#পাপ (শেষ পর্ব)
#Abu_saleh
টুম্পার মুখ থেকে রাহুলের বাবার নাম শোনার পর পুরো ঘর নিস্তব্ধ হয়ে যায়। রাহুলের মা হতভম্ব হয়ে বসে পড়লেন। রাহুল অবিশ্বাস আর রাগ নিয়ে তার বাবার দিকে তাকিয়ে ছিল।
“বাবা! তুমি এমনটা করতে পারলে? তুমি আমাদের এত বড় মিথ্যা বললে? তুমি তোমার স্বার্থের জন্য এত নিচে নেমে গেলে?” রাহুলের কণ্ঠে দুঃখ আর রাগ মিশে ছিল।
রাহুলের বাবা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি কিছু বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না। টুম্পা কাঁদতে কাঁদতে বলল, “আমি এই সত্যি আর চাপিয়ে রাখতে পারছি না। রাহুল, আমি কোনোদিন তোমার ক্ষতি চাইনি। তোমার বাবা আমাকে ভয় দেখিয়েছিল। বলেছিল, আমি যদি কাউকে কিছু বলি, তবে আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে। আর আমিও চাইনি তোমার মা-বাবার সম্মান নষ্ট হোক।”
রাহুল তখন চিৎকার করে বলল, “তোমার সম্মান বাঁচাতে তুমি আমার জীবন নষ্ট করেছো, বাবা! আর টুম্পা, তুমি এতদিন কেন চুপ ছিলে? কেন আমাকে বলতে পারনি?”
ঘরে উত্তেজনা বেড়ে যাচ্ছিল। রাহুলের মা তখন ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালেন। তার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। তিনি শান্ত অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বললেন, “এটা আর মেনে নেওয়া যায় না। যিনি এতদিন পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তিনিই পরিবার ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ালেন। রাহুল, নিলু, আমি জানি না, তোমরা আমাকে ক্ষমা করবে কি না। তবে আমি এই মানুষটিকে আর এ বাড়িতে রাখব না। আইন নিজের পথে চলবে। আমি নিজে তাকে থানায় নিয়ে যাব।”
রাহুলের বাবা কিছু বলতে চাইলেন, কিন্তু রাহুলের মা তার কথা থামিয়ে দিয়ে বললেন, “তুমি যা করেছো, তার ফল ভোগ করার সময় এসেছে। তোমার এই পাপের শাস্তি তুমি পাবেই।”
—
দুই মাস পর
রাহুলের বাবা তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কাছ থেকে অনেক দূরে । তিনি সেখানে নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা করছেন। টুম্পা রাহুলের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে গেছে, তবে তার সন্তানের দায়িত্ব রাহুল নিয়েছে।
নিলু ও রাহুল নতুন করে জীবন শুরু করেছে। নিলু অনেক কষ্টের পর রাহুলকে ক্ষমা করেছে, কারণ সে বুঝেছে, রাহুলও এই পরিস্থিতির শিকার ছিল। তারা একসঙ্গে নতুন করে জীবন সাজানোর প্রতিজ্ঞা করেছে।
রাহুল নিজের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিজ্ঞা করল যে সে কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেবে না। তার জীবনের প্রতিটি দিন এখন পরিবারকে ভালোবাসা আর সম্মান দেওয়ার মধ্যে দিয়ে কাটে।
শেষ।