প্রাণনাশিনী পর্ব-০৫

0
1

#প্রাণনাশিনী
#পর্ব০৫
#সুহাসিনি_মিমি

কিচেনের এক পাশে দাঁড়িয়ে বাড়ির কাজের মেয়ে মর্জিনা। পরনের থ্রি পিসের ওড়নায় মুখ চেপে খিট খিটিয়ে হাসছে। আঞ্জু বেগম চোখ রাঙাতেই মুখটা একবারে চুপসে যায় মর্জিনার। হন হন করে ছুটে যায় রান্না ঘরে। এসব কান্ডে একটুও ভ্রূক্ষেপ নেই সুস্মিতার। যেন এসবে ভীষণ অব্যস্ত সে। সহসা এগিয়ে এসে বসলো বৃদ্ধা আঞ্জু বেগমের পাশে। পরপর পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে চড়া গলায় আওড়ালো,

–এভাবে হাইসো নাহ বুড়ি। তোমার ওই গরম মেজাজ ওয়ালা নাতিরেই আমি বিয়ে করবো। দেখে নিও!

আঞ্জু বেগম নাতনির কথায় তেমন একটা পাত্তা দিলো বলে মনে হলোনা। কাঠ কাঠ গলায় প্রত্তুত্বর করলো,

–“সেই আশায় থাকলে সারাজীবন আয় বুড়ি হইয়া থাকতে হইবো তোমার সুসু রানী!

–“উহু! দাদি তোমাকে হাজার বার না করসি এই নামে আমারে আর ডাকবা না। এতো সুন্দর একটা নাম। সেটা বাদ দিয়ে এসব কোন ধরণের নামের বাহার বানাও তুমি আল্লাহ জানে!

আঞ্জু বেগম ঠোঁটের কোণে একচিলতে ব্যঙ্গ হাসি টেনে বলে,

–“ছোট বেলায় আমার বিছানায় প্রস্রাব কইরা ভরাইয়া ফেলার সময়ই তোর নাম আমি সুসু রাখসিলাম। আমি হেইয়া কইয়াই ডাকমু তোরে!”

সুস্মিতা কপাল চাপড়ালো। এই মহিলার সঙ্গে কথা বলাই বৃথা ভেবে উঠে দাঁড়াতেই যাবে তখণ তিয়ান কে দেখে পুনরায় বসে পরলো সেখানে। সবেই বাইরে থেকে এসেছে তিয়ান। পায়ে কাদা ভর্তি জুতা। ঘামে তকতকে শরীর। পরনের গেঞ্জি টা শরীরের সাথে লেপ্টে আছে ঘামে ভিজে।সোফায় বসে থাকা সুস্মিতা কে দেখে বললো,

–আরেহ সুস্মি আপু কখন এলে?

–এইতো ভাই প্রায় ঘন্টা দুয়েক। খেলতে গিয়েছিলি নাকি?

–“হ্যাঁ! ঐতো সামনের মাসে কলেজে একটা ম্যাচ। সেটারই প্রিপারেশন চলছে।”

–“যাক ভাইয়ের মত হসনি তাহলে!”

–“এভাবে বলছো কেন আপু? ভাইয়ার সাথে আমাকে কম্পেয়ার করাও তো ভুল। ভাইয়া তো সবদিক থেকেই আলরাউন্ডার।

সুস্মিতা তপ্ত কণ্ঠে আক্ষেপের সুরে বলে,

–ওই আলরাউন্ডার হয়ে লাভ আছে? তোর ভাইয়ের আশায় থাকতে থাকতে বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে আমার। শেষমেশ তোর ভাই আজ এসে আমায় বুড়ি বলে সম্মোধন করে গেলো!

তিয়ান ঠোঁট টিপে হাসলো আড়ালে। বুঝতে দিলোনা তার হাসির কারণ। তৎযলদি নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে ভিতরে যেতে যেতে শুধালো,

–“ভাই আমার কখন কি করে সেটা তোমার আমার,সবার, কারোই বুঝার ক্ষমতা নেই। তুমি বরং আমার ভাইয়ের আশা ছেড়ে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করে নাও। দেখা গেলো জনম পেরিয়ে যাবে তোমার, আমার ভাইয়ের আশায় থেকে থেকে।

–“কেন আমার বোন কোন দিক থেকে খারাপ তিয়ান ভাই? তুমি যানো আমার কলেজের সিনিয়র ভাইয়ারা আপুর জন্য কতটা ডেসপারেট! শহরের মডেল ছেলে গুলো পর্যন্ত আমার আপুকে প্রপোজ করেছে। তোমার ওই কাইল্লা ভাই আমার আপুকে তাবিজ করেছে সিউর। নাহলে এতো সুন্দর ছেলেদের কেউ রিজেক্ট করে?

নিচে নামতে থাকা আরোহীর কথায় তিয়ান নাক কুচকায়। বেঙ্গাত্মক সরে আওড়ায়,

–“আমার ভাইকে তোর কোন দিকে থেকে কালো মনে হয়? তোর ওই শহরের মডেলরা আমার ভাইয়ের কাছ থেকে টিউশন নেয় বুঝেছিস?

–হইসে তোমাদের ওই মেজাজ টাই আছে!যেটা সবসময় ৪৪০% ভোল্টের হিট হয়ে থাকে। কিছু হলেই ছেৎ করে উঠে!”

সুস্মিতা বোন কে চোখ রাঙালো। বোনের চোখ রাঙানো দেখে থেমে যায় আরোহী। ছোট বেলা থেকে তিয়ান এর সঙ্গে সাপে নেউলের সম্পর্ক আরোহীর। তার মানে এমন নয় যে নাওফিক কে পছন্দ করেনা আরোহী। ভাই হিসাবে যথেষ্ট পছন্দ করলেও নিজ বোনের কথা ভেবেই রাগ তিরবিড়িয়ে উঠে আরোহীর। তার এতো সুন্দর বোন যার জন্য কত ছেলে পাগল অথচ তার ভাই কোনো পাত্তাই দেয়না। তার বোন কি ফেলনার জিনিস নাকি?

**

ঘড়ির কাটায় সকাল ঠিক ৯ টা। বাইরের ভেপসা গরমে অতিষ্ট গ্রামবাসী।সুবহা সদ্য গোসল করে এসে দাঁড়িয়েছে আয়নার সামনে। স্কুলে যেতে হবে তাকে। গতকাল সেই বাঁচা বেঁচেছে সুবহা। তার মায়ের কাছ থেকে। এই শিউলি মেয়েটা বারবার তাকে ফাঁসিয়ে দেয় নিজের অদ্ভুত কর্মকারখানা দ্বারা।এইতো গতকাল মায়ের হাত থেকে ধরা পড়তে পড়তে প্রাণে বেঁচেছে সে। তার মা আচমকায় বাড়িতে এসে দরজায় নক করেছে।শিউলির হাতে তখন ছিল মনি আপুর ফোনটা। ভাগ্যিস দরজা টা লাগানো ছিল বিধায় বেঁচে গেছে সে। নাহলে কি হতো তখন!

ভেবেই তপ্ত শ্বাস ফেললো সুবহা। বিছানার উপর এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে রাখা বোরকা গুলো। দ্বিধায় ভুগছে মন। প্রথমত বোরকা পরে অব্যস্ত নয় সুবহা। বোরকার সাথে আবার হিজাব পেঁচিয়ে বাধঁতে হয়। যেটা দম বন্ধ হয়ে আসে সুবহার। দ্বিতীয়ত তার মা! এখনো জানায়নি সুবহা তার মাকে কিছু। যদি বোরকা পরা দেখে তার মা বকে বা জিজ্ঞেস করে কেন হঠাৎ বোরকা পড়তে হবে তাকে? এই সমস্ত নষ্টের মুল শুধু একজনই। ওই বেটা চেয়ারম্যান এর পোলা নাওফিক! কেন যে হাত ধুয়ে তার পিছনেই পরে থাকে এই বেটা জানেনা সুবহা। নিশ্চই ওই বেটায় তার ভাইকে উস্কেছে আর সেইজন্যই তার ভাই তার জন্য বোরকা কিনে এনেছে। নাহলে তার ভাই জানবে কিভাবে? সারাদিন তো থাকে ওই বেটার সাথেই, তার মানে ওই বেটায় বলেছে এই ব্যাপারে সিউর সুবহা। আচ্ছা তার সাথে তো শিউলি ও থাকে! তাহলে শিউলি কে কেন পড়তে বললো নাহ? শুধু শুধুই কি এই বেটাকে সুবহা জাত শত্রু বলে উপাধি দিয়েছে?

খুঁজে খুঁজে খাটের উপর থেকে একটি কালো রঙের বোরকা বেছে নিয়েছে সুবহা। কালো বোরকা টা অনেক ঢিলে ঢালা। মনে হয় সুবহার মত দু তিনটা একসাথে ঢুকতে পারবে সেটার মধ্যে। এমন বোরকা পরে গেলে স্কুলের মেয়েরা তার উপর হাসবে নির্ঘাত। ভেবেই ফিরে একবার তপ্ত শ্বাস ছাড়লো সুবহা। বোরকা টা নিয়ে পরে দাঁড়ালো আয়নার সামনে। খুঁজে খুঁজে বোরকার সাথে মিলিয়ে কালো রঙা একটি ওড়না নিয়ে বাধঁতে লাগলো হিজাবের ন্যায়। তবে বিপত্তি বাঁধলো সেখানেই। হিজাব বাধে কিভাবে সেটাই তো জানেনা সে! আর এমন পিছলা কাপড়ের ওড়না তো মাথায় ও দেয়া যাবেনা। পরে যাচ্ছে ক্ষনে ক্ষনে। সুবহার এই মুহূর্তে মন চাচ্ছে ওড়না টা দিয়ে নাওফিক এর গলায় পেঁচিয়ে মারতে পারলে হয়তো শান্তি লাগতো কিছুটা! বেটা অসহ্য জামেলা কোথাকার!

নিজ বাড়ি থেকে চোরের মত লুকিয়ে চুরিয়ে বের হচ্ছে সুবহা। শিউলি ডাকতে আসার আগে ভাগেই বাড়ি থেকে বিদেয় হতে হবে তাকে। পরপর দুদিন কোচিং মিস গেছে তার। আজ মায়ের সামনে এমন ভেসে পড়লে আবার তার মা কি কান্ড ঘটিয়ে দেয় কে জানে? সুবহা চায়না আজ ক্লাস মিস দিতে। বাড়িতে একা ভালো লাগেনা তার। এই শিউলি বাড়িতে এসে তাকে এই ভেসে দেখলেই চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় তুলবে। তাই শিউলি আসার আগেই নিজ বাড়ি থেকে চোরের মত লুকিয়ে চুরিয়ে পিছনের গেইট দিয়ে বেরিয়েছে মাত্রই। কালো রঙের বোরকা সাথে কালো হিজাব। গোলগাল ফর্সা বদন খানা যেন আরো আকর্ষণীয় লাগছে। দূর থেকে ভেসে উঠছে কালোয় মুড়া ফর্সা বদন খানা। তবে পিছনে লুকিয়ে বাড়ির দিকে চেয়ে চেয়ে বেরুতে গিয়ে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগলে পেছনে তাকাতেই চোখে পরে শিউলিকে। শিউলি সুবহা কে প্রথমে চিনতে বেশ কিছুটা সময় নেয়। থমকে দাঁড়ায় মস্তিস্ক সজাগ হয়ে উঠে। নিজ বান্ধবী কে এমন ভেসে দেখে ব্রু প্রসারিত করে প্রশ্ন করে বসে,

–“বাড়ির থেইকা চোরের মত বাইরে হইতাসোস কেন?

সুবহা বুকে থু থু দেয়। শিউলির হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় বাড়ি থেকে দূরে। বেলতলার ঘাট দিয়ে যাবে তারা। সেই পথে হাটতেই হাটতেই সুধায়,

–“আমারে চিনতে পারসোস? আমারে কেমন দেখা যায়রে?

শিউলি বান্ধবী কে একবার আগা গোড়া পরখ করে। ঠোঁট বাকিয়ে বলে,

–“বেশি খারাপ নাহ! আমার জমিনা নানীর মত লাগে।”

বলেই খিল খিলিয়ে হেসে উঠে শিউলি। সুবহা চিমটি কাটে শিউলির হাতে। ব্যথায় চোখ মুখ কুঁচকে নেয় শিউলি। হাত ডলতে ডলতে ফিরে প্রশ্ন করে,

–“এডি কে কিন্না দিসে তোরে? চাচায়?

–“নাহ! শ্রেয়ান ভাই গতকাল নিয়া আসছে। শুধু একটা না অনেকগুলা একসাথে। বলসে এখন থেইকা স্কুলে এডি পইড়া যাইতে।

শিউলির পা থেমে যায় রাস্তায়।বিস্মিত ভঙ্গিতে চেয়ে থাকে বান্দুবীর দিকে কীয়ৎক্ষণ ।পরপর বলে উঠে,

–“কি কস! শ্রেয়ান ভাই এতো টাকা পাইলো কইত্তে? আমার তো কেমন সন্দেহ সন্দেহ হইতাসে।”

–“মানে?

–এই শ্রেয়ান ভাই তো কোনো কাজ কাম করেনা। এই বোরকার অনেক দাম। আমি মনি আপার ফোনে দেখসি একটা বোরকার দাম ৪ হাজার কইরা। আপায় অর্ডার করসিলো একদিন একটা। পরে আমাগো বাড়ির লোকেশন দেয়ার পর ওই বেডি কইলো এতো দূর অর্ডার নেয়না। আর শ্রেয়ান ভাই তোরে এতো গুলো বোরকা কিন্না দিলো কেমনে?

–“ঐটা আমি জানমু কেমনে। আমি তো ভাবসি ৩০০ – ৪০০ কইরা হইবো!

–“তোরে আমি হুদ্দাই ভুন্দি ডাকি? ছেড়ি বেয়াক্কল! তুই আসলেই একটা ভুন্দি!

–হইসে চুপ থাক এখন। ভুন্দিই ভালো! তোর মত এতো চালাক হওয়া লাগবো না আমার। অতি চালকের গলায় ধরি পরোস নাই ঐটা?

–হো পাইসো তো শুধু এই একটাই লজিক! এই দুনিয়ায় এখন চালাক না হইলে টেকা মুশকিল।মানুষ ব্যবহার কইরা ছাইড়া যাইবো বুঝতেও পারবা নাহ!”

–হইসে বইন আমার আর বুঝা লাগবো নাহ। যলদি কর। দেরি হইলে জামাইল্লা আজকে আর ছাড় দিতো নাহ।”

বলেই হাঁটতে শুরু করলো দুজনেই। তবে দু কদম এর বেশি আর পা বাড়াতে পারলোনা দুজনের কেউই। সামনে বট গাছের নিচে বাইকে হেলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ টাকে দেখা মাত্রই থেমে যায় তাদের পদাচরণ। কালো থ্রি কোয়াটার প্যান্ট সাথে কালো টি শার্ট পরা পুরুষ টাকে আজও ঠিক এই সময়ে এখানে উপস্থিত দেখতে পাবে কল্পনা করেনি তারা কেউই । বার বার কি কাকতালীয় ভাবেই ওদের সামনেই এই লোক এসে পরে?

–“কিরে ছেড়ি দাড়াইয়া রইসোস কেন। হাট!

–“শিউলি রে এই বেডায় আজও এখানে কি করে? এর কি বাড়ি ঘর নাই?

–“আরেহ ভয় পাইস না। আইজকা তো বোরকা পরা আসোস! আজ আর কিসু কইবো নাহ।

ছোট ছোট কদমে এগিয়ে যায় সুবহা শিউলির হাট খামচে ধরে। দূর থেকেও কালোর আড়ালে ফর্সা মুখা খানা চোখ এড়ায় নাহ দাঁড়িয়ে থাকা যুবকের। এতক্ষন ফোনে কারো সাথে কথায় বলায় ব্যস্ত থাকলেও সুবহা দের কাছাকাছি আসতেই ফোনটা পকেটে পুড়ে রেখে ডাক দেয় সেদিকে। তবে আজ আর সুবহা কে নয় বরং তার সাথে থাকা শিউলিকে উদ্দেশ্য করে ডেকে বলে,

–“এদিকে আয়!

শিউলো প্রথমে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেও নিজেকে যথা স্বাভাবিক করে নিয়ে বড় বড় কদমে এগিয়ে যায় সেদিকে। এই লোকটাকে এড়ানোর সাহস নেই কোনো নারীর পক্ষে। সুবহা সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে । মনে মনে সস্থির শ্বাস ছাড়লো সুবহা তাকে না ডাকাতে।

–“কোচিং এ যাচ্ছিস?

–জিহ নাওফিক ভাই। কিছু বলবেন?

–“কোচিং ছুটি হয় কখন তোর?

–“১০:৩০ টায়।

–“আজকে কোচিং শেষ হইবো ১২ টায়।

আকস্মিক এহেন কথায় ভড়কায় শিউলি। ছোট্ট মস্তিষ্কে এমন ভারী কথা যেন ঢুকে না তার। হাবলার মত তাকিয়ে প্রশ্ন করে বসে,

–“মানে?

–“মানে বাসায় বলবি আজ তোদের কোচিং ১২ টায় শেষ হবে। এক্সট্রা ক্লাস নিবে জামাল স্যার!

–কি কোন নাওফিক ভাই! কই স্যার তো আমাগো কই নাই আগে।”

–“তোর কি কি পছন্দ রে শিউলি?

নাওফিক এর এহেন বাঁকা বাঁকা প্রশ্নে আবারো কেবলা কান্তর ন্যায় তাকিয়ে থাকে শিউলি।

–“ধর আজকের জন্য আমি তোর সেন্টাক্লোস! তোর মনের যত ইচ্ছা আছে সব আমায় বল। তোর কি কি খাইতে মন চায়? কি কি কিনতে মন চায়? আমি তোর সব আবদার পূরণ করবো আজ!

শিউলির মাথা যেন বিস্ময়ের ভাজ ভেঙে পরে। আশ্চর্য চোখে ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন।তার চতুর মস্তিষ্কও যেন দুর্বল হয়ে পরে এই লোকের সামনে আসলেই।

চলবে…..