পারবোনা আমি ছাড়তে তোকে পর্ব-১+২+৩

0
16

#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ১

“সকালের ঘুম ভাঙে দরজার টোকায়। ঘুম জড়ানো চোখে উঠে বসে মেহরিন নূর মাহি। বাইরে থেকে ভেসে আসছে মায়ের কণ্ঠ—
“মাহি… মাহি রে, উঠ মা। পরে দেরি হলে কিন্তু আমায় দোষ দিবি না!”
রাবেয়া বেগম বলে চলে যান রান্নাঘরের দিকে, যেন প্রতিদিনের মতোই ব্যস্ত সকালে মায়ের চিরচেনা ডাক।

মাহি ধীরে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। ড্রইংরুমে এসে দেয়াল ঘড়ির দিকে এক পলক তাকাতেই বুঝে যায়—সময় বড্ড কম, ৯টা ৩০ বাজে, আর তার ক্লাস শুরু ঠিক ১০টায়।

এমন সময় নাজিফা বেগম কাঁধে আঁচল গুজে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলেন,
“খেয়ে তাড়াতাড়ি যা মা, ক্লাসে দেরি হয়ে যাবে তো!”

কিন্তু মাহি থমকে দাঁড়ায়, ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করে—
“বড় আম্মু, তোমরা সবাই এত সকালে রান্না-বান্নায় ব্যস্ত, কিছু কি বিশেষ? কেউ কি আসবে বাসায়?”

নাজিফা বেগম অবাক হয়ে বলে ওঠেন,
“বলিস কী! তুই এখনো জানিস না?”

মাহি চোখ বড় করে তাকায়, “কি জানি না, বড় আম্মু?”

এবার যেন কথার বন্যা বইয়ে দেন নাজিফা বেগম।
“তোর ইরফান ভাইয়া আসছে রে মা! হঠাৎ করে টিকিট কেটেছে। আমিও জানতাম না, রাতে ফাহাদ বললো। এমারজেন্সি রিটার্ন… যাহোক, তুই খেয়ে নে, আর কলেজ থেকে আজ একটু তারাতারি ফিরে আসিস।”

কিন্তু মাহি ততক্ষণে ভেতরে ভেতরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছে। খাওয়া-দাওয়ার সময় নেই, শুধু বলে—
“না না, বড় আম্মু, দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমি চললাম!”

নাজিফা বেগম কিছু বলতে চাইলেও মাহি ততক্ষণে দৌড়ে বেরিয়ে গেছে গেটের দিকে। ড্রাইভার আংকেল গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন,
“মাহি মামনি, গাড়িতে উঠো!”

হালকা মাথা নাড়িয়ে মাহি উঠে পড়ে। গাড়ির জানালা দিয়ে হাওয়া খেলে যায় তার চুলে, অথচ মনটা ডুবে আছে এক অদ্ভুত উত্তেজনায়—ইরফান ভাইয়া আসছে! এতদিন পর! তাও হঠাৎ করে!

কলেজে গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বসে পড়ে মাহি। পাশে তখনও আসেনি তার প্রাণের বান্ধবী রাইসা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই রাইসা এসে দেখে, মাহি চুপচাপ বসে আছে—একদম অচেনা লাগছে ওকে। এত প্রাণবন্ত, দুষ্টুমি আর হাসিতে ভরপুর মেয়েটা আজ যেন অন্য কেউ।

সোজা তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“কিরে! কী হইছে তোর?”

মাহি গড়গড় করে বলে, “কিছু না তো।”

রাইসা ভ্রু উঁচু করে বলে, “আমার কাছে মিথ্যে বলবি না, তোকে আমি খুব ভালো করে চিনি।”

মাহি এবার হালকা ফুলিয়ে ঠোঁট, কিশোরী অভিমান ভরে বললো,
“আরে আজ ইরফান ভাইয়া আসছে! জানলে কলেজ যেতাম না একদম! কতদিন পরে তো ভাইয়া আসবে, আর আমি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম—এমন কপাল কই রে!”

রাইসা হেসে ফেলে, “ওহহ… আগে জানতিস না বুঝি?”

“না রে! হঠাৎ করেই চলে আসছে, বাসার কেউই জানতো না!”

বিকেলে কলেজ শেষে বাসায় ফিরতে ফিরতে ঘড়ির কাঁটা দুটো ছুঁয়েছে। মাহি দরজা খুলে ঢোকে, দেখে ড্রইংরুম একদম খালি। চারদিকে যেন একটা অদ্ভুত শান্ত পরিবেশ। কেউ নেই—না হেসে উঠছে কেউ, না রান্নাঘরে হাঁড়ি চাপছে।

সে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকে। হঠাৎ তার নাকে এসে লাগে এক ঝাঁঝালো অথচ মুগ্ধকর সুগন্ধি—পরিচিত নয়, কিন্তু আকর্ষণীয়। মুহূর্তেই থমকে যায় মাহি।

এই ঘ্রাণ সে চেনে না। আব্বু, কাকা, এমনকি ছোট চাচ্চু—সবাই আতর ব্যবহার করেন, কিন্তু এই পারফিউম?
এটা তো… ফাহাদ ভাইয়ার!

তাহলে কি…?

তার বুক ধড়ফড় করতে থাকে।

তাহলে কি ইরফান ভাইয়া এসে গেছে…?
এই ঘ্রাণ, এই নিস্তব্ধতা, এই চঞ্চল হৃদয়ের কাঁপুনি ” সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত উত্তেজনার অনুভব হয় মাহির ভিতর।

পায়ের শব্দ হালকা হয়ে আসে, হৃদয়ের স্পন্দন গাঢ় হয়। মাহি বুঝে যায়—পরিবারে আজ শুরু হতে যাচ্ছে নতুন কিছু, কিংবা পুরনো কারো ফিরে আসায় আবার জেগে উঠবে অগণিত স্মৃতির রেলপথ।

চলবে…?

#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ২

সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে মাহি বেলা তখন ৩ টা বাজে টুপ টুপ করে বৃষ্টির কনার মতো পানি ঝরছে ভেজা চুল গুলো থেকে। মনে হয় মাত্রই সাওয়ার নিয়েছে। নিচে নামতেই মাহির ছোট আম্মু মাহবুবা বেগম এসে বললেন”কয়টা বাজে খেয়াল আছে, সকালে খেয়ে যাস নি এখনো পর্যন্ত না খাওয়া, বস খাবার দেই “এমন সময় সদর দরজা দিয়ে ফাহাদ ঢুকলো। মাহবুবা ফাহাদ কে উদ্দেশ্য করে বললেন ” কিরে কথায় ছিলি খাওয়া দাওয়া লাগবে না বুঝি।

মাহবুবা বেগম এর দিকে তাকিয়ে ফাহাদ হালকা একটা হাসি দিয়ে বললো, একটু বিজি ছিলাম “ভাইয়া খেয়েছে…?

~ না খায়নি অনেক বার আমরা সকলেই খেতে বললাম যতবারই ডাকতে গেছি বললেন তুই আসলে খাবে। ছেলে টা ও এখনো পর্যন্ত না খাওয়া।

–ফাহাদ মাহির দিকে তাকিয়ে বললো ” মাহি..বোন যা তো ভাইয়া কে ডেকে নিয়ে আয়, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

~ মাহি আতকে উঠে বললো আ.. আমি…!

“! হুমম যা…

~ আচ্ছা.. ছোট আম্মু ইরফান ভাইয়ার রুম কোনটা…?

মাহবুবা বেগম এক গাল হেঁসে বললেন “তোর রুমের পরের টাই তো….!

“মাহি সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে মনে মনে ভাবছে ‘আমার তো ইরফান ভাইয়ার সাথে দেখাই হয়নি এখনো..!ভাইয়া কি এখনো আগের মতো আছে নাকি…

“সিড়ি দিয়ে উঠে প্রথম রুম টা হলো ফাইজার ফাইজার মাহির ছোট চাচ্চুর এক মাত্র মেয়ে এর পরের রুম টা মাহির, নিজের রুম টার সামনে এসে মাহির পা থেমে যায় এর পরের রুম টাই “ইরফান ভাইয়ার,

প্রায় ৯ বছর পরে ইরফান ভাইয়ার এর সামনে আসবে মাহি ” ইরফান পড়াশোনা করতে দেশের বাইরে গিয়েছে তবে সে সেখানে যাওয়ার পরে গতো ৪ বছর যাবৎ তার বাবার কোম্পানির বাহিরের কনট্রাক গুলা ও সকল কার্যক্রম ইরফান হ্যান্ডেল করেছে ” সে বাহিরে থাকা অবস্থায় তার বাবা কাকা দের বাহিরে যাওয়ার খুব একটা প্রয়োজন হয়নি “তার পাশাপাশি অন্য একটা বিদেশি কোম্পানি শেয়ার থেকে বেশ ভালো উন্নতি করেছে এখন দেশে ফিরেছে তার নিজের কোম্পানি চালু করবে বলে। এতে অবশ্য তার বাবা কাকা দের কনো আপত্তি নেই তাদের মতামত নিয়ে দেশে আসছে ইরফান।

ইরফান এর বাবা চায় তার ছেলে নতুন কিছু করুক নতুন কিছু করা মন্দ নয় ” ইরফানের দাদু ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে রাও চাকরি করবে কিন্তু ইরফানের বাবা চাইতেন নিজে কিছু করতে,”অনেক কষ্টে তার এই কোম্পানি সে দার করিয়েছে, এখন সে সফল এতো সুনাম খ্যাতি লাভ করেছে, নিজের দক্ষতায়”২ তাই মিলে ব্যবসা সামলায় আর ছোট ভাই মনির চৌধুরী কে বাবার কথা রাখার জন্য চাকরি করছে তবে ভাইদের ব্যবসা তার শেয়ার আছে।

মাহি ইরফান ভাইয়ার দরজার সামনে এসে দেখলো দরজা চাপানো “হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে গিয়েও থেমে যায় আবার ভাবে ভাইয়া তো বললো ডাক দিতে এর পরে আবার হাত বারিয়ে হালকা করে ধাক্কা দেয় দরজা খুলতেই দেখতে পেলো ইরফান টেবিলে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু একটা করছে ” এবার আবারো এই অপরিচিত সুমধুর ঘ্রাণ টা পাচ্ছে মাহি কোনো এক ব্রান্ড এর পারফিউম হবে হয়তো পুরো রুম টা সুমধুর ঘ্রাণে তলিয়ে আছে মাহি রুমের বাইরে দারিয়েই ডাক দিলো, ইরফান ভাইয়া…!

ইরফান পেছনে না তাকিয়েই বলল ভেতরে আয় ” মাহি চুপচাপ দারিয়ে রইলো দরজার বাইরে তার কেমন জানি ভয় লাগছে মাহি আর ফাইজা ২ জন এই ছোট বেলা থেকেই ইরফান কে খুব ভয় পায় কেনো ভয় পায় কারোন জানা নেই তবে ইরফান ভাইয়া ওদের সাথে খুব একটা কথা বলতো না ছোট বেলায়” তাই ওরা ভাবতো ইরফান ভাইয়া অনেক রাগী কিন্তু ফাহাদ ভাইয়ার সাথে খুব মিল ছিলো ইরফান ভাইয়ার। ওরা একজন আরেকজন জান কলিজা বলা যায়।

“ইরফান বাইরে যাওয়ার পর থেকে কখনো কথা বলে নি মাহি আর ফাইজা ওরা তো ভয় এই আধমরা হয়ে যেতো ভাইয়া কি প্রশ্ন করবে না করবে” ইরফান,, কথা বলতে চাইলে অরা অজুহাত দেখিয়ে পালিয়ে যেতো এখন তার সামনে এসে দারিয়ে আছে মাহি ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে মাহির।

” মাহি চুপচাপ দারিয়ে আছে দেখে এবার ইরফান ল্যাপটপ হাতে নিয়ে দারিয়ে মাহির দিকে ঘুরে দারালো ‘,কিরে ভেতরে আসবি না…

“এবার মাহি ইরফান ভাইয়া কে এতো বছর পরে সামনাসামনি দেখলো মাহি লম্বা দেহ,” চুল গুলো ফেনের বাতাসে হালকা উরছে গাল ভর্তি হালকা ছোট চাপদাড়ি শ্যমবর্নের এই পুরুষ এর সাথে দাড়ি চাপদাড়ি টা খুব মানিয়েছে” পরনে কালো টিশার্ট এর সাথে কালো টাউজার সুপুরুষ লাগছে তাকে। যে কাওকে মাতাল করে দেওয়ার জন্য তার ওই দুচোখ এর চাহুনি যথেষ্ট। মাহির কিছুক্ষণ অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো,, এর পর মনে পড়লো ও তো ইরফান ভাইয়া কে ডাকতে এসেছে,, ভেতরে ঢুকে এসে ইরফানের থেকে অনেকটা দূরত্ব রেখে দাঁড়ালো।

“কেমন আছিস..?

আলহামদুলিল্লাহ ভালো…আপনি…?

~ ” ভালো। ”

!”ভাইয়া নিচে ডাকছে আপনাকে..

” আসছি ২ মিনিট

মাহি আচ্ছা বলে যেতে চাইলে ইরফান ডাকে “মাহি….

মাহি পেছনে ফিরে তাকিয়ে জবাব দেয় ” হুমম..?

এরপর ইরফান মাহির হাতে একটি শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলে এটা তোর ” মাহি সেটা হাতে নিয়ে চলে আসে নিচে নামার পথে ব্যাগ টা নিজের রুমে রেখে নিচে নেমে আসে।

“মাহির খাওয়া প্রায় শেষ শেষ এমন সময় ইরফান আর ফাহাদ নিচে নামলো এসে খাবার টেবিলে বসতেই মাহবুবা বেগম এসে খাবার পরিবেশন করতে লাগলো “মাহির খাওয়া শেষ টাই উঠে যাচ্ছে,…ইরফান ডেকে বললো!

” কোথায় যাচ্ছিস মাহি…?

” খাওয়া শেষ হাত ধুতে যাচ্ছি।

–“এখনো প্লেটে ভাত রেখে ফেলে দেওয়ার অভ্যাস যায়নি তোর…! চুপ চাপ খাওয়া শেষ কর প্লেটের খাবার শেষ না করে একদম উঠবি না বলে দিলাম।

” মাহি ইরফান ভাইয়া কে ছোট থেকেই ভয় পায়, ইরফান ওদের সাথে খুব কম কথা বলতো কিন্তু উলটা পাল্টা কিছু করলে এমন চোখে তাকাতো মনে হয় চোখ দিয়ে আগুন বের হবে “সেই কথা মনে পরে গেলো মাহির, তাই চুপচাপ বসে বাধ্য মেয়ের মতো খাওয়া শেষ করতে লাগলো।

” ইরফান এক নজর দেখলো “ভেজা খোলা হাটু সমান চুল গুলো বসে থাকার ফলে পা ” ছুই, ছুই’ করছে নীল রঙের গাউন টায় তাকে অপরুপ সুন্দর লাগছে যেনো কোনো অপ্সরা পরী। ডাগরডোগর চোখ গুলোর ঘন কালো পাপরি গুলো বার বার ঝাপরাচ্ছে মনে হচ্ছে খাবার গুলো গলা দিয়ে নামছে না জোর করে গিলছে “এরপর ইরফান খাওয়া মনোযোগ দিলো।

মাহি কোনো রকম খাবার শেষ করে তরিঘরি করে নিজের রুম এর দিকে যাচ্ছে ” এখান থেকে যেতে পারলেই বাঁচে…!

চলবে……

#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ৩

~~প্রায় ১ ঘন্টা পরে মাহির ঘুম ভাঙে বসে আনমোরা ভেঙে ওয়াশ রুমে ঢুকে হাতে মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো “এখন সে ছাদে যাবে এটা তার প্রতিদিন এর কাজ। বের হওয়ার সময় চোখে পরলো ইরফান ভাইয়ার দেওয়া সেই শপিং ব্যাগ টি।

*কি আছে ওটার ভেফর কাছে গিয়ে শপিং ব্যাগ টা হাতে নিয়ে খুলে দেখলো এটার মধ্যে অনেক গুলো চকলেট আর সাথে দুটো বক্স ” বক্স এর মধ্যে কি আছে…?একটা বক্স খুলতেই দেখতে পেলো একটা গোল্ড কালারের ব্রেচলেইট কি সুন্দর ডিজাইন মাহি হাতে পরে বুঝতে পারলো এটা আসলে গোল্ড এই এর পর আরেকটা বক্স খুলে দেখলো একটা ঘড়ি.. মাহি ঘড়ি টাও একটু হাতে পড়ে দেখলো….. তারপর এ গুলি গুছিয়ে রেখে দুটো চকলেট হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

~~ফাইজার রুমে উকি দিয়ে দেখলো ফাইজা ড্রইং করছে।

কোমল গলায় মাহি বললো “ফাইজা ছাদে যাবি”..?

ফাইজা উল্লাসে বলে ওঠে ” হুমম”আপু এক মিনিট দারাও.. “,আমি খাতা ঘুলো গুছিয়ে আসছি।

ফাইজা মাহির ২ বছর এর ছোট ওদের মধ্যে বনিবনা খুব ভালো। একজন আরেকজন কে ছাড়া থাকতেই পারে না ” ফাইজা রা নানু বাসায় বেড়াতে গেলে মাহির একটু ও ভালো লাগে না। মাহি নানু বাসায় খুব কম যায় ওর ভালো লাগে না ওখানে।

মাহি ফাইজা কে জিজ্ঞেস করলো ” ইরফান ভাইয়া তোকে কি দিছে…?

” আমায় আইপ্যাড দিয়েছে.. “আর অনেক গুলো চকলেট তোমাকে ও নিশ্চয়ই কিছু দিছে??

মুচকি হেঁসে মাহি বলে ” হুম ” নে চকলেট খা..!

“!তোমাকেও চকলেট দিয়েছে ইরফান ভাইয়া..।

” হুম”।

–বেশ অনেকটা সময় পরে ছাদ থেকে নামে দুই বোন।

“~~আসর এর নামাজ পড়ে মাহি নিচে নেমেছে,, ফাইজা সোফায় বসে বসে টিভি দেখছে মাহি এসে ফাইজা কে উদ্দেশ্য করে বললো।কিরে নামাজ পরিস নি।

~ না আপু.. ”

” কেনো..!

_না… মানে আপু ভালো লাগছিলো না।

” দাড়া বড় আম্মু কে বলে দিবো।আর ছোট আম্মু তো তোকে মাইর দিবো।

— না আপু বলো না প্লিজ আমি কাল থেকে পড়বো।

” মনে থাকে যেন “”….,

দুই বোন সোফায় বসে টিভি দেখছিলো আর আর কথা বলছিলো “,এমন সময় রুমে কেউ একজন পুরুষ ভেতরে এসে জিজ্ঞেস করলেন ;ইরফান কোথায় “” মাহি আর ফাইজা একজন আরেকজন এর চোখে তাকিয়ে রইলো কেউ চিনে না আগে কখনো লোকটাকে দেখে ও নি! ফাউজা বেশ চঞ্চল তাই জিজ্ঞেস করেই ফেললো..,

~”কে আপনি।

আমি আবরার ইরফান চৌধুরীর ফ্রেন্ড বনু ” তুমি নিশ্চয়ই ওর বোন।

“হুম…আমি ভাইয়া কে ডেকে দিচ্ছি ভাইয়া আপনি একটু বসুন৷

” না.. ওর রুম টা কোনটা দেখিয়ে দাও আমি যাচ্ছি।

ফাইজা রুম দেখিয়ে দিলে রোহান গিয়ে ইরফান এর রুমে গিয়ে দেখে ” ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে ইরফান কিছু একটা করছে।

উচ্চস্বরে রোহান বলে ওঠে “কিরে ” শালা বাসায় এসে ভুলে গেলি সকালে আসছিস ” কল করলি না তো। ফাহাদ বললো দেখে জানতে পারলাম। নাহলে তো জানার উপায় ছিলো না তুই দেশে ফিরছিস।

ইরফান একটু রসিকতার ছলে বললো, হুমম “ঘরে তো আমার বউ বাচ্চা আছে তাই ভুইলা গেছি।

রোহান একটু রহস্যময় হাঁসি দিয়ে বললো ” এ” বাবা “আসতে না আসতেই কিভাবে ডাউনলোড দিলি ভাই ” আমাকেও একটু শিখা “” না মানে আমিও চেষ্টা করবো ( মুখে হাত চেপে হাসতে হাসতে বললো)

ইরফান এক তাচ্ছিল্যের সুরে বললো, যা.. শালা আগে বউ খোঁজ “তার পড়ে বাপ হওয়ার সপ্ন দেখিস।

” থাক তাইলে আমি যাই বউ খুজতে..!

— বাইক নিয়া আসছিস তো..?

“!: হুম’। ”

~ “! আমি বের হবো বস।

~! “কোথায় যাবি “..?

~ ” বাইক এর শো-রুমে..

“! এ ভাই মাএ কয়দিন আগে বাইক টা কিনলাম তুই আবার নিয়ে বেচে দিস না.. !

ইরফান কিঞ্চিৎ বাকা হাঁসি দিয়ে বললো ” হুম তোর বাইক বিক্রি করে আজ সবাই কে ট্রিট দিবো।ফাহাদ কে কল দিয়ে আসতে বল।

~এরপর দুই বন্ধু বের হয়ে গেলো। রোহান আর ইরফান USA
এক সাথে পড়া লেখা করেছে। রোহান দেশে ফিরেছে ৩ বছর আগে এর পর এখন চাকরি করছে।

চলবে…….