প্রণয়ী পর্ব-০৩

0
132

#প্রণয়ী
লেখনীতেঃ #ঈশিতা_ইশা
|০৩.|
(লেখা কপি করা নিষেধ)
………..

প্রিয়তা ভার্সিটি থেকে এসে নিজের কক্ষে ঢুকতেই মিসেস মাসুমা তার হাতে টিফিনবাক্স ধরিয়ে দেয়।
‘তোর বাবার শরীরটা খারাপ। দোকানে খাবারটা দিয়ে আয়।’
‘আচ্ছা’ বলে ওড়নাটা মাথায় আর গায়ে জড়িয়ে নেন প্রিয়তা।
দুপুর বেলা বেল্লাল হোসেন বাসায় খেতে আসেন দোকান বন্ধ করে। মাঝে মাঝে তার ভাইয়ের অফিসে কাজ না থাকলে সে-ও আসে। তবে হুটহাট বেল্লাল হোসেন বাসায় না আসলে প্রিয়তা গিয়ে খাবার দিয়ে আসে।
মিসেস মাসুমা কক্ষ হতে বেরিয়ে গেলে ব্যাগটা টেবিলের উপর রাখে প্রিয়তা। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা এখনো তার মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছে।
মেলায় গিয়ে দোকানদারকে দুল জোড়া আর পায়েলের কথা বললে সে জানায় এগুলোর দাম পরিশোধ করা হয়েছে। প্রিয়তা দোকানদারকে বুঝিয়ে বলে সে এসব নেয়নি এমনকি দামও পরিশোধ করেনি কিন্তু দোকানদার তার কথায় অনড়। সে চেষ্টা করে প্রিয়তাকে উল্টো বোঝাতে। অবস্থা বেগতিক দেখে হৈমন্তী আর রিমি ধরে প্রিয়তাকে দোকান থেকে নিয়ে আসে। শেষে জিনিসগুলো আর দোকানদারকে ফেরত দেওয়া হয়নি তার। অবশ্য প্রিয়তা দোকানদারকে টাকাও সেধেছিল কিন্তু তার একই কথা দাম পরিশোধ করা হয়েছে।

দোকানদার কেনো তার কাছ থেকে জিনিসের দাম নিলো না তা প্রিয়তার মস্তিষ্কে ঘুরছে। এর পাশাপাশি মনে হচ্ছে কিছু একটা চলছে যা সে এখনো আন্দাজ করতে পারছে না।
আপাততঃ ভাবনা বাদ দিয়ে টিফিনবক্সটা নিয়ে হাঁটা দেয়। এখন তাকে যেতে হবে এলাকার বাজারে।

যশোর সদরে বর্তমানে বাঙলা দল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে সেই আসনে বসে আছে। কয়েকবার লোকটার উপর হামলা করা হয়েছে মারার জন্য কিন্তু বারবার হায়াত থাকায় বেঁচে যান তিনি। তার উপর যে বিপরীত দল থেকে আক্রমণ করে এটা জানার পরও তিনি বড়সড় কোনো পদক্ষেপ নেন না। বরাবর তিনি তার দলের ছেলেপেলেদের বলেন মারামারি সংশোধন নয় তিনি শান্তি চান। আজকেও একটা কলেজে তিনি এসেছেন প্রধান অতিথি হয়ে। জাইন কলেজের গেইটের পাশে বাইকের উপর বসা। ভেতরে গিয়ে তার কোনো কাজ নেই তাই বাহিরেই বসে আছে। সাথেই শাকিল আর মারুফও বসা। রফিককে পাঠিয়েছে চা আনতে।
মাইকে কলেজের প্রিন্সিপালের গলা শোনা যায়।
‘এবারে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য বক্তব্য দিবেন আমাদের যশোরের গর্ব,এমপি শ্রদ্ধেয় জনাব খালেকুজ্জামান।’
প্রিন্সিপালের কথা শেষ হতেই শিক্ষার্থীরা করতালি দেয়। খালেকুজ্জামান আসন ছেড়ে মাইকের সামনে আসেন বক্তব্য দিতে। পঞ্চাশার্ধ বয়সী তিনি এখনো এই আসনের এমপির পদ ধরে রেখেছে। এলাকার লোকজন সহ সংসদেও তাকে বেশ পছন্দ করে সকলে।

মাইকে যা বলা হচ্ছে বাহির থেকে সব কিছু স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। জাইনের সেদিকে মন নেই। সে ভাবছে প্রিয়তার কথা। গত সন্ধ্যায় কাজ থাকায় প্রিয়তাকে দেখতে যেতে পারেনি অবশ্য মেলায় একটু দেখেছিলো কিন্তু তাতে তার মন ভরেনি। আজকেও এখানে আটকা পড়ে আছে। সারাদিন পেরিয়ে রাত হলেও সে ফ্রি হতে পারবে না। বাসায় যেতে যেতে একটা কিংবা দু’টো বাজবে যার মানে দাঁড়ায় প্রিয়তাকে আজকে দেখতে পাবে না।

মারুফ জাইনকে হুট করে জিজ্ঞেস করে,’কিরে মজনু মন খারাপ কেন তোর?’

শাকিল সাথে যোগ দেয়,’মজনু তার লাইলীকে মিস করছে।’

জাইন অস্বীকার জানিয়ে বলে,’না তেমন কিছু না।’

‘মজনু মন খারাপ না করে সামনে তাকিয়ে দেখ তোর লাইলী আসছে।’
মারুফের কথা শুনে চোখ তুলে ডান দিকে তাকায় জাইন। গুটিগুটি পায়ে প্রিয়তা এই পথ দিয়েই এগিয়ে আসছে। হাতের তার টিফিনবক্স। একটু পর পর ওড়না টেনে মাথার কাপড়টা ঠিক করে নিচ্ছে সে। প্রিয়তার দৃষ্টি রাস্তার দিকে। আশেপাশে কি হচ্ছে বা কে আছে সেদিকে তার কোনো আগ্রহ নেই।

শাকিল বলে,’মনে হচ্ছে ওর বাবার দোকানের দিকে যাবে।’

মারুফও শাকিলের কথায় সুল মিলায়। জাইন নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে নেয় সব ঠিক আছে কিনা।

‘দেখ তো ঠিক লাগছে কিনা আমাকে?’
জাইনের কথা শুনে মারুফ তাকে আশ্বাস দেয় তাকে ভালো লাগছে। চুলগুলো টেনে ঠিক করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে জাইন।

মারুফ নিচু স্বরে বলে,’জাইন এটাই সুযোগ যা গিয়ে কথা বল।’

বাইক থেকে নেমে পাঞ্জাবি হাতা ঠিক করে হাঁটা দেয় জাইন। মারুফ আর শাকিল বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে। তারা তো ধরেই নিয়েছে আজকে জাইন অসম্পূর্ণ কাজটা সম্পূর্ণ করবে। কিন্তু তাদের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয় জাইন। কয়েক পা এগিয়ে সে সোজা ফুচকার দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এদিকে প্রিয়তা তাকে অতিক্রম করে বাজারের রাস্তার দিকে চলেও গেছে। এমনকি জাইন যে এখানে ছিলো সে দেখেওনি। মারুফ আর শাকিল প্রচন্ড হতাশ হয় জাইনের কাজে।
জাইন আসতেই মারুফ তাকে বকাঝকা করে।
‘শালা এতো কিছু পারিস সামান্য একটা মেয়ের সাথে গিয়ে কথা বলতে পারিস না। তুই এমনে চক্কর কাটতে থাকলে তোর লাইলীকে তো অন্য কেউ আইসা নিজের লাইলী বানাইয়া নিয়া যাইবো।’

শাকিল তাল মিলিয়ে বলে,’বুঝছি লাইলী এই মজনুর হবে না। সত্যি সত্যি মেয়েটারে যদি ভালোবাসিস সাহস করে বলে দে।’

মারুফ আর শাকিলের কথা শুনে জাইন মাথা চুলকায়। আসলেই তার উচিত সাহস করে গিয়ে প্রিয়তাকে সব বলা। এভাবে তো আর সবটা চলতে পারে না?

এলাকার স্থানীয় বাজারে প্রিয়তার বাবার ফার্মেসী। এখানে রোজগার বেশি হয় তাই পরিচিতদের ধরে দোকানটা নিয়েছে সে। দোকানে এসে টিফিনবক্সটা রেখেই প্রিয়তা তার বাবার দিকে তাকায়।

‘কি হলো বাবা তোমার মুখটা শুকনো লাগছে কেনো? শরীর কি বেশি খারাপ?’

বেল্লাল হোসেন শ্বাস ফেলে বলে,’এখানে মনে হয় দোকানটা আর রাখতে পারবো না রে মা।’

অবাক হয়ে প্রিয়তা প্রশ্ন করে,’কেনো বাবা কি হয়েছে?’

‘ওদের মাসিক যেই চাঁদা দিতাম এখন তার দ্বিগুণ চাঁদা দাবি করছে। বলেছে চাঁদা না দিলে দোকান ভাঙচুর করবে।’

‘ওরা বলতে কারা?’

‘কারা আবার আলামিন আর ওর দলের ছেলেরা।’

আলামিনের নাম শুনে প্রিয়তা পূর্বের কথা মনে করে। দোকানটা নেওয়ার শুরুর দিকে আলামিন এসে বলেছিলো মাসিক চাঁদা না দিলে দোকান নাই করে দিবে। যেহেতু এখানে তারা নতুন তাই ঝামেলায় না গিয়ে বেল্লাল হোসেন রাজি হয়ে যায়। প্রতি মাসের ১তারিখে এসে আলামিন চাঁদা সংগ্রহ করে। এতেদিন তো সব ঠিকই চলছিলো তাহলে হঠাৎ আলামিন কেনো দ্বিগুণ চাঁদা চাইছে? প্রশ্নটা মনে জাগতেই প্রিয়তা তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে।
‘ওরা হঠাৎ দ্বিগুণ চাঁদা কেনো চাইছে?’

‘বাঙলা দলের ছেলেরা নাকি ওদের শাসিয়েছে। কি জানি নাম ছেলেটার? জা..জা..জাইন। জাইনের কারণে ওরা এখন দ্বিগুণ চাঁদা তুলছে। কালকে চাঁদা না দিলে দোকান লুট করবে সেই সাথে ভাঙচুর। আমার কাছে তো এতো টাকা নেই। কি করবো বুঝতে পারছি না।’

বেল্লাল হোসেনের কথা শুনে প্রিয়তা রেগে যায়। জাইনের কারণে এক ঝামেলায় জড়িয়ে গেলো তারা। দোকানটার কিছু হলে সংসারে অভাব সৃষ্টি হবে। প্রিয়তার মনে হয় জাইন বেশি বেশি করছে এর একটা বিহিত করা দরকার।
বেল্লাল হোসেনকে কিছু না বলে হনহনিয়ে প্রস্থান করে সে। কি হলো বিষয়টা বোধগম্য হয় না বেল্লাল হোসেনের।
প্রিয়তা হেঁটে চলেছে আর মনে মনে আউড়ে নিচ্ছে জাইনকে কি কি কথা শোনাবে। আসার সময় দূর থেকে কলেজের গেইটে জাইনকে দেখে এসেছে। এখন পর্যন্ত জাইনকে গুন্ডা ব্যতিতো ভালো মানুষ মনে হয়নি তার।

রফিকের আনা চা খেয়ে সবেই সিগারেট ধরিয়েছে মারুফ। জাইন তার কাছ থেকে সিগারেটটা নিয়ে একটা টান দেয়। সিগারেট নিয়মিত না খেলেও মাঝে মাঝে বন্ধুদের থেকে নিয়ে খাওয়া হয় তার।

হঠাৎ রফিক বলে,’জান ভাই ভাবী আইতাছে।’

রফিকের মুখে এমন কথা শুনে তড়িঘড়ি করে সিগারেটটা ফেলে পা দিয়ে পিষতে শুরু করে জাইন। হাত দিয়ে ধোঁয়া গুলো তাড়ানোর কাজে লেগে যায় সে। সদ্য ধরানো সিগারেটটা ফেলে দেওয়াতে মারুফ খানিকটা চেতে যায়।
এরিমধ্যে প্রিয়তা এসে তাদের সামনে দাঁড়ায়। জাইন সহ সকলে চমকায় প্রিয়তাকে সামনে দেখে। জাইন বুঝতে চেষ্টা করে প্রিয়তা সবটা দেখেছে কিনা।

ভনিতা না করে প্রিয়তা বলে,’আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।’

প্রিয়তা আসতেই শাকিল মারুফ আর রফিককে ইশারা করে।
‘চল একটু হাওয়া খেয়ে আসি।’
মারুফের কথা মতো রফিক আর শাকিল সেখান থেকে সরে যায়। এখন জাইন আর প্রিয়তা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে।

জাইন নিজেকে সামলে বলে,’হ্যা বলো।’

‘ঐ পাশটাতে চলুন। এখানে কেউ দেখে ফেললে আমার সমস্যা হবে।’

কথাটা বলেই প্রিয়তা কলেজের পাশের গলির দিকে হাঁটা দেয়। জাইন এক পলক বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে তার পিছুপিছু যায়। তিনজন বুঝতেই পারছে না হচ্ছেটা কি। তবে বেশ কৌতুহল তারা।

গলিতে ঢুকেই প্রিয়তা আশেপাশে তাকায়। মাথার ওড়নাটা টেনে নেয় ভালো করে। জাইন এসে তার বিপরীতে দাঁড়াতেই সে অন্য দিকে তাকায়। জাইন এখনো বুঝতে পারছে না প্রিয়তা কি বলবে। আচ্ছা এমন কি কিছু বলবে যা সে-ও বলতে চায়? অপেক্ষা করতে হয়নি দ্রুত জাইনের ভুল ভাঙে।

‘দেখুন আমরা সাধারণ ঘরের মানুষ। স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে চাই কিন্তু আপনারা রাজনীতির নামে যা শুরু করেছেন তাতে তো মনে হয় এলাকায় থাকাটাই মুশকিল কয়ে যাবে।’

প্রিয়তার কথার আগাগোড়া কিছুই জাইনের বোধগম্য হয় না।
‘কি বলছো বুঝতে পারছি না। ঘটনা খুলে বলো।’

‘আলামিনকে তো চিনেন?’

আলামিনের নাম শুনে জাইনের কপালে ভাজ পড়ে। ছোট্ট করে বলে,’হ্যা’

‘আলামিন বাজারের প্রত্যেক দোকান থেকে চাঁদা তুলতো। সব কিছু ভালো করেই চলছিলো। কারো কোনো সমস্যা নেই চাঁদা নিয়ে সবাই দিচ্ছিলো কিন্তু আপনি কি করলেন আলামিনকে শাসালেন ফলে সে ক্ষেপে দ্বিগুণ চাঁদা দাবি করছে। আজকে বলে গেছে কালকে সকালে চাঁদা নিতে আসবে আর টাকা না পেলে ভাঙচুর করবে সব।’

সবটা শুনে ধপ করেই জাইনের রাগ উঠে যায়। এতোক্ষণ ভালো মেজাজে থাকলেও এখন সে ক্ষেপে গেছে ভীষণ।
প্রিয়তা আরো বলে,’আপনার কাছে আমার অনুরোধ রাজনীতির নামে এসব বন্ধ করুন। আপনাদের রেষারেষিতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হয়।’

জাইন রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে। এতক্ষণ প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে থাকলেও এখন প্রিয়তাকে নিজের রাগ দেখাতে চাইছে না। প্রিয়তা সরাসরি জাইনের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘আশা করি বুঝেছেন আমি কি বলেছি। সাহায্য করার নামে এসব হেনস্তা বন্ধ করুন।’

জাইন প্রতিত্তোরে বলে,’তুমি বাসায় যাও আমি বিষয়টা দেখছি।’

‘বললাম তো আপনার সাহায্য লাগবে না। শুধু সাহায্য না করে আমায় দয়া করুন। এসব ঝামেলায় আপনার পড়তে হবে না।’

প্রিয়তার বাঁকা কথা শুনে মেজাজ খারাপ হলেও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে জাইন।
‘বাসায় যাও।’

জাইনের শক্ত গলা শুনে প্রিয়তা আরো কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়। এরপর হনহনিয়ে স্থান ত্যাগ করে। প্রিয়তা যেতেই তিনজন দৌড়ে আসে।

মারুফ উৎসুক কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,’কিরে তোর লাইলী কি বললো? ঐ বল না।’

শাকিল বলে,’কাজ হইছে? মনের কথা বলেছিস?’

জাইন রাগান্বিত গলায় বলে,’গত রাতে আলামিনকে ধরতে যাচ্ছিলাম তখন তোরা আমাকে আটকালি কেনো? ওর গতরাতে হাসপাতালে পাঠাকে আজকে প্রিয়র কাছে আমার কথা শুনতে হতো না।’

জাইনের রাগান্বিত গলা শুনে তিনজনই বুঝতে পারে সে রেগে গেছে কোনো কারণে। চেষ্টা করে জাইনকে শান্ত করার।

‘রফিক আলামিন কই আছে খোঁজ লাগা। আজকে সব কাজ বাদ আগে আালমিনকে হাসপাতালে পাঠাবো।’

জাইনের কথা শুনে রফিক ঢোক গিলে মারুফ আর শাকিলের দিকে তাকায়।

শাকিল বলে,’আচ্ছা আগে বল হয়েছেটা কি। প্রিয়তা তোকে কি বললো?’

এতক্ষণ প্রিয়তার বলা ঘটনা বলতে শুরু করে সে। সবটা শুনে তিনজন জাইনের রাগ করার কারণ বুঝতে পারে। সেই সাথে আফসোসও হয় কেনো জাইনকে গতরাতে আটকে ছিলো। অবশ্য শাকিল চাচ্ছিলো না রাগের মাথায় আলামিনকে মেরে জাইন ঝামেলায় জড়াক তাই সে বুঝিয়ে থামিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আলামিনকে একটা শিক্ষা দেওয়া উচিত। দেরি না করে আলামিনের খোঁজ লাগায়।

প্রিয়তা মেজাজ খারাপ করে বাসার দিকে যাচ্ছিলো এমন সময় পথিমধ্যে এক মেয়েকে দেখতে পায় যে কুকুর দেখে ভয়ে রাস্তা পাড় হতে পারছে না। মেয়েটার দিকে এগিয়ে যায় সে।
বিনা সংকোচে জিজ্ঞেস করে,’তোমার কি সাহায্য লাগবে?’

মেয়েটা মাথা উপর নিচ করে জানান দেয় তার সাহায্য লাগবে। প্রিয়তা মেয়েটার হাত ধরে রাস্তা পাড় করে দেয়।
‘তুমি একা কেনো? বাসা থেকে কেউ নিতে আসেনি? দেখে তো মনে হচ্ছে স্কুলে পড়।’

প্রিয়তার প্রশ্নের জবাবে মিষ্টি হেসে মেয়েটা বলে,’ড্রাইভার আংকেল ভাইকে আনতে গেছে। ও বয়েজে পড়ে। আমি এখানেই ওদের অপেক্ষা করবো।’

প্রিয়তা আবারো জিজ্ঞেস করে,’ওরা আসা পর্যন্ত তুমি অপেক্ষা করতে পারবে?’

‘আলবাদ পারবো। তোমাকে ধন্যবাদ বুঝেছো আমি না কুকুর ভয় পাই আর কুকুরগুলো এতো বদ আমাকে দেখলেই ছুটে আসে।’

মেয়েটার কথার প্রতিত্তোরে প্রিয়তা হাসে।

‘তোমার হাসি অনেক সুন্দর। নাম কি তোমার?’

‘প্রিয়তা আর তোমার?’

‘নিহারিকা।’

নিহারিকার চটপট উত্তর শুনে প্রিয়তা ভালো লাগে। খানিকক্ষণ আগের মেজাজ খারাপটা এখন আর নেই।
………
(চলবে..)