প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব-৩১+৩২

0
369

#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৩১)

আঁখি আদ্রিশকে কিছু করে উঠার সুযোগ না দিয়েই তার দুই গাল বরাবরই ছয় থেকে সাতটা থাপ্পড় বসালো,তারপর তাকে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিল,আদ্রিশ এবার অতিরিক্ত ক্ষেপে গেল,তেড়ে এসে আঁখিকে থাপ্পড় বসাবে তার আগেই তার হাত পিছন দিকে মুড়ে নেয় আঁখি,ওপর হাত দিয়ে আঁখিকে পাকড়াও করতে চাইলে সে হাতও মুড়ে ধরে আঁখি,আঁখি আর আদ্রিশের বেশ কঢ়া টক্কর পরেছে,আদ্রিশ বেশ বলিষ্ঠ হলেও আঁখির দক্ষতার সাথে পেরে উঠছে না।আদ্রিশ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে দাঁত কটমট করে বলতে লাগল।

″আঁখি ভালো হবে না ছেড়ে দাও আমায়, তুমিও নিজের সীমা লঙ্ঘন করে গেছ,তোমাকেও আমি ছাড়ব না।″

আঁখি এবার তার হাত ছেড়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল যাতে ওয়্যারড্রোব এর এক কোনে আদ্রিশের কপাল লেগে কপালের একপাশ বেশ কেটে গেল।এবার রিদিকা আক্রমণ করল আঁখির উপর।

″তোর সাহস কি করে হলো আঁখি আমার আদ্রিশকে এভাবে মারার!″

রিদিকা এসে আঁখিকে থাপ্পড় মারতে নিলে আঁখি ইচ্ছেমতো বেশ কটা থাপ্পড় মেরে তাকে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে কয়েকটা লাথিও মারল।আদ্রিশ আবার আঁখিকে জব্দ করতে আসলে আঁখি তাকেও আরও কয়েকটা ঘুষি দিয়ে ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠল।

″কি মনে করিস তোরা নোং*রা*র দল!আঁখির সাথে পেরে যাবি!কি করে ভুলে যেতে পারিস তোরা আমি আঁখি সবকিছু জ্বালিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি।তোদের তো এখনই মেরে ফেলতে মন চাইছে কিন্তু মারব না,কারণ তোদের সহজ মৃ*ত্যু আর যেই হোক আঁখি মেনে নিতে পারবে না।তোদের হাল তো এমন হবে যে রোজ মরার জন্য প্রার্থনা করেও ম*র*তে পারবি না।″

″আজ তুমি একজন মেয়ে আর কখনও আমার স্ত্রী ছিলে ভেবে ছেড়ে দিচ্ছি আঁখি,নইলে আজ এখান থেকে বেঁচে ফিরতে না তুমি।তোমাকে প্রাণে ছেড়ে দিলেও ভেব না তুমি ছাড় পাবে,কেস করব আমি তোমার নামে,লোকের ঘরে ঢুকে তাদের প্রাণে মারার চেষ্টা করেছ তুমি,দেখি এবার ডাক্তারি লাইসেন্স কি করে আটকাও,ভুলো না আমি উকিল।″

″ওফ যা ল*ম্প*ট উকিল,ডাক্তারি লাইসেন্স তোর বউয়ের মতো সস্তা দ্রব্য না যে চাইলেই তাকে নিয়ে খেলা করবি,আমাকে কেসের ভয় দেখাস!আরে তোর উপর তো কেস করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও করি নি আমি,কারণ তোর পরিণতি আমি অনেক ভয়াবহ ভেবে রেখেছি, শুকরিয়া কর আল্লাহর কাছে যে তুই এখনও জীবিত আছিস,কিন্তু মনে রাখিস তোর ধ্বংস আমার হাতেই হবে।আমাকে আমার ভালোবাসা আমার ডা.আদৃতের কাছ থেকে দূর করার পরিণাম তো তোকে ভোগ করতেই হবে।

″আদৃতের কাছ থেকে দূর করেছি মানে?″
আমতা করে বলল আদ্রিশ।

″ভালো সাজছিস ল*ম্প*ট, তুই কি মনে করেছিলি আমি কখনও জানতে পারব না?মনে রাখিস আদ্রিশ তুই কার সাথে খেলা করেছিস।তোর এমন অবস্থা করব যে মৃ*ত্যু*র আশায় তুই আফসোস করবি।″
″চলো মা,ভাইয়া, আপু,এখানে আর থাকতে হবে না তোমাদের।″

″তোমার ভাই আর আপুকে নিয়ে যাও আমার মা কোথাও যাবে না।″

আঁখি কথাটার জবাব দেওয়ার আগেই মা বলে উঠলেন।

″বাবারে তোর কামাই খেয়ে বেঁচে থাকার থেকে ভিক্ষে করে খাওয়াটাই সম্মানের হবে আমার কাছে।চল আঁখি মা,আমায়ও নিয়ে চল।তোরা নিজেদের কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিয়ে চলে আয়।″

″না মা,ওই স্বার্থপরের দেওয়া কিছুই তোমাদের নিতে হবে না,আমি বেঁচে থাকতে তোমাদের কোনো কিছুর কমতি রাখব না,শুধু আমার সাথে চলো।″

″চলে যাবার আগে আরেকবার ভেবে নাও মা,একবার গেলে কিন্তু আবার ফিরতে পারবে না।″

″আল্লাহ যেন মরার আগে আর তোর মুখ না দেখান।″

তাচ্ছিল্য করে কথাটা বলে মা সবার আগেই হাঁটা ধরলেন।কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেল আদিল,শুভ্রতা রিহানকে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে গেল,সবশেষে আদ্রিশ আর রিদিকার দিকে ক্রোধান্বিত চোখে তাকিয়ে চলে গেল আঁখিও।
__________

ড্রয়িংরুমে বসে কান্না করে যাচ্ছেন জাহানারা রাহমান,পাশে বসে আছে আদিল শুভ্রতা,রিহান আশপাশে দৌঁড়ে খেলা করছে।

″কি হয়েছে মা?কয়েকদিন থেকে আমি লক্ষ্য করছি তোমরা কেউ ই আমার সাথে তেমন যোগাযোগ রাখতে চাইছিলে না।আর আজ এমনটা,বলো না আমায় কি হয়েছে?″

″আজ তোমাকে সব বলব আঁখি,আজ আর ভয় নেই আমাদের। ″

″বলো আপু।″

″সবকিছু রিদিকাই করছিল।সেদিন ইচ্ছে করে আমার পায়ে গরম তরকারি ফেলে দেয়,কিন্তু তখনি আদ্রিশের গাড়ির শব্দ পেয়ে আমাদের অবাক করে দিয়ে নিজের হাতেই গরম তরকারি ফেলে দেয়,নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় মারে,তারপর আদ্রিশকে আসতে দেখে হাউমাউ করে কান্না করে মায়ের পায়ে পরে যায় আর আমাদের আদ্রিশের চোখে খা*রা*প প্রমাণ করে,সেদিন আদ্রিশ আমাদের কারো উপর বিশ্বাস করে নি,তারপর থেকে আদ্রিশ যখনই বাড়ি থাকত না ও আমাদের দিয়ে অনেক কাজ করাতে চাইত,আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করত,একদিন আমি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের রিহানের গলায় ছুরি বসিয়ে দেয়,বলে না কি ওর সাথে লাগতে এলে কখন কোথায় রিহানকে লা*শ বানিয়ে ফেলে দিবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।কথাটা বলেই রিহানকে বেশ জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়,আমরা চাইলেও তার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারতাম না কারণ আদ্রিশ তার কথায় ছিল,উল্টা আমাদেরই দোষারোপ করত,তুমি চলে আসার পরদিনই বাড়ির সকল সিসিটিভি ও নিজেই খুলিয়ে নিয়েছে আদ্রিশকে এই বলে যে ওর এসব ভালোলাগে না,সবসময় নজরবন্দি লাগে,যাতে ওর বিরুদ্ধে চাইলেও প্রমাণ রাখতে পারতাম না আমরা।তাছাড়া ভয় পেতাম,ও কথায় কথায় ছু*রি,এটা ওটা নিয়ে মারতে আসত আমাদের,একদিন আদ্রিশকে ওর কক্ষে রেখে ওকে চ্যালেন্জ করেই আদ্রিশকে বলতে গিয়েছিলাম সবকিছু, কিন্তু তখনই ও নিজের হাতে মায়ের হাত জোর করে তার মাথায় ধরে আদ্রিশকে বোঝালো আমরা ওর উপর অত্যাচার করি।আমাদের না থাকার জায়গা ছিল না নিজেদের হয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা, হয়ত নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করতাম, লুকিয়ে ওর কার্যকলাপ ভিডিও করতে পারতাম কিন্তু ও এসব কিছুরই কোনো সুযোগ দেয় নি আমাদের, অনেক চালাক রিদিকা,এক ধরনের পা*গ*ল,যে নিজের কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেকেই আঘাত করতে পারে তাকে কেউ কিভাবে ভয় পাবে না , কাজের লোকগুলোর সাথেও এমনটা করত,একদিন ওদের খুব মারে তারপর কাজ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে।ওরাও চলে যায়,অতঃপর আমরা ঘরের কাজের লোকদের মতো সারাদিন খাঁটতাম।″

″আজকে কী হয়েছিল?″

″আজ আমি নিজের কক্ষেই ছিলাম,কিছু কাজে বেড়ুনোর ছিল শুধু শুভ্রতা ফিরে আসার অপেক্ষা করছিলাম শুধু কিন্তু তখন হঠাৎ রিদিকা আমার কক্ষে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে নিজেই নিজের কাপড় ছিঁড়ে চিৎকার করতে থাকে।আমার বোধগম্যে কোনো কথা যাওয়ার আগেই সবকিছু ঘটে যায়,আমার কপাল এতই ভালো যে নিজেরই ছোট ভাইয়ের হাতে মার খেতে হলো।″

″কপাল আপনার না ওই আদ্রিশের খারাপ যে আপনার মতো একজন আদর্শ মানুষের গায়ে হাত তুলেছে।আমার তো খারাপ এক টা বিষয়ে লাগছে যে এতো কিছু হয়ে গেল আর তোমরা আমাকে কিছু বললে না?″

″আমি বলতে চেয়েছিলাম আঁখি,কিন্তু রিদিকা প্রায় সময় আমাদের উপর নজর রাখত,পরিষ্কার ভাবে আমাদের বলেছিল যদি আমরা তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ রাখি তবে আমাদের সাথে তোমারও খা*রা*প করবে আর সবার প্রথম ও রিহানকে মারবে।যে মেয়ে আদ্রিশের মতো তোমার পাগল প্রেমিককে বশ করতে পারে,মা পাগল ছেলেকে নিজের আঁচলে বেঁধে নিতে পারে,ভাইয়ের ভক্ত ভাইকে তার শ*ত্রু বানিয়ে দিতে পারে তাকে ভয় কি করে পেতাম না বলো?″

″ভয় তো ওকেও পেতে হবে,আর কাউকে না পেলেও আল্লাহ তায়ালাকে আর তার পরে আর এক জনকে।″

″আর এক জন মানে?″

″তোমাকে ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না আপু,তোমরা এখন আমার কাছে নিরাপদে আছো,আর আমার কোনো ভয় নেই,ভয় তো এবার ওই রিদিকার পাওয়ার পালা।আমি কখনও ভাবি নি যাকে আমি কেঁচো ভাবতাম সে নাগিন বেরুবে,যতটুকু আমার ডাক্তারি দক্ষতা বলে পাগলামি তো হুট করে মাথায় চড়ার নয়।তার উৎপত্তি প্রায়ই থাকে অতীত জুরে।রিদিকার ইতিহাস খুলে দেখছি দেখতে হবে এবার।″

″শুধু মানুষের ইতিহাস তুলে ধরো,নিজের ফিউচার নিয়ে ভাবতে হবে না।″

″আরে ডা.সাহেব আপনি!আসুন।″

″হ্যাঁ ডা.সাহেবা,সকাল থেকে সারা ঘর খোঁজছি তোমায় কিন্তু আপনি ম্যাডামের কোনো খোঁজ নেই,কতো ফোন করেছি খেয়াল আছে,পুরো ৪৮ টা কল করেছি,মেসেজ চেক করো কতটা করেছি।তারপর কোথায় কোথায় না জানি খোঁজেছি একমাত্র আমিই জানি অবশেষে তোমার একজন গার্ড খবর দিলো তুমি বাড়িতে এসেছ।″

″আরে খুব সকাল বেড়িয়েছিলাম সবাই তখন ঘুমিয়ে ছিলেন প্রায়ই তাই কাউকে ডাকি নি,আপনি তো এতো পাগল হয়ে পরেছেন আমায় না পেয়ে যেন আমি আপনাদের ঘর ছেড়ে না পৃথিবী ছেড়েই চলে গেছি।″

″খবরদার আঁখি এমন কথা আর বলবে না।″

″আচ্ছা ঠিক আছে এখন আর গম্ভীর মুখে রাগের রেখা না ফুটিয়ে উনাদের সাথে পরিচিত হন।ইনি হলেন মা,ইনি আমার আদিল ভাইয়া আর ইনি উনার সুন্দরী ওয়াইফ আমার শুভ্রতা আপু।আর ওই যে দুষ্টু মহারাজ খেলা করছেন উনি হলেন আপু ভাইয়ার ভালোবাসার পদ্মফুল।″

আর আপনারাও উনার সাথে পরিচিত হন,ইনি হলেন আমেরিকা ফেরত ডাক্তার,ডা.আদৃত মির্জা।

আঁখির দুষ্টুমিতে সবাই বিষাদ ভুলে মুখে হাসি ফুটিয়ে নিল পলকেই।
_____________

জাহানারা রাহমান,আদিল,শুভ্রতা সবাইকে আঁখির বাড়িতে থাকার ভালো ব্যবস্থা করে দিয়ে আঁখি আসল হাসপাতাল। যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে যাবে ভেবেছে,তাছাড়াও আদিলকে কিছু টাকা দিয়ে এসেছে, আঁখি আসার আগে তাদের যা লাগে আনিয়ে নিতে পারার জন্য।বর্তমানে বসে আছে হাসপাতালের পিছনের দিকটার সেই বটগাছটার নিচে,অজস্র ভাবনার উপর উঁকি দিয়ে বিরক্ত করছে এক বিষাদময় ভাবনা তাকে,আদৃতকে সেই তিক্ত সত্য না বলে সে থাকতে পারছে না।আঁখি তো ছয় বছর ভালোই ছিল অন্যের হাত ধরে,হোক না সে বিশ্বাসঘাতক,কিন্তু আদৃতের তো ছয় টা বছর বৃথা গেল।আর কতো কাটাবে আদৃত তিক্ততার ক্ষণ।সেই তিক্ততায় আদৃত এখনও জীবনে এগোয় নি,তার যথেষ্ট অধিকার আছে সত্যতা জানার।যাই হয়ে যাক আঁখি আদৃতকে সত্যতা এবার বলে দিবে ভেবে নিয়েছে।আঁখি এবার উঠে গেল আদৃতের কেবিনের দিকে।কিন্তু কেবিনে গিয়ে আদৃতকে পেলো না আঁখি,তখন একটা নার্স এলো আঁখির কাছে।

″রুশা ডা.আদৃতকে দেখেছ?″

″ম্যাম আপনি এখানে আর আমি আপনাকে কোথায় কোথায় খোঁজেছি।আশরাফ স্যার সকল ডাক্তারদের নিয়ে মিটিং ডেকেছেন হঠাৎ, আদৃত স্যার ওখানেই,আপনাকে না পেয়ে আপনার খোঁজে আমাকে পাঠালেন আশরাফ স্যার।সেই কবে থেকে আপনাকে খোঁজছি আমি।″

″আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি।″

আঁখি বেগতিক পায়ে গেল সেখানে।

″মে আই কাম ইন স্যার?″

″এখন সময় হয়েছে ডা.আঁখি আপনার আসার,ভুলে যাবেন না এটা আপনার বাড়ি নয় আমার হাসপাতাল এখানে আমার কিছু রুল্স আছে তা মেনে চলতে হবে আপনাকে,আর না পারলে হাসপাতাল ছেড়ে দিবেন,ঠিক সময়ে আপনাকে ডেকে খোঁজে পাওয়া যায় না,খামখেয়ালিপণা নিয়ে পরে থাকার ছিল তো ডাক্তার হলেন কেন?″

এতসকল ডাক্তারদের সামনে কথাগুলো শুনিয়ে দিলেন আশরাফ খান আঁখিকে,অল্পতেই আঁখির মুখ চুপসে গেল,চারপাশে তাকিয়ে দেখল সকল ডাক্তারই তার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে, খারাপ লাগল আঁখির বড্ড, মৃদুস্বরে বলল।

″সরি স্যার সামনে থেকে খেয়াল রাখব।″

″হুম,এসে জায়গায় বসুন আপনি।″

আঁখি এসে বসল ভিতরে,চোখে জল টলমল করছে,আসছে দিন থেকেই তার বাবা বিভিন্ন ভাবে তার সাথে খারাপ আচরণ করেন,হয়ত তিন বছরের মনের জ্বালার শোধ তুলছেন উনি,নয়ত যে বাবার কখনও তার মেয়েকে ধমক অব্দি দেওয়ার কথা ভাবতেও বুক কেঁপে উঠেছে সেই বাবা আজ তার মেয়ে কেন অপদস্ত করবে কথায় কথায়? আঁখি যে তা মেনে নিতে পারছে না।যে বাবার ভালোবাসা ছাড়া কখনও কিছু পায় নি আঁখি সেই বাবার এমন ব্যবহার কেমনে মেনে নিবে।জীবনের একটা ভুল পদক্ষেপ আজ কেঁড়ে নিল আঁখির সব সুখ,নষ্ট করে দিল সব সম্পর্ক, নিঃস্ব করে দিল তাকে।আজ বুঝতে পারল আঁখি আবেগপ্রবণ হয়ে মানুষ অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যেটা তখন তার কাছে সঠিক মনে হলেও ভবিষ্যতে ভুল প্রমাণিত হয়,আর যাই হোক কোনো কিছুতে আবেগপ্রবণ না হয়ে বুদ্ধি খাঁটিয়ে চিন্তা করে নেওয়াই জীবন ও মনের ভবিষ্যতের জন্য ভালো ।

চলবে…

#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৩২)

ড্রয়িংরুমের সোফায় পায়ের উপর পা তুলে হাত ছড়িয়ে আয়েশ করে বসে আছে রিদিকা,মুখে তার প্রসারিত হাসি।

″আমার পথের সব কাঁটা দূর,এখন আদ্রিশ শুধু আমার,ওকে আমার কাছ থেকে এখন আর কেউ কেঁড়ে নিতে পারবে না,ও একান্তই আমার।সব কটা পা*গ*ল ছিল,আমি থাকতে আমার আদ্রিশের উপর অধিকার জমাতে এসেছিল।আ*বা*লে*র দল।ওই ডাক্তারটাও পা*গ*ল,আমি না কী আমার শত্রুর সাথে ভাব করব।জানিনা কে এই ভাইরাস আমার শরীরে দিয়েছে কিন্তু যেই দিয়ে থাকুক না কেন আমার হাত থেকে বাঁচতে পারবে না।তৃতীয় ডোজ তো দিতে আসবেই,দেখি কেমনে দিয়ে যায়।রিদিকা এতো সহজে হার মানবার কেউ না।″

হাসপাতালে আঁখির কাজ শেষ হয়ে গেলেও আদৃতের কাজ এখনও বাকি,এদিকে বাড়িতে তাড়াতাড়ি যেতে হবে হঠাৎ করে ফোন আসলো মায়ের শরীর খারাপ করেছে অনেকটা।তাই হুটহাট বেড়িয়ে গেল আদৃতকে না বলেই,ফোনে মেসেজ করল।

″ডা.আদৃত, বাড়িতে মায়ের শরীর হঠাৎ অনেকটা খারাপ করেছে আমায় বেড়িয়ে যেতে হলো আর্জেন্টলি, আমি আর আপনাদের বাড়িতে থাকতে পারব না।হয়ত মামুনি রাগ করবে,উনাকে আমি ফোন করে বুঝিয়ে নিব আর কালকে সকালে পারলে একবার ওখানে আসব তারপর ওখান থেকেই আপনার সহিত হাসপাতাল আসব,তাছাড়া আপনার সাথে অনেক কথা আছে গুরুত্বপূর্ণ দেখা হলে বলব।″

আদৃত কাজ সেরে ফোন হাতে নিয়ে আঁখির ম্যাসেজটা দেখতে পেল,আঁখির জন্য বুকের ভিতরটা বড্ড খচখচ করছে তার,আশরাফ খানের আঁখির সাথে এমন ব্যবহার সে মেনে নিতে পারে নি,আঁখির মুখ আজ সারাদিনই বেশ মলিন ছিল,আজকে এতো ব্যস্ত ছিল যে আঁখির সাথে ভালো করে কথাও বলতে পারে নি আদৃত।আশরাফ খানকে চাইলেও মুখের উপর জবাব দিতে পারত না আদৃত কারণ উনাকে যথেষ্ট সম্মান করে সে।কিন্তু বিষয়টা সয়েও যেতে পারছে না।তাই কিছুটা ভেবে আশরাফ খানের কেবিনের দিকে এগিয়ে গেল,আশরাফ আর আহিল দু’জনেই সেখানে বসে কিছু কাজ করছিলেন তখন,আহিলের মোটেও ভালো লাগে নি তার বাবার আঁখির সাথে এমন ব্যবহার,তবুও বাবার উপর কিছু বলল না।আশরাফ খানও মেয়ের সাথে এমন ব্যবহার করে এখন মনে মনে অনুতপ্ত হচ্ছেন।

″মে আই কাম ইন স্যার?″

″আদৃত মাই বয়,প্লিজ কাম এন্ড সিট। ″

আদৃত বসল,

″তা হটাৎ আমার কেবিনে আসলে,কোনো ইম্পর্ট্যান্ট কাজ?″

″স্যার এদিক ওদিকের কথা বলে আমি বর্তমানে আপনার সময় নষ্ট করতে চাইব না,সোজা কথায় বলতে চাই আপনার আজকে আঁখির সাথে করে যাওয়া ব্যবহারটা আমার ঠিক মনে হয় নি,আমরা সবাই জানি আঁখি নিজের দায়িত্ব নিয়ে কতটা সিরিয়াস,আজকে আপনি হুট করে মিটিং ডেকেছেন এতে তখন যেকোনো ডাক্তার নিজের কিছু প্রয়োজনে হাসপাতালের বাইরে থাকতেই পারত,এটা বড় কিছু ছিল না।″

″আমাকে আমার কাজ শিখাতে এসো না আদৃত।″

″না স্যার তা করার কথা আমি ভাবতেও পারি না,আপনি আমার গুরু।কিন্তু আমার যা সঠিক মনে হয়েছে সেটা বলেছি বাকিটা আপনি ভালো জানেন।হয়ত আঁখি একটা ভুল করে গেছে কিন্তু তার মাসুল যে তাকে জীবনভর দিতে হবে তেমন তো কিছু নয়,আঁখি আপনাদের ছাড়া কতটা পীড়ায় আছে তা জানলে হয়ত কখনই আঁখিকে দূরে ঠেলে দিতেন না।বাচ্চারা ভুল করতেই পারে স্যার তবে মা বাবা কি পারেন না বাচ্চাকে সে ভুল শোধরে নেওয়ার একটা সুযোগ দিতে।বিষয়টা ভেবে দেখলে খুশি হবো স্যার।আমার কথায় খারাপ লাগলে ক্ষমা করে দিবেন।চলি তাহলে।″

আদৃত উঠে চলে গেলে আহিল বলল।

″বাবা ভুল না হয় আঁখি করেছে তাই বলে কি ক্ষমা করা যায় না তাকে?″

আশরাফ খান কিছুই বললেন না আহিলের কথার উত্তরে,শুধুই নিরবতা পালন করে গেলেন।

বাড়িতে এসে মায়ের চেক আপ করল আঁখি,শরীর অত্যন্ত দূর্বল উনার,তাছাড়া অতিরিক্ত চিন্তায় শরীর আরও খারাপ করেছিল,আঁখি উনাকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল।

রিদিকা আসলো আঁখির কক্ষে একটা মাথার ব্যাথার ওষুধ নিবে বলে হঠাৎ তার মাথা অত্যন্ত ধরেছে,আঁখি তাকে বসিয়ে রেখে পাশের ওয়্যারড্রোবের ড্রয়ার খুলে ওষুধের বাক্স বের করতে নিলে সেদিন এর আঁখির আনা অজ্ঞাত জনের কাঠিটাও সাথে বেড়িয়ে আসে,যা বেড়ুতেই ফ্লোরে পরে যায়,শুভ্রতার চোখ যায় সেদিকে।

″আরে আঁখি তুমিও একই কাঠি কিনেছ?।″

″একই কাঠি মানে আপু?আর কার কাছে দেখেছ কাঠিটা?″

″আরে রিদিকার কাছেও সেইম কাঠি আছে।″

″তুমি শিওর?এক দেখাতে কি করে চিনলে?″

″আরে চিনব না,এই কাঠি নিয়ে যা তা,সারাদিন এটাই পরে থাকত রিদিকা,অনেক পছন্দের ছিল ওঠা তার,সেদিন হঠাৎ খুঁজে পাচ্ছিল না বলে আমাকে না জানি কতো দোষারোপ করেছিল,কতো কথা শুনিয়েছিল,তারপর নিজেরই কক্ষের এক কোণে পরে থাকতে পায়।″

″সে কাঠিটাকে কি তুমি পাশ থেকে দেখেছ,মানে এমন কাঠি তো অনেকেই কিনতে পারে কিন্তু রিদিকার টা কি তুমি আলাদা ভাবে শনাক্ত করতে পারবে?

″হ্যাঁ, পারব,কারণ ওর কাঠিটা সেদিন খোঁজে পেলেও মাথার দিকটা অল্প ভাঙা পায়,হয়ত রিহানই খেলা করে ভেঙে দিয়েছিল।″

″দেখো তো এটা কি না?″

আঁখি শুভ্রতার সামনে নিয়ে কাঠিটা ধরলে এক মুহুর্তে চিনে ফেলে সে।

″হ্যাঁ এটাই তো,তুমি কি করে পেলে এটা!″

″এটা অনেক লম্বা গল্প আপু পরে বলব।″

মুখে রহস্যময়ী হাসি ফুটিয়ে বলল আঁখি।শুভ্রতা বুঝে উঠতে পারল না সে হাসির মানে।
_____________
আদৃত পাগলের মতো ডায়েরিটা খুঁজে যাচ্ছে।

″মা,মা,কোথায় তুমি?আমার ডায়েরি কোথায় গেছে?″

″আরে কি হয়েছে এতো চেঁচাচ্ছিস কেন?তোর জ্বালায় ঘরে থাকতে পারছি না?″

″আমার ডায়েরি কোথায়?″

″আমি জানি কী?না জানি বাবা কি হয় এসব লিখে!আগের যুগে লোক স্কুলের খাতা ছিড়ে চিঠি পাঠাত ভালোবাসার মানুষকে আর এখন ডায়েরিতে ভরে ভরে লিখে রেখে দিয়ে যে কি পায় পোলাপাইন!″

″মা তুমি বলবে কোথায় আমার ডায়েরি?″

″আমি জানি না রে বাবা,তা তোর জন্য এমন কিছু এনেছি যাকে দেখে তোর ডায়েরির ভুঁত মাথা থেকে নেমে যাবে।″

″আবার কোনো মেয়ের ছবি এনে থাকলে বলে দাও এখনই আমেরিকার টিকিট বুক করাব।″

″আরে একে রেখে কি কখনও আমেরিকা যেতে পারবি!এর জন্যই তো ছয় বছর বনবাস কাটলি,কি মনে করিস আমি কিছুু বুঝি না?″

আদৃতের সামনে আঁখির ছবি টাঙিয়ে বললেন শায়েলা মির্জা।অবাক হলো আদৃত।

″আঁখি।″

″হ্যাঁ আঁখি,মনে হয় তুই রাজি না,বাদ দে।চির কুমারই থাক তুই।″
মশকরা করে শায়েলা মির্জা চলে যেতে নিলে আদৃত উনাকে আটকালো।

″আরে আরে কোথায় যাচ্ছো মা,কে বলল আমি বিয়ে করব না!″

″মানে করবি?″

″ইয়ে মানে, হ্যাঁ।″

শায়েলা মির্জার ভ্রু উঁচানো কথার জবাবে আমতা করে মাথার পিছন দিক চুলকিয়ে সম্মতি জানাল আদৃত,শায়েলা মির্জা খুশিতে আত্নহারা।

″এই না হলে আমার ছেলে,দেখ তোর মা এখন তোর বিয়ে কীভাবে করায়।″

″কিন্তু মা এতে সমস্যা আছে,আমার মনে হয় না আঁখি মানবে বলে,কারণ ওর সদ্য ডিভোর্স হয়েছে।আমি চাই না এখন এসব নিয়ে ওর সাথে কিছু কথা বলা হোক,কিছুদিন যেতে দাও আমি নিজেই ওর সাথে কথা বলে নিব।″

″বুঝেছি,বাচ্চাদের মুখে বাবা ডাক শোনার জায়গায় দাদা ডাক শোনার ইচ্ছে হয়েছে তোর।″

″মানে!″

″মানে খুব সোজা,তোর হাতে ছেড়ে দিলে আরও একযুগ না পার করে দিবি আঁখিকে মনের কথা জানাতে,ছয় বছর আগে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আজকে নাতি নাতনী আমার কোলে থাকত।তুই জায়গায় বসে থাক,তোর মা তোর বিয়ে আঁখির সাথে করিয়েই দম নিবে।″
____________
আদ্রিশ কক্ষ ছেড়ে কোথাও বেরুবে তখনই রিদিকা কক্ষে প্রবেশ করে গেল,আদ্রিশ তাকে দেখে চমকে যায় অনেকটা।

″কি হয়েছে আদ্রিশ?″

″তোমার কি হয়েছে?কেমনটা দেখাচ্ছে তোমায়,কানের উপরের দিকে অনেকটা চুল উঠে এসেছে কি করে?″

আদ্রিশের কথায় রিদিকা ছোটে যায় আয়নার সামনে,দেখে ঠিকই তার একপাশের চুল অনেকটা উঠে এসেছে সে বুঝতেই পারে নি।

″কি হয়েছে রিদিকা?এমনটা হলো কেন?″

রিদিকা বুঝতে পারল বিষয়টা আদ্রিশের সামনে আসা থেকে ও আটকাতে পারবে না,তাই বলে দেওয়া উত্তম বলে মনে করল।সবকিছুই বলে দিল রিদিকা যা ওকে ডাক্তার বলেছেন।কথাগুলো শুনে আদ্রিশ একপ্রকার হেসেই দিল।″

″কি যে বলো রিদিকা,তোমাকে কেউ ভাইরাস কেন দিবে?তুমি কতো কিউট এন্ড সুইট,হয়ত ডাক্তার তোমার রোগের কোনো নাম খুঁজে না পেয়ে ভুলভাল কিছু বুঝিয়ে দিয়েছে তোমায়।তুমি চিন্তা করো না আমি তোমাকে অন্য বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব,সত্যিই তোমাকে এভাবে কেমন জানি লাগছে।তা আমি আজকে বাইরে যাচ্ছি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিব মাইন্ডে ফ্রেসনেস চাই আমার।এমনিই আঁখিকে নিয়ে অনেক টেনশনে আছি,কাল সকাল অব্দি নতুন কাজের লোক এসে যাবে তুমি থাকো আমি চলি।″

কথাগুলো বলে আদ্রিশ চলে গেল।রিদিকা রাগে পাশের ড্রেসিংটেবিলে লাথি দিল সজোরে।

″আমি অসুস্থ জেনেও এভাবে চলে গেল আর ওই আঁখি অসুস্থ হলে তো ঘর মাথায় তুলে নিত,আঁখিকে নিয়ে এখনও ভাবছে।তুমি জানো না আদ্রিশ তুমি কতো বড় ভুল করে গেছ।তুমি আমাকে জীবনে জড়িয়েছ আর আমাকে নিয়েই থাকতে হবে সে আমি যেমনই হই না কেন।তুমি শুধুই আমার।আর আমার না হলে কারো না।
আই লাভ ইউ আদ্রিশ,আই লাভ ইউ।″

আদৃতের ডায়েরি পড়তে মত্ত হয়েছে আঁখি,ডায়েরির প্রতি পৃষ্ঠায় শোভা পেয়েছে আদৃতের আঁখির সাথে কাটানো সকল মুহুর্তে, তার বিহনে বিরহ তিথী কাটানো আখ্যান,লেখনীর মাধুর্যে ফুটে উঠেছে তা নিঁখুত ভাবে।আমেরিকা থাকাকালীন সময় থেকে নিয়ে দেশে ফিরে আঁখির সাথে কাটানো সকল ক্ষণ সেখানে আলাদা মানে ছেঁয়ে আছে।

″প্রিয়সী তোমার স্মৃতিতে কাটালাম আর এক দীর্ঘ রাত্রী,হয়ত শুয়ে আছে অন্যের বাহুতে,তবে তোমারই বিহনে বিরহ যন্ত্রণা যে সঙ্গ নিয়েছে এই অধমের।″

″আজ এ কি হল আমার!সেই পুরাতন অনুভুতি আঁকড়ে ধরলো আচমকা,
সুখপাখির সেই কান্নামিশ্রিত স্বর আবারও উতলা করল এ মন।″

″যদি পারতাম পাখি নিঃস্ব করে দিতাম সে জন,যে করেছে তোকে নীড়হারা,মিছে পীরিতে গলিয়েছে তোর মন,করেছে আমাকে কাঙাল।″

″আশ ফিরে পেলাম সুখ,তোকে পাব কোনো ক্ষণে,আবারও ফাঁসব তোর কথার জ্বালে,আড়ালে হাসব ইচ্ছে করেই তোর কাছে হার মেনে।″

দু’দিন আগের লিখা।

″ভালোবাসি সুখপাখি তোমায়,আজও মনের গহীন থেকে।ফিরে আসো না কো,কথা দিলাম নিরাশ করব না কবু।
ভালোবাসব মনের গহীন থেকে,আগলে রাখব প্রাণ দিয়ে…″

এমনই অজস্র লিখা আদৃতের ডায়েরি জুরে আঁখিকে নিয়ে।যা স্পষ্ট প্রমাণ করে আদৃত এখনও আঁখিকে ততটাই ভালোবাসে যতটা ঠিক ছয় বছর আগে বাসত।আর যাই হোক এই মানুষটা কখনও তাকে ঠকাতে পারে না,আদৃত যে শুধুই আঁখিকে ভালোবেসে গেছে।আঁখির মনে জন্মালো আবারও এক আশার আলো,জীবনে প্রথম ভালোবাসার প্রেমে যেন আজ আবার নতুন করে পরল।ডায়েরিটা পড়তে গিয়ে আঁখির চেহারাতে ঝলকালো সুখের হাসি।

রিদিকা বাড়ির দরজা জানালা সব কিছু শক্ত করে লাগিয়ে নিয়েছে,বাড়ির সকল দিক নিজে ভালো করে দেখে নিয়েছে।

″হুম,যেই আসুক,আসবে তো কখনও আমায় তৃতীয় ডোজ দিতে,তবে সে তো জানে না রিদিকা কি জিনিস,যাদের উপর সন্দেহ ছিল সবকটাকে তাড়িয়ে দিয়েছি,এবার দেখি আসে কে।″

রাত ২ টা,আদ্রিশের বাড়ির পিছন দিকে দাঁড়িয়ে আছে হুডিওয়ালা কেউ একজন।

চলবে…