পায়ে পায়ে হারিয়ে পর্ব-০১

0
42
পায়ে_পায়ে_হারিয়ে
পায়ে_পায়ে_হারিয়ে লেখনীতে : তামান্না বিনতে সোবহান

#পায়ে_পায়ে_হারিয়ে
লেখনীতে : তামান্না বিনতে সোবহান
পর্ব – ১

‘বিবাহিতা মেয়ের দ্বিতীয়বার বিয়ে হয় না, আদিয়ান ভাইয়া। বাবা ও ফুপিকে বোঝাও তুমি। এই অবস্থায় তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। কেন বোঝো না?’

ক্যাফেতে এসে বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বসেছিল তারা। মামাতো বোন রুমঝুমের মুখ থেকে অসম্মতিসূচক এই কথা শোনে অবাক হওয়ার বদলে দাঁতপাটি বের করে হাসলো আদিয়ান। দুই পরিবারের লোকজন দু’জনকে এক করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। অথচ তিন মাস আগেই নিজের প্রেমিক শুভকে বিয়ে করেছে তার মামাতো বোন রুমঝুম। বিয়ের প্রধান সাক্ষী আদিয়ান নিজে। বাড়ির কেউ এই কথা জানে না। জানানো হয়নি। পুরো বিষয়টাই লুকোনো। আর জানলে তুফান ছুটবে সেটা দু’জনেই খুব ভালো করে জানে। এদিকে মাসদেড়েক ধরে শুভর কোনো খোঁজখবর নেই। বেঁচে আছে না-কি মারা গেছে এ-ও নিশ্চিত নয়। আদিয়ানের চিন্তা বিয়ে নিয়ে নয়, শুভকে নিয়ে। সেদিন যখন ছেলেটাকে বাসে উঠিয়ে বিদায় দেয়, তখন শুভ বলেছিল,

‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত রুমঝুমের খেয়াল রাখিস, দোস্ত।’

‘তুই কবে ফিরবি?’

‘শীঘ্রই ফিরে আসব।’

গ্রামের বাড়ি গিয়ে বাবা-মাকে ম্যানেজ করবে, এই কথা বলেই হারিয়েছিল শুভ। আর ফিরে আসেনি। ওইদিন যে বাসের টিকেট কেটে দেশেরবাড়ি রওনা হয়েছিল সে, সে-ই বাসটা রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং বাসে থাকা সব যাত্রী ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা হচ্ছে, একজনের মৃতদেহ মিসিং ছিল। পাশের নদীনালা, খাদ ও হসপিটালসহ কোত্থাও শুভর চিহ্নটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই থেকে হন্যে হয়ে শুভর গ্রামের প্রতিটা কোণায় কোণায় তাকে খুঁজেছে আদিয়ান। পায়নি। ফোন সুইচড অফ, গ্রামের বাড়িতে সে নেই, কোথায় আছে কেউ জানে না। এমনকি শুভর বাবা-মা’ও ছেলের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। এদিকে বিপদ বাড়িয়ে বসে আছে রুমঝুম। যদি লোক জানাজানি হয় কেলেঙ্কারির শেষ থাকবে না। এতসব কথা ভাবতে গেলেই দুঃশ্চিন্তায় ঘুম হয় না তার। রুমঝুমের সিদ্ধান্ত ও পরিস্থিতি বুঝে আদিয়ান বলল,

‘তোকে বিয়ে করার জন্য আমি বসে নেই, ঝুম।’

বিরসমুখে রুমঝুম বলল,
‘তাহলে মানা করছ না কেন?’

বলবে না বলেও পেটের ভেতর কথাগুলো দৌড় শুরু করাতে মুখ ফস্কে বলে ফেলল,

‘মাত্রই ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেছিস। বয়সও বেশি হয়নি, কেবল উনিশ। অথচ তুই এই বয়সে ঝামেলা বাঁধিয়ে বসে আছিস। একটু কেয়ারফুলি থাকবি না? জানিস যখন দুই পরিবারের লোকজন বিয়ের কথা জানে না, একটু সাবধান থাকা উচিত ছিল না তোর?’

নতমুখে বসে রইল রুমঝুম। জানে, সে কী ভুল করেছে। তা-ই এই কথার উত্তর দিতে পারল না। শুধু বলল,

‘কীসের কথা বলছ তুমি?’

দাঁতে দাঁত চাপলো আদিয়ান। শক্তচোখে চেয়ে থেকে বলল,
‘কী বলছি বুঝতে পারছিস না?’

ভুল কী সেটা রুমঝুম জানে, কিন্তু আদিয়ান কী বুঝাতে চাইছে সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না তার। তার ভুলের কথা এই ছেলে জানলো কী করে? সে চিন্তিত মনেই বলল,

‘তুমি ঠিক কীসের কথা বলছ বোলো তো? ভুল তো অনেক করেছি। বুঝাতে চাইছ কোনটা?’

গতরাতে মামার সাথে কথা বলে, রুমঝুমের রুমে প্রবেশ করতে গিয়ে, দরজার কাছে দাঁড়িয়ে দেখেছিল, একটা রিপোর্ট হাতে নিয়ে একাকী কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে যাচ্ছে মেয়েটা। এরপর যখন রুমঝুম নিজের পেটে হাত রেখে শুভর জন্য হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিল, তখনই বিষয়টা বুঝতে পারল সে। তাকে দেখে রিপোর্ট সরিয়ে ফেললেও, রুমঝুমের অগোচরে সেই রিপোর্টে চোখ বুলিয়েছিল আদিয়ান। বিষয়টা বুঝে ওঠার পর থেকে ভয়ে ও আতঙ্কে কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে তার। মামা তাকে বুঝানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। কীই-বা বুঝাবে সে? কালকের কথা মনে পড়াতে বলল,

‘তুই প্রেগন্যান্ট, ঝুম। দুই মাসের ভ্রুণ তোর গর্ভে। বিয়ের ব্যাপার বাড়িতে জানে না। শুভর কথা বলতে পারিস না, ভয়ে তোর গলা শুকিয়ে আসে, এদিকে শুভর কোনো খোঁজ নেই। আছে কোথায় তা-ও জানি না। এই অবস্থায় কী করবি? কীভাবে সবাইকে বুঝাবি তোর গর্ভের সন্তানটা বৈধ?’

নিজের দুর্ভাগ্যের কথা ভাবতে গিয়েই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল রুমঝুম। আদিয়ান বিরক্তিভরা কণ্ঠে বলল,

‘আমি তো কাউকে বলতে পারছি না যে, তুই আকাম ঘটিয়ে বসে আছিস।’

‘তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়, বোঝার চেষ্টা কোরো।’

‘আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু বাড়িতে কী বলবি? আমি তো বলেছি সবাইকে, তোকে বিয়ে করা অসম্ভব। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনছে না। তাদের এক কথা, কেউ যদি তোকে বিয়ে করে সেটা যেন আমি হই। আমি-ই কেন, আর কেউ কেন নয়, সেটাই তো বুঝতে পারছি না আমি নিজেও। এজন্যই এত জরুরী নোটিশে আমাকে এখানে আসতে হলো। আমি সাতদিনের ছুটি নিয়েছি, ঝুম। যা করার এই ক’দিনের মধ্যেই করতে হবে।’

‘আমার সাফসাফ কথা, আমি তোমাকে বিয়ে করব না। আমি বিবাহিতা।’

এটাই তো সমস্যা। রুমঝুম বিবাহিতা। প্রাণের বন্ধুর রেখে যাওয়া আমানত। তারমধ্যে প্রেগন্যান্ট। এই অবস্থায় বিয়েটা কী করে হয়? সে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাতেই। বাড়িতে এই বিষয়ে খোলামেলা আলাপ করা যেত না, এই কারণেই এখানে আসা। সে নিজের প্ল্যানটা ক্লিয়ার করতে বলল,

‘আরেহ্ গাঁধী, শোন। তোকে একটা সলিউশন দিই।’

‘কী?’

‘সবাই যেহেতু জোরজবরদস্তি করছে, আমাদের এই বিয়েতে রাজি হয়ে যাওয়া উচিত।’

‘মাথা খারাপ তোমার? আমি বিবাহিতা, তারওপর প্রেগন্যান্ট। ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইনে তোমার-আমার বিয়েটা শুদ্ধ হবে না। অন্যায় হবে এটা। জেনে-বুঝে এই ভুল কীভাবে করি?’

‘করতে হবে। আমরা জানি, আমাদের বিয়েটা আইনত ও ধর্মত ভাবে শুদ্ধ হবে না। তা-ই আমরা বিয়ে করব না, কিন্তু বাড়িতে বোঝাব যে, আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।’

‘তোমার মাথা বোধহয় গেছে একেবারে। এটা কীভাবে সম্ভব?’

‘একটা মিথ্যে সার্টিফিকেট বানিয়ে বাড়িতে দেখিয়ে বলব, আমরা বিয়ে করে নিয়েছি। ব্যস। তুই যে সিচুয়েশনে দাঁড়িয়ে আছিস, এতে পরিবারের সম্মান যেমন যাবে, তোর বাচ্চাটাও সমাজের চোখে ঘৃণিত হয়ে যাবে। এই উপায় অবলম্বন করলে তোকে লোকের কটুক্তির হাত থেকে বাঁচানোর একটা সুযোগ পাব। বন্ধুকে দেয়া কথাটাও রাখতে পারব। এরপর ছুটি শেষ, এই বাহানা দেখিয়ে তোকে নিয়ে ঢাকায় ব্যাক করব। ওখানে গিয়ে তুই তোর মতো আমি আমার মতো। শুধু লোকদেখানোর জন্যই নকল ম্যারেজ সার্টিফিকেট তৈরী করে সবার সামনে স্বামী-স্ত্রী সেজে থাকব। দ্যাটস ইট।’

আঁৎকে উঠল রুমঝুম। দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেল। এরকম করে তো সে ভাবেনি। এইমুহূর্তে সবাই যদি জানে, শুভর বাচ্চা তার গর্ভে, জুতাপেটা করে বাড়ি থেকে বের করে দেবে। নিজেকে ও নিজের বাচ্চাকে বাঁচানোর উপায় একটাই, বিয়ে বিয়ে নাটক সাজানো। কিন্তু যদি শুভ ফিরে আসে? কী করবে? হতাশার নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

‘ধরো আমরা বিয়ের নাটক করে সবাইকে ধোঁকা দিয়ে একসাথে থাকতে শুরু করলাম। এরপর যদি শুভ ফিরে আসে? যদি আমাকে না পায়? কী জবাব দিব আমি?’

‘আহা, মাথামোটা। বিয়েটাই তো হচ্ছে না। সবটাই নাটক, সাজানো-গোছানো কাহিনী। টেনশনের কী? বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন সবাইকে এটা বোঝাব যে, আমরা স্বামী-স্ত্রী। এরপর শুভ যদি ফিরে আসে, আবার একটা নকল পেপার তৈরী করে, ডিভোর্স। বোঝাব যে, আমরা একসাথে থাকতে পারছি না। ব্যস, ঝামেলা খতম।’

এইবলে নির্ভার হেসে কফিতে চুমুক বসালো আদিয়ান। রুমঝুমের চিন্তা দূর হলো না। সে কফির কাপে চামচ নেড়েচেড়ে বলল,

‘নওমীর ব্যাপারে কী করবে?’

আদিয়ানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। মেয়েটাকে ভালোবাসে অথচ মুখফুটে ভালোবাসি বলা হয়নি। বড়লোক বাবার নিরহংকারী মেয়ে হলেও বাবার অফিসের সামান্য একজন কর্মচারীকে সে ভালোবাসবে না, বিয়ে করবে না। যদি কোনোদিন নামী-দামী কোম্পানিতে চাকরি-বাকরি করে দু’হাতে টাকা-পয়সা ইনকাম করে, প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, তাহলেই কোনো একদিন বিয়ের প্রস্তাব দিবে। এরকমটা চিন্তাভাবনা ছিল তার। এজন্য বলল,

‘এখনও বলতেই পারিনি।’

‘বলে দেখো।’

‘এখুনি হবে নারে ঝুম, ওর দায়িত্ব নেয়ার মতো ক্ষমতা আমার এখনও হয়নি। আমি ওর বাবার অফিসের সামান্য কর্মচারী মাত্র। ও বড়োলোক বাবার মেয়ে। যেভাবে দু’হাতে টাকা খরচ করে। দামী দামী পোশাক পরে। আমার মতো অল্প বেতনের জীবনসঙ্গী দিয়ে ওর পোষাবে না। প্রস্তাব তো হাওয়ায় উড়িয়ে দিবে। আমাকে অনেক দূর এগোতে হবে। অনেক অনেক টাকা ইনকাম করতে হবে। এরপর ওর বাবার কাছে ওকে চাইতে হবে। বুঝলি…।’

‘এতে যদি অনেক দেরী হয়ে যায়? যদি ও অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলে?’

‘করলে করুক। ক্ষতি নেই। ধরে নেব ও আমার কপালেই নেই। ওর কথা ছাড়। তোর সিদ্ধান্ত বল, এই প্রস্তাবে রাজি তো?’

রুমঝুম এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। শুভর জন্য চিন্তা হচ্ছে। কোথায় যে লুকালো ছেলেটা। খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। ভয়মিশ্রিত মন নিয়ে বলল,

‘তুমি আমাকে ঠকাবে না তো?’

উচ্চস্বরে হেসে উঠল আদিয়ান। বলল,
‘তোর সম্মান বাঁচানোর চিন্তায় অস্থির আমি। আর তুই বলছিস, আমি তোকে ঠকাচ্ছি কি-না? মাথার মধ্যে তো গিলু নেই একদম। এত গোবর নিয়ে হাঁটিস কী করে?’

‘ফাজলামি কোরো না। ভয় হচ্ছে আমার। শুভকে কী জবাব দিব বোলো তো?’

এটাও একটা টেনশনের কথা। এই নিয়ে অনেক ভেবেছে আদিয়ান। ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে তো আর কোনো সমাধান দেখছে না। সে বিয়ে না করলেও অন্য কারও ঘরে রুমঝুমকে যেতে হতে পারে। সেই লোক জানবে না, মেয়েটা প্রেগন্যান্ট। অত্যাচার করবে। এতে তো রুমঝুমের ক্ষতি হবে। জেনে-বুঝে বন্ধুর রেখে আমানতের এত বড়ো ক্ষতি সে কীভাবে করবে? রুমঝুমের ভরসা হতে আলগোছে তার হাতের ওপর হাত রাখল আদিয়ান। চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করে বলল,

-‘আমি শুভকে কথা দিয়েছি, ও ফিরে না আসা পর্যন্ত তোর খেয়াল রাখব। আমাকে আমার কথা রাখতে সাহায্য কর ঝুম। প্লিজ…। অন্য কেউ তোকে বিয়ে করলে জেনে-বুঝে একটা পাপ করা হবে। আর এটা হতে দিতে পারব না বলেই, ছোট্ট এই নাটকটা সাজাতে হবে আমাদের। কথা দিচ্ছি, শুভ ফিরে এলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তোকে ও তোর বাচ্চাকে সুস্থ অবস্থায় ওর হাতে তুলে দেব।’

তখনও সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিম খাচ্ছে রুমঝুম। ভেবে পাচ্ছে না, এই কঠিন মুহূর্ত থেকে কীভাবে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা উচিত। কোনো উপায় না পেয়ে আদিয়ানের প্রস্তাবটাই গ্রহণযোগ্য মনে করে বলল,

‘ঠিক আছে। তুমি যা বলবে।’

মুচকি হেসে কফি শেষ করার তাড়া দিয়ে আদিয়ান বলল,
‘ফেরার পথেই কাজ শেষ করে যাই?’

ভয়মিশ্রিত মন নিয়ে রুমঝুম বলল,
‘আজই?’

‘হ্যাঁ, আজই। দুটো মালা কিনে গলায় পড়ব। একটা ছবি তুলব। তাহলেই হয়ে যাবে।’

‘বাহ, বুদ্ধি তো একেবারে হাঁটুর নিচে। শুধু এইটুকুতেই সবাই বিশ্বাস করে নিবে? কাবিননামা কীভাবে দেখাবে?’

কাঁধ নাচিয়ে আদিয়ান খুব স্পষ্টস্বরে বলল,
‘অবশ্যই করবে। কাবিননামা তো আজই পাব না। সময় লাগবে। এরমধ্যেই একটা ফেইক কাবিননামা তৈরী করে দুটোর সিগনেচার বসিয়ে নেব। বাড়িতে দেখতে চাইলে সেটাই দেখাব।’

রুমঝুম ভয়ে ঢোক গিলে বলল,
‘ফেইক কাবিননামায় সাইন বসাতে হবে? যদি ওটা রিয়্যাল হয়ে যায়?’

আদিয়ান বলল,
‘ঘাবড়াস না তো, তোর সাইন আমি বসাব। ছোটোবেলায় কত গার্ডিয়ানের সাইন নকল করেছি। এবার নাহয় তোরটাও করলাম। এখন চল। অনেকক্ষণ হলো বেরিয়ে এসেছি। মামা চিন্তা করবে।’

ঘাড় নাড়িয়ে কফির কাপ খালি করলো রুমঝুম। বিল মিটিয়ে উঠে দাঁড়াল দু’জনে। মিথ্যে বিয়ের নাটক সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে, ক্যাফে থেকে বেরিয়ে ফুলের দোকানে গেল আদিয়ান। পুরোটা সময় ভরসার সাথে রুমঝুমের হাত ধরে রাখল সে। হোঁচট খেতেও দিল না। স্থির চোখে ওর সমস্ত কাজকর্ম দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলল রুমঝুম। কাজটা ঠিক হচ্ছে না জানে। কিন্তু সন্তানকে সম্মানের জীবন দিতে এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। শুভ কেন ফিরে এলো না? কোথায় গিয়ে লুকালো? কেন কোনো যোগাযোগ নেই? এই দুঃখই পেয়ে বসলো তাকে। মালা কেনা শেষ হলে, একটা তাজা ফুলের মালা রুমঝুমের গলায় দিয়ে অন্যটা নিজে পরে নিল আদিয়ান। দোকানীকে বলল,

‘একটা ছবি তুলে দিতে পারবেন?’

***

চলবে…