পরাণ বধূয়া পর্ব-১২

0
91

#পরাণ_বধূয়া —১২
#প্রানেশা_আহসান_শীতল
[সতর্কতা — কপি নিষিদ্ধ]

সাইফান ধীর চোখে অদ্রিজার চোখে তাকিয়ে আছে। একবার চোখ রাখে মেয়েটার মুখে, তারপর তার কোলে রাখা বালিশে। মুহূর্তের দ্বিধা, তারপর নিজেকে একটু নিচে নামায়। মাথাটা রাখে অদ্রিজার কোলে। চোখ বুজে ফেলে। কিছু না বলেও অদ্রিজার হাত নেমে আসে সাইফানের চুলের মাঝে। আলতো করে আঙ্গুল বুলাতে থাকে। একেকটা টানে যেন কোনো গোপন যন্ত্রণার গভীরতা ছুঁয়ে যায়।

অদ্রিজা নরম গলায় সাইফানকে বলে——

” ঘুমিয়ে পড়ুন। আমি আছি।”

সাইফান কিছু বলে না। ঠোঁট নড়ে, কিন্তু শব্দ বেরোয় না। সময় যেন থমকে যায় কিছুটা। ঘরের বাতাস ভারী, আবার শান্ত। বাইরে কোথাও গাড়ির হর্ণ, রাতের শহরের আওয়াজ শোনা যায়।

একটু পর অদ্রিজা ফিসফিসিয়ে বলে——

” কেউ কাছে আসলে, তার স্পর্শে বোঝা যায় সে কেমন মানুষ। আপনি ভয় পাচ্ছেন, কারণ আপনাকে কেউ ভালোবেসে কাছে আসে নি, না?”

সাইফানের চোখ বন্ধ, কিন্তু সেই চোখের কোণে জলের বিন্দু জমে। অদ্রিজা বুঝে নেয়, আর কিছু জিজ্ঞেস করে না। হাতটা চুল থেকে গড়িয়ে আসে কপালে, থুতনিতে, তারপর থেমে যায় বুকের কাছে। এভাবে কোনোদিন কেউ ছুঁয়ে দেখে নি সাইফানকে।

” আমি এখন আর কাউকে বিশ্বাস করি না, অদ্রিজা। ভয় হয়! ”
হঠাৎ গলার নিচু স্বরে বলে ওঠে সাইফান।

” জানি। তবুও আমি বিশ্বাস চাই না। আমি চাই আপনি নিজেকে ভালোবাসেন। নিজের প্রতি সদয় হোন।”

” আপনি কি আমাকে আদোও ভালোবাসবেন?” — প্রশ্নটা ভেসে আসে কোল থেকে।

অদ্রিজা থমকে যায়। হাত থেমে থাকে। তারপর ধীরে বলে,

” জানি না। কিন্তু আপনাকে দেখে আমার মন শান্ত হয়। আপনাকে কষ্টে দেখলে আমার ভেতরটা গুমরে ওঠে। ভালোবাসা হয়তো নয়, কিন্তু ভালো থাকা চাই আপনার।”

চোখ খুলে তাকায় সাইফান। অদ্রিজার মুখে লেগে থাকা সেই শুদ্ধ, অকপট কোমলতা দেখে তার বুকটা হঠাৎ কেমন হাহাকার করে ওঠে। কী যেন একটা বলার ছিল, বলা হয় না। অদ্রিজা আবারও বলে—

” ঘুমিয়ে পড়ুন। আমি থাকবো। আজকের রাতটা অন্তত— আপনাকে একা থাকতে হবে না।”

সাইফান চোখ বন্ধ করে। এবার কোনো দ্বিধা নেই। শুধু নরম গলায় ফিসফিসিয়ে বলে—

” থ্যাঙ্ক ইউ।”

অদ্রিজার ঠোঁটে হালকা হাসি খেলে যায়। কপালের চুল সরিয়ে দেয় স্নেহে। ঘরের বাতি নিভে যায় কিছুক্ষণ পর।
রাত গভীর হয়। একজন অপরিচিত মানুষ, একজোড়া ভাঙা হৃদয়। একটা অব্যক্ত বন্ধনের জন্ম হয় ধীরে ধীরে…

ভোরের আলো জানালার ফাঁক গলে ঘরে এসে পড়েছে। অদ্রিজা আধঘুম ঘুম চোখে চেয়ে দেখে সাইফানের মাথা এখনও তার কোলেই। শ্বাস প্রশ্বাস গভীর— নিশ্চিন্ত ঘুম। মুখটা এতটাই শান্ত লাগছে যেন গতকাল সারারাত হাহাকার করা মানুষটা এই নয়।

অদ্রিজা নরম হাতে আবারও চুলে হাত বুলায়। মনে মনে ভাবে—
” এই মানুষটাকে কি সে সত্যিই বুঝতে পারবে? আর পারলেও, পারবে সামলাতে?”

একটু পর সাইফান নড়েচড়ে উঠে। চোখ মেলে চেয়ে দেখে এখনও কোলেই আছে। চমকে ওঠে না, বরং একটু লজ্জা মেশানো কণ্ঠে বলে—

“সরি, ঘুমিয়েই গেছিলাম।”

“আপনি যে ঘুমাতে পেরেছেন এটাই অনেক।”
ছোট করে হাসে অদ্রিজা। সাইফান উঠে সোজা হয়। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। অদ্রিজা উঠে পাশের চেয়ারে বসে। তারপর বলে—

“আজ তো ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবেন, তাই না?”

“হুম। তৈরি হয়ে নিন। আটটার মধ্যে বের হতে হবে।”

“আচ্ছা। সানাফকেও তো রেডি করাতে হবে।”

“সে তো যাবে না। এখনো ছোট, আর হাসপাতালের পরিবেশ…”

“ওকে কার কাছে রেখে যাবো?”

সাইফান কিছু একটা বলতে যাবে, ঠিক তখনই দরজায় কড়া নড়ে। অদ্রিজা দরজা খুলতেই দেখে কাজের মেয়ে নাসিমা। হাতে দুধের বোতল, মুখে হাসি।

“ভাইজান বলছেন, আজকে সকাল থেকে আমি ছেলেটাকে দেখবো। আপনারা ডক্টরের কাছে যাবেন তো!”

অদ্রিজা অবাক। এক মুহূর্তে চোখ যায় পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা সাইফানের দিকে। সে শান্তভাবে বলে—
“আমার উপর ভরসা রাখতে শিখুন, অদ্রিজা।”

মৃদু হাসে মেয়েটা। তাদের বাসায় যে একটা হেল্পিং হ্যান্ড আছে৷ সাইফান বলে নি৷ তাই একটু প্রশ্নবোধক গলায় বলে—— ” উনি?”

সাইফান অদ্রিজার মুখের অবস্থা বুঝে তাই বলে—–

” সাবরিনার বিয়ের পর সাবরিনা ওকে রেখেছিলো। যখন আমার এমারজেন্সি বাহিরে যেতে হয় তখন নাসিমা, সানাফকে দেখে রাখে আর ওর কাছে এই বাসার চাবি আছে তাই চিন্তা করবেন না।।”

সাদা শাড়ি আর মেরুন বর্ডার, হালকা মেকআপে অদ্রিজা যেন একেবারে অন্যরকম লাগছে। সাইফান একটু অবাক হয়ে তাকায়, তারপর চোখ সরিয়ে নেয়। গাড়িতে উঠে দুজনেই কিছুটা নীরব। শুধু গাড়ির মাঝে বাজতে থাকা সুরটা যেন দুই মনকে একসাথে বাঁধার চেষ্টা করছে।

“আপনি খুব চুপচাপ।” — বললো অদ্রিজা।

“ডক্টরের কাছে নিয়ে যাচ্ছি বলে মন খারাপ হয়ে গেছে বুঝি?” — ঠোঁট বাঁকিয়ে একটু খোঁচাও দেয়।

“না, আপনার মুখের কথা ভাবছিলাম। কাল রাতে আপনি অনেক কিছু বললেন। ভেবেছিলাম আপনি বরফ… এখন মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে গলছেন।”

সাইফান হেসে ফেলে।
“আর আপনি তো আগেই আগুন।”

“উহুম! আমি আগুন হলে আপনি ছায়া। ছায়া যে আগুনকে শান্ত করে, পোড়ায় না।”

কথা বলতে বলতে হসপিটালের চলে আসে ওরা। অদ্রিজা এতো কথা বলছে দেখে সাইফান অবাক হয়। আবার অদ্রিজাও ও অনুভূতি প্রায় একই। কিন্তু পরে মাথায় এলো, অদ্রিজা সহজ হতে চাইছে। তাহলে সমস্যা কোথায়?

পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করে গাড়িতে নেমে দুজনে হাঁটতে থাকে। সাইক্রিয়াটিস্টের চেম্বারে ঢোকার আগে সাইফান থামে।

“এই লোকটা আমার খুব বিশ্বাসের, কলিগও বলতে পারেন। কোনো ভয় নেই, কথা বলতে পারবেন।”

“আমি ভয় পাই না, ডক্টর সাহেব। শুধু ভাবছি, কী বলবো!”

“যা সত্যি মনে হয়— তাই বলবেন।”

অদ্রিজা চেম্বারের ভেতরে ঢোকে। সাইফান বাইরে বসে থাকে। সময় যেন স্থির হয়ে যায়। ৩০ মিনিট পর, অদ্রিজা বেরিয়ে আসে। চোখে একধরনের ক্লান্তি, কিন্তু মুখে অদ্ভুত প্রশান্তি।

“কেমন লাগলো?” — সাইফান জানতে চায়।

“ভালো। ওনার চোখে কোনো বিচার নেই। কেবল শুনেছেন। কখনো কেউ এভাবে শোনেনি আমার কথা।”

“তাই তো বলেছিলাম। মনকে যত্ন নিতে জানতে হয়, শরীরের চেয়েও বেশি।”

দুজনে আবার গাড়িতে ওঠে। অদ্রিজা এবার কিছুটা চুপ। সাইফান জিজ্ঞেস করে,

“চুপ কেন?”

“মনটা হালকা লাগছে। বুঝলেন? কাউকে না জানিয়ে কত কিছু জমা হয়েছিলো মনে।”

“আমি চাইলে রেগুলার কাউন্সেলিং রাখতে পারি আপনার জন্য।”

“আপনি থাকলে কাউন্সেলিংয়ের দরকার হবে না।”

সাইফান চমকে তাকায়।
এই মেয়েটা এতোদিনকার তার ভেতরের জমে থাকা বরফ গলিয়ে দিচ্ছে, সেটা সে নিজেও টের পাচ্ছে না।

গাড়ি থামে শপিং মলে।

“এত দোকান! আপনি কী কিনবেন?”

“আপনার জন্য কিছু জিনিস। শাড়ি, কিছু দরকারি জিনিসপত্র। আপনার সব কিছুই তো ওখানে ফেলে এসেছেন।”

“আমি চাই না আপনি আমার জন্য এত কিছু করেন।”

“আমি চাই। কারণ আপনি এখন শুধু সানাফের মা নন, আমার স্ত্রীও।”

চোখ বড় হয়ে যায় অদ্রিজার। কিছুক্ষণ চুপ থেকে জিজ্ঞেস করে—
“আমাকে স্বীকার করছেন? সত্যি?”

সাইফান চোখ রাখে তার চোখে তারপর সহজ গলায় বলে——

“হ্যাঁ, আমি আপনাকে স্বীকার করেছি। আমার মনের গভীরে।”

অদ্রিজা অবাক হয়, তার ঠোঁটে ধরা দেয় এক শূন্য-ভরা হাসি। এই সম্পর্কটা কি তবে নতুনভাবে গড়ে উঠবে?

মলের কাঁচের দরজা দিয়ে ঢুকতেই ঝাঁ চকচকে আলো আর শীতল এসির হাওয়া যেন অদ্রিজাকে এক ভিন্ন দুনিয়ায় টেনে নিলো। তার চোখে সব কিছু নতুন, একটু ভয়, একটু আগ্রহ। সাইফান চুপচাপ হাঁটছে তার পাশে, হাতে টানছে একটা ট্রলি।

“আপনি কি সবসময় এভাবে চুপচাপ থাকেন?”
অদ্রিজা জিজ্ঞেস করলো একটু ভ্রু কুঁচকে।

“চুপচাপ না থাকলে লোকে বলে ডাক্তার হয়েও পাগল!”
ঠোঁটের কোণে এক চিলতে ব্যঙ্গ হাসি।

“তাহলে আমি ঠিকই ভাবতাম; ডক্টর মানেই পাগল।”
— মুখ টিপে হেসে ফেলে অদ্রিজা।

সাইফান থামে। তারপর অদ্রিজার কথায় না চাইতেও হেসেফ হেসে ফেলে। তারপর এভাবেই কথা বলতে বলতে একটা শাড়ির দোকানে ঢোকে। অদ্রিজা শাড়ি দেখছিলো। সাইফান এদিক সেদিক তাকিয়ে একজায়গায় চোখ আটকাতে সেদিকে উঠে যায়। তা দেখে অদ্রিজাও বোকা চোখে তাকিয়ে তার পিছনে যায়। সাইফান এসে একটা হালকা পিচ রঙের শাড়ি তুলে ধরে।তারপর অদ্রিজার পানে তাকিয়ে শুধায়—

“এই কালারটা নেবেন?” —

অদ্রিজা একটু অবাক হয়।তারপর অবাক গলায় জিজ্ঞেস করে—
“আপনার চোখে আমাকে এই রঙে মানাবে?”

“অসাধারণ লাগবে।”
— ঠান্ডা স্বর। চেহারায় অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস।

অদ্রিজা মাথা নিচু করে ফেলে। কিছু বলার ভাষা খুঁজে পায় না। এরপর সালোয়ার কামিজ, হ্যান্ডব্যাগ, জুতা, এক্সেসরিজ— সাইফান একে একে দেখে, পছন্দ করে দেয়। অদ্রিজা শুধু চুপচাপ দেখে, মাঝে মাঝে চোখের কোণে জমে ওঠা নরম বিস্ময় লুকায়।

একটা সময় অদ্রিজা বলে ফেলে—
“আপনি এত কিছু করছেন কেনো?”

“কারণ আপনি আমার দায়িত্ব।”

“দায়িত্ব? নাকি কিছুটা ভালোবাসাও জন্মাচ্ছে?”
কথাটা বলে নিজেই চুপ করে যায়। সাইফান এবার থামে। তার চোখে এক ধরনের অন্যমনস্কতা।

“ভালোবাসা? আমি জানি না, অদ্রিজা। কিন্তু আপনার প্রতি একটা অদ্ভুত টান অনুভব করি।”

“টান ভালোবাসারই শুরুর দিক হয়, ডক্টর সাহেব।”
— বলেই হেসে ফেলে।

তারা বাসায় ফিরে এলো শপিং ব্যাগভর্তি নিয়ে। সানাফ দৌঁড়ে এসে অদ্রিজার কোলে লাফিয়ে পড়ে।

“মাম্মা!”
— খিলখিল করে হাসছে।

সাইফান দাঁড়িয়ে, তাকিয়ে থাকে। রাতে যখন সানাফের ঘুম ভেঙে ছিলো তখন সাইফানই সানাফকে অদ্রিজাকে মাম্মা বলতে বলেছে ও শিখিয়ে দিয়েছে। প্রথমবার এই কথা শুনে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিলো ছেলেটা। এই শব্দটা হয়তো নতুন তার কাছে; সাথে এই সম্পর্কও। কিন্তু রাতে যতক্ষণ জেগে ছিলো সানাফকে ততটা যেনো গভীরে টেনে নিয়েছে অদ্রিজা।

“আসুন না, সানাফ আপনার সারপ্রাইজের অপেক্ষায় আছে!” — কথাটা বলেই মিষ্টি হাসে অদ্রিজা।

সাইফানও হেসে এগিয়ে এসে ছোট্ট ব্যাগ থেকে একটা টুপি আর খেলনা গাড়ি বের করে সানাফের হাতে দেয়। ছোট্ট ছেলে আনন্দে লাফাতে থাকে।

“এতদিন পর ওর হাসিটা প্রাণবন্ত লাগছে!”
— সাইফানের গলায় কৃতজ্ঞতা।

“ছোটদের ভালোবাসা দিলে ওরা প্রাণ খুলে হাসে। এদের ভাঙা যায় না, এদের ভালোবাসতে হয়।”

— শান্ত স্বরে বলে অদ্রিজা। তারপর সানাফের কপালে আদুরে ভঙ্গিতে ঠোঁট ছোঁয়ায়।

তিনজন একসাথে ডাইনিং টেবিলে। ছোট টেবিল, তিনটা প্লেট, একসাথে বসে খাওয়া যেন এক নতুন পারিবারিক ছোঁয়া।

“আপনি সব কিছুই রান্না করতে জানেন?”
— হঠাৎ প্রশ্ন করে সাইফান।

“জানি, আপনাদের জন্য এখন থেকে আমিও রাখবো। সাথে স্পেশাল একটা ডিশ বানাবো।”

“কোনটা?”

“খিচুড়ি। অনেক মশলাদার। খেলে ঝরঝর করে ঘাম হবে কাঁদতে পারেন৷ কে জানে!।”
— মুখ টিপে হাসে। অদ্রিজার কথা শুনে শব্দ করে হেসে ফেলে সাইফান তারপর অদ্রিজার চোখ রেখে বলে —

“তাহলে মনে হয় আপনার ভালোবাসাও অনেক ঝাল হবে।”

“ঝাল না, স্পাইসি।”
— চোখ টিপে উত্তর দেয় অদ্রিজা।

তাদের কথার মাঝে ছোট ছোট হাসি, ঠাট্টা, চোখাচোখি— যেন জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হচ্ছে।

অদ্রিজা ছেলেকে ঘুম পাড়িয়েছে তারপর বারান্দার দিকে তাকায়। সেই কখন সাইফান বারান্দায় গেছে এখনো খবর নেই তা দেখে বারান্দায় এসে দেখে সাইফান বসে আছে ব্যালকনিতে, হাতে একটা বই।

“ঘুমাবেন না?”

“চিন্তা হচ্ছে।”
অদ্রিজা এই কথা শুনে কপাল কুঁচকায় তারপর জিজ্ঞেস করে— “কিসের?”

“আমাদের। আপনি… সত্যিই প্রস্তুত তো এই সম্পর্কের জন্য?”

অদ্রিজা তার পাশে এসে দাঁড়ায়। হালকা হাওয়ায় তার চুল উড়ছে। সে সাইফানের দিকে তাকায়।

“ডক্টর সাহেব, আমি যখন বলেছি আপনাকে মেনে নিয়েছি, তখন সেটা একটুও নাটক ছিলো না। আপনার হাত ধরে আমি এগোতে চাই। আপনার ছায়ায় একটু শান্তি খুঁজতে চাই।”

সাইফান তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।তারপর কি মনে করে নিজের হাত বাড়ায়। অদ্রিজা ভরসা নিয়ে হাত রাখে তার হাতে। তাদের চোখে চোখ পড়ে। চোখে আগুন নেই, নেই বরফ— আছে শুধু এক শান্তির নদী। সেই নদীতে ভেসে যাক সব ভুল, সব দুঃখ, সব অতীত…

চলবে-
[সম্পর্ক সহজই যাবে। কারণ আমি চেয়েছি।]