প্রণয় পর্ব-১৬+১৭

0
332

#প্রণয়
#পর্বঃ১৬
#তানিশা সুলতানা

“সিক্সের ক্লাসে যাচ্ছো কেনো?

ভ্রু কুচকে তোহার হাত ছেড়ে দিয়ে বলে বিজয় স্যার। উনি এই স্কুলের গণিত টিচার।

তোহা এক পলক স্যারের দিকে তাকায় তারপর ক্লাসের দিকে তাকায়।
নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে মাথা নিচু করে ফেলে।
সত্যিই পাগল হয়ে যাচ্ছে। দুই তালায় নাইনের ক্লাস।

” সরি স্যার খেয়াল ছিলো না।

বলেই পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নেয় তোহা।

“আর ইউ ওকে তোহা?

চিন্তিত ভঙ্গিতে বলে স্যার।

” এই এম ওকে।

বলেই তোহা চলে যায়।

বিজয় স্যার তোহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। চঞ্চল মেয়েটা হঠাৎ এরকম চুপচাপ হয়ে গেলো কেনো?
এটাই ভাবছে উনি।

জিসান আর তানহাও অবাক তোহার ব্যবহারে।

🥀🥀
কেটে গেছে তিন মাস।নাইনের ফাইনাল এক্সাম এর রেজাল্ট দিয়েছো আজকে।
তানহা তিনটে সাবজেক্ট এ ফেল করেছে। তোহা দুই টাই।

সেই দিনের পরে আর যাওয়া হয় নি সূচকের বাড়িতে। সূচকের সাথে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করেছে তানহা। কিন্তু সূচক ইচ্ছে করে এড়িয়ে গেছে। এটা নিয়ে পাহাড় সমান অভিমান তানহার মনে।

সূচকের ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম শেষ হয়ে গেছে। সে এখন মামার কোম্পানিতে মেনেজার পদে চাকরি নিয়েছে।

ফেল করা নিয়ে তানহা বা তোহাকে কেউ কিছু বলে নি।

তোহা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। ইমনের সাথে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হয়। প্রথম প্রথম ইমন কথা বলতে আসতো। তোহা এড়িয়ে যেতো। এখন আর আসে না।

তোহারও আগে খারাপ লাগতো এখন লাগে না। ইমনকে দেখলে বিরক্ত লাগে। ইমন ইরার সাথে সম্পর্কটা ঠিক করে নিয়েছে। দুজন এখন রিলেশনশিপ এ আছে।
ইরা তোহাদের বাড়িতেই থাকে।
সারা রাত ফোনে কথা বলে। তোহার ভেতরটা পুরে যায়। কিন্তু স্বীকার করতে নারাজ।
ইরাকে ইমন সম্পর্কে কিছু বলেও না।

তানহা এসবের কিছুই জানে না। তোহা জানাতে চায় না। ইমন তোহার চোখে খারাপ। তাই বলে কি তানহার চোখেও খারাপ করে দেবে?
কখনোই না।
কথায় আছে না

“এতো ভালোবাসার পরেও তাকে পাই নি
তাই বলে কি তার বদনাম করবো?
কখনোই না
তাকে ভালোবেসেছি
বদনাম করার জন্য না।”

তানহা ইমনকে খুব ভালো জানে। অবশ্য সে হয়ত ভালোই। তোহা ওর জন্য পারফেক্ট ছিলো না। এমনই হবে হয়ত।

আজকে বাবা আর কাকা ঢাকায় যাচ্ছে। কয়েকদিন থাকবে সেখানে।
দুপুরের খাবারটা সবাই এক সাথে খাবে। তারপরই ওনারা বেরিয়ে যাবে।

তানহার ঠান্ডা বেরে গেছে। টিস্যু হাত থেকে সরাতেই পারছে না। গতি কাল বৃষ্টিতে ভিজে ছিলো। যার জন্য আজকে নাক থেকে পানি সরছেই না।

তোহা আর তাজ নাক সিঁটকাচ্ছে। আগেই তোহা বলে দিয়েছে আজকে তানহার সাথে ঘুমবে না। সারা রাত নাক টানার শব্দ একদম সয্য করবে না।

তানহা চুপচাপ বাবার পাশে গিয়ে বসে। নাকটা লাল হয়ে গেছে। চোখ দুটো টলমল করছে। নাক টানতে টানতে নিজেও বিরক্ত।

“বাবা তোমার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে রেখে আসো। ওর নাক টানা জাস্ট বিরক্ত লাগে। নাক কেটে তারপর বাড়ি নিয়ে এসো।

তাজ মুখে নুডলস পুরে বলে।

“বাবা কিছু বলবে না তুমি?

কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে তানহা।

” তাজ চুপচাপ খাও। তুমি যখন ছোট ছিলে তোমার তানহার থেকে বেশি সর্দি থাকতো।

ধমক দিয়ে বলে তাহের।

“আমিই তো এখন ছোট।

তাজ এক গাল হেসে বলে। তোহাও হেসে ওঠে।

তানহা কান্না করে ফেলে।

” আমাকে একটা ভালো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারো না বাবা?

তাহের মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে ভাত মেখে মুখে পুরে দেয়।

” আজকে বাবু আসবে একটু পর। তারপর তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে।

তমাল বলে। তানহার কান্না থেমে যায়। সূচক আসবে?

“ভাবিও আসবে মিয়া ভাই?

তানহার মা খুশিতে গদগদ হয়ে ওনার পাতে রুই মাছের পেটি দিতে দিতে বলে।
তমাল মুচকি হাসে।

” হ্যাঁ এতোদিনে ভুত নামছে ছেলের মাথা থেকে।

“কিসের ভুত?

তাহের জিজ্ঞেস করে।

” সেটা বলার মতো না।
মাকে দেখছি না যে?

তমাল তমা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে।

“মা আর বাবা একটু আগেই ইরাকে নিয়ে ওদের বাড়ি গেছে। বিকেলে নিয়ে আসতে বলেছে।

তাজকে ভাত খাইয়ে দিতে দিতে বলেন উনি।

” তানহাকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে মা বাবাকে নিয়ে আসতে বইলো।

তমা বেগম মাথা নামায়।
তাহের মাছ বেছে বেছে তানহার পাতে দিতে থাকে আর তানহা খাচ্ছে।
তোহা গাল ফুলিয়ে বসে আছে।

“আমার কাছে এসো।

তমাল মুচকি হেসে ডাকে তোহাকে।
তোহা দাঁত কেলিয়ে প্লেট নিয়ে বাবার পাশে বসে।

🥀🥀
আজকে আরেকটা ফোন এনেছে তমাল। তোহা আগেই বলে দিয়েছে নতুন ফোন তোহাই নেবে। পুরোনো টা এখন পুরোপুরি তানহার। এতেই খুশি তানহা।

সোফার ওপর চানাচুরের বাটি রেখে ফ্লোরে বসে চানাচুর খাচ্ছে তানহা। ভাত খেয়ে পেট ভরে নি। এভাবে নাক টেনে টেনে খাওয়া যায় না কি?

কলিং বেল বেজে ওঠে। তোহা রুম থেকে দৌড়ে এসে দরজা খোলে। সাদিয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে। সূচক কেনো দিন না তাকিয়েই ভেতরে ঢুকে পড়ে। তানহা সেদিকে না তাকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দেয়। এতোদিন অনেক ইগনোর করেছে। ফোন দিলে ধরে নি। দেখা হলেও মুখ ঘুরিয়ে চলে গেছে। এবার তানহা তাকাবে কেনো? একদম তাকাবে না?

তমা বেগম এক মুহুর্তের জন্য বাচ্চা হয়ে যায়। সাদিয়া বেগমকে দেখে এক দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে।
বাইশ বছর ধরে এই বাড়িতে এসেছে। এসে থেকেই বড় বোনের মতো কাছে পেয়েছে সাদিয়া বেগমকে। দুজন জা হলেও বোনের মতো।

সূচক হাতের ব্যাগটা রেখে তানহার চানাচুরের বাটিটা তানহার সামনে রেখে বসে পড়ে।

তানহা টিভির দিকে মনোযোগ দেয়। গোপাল ভাড় দেখছে।

“শুনলাম ফেল না কি করেছিস?

সূচক তোহার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে।

” হুমম করছি।

তোহা তানহার থেকে চানাচুর নিয়ে মুখে পুরে বলে।

“লজ্জা করছে না বলতে?

দাঁত কটমট করে বলে সূচক।

“ধুররর শান্তিতে টিভিও দেখতে দেবে না।
আজাইরা ভাষণ জাস্ট বিরক্ত লাগে

বলেই চানাচুরের বাটি হাতে নিয়ে রুমের দিকে চলে যায় তানহা।
সূচক চোয়াল শক্ত করে তানহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

তানহার মা বার বার তানহাকে তাড়া দিয়ে যাচ্ছে রেডি হওয়ার জন্য। তানহা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে কানে হেডফোন গুঁজে গুন গুনিয়ে যাচ্ছে।
মোটকথা ও সূচকের সাথে যাবে না।

” কাকিমা হলো ওর?

সূচক শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে তানহার রুমে ঢুকে বলে।

“যাবে না বলছে।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টিস্যু ঝাড়ু দিয়ে ঝুড়িতে তুলতে তুলতে বলেন উনি।

সূচক ভ্রু কুচকে তাকায় তানহার দিকে। ঠাটিয়ে দুটো চর বসিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে গালে।

” যাবে না বললেই হলো না কি?

সূচক তানহার কান থেকে টান দিয়ে হেডফোন খুলে নেয়। তানহা মুখের ওপর বালিশ দিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে শয়।

“একে তুই নিতেই পারবি না।

বলে চলে যায় উনি।

উনি বেরিয়ে যেতেই সূচক ধাপ করো তানহার পাশে বসে পড়ে।
বালিশটা টেনে সরিয়ে নেয়।
তানহা চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান ধরে।

” ড্রামা কুইন

কপালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে সূচক।

“যাবি না?

তানহার চুল ধরে টান দিয়ে বলে সূচক। ব্যাথায় চোখ কুঁচকে ফেলে তানহা।

” আপনি কে ভাই? এখানে এসে নিকনিক শুরু করছেন কেন?

লাফ দিয়ে উঠে বসে কপালে তিনটে ভাজ ফেলে বলে তানহা।
“ইডিয়েট একটা

সূচক উঠে আলমারি খুলে তানহার জন্য একটা ড্রেস বের করে এনে তানহার সামনে রাখে। তানহা এক পলকের জন্যও তাকায় নি সূচকের দিকে।

” এটা পড়ে জলদি রেডি হয়ে আয়।

“আমি যাচ্ছি না, যাবো না, আমাকে কেউ নিতে পারবে না,
এজ এ ক্লিয়ার?
ফোনটা ঘুরাতে ঘুরাতে বলে তানহা।

“থাপ্পড় খেতে ইচ্ছে করছে বললেই হয়।
এভাবে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলার কি হলো?

বলেই ঠাস করে একটা…………

চলবে

#প্রণয়
#পর্বঃ১৭
#তানিশা সুলতানা

গালে হাত দিয়ে চোখ দুটো বড়বড় করে সূচকের দিকে তাকিয়ে আছে তানহা। এই লোকটা সত্যি সত্যি ওকে চর মারলো?
দাঁত গুলো মনে হয় নরে গেছে। কেমন ব্যাথা করছে। গালটা গরম হয়ে গেছে।
শ্যামলা গালটা লাল হয়ে গেছে।
অভিমান বেরে যায় তানহার।

চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে তানহার।
কিন্তু গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না।
সূচককে পেছন ঘুরে বসে পড়ে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।

“এবার যা জলদি

সূচক ঠাক করে তানহার পাশে শুয়ে পড়ে বলে।

” আমি যাবো না তোর সাথে।
বাজে ছেলে, হনুমান, বদমাশ, গু*ষ্ঠি কিলাই ভালোবাসার।

চিৎকার করে বলে তানহা। রাগে হাত পা থরথর করে কাঁপছে। হাতের কাছে থাকা বালিশ সূচকের দিকে ছুঁড়ে মারে। বালিশটা সূচকের মুখের ওপর এসে পড়ে।

“আস্তে কথা বল।

সূচক মুখের ওপর থেকে বালিশ সরিয়ে দুই হাতে কান চেপে ধরে বলে।
” কানের পোকা মেরে ফেলবি তো।

“আমি তো তোকেই মে*রে ফেলতে চাই।

হাতের ফোনটা সূচকের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলে। সূচক ফোনটা কেচ ধরে ফেলে।

তমা বেগম দৌড়ে আসে খুন্তি হাতে নিয়ে।

“কি হয়েছে? চিল্লাচিল্লি করছিস কেনো?

চোখ পাকিয়ে বলেন উনি। মাকে দেখে তানহা আরও জোরে কান্না শুরু করে দেয়।

” মা এই ছেলে আমাকে মেরেছে।

গাল দেখিয়ে বলে।

“এমনি এমনি তো মারে নি। কথা শুনিস নি তাই মেরেছে।

তমা বেগম বলে। তানহার কান্না থেমে যায়। ফ্যাল ফ্যাল করে মায়ের দিকে তাকায়।

” কখন থেকে বলছি রেডি হতে। কথাই শুনছে না।

বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে বলে সূচক। তারপর তানহার ফোন ঘাটতে শুরু করে।

“তা শুনবে কেনো? ডাক্তার দেখালে তো সর্দি সেরে যাবে। তাই যাবো না। বারো মাস নাক টানতে টানতে তো ওর অব্ভাস হয়ে গেছে।

দাঁতে দাঁত চেপে বলেন উনি।

তানহা গাল ফুলিয়ে ফুঁপাতে থাকে। এটা নাকি ওর মা। একবারও মেয়ের দিকটা ভাবলো না।

” এখনি জামা পাল্টাতে না গেলে খুন্তির বাড়ি খাবি তুই।

জামা তানহার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন উনি।

“এই লোকটাকে কবে জানি আমি খু*ন করে ফেলবো বলে দিলাম।

রাগে গজগজ করতে করতে জামা নিয়ে অন্য রুমে চলে যায় তানহা।
সূচক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। আস্ত একটা ঘাড় ব্যাকা মেয়েটা।

কাকিমা চলে যায়। সূচক এখনো দাঁড়িয়ে আছে তানহার রুমে। কারণ ওর জানা আছে এখনি তানহা চলে আসবে।
কেনোনা জামা নিয়েছে শুধু তার সাথে প্রয়োজনীয় কিছুই নেয় নি।
সূচকের ভাবনাকে সত্যি প্রমাণ করে তানহা হাজির হয়।

” থাপ্পড়ের জন্য ধন্যবাদ দিবি জানি। তাই আগে থেকেই ওয়েলকাম বললাম।
আর হ্যাঁ থাপ্পড়টা ফেসবুক আইডি খোলার জন্য।

বলেই চলে যায় সূচক। তানহা ভেংচি কাটে।

বেশ খানিকটা সময় নিয়ে রেডি হয়ে আসে তানহা। সূচক এতোখন অপেক্ষায় ছিলো তানহার। তানহাকে রুম থেকে বের হতে দেখে হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে উঠে দাঁড়ায়।

“মা আসছি বলেই হাঁটতে শুরু করে।

তানহাও পেছন পেছন হাঁটতে শুরু করে।
বাড়ির সামনে খুব সুন্দর একটা বাইক দেখে রীতিমতো হা হয়ে যায় তানহা। ছোট বেলা থেকেই সূচকের খুব ভালো একটা বাইক কেনার ইচ্ছে। কিন্তু বড় বাবা কিনে দেয় নি। ইচ্ছে করে দেয় নি এমন নয়। সামর্থ্য হয় নি।

সূচক বাইকে বসে চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে হেলমেট পড়ে নেয়। তানহা মুচকি হাসে। এতখনে সূচকের বাড়ি ফিরে আসার কারণ বুঝতে পারলো। বাইক কিনে দিয়েছে বলেই ফিরে এসেছে।

“দাঁড়িয়েই থাকবি?

সূচক জিজ্ঞেস করে। তানহা নিঃশব্দে সূচকের কাঁধে হাত দিয়ে বাইকে বসে।

” আমাকে শক্ত করে ধরে বসবি বুঝলি?

“হুমমমম

সূচক বাইক চালানো শুরু করে। দারুণ লাগছে মুহুর্তটা।

🥀🥀
তোহা আজকে একা একা ঘুরতে বের হয়েছে। তানহা বাসায় নেই। একা একা বিরক্ত লাগছে। তাজকে বলেছিলো সে কার্টুন দেখবে।

আজকে খুব করে ইমনদের বাড়ির ওই রাস্তার দিকে যেতে ইচ্ছে করছে তোহার। কয়েকদিন দেখে না ইমনকে। হয়ত বিজি।

কানে হেডফোন গুঁজে পছন্দের একটা গান প্লে করে রাস্তার পাশ ঘেসে হাঁটছে।

একা একা থাকলেই ইমনের কথা খুব করে মনে পড়ে যায়। মানুষটার প্রতি দুর্বলতা কমে না তোহার। হয়ত এটাই ভালোবাসা

কিন্তু ওই মানুষটা কি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য?
কখনোই না।

হঠাৎ করে ফোনটা কেঁপে ওঠে। ভাইব্রেশনে করা রেখেছিলো। স্কিনে ইমন নামটা জ্বল জ্বল করছে। ভ্রু কুচকে ফোনের দিকে তাকায় তোহা। এতোদিন পরে ওই মানুষটা? কেনো?

দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ফোনটা রিসিভ করে তোহা।

“কান থেকে হেডফোন খোলো।

হেলো বলার আগেই কথাটা ভেসে আসে। তোহা হেডফোন খুলে এদিক ওদিক তাকায়।খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। সামনেই ইমন ইরিন আর পিচ্চিটাকে দেখতে পায়। পিচ্চিটা ইমনের কোলে। ইরিন এক গাল হেসে হাত নারিয়ে যাচ্ছে।
তোহাও আলতো হাসে। ওদের দিকে এগিয়ে যায়।

“কতোখন ধরে ডাকছি তোমায়।

ইরিন তোহাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বলে।

” সরি আপু কানে হেডফোন ছিলো।

তোহা সৌজন্যের হাসি দিয়ে বলে।

“ইটস ওকে
দেখো আমার রাজকন্যা কতো বড় হয়ে গেছে। নাম দিয়েছি তুলতুল।

তোহা বাবু টার দিকে তাকায়। সত্যিই বড় হয়ে গেছে। একদম পুচকে দেখেছিলো তোহা। একটু হেসে বাবু টার হাত ধরে তোহা।

” চলো তোহা। ওই দিকে বসি। তোমার সাথে কথা আছে আমার। আমরা তোমাদের বাড়িতেই যাচ্ছিলাম।

তোহা ইরিনের সাথে যায়। রাস্তার পাশে ফুসকার দোকান। বাবুকে ইরিনের কোলে দিয়ে ইমন তিনটে চেয়ার নিয়ে আসে।

“তোহা কি করছো এখন? মানে পড়াশোনা?

ইরিন জানে বোকার মতো প্রশ্ন করে বসেছে তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রাখে।
তোহা মুচকি হাসে।

🥀🥀🥀
বাড়ি থেকে অনেকটা দুরে চলে এসেছে ওরা। মেইন রোড পেরিয়ে গ্রামের দিকে। কাঁচা রাস্তা দুই ধারে নদী। একটা বড় গাছের নিচে বাইক থামায় সূচক। তানহা নেমে যায়।
সূচক হেলমেট খুলে চুল ঠিক করতে করতে নামে।

” তানহা আমায় বিয়ে করবি?

সূচকের কথায় চমকে ওঠে তানহা। বড়বড় চোখ করে তাকায় সূচকের দিকে।
সূচক সানগ্লাস খুলে শার্টের সাথে রেখে তানহার ডান হাতটা টেনে নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নেয়।

“আমরা এখন এই মুহুর্তে বিয়ে করবো তানহা।
কাউকে বলবো না বিষয়টা। শুধু আমি তুই আর আমার বন্ধুরা জানবে।
বিশ্বাস কর তানহা আমি খুব ভালো রাখবো তোকে। দুনিয়ার সব সুখ তোর পায়ের কাছে এনে দেবো আমি।তুই শুধু আমার হয়ে যা।
হবি আমার?
খুব ভালোবাসবো তোকে। সুখের চাদরে মুরিয়ে রাখবো।

চলবে