প্রথম ভালোবাসার সুর পর্ব-১৭

0
2

#প্রথম_ভালোবাসার_সুর❤️
#লেখনীতে:অনুসা_রাত(ছদ্মনাম)
#পর্ব:১৭

সকালের ঘটনার পর মেহের সারাদিন আরবাজের ধারেকাছেও যায় নি।আরবাজ অবশ্য অনেক বার কথা বলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। মেহের তো এদিকে ভয় পাচ্ছে এটা ভেবে যে আরবাজের মাথা পাগল হয়ে গেছে। আরবাজ তাকে যেকোনো সময় মেরেও ফেলতে পারে।দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর শাপলা বেগম মেহেরকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন,

-“আরবাজকে নিয়ে গিয়ে ঘুরে আসো বাহির থেকে।”
-“মা আমি…”
-“হ্যা।তুমি,পিউ,তিতলি আর বাবলুও যাবে।”

মেহেরের ইচ্ছে না হলেও রাজি হয়ে গেল।সোফায় আরবাজসহ সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছিল।মেহের রান্নাঘর থেকে তার মায়ের কথা শুনে বের হলো।সোফায় বসতে বসতে বললো,

-“মা বলেছে সবাই মিলে বাইরে থেকে ঘুরে আসতে।”

তিতলি,পিউ আর বাবলু তো বেজায় খুশি হলো।আরবাজের কাছে বায়না ধরলো তাদের ট্রিট দিতে।আরবাজ হাসিমুখে উত্তর দিলো,

-“আচ্ছা ঠিক আছে, আজকে আমি তোমাদের বাহিরে খাওয়াব।”

বলে মেহেরের দিকে তাকালো। মেহের অন্যদিকে তাকিয়ে নখ কামড়াচ্ছে।সবাই যার যার মত রেডি হতে চলে গেল।আর আরবাজের একটা কল আসায় দূরে চলে গেল।মেহের ঘরে গিয়ে তাড়াতাড়ি করে জামা-কাপড় বের করছে।আরবাজ ঘরে ঢুকে মেহেরকে তাড়াহুড়ো করতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,

-“তুমি এত তাড়াহুড়ো করছ কেন?”

মেহের থেমে গেল।সে ভেবেছিল আরবাজ আসার আগে আগেই সে রেডি হয়ে যাবে।কিন্তু আরবাজ তাড়াতাড়ি চলে এলো।মেহেরকে উত্তর দিতে না দেখে আরবাজ বলে উঠলো,

-“মেহের? আর ইউ ওকে?”

মেহের হ্যা বোধক মাথা নাড়ালো। আরবাজ দরজাটা লাগিয়ে দিলো।দরজা লাগানোর শব্দে মেহের চোখ তুলে তাকালো।ঢোক গিলে পিছনে ঘুরে ওয়াশরুমের দিকে যেতে নিলে আরবাজ ডেকে উঠলো,

-“মেহের!”

মেহেরের পা থেমে গেল।আরবাজ আবার বললো,

-“দাঁড়াও।”
-“ক..কেন?”
-“তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।”

মেহের পিছনে ফিরে তাকালো।আরবাজ মেহেরের একদম সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মেহের নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বললো,

-“কি কথা?”

আরবাজ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।মেহেরের চোখে চোখ রেখে বললো,

-“আ’ম সরি।”

আরবাজের এমন সরি বলা মেহেরের মাথায় ঢুকলো না।অবাক হয়ে বললো,

-“হঠাৎ?”
-“আমার তোমাকে ওভাবে ভয় দেখানো উচিত হয়নি।আমি তো শুধু মজা করছিলাম।তুমি ওভাবে আমাকে সকাল সকাল ভিজিয়ে দিলে।আমি ঠান্ডায় অনেক কাঁপছিলাম। আর আমার ঠান্ডাও লেগে গেছে।”

এতক্ষণে মেহের খেয়াল করলো যে আরবাজের নাক হালকা লাল হয়ে গেছে।আসলেই পানি ভীষণ ঠান্ডা ছিল।সারারাত বালতিতে ছিল।পুরো বরফ পানি।ভাবতেই মেহেরেরই কেমন গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আরবাজ আবার বলতে লাগলো,

-“তারপর পিউ আন্টির সামনে আমাকে কেমন লজ্জা দিলো।আন্টি ভেবেছেন যে তুমি আর আমি…”

বলতেই মেহের নিজেই লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো।আরবাজ বলতে লাগলো,

-“তাই আমার ভীষণ রাগ হয়েছিল আরকি।আ’ম সরি।তুমি আমার কাজে কষ্ট পেয়ে থাকলে আ’ম এক্সট্রিমলি সরি।”

মেহের মাথা তুলে তাকালো আরবাজের দিকে।তারপর বলে উঠলো,

-“ইটস ওকে।”

আরবাজ মুচকি হাসলো।তারপর বললো,

-“আচ্ছা তাহলে তুমি বরং রেডি হও।আমি একটু পর রেডি হব নে।”

বলে পিছনে ফিরে যেতে নিলো।মেহের পিছন থেকে ডেকে উঠলো,

-“আরবাজ,আমিও সরি।”

আরবাজ পিছনে ফিরে তাকালো মেহেরের দিকে।

-“আমি আসলেই সরি।আমার বোঝা উচিত ছিল।বেশি বাচ্চামো হয়ে গেছে।”

আরবাজ না চাইতেও হেসে ফেললো।মেহের আরবাজের হাসিটার দিকে তাকিয়ে রইলো।কতটা অপূর্ব লাগে তাকে।অথচ সবসময় মেহেরের সাথে গম্ভীর হয়ে থাকে।আরবাজের সরি শব্দটার মাঝে আজ অপরাধবোধ ছিল।যেটা মেহেরকে বুঝিয়েছে যে মেহেরও দোষ করেছে।দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে আচমকা হো হো করে হেসে উঠলো।

একটা রেস্টুরেন্টে এসে সবাই মিলে বসে পড়লো।মেহের আরবাজের পাশে বসে মেন্যু কার্ড দেখতে ব্যস্ত।আরবাজ মেহেরের হাত থেকে সেটা নিয়ে বললো,

-“আপনার আর পন্ডিত হতে হবে না।”
-“আরে আমি কি করলাম।”
-“আমি দেখছি,তুমি কি খাবে সেটা বলো।”

মেহের গাল ফুলালো।আরবাজ সেদিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো।সবাই মিলে খাবার অর্ডার করে দিল।যেহেতু খাবার আসতে লেট হবে তাই সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছে। আজ আবারো মেহেরের গায়ের গন্ধ টা আরবাজকে এলোমেলো করে দিচ্ছে।তিতলি উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

-“মেহের তুই একটু ভিতরে যা।আমি এই সাইডে বসে তোর আর ভাইয়া সাথে সেলফি নিব।”

মেহেরকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তিতলি গিয়ে পাশে বসে পড়তেই মেহের আরেকটু ভিতরে চলে গেলো।আরবাজের বুকে সাথে মিশে গেলো।আরবাজের দিকে ফিরে তাকাতেই তিতলি সেটা ক্যাপচার করে ফেললো।মেহের আর আরবাজ অবশ্য সেটা দেখেনি।মেহের জোরপূর্বক হেসে একটু দূরত্ব রেখে বসলো। তিতলি কয়েকটা সেলফি নিয়ে গিয়ে নিজের জায়গায় বসে পড়লো।তারপর পিউ আর বাবলু কে ছবি গুলো দেখাচ্ছে আর ইশারায় বলছে যেন ওদের না বলে।
মেহের আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে জায়গাটা কেমন।পুরোটা খালিই।শুধু তারাই বসে,আর পিছনের দিকে একটা টেবিলে মেবি মানুষ বসে।
হঠাৎ সেই টেবিলে চোখ পড়তেই মেহেরের হাসি মিলিয়ে গেল।সে মুখ ঘুরিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। আরবাজ মেহেরকে চুপচাপ হতে দেখে আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,

-“কি হয়েছে?”
-“.…”
-“মেহের?”
-“জ..জ্বী?”(জোরপূর্বক হেসে)
-“কি হয়েছে?”(ভ্রু কুঁচকে)
-“ক..কই না তো।”
-“তাহলে চুপচাপ হয়ে গেলে কেন?”
-“না কই ঠিক আছি।”

বলে হাসার চেষ্টা করলো।খাবার চলে এলো।মেহেরের কোনো আগ্রহ দেখা গেল না।মেহের চাইছে এখান থেকে উঠে যেতে।জায়ান,তার মা আর তার বাবা, জায়ানের বোন সবাই পিছনের দিকের একটা টেবিলে বসে আছে।মেহের চাইছে না এদের সামনে পড়তে।জায়ানের মা বা জায়ানের মুখদর্শন করতে চায় না সে।
মেহেরের মাথায় ভাবনা এলো,

-“ওরা কি আমাদের দেখে ফেলেছে?”

মেহেরকে কিছু খেতে না দেখে আরবাজ বলতে লাগলো,

-“মেহের?খাচ্ছো না কেন?”

মেহেরের হুঁশ এলো।বাবলু ও বলতে লাগলো,

-“হ্যা রে,খাচ্ছিস না কেন?”
-“খ..খাচ্ছি।”

বলে খাবারে হাত দিলো।এতক্ষণে তিতলির চোখ গেল পিছনের টেবিলটায়। এমনকি জায়ানের মায়ের সাথে চোখাচোখি ও হয়ে গেল।তিতলি ভ্রু কুঁচকে বললো,

-“খাবে কি করে!গলায় খাবার আটকে গেছে তো।”

আরবাজ অবাক হয়ে বললো,

-“মানে?”

তিতিলি পিছনের দিকে আর না তাকিয়ে খাবারের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,

-“জায়ান আর ওর ফ্যামিলি ঠিক পিছনে বসে আছে।”

আরবাজের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে মেহেরের কেন অস্বস্তি হচ্ছে। আরবাজ মেহেরের দিকে তাকালো।মেহের নিচের দিকে তাকিয়ে চামচ নাড়ছে।
পিউ বলতে লাগলো,

-“এই অসভ্য মহিলা এখানে কি করছে।ধূর ধূর।”

বাবলু বলতে লাগলো,

-“এই আমাদের দেখেছে নাকি?”
-“মনে তো হলো।”(তিতলি)
-“খালা বলেছে কদিন পর পর নাকি এটা ওটা রটায় মেহেরের নামে।আর খালু যখন বাজারে যায় তখনো নাকি কত কথা শুনতে হয়।বাজে মহিলা এক নাম্বারের।”
-“আরে সম্পত্তির লোভ।বুঝিস না?”
-“হ্যা এজন্যই এত প্যাচায়।চায় যেন মেহের রা ভিটা ছেড়ে চলে যাক।”

আরবাজ জোরে শ্বাস ছেড়ে বললো,

-“দেখো,আমরা এখানে খেতে এসেছি।ওনাদের আমরা চিনি না।আমরা আমাদের মত এনজয় করব।ওদের দিকে তাকিয়ো না তিতলি।”

তিতলি মাথা নাড়ালো। আর আবারো হাসি-তামাশা করতে লাগলো।আরবাজ মেহেরের দিকে তাকিয়ে ধীর গলায় বললো,

-“মেহের?খাও।”

মেহের আরবাজের দিকে তাকালো করুণ চোখে।আর বলতে লাগলো,

-“আমি সেদিনের ঘটনা ভুলতে পারি না।ওনাকে দেখে আমার সেসব অপমান মনে পড়ছে।”
-“বাদ দাও তো সেসব।”

খাওয়া শেষ করে আরবাজ ওদের উদ্দেশ্যে বললো,

-“তোমরা আগে আগে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ো।আর আশেপাশে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করবে না।”

তিতলি কথাটা বুঝলো আর বাবলু,পিউকে নিয়ে চলে গেল।মেহের তখনো কফি খাচ্ছিল।তাই আরবাজ বসে ছিল।আরবাজ গালে হাত দিয়ে বসে বসে মেহেরকে দেখছে।মেহের খাচ্ছে আর কি যেন ভাবছে।মেহেরকে দেখতে আরবাজের বেশ ভালে লাগছে।মন চাইছে এভাবেই তাকিয়ে থাকতে।হঠাৎ জায়ান এসে মেহেরের ধ্যান ভঙ্গ করে বলতে লাগলো,

-“কেমন আছ মেহের?”

কিন্তু এতটুকু বলেও সে থেমে গেল।কেননা পাশে আরবাজ বসে।পিছন থেকে তো এতটা দেখা যায়নি যে মেহেরের পাশে একজন বসা ছিল।মেহের জায়ানের দিকে না তাকিয়েই বললো,

-“জ্বী ভালো।”

বলে উঠে দাঁড়ালো।আরবাজও উঠে দাঁড়ালো।মেহের যেতে নিলে পিছন থেকে জায়ান বলতে লাগলো,

-“আমাকে ইগনোর করছ?”
-“তুমিই বা কেন কথা বলতে আসছ?লজ্জা নেই তাই না?”

জায়ান মাথা নিচু করে ফেললো।মেহের জায়ানের দিকে ফিরে বলতে লাগলো,

-“মায়ের খোকা,মায়ের আঁচলের নিচেই থাকো না।এখানে কেন আসছ?আমার সাথে কিসের কথা এত তোমার?আমি যেমনই থাকি তোমার কি! ”
-“আমি তোমায় ভালোবাসি।”
-“ও আচ্ছা তাই বুঝি।ভালোবাসা কথাটা তোমার মুখে মানায় না।আজ এতদিন পর আমায় রেস্টুরেন্টে দেখে ভালোবাসা উতলে উঠছে কেন?যত্তসব!”
-“মেহের,আমি সেদিন পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম।”

মেহের বেশ বিরক্ত প্রকাশ করছে।আর আরবাজ হাতে হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।মেহের যা ইচ্ছে বলবে,কেউ কিছু বলতে আসলে আরবাজ মেরেই ফেলবে।আরবাজের ভাবটা হচ্ছে এমন।
মেহের আবার বলতে লাগলো,

-“লজ্জা করে না তোমার এভাবে ভালোবাসি বলতে আসছ।তোমার এই মুখে।”

জায়ান কিছু বলতে যাবে এমন সময় জায়ানের মা এসপ বলতে লাগলো,

-“কি এত কথা বলছিস তুই জায়ান?তোকে না করেছি না এই বন্ধ্যা টার সাথে কথা বলতে?”
-“মা চুপ করো।”
-“এই চুপ একদম।আমার মুখের উপর কোনো কথা বলবি না।আর এই মেয়ে!তুমি কি বলছ?আমার ছেলের লজ্জা থাকবে?কেন?লজ্জা তো তোমার থাকা দরকার।লজ্জা করে না মা হতে পারবে না আবার বড় বড় কথা বলো।কে বিয়ে করবে তোমায়?নিশ্চয়ই তোমার বাবা-মা কোনো পাপ করেছে যার ফল তুমি পাচ্ছ।”

মেহেরের রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।কেননা জায়ানের মা মেহেরের দূর্বল জায়গায় আঘাত করছে।জায়ান তার মাকে থামিয়ে বললো,

-“বাদ দাও না মা।হয়েছে তো।”
-“এই তুই চুপ কর।আমি না করেছিলাম না খবর নিতে আসতে হবে না?এই মেয়ের খবর নিতে এসে কতগুলো কথা শুনতে হলো তো!বাজে মেয়ে একটা।এখন ছেলে নিয়ে ঘুরতে এসেছো বুঝি।এভাবে ছেলে নিয়ে ঘুরো।
বলি এই ছেলে,তুমি কি ওকে বিয়ে করবে?নাকি এমনিই টাকা দিয়ে কিনেছ?বিয়ে তো আর করবে না তাই না?করবে কিভাবে।মা হতে পারবে না তো।”

এতটুকু বলা শেষ হতেই আরবাজ জায়ানের গাল বরাবর ঘুষি বসালো।জায়ানের মা আঁতকে উঠে বললেন,

-“এই এই কি করছ?”

জায়ান নিজেকে সামলাতে না পেরে পড়ে গেল।আরবাজ ওকে তুলে আবার মারতে লাগলো।মেহের ভয়ে কেঁদে দিচ্ছে।আরবাজের এমন রূপ সে কোনোদিন দেখেনি।আরবাজ রাগের মাথায় বলতে লাগলো,

-“তোর মত লুজারের মা আমার বউকে শিখাবে?আমার বউ কি করবে না করবে তোর মা বলে দিবে?
শালা লুজার।****”

আরবাজের মুখের ভাষা শুনে মেহেরের মাথা ভনভন করতে লাগলো।জায়ানের বাবা,ম্যানেজার রা মিলেও আরবাজকে থামাতে পারছে না।জায়ানের মা তো জোরে জোরে কাঁদছে আর বলছে,

-“কে কোথায় আছ গো,দেখে যাও।আমার ছেলেকে মেরে ফেললো।এই মেয়ে!কোত্থেকে তোর *** ধরে আনছিস।”
-“কিসব বলছেন।”
-“কিসব বলছি মানে।কোত্থেকে ধরে আনছিস তোর ***।”

এসব ভাষা শুনে মেহেরের মন চাচ্ছে মহিলাকে ধরে থাপড়াতে।বয়সে বড় না হলে এতক্ষণে মেহের যে কি করত।তাও গিয়ে সে আরবাজকে থামালো।জায়ানের মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। জায়ানের মা ছেলেকে ধরে বলতে লাগলেন,

-“আমি তোর আর তোর এই *** নামে মামলা দিব।”

আরবাজ হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

-“যা ইচ্ছে করতে পারেন।আই ডোন্ট কেয়ার এবাউট ইট।নেক্সট টাইম আমার বউকে নিয়ে এসব বলার সাহসও করবেন না।নাহলে আমিও আপনাদের নামে মামলা দিব যে আপনারা আপনাদের ছেলের সাথে ওর বিয়ে ঠিক করেছিলেন আর যৌতুক না দেওয়ায় বিয়ে ভেঙে দেন এতে মেহের আত্মহত্যা করতে যায়।এরপর আপনাদের কি অবস্থা হবে ভেবে দেখেছেন?”

-“ম…মিথ্যা কথা।”

জায়ানের বাবা এসে হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে বললো,

-“মেহের মা আমাদের মাফ করে দে।আমরা কিছু করব না।”

আরবাজ মেহেরের হাত শক্ত করে চেপে ধরে বললো,

-“ওর হয়ে বলার জন্য ওর হাসবেন্ড আছে।ওকে রিকুয়েষ্ট করে লাভ নেই।যা সিদ্ধান্ত নেয়ার আমি নিব।”

মেহের অবাক চোখে তাকালো আরবাজের দিকে।আরবাজ আবারো বলতে লাগলো,

-“লাস্ট টাইম ওয়ার্নিং দিচ্ছি। আমার আর আমার বউয়ের ফ্যামেলি থেকে দূরে থাকবি।তুই তোর মায়ের আঁচলের তলায় থাক,যাকে ইচ্ছে বিয়ে কর।আমার বউকে তোর মা কিছু বলতে আসলে গণপিটুনি খেতে পারে।অথবা জেল খাটতেও।”

বলে মেহেরের হাত চেপে ধরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেল।আরবাজের এত চিন্তা হচ্ছে না কেননা রেস্টুরেন্টের মালিক ওর বন্ধু।এদিকে মেহেরের বুকটা এখনো ধরাস ধরাস করছে।এটা কি হলো?কেন হলো?
এটা কি আরবাজ?তার হাসবেন্ড?
তিতলি আর পিউ তো বেশ খুশি হলো এসব দেখে।
উচিত শিক্ষা হয়েছে।

চলবে….