#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৫৯
অপলক চেয়ে অস্ফুট স্বরে নাওয়াজ শেখ বলল
— বেলাহহ
বেলা নাওয়াজ শেখের থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। পুনমের কাছে যায় — কিছু বলবি আম্মাজান??
— আজ থেকে কিন্তু তুমি আমাদের বাসায় থাকবে
কোণা চোখে নাওয়াজ শেখের দিকে তাকিয়ে আছে পুনম। চন্দ্র ভ্রু কুচকে নাওয়াজ শেখের দিকে তাকিয়ে এই স্যারের মতিগতি তার ঠিক ঠেকছে না এতক্ষণ তার ফুপির দিকে তাকিয়ে থেকে এখন তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। অথচ জেলাস চন্দ্র এটা বুঝল না পুনমের পাশেই তার ফুপি দাড়িয়ে নাওয়াজ শেখের নজর তার দিকে।
এরমধ্যে পারভেজ সাহেব আসলেন পুনম ও চন্দ্রর সাথে তার একজন পরিচিতি লোকের সাথে দেখা করাতে নিয়ে আসল।
— আব্বাজান এই আমম
পাশে দাড়ানো নাওয়াজ শেখের দিকে তাকিয়ে পারভেজ সাহেবের ভ্রু কুচকে যায়। কেমন চেনা চেনা লাগছে তার লোকটাকে কোথায় যেনো দেখেছে কোথায় যেনো দেখেছে করতে করতেই মনে পড়ে গেলো সেই বিস্বাদময় রাতের কথা বোনকে কোন অবস্থায় পেয়েছে তার কথা। পারভেজ একুশ বছর পর সেই বেপরোয়া পারভেজের ভুত যেনো কাধে ভর করল বীনা নোটিশে নাওয়াজ শেখের নাক বরাবর ঘুষি মারল।
আকস্মিক ঘুষিতে নাওয়াজ শেখ দুই পা পেছনে গেলো নাকে হাত দিয়ে পারভেজের দিকে চাইল।। বেলা নাওয়াজ শেখকে ধরতে যেতেও হাত গুটিয়ে নেয় এই লোক তার জন্য নিষিদ্ধ।
— মেঝো ভাইই
পারভেজ রক্তচোখে বেলার দিকে চায়। বেলা মাথা নাড়িয়ে নিষেধ করে আশেপাশে তাকাতে ইশারা করে পুনমের দিকে তাকায় পারভেজ। পুনম কেমন অবাক চোখে বাবাকে দেখছে পারভেজ মেয়ের দিকে তাকিয়ে নিজেকে থামিয়ে নিলো। চন্দ্র মুখ কুচকে ফেলে সেও শশুরের মাঈর দেখে শার্টের স্লিভস উঠাতে নিয়েছিল কিন্তু পারল না নিজের ইমেজ বজায় রাখতে চুপ থেকেছে নাহলে তারো হাত নিষপিষ করতেছিল।
— আমার মেয়ে বোনের থেকে দূরে
পারভেজ আঙ্গুল উচু করে বলল। নাওয়াজ শেখ বাকা চোখে বেলা আর পুনমের দিকে তাকিয়ে নাকের রক্ত মুছতে মুছতে চলে গেলো।।
পুনমকে কিছু বলতে না দিয়ে বেলা পারভেজকে টেনে নিয়ে গেলো। চন্দ্র পুনমের দিকে তাকিয়ে বলল — হোয়াট এ শশুর তবে একটা প্রশ্ন জোহরা আজ শশুর বাবা এতো ক্ষেপে গেলো কেনো,??
— সেটাতো আমিও জানিনা এই প্রথম আব্বুকে এতোটা রেগে যেতে দেখলাম। আমার শান্তশীষ্ট আব্বুটা এতো রেখে গেলো কেনো??
— আমাদেরও সেটা কথা
আসতে আসতে শিহাব রিশান রুপশা মুক্তি ঝিনুক রিমি বলল। লিমন ইহান নিবর দর্শক।
সবাই বসল স্টেজে ফিসফিসিয়ে মুক্তি বলল — আমার কেমন জানি ডাল মে কুচ কালা লাগছে,,
রিমি বলল
— আপু আমারতো ডাল পুরাই কালা লাগছে,,,
— তবে ঘরে কাউকে জিজ্ঞাসা করতে পারব না এটা সিয়্যর
ঝিনুকের কথায় তাল মিলায় রিশান তখনই চন্দ্র ফোরোণ কেটে বলল — হ্যা ঝিনুক যাই বলে তাই ঠিক
রিশান চন্দ্রর কথা শুনে ভ্রু কুচকে বলল — খোচা মারাটা কমা একদম খুচাবি না
— আপনি জানেন বাড়িতে কেউ জানে কিছু??
পুনমের কথায় চন্দ্র আয়েশি ভঙ্গিতে বসে বলল
— রানিবুড়ি সবই জানে
— রানি নানী
সবাই উচ্ছ্বসিত স্বরে বলল — সত্যিই,,
— হু
তখনই লিমন বলল — তবে রানি নানী আমাদের বলবে কেনো?? যেটা এতোদিন সবাই লুকিয়ে রেখেছে
লিমনের কথা শুনে সবাই চিন্তিত হয়।
বড়রা ফোটোগ্রাফার নিয়ে আসায় সবার মিটিং এ ব্যাঘাত ঘটে।
ফোটো সেশনের পরে খাবার দাবারের কার্যক্রম শুরু হয়।
পুরো অনুষ্ঠানে কেউ আর নাওয়াজ শেখকে দেখেনি। আর বেলাও ছিলোনা এটা চন্দ্রদের মনে আরো সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
____________________
বাড়িতে এসেই রানিবানুর কোলে মাথা গুজে কান্না করছে বেলা। রানিবানু তার মাথায় হাত বুলিয়ে চলেছে
— খালাম্মা তুমি আমার উপর রেগে আছো তাইনা খালাম্মা। এইজন্যই বুঝি এতোদিন ভাইদের সাথে যোগাযোগ রাখোনি
রানিবানু বেলার মাথায় আনমনে হাত বুলাতে বুলাতে বলল — নারে মা আমার আগোছালো ভঙ্গুর ছেলেটাকে গোছানোর লিগ্গা এতোদিন কোনো যোগাযোগ করি নাই।
পারভেজ কামরুল মিরাজ ও তিন জা মিলে বেলা ও রানিবানুকে দেখছে পারভেজ ও মিরাজ সাহেবের ক্রমে ক্রমে রাগ উঠতেছে।
— নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কর বাড়িতে জামাইরা আছে আজকে
চাদনী বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল — তোমরা যাও জামাইয়ের রাতে কি কি লাগে দেখোতো,,
তিন জা চলে যায়। রাতে কারো খাওয়ার প্যারা নেই এজন্যই যে যার ঘরে চলে যায় পুনমের আগের ঘরে রুপশা ও লিমন আছে মুক্তির ঘরে মুক্তিরা রিমি ঝিনুক আজ রানি বানুর সাথে ঘুমিয়েছে। চন্দ্রর মামাদের ও মিরাজদের পারভেজের ফ্ল্যাটের দিয়েছে। বাড়ির গেষ্ট রুমে কাইফিকে থাকতে দেয়া হয়েছে।।
ফুলে ফুলে সাজানো ঘরে বসে আছে পুনম চন্দ্র বিনা ব্যাঘাতে ঘরে ঢুকে আজ কারোরই মন ভালো নেই তাই। তদাপি চন্দ্রর ঘর আটকানোর সাহস কারো হয়নি।।
— আসসালামু আলাইকুম,, ঐ লকারের চাবিটা দিলেন নাতো,!!
ঘরে ঢুকেই পুনমের কথায় ভরকে যায় চন্দ্র। নাক মুখ কুচকে বলল — নামাজ পরে নেই আগে
নামাজের কথা শুনে পুনম আর কিছু বলে না। চুপচাপ ওযু করে আসে চেঞ্জ সে আগেই করে নিয়েছিল।
জায়নামাজ ভাজ করে আলমারির কপাট বন্ধ করতেই চন্দ্র তড়াক করে পুনমে কোলে নিয়ে নিলো
— করেন কি??
— যা করার দরকার বাসর রাতে
— হু আসছে বাসর রাত করতে
— হু বাসর রাত করতে আসছি দেখেই তো রুম এতো সুন্দর করে সাজিয়েছি
— আমার লকারের চাবি
চন্দ্র কিছু না বলে পুনমের ঠোট জোড়া দখল করতে নিলেই পুনম মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
বিরক্ত হয় চন্দ্র পুনমকে বিছানায় বসিয়ে বলল
— যেভাবে রেখেছি ঐভাবেই বসে থাকবি
বলেই উঠে রিডিং টেবিলের নিচের ড্রয়ার থেকে একটা চাবি বের করে পুনমের হাতে দিয়ে বলল
— এখন বাধা দিবি তো খবর আছে,,,,
চাবি হাতের মুঠোয় নিয়ে ভরকে যায় চন্দ্রের অ্যাটাকে। বেসামাল চন্দ্র ডুবে যায় পুনমেতে। আর পুনম বেসামাল চন্দ্রকে সামলে নিতে নিতে ডুবে যায় চন্দ্রতে।
পরদিন সকালে
সকলে একসাথে ব্রেকফাস্ট করছে পুনম সবার সাথে হাতে হাতে পরিবেশন করছে। চন্দ্র আজ ভার্সিটি যাবে নতুন চাকরি তাই ছুটি পায়নি।।
— পুনম একটু ঘরে আসো তো??
চন্দ্রর কথায় টেবিলে উপস্থিত সবাই মিটিমিটি হাসে আর পুনম কটমট চোখ তাকায়। তা উপেক্ষা করে চন্দ্র নিজের মতো ঘরে চলে যায়
যেতে যেতে না যেতেই আরেকবার ডাক পরে কামরুল খুকখুক করে কেশে উঠে পরে টেবিল হতে পারভেজ মিরাজ ও চলে যায় চাদনী বেগম রান্নাঘরে চলে যায় তার পিছু পিছু দুই জাও চলে যায়।
মুরুব্বিরা চলে যেতেই পুনম দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো তৎখনাৎ নাহলে এরা তাকে পচাবে।
ঘরে ঢুকেই চন্দ্রকে গজগজ করে বলল — এরকম করে কেউ ডাকে হ্যা সবাই কি ভাবল
— সবাই কি ভাবল সেটা দিয়ে আমি কি করব সারাদিন বউকে দেখতে পারব না কাছে পাব না এখন তাকে ঘরে ডাকা হালাল
দীর্ঘশ্বাস ফেলল পুনম জানে এই গোয়ার লোকের সাথে কোনোকালে পারবে না।
— ওয়ালেট,, ফোন,,
একে একে সব এগিয়ে দেয় পুনম। চুল গুলো আচরে পরিপাটি করে কপালে চুমু খায়। বিস্তর হাসে চন্দ্র পুনম কপালে চুমু দিয়ে সাবধানে থাকতে বলে চলে যায়।
বাইক পার্কিং করে পিছনে ফিরতেই দেখে নাওয়াজ শেখ গাড়ি লক করছে সেদিকে তাকিয়ে চন্দ্র চলে যায় তবে নাওয়াজ শেখের ডাকে থেমে যায়
— চন্দ্র কথা ছিলো বলা যাবে??
#চলবে
#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৬০
ক্যাফেতে বসে আছে নাওয়াজ শেখ ও চন্দ্র। দুজনেই নিশ্চুপ চন্দ্র কিছু বলছে না শুধু নাওয়াজ শেখের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিরবতা ভেঙ্গে শেষমেশ নাওয়াজ শেখ মুখ খুললেন
— তোমার ফুপির বিয়ে হয়নি,,
— না হয়নি কোনো এক কাপুরুষের জন্য নিজের বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সেই কাপুরুষ তাকে গ্রহন করেনি। গ্রামের মেয়ে বিয়ে ভাঙ্গার সাথে সাথে কপালটাও ভেঙ্গে যায় তাই সেই ভাঙ্গা কপাল নিয়ে কারো সাথে জড়ায়নি! পিছন থেকে বলল পুনম।
নাওয়াজ শেখ অবাক চোখে পুনমের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে নেয়। চন্দ্র এখনো তার দিকে তাকিয়ে পুনম তাকে ফোন দিয়েছিল তাই চন্দ্র বলেছিল ক্লাস শেষে সে নাওয়াজ শেখের সাথে দেখা করতে যাবে। তা শুনে পুনম ও যাওয়ার ইচ্ছা পেষণ করতেই চন্দ্র আর মানা করেনি।
— জানি আমি ভুল তবে মাকে ত্যাগ করার মতো সাহস আমার ছিলো না
পুনম কথা শেষ করতে না দিয়েই বলল — তাই আমার ফুপিকেই ত্যাগ করলেন তাইতো,,
হাসে নাওয়াজ শেখ। এই হাসিতে কি ছিলো বুঝে চন্দ্র পুনম তবে একে অপরের দিকে তাকিয়ে বুঝে এই লোকটাও খুব একটা ভালো নেই। এই পুরো কনর্ভাসেশনে চন্দ্র চুপ ছিলো এবার মুখ খুলে বলল — কি জন্য আমাকে ডেকেছেন??
সময় নেয় নাওয়াজ শেখ তারপর শ্লেষ মাখা স্বরে বলল — মাফ চাওয়ার জন্য। অতীতে করা কর্মের জন্য মাফ চাইতে
— আমি আপনাকে কোনোভাবে মাফ করতে পারব না যার সাথে করেছেন তার কাছেই নাহয় মাফ চাইলেন,,,,
— ওর সামনে দাড়ানোর মতো সৎ সাহস আমার নেই ঐ যে কাপুরুষ আমি,,,
তখনই পুনম বলল — মেনে নিবেন আমার ফুপিকে এবার তার সঙ্গে হাত হাত মিলিয়ে পাশে থাকবেন নাহয়
— তা হয়না যেই চোখে একরাশ ভালোবাসা ও আমার জন্য উম্মাদনা দেখতে পেতাম সেই চোখে এখন শূন্যতা ছাড়া আর কিছু পাইনা। ঘৃণারও যোগ্য আমি নই যাই হোক আমি চাই তোমরা ওর জীবনটা গুছিয়ে দাও
— গুছানোর হলে আগেই গুছিয়ে নিতো একুশটা বছর কম সময় না
চন্দ্রের গম্ভীর কন্ঠে কেমন ক্ষোভের আভাস পেলো নাওয়াজ শেখ ঠোটের কোণে হাসি ফুটে উঠল তার। সে বলল — শুনেছিলাম তোমার মামার সাথে ওর বিয়ে ঠি,,,
নাওয়াজ শেখকে কথা শেষ না করতে দিয়ে চন্দ্র বলল — আমার মামা বিবাহিত তার একজন ছেলে সন্তান আছে,,,, তাকে গুছিয়ে নেয়ার জন্যই আমার নানী খুব একটা আমাদের বাসায় আসত না।
নাওয়াজ শেখ চুপ করে গেলেন এবার পুনম কাতর স্বরে বলল — স্যার আমার ফুপিকে আগলে নেয়া যায়না
নাওয়াজ শেখ তাকায় পুনমের দিকে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল — নারে মা তা হয়না কিছু কিছু সম্পর্ক অপূর্ণতাই সুন্দর। তাকে মেনে নেয়া সম্ভব না।
বলেই নিজের চোখের অশ্রু লুকিয়ে নাওয়াজ শেখ চলে গেলো । চন্দ্র পুনম তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকল
— দুপুরে খেয়েছিলে??
ঠোট উল্টায় পুনম। চন্দ্র বলে — কিছু খাবা
— উহু চলেন বাসায় যাব মুক্তি আপু রুপশা আপু ওয়েট করতেছে
মুচকি হেসে মাথা নেড়ে পুনমকে নিয়ে উঠে দাড়ায় চন্দ্র।
রিক্সা নিতে গেলে পুনম চলল — হেটে যাই
চন্দ্র বিনা বাক্যে মেনে নেয় হাটতে থাকে জোহরার হাত ধরে। পুনম এদিক ওদিক দেখতে দেখতে হাটছে
— রাস্তার কি রুপ বাড়ছে নাকি নতুন কিছু যোগ হয়েছে,, ঐদিকে এতো কি দেখছো??
— সেদিনের ঐ ঢেকীটা খুজছি
— সেটা আমাকে বললেই হতো আমি পাশে থাকলে নজর যেনো অন্য কোনোদিকে না যায়,,,
পুনম মিটিমিটি হেসে মাথা নাড়ায়। এই পাগল লোকের কান্ডকারখানা তার বেশ লাগে!!!!
দশ মিনিটের মতো ঢেকীতে চড়ে বাসায় আসে পুনমরা
ড্রয়িং রুমে রুপশারা বসা পুনম আশেপাশে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল — ফুপিরা কই
— বড় ফুপি বাসায় গেছে আর বেলা ফুপি চলে গেছে অনেক বলেও আটকাতে পারিনি!!
মুক্তির নিরাস কন্ঠস্বর।
পুনম চন্দ্র একে অপরের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।
— ভাই তোরা কি ফেবিকল নাকি যেখানেই যাস আটকে যাস
রুপশার কথায় চন্দ্র ভ্রু কুচকে বলে — লিমন ভাই তাহলে তো আপনা সুপার গ্লু আপনারদের ছুটাতে বেশ কষ্ট হয়,,,
লিমন করুন কন্ঠে বলল — কি করব বলো ভাই একটা মাত্র বউ
— তো আমারও একটাই বউ ওকে
ইহান তখন বলল — দুই চারটা হলে মন্দ হতো
লিমন চন্দ্র একযোগে বলল — ঠিক
ঠিক বলেই পাশে রমনীদের দিকে নজর যেতেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। পুনম রুপশা কটমট চোখে চেয়ে আছে তাদের দিকে
— আমি ফ্রেশ হয় আসি হ্যা
চন্দ্র তড়িঘড়ি করে চলে যায় ঘরে আজ আর পুনমকে ডাকার সাহস পায়না। লিমন ইহানের দিকে কটমট চোখে তাকায় তখনই রিশান বলল
— আপনারা তো বিয়ে করে বউয়ের চোখ রাঙানো খেতে পারছেন আমার ভাগ্যে তো সেটাও নেই বউয়ের চোখ রাঙানি খাওয়ার জন্য হলেও একটা বিয়ে করা উচিৎ,,,,
ইহান বলল — তা শালা সাহেবের জন্য বউ ঠিক আছে নাকি??
মাথা নাড়ে রিশান অবাক হয় ইহান — তোমরা ভাইরা ভাইরা বেশ ফার্স্ট তা মেয়েটা কে??
পাশ থেকে লিমন বলল — আমাদের ঝিনুক রানি
এতোক্ষণ ঝিনুক রিমি চুপচাপ বসে ছিলো এখন লজ্জা পেয়ে উঠে গেলো
— ও বড় মামী খেতে দাও তো খিদেয় পেটে ইদুর দৌড়াদৌড়ি করছে
শিহাব চিৎকারে চলে এসেছে চাদনী বেগম ও রোজিনা বেগম।। তারা রান্নাঘরে জামাইদের জন্য রান্নায় ব্যস্ত ছিল
____________________
চন্দ্র ঘরে ঢুকে আলমারির উপরের দিকে তাকিয়ে হাসল। তার মানে তার জোহরা এখনো আলমারি খুলার সময় পায়নি।
আলমারি থেকে তোয়ালে নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়। পিছনে পুনম ঢোকে চন্দ্রর ট্রাউজার ও গেঞ্জি রাখতে রাখতে গজগজ করতে থাকে। তখনই চন্দ্র হুট করে পুনমকে কোলে নিয়ে ঘোরায়
— ইইইই মাথা ঘুরছে
— রাগ হয়েছে জোহরা বিবির
— আপনার জন্য ইদানীং স্বভাব বিরোধী কাজ করছি আমি অহিংসা আমিটা হিংসাত্মক হয়ে গেছি
— এটাই তো ভালোবাসা জোহরা
— খুব যেনো ভালোবাসায় পি এইচ ডি করে রেখেছেন
— উহু জোহরার মন বুঝেছি
পুনমের ঘাড়ে নাক ঘসতে ঘসতে বলল। — এইই এখন শুরু হয়ে যেয়েন না সবাই আমাদের জন্য বসে আছে ইহান ভাইয়া লিমন ভাইয়া জামাই মানুষ তাদের ওয়েট করানোটা ঠিক হবে না।।
— যথা আজ্ঞা জোহরা বিবি
— চলুন শের “এ আলী
চন্দ্র পুনমকে কোলে নিয়ে এগোতেই পুনম বাধা দিয়ে জোরজবরদস্তি নেমে পড়ল।।
টেবিলে সবাই ভদ্রের মতোই খাচ্ছেন মুরুব্বিরা থাকায় কেউ কথা বলছে না পুনম বসেনি সে মা চাচীদের সাথে পরিবেশনে ব্যস্ত।
— ডাল লাগবে
পুনম ডালের বাটি নিয়ে চন্দ্রর পাশে দাড়িয়ে ডাল দিয়ে সরতে নিল তবে পারল না। কারণ ডাল দিতে দিতে পুনমের শাড়ির কুচি চন্দ্র পায়ের নিচে চলে গেছে। পুনম তব্দা খেয়ে দাড়িয়ে রইল। উপস্থিত সবার দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে বলল — ছাড়েন
চন্দ্র খেতে খেতেই উত্তর দিলো — আমি তো ধরিনি জোহরা যে ছাড়ব
হাসফাস লাগে পুনমের সরতেও পারছে না একটু এদিক ওদিক হলেই কুচি খুলে যাবে।
— পুনম আমি ডাল নিয়ে ফেলেছি এখন এই মাছ খেতে পারব না এগুলো খা তো
পুনম নিজের ঘর হলে এতোক্ষণে খেয়ে নিতো নিজের পছন্দের চিংড়ি মাছ গুলো তবে এখন উপস্থিত সবার জন্য খেতে পারছে না। আর জানে না খেলে চন্দ্র ছাড়বে না তাই সবার দিকে তাকায়।
তখনই রানি বানু বলল — খাইয়া লও বইন স্বামীর সাথে এক পাতে খাইলে মোহাব্বত বাড়ে,,,,
মায়ের কথা সাথে তাল মিলিয়ে চাদনী বেগম বলল — কিরে পূর্ণ খাসনা কেনো খেয়ে নে
পুনম আস্তে পাতে থেকে মাছ তুলে খায়। চন্দ্র খেতে থাকে মাছ খাওয়া শেষ হতেই চন্দ্র পানি এগিয়ে দিয়ে খেতে ইশারা করে পানি খাওয়া হতেই চন্দ্র কুচি থেকে পা সরিয়ে নেয়। পুনম ও হাফ ছাড়ে বিড়বিড় করে চন্দ্রকে বকতে বকতে সরে যায়। সেখান থেকে,,,,,,,,,,
#চলবে