গড়েছিল আমিও পাপের রাজ্যে পাপ হয়েই এসেছি। সেখানে টাকা, পাওয়ারের লোভে বাবাকে খু’ন করার পরিকল্পনা করা অস্বাভাবিক কিছুই না।”(ভাবলেশহীন কণ্ঠে)

অভীকের কথা বলার পর পরই রেবা বেসামাল অবস্থায় মাতাল কণ্ঠে বলে উঠলো,,

“বুঝলে ব্যব, তোমার প্রেয়সীর কথা জেনে ভীষণ রাগ উঠেছিল। তোমার মতো হ্যান্ডসাম আমার পাখি না হয়ে আরেকজনের পাখি হবে, বিষয়টা আমার হজম হতোনা। তাই প্রি-প্ল্যান করে তোমার প্রেয়সীকে ফুস করে দিলাম। বেচারি বোধহয় বাঁচবেও না।”(মাতাল কণ্ঠে)

আদিতের রাগ আকাশ ছোয়া হলো। কানে এয়ারপড ব্লুটুথের সাথে কানেক্ট ছিল আর এতক্ষন ধরে আদিত ও ইনতেহার কলে ছিল। আদিত শুনতে পেলো, “আদিত, আঙ্কেলকে নিয়ে সেফ জোনে আছি আপাতত। ওদের পার্ট চুকিয়ে দ্রুত বাহিরে আসো। ফ্লাইটের টাইমও হয়ে যাচ্ছে।”

ইনতেহারের বলা কথায় আদিতের মুখে বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো। এতক্ষন ধরে এদের ফালতু বকবক সহ্য করার মূল উদ্দেশ্যে ছিল বিপুল রায়কে সেফ জোনে নিয়ে যাওয়া অভীককে কথায় ব্যস্ত রেখে। যেটায় সফল হয়েছে আদিত। আদিত এখন আরেকটু আরাম করে বসলো। বাঁকা হেসে বললো,,

“তোর ভাগ্য কত সুন্দর, তোর বাবাও আমার হাতে মা’রা গিয়েছিলো। এখন তুই আর তোর স্টেপ সিস্টারও মা’রা যাবি।”

অভীক আর রেবা দুজনেই নেতিয়ে পড়েছে সোফায়। তাঁদের বিন্দুমাত্র শক্তি হচ্ছেনা মাথা বা শরীর তুলে দাঁড়ানোর।

“নাটক করে অ্যালকোহল খাচ্ছিলি তাইনা? তোকে যে এই অ্যালকোহল দিয়ে গেছে সে মাত্র অল্প কিছু টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো আমার কাছে। তোর অ্যালকোহলে ডায়াজিপাম ড্রাগস মিশিয়ে দিয়েছিলো সে। এতে করে ধীরে ধীরে নেশায় আবদ্ধ হয়ে স্থির হয়ে যায় মানুষ। তোর আর এই মেয়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তোদের করা লোভ, পাপের ফল আগুনে জ্ব’লসে মৃ’ত্যু। নেহাত ভালো হয়ে গিয়েছি, নয়তো আরো কঠিন যন্ত্রনাদায়ক মৃ’ত্যু দিতাম।”(রাগান্নিত স্বরে)

আদিত যে কক্ষে রয়েছে সেখানে অ্যালকোহলের অনেক বোতল রাখা ছিল ও বিভিন্ন ড্রাগস এর প্যাকেটও ছিল। মূলত এই কক্ষে অভীক, রেবা আর এসজে গ্রুপের অনেকে নেশা করতো। আদিত সেখান থেকে অ্যালকোহলের পাঁচ ছয়টা বোতল নিয়ে রেবা আর অভীকের শরীরে ঢেলে দিলো। পকেট থেকে লাইটার বের করে আগুন জ্বালিয়ে দিলো। অভিক আর রেবা নেশাক্ত ও নেতিয়ে পড়েছে যার ফলে চেঁচাতেও পারছেনা। আদিত বাঁকা হেসে প্রস্থান নিলো কক্ষ থেকে।


“এই অবস্থায় এডমিশনের প্রিপারেশন কেন নিচ্ছ তুমি? রাত জেগে জেগে যে পড়ছো প্রেগন্যান্সিতে যদি সমস্যা হয়? তোমাকে আমি না করেছিলাম এডমিশনের জন্য প্রিপারেশন নিতে না, একবছর গ্যাপ দিলে কিছু হবেনা। তুমি এখন অসুস্থ, এই অবস্থায় কেন চাপ নিচ্ছ?”(কড়া কণ্ঠে)

মিতালির এহেন কণ্ঠে বলা বাক্য বচন শুনে মুখ থমথমে করে ফেললো সারু। প্রেগন্যান্সির তিনমাস প্রায় শেষের দিকের সময়। সারুর এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রায় একমাসের কাছাকাছি হচ্ছে দিয়েছে। জিপিএ ফাইভ না আসলেও ফোর পয়েন্ট আট সাত পেয়েছে সে। সাইন্সের স্টুডেন্ট হিসেবে আর প্রিপারেশন অনুযায়ী সারু ভেবেছিলো এ প্লাস পাবে। তবে আশানুরূপ রেজাল্ট পেলোনা সে, তবে যা পেয়েছে তাতেই সে খুশি আছে। সারু ভাবে প্রেগন্যান্ট হলে কি হয়েছে এডমিশনের জন্য প্রিপারেশন নিবে। কিন্তু এতে ঘোর বিপত্তি জানিয়েছেন মিতালি। শেরহাম নিজেও বারণ করেছে সারুকে এই বছর এডমিশন দিতে না কিন্তু সারু পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যত যাই হোক সে এডমিশন প্রিপারেশন নেবে আর এডমিশনও দিবে। রাত প্রায় আটটার কাছাকাছি, সারু নিজের কক্ষে বসে পড়ছিলো। শেরহাম অফিস থেকে দ্রুত ফিরেছে আজকে, ফ্রেশ হওয়ার জন্য সে বাথরুমে গিয়েছে। মিতালি সারুর জন্য খাবার নিয়ে আসতেই সারুকে পড়তে দেখেই রাগান্নিত স্বরে কথাটা বলে উঠেন।
সারু মিতালির কথা শুনে বইয়ে পৃষ্ঠা ভাজ করে রেখে মিতালির দিকে তাকিয়ে বলে উঠেলো,,

“এক বছর গ্যাপ দেওয়া মানে অনেকটা সময় হারিয়ে ফেলা। আমি সময় হারাতে চাইনা, আমি একদম সুস্থ আছি। যা হবে সবটাই ভালো হবে, থিঙ্ক পজিটিভ মা।”(নরম স্বরে)

মিতালি খাবারের প্লেট নিয়ে এগিয়ে আসলেন সারুর দিকে। সারু পড়ার টেবিলে বসে ছিল। মিতালি পাশে একটা চেয়ার টেনে বসলেন। ভাত মাখিয়ে সারুর মুখের সামনে তুলে ধরে বললেন,,

“সবটা ভালো হবে জানি, তবে তোমার এই অসুস্থ শরীর নিয়ে এতটা চাপ নেওয়া উচিত নয়। এতে তোমার আর বাচ্চার দুজনের সমস্যা হতে পারে।”(মৃদু স্বরে)

সারু আলতো হাসলো, খাবারটা মুখে নিয়ে চিবুতে চিবুতে বলল,,

“এতটুকু কিছুই না, এটা কোনো চাপই না। আমাদের সমস্যা হবেনা।”

“হয়েছে, খাবার মুখে নিয়ে কথা বলতে নেই।”(গম্ভীর স্বরে)

সারু টেডি স্মাইল দিয়ে মিতালির হাতে খেতে লাগলো। সারুর অদ্ভুত লাগে এই মহিলা আজ থেকে তিনমাস আগেও কেমন ছিল আর এখন কেমন! সারুর নিজের মায়ের মতো খেয়াল রাখে! এইতো সপ্তাহখানেক আগের কথা, রান্না ঘরে মিতালিকে সাহায্য করতে গিয়েছিলো সারু। মিতালি সাহায্য করতে বারণ করেছিল কিন্তু সারু অবাদ্ধ হয়ে হাতে হাতে এটা ওটা করে দিচ্ছিলো। এরই মাঝে হুট্ করে তিনি সারুর হাত ধরে কান্না করে বলে উঠেছিলেয়েন, “আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও সারু। তোমাকে নিজের মেয়ের মতো করে রাখবো বলেও নিজের মেয়ের মতো রাখতে পারিনি। সর্বদা খারাপ আচরণ করেছিলাম এরজন্য আমি খুবই দুঃখিত ও লজ্জিত। আমায় ক্ষমা করো।”
সারু ভীষণ অবাক হয়েছিল, মায়ের পরে ঠিক সেদিন পুনরায় আবারো আরেক মাকে পেয়েছিলো। শুরুতে যেভাবে মিতালি তাকে আদর যত্ন ভালোবেসেছিলেন তেমনটাই বাসতে শুরু করেছেন। সারু রেগে নেই মিতালির আচরণে। সবশেষে মানুষটা ক্ষমা চেয়েছে বয়সে অনেক বড় হয়েও। এরপরেও সারু রাগ করে থাকার কারণ পায়নি। খেতে খেতে এসব ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেললো সারু।

“সব ভালোবাসা বউমায়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করলে ছেলে তো ভালোবাসার অভাবে দেউলিয়ে হয়ে যাবে। কিছু শেরহাম রায়ের নামেও রেজিস্ট্রেশন করো।”(অসহায় কণ্ঠে)

শেরহামের কথায় ফিক করে হেসে দিলো সারু। মিতালি শেরহামের দিকে একনজর তাকিয়ে সারুকে খাইয়ে দিতে দিতে বললেন,,

“আমার ভালোবাসা এখনো তোমার একাউন্টে অনেক জমা রয়েছে, ওগুলো নিয়ে খুশি থাক। আপাতত ভালোবাসা সব সারু পাবে। তোমার জমাকৃত ভালোবাসা নিয়ে তুমি খুশি থাকো।”(মৃদু স্বরে)

শেরহাম দুঃখী দুঃখী ভাব করে বলে উঠলো,,

“নাতি নাতনি আসলে এভাবেই বাড়ির ছেলেকে সবাই ভুলে যায়। তখন নাতি নাতনি আর বউমাই সব, হুহ।”(দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে)

চলবে..?

#নীরদ_ক্লেশের_অন্ত
[পর্ব-৩০]
লেখিকা-নামীরা অন্তিকা

“আজ একমাস কেটে গিয়েছে মা! ইলা বৌদি কোমায়! দাভাইয়ের কোনো খোঁজ নেই! এমনটা কি হওয়া খুব জরুরি ছিল?”(ভাঙা স্বরে)

স্নিগ্ধার ভাঙা স্বরের বাক্য বচন শুনে কল্যাণী ভাবলেশহীন হলেন। মুখশ্রীতে কঠোরতা বজায় রাখলেন অথচ ভেতরটা মেয়ের সামনে খুলে দেখাতে পারলেন না তিনি পুরোপুরি ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। সবটা কেমন এলোমেলো অদ্ভুত হয়ে আছে। আসলেই এমনটা কি হওয়ার ছিল! মুখোভঙ্গি কঠোর রেখে কল্যাণী বললেন,,

“সৃষ্টিকর্তার উপর আস্থা রাখা ছাড়া এখন আর কোনো পথ নেই। প্রমীলা চৌধুরী যতদিন যাচ্ছে মেয়ের কন্ডিশন নিয়ে শোকে উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। ডাক্তারদের ধারণা প্রমীলা চৌধুরীর মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মেয়েকে ডেকেও সারা শব্দ না পেলে উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন অনেক, আজকে নাকি নার্সদের উপর জিনিসপত্র ছুড়ে মেরেছিলেন। কৌশিক চৌধুরীকে না বলেই প্রমীলা চৌধুরী আজকে হাসপাতালে এসেছিলেন ইলার কাছে। কিন্তু ইলাকে কথা না বলতে দেখে উনি অনেক উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন! এক পর্যায়ে উনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন এরপর কৌশিক চৌধুরীকে ইনফর্ম করার পর উনি এসে প্রমীলা চৌধুরীকে নিয়ে গেছেন।”(মৃদু স্বরে)

স্নিগ্ধা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। শেরহাম এই অব্দি কত খোঁজ নিলো কিন্তু কোনোভাবেই আদিতের খোঁজ খবর পায়নি। প্রতিবার নিরাশ হতে হয়েছিল।

“আজকে নতুন একটা কেইস নিয়ে অনেক দৌড় ঝাঁপ করলাম, বেশ রাত হয়েছে। ঘুম প্রয়োজন, শুভ রাত্রি স্নিগ্ধা।”(মলিন মুখশ্রীতে)

স্নিগ্ধা মলিন হাসলো। মৃদু কণ্ঠে বললো,,

“শুভরাত্রি মা।”


“কি হচ্ছে কি, আপনি আমায় এমন সাপের মতো পেঁচিয়ে কেন ধরছেন? দেখছেন না আমি পড়ছি! ডিস্টার্ব কেন করছেন আমায়?”(মৃদু রাগান্নিত স্বরে)

সারুর নাক ফুলিয়ে বলা প্রতিটা কথা শুনে মিটমিটিয়ে হাসলো শেরহাম। সারুর নাকের সাথে নাক ঘঁষে সারুর পেটে আলতো করে হাত ছুঁইয়ে বলে উঠলো,,

“এখানে যে আমাদের লিটেল সারিম আছে সে এখন চাচ্ছে বাবার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ঘুমাতে। তাই বাবা তাকে জড়িয়ে বা তোমার ভাষায় পেঁচিয়ে ধরছে, তবে জেনে রাখো শেরহাম তোমায় জড়িয়ে ধরেনি লিটেল সারিমকে জড়িয়ে ধরেছে।”

সারু ভ্রু কুঁচকে বললো,,

“সারিম! আপনি কিভাবে জানলেন যে আমাদের ছেলে হবে? মেয়েও তো হতে পারে।”(ভ্রু কুঁচকে)

“গেস করলাম, ছেলে হলে নাম সারিম আর মেয়ে হলে নাম নীরু রাখবো।”

“আপনার ছেলে বাবু পছন্দ?”

“হ্যা, তবে মেয়ে বাবুও পছন্দের। মোট কথা বাচ্চা বলতেই আদুরে আদুরে ভাব কাজ করে। আমি ভীষণ অপেক্ষিত আমার লিটেলের জন্য।”(হাসি হাসি মুখে)

সারু নিজেও ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি এঁকে চেয়ে রইলো শেরহামের দিকে। শেরহাম কোমল হাসলেও চেহারা শুকনো হয়ে আছে। পরিবারের, অফিসের চিন্তা করতে করতে শেরহামের মুখটা এইটুকুনি দেখাচ্ছে।

“আদিত দাভাইয়ের কি হয়েছে? আজ একটা মাস পেরিয়ে গেলো সেদিনের পর উনি আর যোগাযোগ করেননি!”(মৃদু স্বরে)

শেরহাম ফোঁস করে একটা শ্বাস ফেললো। কি বলবে সারুকে। আদিত যে কত বড় সমস্যায় পড়েছে। এটো খুঁজেও তো কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। কেমন আছে, কি হয়েছে বা হচ্ছে কিছুই জানতে পারছেনা শেরহাম। পরিবারে একদম নিঃস্ব পরিস্থিতি। কল্যাণী নিজেকে শক্ত দেখালেও শেরহাম জেঠিমণিকে চেনে, তিনি ভেতরে ভেতরে পুরো ভেঙে পড়েছেন কিন্তু স্বভাবগত সেটা প্রকাশ পাচ্ছেনা। তবুও শেরহামের অবাক লাগে, জেঠিমণি স্থানে অন্যকেউ হলে এই অব্দি সাফার করে আসতে পারতোনা। কিভাবে যে জেঠিমণি সবটা সামলিয়েছেন। ফোঁস করে একটা তপ্ত শ্বাস ফেললো শেরহাম। সারুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,

“আমি জানিনা আদিত কেমন আছে! কি অবস্থায় আছে! কেন যোগাযোগ করছেনা, তবে আমি আশা রাখছি সবটা ভালো হবে।”(তপ্ত শ্বাস ফেলে)

সারু নিশ্চুপ থাকলো কিছুক্ষন, সবটা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। সারু আনমনে পেটে হাত দিলো। বাচ্চাটা খুশি নিয়ে আসার পরেই সবটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। সারু আদি কালের মানুষের মতো কুসংস্কার রটাবেনা যে বাচ্চাটা অশান্তি নিয়ে গর্ভে এসেছে। বাচ্চাদের কখনো কুসংস্কারের সাথে মেলাতে নেই। বাচ্চা নিষ্পাপ, সৃষ্টিকর্তার সেরা উপহার একটা পরিবারের জন্য। সারু তাকে কিছুর জন্য দোষারোপ করছেনা সে শুধু ভাবছে বাচ্চাটা আসার পর থেকেই সবটা এলোমেলো হয়ে গেছে। বাচ্চা সুখের প্রতীক, সুখ নিয়ে আসলেও চারদিকে দুঃখদের ছড়াছড়ি। অথচ কথা ছিল সবার মুখে হাসি থাকার, ভালো থাকার, সুখে নিজেকে আবৃত করার। কিন্তু.. সব এলোমেলো! ভালোবাসা, সুখ কবে ধরা দিবে সারু সেটাই ভাবছে। ভাবনার মাঝেই অনুভব করলো কপালে তপ্ত উষ্ণতা। শেরহাম অধর ছুঁয়িয়েছে তার ললাটে। চোখ বন্ধ করে ফেললো সারু। শেরহাম ফিসফিস করে বললো,,

“আজকে আর পড়তে হবেনা, কালকে পড়ো। চলো ঘুমাবে।”(ফিসফিস করে)

শেরহাম সারুকে সাবধানতার সহিত বিছানায় নিয়ে গেলো। শেরহাম লাইট অফ করে সারুর নিকট আসলো। সারুকে আলতো হাতে নিজের কাছে টেনে আনলো, নিজের বুকে সারুকে মৃদু শক্তিতে বন্ধনে আবদ্ধ করলো। সারু নিশ্চুপ হয়ে শেরহামের বুকে মাথা পেতে শুয়ে রইলো।

এক সপ্তাহ পর,,

“স্যার! আপনাকে একটা কথা বলতাম যদি কিছু মনে না করেন।”(ইতস্তত বোধ নিয়ে)

শেরহাম কল্যাণী আর কৌশিক চৌধুরীর সাথে হাসপাতালে এসেছে ইলাকে দেখতে। এতগুলো দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ইলার কোনো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছেনা। বিষয়টা খুবই ভাবিয়ে তুলছে আর হতাশ করে তুলছে কৌশিক চৌধুরীকে। সেই সাথে রায় পরিবারের সদস্যদেরও। কৌশিক চৌধুরী আর কল্যাণী ইলার কেবিনে ছিল। বেলা নয়টা বাজে, শেরহাম একনজর ইলাকে দেখে বেরিয়ে এসেছিলো হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অফিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে। তন্মধ্যে একজন নার্স একথা বলায় থেমে যায় শেরহাম। ভ্রু কুঁচকে নার্সের দিকে চাইতেই নার্স আমতা আমতা শুরু করে। শেরহাম ঘড়ির দিকে একনজর চেয়ে সময় দেখে বলে উঠলো,,

“হ্যা, বলুন!”

“স্যার, আমার মনে হয় প্রতিদিন কেউ রাতে পেশেন্টের কেবিনে আসে। গত দুইদিন পেশেন্টের হাতে গোলাপ ফুল পাওয়া গিয়েছে তখনই মনে সন্দেহ জেগেছিলো আমার। আমি এটা ম্যানেজার স্যারকে জানাই এরপর সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেন উনি, সেখানে তিনি একজন পুরুষকে পেশেন্টের কেবিনে ঢুকতে ও বেরুতে দেখা গিয়েছে। মুখ দেখা যাচ্ছেনা, আর এছাড়াও কেউ ছাড়া গোলাপ ফুল পেশেন্টের হাতে কিভাবে আসবে? তাছাড়া আপনারা তো ওনার জন্য গোলাপ আনেননি কখনো!(ইতস্তত বোধ করে)

শেরহাম থেমে গেলো, ভ্রু কুঁচকে গম্ভীর মুখশ্রীতে নার্সের দিকে তাকালো সে। কেউ ইলার কাছে আসে, গোলাপ ফুলও পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টা অদ্ভুত লাগছে শেরহামের। হাসপাতালে বলা যায়না, ভালো মানুষ যেমন এখানে আসে তেমনি খারাপ মানুষও আসে। কোমায় যাওয়া বা জ্ঞান হারানো অনেক নারীর সাথে দুর্ঘটনা ঘটার কথাও শুনেছে শেরহাম। তবে কি ইলার সাথেও এমন কিছু ঘটছে? চিন্তিত হলো শেরহাম সেই সাথে রাগান্নিত হলো। স্ট্রেঞ্জার পার্সন কিভাবে অনুমতি না নিয়ে একটা অচেনা অজানা পেশেন্টের কেবিনে ঢুকতে পারে। শেরহাম রাগান্নিত স্বরে বলে উঠলো,,

“আপনাদের কি জ্ঞান নেই? সিকিউরিটির এমন যা তা অবস্থা কেন? স্ট্রেঞ্জার পার্সন আসলো, একটা পেশেন্টের কেবিনে ঢুকে গেলো! আপনাদের নূন্যতম কমনসেন্স নেই? পেশেন্টের এই অক্ষমতা নিয়ে যদি কারো খারাপ উদ্দেশ্য থাকে? আদেও জানেন অচেতন একটা নারীর সাথে কি কি হতে পারে! রেসপনসিবিলিটি নামক শব্দটা আদেও কি আপনারা মানেন? এর অর্থ কি জানা আছে আপনাদের?”(রাগান্নিত স্বরে)

নার্সটি মাথা নিচু করে নিচু স্বরে বললেন,

“দুঃখিত স্যার! আমরা বিষয়টা নিয়ে সতর্ক থাকবো। আশা রাখি এরপর আর এমন কিছু হবেনা।”(নিচু স্বরে)

নার্সটি চলে যায়। এদিকে ভাবনায় পড়ে যায় শেরহাম। ইলার কেবিনে কে আসে? কি উদ্দেশ্যে আসে! খারাপ উদ্দেশ্যে নয়তো! শেরহামের মাথা ব্যথা করে উঠলো! একের পর এক ঝামেলা! কি হচ্ছে তাঁদের সাথে! একটু ঝামেলা থেকে বের হতে নিলেই নতুন ঝামেলা নিজ থেকে উড়ে এসে তাঁদের খাঁচায় ভর্তি করে। এখন এটা আবার কোন ঝামেলা। শেরহাম আশেপাশে নজর বুলায়। কল্যাণী আর কৌশিক চৌধুরী ভেতরে আছেন। আপাতত এই কথা কাউকে বলা যাবেনা। শেরহাম ভাবলো আজকে রাতে নিজে এখানে এসেই বুঝা যাবে আসল ঘটনা কি। একরাশ চিন্তা ভাবনা নিয়ে শেরহাম অফিসের উদ্দেশ্যে বের হলো।


“মনে হচ্ছে বেশি উড়ছো? মেয়ে হয়ে জন্ম নিয়েছ মেয়েদের সাথেই মিশো। ছেলেদের সাথে কেন কথা বলতে হবে তোমার?”(গম্ভীর স্বরে)

প্রায় বহুদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর চেনা পরিচিত একটা কণ্ঠস্বর শুনে ও পেছন থেকে ব্যাগে টান পড়ায় থমকে দাঁড়ালো স্নিগ্ধা। কীয়ৎক্ষন ওভাবেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর ধীরে ধীরে নজর ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো। ইশ, স্নিগ্ধার বুঁকের মাঝে ঝড় উঠছে। এতদিন পর, এতটা দিন পর স্নিগ্ধা আজ উৎসকে নিজ চোখে দেখতে পেয়েছে। তাও অনাকাঙ্খিত ভাবে। সেসব বাদ দিয়ে স্নিগ্ধা উৎসের কথার মানে বের করার চেষ্টা করলো। কীয়ৎক্ষন ভাবতেই মনে পড়লো গতকাল এক সিনিয়র ভাইয়ার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলো অতঃপর সেই সিনিয়র ভাই স্নিগ্ধার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিল। স্নিগ্ধাও দু একটা কথা বলেছিলো। সেটার জন্যই উৎস একথা বলেছে নয়তো স্নিগ্ধা এ অব্দি নিজের দাভাই, উৎস ছাড়া কারো সাথে তেমন কথা বলেনি। ইদানিংয়ের মধ্যে তো নয়-ই।

“আপনি যা ভাবছেন তা ভুল ভাবছেন। ইচ্ছে করে কথা বলিনি।”

“ভালোই, কথা বললেও কি না বললেও আমার কিছু যায় আসেনা।”

স্নিগ্ধা ভ্রু কুচকালো! এই লোককে কি সে জিজ্ঞাসা করেছে সে, উল্টো এই লোক তাকে জিজ্ঞাসা করছে! আর এখন এমন ভাব যেন স্নিগ্ধা ইচ্ছে করে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করছে। ভ্রু কুঁচকে স্নিগ্ধা বলে উঠলো,,

“আপনাকে কি আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে আপনার কিছু যায় আসে নাকি না!”(ভ্রু কুঁচকে)

“উড়োনা বেশি, উড়তে দিয়েছি লিমিটে থেকে উড়ার জন্য। বেশি উড়লে ডানা অকালেই যাবে।”

উৎস কিছুই বললোনা আর, প্রতিক্রিয়া দেখালোনা। যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই চলে যাওয়ার জন্য উদ্যোত হলো। দুয়েক পা হাঁটার পর একটা বাইক আসে, উৎস সেই বাইকে উঠে বাইক চালানো ছেলেটার সাথে চলে যায়। এদিকে স্নিগ্ধা বেক্কল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এতদিন পর এই আসলো আর এই গেলো। মাঝে কি বললো সবটা স্নিগ্ধার মাথার উপর দিয়ে গেলো। স্নিগ্ধা ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলো। আজকে গাড়ি করে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরোয়নি সে। হেঁটেই রওনা হয়েছে সে। পথিমধ্যে এই ঘটনা। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে হাঁটা শুরু করলো।


রাত এগারোটা বেজে কুড়ি মিনিট। হাসপাতালে গুটিকয়েক মানুষ। সকালে যেমন এখানে অনেক মানুষ দেখা যায় তেমনি রাত হওয়ার সাথে সাথে এখানে মানুষের ভিড় কমতে থাকে। তবুও মানুষজনের সংখ্যা কম নয়। শেরহাম গুটিগুটি পায়ে ইলার কেবিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কেবিনের সামনে গিয়ে মিনিট দুয়েক দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো শেরহাম। সন্দেহ সঠিক প্রমাণিত হলো শেরহামের।

“কবে তুমি আমায় ডাকবে ইলা! কবে দুচোখ মেলে আমায় দেখবে, মিটিমিটি হেসে আমায় জ্বালাবে! চঞ্চল তোমায় আমি ভীষণ ভালোবাসি, তোমার শূন্যতা আমায় ভীষণ পীড়া দিচ্ছে! কবে দুচোখ মেলবে ইলা!”(নিচু স্বরে)

শেরহাম দেখলো, সামনে থাকা লোকটি নিজের হাতের গোলাপ ইলার হাতের মধ্যে দিয়ে নিজের দুহাত দিয়ে ইলার দুহাত আলতো ভাবে স্পর্শ করে আছে। আদিতকে দেখে শেরহাম হতবাক হলো! আদিত কবে এসেছে দেশে! আসলেও তাঁদের সাথে যোগাযোগ কেন করেনি! লুকিয়ে এভাবে ইলাকে দেখতে এসেছে সে! প্রশ্নরা ঘুরপাক খেতে লাগলো শেরহামের ব্রেইনে। অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠলো,,

“আদিত!”(অস্পষ্ট স্বরে)

চলবে..?