প্রার্থনায় রবে তুমি পর্ব-০১

0
1287

#প্রার্থনায়_রবে_তুমি
#পর্ব_১
#Saji_Afroz

-বাসা থেকে পালিয়েছেন নাকি?
ছেলেটির কথা শুনে ভ্রু জোড়া কুচকায় ইধা । ও নিজেই ছেলেটির সঙ্গে আগ বাড়িয়ে কথা বলেছে । কারণ ও যে বাসাটি খুঁজছে তা পাচ্ছে না ৷ ভাবলো ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করলে সাহায্য করবে । কিন্তু এমন একটা প্রশ্ন করে বসবে ভাবেনি ।

ইধা আমতাআমতা করে বলল, আমায় দেখে এমন মনে হলো কেন?
-এত বড়ো বড়ো দুটো ব্যাগ, সাথে কেউ নেই, চোখে মুখে ভয় স্পষ্ট । এইজন্য আরকি!
-চোখে মুখে ভয় নয়, ক্লান্তির ছাপ । যেটা আপনি বুঝেননি ।
-হয়তোবা! কার বাসায় যাচ্ছেন?
-ঠিকানাটা চেনেন?
-আমাদের এলাকায় অপরিচিত মেয়ে দেখছি । আগে আপনার সম্পর্কে জেনে নিই!
ইধা বিরক্ত হয়ে বলল, প্রয়োজন নেই আপনার সাহায্যের ।

এই বলে হনহনিয়ে ও চলতে শুরু করে । কিন্তু ব্যাগ গুলোর ভারে ওকে ধীরে চলতে হয় । ওর পিছু নেয় সেই ছেলে । ও বলতে থাকলো, হ্যালো ম্যাডাম! আমি অবশ্যই সাহায্য করব । আপনার দূর্বলতা না থাকলে ডিটেইলস বলতে কী অসুবিধে?

ইধা কোনো কথা না বললে ওর সামনে এসে দাঁড়ায় ছেলেটি । ইধা ঘাবড়ে যায় । ও শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নিজের জায়গায় । ছেলেটি ওর কাছে এসে বলল, আমি কে জানেন?
-বখাটে ।

পেছনে ফিরে অন্য একটি ছেলেকে দেখতে পায় ইধা । এই ছেলেটিকে দেখে অপরজন আমতাআমতা করে বলল, রুজাইন ভাই আপনি!
-কী হচ্ছে এখানে?
-আসলে আমি উনাকে সাহায্যই করতে এসেছি ।
রুজাইন ওদের পাশে এসে বলল, এর নমুনা দেখতেই পাচ্ছি ।
-ভাইয়া আসলে…
-একটা কথাও না । যা এখান থেকে ।

রুজাইনের কথা শুনে ছেলেটি প্রায় ছুটেই চলে যায় । ইধার উদ্দেশ্যে রুজাইন বলল, কী অসুবিধে আপনার?
-কোনো অসুবিধে নেই । আপনাকে থ্যাংকস ।
-আমাকে বলতে পারেন আপনি ।
-একজন এসে উপকারের বদলে ডিস্টার্ব উপহার দিলো । আবারও একই পথের যাত্রী আমি হতে চাই না ।

রুজাইন গম্ভীর কণ্ঠে বলল, আমাকে ওর মতো বখাটে মনেহয় আপনার?
-তাকেও আমার কিছু মনে হয়নি । কিন্তু আসল রূপ দেখালো তো! প্লিজ আপনি সরুন । আমি হয় কোনো মুরুব্বি থেকে সাহায্য নেব নাহয় কোনো মেয়ে থাকে । আর কোনো ছেলের সাহায্য আমার চাই না ।
-মন মানসিকতা ঠিক করেন । সবাইকে এক ভাববেন না ।

এই বলে রুজাইন চলে যায় । ইধার ফোন বেজে ওঠে । মাইশার ফোন রিসিভ করে ও বলল, এতক্ষণ কোথায় ছিলি! কতবার ফোন দিলাম!
-আরে আমার পেটের সমস্যা হয়েছে । ওয়াশরুমে ছিলাম । ফোন সাইলেন্ট থাকায় শুনিনি ।
-তাই বলে এতক্ষণ!
-আচ্ছা তুই কোথায় বল?
-টেক্সটাইল রোডে ।
-ওখানেই থাক । আমি আসছি ।
-প্লিজ দ্রুত আয়! আমার জান বের হয়ে যাচ্ছে ।

পাঁচ তলার সিঁড়ি বেয়ে উপরে এসে হাঁপাতে শুরু করে ইধা । মাইশা দরজার তালা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ও ভেতরে ঢুকে পানির বোতল খুঁজতে শুরু করে । দারোয়ান চাচা ওর ব্যাগ গুলো ভেতরে এনে দেয় । মাইশা ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল নিয়ে এগিয়ে দেয় । ও ঢকঢক করে পানি পান করে বলল, আন্টি বাসায় নেই?
-আম্মুর আসতে আসতে বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয় । স্কুল শেষে টিউশনি করায় । সেই সকালে যায়!
-তাহলে আন্টির বেশ কষ্ট হয় ।
-বাবা নেই । কষ্ট না করলে চলব কীভাবে? মাথার উপরে ছায়া হয়ে থাকার মতো একটা ভাইও নেই । আমাদের দুই বোনের জন্যই মা এর এই কষ্ট ।

এই বাসায় ভাড়া থাকেন মাইশার পরিবার । ইধা মাইশার ফেইসবুকের পরিচয়ের বান্ধবী । ওর বাসা সাতকানিয়া । কাকতালীয়ভাবে দু’জনেই অনার্সে একই বিভাগে চট্রগ্রাম কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে । এর আগে একবার ওদের দেখা হয়। সেটা ছিল ওদের ভর্তির দিন। দু’জনে চট্রগ্রাম কলেজে ভর্তি হয় । এখানে হোস্টেল থাকতে চেয়েছিল ইধা । কিন্তু মাইশার কথাতে ওদের বাসায় থাকতে রাজি হয় । একটা রুমে ও থাকবে । বিনিময়ে ভাড়া দেবে ৷ এতে করে মাইশার পরিবারেরও উপকার হবে আর ইধাও নিরাপদ একটা জায়গা পাবে । এই ভেবেই ইধা এখানে আসতে রাজি হয়েছে ।
মাইশা ইধাকে ওর রুমে নিয়ে আসে । ও বলল, আমি আর তুই এখানে থাকব । অন্যরুমে থাকবে মা আর মিলি । অসুবিধে নেই তো?
-তুই আমার সঙ্গে থাকলেই সুবিধে । কারণ আমি রাতে একা থাকতে ভয় পাই ।
মাইশা হেসে বলল, ওয়াশরুম আছে এই রুমে । বারান্দা দুই রুমেই আছে ৷ আয় তোকে দেখাই বাসাটা ।
-তার আগে আমার ফ্রেশ হওয়া প্রয়োজন ।
-আচ্ছা । আমি তোর খাবার রেডি করি ।

ইধা ফ্রেশ হয়ে আসে। বারান্দায় এসে সারাদিনের ক্লান্তিটা যেন দূর হয়ে গেল ওর। বারান্দাটা ছোটো। কিন্তু পরিপাটিভাবে সাজানো। একপাশে ফুলের টব আরেক পাশে রয়েছে একটি ঝুলন্ত দোলনা। ঠান্ডা বাতাস এসে লাগছে ইধার শরীরে। ও দোলনায় এসে বসতেই যাবে তখনি মাইশা এসে পড়ে। প্লেট ভর্তি ভাত তরকারি নিয়ে আসে ওর জন্যে। এসব দেখে ইধা বলল, এত ভাত আমি খাই না রে৷
-এতও না! দূর থেকে এলি। খিদে পায়নি?
-তা পেয়েছে।
-খেয়ে নে।
-দে।
-এখানে বসে খাবি?
-হু। ভালো লাগছে।

দোলনায় বসেই খাবার খেয়ে নেয় ইধা। খাওয়া শেষে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দেয় ও৷ আর শুতেই ঘুমিয়ে পড়ে ও। রাজ্যের ঘুম ছিল দুচোখে!
ঘুম ভাঙে ওর মাইশার ডাকে। চোখ কচলে উঠলো ও৷ মাইশা বলল, আম্মু এসেছে। খুঁজছে তোকে।
-ও আচ্ছা! আর মিলি?
-সে তো বিকেলেই এসেছিল। ঘুম বলে ডাকিনি তোকে।

আড়মোড়া ভেঙে শোয়া থেকে উঠে পড়লো ইধা। জামাকাপড় ঠিক করে মাইশার সঙ্গে ড্রয়িংরুমে আসলো ও।
মরিয়ম জান্নাত সোফায় বসে চা পান করছিলেন। ওকে দেখে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললেন, কেমন আছ মা?

ইধা তার কাছে এসে বলল, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
-আমিও ভালো। কেমন লাগলো আমার ছোট্ট সংসার?
-ক্লান্ত ছিলাম তাই এখনো পুরো বাসা ঘুরে দেখা হয়নি। তবে যতটুক বুঝেছি আপনারা বেশ পরিপাটি।
-এ বাড়িতে আমরা অনেক বছর ধরেই ভাড়া আছি। স্বামী না থাকলেও মেয়েদের কোনো অভাব আমি বুঝতে দিইনি। মাইশার কথা রাখতে তোমাকে আমাদের সঙ্গে রাখা। টাকার প্রয়োজনে নয়। তাই আশা করছি বাসার নিয়ম কানুন গুলো তুমিও মেনে চলবে।
-কেমন নিয়ম?

মরিয়ম জান্নাত ওর প্রশ্ন শুনে হেসে ফেললেন। তিনি বললেন, ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। সব বাসায় যেমন নিয়ম থাকে তেমনি। ওরা আমার মেয়ে, তুমিও মেয়ের মতো থাকবে। ভাড়া থাকছ ভেবে মনগড়া কাজ করবে না৷ নিজের বাড়িতে যেমন থাকো তেমনি থাকবে। এই আরকি।

ইধা হ্যাঁ সূচকভাবে মাথা নাড়ে। মিলি আসলে ইধা ওর দিকে তাকিয়ে বলল, কেমন আছ মিলি?
-ভালো। তুমি?
-আমি ক্লান্ত ছিলাম। তোমাকে দেখে ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। কী মিষ্টি দেখতে তুমি!
-তুমিও বেশ মিষ্টি।
-এই মিষ্টির মেয়ের জন্য আমি অনেক গুলো চকোলেট এনেছি। নেবে?

একথা শুনেই ইধার কাছে ছুটে আসে মিলি। ওকে নিয়ে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় ইধা। মরিয়ম জান্নাত তাকিয়ে রইলো ওদের পথের দিকে।
ইধা দেখতে ভালো। সুন্দরীদের তালিকায় ওকে নি:সন্দেহে রাখা যায়। ফর্সা গা এর রঙ, গোলাপি ঠোঁট, কালো কুচকুচে লম্বা চুল আর হাসলে পড়ে গালে টোল। অচেনা শহরে মেয়েটির অভিভাবক এখন তিনি। সুন্দরী মেয়ের অভিভাবক হওয়াটাও যেন দু:চিন্তার বিষয়। তবে ইধাকে দেখে ভদ্রই মনে হচ্ছে। চঞ্চলতা নেই ওর মাঝে। অবশ্য প্রথম দেখাতে কিছু বলা যাচ্ছে না। ধীরেধীরে বোঝা যাবে ও কেমন। নিজের বাসায়ই যখন থাকবে, তখন চোখ-কান খোলা তো রাখতে হবে।

সকালে ঘুম ভেঙে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চমকায় ইধা। সকাল দশটা বাজতে চলেছে! নতুন জায়গায় এসে এভাবে চললে হবে! অন্যরা কী ভাববে ওকে নিয়ে! এই ভেবে তড়িঘড়ি করে শোয়া থেকে উঠে ইধা। ড্রয়িংরুমে এসে মাইশাকে দেখতে পায় ও৷ ইধা নরমস্বরে বলল, আমাকে ডাকবি না?
-ডাকার কী আছে? ক্লাস শুরু হয়নি এখনো। ঘুমোতেই পারিস।
-আন্টি কী মনে করেছেন!
-কিছুই না। আম্মু ওতটাও কঠোর না। ফ্রেশ হয়ে নে। আমি নাস্তা দিচ্ছি।
-আমায় বল কী করতে হবে। সবসময় তোর খেদমতের প্রয়োজন নেই।
-ক’টা দিন করি। এরপর আর করব না। ফ্রেশ হয়ে আয়।

ইধা ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা সেরে নেয়। মাইশা বলল, রান্নাবান্না আম্মু ভোরে উঠেই করে ফেলে। তবে বাজার প্রায় আমায় করতে হয়। কতদিকে সামাল দেবে বেচারি।
-ওহ!
-আজ কিছু বাজার করতে হবে। আমি বরং সেরে আসি। বিকেলে আবার পড়াতে যেতে হবে আমায়।
-আমিও যাব তোর সঙ্গে।
-প্যারা নিস না।
-যাই! আন্টি আমায় মেয়ে বলেছেন। মেয়ের মতো থাকার চেষ্টা আজ থেকেই নাহয় শুরু করি।
-চল তবে।
-আর শোন না? আমায়ও টিউশনি জোগাড় করে দিতে পারবি?
-তুই বলার আগে থেকেই খোঁজ রাখছি আমি। আশাকরি পাব তোর জন্যেও।
-সব তো জানিস। ভীষণ প্রয়োজন আমার।
-ওত ভাবিস না। ম্যানেজ হয়ে যাবে।

দুই বান্ধবী আসে মুদি দোকানে। মাইশা বাজারের লিস্ট বলার সময়ই একটা ছেলে কণ্ঠ শুনতে পায়। পাশে তাকাতেই গতকালকের ওই বখাটেকে দেখলো ইধা। মাইশাও ওকে দেখে বলল, আলিম ভাই যে?

মাইশার পাশে ইধাকে দেখে আলিম বলল, কী খবর মাইশা? কাকে নিয়ে এলে বাজার করতে?
-ও আমার বান্ধবী। আমাদের সঙ্গেই থাকবে। আসলে এখানের কলেজে অনার্সে আমরা একসঙ্গে এডমিশন নিয়েছি।
-ও তাই বলো! কাল বাসা খুঁজে পাচ্ছে না তোমার। আমি হেল্প করতে এলাম আর ভুল বুঝলো আমাকে।
-তাই নাকি?
-জিজ্ঞাসা করো।

ইধা এসবের কোনো উত্তর না দিয়ে বলল, লিস্টে আর কিছু যোগ করবি মাইশা?

মাইশাও ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আলিম বুঝতে পারে ওর সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নয় ইধা। তাই ও দূরে সরে যায়। কিন্তু ঠিকই তাকিয়ে থাকে ইধার দিকে। মেয়েটির সঙ্গে কাল ওমন ব্যবহার না করলেই পারতো। এটা ভেবে আফসোস হয় ওর।

বাজার করার মুহুর্তে হুট করে ফোন বেজে উঠে মাইশার। ও ফোন রিসিভ করে ওপাশের কথা শুনে বলল, আমি এখুনি আসছি।

ফোন রাখতেই ইধা চিন্তিত কণ্ঠে বলল, কী হলো?
-রাস্তার ওপারে আমার ফুফুর বাসা। তার নাকি শরীর খারাপ করছে। তার বাসায়ও কেউ নেই। তুই বাসায় যা। আমি দেখে আসছি।
-আমিও যাই?
-তুই কিছু বাজার নিয়ে বাসায়ই চলে যা। বাকি গুলো আমি নেব। গিয়ে ভাতটা রান্না কর। তরকারি করা আছে। মিলি দুপুরের দিকে আসবে আজ। ও এই সময়েই আসে। কাল ওদের স্কুলে প্রোগ্রাম ছিল তাই দেরী হয়েছে।
-আচ্ছা তবে।

মাইশা চলে গেলে ইধা কিছু বাজার নিয়ে দোকান থেকে বেরুতে যায়, তখনি ওর ধাক্কা লাগে রুজাইনের সঙ্গে। রুজাইনও দোকানে এসেছে। দু’জন দু’জনকে দেখে ভ্রু কুচকায়। কোনো কথা না বলে পাশ কাটিয়ে হাঁটতে শুরু করে ইধা। ওর হাতে বাজার থাকায় ধীরে হাঁটছে। কী ভেবে পেছনে ফিরতেই চমকালো ও। রুজাইন এদিকেই আসছে। তার মানে রুজাইন ওর পিছু নিয়েছে? দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করে ইধা। আবারও পেছনে তাকিয়ে দেখলো, রুজাইন এখনো আসছে। তার মানে ওর ধারণা সত্যি! কী চায় এই ছেলে! ইধা প্রায় ছুটেই চলে আসে। মেইন গেইট খুলেও ভেতরে আসে। বাজার গুলো নিচে রেখে হাঁপাতে থাকে ও। গেইটের শব্দ শুনতেই সেদিকে তাকায় ইধা। রুজাইনকে দেখে বিস্ময় এর শেষ পর্যায়ে চলে যায় ও। রুজাইনও ওকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। দু’জনে একসঙ্গে বলল, আপনি!

রুজাইন কিছু বলার আগেই ইধা বলল, ফলো করতে করতে বাসা অবধি চলে এসেছেন! ছেলে মানুষের এসব বেহায়াপনা আমার একদম পছন্দ নয়।
-দেখুন আপনি…

ওকে কোনো কথা বলতে না দিয়ে ইধা বলল, কী বলবেন? আত্মীয় এর বাসা এইটা? হেনতেন বলে বোঝাবেন আমাকে!

ওর চ্যাঁচানোর আওয়াজে দারোয়ান এসে উপস্থিত হয়। দারোয়ান দ্রুত ইধার কাছে এসে বলল, আপনি মাইশা আপার বান্ধবীটা না?
-জি। চিনতে পেরেছেন আমি এখানেই থাকি?
-জি আপা।
-তবে এই লোককে এখুনি বের করেন।

দারোয়ান জিভে কামড় বসিয়ে বলল, সম্ভব না আপা। কীসব বলছেন আপনি!

ইধা অবাক হয়ে বলল, কেন?
-কারণ এইটা তার বাবার বাসা। মানে তারই বাসা। আমাদের মালিকের একমাত্র ছেলে রুজাইন বাবা।

কথাটি শুনে নিজের জায়গায় শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ইধা। রুজাইন বিরক্তভরা কণ্ঠে দারোয়ানকে বলল, কার সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হবে শিখে নিতে বলো তাকে।

এই বলে হনহনিয়ে উপরের দিকে উঠতে থাকে রুজাইন। ইধা খেয়াল করলো, ওর হাতেও কিছু বাজার। এটা আগে কেন খেয়াল করলো না! তবে অন্তত ধারণা পেত, রুজাইন এই বাড়িতেই থাকে! মালিকের ছেলের সঙ্গে এই আচরণ করা মোটেও উচিত হয়নি ওর! মোটেও না।
.
চলবে