পিঞ্জিরা পর্ব-১৬+১৭

0
8

#পিঞ্জিরা
#পর্ব_১৬
#জান্নাত_সুলতানা

রিহান এর শরীর থেকে আসমানী রঙের হসপিটালের পোষাক টা খুলতেই থমথম খেলো মিরা। লজ্জায় অস্বস্তি মাথা নত করে। বলিষ্ঠ শক্ত-পোক্ত চওড়া বুক টা ঘন কালো পশম ভর্তি। মিরা’র মাথা ঝিম ঝিম করে।সেকেন্ড সময় এর দেখা সেই দৃশ্য মিরা’র চোখের সামনে এখনো ভাসছে। রিহান মিরা’র অবস্থা দেখে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেয়ে টার নতজানু করে রাখা মুখের দিকে। মিরা চোখ তুলে না তাকিয়ে বেড থেকে কালো রঙের শার্ট টা হাতে নিয়ে রিহান এর পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে শার্ট টা পড়িয়ে দিলো।বোতাম লাগাতে এসে আরো লজ্জায় মিইয়ে যায় মেয়ে টা।
কাঁপা কাঁপা হাতে বোতাম লাগিয়ে শেষ করে সরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই রিহান ওর হাত টেনে ধরে।হাতের উলটো পিঠে চুমু খেলো। মিরা’র শরীর শিরশির করে উঠলো।রিহান কিছু বলবে তার আগেই হুড়মুড়িয়ে কেবিনে বেশ কয়েকজন প্রবেশ করলো।মিরা চমকে উঠলো।দূরে সরে গেলো রিহান এর কাছ থেকে। অপ্রস্তুত হলো সবাই কে দেখে।আতিক চৌধুরী এসেই রিহান কে জড়িয়ে ধরলোা।রিহান মৃদু হাসলো।বললো,

-“কিছু হয় নি মামা।”

আতিক চৌধুরী রিহান কে জড়িয়ে ধরে রেখেই শুধালো,

-“সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি।”

শিশির এসে মিরাকে জড়িয়ে ধরে। কাল রাতেই খবর পেয়েছে সবাই। বিয়ে করেছে রিহান।আতিক চৌধুরী রিহান কে ছেড়ে মিরা’র দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। মিরা অপ্রস্তুত হলো।আগে কখনো এই নেতা সাহেব কে এভাবে সামনা-সামনি দেখা হয় নি।তবে গ্রামে উনার কথা সবাই বলে।বেশ ডাকনাম তার।তাই কিছু টা অস্থির হয়ে পড়লো।কি বলবে কি বলা উচিৎ মনে করতে পারলো না। আতিক চৌধুরী হাসে।মেয়ে টা সহজ-সরল মুখে কেমন মায়া ভর্তি। বাচ্চাসুলভ ভাবটা এখনো যায় নি চেহারা থেকে। এই মেয়ে ভীষণ ভাগবতী। সে জানে এটা? তার ভাগ্নে মেয়ে টাকে কি পরিমাণ ভালোবাসে ধারণাতীত মেয়ে টার।
অধরে হাসির রেখে ফুটে উনার।রিহান আঁড়চোখে দেখলো।মনে মনে অবাক হলো।মামার কত বড় লস করেছে সে।তারপরও মানুষ টার বিন্দু পরিমাণ রাগ ক্ষোভ নেই।আতিক চৌধুরী মিরা’র মাথায় হাত রাখে।
বললো,

-“কালকে আসার ইচ্ছে ছিলো।যা-ই হোক সে-সব কথা বাদ।নতুন জীবনে পথ চলা দীর্ঘ ও সুখময় হউক। সুখী হউ দু’জন।”

মিরা অপ্রস্তুত হাসার চেষ্টা করে। ইফাদ শিশির এর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আতিক চৌধুরী ইফাদ কে ইশারা করতেই ইফাদ নিজের পকেট থেকে একটা ছোট বক্স বের করে।আতিক চৌধুরীর সামনে খুলে ধরতেই সেটার ভেতর ঝলঝল করে উঠলো এক জোড়া ডায়মন্ড এর চুড়ি।মিরা’র চোখে লাগলো আলো টা।অবাক হয়।শিশির মিরা’র হাত এগিয়ে সামনে আনে।আতিক চৌধুরী সেগুলো মিরা’র হাতে দেয়।মৃদু হেঁসে বলে উঠলো,

-“আমার প্রচুর শখ ছিলো এই ব্যাটার শ্বশুর হওয়ার।আজ বানিয়ে নিলাম।কাল হয়তো খেয়াল করো নি সাক্ষর নামায় মেয়ের দ্বিতীয় বাবা টার নামের যায়গায় আমার নাম ছিলো। ছোট একটা উপহার আমার মেয়ের জন্য।”

মিরা অবাক হলো।এতো দামী উপহার আর বলছে ছোট? কিন্তু মিরা’র এটার থেকেও মনে বেশি দাগ কেটে গেলো “বাবা” শব্দ টা শুনে।কত বছর পর এমন করে মিরা’র সাথে কেউ কথা বললো।মিরা আবেগি হলো।চোখ টলমল করে। আতিক চৌধুরী সেটা দেখে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরে মিরা কে।মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।

হসপিটালের সব ফর্মালিটি পূরণ করে সকাল নয়টার মধ্যে বেরিয়ে এলো সবাই। আতিক চৌধুরী এসছে ভোরে আবার চলে গিয়েছে আটটার দিকে।সাথে গার্ড নিয়ে আসে নি।শুধু নিজের বিশ্বস্ত এক কর্মচারী নিয়ে এসছে।তাই ব্যাপার টা জানাজানি হওয়ার আগেই তিনি আবার ঢাকা ফিরেছে।
ইব্রাহিম শেখ এসছে। তবে তিনি হসপিটাল থেকে অফিস চলে গিয়েছে।সাথে এখন শিশির আর ইফাদ। গাড়িতে ইফাদ ড্রাইভিং সিটে বসলো।ওর পাশে শিশির। মন না চাইতেও বসতে হয়েছে। কেমন জানি এখন আর আগের মতো পুরুষ টার সামনে থাকতে ইচ্ছে করে না।মানুষ টাকে দেখলে বুকের ভেতর অনল যেন দাউদাউ করে জ্বলে উঠে। আসার সময় বাবা-র সাথে সে পেছনের সিটে বসে ছিলো। তবে এখন সেটা সম্ভব নয়।অগত্যা বাধ্য হয়ে সামনে বসতে হয়েছে। মিরা রিহান কে গাড়িতে বসার জন্য তড়িঘড়ি করে দরজা খুলে দিতে গিয়ে মাথা দরজার সাথে বেশ জোরেই ধাক্কা লাগলো।মেয়ে টা ব্যথার চোটে নাক লাল হয়।রিহান ক্ষেপে উঠলো।ধমক দিয়ে বললো,

-“মরে যাচ্ছি না আমি।সুস্থ আছি।তোকে কে বলেছে এতো বড়দের মতো ব্যবহার করতে?”

মিরা’র একে-তো ব্যথা পেয়েছে তারউপর রিহান ভাই এর ধমক মেয়ে টার কান্না যেন ভেতর থেকে উপচে পড়তে চাইলো।তবে কান্না করলো না।গাড়িতে বসে মাথা নিচু করে রাখলো।রিহান আঁড়চোখে ব্যাপার টা লক্ষ করলো। তবে পাত্তা দিলো না বিশেষ।বরং নিজের ঘাড় সামন্য কাত করে মিরা’র কাঁধের উপর মাথা রাখলো।আরেক হাতে পেট জড়িয়ে ধরে ঘনিষ্ঠ করে নিজের সাথে মেয়ে টাকে।মিরা চমকে উঠলো।কালকে রাতের সেই ভয়াবহ দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠলো।রিহান সারারাত তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো।মিরা’র লজ্জায় প্রথমবারের ন্যায় কোনো পুরুষের বক্ষদেশে সারারাত তার একটু ঘুম হয় নি। কতশত কল্পনা জল্পনা করেছে।ভোরের দিকে যা-ও একটু চোখ লেগে ছিলো।তবে নার্স এসে ঔষধ দেওয়ার জন্য ডাকছিল বিধায় ঘুম টা আর হয় নি।
গাড়ি চলছে। রিহান নিজের একটা হাত মিরা’র কোলের উপর রাখা।তার হাতের মুঠোয় মিরা’র এক হাত।

হসপিটাল থেকে শেখ বাড়ি পৌঁছাতে দশ মিনিট এর মতো সময় লাগে। এই পুরো টা সময় রিহান চোখ বন্ধ করে মিরা’র কাঁধে মাথা রেখে ছিলো।শেখ বাড়ির গেইটে গাড়ি থামতেই দু’জন দারোয়ান বড়ো গেইট টা খুলে দিলো।কিন্তু গাড়ি টা রিহান বাড়ির ভেতর নিতে বারণ করলো।শিশির ও ইফাদ দু’জনেই অবাক হয়।মিরা’র তেমন ভাবান্তর ঘটেনা না।যেন এটার জন্য সে আগে থেকে প্রস্তুত ছিলো।শিশির মিরা’র মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করলো।কিন্তু কিছু বুঝতে পারে না।রিহান কে জিজ্ঞেস করলো,

-“মিরা যাবে না আমাদের সাথে?”

-“না।ইফাদ ওকে বাড়ি পৌঁছে দিবে। আপাতত তোরা দু’জন গাড়ি থেকে নেমে পড়।”

শিশির ঘাড় নাড়ে।ইফাদ গাড়ি থেকে নামার আগে রিহান এর হাতে একটা ছোটখাটো শপিং ব্যাগ দিয়ে গেলো।মিরা ততক্ষণে রিহান এর থেকে অনেক টা দূরত্ব বজায় রেখেই বসেছে। রিহান ব্যাগ টা নিয়ে নিজের বা পাশে রাখলো।ফিরে মিরা’র দিকে তাকিয়ে রইলো।মিরা মাথা নিচু করে বসে আছে। রিহান হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসার আগেই মিরা’র সাথে কথা হয়েছে। মিরা এখন নিজেদের বাড়িতে থাকবে।রিহান সুস্থ হলে তবেই মিরা কে শেখ বাড়িতে নিয়ে আসবে রিহান।যদিও রিহান এর তেমন একটা মত ছিলো না।শুধু রমজান শেখ এর কথায় রাজি হয়েছে। বিয়ে টা তার কথামতো হয়েছে। কিন্তু এটা খুব বেশি কেউ বিষয় টা জানে না।তাই অনুষ্ঠান করে আনলেই ব্যাপার টা সুন্দর দেখাবে। রিহান ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ে। মিরা হঠাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে রিহান এর দিকে তাকালো। মেয়ে টার চোখ টলমল করছে।তবে অদ্ভুত বিষয় মেয়ে টা বারবার অধর দাঁত দ্বারা চেপে ধরছে।মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে অপ্রস্তুত। ভয় পাচ্ছে। রিহান দুই হাত বাড়িয়ে মিরা’র মুখ টা নিজের হাতের আঁজলে নিলো।ভ্রু উঁচিয়ে শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

-“কি হয়েছে তো,,,”

হঠাৎ কথা স্বর হারিয়ে গেলো।চারদিক থেকে কোনো শব্দ এলো না আর।কান শোঁশোঁ শব্দের সাথে গরম ধোঁয়া বেরিয়ে এলো যেন।নরম অধর ছুঁয়েছ পুরুষ টার সিগারেটে পোড়া অধর।বিষয় টা বুঝতে যেন কয়েক পলক সময় লাগলো রিহান এর।যতক্ষণে বুঝতে সক্ষম হলো ততক্ষণে মিরা নিজের কাজ শেষ করে সরে যাচ্ছিল।কিন্তু সামনে বসা বলিষ্ঠ পুরুষ সেটা হতে দিলো না। দুই হাতে মেয়ে টার কোমড় চেপে ধরলো।এক টানে নিজের কোলের উপর তুলে কিছুক্ষণ আগে মিরা’র অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে ব্যস্ত হলো।পুরুষ টার অধর স্পর্শে মেয়ে টার বেসামাল হলো।মস্তিষ্ক খুব করে এটার জন্য নিজে কে দায়ী করলো।সেধে সেধে নিজের বিপদ টা যে নিজেই হাতে পায়ে ধরে টেনে এনেছে বুঝতে পেরে নিজের গালে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করলো।শরীর যে এদিকে অবশ হচ্ছে। নিজে কে ছাড়ানোর বিন্দু পরিমাণ শক্তি শরীরে অবশিষ্ট নেই।নিজের স্বামীর এমন রূপ রীতিমতে মিরা’র অন্তরে উতালপাতাল হচ্ছে। কত সময় কাটলো কেউ হিসাব করার মতো অবস্থায় ছিলো না। ছাড়া পেয়ে মিরা’র শ্বাস-প্রশ্বাস এর বেগ দ্রুত হলো।মুখ ঘুরিয়ে বসলো।রিহান স্বাভাবিক। কোনো পরিবর্তন ঘটে নি।ঠিক আগের মতো স্বাভাবিক। শুধু চোখের চাহনি মারাত্মক। মিরা একবার তাকিয়ে ফের দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো।রিহান নিজের নিচের অধর দাঁত দ্বারা চেপে ধরে হাত বাকিয়ে পাশ থেকে শপিং ব্যাগ টা নিলো।মিরা’র কোলের উপর রেখে বাহিরের দিকে তাকিয়ে শান্ত অথচ গম্ভীর শোনালো পুরুষ টার কণ্ঠ,

-“তোমার একবার স্বেচ্ছায় ছোঁয়ায় তৃষ্ণা বাড়িয়ে গেলে জান।এখন তোমাকে একান্ত নিজের করে পাবার অপেক্ষার দিন দ্রুত ইতি টানতে হবে।”

মিরা’র দু’টো ঝটকা এক সাথে নিতে পারলো না। থম মেরে বসে রইলো।রিহান আবার বললো,

-“ফোন আছে। সব সেটিংস করাই আছে। কল করলে রিসিভ করবি।”

মিরা কিছু বলার অপেক্ষা করে না।রিহান তার আগেই বেরিয়ে গেলো।ইফাদ এসে গাড়িতে বসলো।চমৎকার একটা হাসি উপহার দিলো মিরা কে।মিরা অপ্রস্তুত হাসলো।ইফাদ গাড়ি স্টার্ট করে।

শিশির রিহান কে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলো।সদর দরজায় যেন অপেক্ষা করেই ছিলো সবাই।শিশির রিহান বাড়ির ভেতর গেলো।রিহান গম্ভীর। গিয়ে সোফায় বসলো।শরীর টা দুর্বল লাগছে। মাথা টাও অল্প চিনচিন ব্যথা করছে।তাই চুপ করে চোখ বন্ধ করে নিলো।তাকে ঘিরে সবাই বসলো।কি খাবে শরীর কেমন লাগছে এসব জানতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো নিনা বেগম আর রিহান এর ছোট চাচি। শিশির সবার সাথে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করে কিন্তু সবার সাথে কথা শেষ সোফায় বসা রিহান এর পাশে তাকিয়ে আচমকাই সবার ভীড়ে শিশির অস্ফুটে ডেকে উঠলো,

-“টাইসন।”

#চলবে…..

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

#পিঞ্জিরা
#পর্ব_১৭
#জান্নাত_সুলতানা

রিহান শিশির এর ডাকে চোখ খুলে বামে তাকায়।ধবধবে সাদা আর ব্রাউন কালার সংমিশ্রণে একটা বিড়াল ছানা।এটার স্পর্শ রিহান প্রথমে পেয়েছিল।যখন সে এসে বসেছে সোফায় তক্ষুণি তিনি এসে রিহান এর পাশের জায়গা দখল করে নিয়েছে। রিহান এক হাতে বাড়িয়ে বিড়াল টাকে ছুঁয়ে দিলো।সে যেন মালিকের আদুরে স্পর্শে পেয়ে আহ্লাদী হলো।মাথা এলিয়ে দিলো হাতে। মুখ ঘষল হাতের তালুতে।ম্যাও ম্যাও করে যেন জানতে চাইলো কাল রাতে বাড়ি কেনো ফিরে নি রিহান! রিহান কোলে নিলো।মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মুচকি হাসলো। শিশির ততক্ষণে এসে রিহান এর সামনে দাঁড়িয়েছে।মেয়ে টার মুখে এখনো বিস্ময় এর ছোঁয়া। চোখ টানটান করে অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

-“এটা?এটা এখানে কি করে এলো? এটা তো আমি ভাইয়ার সাথে ভিডিও কলে কথা বলার সময় সুইজারল্যান্ড দেখেছিলাম।”

-“এটা আমি অনেক আগে আনিয়েছি।এর নাম টম। আর তুই যে টা দেখেছিস।সেটা কাজল নিয়ে আসবে।”

রিহান বিড়াল টার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে।তারপর বিড়াল টা কে নিয়ে উপরে নিজের রুমে চলে গেলো।
শিশির হতাশ হয়।তার একটা বিড়াল এর শখ প্রচুর।অনেক আগে রিহান এর একটা বিড়াল ছিলো।নাম ছিলো ক্যামেলি।সেখান থেকে শিশির এর বিড়াল এর প্রতি আলাদা একটা অনুভূতি তৈরী হয়ে ছিলো। রিহান ঢাকায় থাকাকালীন সেটা রিহান এর সাথে ছিলো।শিশির নিজেও ওর যত্ন-আত্তি করতো।আদর করতো।নিজের সাথে সাথে রাখতো। একদিন ওরা বাসায় ছিলো না কেউ।রিহান এর রুমের বারান্দায় ছিলো বিড়াল টা।ওর খাবার আর ওর থাকার বাস্কেট সব ছিলো বারান্দায়। কিন্তু ওরা যখন বাসায় ফিরে আসে সেদিন বিড়াল টাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি।অনেক চেষ্টা টার পর কয়েক দিন পরে সেটা মৃত অবস্থায় একটা ডাস্টবিনে ময়লার সাথে পাওয়া যায়। আর এটার শরীরে ছিলো অসংখ্য আঘাত। যেগুলো অন্য একটা বিড়াল করেছিলো।কিন্তু এটা ওখানে কিভাবে গেলো সেটা কেউ আজও ভেবে পায় নি।তবে শিশিরদের বাড়ির পাশে একটা এ্যপার্টমেন্টে একটা মেয়ের বিড়াল ছিলো।সেটা ছিল হুলোবেড়াল।আর দেখতেও বেশ বড় ছিলো।সেক্ষেত্রে রিহান ভাই এর টা ছিলো খরগোশ এর ছানা।
হয়তো ওই হুলোবেড়াল টায় এমন করেছিলো।হুলোবেড়ালের মালিক যে মেয়ে ছিলো সে শিশির এর ভালো ফ্রেন্ড ছিলো।কিন্তু শিশির ওই ঘটনার পর আর কোনো দিন মেয়ে টার সাথে কথা বলে নি।সবাই কমবেশি বুঝতে পেরেছিলো ওই মেয়ে টাই নিজের বিড়াল কে বাঁচাতে রিহান এর বিড়াল টাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলো।কারণ রিহান এর বিড়াল টাকে ওই মেয়ে টার বিড়াল টাই মেরেছিলো।

—–

মিরা বাড়ি ফিরে আগে গোসল দিলো।শরীর কেমন করছে।গোসল দিয়ে খাবার খেয়ে কিছু সময় ঘুমালো। রোকেয়া কমলা এই সুযোগে উঠোনে কিছু কাজ সারলো।জোহরের আযান পড়তে তারা দুই শাশুড়ী বউ গোসল করে নামাজ পড়ে মিরা কে ডাকলো।মিরা হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এক সাথে দুপুরে খাবার খেলো সবাই। অতঃপর বসলো সবাই। রোকেয়া অনেক আগে মেয়ের গলা থেকে চেইন টা খুলে রেখে দিয়েছিল নিজের কাছে। তবে আজ আবার সেটা মেয়ে কে পড়িয়ে দিলো।কমলা নাতনি কে এটা-সেটা জিজ্ঞেস করলো। মিরা অল্পস্বল্প লজ্জা পেলেও সব বললো।শুধু রাতে জড়িয়ে ধরে ঘুম আর গাড়িতে চুমু।এগুলো বাদে সব গল্প করে দাদির সাথে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। বারবার ফোন চেক করলো মিরা।অপেক্ষা করলো রিহান ভাই এর একটা কলের।কিন্তু নাহ কিছু এলো না। রাত আটটা বাজে মিরা খাবার খেয়ে রুমে এলো।এসেই দেখলো ফোন টা বাজছে। তড়িঘড়ি করে এসে ফোন হাতে নিলো।কিন্তু কল রিসিভ করতে পারলো না। আর পূর্বে অভিজ্ঞতা না থাকার ফলে প্রথম বার কল কেটে গেলো।দ্বিতীয় বার কল আসতেই মিরা রিসিভ করতে সক্ষম হয়।এবং ফোন কানে দেওয়ার আগে অনাকাঙ্খিত এক টা মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠলো। মিরা চোখ বড় বড় করে নিলো।লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখলো।

উদোম শরীরে বসে আছে রিহান।পড়নে শুধু একটা টাওয়াল।মাথায় শুভ্র ব্যান্ডেজ।মুখে পানির প্রলেপে চিকচিক করছে চাপদাড়ি।ঠোঁট জোড়া ফেঁকাসে দেখাচ্ছে। হাতে তার ফোন।যার ভেতরে ভিডিও কলে রয়েছে লজ্জাবতী মিরা।উঁহু মিরা লজ্জাবতী নয়।শুধু রিহান ভাই এর এমন অবস্থা থেকে সে লজ্জা পাচ্ছে। অন্যথায় মুখ দিয়ে মেয়ের খই ফুটে।রিহান কে দারুণ দেখাচ্ছে। কোনো তামিল সিনেমার হিরো কে টেক্কা দেওয়ার মতো মারাত্মক সুন্দর।
মিরা’র চোখ আঁটকে থাকে এই পুরুষের দিকে।কিন্তু তাকাতে পারে না।এভাবে দেখলে তার বুকের ভেতর কেমন করে উঠে। পেটে শিরশির অনুভূতি হয়।
রিহান অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে মিরা কে।চোখ দিয়ে যেন নেশা ঝরে। মিরা’র সর্বাঙ্গে কাঁপন ধরে। শিরশির করে শিরা-উপশিরায়।

-“মিরা!”

মৃদু স্বরে ডাকলো রিহান।মিরা চোখ তুলে একবার ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে আবার মাথা নত করে। অধর নেড়ে মিহি স্বরে জবাব দিলো,

-“জ্বি বলুন।”

-“আসবো?”

মিরা চমকে উঠলো।হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় রিহান ভাই এর দিকে।পরপরই দৃষ্টি এলোমেলো ঘুরিয়ে বলে,

-“অসুস্থ আপনি।”

-“তোর শরীর এর গন্ধ, তোর ওই নরম হাতের ছোঁয়া পেলে সুস্থ হয়ে যাব।”

রিহান ঘোরলাগা কণ্ঠে বলে উঠলো। মিরা লজ্জা পায়।চোখে সেটার ছাপ স্পষ্ট। রিহান দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু মেয়ে টার চোখের নিচে কালি পড়েছে। নিশ্চয়ই পরীক্ষার জন্য রাত জেগে পড়েছে সেইজন্য। রিহান আরো একটা বিষয় লক্ষ্য করলো সেটা হচ্ছে মিরা’র মুখে চিন্তিত দেখাচ্ছে। মিরা বলে উঠলো,

-“আম্মা দাদি।সবাই কি বলবে?”

-“আমি ম্যানেজ করে নেবো সবাই কে।”

রিহান সোজাসাপ্টা জবাবে বলে।মিরা তাও কেমন বিষয় টা ভালো নজরে দেখলো না।কিন্তু পরক্ষণেই মনে পরে তারা তো প্রেম করছে না এখন। বিবাহিত তারা।স্বামী স্ত্রী। সমাজে একটা পরিচয় আছে তাদের।তাহলে ভয় কিসের! মিরা’র ভাবনার মাঝেই রিহান আবার বলে উঠলো,

-“আমি কি পরনারীর কাছে যাবো? আমি আমার বউয়ের কাছে যাব।”

মিরা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রিহান কল কেটে দিলো। মিরা ফোন রেখে দৌড়ে মায়ের রুমে গেলো।রোকেয়া মাত্র কোরআন তেলওয়াত শেষ করে শোয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।এরমধ্যে মেয়ে কে এমন দৌড় নিজের রুমে প্রবেশ করতে দেখে চিন্তিত হলো।শরীর কি মেয়ে টার আবার খারাপ করলো?রোকেয়া দ্রুত কদম ফেলে মেয়ের কাছে এলো।মিরা কালবিলম্ব করে না। মিনমিন করে বললো,

-“আম্মা রিহান ভাই আসছে।”

-“এখন?”

রোকেয়া বেগম বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে বলে উঠলো। রোকেয়া মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে উত্তর এর আশায়। মিরা শুধু মাথা ঝাঁকাল। যার অর্থ “হ্যাঁ” বোঝালো। এতো রাতে বাড়িতে শুধু তিন জন মহিলা মানুষ তারমধ্যে এতো রাতে ভাইপো নতুন মেয়ে জামাই রুপে প্রথমবার তার বাড়ি আসবে। আপ্যায়ন এর তো একটা ব্যাপার আছে। তারউপর একটা সময় এই ছেলে টাকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই ভালোবেসে আদর যত্ন করতো।যদিও ভালোবাসা টা এখনো ঠিক আগের মতোই রয়েছে শুধু প্রকাশ করার মতো কোনো পরিস্থিতি মাঝে ছিলো না।

রোকেয়া বেগম তড়িঘড়ি করে খাবার ঘরে গেল।ফ্রিজ থেকে দু’টো ডিম আর মাছ নামিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখলো।এক চুলার সিলিন্ডার গ্যাস আছে। সেখানে ভাতের পানি বসিয়ে দিলেন।নিজে চাল নিতে নিতে মিরা কে বললো,

-“বারান্দা থেকে আরো একটা বৃষ্টির পানির বোতল নিয়ে আয়।”

মিরা এতো সময় মা’কে দোখছিলো। কত তাড়াহুড়ো করে তার মা কাজ করছে।মিরা’র যেন সব স্বপ্ন মনে হচ্ছে। মিরা একবার চালের ড্রামের কাছে দেখলো।সেখানে আর কোনো পানির বোতল নেই।তার মা বৃষ্টি হলেই বাড়িতে যত বোতল থাকে সব গুলোতে পানি ভর্তি করে রাখে।যার ফলে রাতে কিংবা পুকুর থেকে পানি আনার তেমন একটা ঝামেলা থাকে না।আর এমনিতেও গ্রামেগঞ্জের পুকুরের পানি গুলো প্রায় দূষিত হয়ে যায়।তারও যথেষ্ট কারণ থাকে।তাই বৃষ্টি হলে সেই পানি বোতল ড্রাম কিংবা আরো বিভিন্ন পাত্রে সংগ্রহ করে রাখলে আরো ভালো হয়।
মিরা’র মায়ের ভাত রান্না শেষ মাছ ভুনা করার মাঝেই গেইটে শব্দ হলো।রোকেয়া মেয়ে কে চুলার কাছে দাঁড়াতে বলে গেইট খুলতে গেলো।
মিরা কেমন আড়ষ্ট ভঙ্গিতে চুলায় মাছ নাড়তে লাগলো।
মিরা খাবার ঘর থেকে শুনতে পেলো রোকেয়া রিহান কে কিছু নিয়ে শাসাচ্ছেন। মিরা ভয় পেলো।আবার কোনো গণ্ডগোল হয়েছে ভেবেই মিরা’র ভয়ে গলা শুঁকিয়ে এলো।দ্রুত মাছ চুলা থেকে তুলে খাবার ঘর থেকে উঁকি দিয়ে বারান্দায় দেখতেই চক্ষু কপালে উঠলো।দুই টা ছেলে।বারান্দায় হরেকরকম ফল মিষ্টির প্যাকেট রেখে আবার ফিরে যাচ্ছে। মিরা’র মুখ হা হয়ে গেলো।এতো কিছু সে এক সাথে এই প্রথমবার দেখলো।যদিও কত কথা টা কেমন শুনতে। তবে সত্যি এটাই।এতো বাজার এক সাথে সে আগে কখনো দেখে নি।বিশেষ করে বাবা মারা যাওয়ার পর।যদিও রোকেয়া নিজের সাধ্যমতো করে।তবে এতো টা না। রোকেয়া হাসফাস করছে।রিহান বিষয় টা বুঝতে পেরে আঁড়চোখে উনার দিকে তাকিয়ে মেকি হাসার চেষ্টা করে। হাতে তার টম।গায়ে একটা জ্যাকেট তার নিচে একটা চেক শার্ট। মাথায় এখন শুধু একটা ছোট সাদা পট্টি লাগানো। কি মারাত্মক সুন্দর লাগছে পুরুষ টাকে এতে।মিরা’র গলা শুঁকিয়ে আসে।
রোকেয়া হতাশার দৃষ্টিতে রিহান এর দিকে তাকিয়ে এক-এক করে সব খাবার ঘরে নিতে লাগলো।
মিরা এদিকে তড়িঘড়ি করে রান্না ঘরে এসে সব গুছিয়ে খাবার টেবিলে রেখে দিয়েছে। রিহান মিরা’র রুমের সামনের ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এলো।
রাত দশ টা বাজতে বাজতে রোকেয়া মেয়ে জামাই এর খাবার-দাবার পাট চুকিয়ে সব গুছিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।
মিরা ও নিজের মা রুমে যেতে নিজের রুমে এলো।রিহান তখন মিরা’র ছোট আয়না টার সামনে দাঁড়িয়ে শার্ট এর উপর পড়ে থাকা কালে রঙের জ্যাকেট টা খুলছে।আর বিড়াল টা বিছানায় বসে রিহান কে দেখছে।মিরা এটার নাম জানে না।তবে দেখার পর থেকেই এটা কে ছুঁয়ে দেওয়ার লোভ হচ্ছে। মিরা দরজা বন্ধ করবে কি-না সেটা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছে। ঠিক তক্ষুণি রিহান গম্ভীর স্বরে আদেশ করলো,

-“দরজা বন্ধ করে আয়।”

মিরা খুব সাবধানে দরজা বন্ধ করে। যাতে কোনো শব্দ না হয় সেই ভয়ে। বাড়িতে মা দাদি আর সে দরজা বন্ধ করে একটা পুরুষের সাথে একই রুমের ভেতর। ভাবতেই মিরা’র অস্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই।এই পুরুষ কে নিয়ে বিশ্বাস নেই।যখন-তখন যা কিছু করে বসবে। রিহান জ্যাকেট চেয়ারে রেখে নিজের কাছে ডাকলো মিরা কে।মিরা এদিক-ওদিক তাকিয়ে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে রিহান এর থেকে কিছু টা দূরে দাঁড়ালো। এখনো তো মিরা’র এসব স্বপ্ন মনে হয়।ভাবতেই পারে না এতো সব হয়েছে তার সাথে। নিজের ভালোবাসার মানুষ টা তারই স্বামী। এটাও তার কপালে ছিলো।ভাবলেই নিজে কে সুখী মনে হয়।মিরা’র ভাবনার মাঝেই রিহান আচমকাই হাঁটু গেঁড়ে নিচে বসে গেলো।মিরা চমকে উঠলো।দূরে সরে গেলো।অবাক হয়ে বলে উঠলো,

-“একি আপনি নিচে কেনো বসেছেন?উঠুন। উপরে বসুন।”

-“এদিকে আয়।”

মিরা তবুও দাঁড়িয়ে থাকে।রিহান সেটা দেখে আবার বলে,

-“এদিকে আয়।”

মিরা এবার ধীরপায়ে এগিয়ে রিহান এর সামনে দাঁড়াতেই রিহান নিজের প্যান্ট এর পকেট থেকে একটা কিছু বেড় করে মিরা’র পা টেনে নিজের উরুর উপর রেখে মিরা’র পায়ে সেটা পড়িয়ে দিলো।
মিরা অবাক হয়ে দেখলো।স্বর্নের একটা পায়েল।খুব বেশি কারুকাজ করা নয়।নরমাল তবে দারুণ সুন্দর দেখতে পায়েল টা।রিহান মিরা’র পায়ে অধর ছুঁয়ে চুমু খেতেই মিরা’র ঘোর কাটলো।ঝট করে পা সরিয়ে নিতেই রিহান বিরক্ত হলো।উঠে দাঁড়িয়ে বিছানায় গিয়ে বসলো।মিরা’র দিকে নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।মিরা’র পুরো শরীর শিরশির করে উঠলো। কাঁটার ন্যায় বিঁধল এই চাহনি। মারাত্মক সুন্দর পুরুষ টার চাহনি।
রিহান টম কে বিছানা থেকে কোলে তুলে ফের নিচে বসলো।মিরা কে ডেকে পাশে বসতে ইশারা করে। মিরা গিয়ে অল্প দূরত্ব রেখে বসলো।কিন্তু রিহান সেই দূরত্ব মিটিয়ে নিলো।টম কে বা হাতে নিজের এক উরুর উপর রেখে ডান হাতে মিরা’র গলা থেকে ওড়না খুলে নিলো।সেটা দিয়ে টম কে ঢেকে দিলো।টম একদম চুপ করে রইলো।কোনো নাড়াচাড়া নেই।মিরা চমকে উঠে কিছু বলতে যাচ্ছিল। রিহান বাঁধা দিলো।গলায় মুখ গুঁজে মিরা’র কথা বলার রাস্তা বন্ধ করে দিলো।মিরা বরফের অনুরূপ জমে গেলো।রিহান সুযোগ বুঝে বউয়ের অধরে মেতে উঠলো।মিরা’র চোখ প্রথমে রসগোল্লার ন্যায় বড় বড় আকৃতি ধারণ করলেও সেটা পরে খুব ছোট ছোট হয়ে গেলো।কিন্তু চোখ বন্ধ হওয়ার আগে মিরা দেখলো টম ওড়না পা দিয়ে টেনে সরিয়ে এক চোখ বের করে তাদেরই দেখছে।এটা লক্ষ্য করেই মিরা ছুটাছুটি করতে লাগলো।রিহান বিরক্ত হলো বিশেষ মুহূর্তে বাঁধা একদম পছন্দ হয় নি তার।তবে মিরা’র দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিকে তাকিয়ে টম কে ড্যাবড্যাব করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে চক্ষু চড়কগাছ। রিহান অসহায় বোধ করলো নিজে কে।বললো,

-“টাইসন এলে তোর সাথে ওর বিয়ে দেবো টম।তখন তুই যত ইচ্ছে রোমাঞ্চ করিস।আমি বাঁধা দেবো না। দয়া করে আমার রোমাঞ্চ এর দিকে এখন নজর দিস না।”

#চলবে….

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।কত বড় পর্ব।🫶]