#পুনম
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ১১
আজ প্রথম রোজা, আর কিছু সময় পরই ইফতার। নিয়াজ উদ্দিনের বুকটা ভার হয়ে আসে,পুনম ইফতারে থাকতে পারবে না।তার গলা দিয়ে কি ওই ইফতারের খাদ্য নামবে? তিনি মোবাইল নিয়ে কল দেয়,
—-ইফতারে বাসায় আসবি না মা?
—- না বাবা টিউশনে দেরি হয়ে যাবে, তুমি চিন্তা করো না বাবা……তারপর মৃদু হেসে আবার বলে ওঠে, জানতো বাবা টিউশনের মজাই আলাদা যেখানেই পড়াতে যাই সবাই বিভিন্ন ধরনের নাস্তা নিয়ে আসে এত কিছুর পর তোমার মেয়ের ইফতারের কি দরকার?
— আজ প্রথম রোজা, সবার সাথে বাসায় করতি ইফতার ? মারে আমি বলি কি এই রোজার মাসটা সন্ধ্যার পর পড়াতে না গেলে হয় না?
—–বাবা আমার জন্য প্রথম রোজাও যা আর শেষ রোজাও তা,বাবা আমরা আর একটু স্বচ্ছল হয়ে নেই তখন আর সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হবো না।প্রমিস বাবা….
নিয়াজ সাহেব কল কেটে দেয়। ইফতারের টেবিলে সবাই আছে শুধু তার কলিজার টুকরাটাই উপস্থিত নেই।এই যে তার বড় মেয়ে রুমা টেবিল তদারিকি করছে তার বড়লোক জামাইর যাতে কষ্ট না হয়,একটু একটু পর পর মাকে বলছে রুহআফজা রাখোনি কেন মা? রুহ আফজা ছাড়া ইফতার হয়?
তার মেজ মেয়ে ঝুমা অন্তস্বত্বা তাই রোজা রাখতে পারে নি।সে চেয়ারে বসে সব খাবার মুখে দিয়ে চেখে দেখছে আর তার স্বামীকে বলছে, বাবুর আব্বু খেয়ে দেখ না, এই খাবার টা খুব স্বাদ হয়েছে…আর সেও হা করছে খাওয়ার জন্য । কপাল কুঁচকে বিরক্তি প্রকাশ করে নিয়াজ উদ্দিন, বউ রোজা রাখেনি তাই এই গাধাটাও রোজা রাখে নি….
আর তার সেজ মেয়ে পাবনী বরাবরের মত শান্ত হয়ে মাকে রান্না ঘরে সাহায্য করছে।আর লাবণ্য আর মরিচা মাথায় কাপড় দিয়ে সারা বাড়ি ছোটাছুটি করছে আবার টেবিলে ইফতার গুছিয়ে রাখছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে এই ইফতার টাইমেও ওদের দুজনের ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়া……
ইফতার টেবিলে পিয়াজু দেখে বাবার চোখে পানি চলে আসে, পুনম মচমচে পিয়াজু খেতে যে খুবই ভালোবাসে….
আজান দিচ্ছে, পুনম রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে কয়েকটা বিস্কুট আর ব্যাগে রাখা বোতলের পানি দিয়ে ইফতার করছে।অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশ অবাক হয়ে দেখছে, পরীর মত সুন্দর একটা মেয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে রোজা খোলার দৃশ্য! কি স্নিগ্ধ মুহুর্ত!
***********************************
হায়দার হোসেন নামটি বাংলাদের বিজনেস জগতে একটা অন্যতম নাম। বিজনেসে তারমত খুড় দাঁড় বুদ্ধি কারো নেই। লস প্রজেক্টও হায়দার হোসেনের কাছে গেলে তা লাভ প্রজেক্ট হয়ে যায়। তার ব্যাংকে আসলে কত টাকা আছে আর সে যে কত সম্পদের মালিক তা হায়দার হোসেন নিজেও জানে না! তারপর তো বাহিরের দুনিয়া….
হায়দার হোসেন রেডি হয়ে ইফতারের ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগে টেবিলে সবার সাথে জয়েন করেন।তিনি কালো ব্লেজার স্যুট পড়ে চুল ব্যাক ব্রাশ করে,হাতে রোলেক্সের ঘড়ি পড়ে নিচে নেমেছে।তাকে দেখে বুঝার উপায় নেই, তার বয়স বর্তমানে ষাট। আজ রাতে তাকে ইন্দোনেশিয়া যেতে হবে পনের দিনের সফরে,তাই সবার সাথে আজ ইফতারে বসা……এছাড়া তার ছোট ছেলের আবদার ছিল একসাথে ইফতার করার…..
—–তোমার জন্য কি আনবো তারুণ ওখান থেকে?
—-ওহো আব্বু, আমার কিছুই লাগবে না শুধু তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। ইউ নো, আই অলওয়েস মিস ইউ..
—-আই নো,আই নো।তারপরও সামনে যেহুতো একটা উৎসব আছে বল তোমার কি লাগবে?
বাবা ছেলের খাওয়ার সাথে সাথে কথপোকথন চলছে। ডাইনিং টেবিলে শুধু তারা দুজন ছাড়াও তারুণের মা বড় ভাই আর দুজন সেক্রেটারি উপস্থিত আছে।তারা নিশ্চুপ থাকলেও তারুণ আর হায়দার হোসেনের কথা চলতেই থাকে…..
—–তারপর তোমার নতুন বন্ধুটির কি খবর বলতো?
—-ওহো আব্বু, তার কথা তুমি জিজ্ঞেস করো না….
—–কেন সে কি বিশেষ কিছু করেছে যেটা আমি জানি না।
—–আব্বু কাল সে আমায় টক ঝাল মিশ্রিত এক আজব খাবার ফুচকা চটপটি খাওয়াইসে।লাবণ্যর কাছে এ খাবার নাকি অমৃত! রোজার জন্য খেতে পারবেনা তাই ওর সাথে আমাকেও খাওয়ালো আব্বু।আব্বু খুবই আনহাইজিন খাবার,লোকটা প্লেট ভালো করে না ধুয়ে অন্য লোকদের সেই প্লেটে খাবার দিচ্ছিল দেখে আমি বমি করে দিছিলাম। আর আমার সে বন্ধু হেসে লুটোপুটি খাচ্ছিল…..
হা হা হা করে হেসে দেয় হায়দার হোসেন। তারুণের রাগ লাগে,
——ওহ আব্বু! তুমিও হাসছো,আমি কিন্তু কষ্ট পাচ্ছি…..
—স্যরি মাই বয়, এক্সট্রিমলি স্যরি।এরকম বন্ধু থাকলে এতটুকু নাকানিচুবানি খাওয়া তোমার প্রাপ্য। তোমার মত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলের যে এরকম একজন ফেল্টুস বন্ধু থাকতে পারে সেটা ভেবেই আমি আশ্চর্য হচ্ছি! দেখো তোমার ডিস্টার্ব যেন না হয়।
—-না আব্বু, লাবণ্য খুবই ভালো মেয়ে। ও আসলে পড়ালেখা মনে রাখতে পারে না তাই রেজাল্ট খারাপ করে কিন্তু যখনই দেখে আমি পড়ছি তখন ও আমার সাথে দেখা করে না। ও বলে আমি পারি না তাই বলে কি তোমায়ও পড়তে দেব না। তাই তো আমি ওর সাথে বন্ধুত্ব করেছি।আব্বু আমার সাথে যারাই বন্ধুত্ব করতে আসে হয় আমার বাবার টাকা আছে বলে নতুবা আমার মেধা দেখে। ওরা মনে মনে আমায় হিংসা করে শুধু লাবণ্য ব্যতিক্রম!
—-তাহলে তো তোমার চমৎকার বন্ধুটি আমার কাছে কিছু উপহার পায় কি বলো?
তারুণ মিষ্টি করে হেসে দেয়। হায়দার হোসেন চেয়ার থেকে ওঠে ন্যাপকিন দিয়ে ঠোঁট মুছে তারুণের মাথার চুলে চুমু দিয়ে চুল এলোমেলো করে দেন। তারুণ হেসে দিয়ে বলে ওঠে, আব্বু তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আব্বু। আর আব্বু লাবণ্যর জন্য তুমি মেকাপ সামগ্রী আনতে পারো কেননা সে মেকাপ পাগলি।
হায়দার হোসেন বের হওয়ার মুহুর্তে জানতে চান তার বড় ছেলের কাছে,
—-তানভীর তোমার কি গিফ্ট লাগবে বলো?
—-কিচ্ছু না।
—-তোমারও কি তোমার ভাইয়ের মত বন্ধু আছে?থাকলে বলতে পারো, আমি না হয় তার জন্য গিফট আনবো….. বলে একপেশে হাসে হায়দার হোসেন।
সেই হাসি দেখে তানভীর মুগ্ধ হয় না বরং একরাশ ঘৃণা নিয়ে তাকায়! পৃথিবীর ঘৃন্য পিতার তালিকায় হায়দার হোসেনের নামটি সবার প্রথমে থাকবে, এই কথাটি তানভীরের আবারও মনে হয়!
চলবে,
#পুনম
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ১২
— ভাই,ক্যান আই স্লিপ উইথ ইউ?
তানভীর খুবই স্নেহ নিয়ে তাকায় তার আদরের ছোট ভাইয়ের দিকে।যে এই মুহুর্তে স্লিপিং স্যুট পড়ে হাতে বালিশ নিয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তার কাছে অনুমতি চাইছে। হালকা অ্যাশ রঙের স্লিপিং স্যুট, কোকড়ানো চুলগুলো যা কপালে এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে,নাকের ডগায় সবসময়ের মত চশমা যা ফর্সা গোলাকৃতি চেহারায় আদুরে ভাব ফুটিয়ে তুলেছে।অসম্ভব মেধাবী তার ভাইটা। এই মুহুর্তে তানভীরের কাছে তারুণকে সেই ছোট্টবেলার তারুণ মনে হচ্ছে, যে একা ঘুমাতে ভয় পেতো আর মাঝরাতে এসে তার দরজায় নক করে এভাবেই বলতো, ভাই ক্যান আই স্লিপ উইথ ইউ? আর তানভীরের সেই একই জবাব,
—হোয়াই নট….
তারুণ বালিশ নিয়ে বিছানায় ভাইয়ের পাশে শুয়ে পড়ে।তানভীর মুচকি হেসে দেয়,তারুণ কখনোই অন্যের বালিশে শুতে পারে না।একবার তো ট্যুরেও এই ছেলে মাথার বালিশ নিয়ে গেছে…. তা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করলে তারুণ পুরাই নির্বিকার ছিলো….
—-ভাই তোমার বিরক্ত লাগে না?
—-কোন বিষয়ে?
—-ওই যে রুমের বাহিরের আজব চিড়িয়াটাকে।
—-হা হা হা… না বিরক্ত লাগে না, বরং এখন না দেখলেই বিরক্ত লাগে।
—-ব্যাখ্যা করো ভাই…..
—-শোন এটা খুবই সিম্পল বিষয়।অভ্যাস হয়ে গেছে তাই।প্রথম প্রথম বিরক্ত লাগতো,একটা ছেলে অলটাইম আমায় ফলো করছে, আমার সাথে সাথে থাকছে তখন ভালো লাগতো না কিন্তু এখন ও না থাকলেই বরং হাসফাঁস লাগে। আর রাজু খুবিই ভালো ছেলে তারুণ।
—- বুঝলাম ভাই….তারপরও বিষয়টা আমার ভালো লাগে না।
—-বিষয় টা নয়, তোমার রাজুকে পছন্দ নয় তা বলতে পারো।তারুণ ইউ নো… ভাই অলওয়েস লাভ ইউ…..
তারুণের চোখ ভিজে আসে, সে তার ভাইকে খুবই ভালোবাসে।সে তার ভাইয়ের জন্য সব করতে পারে…..
তারুণ তানভীর উভয়ই খাটে শুয়ে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে…দু ভাই পাশাপাশি শুয়ে থাকলেও দুজনের মনের অবস্থা এখন পুরাই ভিন্ন…..
—-ভাই তুমি বাবাকে কেন পছন্দ করো না?
—কারণ সে মানুষের দূর্বলতায় আঘাত করে.…..
—ভাই বাবা তোমাকে খুব ভালোবাসে….
—-ভালোবাসা কি তা হায়দার হোসেন জানে না তারুণ।এসব বিষয় তোমার জানার দরকারও নেই।তুমি কম বুঝবে তত তোমার জন্য ভালো…তবে তোমার বড় ভাই হিসেবে এতটুকু বলতে পারি, কখনো কারো কাছে নিজের দূর্বলতা প্রকাশ করবে না।
—-ভাই, বাবা বুবুকে মেনে নেয়নি তাই কি তুমি তাকে ভালোবাসো না…..বুবুকে কেন তুমি সব থেকে বেশি ভালোবাসো? তার কারণেই যত কষ্ট আমাদের….
—-তারুণ তুমি সবচেয়ে কাকে বেশি ভালোবাসো? বাবা কে নাকি আমাকে?
তারুণ জবাব দেয় না….তানভীর উত্তরের আশাও করে না।সে তার ভাইকে ঘুমিয়ে পড়তে বলে পাশ ফিরে চোখ বুজে।
তারুণ মনে মনে বলে ওঠে, ভাই আমি বাবাকে সবচেয় বেশি ভালোবাসি কিন্তু তোমাকেও ভালোবাসি তার সমান..
—-বাই দা ওয়ে ভাই,মেয়েটা কিন্তু শুধুই বন্ধু আমার, নাথিং ইলস….
তানভীর চোখ বুজেই বলে ওঠে,
—আমি কি জানতে চেয়েছি তারুণ?
—কিন্তু ভাই আমি বলতে চেয়েছি…..
*******************************
রাতের সময়ে এখন তিনটা দশ বাজে।সুমনের হাতে জলন্ত সিগারেট। রাস্তায় পায়চারি করছে আর সিগারেট ফুঁকছে সুমন। পকেটে একটাই সিগারেট ছিল…সেহরির সময় এখন কিছু খাওয়া দরকার।কিন্তু কি খাবে? পকেটে যে টাকা আছে তা দিয়ে শুধু সিগারেটেই সেবন করা যাবে। এই ব্যাপারটা খুব ইউনিক হবে,সেহরিতে সিগারেট দিয়ে কেউ রোজা রেখেছে কিনা সন্দেহ আছে।সুমন তাদের বাসার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিন্তা করছে এসব। বাসায় বাজার বলতে কিছুই নেই।থাকবে কি করে? ভাইজান আর ভাবি নেই তাই বাসার বাজার সদায়ও সব বন্ধ। কি আজব ব্যাপার! ছোটবেলায় সুমন খাবার নিয়ে কত বায়না করতো।এটা খাবেনা তো ওটা খাবে।তখন মা বিরক্ত হয়ে বলতো,যখন আমি থাকবোনা দেখবো তখন কাকে এত জ্বালাস?
সুমন আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে, বিড়বিড় করে বলে ওঠে, মা তুমি কি দেখতে পাচ্ছো তোমার ছেলে এখন আর কোন বায়না করে না।সে এখন নিজে জ্বলতে শিখে গেছে মা।…তুমি কি দেখতে পাচ্ছো মা?…..
ঠিক ওই মুহুর্তে সুমনে ফোনে টেক্সট আসে।কেউ একহাজার টাকা পাঠিয়েছে তাকে।সুমনের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ে। কে দিতে পারে এই টাকা? পাবনী নাকি পুনম?
সুমন ভাবাভাবি বন্ধ করে হাটা শুরু করে,টাকা উঠিয়ে তাকে রাস্তার মোড়ে একটা হোটেল আছে সেখান থেকে ভাত খেতে হবে। তারপর সোজা বাস ধরে ঢাকা…. অনেক দিন হলো পুনমদের ফুল গাছগুলো দেখা হয় না,সাথে ফুল গাছের মালিনীকে না হয় এক নজর দেখা হবে…… তাতে কি খুব বেশি ক্ষতি হবে………?
*****************************
সেহরিতে খেতে বসেছে পুনম।ডানপাশে বাবা আর বাম পাশে সেজ আপা বসেছে।আর অপর পাশে লাবণ্য, মা,বড় আপা আর মরিচা বসেছে।রান্নার আইটেম হলো কলমি শাক ভাজি, ডাল চচ্চরি আর বেগুন ভাজি।চিংড়ি মাছ অবশ্য ভুনা করা হয়েছিল দুলাভাইদের জন্য আর বাচ্চারা ও মেজ আপার জন্য। বাড়ির জামাইকে কি এসব শাকপাতা দিয়ে খেতে দেওয়া যায়….
পুনম কলমি শাক ভাতে মেখে কাচা মরিচে কামড় বসায়।তার কাছে খারাপ লাগে না।পরিবারের সবাই একসাথে বসে পান্তা ভাত খেলেও শান্তি! পুনম খেয়াল করে বড় আপা নাক মুখ কুঁচকে খাবার খাচ্ছে, তারমানে এসব খাবার খেতে কষ্ট হচ্ছে বড় আপার।কিন্তু পুনমই বা কি করবে।পুনম মরিচাকে ইশারা করে উঠতে বলে, মরিচা দৌড়ে রান্নাঘরে চলে যায়,আবার সাথে সাথেই ফিরে আসে একটা বাটি নিয়ে।পুনম অবাক হতে গিয়েও অবাক হয় না। এই মরিচা সকল কাজ করে দৌড়ের উপর!যেন এখনই না করলে কেউ ওর গর্দন নিয়ে যাবে…..
পুনম বাটিতে অল্প একটু চিংড়ি মাছ আলাদা করে রেখেছিল সেই মাছ পুনম বাবা আর মায়ের প্লেটে তুলে দেয়।নিয়াজ উদ্দিনের চোখ ভিজে ওঠে। এই মেয়েটা তাদের এত খেয়াল কেন রাখে…..
পাবনী মাথা নত করে খেয়ে যাচ্ছে। বরাবরের মত শান্ত চুপচাপ। একটা মানুষ এতটা অভিযোগ বিহীন হয় কিভাবে?
মা বাবর উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, কাল একবার একটু গরুর কলিজা আনতে পারবে।মেয়েটা সন্তানসম্ভবা, ওকে তো আর এসব খাবার দিতে পারি না।
নিয়াজ উদ্দিনের রাগ লাগে কিন্তু কিছু বলে না।
পুনম জবাব দেয়, মা তোমার জামইকে বলো কাজ করে তার বউয়ের আবদার গোচাতে…..
নিয়াজ উদ্দিন গোপন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। কেউ না জানুক সে জানে কাল তার বাজার করার আগে পুনম কলিজা নিয়ে বাসায় আসবে।সে মুখে যাই বলুক তার কাছে তার পরিবার আগে…দায়িত্ব আগে।
পুনম বাবার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, বাবা কাল সুমন ভাই আসতেছে।
বড় আপার কপাল কুঁচকে রেখে বলে ওটা, কই আমি তো জানি না কিছু।
—মনে হয় বড় আপা তোমাকে বলার প্রয়োজন বোধ করে নি।
পুনম সুমনের নম্বরে টেক্সট পাঠায়, কিছু জরুরী কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলে সাথে….
****************★*******
ফজরের নামাজ পড়ে ওঠে দেখে পুনম, তার মোবাইলে তানভীর কল দিচ্ছে।সে রিসিভ করে সালাম দেয়।
তানভীর জানতে চায়,
—–পুনমি যদি কোন দূর্বলতা কারো জীবনে পথের কাঁটা হয় তখন তার কি করা উচিত?
পুনম মৃদু হেসে জবাব দেয়,
—-মিঃ তানভীর দূর্বলতাকে ভালোবাসতে শিখুন, দেখবেন তখন তা আপনার কাছে আর দূর্বলতা না হয়ে শক্তি হয়ে ফিরে আসবে…..
চলবে,