প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব-০২

0
1

#প্রিয়তে_তুমি_প্রাণ💜
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_২
কাঁদতে কাঁদতে তার চোখ অসম্ভব রকম ফুলে গেছে। বাচ্চাদের মতো ফুপিয়ে কাঁদছে প্রিয়তা। অশ্রুর সাথে মিশে একাকার চোখের কাজল। নিজের মুখ আয়নাতে দেখতে পেয়ে আবারো কেঁদে উঠলো।বাবা কোথায় বিয়ে দিলো তার। তার বর একটা মাতা‘ল। বিয়ের প্রথম রাতেই মাতলা‘মি করে তার ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। সে তো একবার ফিরে দেখলোও তাকে। সেই মানুষটি এমন করল কেন? তাহলে প্রিয়তা যা ভাবছিল তাই কি ঠিক। তাঁর বিশেষ কেউ ছিলো! সেই কারনেই তিনি ওভাবে বিয়ের আসর ছেড়ে উঠে গেলেন। এখানে কিভাবে সংসার করবে সে?

ক্লান্ত হয়ে বিছানার উপর বসে শুয়ে পড়ল সে। সব কিছু বিরক্ত লাগছে এবার। বিছানার চাদর আকড়ে ধরে মুখ লুকিয়ে নিল বালিশে। হাই হুতাশ করে আবারো উঠল। ভীষন অস্থির লাগছে এবার। কিন্তু কেন? ওহ হ্যাঁ! এখনো তার গায়ে জড়ানো বিয়ের শাড়ি। এই শাড়ির ভার যেন তাকে আস্ত গিলে ফেলছে। এখনো খুলিনি এটা! বিছানা ছেড়ে উঠে বিরক্ত হয়ে পুরো শাড়ি খুলে ফেলে বিছানায় ছুড়ে ফেলল। এবার একটু শান্তি লাগছে। মনে হচ্ছে গায়ের ভারের সাথে সাথে মনের ভারও দূর হয়েছে। গায়ের গয়না গুলো খুলেও বিছানায় ছুড়ে ফেলল। এসব কিছুই এখন আর ভালো লাগছে না। অন্য মেয়েরা হলো বিয়ের শাড়ি টা কতো যত্ন রাখতো। প্রিয়তার ইচ্ছে করছে সবকিছু জ্বালি‘য়ে পুড়ি‘য়ে ফেলতে।

মাথার খোঁপার গোলাপ ফুলগুলো মেঝেতে ছুড়ে ফেলল। তাড়াহুড়োর মধ্যে পূরবী রাস্তার ধার থেকে নিয়ে এসেছিল। আমরিশা শখ করে চুল গুলো ও বেঁধে দিয়েছিলো। কার জন্য এসব? ওই অস‘ভ্য লোকটার জন্য যে লোকটা তাকে ফিরেও দেখল না। অনেক হয়েছে কান্নাকাটি। মনের দুঃখ কমে গিয়েছে। পরপর কয়েকবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। বাথরুমে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে এসে আবারো আয়নাতে ফিরে তাকাল। না এবার ঠিক লাগছে। এতো বড়লোকের নাতি আর পাঠিয়েছে সস্তার কাজল। একটু কাঁদতেই কাজল সব ধুয়ে জল। কি অদ্ভুত! ব্যাটা বাটপার। চিরুনি নিয়ে চুলগুলো আচড়ে নিয়ে আশপাশ তাকাচ্ছে। ব্যাগ খুঁজছে। জামাকাপড় বদলে নিতে হবে। সেই কখন থেকে ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়ে ঘুরছে। ব্যাগ বিছানার পাশেই ছিল। মেঝেতে বসে জামা কাপড় খুঁজছে।

আচমকা মনে হলো কেউ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে। প্রিয়তার মনে পড়ল দরজা বন্ধ করা হয়নি। ইশ কেউ চলে এলে। যদিও রাত ২ টার দিকে কেউ আসবে বলে মনে হয় না। তবুও মন থেকে সংশয় কাটে না। দরজার কাছে এসে পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। নিভো নিভো আলো জ্বলছে। পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ! তবু কারো নিঃশ্বাসের শব্দ কানে আসছে। পর্দার আড়াল ছেড়ে প্রিয়তা বেরিয়ে এলো। কোন বেশভূষায় এলো সেটাও খেয়াল করল না। আচমকা তার সামনে এসে দাঁড়ালো সে। ভয়ে প্রিয়তা পিছিয়ে গেল। বড় বড় চোখ মেলে দেখতে লাগল। এতো তার বর মশাই। প্রান্তিক চৌধুরী বড় বড় চোখ করে তাকে দেখছে। উপর থেকে নিচ অব্দি দেখলো এক নজরে। প্রিয়তার হুঁশ ফিরতেই সে ছুটি পর্দার আড়ালে লুকাতে গেল। তাড়াহুড়োয় পড়ে যেতে নিলে এক হাতে পর্দা আকড়ে ধরল অন্য হাতে তার বর কে। পর্দা ছিড়ে পড়ে গেল। কিছু বুঝে উঠার আগে প্রান্তিক তার কোমর আকড়ে ধরে নিজের কাছে টেনে আনল। ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে প্রিয়তা। তার মুখের উপরও পর্দা! প্রান্তিক আলতো করে তার মুখের পর্দা সরিয়ে দিল। ফের চোখ মেলে তাকাল প্রিয়তা।

সেই শুভক্ষণ আবার এলো। দুজনের দৃষ্টির মিলন হলো। প্রিয়তা চোখের পলক ফেলে ফেলে দেখছে। জীবনে এই প্রথম কোনো পুরুষের ছোঁয়া তাকে আলিঙ্গন করল। হৃৎপিণ্ড তার কাঁপছে বুক কাপিয়ে। অপর প্রান্তে দৃষ্টি জোড়া যেন চোখের পলক ফেলতেই ভুলে গেছে। আলোর দেখা কমই মিলছে। আধো আলোয় আধো অন্ধকারে অপলক দৃষ্টিতে প্রান্তিক চৌধুরী দেখছে তাকে। প্রিয়তার হাত কাঁপছে। প্রান্তিক ফিসফিসিয়ে কি যেন বলল! এই লোক চায় কি? আবার এগিয়ে তার কাছে আসছে। দু’হাতে তাকে আকড়ে ধরল প্রিয়তা। ভাবনায় পড়ে গেল। কি করা উচিত তার। ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিবে? কিন্তু পারছে না যে। মনে হচ্ছে তাকে কেউ শক্ত বাঁধনে আগলে রেখেছে। দুজনের মাঝে দূরত্ব কমছে। প্রান্তিকের গরম নিঃশ্বাস এসে পড়ছে তার মুখের উপর। লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিল প্রিয়তা। এরই মধ্যে প্রান্তিক তাকে ছেড়ে দিল। বাঁধন আগলা হলো।

প্রান্তিক দু হাত তুলে বলে, “সরি সরি বিউটিফুল লেডি। আমি এখন ম্যারিড। প্রান্তিক চৌধুরী এখন থেকে ম্যারিড। তাই এসব, নো নো! সরি সরি!” বলে এলোমেলো পায়ে হেটে নিজের রুমে চলে গেল। প্রিয়তা এখনো নিজের ঘোর থেকে ফিরে আসতে পারছে না। সে স্তব্ধ বিমূঢ় দৃষ্টিতে পিছন ফিরে তাকাল। তার মাতা‘ল বর তাকে কি বলে গেল। দরজা বন্ধের শব্দে কেঁপে উঠল সামান্য। দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো, “মাতা‘ল একটা! এখনো নে‘শা কাটেনি! তাকেই বলে কি না প্রান্তিক চৌধুরী এখন ম্যারিড! লোকটা কি পাগল নাকি! নিজের বউকে চিনে না!”

_________

সকাল বেলা দুজন মেয়ে প্রিয়তার ঘরে এলো। পুরো ঘরের হাল দেখে তাদের মাথায় হাত। এতো দামি দামি শাড়ি আর গহনা এভাবেই পড়ে আছে বিছানার উপর, মেঝেতে শুকিয়ে যাওয়া ফুল, দরজার পর্দার খুলে পড়ে আছে। মনে হচ্ছে ঘরের উপর যেন তুফান বয়ে গেছে। খাটো মেয়েটা দুবার ঢোক গিলে বলল, “বুঝলি কিছু!”
পাশের জন মাথা নেড়ে শুধাল, “আমরা তো এবার গেলাম রে! আমার তো মনে হচ্ছে ভবিষ্যতে এরা বর বউ ঝগড়া করে ঘরের জিনিসপত্র ভা‘ঙবে আর আমরা সব পরিষ্কার করব!”
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে মেয়েটা মেঝে থেকে পর্দা উঠিয়ে বলল, “ভাবলাম স্যারকে সামলানোর মানুষ এসেছে। ম্যাম নিজেও দেখছি কম না।এরা দুজন কি সাপ বেজির মতো ঝগড়া করবে রে?”
মেয়েটা জবাব না দিয়ে ভিরু নাচালো। মেয়েটা থতমত খেয়ে সামনে তাকাল। প্রিয়তা ভ্রু কুঁচকে শুধালো, “তোমরা?”
“জ্বি ম্যাম।”
হালকা হলদে রঙের শাড়ি প্রিয়তার পরনে। মেয়েরা এখানে কেন এসেছেন বুঝতে পারল সে। তাদের শুধালো, “স্যার কোথায় তোমাদের?”
“তৈরি হচ্ছে ম্যাম! অফিসে যাবে।”
প্রিয়তা বিরবির করল, “আজও অফিসে যাবে!”

অতঃপর মিটিমিটি পায়ে হেঁটে হাজির হলো প্রান্তিকের ঘরের কাছে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উঁকি মারল। সিরিয়ালে মেয়েগুলো ঢুকছে তার ঘরে। প্রান্তিক চৌধুরী তার সামনেই পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রিয়তার চোখ কপালে উঠে গেল। একি কাণ্ড! এ কারনেই তবে এই বাড়িতে এতোগুলো মেয়ে কাজ করে। একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে প্রান্তিকের গলার টাই ঠিক করে দিচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটা প্রান্তিকের অনেক কাছে। প্রিয়তা এসব দেখে কপাল কুচকে ফেলল। তার বরের এতো কাছে অন্য মেয়ে দাড়িয়ে। ওমা সে তো আবার মাথার চুলগুলো ঠিক করে দিচ্ছে। রাগে দরজার পর্দা খামচে ধরল সে। মেয়েটা তো এখনি চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে তার বরকে।আরেকজন তার জুতোগুলো পায়ের কাছে নিয়ে রাখল। আরেকজন দাড়িয়ে সুট হাতে। সামনের মেয়েটা সরতেই পেছনের মেয়েটা এগিয়ে এসে প্রান্তিককে সুট পরিয়ে দিল। প্রিয়তা নাক ফুলিয়ে এসব দেখে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল।

প্রান্তিক পিছন ফিরে তাকাল। পর্দা উড়ছে। ফোনটা বেজে উঠলো। এবার সামনের মেয়েটাকে সরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল সে। প্রান্তিক চলে যেতেই মেয়ে তিনটে মুখ টিপে হাসতে লাগলো।

প্রান্তিক চৌধুরী বেশ ব্যস্ত হয়ে নিচে নামছে। রাফি ও হাজির। দাদাজান সকালের নাস্তা সারছেন। প্রান্তিক কে দেখে তিনি বেশ অবাক হলেন। আজ কি ও অফিসে যাচ্ছে। গতকালের বিয়ের কথা কি প্রান্তিক চৌধুরী আজই ভুলে গেলো। দাদাজানের দিকে ফিরে বললো, “আসছি দাদাজান!”

– তুমি আজও অফিস যাচ্ছো?
– হ্যাঁ! ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে।
– তোমার সাথে আমার জরুরী কথা আছে।
– আচ্ছা রাতে এসে শুনব।
– তাড়াতাড়ি এসো। সন্ধ্যায় ছোট একটা অনুষ্ঠান আছে!
উদাসীন প্রান্তিক জিজ্ঞেস ও করল না কিসের অনুষ্ঠান। মাথা দুলিয়ে বলল, ঠিক আছে।দাদাজান বলে উঠলো, নাস্তা করবে না?
– অফিসে গিয়ে করব।
– কিন্তু আজ তো..
পুরোটা শোনার জন্য প্রান্তিক চৌধুরী অপেক্ষা করল না। হনহন করে বেরিয়ে গেল। প্রিয়তা ট্রে তে করে দুটো চায়ের কাপ হাতে নিয়ে হাজির। প্রান্তিক চলে গেছে দেখে তার মন ভার হলো। টেবিলে তার নাস্তা সাজিয়ে রেখেছিল সে। দাদাজান তার মন ভালো করতে চায়ের কাপ তুলে নিলেন। চুমুক দিয়ে বললেন, অসাধারণ! গাধা টা জানে না কি মিস করে চলে গেলো!
প্রিয়তা মুখ টিপে হেসে উঠল। দাদাজান হেসে বললেন, “সন্ধ্যায় কিন্তু অনুষ্ঠান আছে। সকলে আসবে চৌধুরী বাড়ির বউকে দেখতে। তোমার মা বাবা ও আসবে। তৈরি থেকো!” প্রিয়তা মাথা দুলিয়ে সম্মত দিলো!

________

সারাদিনের কাজের চাপে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের কথা সে প্রায় ভুলেই গেলো। তখন প্রায় অনেক দেরি। প্রান্তিক চৌধুরী গাড়িতে বসেই বলল,
– ক্লাবে চলো।
রাফি বলল, কিন্তু স্যার বাড়িতে যে অনুষ্ঠান।
– কিসের অনুষ্ঠান?
ফোন বেজে উঠলো। তার বন্ধু আশিকের ফোন। রিসিভ করতেই আলফি বলে উঠলো, কিরে শা‘লা কই তুই? কখন আসবি? শুনলাম বিয়ে করেছিস। এসব কি প্রান্তিক! বিয়ের দাওয়াত তো দূর তোর বিয়ের খবর তোর এক্সদের থেকে শুনতে হচ্ছে। এটা ঠিক নয় ব্রো!

আশিক ফোন কেড়ে নিয়ে বলল, কিরে শা‘লা কথা বলছিস না কেন?
প্রান্তিকের মনে পড়ল গতকালই সে বিয়ে করেছে। ছিঃ ছিঃ! কথাটা এভাবে ভুলে গেল? বিয়ের কথাই মনে পড়ল বউকে এখনো দেখা হয়নি। তবুও খানিকটা ভাব দেখিয়ে বলল, দুজন মিলে এতো শা‘লা বলে লাভ নেই। বিয়ে কিন্ত আমি একটাই করব।
আশিক বলে উঠলো, তুই আমার প্রানের দোস্ত। কিন্তু বিশ্বাস কর আমার প্রাণ থাকতে আমার বোনের সাথে আমি তোর বিয়ে দেবো না। বোনের জীবন নষ্ট হোক কোনো ভাই চায় না। প্রান্তিক রেগে বলল,
– গাধার বা‘চ্চা ফোন রাখ!
ফোন কেটে রাফিকে বলল বাড়ি যেতে। বেশ দেরি হয়ে গেছে। বোধহয় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। দাদাজানের বেশ কয়েকটা মিসকল ।

_______

প্রিয়তা অনেকক্ষণ অবধি বসে ছিল প্রান্তিকের জন্য। ভেবেছিল অনুষ্ঠানে তারা একসাথে যাবে। কিন্তু তার বরের দেখা নেই। ফোন নাম্বার অবধি নেই। নিচ থেকে বার বার তাড়া দিচ্ছে। মেহমান যে সব চলে এসেছে। অতঃপর প্রিয়তা উঠে দাঁড়ালো। মিষ্টি রঙের ভারী একটা শাড়ি তার পরনে। তাতে গোল্ডেন স্টোন বসানো। সেজেছে ও বেশ সুন্দর। আজ একাই সেজেছে সে। একদম সাধাসিধে। বেশ স্নিগ্ধ লাগছে তাকে। এবার একাই বেরিয়ে পড়ল সে। মনের সমস্ত ভার দূরে সরিয়ে একাই বের হতে হলো। ইচ্ছে করছিলো চেঁচিয়ে কাঁদতে। অথচ ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি।

ছোট অনুষ্ঠান তবে আয়োজন বিরাট। দোতলা সিড়ি বেয়ে একাই নামছে প্রিয়তা। বেশ অস্বস্তি লাগছে তার। কোথায় শূন্যতা পূরণের জন্য হাহাকার করছে। প্রান্তিক চৌধুরী দ্রুত বেগে ভেতরে প্রবেশ করল। তাঁর দৃষ্টি পড়ল অপরূপ সৌন্দর্যের চাদরে মোড়ানো এক রমনীর দিকে। চোখের সানগ্লাস নামিয়ে হতভম্ব নয়নে দেখছে সে। এই রমনী আবার কে? মূহুর্তের মধ্যে প্রান্তিকের নজর কাড়ার সাথে সাথে হৃদয় হরণ করে নিল সে। রাফিও ছুটে এসে তার পাশে দাঁড়ালো। দৃষ্টি সেই রমনীর উপর রেখেই প্রান্তিক শুধালো, “মেয়েটা কে রাফি?“

রাফি সামনে তাকান। দু’দন্ড চুপ থেকে বলল,
– ম্যাডাম!
– ম্যাডাম! ( ভ্রু কুঁচকে ফের শুধায় ) কোন ম্যাডাম?
রাফি ঘাড় ঘুরিয়ে আবার বলে,
– ম্যাডাম!
প্রান্তিক চৌধুরী ও তার সাথে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,
– ম্যাডাম! মানে আমার ম্যাডাম! মানে আমার বউ!
রাফি মাথা দুলিয়ে সম্মত দিলো। প্রান্তিক ফের ফিরে তাকাল। দাদাজান তার বউয়ের হাত ধরে ওদিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রান্তিক চৌধুরী আশ্চার্যান্বিত, একই সাথে বিব্রত আর মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলল, “আমার বউ! ওহ মাই গড।সি লুক লাইক অ্যা এ্যান্জেল! নো নো, এ্যান্জেল না।সে আমার রানী! আমার সাম্রাজ্যের রাণী! তাই না!”

রাফি বেশ বিভ্রান্ত তবুও মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিল। এখন এটাই তার কাজ। প্রান্তিক হাতের সুট রাফির হাতে ধরিয়ে দিয়ে শার্টের হাতার বোতাম খুলে ফ্লোট করে নিল। ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে এগিয়ে গেল সে।

দাদাজান প্রিয়তা কে সামনে এগিয়ে বললেন, মিঃ শিকদার! আমার মা চলে এসেছে!
মিঃ শিকদার অবাক দৃষ্টিতে প্রিয়তা দেখলেন। পাশ ফিরে বলে উঠলেন, “তোমার বউ ভারি সুন্দরী প্রান্তিক চৌধুরী!
আমি তো দেখে অবাক।”
প্রান্তিক চৌধুরী একগাল হেসে বলল, “হ্যাঁ আংকেল আমিও!”
পুরুষালি কণ্ঠ শুনে চমকে উঠলো প্রিয়তা। মূহুর্তে ফিরে তাকালো সে। পাশেই নিজের প্রিয় পুরুষ কে দেখতে পেয়ে খুশিতে তার চোখ দুটি চকচক করে উঠলো। অপর প্রান্তের মানুষটি দৃঢ় দৃষ্টিতে তাকে দেখছে। স্নিগ্ধ হাসি তার চোখে মুখে। তাঁর দৃষ্টিতে মুগ্ধতা ছেয়ে গেছে।

#চলবে