#পরিযায়ী_জীবন (পর্ব – ১১)
চা হাতে বিজরী একেবারেই সাধারণ বেশে উদাস মুখে ড্রইংরুমে ঢোকে। কারো দিকে তাকালোও না! সেখানে মেহরাব তার পুরো পরিবার নিয়ে বসে। হাসান সাহেব বিজরীকে দেখে মুগ্ধ হলেন, কী মায়া মায়া মুখ! বিষন্ন মুখেও মেয়েটাকে কী চমৎকার লাগছে। তিনি বুঝলেন বিজরী স্ব-ইচ্ছায় আসেনি এখানে, কিন্তু কেন? খটকাটা একপাশে রেখে জিজ্ঞেস করলেন-
-কেমন আছ মা?
বিজরী কিছুটা বিরস বদনেই জবাব দেয়- আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
হাসান সাহেব খুবই স্বাভাবিক ভাবে কিছু কথা বলেন। চায়ের প্রশংসা করলেন। সাথে খেয়াল করলেন- বিজরী কেমন নির্বিকারই রয়ে গেল! মেহরাবের মুখে তখন উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট। হাসান সাহেব তখন ফাতেমাকে ডেকে খুব মৃদুস্বরে বললেন- বিজরীর কোনো সমস্যা হচ্ছে ওকে ভেতরে নিয়ে যাও ভালো করে কথা বলুক। ওর কথা জেনেই বাকি কথা হবে। ফাতেমা “জ্বি চাচাজান” বলে বিজরীকে ভেতরে নিয়ে যায়। ওরা ভেতরে যেতেই হাসান সাহেব মেহরাবকেও ভেতরে পাঠায়।
ফাতেমা সন্ধ্যা থেকেই বিজরীদের বাড়ি ছিল। বিজরীর মা একা এত লোকের আয়োজন করতে হিমশিম খাবেন তাই সে নিজে থেকেই এসেছে। আসার পর থেকেই দেখেছে বিজরী কেমন নির্বিকার। ভেবেছে বিয়ের কথায় মেয়েদের ভেতর অন্যরকম অনেক অনুভূতির আনাগোনা হয়। বিজরীর হয়ত তেমনই কিছু হচ্ছে। হয়ত কিছুটা ভয়ও হচ্ছে। ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকই ভেবেছিল। তাছাড়া এসেই রান্নাঘরে আন্টির সাথে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় সে বিজরীর সাথে কথা বলার সময়ও পায়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কথা বলাটা জরুরি ছিল। সে বিজরীর ঘরে ঢুকেই বলল-
-কী হয়েছে তোর?
বিজরী কিছুটা রুক্ষ মেজাজে বলল- কী হবে? নতুন করে আর কী হবার আছে? কিন্তু ওনারা এখানে কেন এসেছে আগে সেটা বলো?
-কেন এসেছে না বোঝার তো কিছু নেই!
-আছে, না বোঝার আছে।
ফাতেমা সরু চোখে বলল- কী আছে?
-মানে না বোঝার তো কিছু নেই। তুমি অন্তত না বোঝার ভান করো না। তোমাকে আমি আমার নিজের বুবু বলেই জানি। তুমি নিশ্চই সব জানো?
-তুই স্পষ্ট করে বলতো কী হয়েছে?
-স্পষ্ট করে বলব? একজন স্বামী পরিত্যাক্ত, ডিভোর্সি মেয়ের কাছে ওনারা কী চায়?
ফাতেমা চমকে ওঠে ওর কথায় তারপর হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়ে গেল তার। সে উদ্বেগের গলায় বলল- গতকাল বিকেলে তুই আমাদের বাড়ি গিয়েছিলি। তোকে কেউ কিছু বলেছে?
-না।
-তাহলে?
-ভেতরে ঢুকতে গিয়ে এ্যাক্সিডেন্টলি আমি ওদের কথা শুনে ফেলেছি।
ওই মুহুর্তে মেহরাব দরজা থেকে বলল- ভেতরে আসব?
বিজরী চুপ রইল তাই ফাতেমা বলল- আয়। মেহরাব ঘরে ঢুকে ওদের চেহারা দেখে বলল- কী হয়েছে বুবু?
ফাতেমা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল- তোর মা যে এখানে এসেছেন তিনি তো জানেন কেন এসেছেন?
-হ্যাঁ অবশ্যই জানে।
ফাতেমা তখন বিজরীর দিকে তাকিয়ে বলল- তোর আর কিছু বলার আছে?
-এসেছেন বলেই কী সব সহজ হয়ে গেল? মেহরাবের দিকে তাকিয়ে বুবুকে উদ্দেশ্য করে বলল- তোমার ভাই নিশ্চই বাধ্য করেছে?
মেহরাব অধৈর্য্য গলায় ফাতেমাকে জিজ্ঞেস করল- কী হয়েছে বুবু?
-বিজরী গতকাল আমাদের বাড়ি গিয়েছিল বিকেলে। তখন ওকে নিয়ে বলা তোর মায়ের কথা ও শুনে ফেলেছে।
মেহরাব ক্লান্ত গলায় বলল- ও… গত সন্ধ্যায় আমার সাথেও এভাবে কথা বলার কারণটা এখন বুঝে এসেছে। সে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল- দেখো, সন্তানকে কেন্দ্র করে সবারই নিজস্ব কিছু পছন্দ, অপছন্দ, স্বপ্ন আর শখ থাকে। আমার মায়েরও আছে সেটা অবশ্যই দোষের নয়। সে তার জায়গা থেকে যেমনটা ভালো ভেবেছে বলেছে। তাই বলে সন্তানের ভালোলাগা মন্দলাগার কোনো মূল্য তার কাছে থাকবে না এমন নয়। তাছাড়া তার সন্তান ছোট বাচ্চা নয় যে একটা কিছু মনে ধরেছে আর সেটা নিয়ে বায়না করছে, জেদ করছে। আমি মাকে সব বুঝিয়ে বলার পর মা বুঝতে পেরেছেন। তার আর আপত্তি নেই এই বিয়েতে। মা স্ব-ইচ্ছায় এখানে এসেছে।
বিজরী বলল- সব কিছু এতই সহজ? না। আমি বাস্তবতা দেখা মেয়ে তাই কোনটা সহজ আর কোনটা কী সেটা বোঝার ক্ষমতা আমার আছে।
বিজরীর আগের বিয়েটা অনেকটা এভাবেই হয়েছিল! তাই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হোক স্বাভাবিকভাবেই সেটা ও চায় না। বিজরীর জায়গা থেকে ভয়টা পুরোপুরি সঠিক। ফাতেমা হতাশ গলায় বলল- তুই চাইলে মেহরাবের মায়ের সাথে তোর কথা বলিয়ে দেই?
মেহরাব কঠিন গলায় বলল- একদম না।আমার মা অবশ্যই নিজেকে প্রুফ করতে এখানে আসবে না। বিজরীকে আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে। ও কী আমাকে জানে না? নতুন দেখছে?
বিজরী কোনো কথা বলল না। তার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল শুধু। ও জানে মেহরাব কখনো ভুল বা অতিরঞ্জিত কিছু বলে না। যা বলে, জেনে বুঝে দায়িত্ব নিয়েই বলে। কিন্তু ওর যে একবার চুন খেয়ে মুখ পুড়েছে এখন দৈ দেখলেও ভয় হয়!
ফাতেমা মেহরাবকে চাপা ধমক দেয়। আহ্,কী হচ্ছে সজীব? তারপর বিজরীর দিকে তাকিয়ে বলে-
-তুই এত চিন্তা করছিস কেন? এতগুলো মানুষ নিশ্চই ভুল হবে না? তুই আমাদের জানিস না? আমরা কী তোর খারাপ চাইব কেউ? তোকে আমি দুইদিন সময় দিলাম, তুই ভাব। ভেবেই সিদ্ধান্ত নে। তবে সিদ্ধান্ত নেবার সময় মাথায় রাখিস মানুষ সব সময় ভুল হয়না যেমন, তেমন নিজের মানুষদের বিশ্বাসও করতে হয়। এমন করে তোর ভালো আর কে চাইবে সেটাও ভেবে দেখিস। সুযোগ বার বার আসে না। হেঁটে আসা নেয়ামতকে পায়ে ঠেলতে হয় না। বলে সে মেহরাবের হাত ধরে চলে আসে। এসে বিজরীর বাবাকে আলাদা ডেকে পুরো ব্যাপারটা জানায়। জাকারিয়া সাহেব বিমর্ষ হয়ে যায়। বলে,
-এখন কী করি? আমি ওর সাথে কথা বলছি দাঁড়াও… ফাতেমা তাকে দ্রুত থামায়। বলে-
-চাচা, এখন ওকে এসব নিয়ে আর কিছু বলাটা ঠিক হবে না।
-তাহলে হাসান সাহেবকে কী জবাব দেব?
-আমি চাচাজানকে বুঝিয়ে বলছি, তিনি অবশ্যই বুঝবেন।
জাকারিয়া সাহেব বিবর্ণ মুখে বলল- যা ভালো মনে হয় করো। মেয়েটাকে আর এমন দেখতে পারছি না…
ফাতেমা তাকে আশ্বস্ত করে বলল- চাচা আপনি একদম ভাববেন না। বিজরী কালকের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে দেখবেন। আর সেটা “হ্যাঁ” ছাড়া অন্য কিছু হবে না। আপনি শুধু এসব নিয়ে ওকে কিছু বলবেন না। ওকে একটু একা ভাবার সময়টা দিন।
জাকারিয়া সাহেব মাথা নিচু করে বললেন- ঠিক আছে, যেভাবে ভালো হয় হোক।
ফাতেমা তখন মেহরাবের বাবার সাথে কথা বলে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার করে নেয়। হাসান সাহেব কিছু মনে করলেন না। বরং খুশিই হলেন। মেয়েটা খুশি মনে বিয়ে করবে এটাই তিনি চান। নতুন জীবন জোর জবরদস্তি করে শুরু করা যায় না। এরপর সবাই জাকারিয়া সাহেব আর তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসে।
এদিকে রাত হয়ে যাওয়ায় সাজেদা মেহরাবের পরিবারের কাউকে যেতে দিতে চাইলেন না। কিন্তু ছোট্ট বাড়ি এত লোক থাকবে কোথায়? তাই হাসান সাহেব বললেন-
-আপনি অস্থির হবেন না, আমাদের সাথে গাড়ি আছে যেতে অসুবিধা হবে না। বিয়ে ঠিক হোক তখন এসে থাকা যাবে।
সাজেদা বলল- ঠিক আছে ভাইসাহেব, তখন আবার কোনো বাহানা কইরেন না। কিন্তু মাহাদী ঘোষণা দিয়ে বসল সে যাবে না। বড় ভাইয়া বাকি সবাইকে নিয়ে চলে যাক তার কাজ আছে মেহরাবের সাথে। মেহরাব অবাক হয়ে বলল-
-কী কাজ?
-সে পরে দেখবি। আমি এখানেই থাকছি। বাড়িটা বেশ পছন্দ হয়েছে আমার, সাথে এখানকার সবাইকে। ফারাবি আর ফাইয়াজকে তো আমার দারুণ লেগেছে। ওদের রেখে যেতে ইচ্ছা করছে না। ওরা তো আমার বন্ধু হয়ে গেছে! “চাচ্চু” শুনতে শুনতে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, এবার প্রাণ ভরে “মামা” ডাক শুনে বয়স কমিয়ে ফেলব। ফাতেমা তখন হেসে বলল-
-ভালো বলেছেন ভাই। তবে এই দুই বিচ্ছুর সাথে একদিন থাকলে আর থাকতে ইচ্ছা করবে না।
মাহাদী হেসে বলল- ওরা বিচ্ছু হলে আমি বিচ্ছুর মামা। আমি যে কত্ত এনার্জেটিক জানে নাকি ওরা? ওদেরকেই হয়রান করে ছেড়ে দিব।
মাহাদীর কথায় সবাই হেসে উঠল। মাহাবুব বলল- আর তুই সেটা খুব ভালো করেই পারবি। তুই আছিস বলেই বাড়ির যত অকাজ গুলোর মাশুল আমাদের গুনতে হয়। তুই এদের সাথে থাকবি এটা ভেবে বাচ্চা দুটোর জন্য আমার মায়া হচ্ছে। তারপর ফাতেমার দিকে তাকিয়ে বলল- ও কিন্তু খুব পাজি, রেখে দিলে আপনাদের খুব অসুবিধে হবে।
ফাতেমা হেসে বলল- সমস্যা নেই, ছোট ভাই-ই তো।
মাহাদী খুশি হয়ে বলল- দেখলে? এইজন্যই জীবনে একটা বড় বোনের খুব প্রয়োজন।
কেয়া তখন মাহাদীর কাছে গিয়ে চাপা গলায় বলল- কী হচ্ছে মাহাদী? তুমি এখানে কেন থাকবে? সবাই বাড়ি যাচ্ছে তুমিও চলো?
মাহাদী গলায় কোনো রাখঢাক না রেখে বলল- বললাম তো আমার কাজ আছে৷ সবাই বাড়ি যাচ্ছে তুমিও চলে যাও।
কেয়া চোখ পাকিয়ে বলল- কাজটা কী শুনি?
-ওটা সিক্রেট, বলা যাবে না। তারপর ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলল- ভাইয়া অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু, সবাইকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি যা।
ফাতেমা তখন বলল- কেয়া তুমিও থেকে যাও না মাহাদীর সাথে? সবাই এক সাথে থাকলে ভালো লাগবে।
-না বুবু, ও একাই থাকুক। আমি বরং একটা দিন শান্তিতে থাকি। তুমি কিন্তু ছোট ভাই বলে আশকারা দিয়ে ওর সব কথা শুনতে যেও না। পরে তোমাদের বিপদে ফেলে দৌড়ে পালাবে।
ফাতেমা হেসে বলল- সে দেখা যাবে। তুমি তো খুব মিষ্টি মেয়ে! বিয়ের সময় এসে থাকবে কিন্তু?
-ঠিক আছে, থাকব।
মেহেরুন্নেসা অবাক হয়ে দেখছে তার পুরো পরিবার কেমন এই পরিবারটাকে সম্পূর্ণ নিজের করে নিয়ে ফেলেছে! কেবল তার মনেই কেমন একটা দ্বন্দ এখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়! সবাই এত মনখোলা সে কেন হতে পারছে না? তার মনে কেন ভয় ঢুকে ঘাপটি মেরে বসে থাকে?
এদিকে হাসান সাহেব মেহেরুন্নেসার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার ভেতরটা দেখার চেষ্টা করছিলেন। তিনি হয়ত অনেকটাই আন্দাজ করতে পারলেন। তাদের ৪০ বছরের সংসার জীবন, মুখ দেখেই মন পড়ে ফেলতে পারে। তাই তিনি সবাইকে তাগাদা দিলেন ফেরার জন্য। ওরা চলে যাবার পর মাহাদী ফাতেমাকে বলল-
-বুবু, আমি ফ্রেস হয়ে আসছি। আপনার সাথে আমার জরুরি বৈঠক আছে।
ফাতেমা হেসে বলল- বুবু বলে ডাকছ তাহলে “তুমি” করেই বলো।
-আপনি তাহলে আমাকে “তুই” করে বলবেন।
মাহাদীর এই ছোট্ট কথাটাই ফাতেমার এত ভালো লাগল… যেখানে ওরা দিন রাত ভাই হারাবার ভয় করছে সেখানে আস্ত পরিবার ওদের সাথে এসে জুড়ে যাচ্ছে!!! সে হেসে বলে- আচ্ছা বলব। তারপর মেহরাবের দিকে তাকিয়ে মাহাদীকে ওর ঘরে নিয়ে যেতে বলে।
ঘন্টা খানিক পর উঠানে জরুরি মিটিং বসেছে। মিটিং এর সদস্য- ফাতেমা, সাগর, ফারজানা, মেহরাব। মিটিং এর সভাপতিত্ব করছে মাহাদী। মিটিং এর একমাত্র এজেন্ডা “বিজরী তুই হ্যাঁ বলবি কিনা বল?”
মাহাদী নিচু স্বরে বলল- বিজরী দুইদিনের সময় নিয়েছে, কিন্তু আমরা ওকে দুইদিন সময় দিব না। একদিনের মধ্যে মামলা ডিসমিস করে কোর্টে চালান দিয়ে দিব।
মেহরাব ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল- মানে?
-মানে আমরা এমন সব কাজ করতে থাকব যে, তখন ও নিজেই হেঁটে, না দৌড়ে আসবে “হ্যাঁ” বলতে।
মেহরাব ঘাড় ঘুরিয়ে বলল- ওই ঘাউড়াটা জীবনেও তা করবে না।
ফাতেমা বিরক্ত হয়ে বলল- বিজরী মোটেও ঘাউড়া না। বিজরী কিন্তু রাতে বারান্দাতেই বেশি সময় থাকে শুনতে পেলে ওখান থেকেই ঢিল ছুঁড়ে মারবে তোকে।
মাহাদী হাসতে হাসতে বলল- ইন্টারেস্টিং! তারপর চাপা গলায় বলল- বুবু, বারান্দায় কী ওটা বিজরী?
ফাতেমা বিজরীদের বারান্দায় তাকিয়ে বলে- হ্যাঁ।
-এই মেহরাব তোর কী সাউন্ড বক্স আছে?
-আছে, কেন?
-দ্রুত নিয়ে আয় যা। একটা গান বাজাব।
-এই রাতেরবেলা সাউন্ড বক্সে গান বাজাবে? এটা শহর পাওনি। এখন গান বাজালে আশপাশের মানুষ এসে গালি দিয়ে যাবে।
-তুই এত কথা বলিস কেন? তোর আম্মার কাছ থেকে আমার অনুমতি নেওয়া শেষ।
মেহরাব বিস্ময়ের সাথে বলল- কখন করলে এসব?
-অনেক আগে। এখন যা তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়। অতঃপর ছাদে গিয়ে সাউণ্ড বক্স বিজরীদের বাড়ির দিকে মুখ করে সে গান চালিয়ে দিল “এক আকাশের তারা তুই একা গুনিসনে… গুনতে দিস তুই কিছু মোরে…”
গান চালু হওয়ার এক মিনিট পরই বিজরী বারান্দা ছেড়ে ঘরে চলে যায়। মাহাদী বলল- বুবু, বিজরী কী চলে গেল?
মেহরাব চাপা গলায় বলল- নাহ, বোধহয় তোমার প্ল্যান অনুযায়ী এখানে ছুটে আসছে “হ্যাঁ” বলতে।
ফারজানা আর ফাতেমা শব্দ করে হেসে ফেলল আর মাহাদী বোকার মত দাঁড়িয়ে থেকে গাল চুলকাতে চুলকাতে বলল- বরণডালা নিয়ে দাঁড়াব নাকি?
-তা কেন? একেবারে কাজী ডেকে আনো?
-এত রাতে কাজী আসবে? তোর কী মনে হয়? পরক্ষণেই সুর পাল্টে বলল- বিয়ের জন্য এত উতলা হয়েছিস কেন? একটু ধৈর্য ধর?
-ধৈর্য ধরে অলরেডি ১০মিনিট পার হয়ে গেছে। “হ্যাঁ” বলার খুশিতে দৌড়ে রাস্তা ভুলে অন্য কোথাও চলে গেল নাকি?
-উহু, সে সম্ভাবনা প্রেমিকাদের থাকে না। আমার মনেহয় বিজরীর গানটা পছন্দ হয়নি। “আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে… ই-ইয়াহ…” এটা বাজালে নিশ্চই দৌড়ে আসত!
চলবে…