প্রণয়ের সুর পর্ব-০১

0
16

#প্রণয়ের_সুর
#সূচনা_পর্ব
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু

বিয়ের পর বাসর ঘর থেকে পালিয়ে এসে নিজের ঘরে দরজা আটকে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে নেহা।আজই পরিবারের সবাই জোড় করে তার চাচাতো ভাই নিখিল মেহমেত চৌধুরীর সাথে তাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।বিয়েটা মোটেও স্বাভাবিক ভাবে ঘটেনি।বিয়ের দিন সকালেই এক অধম্য সাহসীকতার কাজ করেছে বসেছে নেহা।এটা যে তার জীবনে করা সবচেয়ে বড় বোকামি এখন সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।নিখিল খুবই রগচটা,গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ।পালানোর এক ঘন্টা পর ধরা পড়েছে নিখিলের কাছে নেহা, ভাগ্য ভালো গোপনে বিয়ে মানে শুধু পরিবারের লোক এ ব্যাপারে জানে আত্মীয় স্বজনদের না জানিয়ে হঠাৎ বিয়ে হয়েছে, তাই হয়তো নিখিল শুধু দুইটা চ*ড় মেরেছিলো,সবাই যদি জানতো সে পালিয়েছে পরিবারের সম্মানের কথা না ভেবে তাহলে হয়তো নিখিল ভাই তাকে খু*ন করে ফেলতো! বিয়ে থেকে পালিয়ে গিয়ে ধরা পড়ার মতো অপরাধ মনে হয় আর দুটো নেই।
এই জন্যই লোকে বলে

“চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা”!

সকাল থেকে না খাওয়া নেহা,তার উপর এতো পরিমান দৌড় ঝাপ করেছে এখন পা ব্যাথায় টনটন করছে।নিখিল ভাই যে একবার হাতের কাছে পেলে কাঁচা গিলে খাবে তা বেশ বুঝতে পারছে এখন।খুদায় পেট চু চু করছে বেশ কয়েকবার শব্দ করেছে ইতিমধ্যে, পালানোর মতো গা*ধামি টা কেনো করতে গেলো,বিয়ে করে নিতো নাচতে নাচতে ওটাই তো ভালো ছিলো, বিয়েটা তো হয়েই গেলো আটকানো তো গেলো না।প্রেমিক ছাড়া যে পালিয়ে যাওয়া যায় না তা কেনো আগে ভাবেনি সে, নিজের চুল টেনে ছিড়তে মন চাচ্ছে এখন।আর সে তো সবার ভালোর জন্যই পালিয়ে ছিলো,সবার মতে নেহা একটা অকর্মার ঢেকি,তার দাদী তো তাকে উঠতে বসতে তিন বেলা খোঁটা দেয়।ছোট ভাই বোনরা পর্যন্ত তাকে নিয়ে মজা করতে দুবার ভাবে না নেহাৎ নেহা সরল মনে হেসে উড়িয়ে দেয় সব কিছু, তাই বলে কি ওর অনুভূতি নেই ভালো লাগা মন্দ লাগা নেই!নিখিল ভাই তো অন্য কাউকে ভালোবাসে তবে তাকে কেনো বিয়ে করলো।সবাই কেনো একজন যোগ্য আদর্শে টইটুম্বুর মানুষ কে অপাত্রে ঢেলে দিলো।নেহার মতো বোকাসোকা অযোগ্য, ব্যাক্তির সাথে বিয়ে দিলো?নিখিল ভাই তো আগে থেকেই তাকে অপছন্দ করে।আজকের ঘটনার পর তো দুচোখে যা দু এক বার তাকাতো তাও করবে না।
নেহার ভাবনায় জোরে এক বালতি পানি ঢেলে কেউ একজন দরজা ধাক্কাচ্ছে।ধাক্কা দিচ্ছে বললে ভুল হবে, সর্বশক্তি দিয়ে দরজা ভাঙতে চাইছে কেউ,এখন রাত কয়টা বাজে নেহার জানা নেই রুমের লাইট বন্ধ, কাছে মোবাইল টাও নেই।বার কয়েক দরজার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিললো।ঠোঁট ভেজালো পর পর, ভয়ে মনে হচ্ছে এখনই পে*নিক অ্যা*টাক করে ফেলবে সে।হাত পা তিড়বিড় করে কাঁপছে। বিন্দু বিন্দু ঘাম লেপ্টে গেছে ফ্যাকাশে বদনে।দরজা ধাক্কানো থামলো নেহা গা এলিয়ে দিলো দেয়ালে।ভয়ে তার অন্তত আত্মা বেরিয়ে যাবার উপক্রম।
চারদিকে পিনপতন নীরবতা, থেমে থেমে ভেসে আসলো
গম্ভীর তেজে ভরপুর এক ভরাট পুরুষালী কন্ঠ

,,নেহা দরজা খোল।যদি আজ দরজা ভেঙ্গে ঢুকতে হয় তো পরবর্তীতে কি হবে,, তার জন্য শুধু দায়ী থাকবি তুই!

নেহার পা আগানোর শক্তি নেই,সে জানে আজ দরজা না খুললেও বি পদ খুললেও বি পদ!এ যেনো শনি,মঙ্গল, বৃহস্পতি এক সাথে লেগে গেছে তার।

নেহা সময় নিলো দুই মিনিট মানুষটি এখনও যে যায়নি তা সে নিশ্চিত। মাথার ওড়নাটা খসে পড়েছে দরজার পাশে এক হাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করলো দরজাটা খুলতে,তবুও আজ হাত যেনো নিস্তেজ হয়ে গেছে তার।বার কয়েক ঠেলাঠেলির পর সিটকানি খুলতে সক্ষম হলো সে।এখন তার মাঝে কোনো ভয় নেই, চুপচাপ দরজা খুললো, চোখ তুলে তাকালো না একবারও।

দরজার ঠিক সামনে দাড়িয়ে আছে সুঠাম দেহি, সুদর্শন এক ছাব্বিশ বয়সী যুবক,উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং তার।চোখ দুটোর দিকে তাকানোর সাহস আজ পর্যন্ত হয়নি নেহার।ওই চোখ জোড়ায় যেনো জ্বল*ন্ত লাভা বিরাজ করে।কখনো শান্ত দেখেনি সে, আজও সে জ্বল*ন্ত চোখে তাকিয়ে আছে মানুষটি।নেহা তবুও তাকালো না।ইচ্ছে করে উপেক্ষা করতে চাইলো মানুষটিকে পুরো দমে চাইলো দূরে সরাতে।তবুও সে আজ এই মানুষটির সাথে সারাজীবনের জন্য জড়িয়ে গেলো।

*****
নেহার দিকে তাকিয়ে আছে নিখিল,তার দৃষ্টি বিরাজ করছে নত হয়ে যাওয়া মুখশ্রীতে,নিখিলের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চোখ তুলে তাকায় নেহা,তার চোখ আটকে যায় সামনে থাকা মানুষটির উপর,এতো সুন্দর কেনো এই ছেলে!বেহায়া মনটা যে এই পুরুষটিকে চাইতো সব সময়,শখের পুরুষ তার,আজ তো এই মানুষটি পুরোপুরি হালাল ভাবে তার হয়ে গেছে।নেহা নিখিল কে ঠিক কতোটা ভালোবাসে সে জানে না।তবে আজ তার মন এই সুদর্শন ছেলেটিকে মেনে নিতে চাইছে না।কারন ছেলেটির মনের অদিপত্য যে অন্য কারো দখলে!নেহা বরাবরই বড্ড স্বার্থপর যা তার একান্ত তা শুধু তার নিজেরই, এক বিন্দু পরিমাণও সেখানে অন্য কাউকে সে বরদাস্ত করবে না।কিন্তু ভালোবাসার দুয়ারে এসে সে পারেনি জোর খাটাতে পারেনি জোর গলায় বলতে আপনি কেনো আমাকে ভালোবাসবেন না? কেনো অন্য কাউকে ভালোবাসে আপনার মন!নেহার হৃদপিণ্ডটায় মোচড় দিয়ে উঠলো, তবুও সে সয়ে নিলো এ নিদারুণ যন্ত্র*ণা! বেহায়া মন কে ধম’কে উঠে সে চোখ নামিয়ে নেয় খুব জোর করে।

হঠাৎই নেহা নিজেকে শূন্যে অনুভব করে,নিজের অবস্থান বুঝে নিয়ে আঁ তকে উঠে।নিখিল ভাই কি তাকে এবার ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিবে?নাকি নিয়ে আছাড় মে রে ফেলবে মেঝেতে?কিছুদিন পূর্বের আছাড় মারার ঘটনা মনে করেই,তার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।ভয়ে খামচে ধরে নিখিলের কলার বির বির করে বলে

,,এমন ভুল আর জীবনেও করবো না নিখিল ভাই।দয়া করে আমাকে ফেলে দিবেন না প্লিজ!ওইদিন কোমর টা ভাঙ্গতে গিয়েও ভাঙ্গেনি।আজকে নির্গাদ ভেঙ্গে যাবে,এই ছোট খাটো মানুষটার উপর একটু দয়া করুন, আপনি তো মহৎপ্রাণ মানুষ!

নেহার কথা গুলো স্পষ্টই শুনতে পেয়েছে নিখিল মেয়েটা বিরবির করে বলা কথা গুলোও এতো জোড়ে বলেছে যেনো পাড়াপড়শি ও শুনতে পাবে,নিখিল হাঁটা বন্ধ করে দিলো হঠাৎ ।

নেহা চিৎকার করে উঠলো

,,না,,,,,,,,,,,!

নিখিল ধম*ক দিয়ে উঠলো সাথে সাথে

,,এই ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো চেঁচাচ্ছিস কেনো?জানিস রাত কয়টা বাজে?সবাই জেগে গেলে কি ভাববে জানিস?

নেহা চোখ পিট পিট করে তাকায়, বোকার মতো প্রশ্ন করে কি ভাববে নিখিল ভাই?
নিখিল বাঁকা হাসলো,তা দেখে নেহা কিছুটা ভরকে গেলো।নিখিল নির্বাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে থেকে বললো

,,সত্যি জানতে চাস তুই?পরে আবার আমাকে কিছু বলতে পারবি না বলে দিলাম!
নেহা বুঝলো না কিছুই, কৌতুহল টা তার একটু বেশিই।সে আবার বললো
,,বলুন।

,,আমি তোর সম্পর্কে কি হই?ভেবে উত্তর দিবি কিন্তু,,,

,,কেনো চাচাতো ভা,,,
নেহা জিভ কাটলো দাঁত দিয়ে,যদি এই মুহুর্তে ভাই বলতো তো দুপুরের মতো সটান সটান দুই চারটা চ*ড় পড়তো ওর গালে ভেবেই অদৃশ্য ভাবেই যেনো গাল দুটিতে আড়াল করে ফেললো সে।

নিখিল আবারও গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো
,,কিরে থেমে গেলি কেনো বল?

নেহার মনে হলো সে এই মুহুর্তে ভীষণ লজ্জা পাবে,ভয়ানক লজ্জায় পিষে যাবে সে,কি করে স্বামী শব্দ উচ্চারণ করবে এখন,এ কি আদো সম্ভব!নেহা চোখ বন্ধ করে ফেললো।লজ্জা জিনিস টা এমন কেনো, এই একটা জিনিস লুকিয়ে রাখা যায় না কেনো?নেহা পারলে তার লজ্জা কে চুবিয়ে মারতো পানিতে!এখন কেনো লজ্জা পেতে হলো তাকে,লজ্জায় লাল হয়ে উঠে তার ফুলোফুলো গাল।নিখিল ভাই নিশ্চিত বুঝে গেছে সে লজ্জা পেয়েছে।নেহা বুঝলো না এতো লজ্জার কারন বিয়েটা তো তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে হয়েছে, তাহলে স্বামী শব্দ টা উচ্চারণ করতে কেনো এতোটা লজ্জা পাচ্ছে সে।তবে কি গোপনে লুকিয়ে রাখা গভীর প্রণয়,দাবিয়ে রাখা অনুরক্তি প্রকাশ পেয়ে যাবে! এই কাঠখোট্টা মানুষটার নিকট?সে তো তাচ্ছিল্য বিহীন কিছুই দিবে না এর বদলে। নেহার মুখটা চুপসে গেলো মুহুর্তে।

নেহা দৃষ্টি ফিরায় অন্য দিকে,নিখিল দেখে সবটা তীক্ষ্ণ চোখে।হঠাৎ চুপ মেরে গেলো কেনো এই কথার ফুল ঝুড়ি!কপালে সুক্ষ্ম ভাজ পড়লো নিখিলের।
কিছুটা ধমকে উঠলো সে,নেহা তৎক্ষনাৎ জবাব দিলো

,,চাচাতো জামাই!

এবার হাসলো নিখিল ঠোঁট দাঁত চেপে হাসলো,শব্দ বিহীন এক হাসি।

,,জামাইয়ের মানে আশা করি বুঝিস, এতোটাও অবুঝ তো তুই না!
আচ্ছা বলতো আমাদের বিয়ে হয়েছে কবে?
,,আজকে!
ফটাফট জবাব দিলো নেহা
,,তার মানে হিসাব মতো আজ আমাদের বাসর রাত!

নেহা চোখ বড় বড় করে তাকালো নিখিলের দিকে,মস্তিষ্কে বার বার বারি খাচ্ছে বাসর শব্দটি।অস্বস্তিতে কুঁকড়ে গেলো সর্বাঙ্গ।কান দিয়ে গরম বাতাস বেড় হচ্ছে, এ কেমন অনুভূতি লোকটি এতো লাগামহীন কথা বলছে তাও তার সামনে, অকল্পনীয় ব্যাপার!

,,নেহা!
শান্ত কন্ঠস্বর নিখিলের তবুও কেঁপে উঠলো নেহা।
,,এখনও বুঝিস নি চিৎকার শুনলে কি ভাববে?ডিটেইলসে বলবো?কেন আই এক্সপ্লেইন ইট নীহারিকা!

নেহা দুহাতে কান চেপে ধরে মৃদু চেচিয়ে বলে

,,না।

নিখিলের দরজার বাহিরে দাড়িয়ে ই কথা বলছিলো ওরা,তখন পেছন থেকে মিহির বলে উঠে

,,কিরে ভাই নিখিল অ্যাটলিস্ট রুমে তো যা আগে,এতো অধৈর্য তুই তখন তো বিয়েই করতে চাইলি না দুটোর একটায় এখন দেখো প্রেম একদম মাখো মাখো!

নিখিল তার বন্ধুর দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।মিহির সেদিকে না তাকিয়ে শিস বাজিয়ে কেটে পড়লো।এদিকে লজ্জায় নুড়িয়ে পড়েছে নেহা মুখ লুকিয়েছে নিখিলের প্রসস্ত বুকে।
নিখিল তাকালো না পর্যন্ত নেহার দিকে নেহা সামলে নিলো নিজেকে,নেহাকে খাটের এক পাশে নামিয়ে রাখলো নিখিল,কিছুক্ষণ চুপচাপ দেখলো বধূ বেশে বসে থাকা এলোমেলো নেহাকে। নেহা ভেবেছিলো আর কিছু হয়তো বলবে না। চিন্তা করেই শুয়ে পড়তে নিলো সে তখনই নিখিলের কঠিন কন্ঠস্বর তার কানে আসলো

,,,কাকে ভালোবাসিস তুই?কে সে ছেলে যার জন্য তুই এতোটা উতলা, বাড়ির একটা মানুষের কথা চিন্তা না করে কার জন্য বাড়ি ছেড়েছিলি নেহা?

নেহা চমকে উঠলো, সে আর ভালোবাসা কিভাবে হতো নিখিল ভাই তো কোনো ছেলেকে আশেপাশে ঘেঁষতেই দেয়নি কোনো দিন।জেনে শুনে এমন আহা ম্মকের মতো প্রশ্ন করার কি মানে।
নেহাকে চুপ থাকতে দেখে ধক ম দিয়ে উঠলো নিখিল

,,প্রেম করতে কলেজে যাস তুই?আশিক ও জুটিয়েছিস!তোর সাহস এতোটা বাড়বে কোনো দিন কল্পনাও করিনি নেহা।ওই ছেলেকে একবার পাই কে*টে কু*ত্তা দিয়ে খাইয়ে দিবো আমি!

নিখিল রাগে কাঁপছে অনবরত ভয়ে চুপসে গেছে নেহা।নিখিল গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো।চোখ বন্ধ, তার ভারি নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে পুরো রুম জুড়ে।
নেহা ডাকলো মৃদু সুরে
,,নিখিল ভাই আপনি সোফায় ঘুমাচ্ছেন কেনো?খাটে এসে শুয়ে পড়ুন আমি আমার রুমে চলে যাচ্ছি!

,,একদম পালানোর চেষ্টা করবি না।ভুলে যাবি না নেহা এখন থেকে তুই আমার স্ত্রী, তা আমি না মানলেও তোর এখানেই থাকতে হবে।আর তুই কিভাবে ভাবছিস তোর সাথে একই বিছানায় ঘুমাবো আমি?তোর মতো একটা মেয়েকে শুধু ঘৃ’ণা করি আমি, শুনেছিস তুই নিখিল মেহমেত চৌধুরী শুধুই তোকে ঘৃ ণা করে।তাই কোনো সিম্পেথি ভুলেও আশা করবি না!

নেহার চোখ দিয়ে টপটপ করে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।কথাগুলো কেনো যেনো তার কলিজায় গিয়ে লেগেছে,তবুও চোখ মুছে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো নেহা,যতই হোক ভালোবাসার মানুষের ঘৃ ণা পাওয়াটাও তো ভাগ্যের ব্যাপার!

চলবে?