প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব-০৩

0
237

#প্রিয়তে_তুমি_প্রাণ💜
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৩

বাড়ির কোনে ছোট করে স্টেজ বসানো হয়েছে। দু‘প্রান্তের চেয়ারের মাঝে দূরত্ব বেশি নেই কিন্তু এরচেয়ে অনেক বেশি দূরত্ব তাদের সম্পর্কের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে। বিয়ের পর থেকে শুরু করে এখন অবধি ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো মনে করলে প্রিয়তার উচিত তার বরকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করা। কিন্তু বরকে এড়িয়ে যেতে সে পারছে না। বিয়ে হুট করে হলেও এই নিয়ে প্রিয়তার আকাঙ্ক্ষা কম ছিলো না। সব মেয়েরই থাকে। তার ক্ষেত্রে যেন একটু বেশিই প্রভাব পড়েছিল। কারন এই পর্যন্ত অন্য কোনো পুরুষের মায়ায় সে পড়েনি। সবটুকু জমিয়ে রেখেছিলো কেবল একজনের জন্য। এখন তার বরের এমন বুকভরা ভালোবাসার দরকার না পড়লেও সে ব্যাকুল হয়ে আছে ভালোবাসা দেবার জন্য। সে কি করে বুঝাবে তার জীবনের প্রথম পুরুষ যে তিনি!

প্রান্তিক চৌধুরী এখনো নিচে এসে পৌঁছায় নি।উপরে গেছে এখনো পাঁচ মিনিট হয়নি তবুও প্রিয়তা ব্যাকুল হয়ে উঠল। এতোজন লোকের মাঝে থেকেও নিজেকে একা মনে হচ্ছিল তার। মা বাবা এখনো এসে পৌঁছায় নি। আসছে বোধহয়। উচ্ছ্বাস দৃষ্টিতে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। দৃষ্টি বার বার গিয়ে আটকাচ্ছে সিড়ির দিকে। এই বুঝি তিনি নেমে আসেন।

স্বামী নিয়ে অনেক মেয়ের অনেক স্বপ্ন থাকে। প্রিয়তারও ছিলো। তবে তার স্বপ্নের পুরোপুরি বিপরীত মেরু দিয়ে তৈরি যেন প্রান্তিক চৌধুরী। তার স্বপ্নের পুরুষের সাথে এক শতাংশ মিল নেই। এই আক্ষেপ টুকু পীড়া দিচ্ছে তাকে। অবশেষে তার বর মশাইয়ের দেখা মিলল। বরলোকের নাতি এবার পাজামা পাঞ্জাবি পড়ে নিচে নামছে। পাঞ্জাবি টা সেই পছন্দ করে রেখে এসেছিলো। নাহলে বিয়ের দিনও তো সে শার্ট প্যান্ট পড়ে হাজির হয়েছিল।আচ্ছা সে যে তার ঘর গুছিয়ে দিয়েছে এই ব্যাপারটা কি তিনি টের পেয়েছেন। মনে হয় না!

প্রিয়তা চোখের পলক ফেলে বিমূর্ত হয়ে দেখছে। তিনি নামছেন। তার কল্পনার সাথে না মিললেও এই মানুষটিকে এখনি সে চোখে হারাতে শুরু করেছে। তার চোখেমুখে একগাল হাসি। হাসিতে যেন মুক্তো ঝড়ে পড়ছে। কোনো পুরুষ কে কেউ এমন ভাবে দেখে নাকি। কি আছে তার? চাপ দাড়ি নেই, অথচ প্রিয়তা মন প্রাণ দিয়ে চেয়েছিলো তার স্বামীর জন্য চাপ দাড়ি থাকে। এদিকে তার ক্লীন শেভ। এলোমেলো এক ঝাঁক মাথার চুল। একটু পরপরই দু হাত দিয়ে ঠিক করবার পরেও অগোছালো হয়ে যাচ্ছে। ওগুলো যেন অগোছালোই ভালো লাগে।

হেসে হেসে কথা বলছে। পাঞ্জাবি হাতা দুটো ফ্লোট করে কোমরে হাত রাখলেন তিনি। প্রিয়তা কপাল কুচকে বলল, “হ্যান্ডসাম!” তিনি ফিরে তাকালেন। এই যা শুনে ফেলল নাকি। দ্রুত চোখ নামিয়ে ফেলল প্রিয়তা। তার পুরো শরীর শিউরে উঠল। এই গরমের ভিতরেও তাকে যেন ঠান্ডা হাওয়া ছুঁয়ে দিচ্ছে। প্রিয়তা দম বন্ধ করে নিল। তিনি এদিকেই আসছেন। প্রিয়তা আভাস পাচ্ছে।

প্রান্তিক চৌধুরী ফট করে এসে চেয়ারে বসে পড়ল। প্রিয়তা আরো গুটিয়ে নিলো নিজেকে। প্রান্তিক চট করে বলে উঠলো, “তোমার নাম কি?”
প্রিয়তা চমকে তাকাল।তার বর মশাই কি জিজ্ঞেস করল তাকে? শুনতে পেলো না যেন! কিন্তু প্রান্তিক সেসব খেয়াল করল না। বরং মুগ্ধ কণ্ঠে বলে উঠলো,

– থাক বাদ দাও। তুমি আমার বউ মিসেস চৌধুরী! আমি তোমায় বউ বলেই ডাকব। এই নামটাই তোমাকে মানায়!”

প্রিয়তা ঠোঁট কামড়ে মুখ ফিরিয়ে নিল। এতোক্ষণ যেই শীতল বাতাস আর মৃদু গুঞ্জন তাকে আচ্ছাদন করে রেখেছিলো তা মূহুর্তেই গায়েব হয়ে গেল। তার ভীষন গরম লাগছে এবার। মনে হচ্ছে কান দিয়ে গরম ধুয়া বের হচ্ছে। এই লোকটাকে এখন তার বিন্দুমাত্র সহ্য হচ্ছে না। একরাশ মুগ্ধতা ইতোমধ্যে বিরক্তিতে পরিণতি হয়েছে।

প্রান্তিক চৌধুরী থেমে নেই। আবারো শুধালো,
– কি হলো? কথা বলছো না কেন? তুমি জানো না, তোমার কণ্ঠ শোনার জন্য আমি কি রকম ব্যাকুল হয়ে আছি। কি হলো? এই বউ! তুমি কি কথা বলতে পারো না? বোবো নাকি!

প্রিয়তা বিস্ফোরণ দৃষ্টিতে ফিরে চাইল। প্রান্তিক চৌধুরী চুপসে গেল।বেফাঁস কথা বলে ফেলেছে। মূহুর্তেই ফিক করে হেসে দিয়ে বলল,

– রেগে থাকো বউ! রাগলে তোমায় আরো মিষ্টি লাগে। একদম লাল টুকটুকে বউ!
প্রিয়তা মুখ ফিরিয়ে নিল। মশকরা হচ্ছে নাকি তার সাথে! এখন হারে হারে টের পাচ্ছে দাদাজান কেন তাকে গাধা বলে ডাকে। প্রান্তিক এবার তাকে খোচা মারল। প্রিয়তা চমকে উঠল। প্রান্তিক চৌধুরী বলে উঠলো,

– পুতুলের মতো বসে আছো কেন? কথা বলো! তুমি কিন্তু সত্যি পুতুলের মতো দেখতে। পুতুল বউ!

মৃদু হেসে চোখ টিপ দিলো সে! প্রিয়তার বিন্দুমাত্র হাসি পাচ্ছে না। সে অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো, “মা!”

প্রান্তিক চমকে উঠে দাঁড়ালো। থতমত খেয়ে বলল, “আমি তোমার মা না! কি আবোলতাবোল বলো?”

প্রিয়তা চোখ গরম করে সামনে তাকাল। প্রান্তিক চৌধুরী ফিরে তাকাল। “ওহ, তোমার মা বাবা এসেছে!”
প্রিয়তা উঠে দাঁড়িয়ে চাঁপা স্বরে বলল,
– হ্যাঁ তারা এসেছে।
অতঃপর এগিয়ে গেল। তার পিছন পিছন প্রান্তিক চৌধুরী বলল, – তুমি কি দারুণ কথা বলো বউ!

“বউ” ডাক শুনে প্রিয়তা কপাল কুচকে ফেলল। তার বিরক্ত লাগছে। প্রান্তিক চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে শ্বশুর শাশুড়ির সাথে দেখা করল। সিদ্দিকুর রহমান এসেছেন হুইলচেয়ারে বসে। মনসূরা বেগম পাশেই দাঁড়িয়ে। জামাইকে দেখে দুজন ভীষণ খুশি। পাশেই তিন শালিকা! আমরিশা, আরফিয়া আর পূরবী হেসে উঠলো। পূরবী হেসে শুধালো,

– ভালো আছেন ভাইয়া?
এদের কাউকে না চিনলেও প্রান্তিক গাছে ঢিল ছুঁড়ার মতোই আন্দাজ করে নিল এরা তিনজনই তার শালিকা সাহেবা! হেসে বলল, – অনেক ভালো আছি। আপনাদের দেখার পর তা আরো বেড়ে গেলো।

আমরিশা বলে উঠলো, “এইসব কিন্তু ঠিক নয় ভাইয়া। কাল শুধু মুখে বউকে নিয়ে চলে গেলেন। আমরা কিন্তু কিছু পেলাম না!
– পাওনা থাক তবে। পরিশোধ করে দিবো।
আরফিয়া বলল, “দিতে কিন্তু হবেই!”
“জো হুকুম শালিকা সাহেবা!”

মা একটু ধমকের সুরে তাদের থামতে বললেন। বললেন, “চুপ করো। বেচারা কাল কি হম্ভিতম্ভি করে বের হলো। বাবা তোমার বন্ধু এখন কেমন আছে?”

প্রিয়তা এসে পাশে দাঁড়ালো এবার। চোখ বাকিয়ে ফিরে তাকাল। প্রান্তিক জবাব দিল, ভালো আন্টি। এখন ভালো আছে!“ বলে প্রিয়তার মুখখানি দেখে চুপসে গেল। তার বউ চোখের ইশারায় রীতিমতো তাকে যেন ধমাকাচ্ছে। তিন বোন টের পেয়ে আচমকা হেসে উঠলো!

———

মিষ্টির উপর যেমন সারাক্ষণ মাছি ভনভন করে, প্রান্তিক চৌধুরী তেমনি এখন প্রিয়তার পিছন পিছন ঘুরছে। বাড়ির সাজানো ফুল গুলো থেকে একটা ফুল ছিড়ে এগিয়ে দিল প্রিয়তার কাছে। প্রিয়তা পাত্তা না দিয়ে মুখ ফিরিয়ে চলে গেল। প্রান্তিক বিভ্রান্ত হলো। তার বেশ অনেকক্ষণ ধরে মনে হচ্ছে বউ তার রে‘গে আছে! কিন্তু রেগে থাকার কারণে কি! কারণ আছে হাজার টা। দুঃখের বিষয় প্রান্তিক চৌধুরীর কোনোটাই মনে নেই। আফসোস! বেটা এবার নাকানিচুবানি খাবে।

মনের এক রাশ আশা তাঁর বউ এখন তার ঘরে যাবে। এরপর যেভাবেই হোক বউয়ের রাগ সে ভাঙাবে। কাল ক্লাবে যাওয়া একদম উচিত হয়নি। একগাদা ম‘দ গিলে নিশ্চিত বউকে বেফাঁস কিছু বলে দিয়েছে। না না! বউয়ের রাগ ভাঙাতে হবে!

বউয়ের পিছন পিছন যেতে যেতে থেমে গেল। বউ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে। প্রান্তিক চৌধুরী হাত দেখিয়ে বলল, “বউ এটা আমাদের ঘর না। ওইটা…” ধপ করে দরজা বন্ধের শব্দে বাকি কথা সে গিলে ফেলল। মা‘রাত্নক ব্যাপার! কাজের লোকগুলো সব উকি দিচ্ছে। রাফি তার থেকে দুই পা পিছিয়ে দাঁড়িয়ে। তার বেশ মনে আছে, গতকাল স্যার এমন কিছুই করেছিল। হয়েছে! স্যারের তো নতুন বিয়ে। সে কি জানবে আর বউয়ের রাগ!

প্রান্তিক চৌধুরী ঘন ঘন শ্বাস ফেলল। ঠোঁট দুটো কিছুক্ষণ কামড়ে রেখে রাফি কে ডাকল। রাফি পিছন থেকে মৃদু স্বরে বলল,

– জি স্যার!
– আমার বউ এতো রেগে কেন আছে বলো তো?
– স্যার আজ যা ঘটেছে গতকাল ও তা ঘটেছিলো!
মাসুম বাচ্চার মতো প্রান্তিক শুধালো, – আমি করেছিলাম!
রাফি চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়ল!

সেরেছে! প্রান্তিক চৌধুরীর বাসর করার স্বপ্ন ভেঙে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল। কিন্তু না! এভাবে চুপসে গেলে হবে না। রাফি দিকের ফিরে ভ্রু নাচালো। এর অর্থ – এখন কি করব? রাফি এদিক সেদিক তাকিয়ে আশ্বাস দিলো।

যুদ্ধে‘র দ্বিতীয় ধাপ। সার্ভেন্টরা সব পেছন থেকে উঁকি দিয়ে দেখছে বিনোদন নেবার লোকের কমতি নেই। প্রান্তিক চৌধুরী চুল গুলো ঝেড়ে হাতে এক তোড়া গোলাপ নিয়ে আবারো হাজির। দু’বার দরজায় টোকা দিল। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ‘বউ‘ বলে ডাকল। ধপ করে দরজা খোলার শব্দে একধাপ পিছিয়ে গেল। প্রিয়তা শক্ত গলায় শুধাল,
– কি?
শক্ত তার চোখ মুখ! প্রান্তিক চৌধুরী হাসার চেষ্টা করল। দাঁত কেলিয়ে হেসে গোলাপ বাড়িয়ে দিল। বলল,

– সরি বউ! কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি আর কখনো..
মুখের উপর ধপাস করে দরজা বন্ধ করে দিল প্রিয়তা। প্রান্তিক চৌধুরী চোখ বন্ধ করে নিল। বাপরে! এতো রাগ! রাফি চোখ বন্ধ করে আশ্বাস দিল, – আজকের মতো এই স্যার। আর কোনো লাভ নেই!

প্রান্তিক চৌধুরীর চোখে মুখে হতাশা। তীব্র বেদনায় চোখ দুটো ছটফট করছে। বেটা বলে কি! এতো সুন্দরী বউ থাকতে আজ সে একা ঘুমাবে! কাভে নেহি!

মেয়ে গুলো মুখ টিপে হাসছে। তবুও হাসির শব্দ শোনা গেল। তটস্থ সকলে। দাদাজান হাসতে হাসতে প্রান্তিকের কাছে এসে দাঁড়ালেন।
– দাদাজান!
– ভেবেছিলাম তোর ক্লাস আমি নেবো। কিন্তু মনে হচ্ছে ক্লাস নেবার মানুষ এসে গেছে।
– তুমি একটু বুঝাও!
দাদাজান গলা ফাটিয়ে হাসলেন।
– তোর মতো গাধার সাথে এটাই হওয়া উচিত।

প্রান্তিক রেগে চেঁচিয়ে বলল, – দোষ আমার নাকি! তুমি আগে কেন বললে না আমায়!
– আমি কি বলব? বিয়ের আসর থেকে আমি বলেছিলাম চলে যেতে।
প্রান্তিক চৌধুরী নাক ফুলিয়ে বাঁকা চাহনিতে ফিরে তাকাল। বলল, – এমন হতে থাকলে তুমি কখনো নাতির ঘরের পুঁতি দেখতে পারবে না। বুঝলে দাদা!

– এক নাতি যা খেল দেখায়, পুঁতি কি দেখাবে বুঝে গেছি।
– তার মানে তুমি আমার হেল্প করবে না!
– নিজের বউ নিজে সামলাও।
– আজ দাদি থাকলে দেখতে। আমিও তোমার হেল্প করতাম।
– এসবের দরকার পড়তো না প্রান্তিক! তোমার দাদাজান একাই একশ!

অতঃপর লাঠির ঠক ঠক শব্দ ফেলে তিনি চলে গেলেন। প্রান্তিক মুখ ভেংচি কেটে সামনে তাকাল। তার রা‘গ হচ্ছে। চোখ মুখ শক্ত করে আবারো দরজা ধাক্কালো সে। দরজা খোলার শব্দে তার তেজ নিমিয়ে গেল। প্রিয়তা তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রান্তিক চোখ নামিয়ে মৃদু স্বরে বলল, “বউ!”

– কি হয়েছে?
– আমম বলছিলাম যে রেগে আছো।( আমতা আমতা করে প্রান্তিক জবাব দিল )
– না বলুন!
প্রান্তিক একগাল হেসে বলল, – তাহলে আমার ঘরে চলো।
– না!
– কেনো? বর বউ তো একসাথে থাকে। জানো না! তুমি না আমার বউ! চলো।
– কাল কেউ তার ঘর থেকে আমায় বের করে দিয়েছিল। আমি আর তার ঘরে যাবো না!

প্রান্তিকের চোখ মুখ শুকিয়ে গেল। অপরা‘ধীর স্বরে বলতে লাগলো, দেখো আমার কোনো দোষ নেই। সব রাফির দোষ! ও আমায় আটকালো না। নাহলে তো…
– রাফি! কোথায় রাফি?

প্রান্তিক চৌধুরী পিছন ফিরে তাকাল। রাফি নেই। বেটা সুযোগ বুঝে পালিয়ে গেল। এর চাকরি যদি না খেয়ে‘ছে। সামনে ফিরতেই আবারো দরজা বন্ধ করতে যাচ্ছে প্রিয়তা। কিন্তু না! এইবার পারল না। আচমকা প্রান্তিক চৌধুরী ঘরে ঢুকে গেল। শুধু তাই না। সুযোগ পেয়ে তার কোমর ধরে আলতো করে টেনে কাছে নিল। নরম হাতের উপর চুমু খেয়ে বলতে লাগলো, “প্রান্তিক চৌধুরী ম্যারিড অথচ এখন অবধি বউকে চুমু খেতে পারবে না এটা হতে পারে! তুমি আমায় বলো? তোমার আমার বাসর তো আজই হবে!”

প্রিয়তা বিস্মিত! একের পর এক কি ঘটে গেল তার ধারণার বাইরে। কিন্তু দমবার পাত্র সেও না। প্রান্তিক শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। তার চোখের চাহনি বলছে, “তুমি হেরে গেছো বউ!” কিন্তু পৃথিবীর এই চরম সত্য সে জানে না। বউরা কখনো হারে না। রা‘গে তার লাল টুকটুকে বউ আরো টুকটুকে হচ্ছে। পেছন যেতে যেতে দুজনে এসে ঠেকল ড্রেসিন টেবিলের দিকে। প্রিয়তা ঠিক বুঝতে পারছে, প্রান্তিক চৌধুরী এখন তাকে কোলে তুলবে। এছাড়া কোনো উপায়। প্রান্তিক চৌধুরী বাসর করার সাধ সে মিটাচ্ছে। বাঁধন আগলা হতেই পেছন থেকে চিরুনি দিয়ে মার‘তে লাগল সে।

প্রান্তিক চৌধুরী হকচকিয়ে উঠল। চিরুনির মা’র এতো বেশি। আগে জানা ছিলো না। ধাক্কা মে‘রে, ঠেলে ঠুলে তাকে ঘর থেকে বের করে ছাড়ল প্রিয়তা। প্রান্তিক চৌধুরী ও বুঝে গেছে। তার টুকটুকে বউ কে এতো সহজে ব‘শ করা যাবে না। ধপ করে আবারো মুখের উপর দরজা আটকে দিল। প্রান্তিক চৌধুরী এখনো হতভম্ব! অস্ফুট স্বরে বলল, “কি ডাকা‘ত বউরে বাবা!”

প্রান্তিক চৌধুরী হতাশায় চোখ বন্ধ করে নিল। শেষ! আজ আর তার বাসর হবে না। মনের দুঃখে বেচারা দরজায় মাথা ঢুকলো। এতেও বিশেষ কোনো লাভ হলো না! ম্যারিড প্রান্তিক চৌধুরী এখন অবধি বাসর করতে পারল না!

#চলবে