#পরিযায়ী_জীবন (পর্ব – ৬)
ফজরের নামাজ পড়ে সাজেদা প্রতিদিন বাইরে থেকে ঘুরে আসে। আজ আর গেল না। সে জায়নামাজেই বসে রইল। মনে মনে সে নিজেকে ইস্পাতের মত শক্ত করে নিয়েছে। ছেলেকে সে ভালো করেই পড়তে পারে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ সে নিজেই ছেলেকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবে। মা হিসেবে এটা কতটা মনের জোরের ব্যাপার তা কেবল তিনিই অনুধাবন করতে পারছেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই সকালের নাশতা করে ছেলেকে তৈরি হতে বললেন। কোথায় যাবে প্রশ্ন করলে তিনি ছেলেকে সত্যটাই বললেন। মায়ের কথায় মেহরাব কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর বলল-
-আজই যাবে?
-হুম। তুই তো নিজে থেকে যাবি বইলা মনে হইতেছে না। তাই যা করার আমাকেই করতে হইব।
-আমি যেতে চাই না এমনটা তো না। কিন্তু তোমার শরীরটা ভালো না তাই সময় নিচ্ছি।
-আমার শরীর ঠিকই আছে। তুই রেডি হ। এখনই রওয়ানা হব।
মেহরাব দীর্ঘশ্বাস ফেলে… সেখানে যাবার পর পরিস্থিতি কেমন হবে সেটা মোকাবিলা করার মত সাহস সে সঞ্চার করতে পারছিল না। আম্মা নিজেই যখন উদ্যোগী হয়েছে সে যাবার প্রস্তুতি নিল।
বেলা ১১টার দিকে সাজেদা ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত হয় গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। ৫তলা এক বাড়ির সামনে এসে তাদের গাড়ি থামে। সাজেদা ছেলেকে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে তার হাত ধরে গেটের ভেতর পা রাখে। মা ছেলে দুজনেই টালমাটাল পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ৩য় তলায় উঠে দরজায় নক করে সাজেদা। হুট করেই তার মনে হল সে শ্বাস নিতে পারছে না, দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগল… চারপাশ কেমন অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে উঠতে লাগল। সে সজীবের হাতটা শক্ত করে ধরতে চাইল কিন্তু পারল না… সেই মুহূর্তে দরজা খুলে গেল। এক আবছা অস্পষ্ট অবয়ব তার সামনে এসে দাঁড়াতেই তার চারপাশ পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে গেল। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল!
সাজেদার জ্ঞান ফিরলে দেখল সে অপরিচিত এক ঘরের বিছানায় শুয়ে আছে। সাথে সাথেই মেহরাব ডেকে ওঠে, আম্মা… সাজেদা পাশ ফিরে ছেলের মুখ দেখে। তার আশেপাশে আরও কিছু মুখ যা তার অপরিচিত। সে কী স্বপ্ন দেখছে? স্বপ্ন, নাকি দুঃস্বপ্ন? মেহরাব তখন মাকে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়। তারপর অভিযোগের সুরে বলে-
-বলেছিলাম এই শরীরে এসবের দরকার নেই। আমার কথা তোমার গায়েই লাগে না। কী অবস্থা হল এখন দেখো তো?
এইখানে এই ঘরে এই মানুষ গুলোর সামনে বসেও তার সজীব তার জন্য চোখের পানি ফেলছে! সাজেদার কাছে “মা” জনমটাকে সার্থক মনে হল। দেখল সজীবের পাশে মধ্য বয়সী মেহরুন্নেসা দাঁড়িয়ে আছে, যার মুখের আদলের সাথে সজীবের কী ভীষণ মিল! আশ্চর্য, সজীব দেখতে হুবহু তার মায়ের মত! তিনি ক্ষীণস্বরে সজীবের মায়ের উদ্দেশ্যে বললেন-
-আপনাদের বিপদে ফেলে দিছি…
-শরীর তো আপনার খারাপ আর আমাদের বিপদের কথা বলছেন? হুট করে এমন হল কেন?
-আমার শরীর একটু খারাপ। তাই এমন হইছে। তারপর সজীবকে দেখিয়ে বলল- এইটা আমার ছেলে, ও জানে সব।
-আপনার ছেলেকে আপনি খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছেন। সে কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে গিয়েছে। এদিকে দরজা খুলেই এমন পরিস্থিতি দেখে আমি কী করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আপনাদের চিনিও না। আপনার ছেলে বোধহয় ভীষণ মা পাগল!
সাজেদা মৃদু হাসে। ছোট্ট এ কথায় প্রচন্ড ভালোলাগা তার সমস্ত শরীর জুড়ে প্রশান্তির শীতল হাওয়া ছড়িয়ে দিতে লাগল। মেহেরুন্নেসা বলল- আপনি কিছু খাবেন?
-না, খাব না। আমি ঠিক আছি। আমার ছেলে আসলেই মা পাগলা। সে বিরাট ডাক্তার অথচ মায়ের সামান্য অজ্ঞান হওয়াতে কেমন পাগল হয়ে যায়।
মেহরাব তখন বলল- তুমি ঠিক আছ বলছ? কিচ্ছু ঠিক নেই। এখন আর এত কথা বলবে না। চলো, বাড়ি চলো আগে।
মেহরুন্নেসা তখন বললেন- আপনারা এখানে কার কাছে এসেছিলেন?
সাজেদা বলল- আপনার বাড়িতেই আসছি। বাসায় আর কে কে আছে?
মেহেরুন্নেসা তার পাশে দাঁড়ানো মেয়েটাকে দেখিয়ে বলল- এটা আমার ছোট ছেলের বউ। ছেলে অফিসে। আমার সাহেব বাসাতেই আছে একটু নিচে গেছে। আমার দুই ছেলে। আপনারা আমাদের বাড়িতেই আসছেন কিন্তু আমি তো আপনাদের ঠিক চিনতে পারলাম না?
-আপনি আমাদের চেনেন না। আমরা আসলে আপনার আর আপনার ছেলের বাবার সাথেই দেখা করতে আসছিলাম। খুব জরুরি দরকার…
-ঠিক বুঝলাম না… কী বিষয়ে দেখা করতে এসেছেন? আমার সাহেব কী আপনাদের চেনে?
-না তিনিও আমাদের চেনেন না। আমরা অনেক দূর থেকে আসছি। কিন্তু আপনাদের কাছেই আসছি। ভাইসাব কখন আসবে? আপনাদের একসাথেই প্রয়োজনটা বলতাম?
-আমরা কেউ আপনাদের চিনি না অথচ জরুরি কিছু বলবেন!
সাজেদা দম নিয়ে বলল- আসলে বিষয়টা একটু বেশিই জরুরি তাই ভাইসাহেব আসলেই বলব।
মেহেরুন্নেসার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। তিনি উদ্বিগ্ন গলায় বললেন- কিছুই তো বুঝতে পারছি না… তারপর পুত্রবধূর দিকে তাকিয়ে বলল- কেয়া, তোমার শ্বশুরকে ফোন দাও তো। তাড়াতাড়ি আসতে বল।
সাজেদা তখন বললেন- আপা আমার ছেলেটার মুখের দিকে একবার তাকাইছেন?
মেহেরুন্নেসা মেহরাবের দিকে তাকাল মুখটা কেমন চেনা চেনা… কোথাও দেখেছে মনে হচ্ছে… আরও কিছু একটা আছে যা তিনি ধরতে পারছেন না… কিন্তু কিছু বলল না। এই মুহূর্তে তার মনে অনেক প্রশ্ন জমা হয়েছে আগে সেগুলোর উত্তর জানা দরকার। সাজেদা তখন আবার বলল- আমার ছেলেটার চেহারার সাথে আপনার চেহারার কত মিল সেইটা খেয়াল করছেন?
মেহেরুন্নেসা এবার মেহরাবের দিকে ভালো করে তাকাল। চমকে উঠল সে, আসলেই তো! ছেলেটার চেহারার সাথে তার কী ভয়ানক মিল! যেন তারই ছায়া। তার নিজের ছেলেদের সাথে তার চেহারার কোন মিল নেই। তারা হয়েছে তার বাবার মত। হুট করেই তখন তার মনটা ৩০ বছর পেছনে চলে গেল। তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানটা না তো এ? পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিল। কী যে সে আকাশ-কুসুম ভাবে? সেই সন্তান ছেলে না কি মেয়ে, কোথায় আছে, আদৌ বেঁচে আছে কি না কিছুই তো সে জানে না। অথচ এত বছর পরেও সে সেই সন্তানের শোক ভুলতে পারে না। কী করে ভুলবে? সে তো মা! এই যে তার দুই পুত্র তাকে এত ভালোবাসে তবুও তার বুকটা শূন্য লাগে। শুধু সেই বাচ্চাটার জন্য! যার কান্নাটাই শুধু তার স্মৃতি দখল করে আছে আজ এত বছর পরেও। এখনো তার মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় সেই কান্নার শব্দ শুনে। পৃথিবীতে হারিয়ে যাওয়া মানুষের শোক বোধহয় সবচেয়ে বড় শোক। অনিশ্চিত অপেক্ষার চেয়ে বড় যন্ত্রণা আর কিছুতে নেই। তার চোখে পানি চলে আসতে চাইল। ইচ্ছে হল ছেলেটাকে একবার ছুঁয়ে দেখে। কিন্তু সে নিজেকে সামলে নেবার চেষ্টা করল।
সাজেদা মেহেরুন্নেসার দিকে তাকিয়ে ছিল। সে স্পষ্টই তার ভেতরটা দেখতে পাচ্ছে। তিনিও তো মা, তাই অনুভূতিগুলো তার কাছে স্পষ্ট। বলল- আমার ছেলেটা আমার চেহারা, গায়ের রঙ কিছুই পায় নাই অথচ সে…
এই জায়গায় এসে মেহরাব তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল- আম্মা চুপ করো না? এত কথা বলতেছ কেন? তোমার এখন বিশ্রাম দরকার।
সাজেদা ছেলের দিকে তাকায়… ছেলের চোখে পানি। এই পানি শুধু তার একার জন্য নয়, তার নিজের মায়ের জন্যও। মায়ের এত কাছে থেকেও সে মাকে অনুভব করার সুযোগ পাচ্ছে না তার কারণে। কেন যে শরীরটা খারাপ হয়ে গেল এভাবে… এমন সময় কলিং বেল বাজল। “বাবা এসে পড়েছে মনেহয়” বলে কেয়া দরজা খুলতে চলে গেল। সাজেদা মেহেরুন্নেসাকে বলল- আমার ছেলেকে এক গ্লাস পানি দিবেন? তার পিপাসা লাগছে।
মেহেরুন্নেসা পানি এনে মেহরাবকে দিলে মেহরাব কাঁপা হাতে গ্লাসটা হাতে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই তো, এটাই তার মা! যার মুখ দেখার তীব্র তৃষ্ণা নিয়ে সে এতকাল বেঁচে আছে। যার আদল কেমন, আদর কেমন, ভালোবাসা কেমন, শাসন কেমন, গলার স্বর কেমন, গায়ের ঘ্রাণ কেমন, হাতের স্পর্শ কেমন ভাবনাগুলোই ছিল প্রতিটি নিস্তব্ধতার সরব মুহূর্ত। আজ সেই সমস্ত উত্তর তাকে আলিঙ্গন করে নিতে তার সামনে দাঁড়িয়ে! তার বুকের ভেতর শিরশিরে একটা অনুভূতি আচ্ছন্ন করে দিতে লাগল- “মা মা মা, আমার মা” বলে! সে যদি ছোট্ট শিশুর মত ঝাপ দিয়ে মাকে একটাবার জাপ্টে ধরতে পারত এখন…? তার মা কী তাকে একটুও অনুভব করতে পারছে না? ঠিক সেই মুহূর্তে মেহেরুন্নেসা বলে উঠল-
-তোমাকে কেমন অস্থির লাগছে… পানিটা খাও বাবা।
-“বাবা”! মা কী তাহলে আমাকে চিনতে পারছে? তার চোখে জমা হওয়া পানি আর বাঁধ মানছে না। তারা উপচে পড়ে ভাসিয়ে দিতে চাইছে এই জগত সংসার। সব কিছু ভেসে যাক শুধু তার মায়ের মুখের “বাবা” ডাকটা বেঁচে থাকুক। প্রতিধ্বনিত হতে থাকুক তার অস্তিত্ব জুড়ে। আর কোনো শব্দ না থাকুক।
মেহরাবের চোখে পানি দেখে মেহেরুন্নেসা বললেন- এত ভয় পাচ্ছ কেন? মা ভালো হয়ে যাবে তো।
সাজেদা বললেন- আমার ছেলেটা মা ছাড়া কিছুই বুঝে না। এমন সময় কেয়া এসে তার শ্বাশুড়িকে বলল- মা, বাবা এসেছে। তাকে কী এখানে আসতে বলব?
মেহরুন্নেসা বললেন- হ্যাঁ, বলো আসতে। এর কিছুক্ষণ পরই ৬০ এর বেশি বয়সের সুঠাম গড়নের সৌম্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী কামরুল হাসান ঘরে ঢুকলেন। পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে তার দৃষ্টি মেহরাবের দিকে স্থির হল। মেহরাব তাকে সালাম দিল। হাসান সাহেব সালামের জবাব দিয়ে বললেন-
-আমার ছোট ছেলের বউ বলছিল আপনারা নাকি কী এক বিশেষ কারণে এখানে এসেছেন?
-হু…
-আপনাকে আমি চিনতে পেরেছি! সেদিন বাসা ভাড়া নেবার ব্যাপারে কথা বলে গেছেন।
মেহরাব ইতস্ততভাবে বলল- হুম… ওদিকে এই কথায় সাজেদা ভীষণ ভাবে অবাক হল। “বাসা ভাড়া নেবার ব্যাপারে কথা বলে গেছেন” মানে কী? সজীব এখানে এসেছিল? কথাও বলে গেছে? কই তাকে তো কিছুই জানায়নি!
কামরুল সাহেব তখন মেহরাবকে জিজ্ঞেস করলেন- সেই ব্যাপারেই কী কথা বলতে এসেছেন?
-না…
-তাহলে?
সাজেদা পুরো ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করল। তারপর তিনি নিজেই বলতে শুরু করলেন- আপনারা আমাদের কাউকে চেনেন না। কিন্তু আমি আপনাদের চিনি। আমার ছেলেও আপনাদের জানে। এখন যেটা আপনাদের বলতে আসছি আপনারা বুঝতেই পারছেন তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা। কিন্তু কথাগুলা কীভাবে বলব সেটাই বিরাট চিন্তার বিষয়। কিন্তু না বলে উপায় নাই। আপনারা দুইজন একটু ধৈর্য ধরে শুনবেন। অনেক বছর আগের কথা…
সাজেদা বলতে শুরু করলে মেহরাব ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে যায়। কী হচ্ছে কী হবে এসব সে ভাবতে পারছে না। সব কিছু জানার পর সে এখানে এসেছিল দুইদিন। এ বাড়ির সামনে গাড়ি রেখে চুপচাপ বসে থেকেছে। চেয়েছে আড়াল থেকে মা-বাবাকে দেখতে। বাড়িতে “To-Let” লাগানো থাকায় বাবা-মাকে দেখার ভালো একটা সুযোগ পেয়ে যায়। সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে ফোন করে বাবার সাথে কথা বলে। বাড়িতে ঢুকে তার সাথে ঘুরে ঘুরে ফ্ল্যাটও দেখে। সেই মুহূর্তে সে মোটেও স্বাভাবিক থাকতে পারছিল না, বার বার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। সেদিন বাবাকে দেখলেও মায়ের মুখটা দেখার সুযোগ হয়নি। অনেক ভেবে পরদিন সে একটা পার্সেল নিয়ে ডেলিভারি ম্যান সেজে বাসায় গিয়ে নক করে। একজন মেয়ে দরজা খুললে সে বলে “মেহেরুন্নেসা নামের কারো জন্য পার্সেল এসেছে।” তখন মেয়েটা মেহেরুন্নেসাকে ডেকে দিলে সে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে অপলক… এই তার মা? এই তার মুখ! কী স্নিগ্ধ শীতল করা…!!! মেহেরুন্নেসা ওকে জিজ্ঞেস করে- “হ্যাঁ বলুন?” মেহরাব পার্সেলটা ধরিয়ে দিয়ে বলে “এটা আপনার”। মেহেরুন্নেসা অবাক হয়, সে তো কোন কিছু অর্ডার করেনি? তখন মেহরাব বলেছিল “ঠিকানা আর নাম তো এটাই লিখা আছে” তারপর সে চলে আসে। এর বেশি দাঁড়ালে হয়ত চোখের পানি আড়াল করতে পারত না। সে তো শুধু মায়ের মুখটাই দেখতে চেয়েছিল। তার এখন একটাই ভাবনা, সব সত্য জানবার পর তার বাবা-মা কী রিয়েকশন দেবে? তার সাজেদা মায়েরই বা মনের অবস্থা কী হবে? খুব চেষ্টা করছে এই মুহূর্তটা আলিঙ্গন করে নেবার মত সাহস সঞ্চার করতে কিন্তু কিছুতেই পারছে না। ওই মুহুর্তে সাজেদা সজীবকে কীভাবে পেয়েছে সেটা বলতে যাচ্ছিল, সে দ্রুত তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল- আম্মা আমি বলছি, আসলে আমি আপনার স্কুলেরই এক ছাত্র। আপনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আপনাকে আমার সব সময়ই মনে পড়ে তাই দেখতে এসেছি। বলেই সে আড়চোখে আম্মার দিকে একবার তাকিয়ে মুখ নিচু করে বসে থাকে। সজীব হুট করে এমন কথা কেন বলল সাজেদা বুঝতে পারল না। সজীব আসলে কী চাইছে? ওদিকে হাসান সাহেব আর তার স্ত্রী মেহরুন্নেসাও কিছুই বুঝতে পারছেন না। তারাও সাজেদার মত অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। এক জীবনে তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেখেছে কিন্তু একে কখনও দেখেছে বলে তো মনে হচ্ছে না অথচ খুব নাকি স্নেহ করত! কামরুল সাহেব কখনও তার ভালো ছাত্রদের ভুলে যান না। তাহলে এরা আসলে কারা? এদের উদ্দেশ্যই বা কী?
চলবে…