পাইথন পর্ব-০১

0
1

#পাইথন
#1st_Part
Written by : #Galib_Abraar

এক কালো পানির নদী বয়ে গিয়েছে পশ্চিম দিকে। নদীর পাড়ে হাজারও মাথার খুলি পড়ে আছে। সাপ বিচ্ছু সহ নানান রকম বিষাক্ত পোকামাকড়ে ভরপুর সেখানে। পাতাবিহীন শুঁকনো গাছে ছেয়ে আছে চারপাশ। নদীর পানি থেকে কালো ধোঁয়া বাষ্প হয়ে উঠছে।

হঠাৎ ওপর থেকে বিকট শব্দে কিছু একটা নদীতে পড়লো। নদীর পানি উথাল পাথাল হয়ে পাড়ে এসে বারি খেলো। কিছুক্ষণ বাদেই একজন ডুবন্ত অবস্থায় উঠলো পানি থেকে। শ্বাস নিতে নিতে সাঁতার কেঁটে পাড়ের দিকে আসতে লাগলো। হাঁপাতে হাঁপাতে পাড়ে পৌঁছে চিত হয়ে শুয়ে পড়লো। তার শরীরের ওজনে শুঁকনো মাথার খুলি গুলো মর্মর করে ভেঙে গেলো।

একটু শান্ত হয়ে আশপাশে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললো ” এটা কোন জায়গা….?

তখন-ই একটা লাল রঙের বিষাক্ত সাপ তার বুকের ওপর উঠে ফনা তুলে তাকালো তার দিকে। সে একটুও ভীত না হয়ে খপ করে সাপের গর্দান ধরে ফেললো। সাপ টা তার হাতে পেঁচিয়ে গেলো।
এরপর ভালো করে সাপের দিকে তাকিয়ে বললো ” তোমাকে দেখে ভাসিলা’র কথা মনে পড়ে গেলো। সে সব সময় লাল জামা পড়ে থাকে। অবশ্য তুমি লাল জামা পড়ো নি। তোমার শরীরের রঙ-ই লাল…..

এই বলে সাপ টাকে নদীতে ছুঁড়ে মারলো। আস্তে আস্তে উঠে চারপাশে তাকিয়ে বললো ” কিন্তু আমি এখন কোথায় আছি…..?

তখন-ই পেছন থেকে এক দারাজ কন্ঠ ভেসে এলো ” তুমি এখন সাকার রাজ্যে আছো পাইথন….!

চমকে গিয়ে পেছনে তাকিয়ে পাইথন দেখলো একজন কঙ্কালসার লোক বসে আছে খচ্চরের পিঠে। তার পেছনে একই রকম দেখতে কঙ্কালসার কয়েকজন সৈনিক দাঁড়িয়ে আছে।

পাইথন অবাক হয়ে বললো ” সাকার! সাকার তো পাপিষ্ঠ জ্বীনদের মৃত্যুর পরের জায়গা। আমি সাকারে কেন। আমি তো কোন পাপ করি নি…!

সে বললো ” করেছো! পাপ করেছো। তুমি ডালিয়া’কে মেরেছো। যে তোমাকে পা*গলের মতো ভালোবাসতো৷ আর এটাই তোমার পাপ। এখন থেকে তোমার জায়গা সাকার….!

পাইথন প্রচন্ড রেগে বললো ” ডালিয়া একজন বিশ্বাসঘাতক ছিলো। তাকে মেরে আমি কোন পাপ করি নি। আমি সাকারে থাকবো না…..!

এই বলে পাইথন হাঁটা দিলো সামনে। দুইটা বর্শা উড়ে এসে পাইথনে’র সামনে ক্রস আঁকারে গেঁথে গেলো। পাইথন পেছনে তাকিয়ে বললো ” আপনি কি আমাকে জোড় খাটিয়ে এখানে রাখতে চান…?

খচ্চরের পিঠে বসা সে বললো ” অবাধ্য আত্মাদের সাথে জোড় না খাটালে সাকার সেই কবে ধ্বংস হয়ে যেতো….!

পাইথন দাঁত কটমট করে বললো ” কি বললেন আপনি। আমি অবাধ্য আত্মা….

এই বলে তেড়ে আসতে নিলে ওপর থেকে একটা আগুনের জাল পড়লো পাইথনে’র ওপর। পাইথন জালে আটকা পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে লাগলো। খচ্চরের পিঠে বসা সে হাসতে হাসতে বললো ” এখানে তোমাট কোন শক্তি কাজে লাগবে না। এখানে শুধু হাইকাল-এর হুকুম চলে। আর হাইকাল কে……..?

এই বলে সে বিরক্তি নিয়ে সৈনিকদের দিকে তাকালো। সৈনিক রা বলে উঠলো একসাথে ” আপনি মহারাজ….!

সে হাসতে হাসতে বললো ” হ্যাঁ আমি হাইকাল…

এই বলে আবার বিরক্তি নিয়ে সৈনিকদের দিকে তাকালো। সৈনিক রা একসাথে বলে উঠলো ” হাইকালে’র জয় হোক, হাইকাল অমর হোক….!

**এর সাথে দৃশ্য পরিবর্তন হয়ে পৃথিবীতে চলে আসে…..

রাত তখন প্রায় ১২ টা ছুঁইছুঁই। তালিফ ঘরের মেঝেতে বসে আছে চিন্তিত চেহারায়। মেঝেতে লাল লাল রঙ দিয়ে অঙ্কন করা একটা অদ্ভুত সার্কেল। যার চার কোণে চার টা মোমবাতি জ্বালানো।

হঠাৎ দরজায় টোকা পড়লো এবং আওয়াজ আসলো ” ভাইয়া আসতে পারি…?

তালিফ আনমনে বললো ” হ্যাঁ….

দরজা ঠেলে একটা মেয়ে প্রবেশ করলো। অন্ধকার কেঁটে মেয়েটার চেহারায় আলো পড়তেই বুঝা গেলো এটা ভাসিলা।
তালিফ জিজ্ঞেস করলো ” এনেছিস..?

ভাসিলা একটা একটা রক্ত ভর্তি সিরিঞ্জ তালিফে’র দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো ” এভাবে জিজা’র রক্ত বের করতে থাকলে একদিন ও রক্তের অভাবেই মা-রা যাবে….!

তালিফ বললো ” মরবে না। জিজা’র আত্মা খুঁজে বের করতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব৷ ওর শরীর আত্মা চায়। সেই দূর্ঘটনার পর জিজা আর উঠে নি। কয়েকমাস ল্যাবে রাখার পরও জিজা’র জ্ঞান ফিরে নি৷ তারপর ইমাজ নাউফি’র স্মরনাপন্ন হলে সে জানায় জিজা’র আত্মা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সে জিজা’র শরীরের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারছে না। ল্যাবের চিকিৎসা দিয়ে আত্মা ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই এই পন্থা অনুসরণ করতে হবো। না জানি কোথায় কোথায় ঘুরছে জিজা’র আত্মা….!

এই বলে তালিফ সিরিঞ্জ থেকে জিজা’র রক্ত সার্কেলের মাঝে দিয়ে ভাসিলা’কে সামনে বসতে বললো। ভাসিলা সামনে বসে রক্তের ওপর হাত রেখে বললো ” ভাইয়া এবারও যদি না পাই…?

তালিফ বললো ” আবার চেষ্টা করবো। বারবার চেষ্টা করবো। ফারিশতা এসে যাতে জিজা’কে সুস্থ দেখতে পায়….!

এই বলে তালিফ কিছু একটা পড়তে শুরু করলো। ভাসিলা চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে বলছে ” জিজা কোথায় তুমি। আমি তোমাকে নিতে এসেছি। সাড়া দাও…….

এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর ধাপ করে ভাসিলা চোখ মেলে তাকালো। মোমবাতি গুলো নিভে গেলো। তালিফ হঠাৎ করেই প্রচন্ড রেগে হাত দিয়ে ছিটকা মেরে মোমবাতি গুলো ফেলে দিলো আর বললো ” আবার ব্যর্থ……

ভাসিলা ঘাবড়ে গিয়ে বললো ” ভাইয়া আমার মনে হয় আমাদের অন্য পন্থা অনুসরণ করা উচিত। এভাবে জিজা’র আত্মা খুঁজে পাওয়া সম্ভব না….!

তালিফ একটা সিগারেট ধরিয়ে টান মেরে ধোঁয়া ফুঁকে এদিক ওদিক পায়চারি করতে লাগলো আর বললো ” তাহলে করা উচিত এখন……এই বলে তালিফ থমকে দাঁড়িয়ে ভাসিলা’র দিকে তাকিয়ে বললো ” ইমাম নাউফি! সে-ই পারবে এটার সমাধান দিতে। সে নিশ্চয়ই অন্য কোন পন্থা খুঁজে বের করবে….!

ভাসিলা বললো ” কিন্তু তাকে আপনি কোথায় পাবেন। চাঁদের পরী নূরিনে’র মায়াজালে পড়ে সে তার জীবনের শেষ মানুষটাকে হারিয়ে ফেলেছে। তারপর থেকে তাকে আর কোথাও দেখা যায় নি। সে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছে…..!

তালিফ সিগারেটে টান দিয়ে বললো ” জিজা’র আত্মা খোঁজার চেয়ে তাকে খুঁজে বের করা সহজ হবে। চলো কাজে লেগে যাও। ইমাম নাউফি’কে যেভাবেই হোক খুঁজে বের করতে হবে….!

এই বলে তালিফ বের হয়ে গেলো ঘর থেকে! ভাসিলা মুখ ভেঙিয়ে বললো ” দেভাবেই হোত ইমাম নাউফিতে খুদে বেল কলতে হপে……উনি বললো আর হয়ে গেলো। ইমাম নাউফি নিজে থেকে ধরা না দিলে কারো সাধ্য নাই তাকে খুঁজে বের করার…..!

এর মাঝেই ভাসিলা’র ফোন বেজে উঠলো। টেবিলের ওপর থেকে ফোন টা নিয়ে রিসিভ করে বললো ” হ্যাঁ আতিশ বলো….!

ওপাশ থেকে আতিশ বললো ” কি হচ্ছে বাসায়…?

ভাসিলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো ” আর কি হবে। আবার ফেইল মারছি। ভাইয়া তো রেগে লাল হয়ে গেছে। এখন আবার নতুন আপদ আনতে যাচ্ছে….!

আতিশ বললো ” নতুন আপদ মানে। বুগিয়ে বলো….!

ভাসিলা বললো ” তোমারে কি বুগিয়ে বলবো। আমি নিজেই বুগতে পারছি না। তুমি-ই বলো ইমাম নাউফি’কে এখন কই পাবো। তাকে খুঁজে বের করতে বলছে ভাইয়া….!

আতিশ অবাক হয়ে বললো ” এর চেয়ে দুধের ভিতর সাদা চুল খুঁজে পাওয়া সহজ হতো। আচ্ছা আমি বাসায় এসে এই বিষয় টা বুগাপড়া করতাছি দাঁড়াও….!

ভাসিলা বললো ” তুই কোথায় আছো এখন…?

আতিশ বললো ” ফার্মেসীতে আছি…..

কথা শেষ না হতেই ভাসিলা একটু লাজুক হাসি দিয়ে বললো ” বৃষ্টি আসার পূর্বাভাস দেখেই ফার্মেসীতে চলে গেছো…!

আতিশ বললো ” আমি তো সর্দির ঔষধ নিতে আসছিলাম…..!

ভাসিলা রেগে বললো ” ধূরর হা*রামি! মুডের ১২ টা বাজিয়ে দিলি। বাসায় আয় তুই আইজকা…..!

এই বলে ফোন কেঁটে দিয়ে ভাসিলা জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। মেঘাচ্ছন্ন রাতের আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। বাতাসে জানালার পর্দা গুলো শব্দ করে উড়ছে। ভসিলা’র চুল গুলোও দোল খাচ্ছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে ভাসিলা’র কন্ঠে শুনা যায় ” ইমাম নাউফি! কোথায় আপনি। আপনাকে কিভাবে খুঁজে পাবো………

**এদিকে দেখা যায় তালিফ দাঁড়িয়ে আছে ল্যাবের ভেতরে একটা কাঁচের জারের সামনে। যার মাঝে জিজা পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় ভেসে আছে। জিজা’র শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্যালাইন কিট লাগানো৷
তালিফে’র চোখের কোণে হালকা পানি জমেছে। জিজা’র এই অবস্থা কিভাবে হয়েছিলো সবকিছু এক এক করে মস্তিষ্কে বারি দিতে লাগলো। কিভাবে জিজা রাণী ফারিশতা’র সাথে মরণ খেলায় মেতেছিলো।

সবকিছু ভেবে চোখের পানি মুছে কাঁচের জারের ওপরে জিজা’র মাথায় হাত রেখে বললো ” আমি তোমাকে ফিরিয়ে আনবো আমার রাজকন্যা……..

**দৃশ্য পরিবর্তন হয়ে চলে যায় সাকারে………

পাইথন’কে জালে জড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে কাঁধে করে। হাইকাল আগে আগে খচ্চরের পিঠে চড়ে যাচ্ছে। ভয়ানক এক পৌরাণিক রাজমহল। দেয়ালে দেয়ালে ভয়ানক লতাপাতায় ঘেরা। চারদিকে হিংস্র পশুর মূর্তি দাঁড় করিয়ে রাখা। এখানে সবার শরীর কঙ্কালসার। দেখে মনে হয় হাজার বছর ধরে কেউ খাওয়া দাওয়া করে না।

পাইথন জালের ভেতর থেকে রাগান্বিত কন্ঠে বললো ” আমাকে যেতে দিন বলছি। না হলে খুব খারাপ হয়ে যাবে। আমাকে চিনেন না আপনি…..!

হাইকাল হাসতে হাসতে বললো ” তুমি পাইথন! জুখানের পুত্র পাইথন। তোমার বাবা মা’কে রাজা দিমিত্রি নৃশংস ভাবে হ*ত্যা করেছিলো তারপর তোমাকে ছোটবেলা থেকে লালনপালন করে এক দানবে পরিনত করেছিলো। তুমি ছিলে তোমার বাবা মা’য়ের খু*নির হুকুমের দাস। রাণী ফারিশতা’র বদৌলতে তুমি একসময় সত্যি টা জানতে পারো এবং রাজা দিমিত্রিকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দাও…..

পাইথন তাকে থামিয়ে বললো ” আমার সম্পর্কে এতোকিছু কিভাবে জানেন আপনি…?

হাইকাল বললো ” এটা আমার গুণ বলতে পারো। আমি চেহারা পড়তে পারি সবার….

এই বলে হাইকাল সৈনিকদের আদেশ করলো পাইথন’কে মুক্ত করতে।
পাইথন জাল থেকে মুক্ত হয়ে সোজা তেড়ে গেলো হাইকালে’র দিকে। এক ধাক্কায় হাইকাল’কে ছুঁড়ে ফেলে দিলো খচ্চরের পিঠ থেকে এবং বললো ” আমি সাকারে থাকবো না…..!

সৈনিকরা পাইথন’কে আটক করতে আসলে হাইকাল উঠে হাসতে হাসতে হাতের ইশারায় তাদের নিষেধ করে বললো ” খেলতে দাও বাচ্চাকে….!

পাইথন আবার তেড়ে গেলো হাইকালে’র দিকে এবং বললো ” আমি বাচ্চা না কি সেটা এখন-ই বুঝাচ্ছি আপনাকে…..

কাছে যেতেই হাইকাল এক ঘুষি মেরে পাইথন’কে নিচে ফেলে দিলো। পাইথন কংক্রিট ভেঙে মাটিতে দেবে গেলো। কোকরাতে কোকরাতে বললো ” আমি প্রস্তুত ছিলাম না….!

হাইকাল এক জায়গায় বসে বললো ” ঠিক আছে প্রস্তুত হয়ে আসো। এবার যদি আমাকে স্পর্শ করতে পারো তাহলে তুমি সাকার থেকে মুক্ত….!

পাইথন উঠে জামা ঝারতে ঝারতে বললো ” তাহলে আমার মুক্তি সনদ তৈরি করুন….
এই বলে বিদ্যুৎ বেগে হাইকালে’র দিকে তেড়ে গেলো পাইথন। হাইকাল এক জায়গায় নড়নড় বিহীন বসে আছে। পাইথন যখন-ই হাইকাল’কে স্পর্শ করতে যাবে তখন-ই একটা বড় পাথর উড়ে এসে পাইথন’কে উড়িয়ে নিয়ে দেয়ালের সাথে চিপকে দিলো।

পাইথন কোকরাতে কোকরাতে বললো ” পিঠা হয়ে গেলাম একবারে……

হাইকাল উঠে এসে পাইথন’কে বললো ” তোমার পাপ বেশি গুরুতর না পাইথন। তুমি চাইলে আমার যোদ্ধা হতে পারো আমার। অথবা হতে পারো আমার সৈনিকদের আজকের রাতের খাবার। সিদ্ধান্ত তোমার….!

পাইথন বললো ” না আমি যোদ্ধা হবো। না খাবার। আমি শুধু এখান থেকে যেতে চাই। আমার একজনকে খুঁজতে হবে। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত আমি শূন্যে ঘুরে বেড়াবো এভাবেই। আমাকে আপনি আঁটকে রাখতে পারবেন না….!

হাইকাল বললো ” ভুলে যাও তার কথা। জান্নাত ছিলো মানুষ। তার আত্মার জগতে তুমি প্রবেশ করতে পারবে না। তোমার অনুমতি নেই। আমার কথা মেনে এখানেই থেকে যাও। জিদ করো না…..!

পাইথন আর কিছু বললো না। হাইকাল সৈনিকদের আদেশ দিলো পাইথন’কে তার থাকার জায়গা দেখিয়ে দিতে আর নতুন কাপড় দিতে পরিধান করার জন্য….!

হাইকাল চলে যাচ্ছিলো এই বলে। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে আবার বিরক্তি নিয়ে পেছনে তাকালো। সৈনিক রা একসাথে বলে উঠলো ” হাইকালে’র জয় হোক, হাইকাল অমর হোক…..

তারপর চলে গেলো হাইকাল। পাইথন দুইজন সৈনিকের সাথে হাঁটছে আর ভাবছে ” জান্নাত মানুষের আত্মার জগতে আছে। সেখানে আমার প্রবেশ করার অনুমতি নেই। হাইকাল সঠিক বলেছে। কিন্তু জান্নাত তো আমার আত্মার জগতে প্রবেশ করতে পারবে। তার তো কোন বাধা নেই। তাহলে যেভাবেই হোক তাকে এখানে নিয়ে আসবো। তারপর এই নোংরা জায়গা ছেড়ে চলে যাবো দু’জন। সেই পর্যন্ত হাইকালে’র সাথে তাল মিলিয়ে থাকা যাক……..!

**দৃশ্য পরিবর্তন……

হাইকাল টোবিল ভর্তি খাবার নিয়ে বসেছে। কালো কুচকুচে দুই নারী মূর্তি পাশে দাঁড়িয়ে বাতাস করছে। সামনের কেদারায় বসে আছে এক মেহমান। যে এসেছে সাকার রাজ্য পরিদর্শন করতে।

মেহমান তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে আর বলছে ” হাইকাল! আমি খুব খুশি যে আপনি সাকার রাজ্য অত্যন্ত নৈপুণ্যের সাথে পরিচালনা করছেন। কোনরকম বিশৃঙ্খলা নেই এখানে। আমি ভেবেছিলাম পাপিষ্ঠ আত্মাদের সামলাতে আপনি হিমশিম খান। কিন্তু এখানে তো তেমন কিছুই নেই….!

হাইকাল মেহমানের গ্লাসে লাল পানি ঢেলে দিয়ে বললো ” পাপিষ্ঠ আত্মাদের ভূগর্ভস্থ কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়। সেখানে তাদের কোন শক্তি কাজে আসে না। আমার অনুমতি ছাড়া কেউ বের হতেও পারে না সেখান থেকে….!

মেহমান লাল পানিতে চুমুক দিয়ে বললো ” বাহ বাহ! এটা তো দারুণ স্বাদের। আপনি পান করছেন না কেন…!

হাইকাল বললো ” আমি বেশি লাল পানি পান করি না। আপনি উপভোগ করুন…!

মেহমান বললো ” বেশি পান করেন না মানে। কতটুকু পান করেন শুনি…?

হাইকাল তার পাশে থাকা দুই নারী অবয়বকে দেখিয়ে বললো ” যখন এই ভুচকি গুলা আমার চোখে সুন্দর লাগতে শুরু করে তখন পান করা থামিয়ে দেই….!

মেহমান হাসতে হাসতে বললো ” তাহলে আমিও আজ আপনার অনুযায়ী পান করবো……

তখন-ই একজন সৈনিক এসে দাঁড়ালো সামনে। হাইকাল বললো ” কি সমস্যা সৈনিক। ভোজনের সময় এভাবে দাঁড়িয়ে পড়লে কেন এখানে….?

সৈনিক বললো ” মাফ করবেন হাইকাল! একটা সমস্যা হয়ে গিয়েছে….!

হাইকাল একটু ভেবে মেহমানকে খাবার উপভোগ করতে বলে সৈনিককে নিয়ে এক পাশে সরে গেলো এবং আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো ” কি হয়েছে…?

সৈনিক বললো ” আমাদের পঞ্চাশ সৈনিক মা-রা গিয়েছে পাপিষ্ঠ আত্মা বন্দী করতে গিয়ে…!

হাইকাল অবাক হয়ে বললো ” কি বলছো তুমি। কয়টা আত্মা ছিলো…?

সৈনিক মাথা নিচু করে বললো ” এক বাচ্চা মেয়ের আত্মা….!

হাইকাল দাঁত কটমট করে বললো ” আমি কি ঠিক শুনছি। এক বাচ্চা মেয়ের আত্মা বন্দী করতে গিয়ে পঞ্চাশ জন সৈনিক মা-রা যেতে পারে কিভাবে….?

সৈনিক এবার মাথা উঠিয়ে বললো ” সে নিজেকে ভ্যাম্প বলে দাবি করছিলো….!

হাইকালে’র চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। অবাক এবং ভয় ভয় কন্ঠে বললো ” ভ্যাম্প……………💀💀💀

To be continue………..