প্রিয় পরিনতি পর্ব-১+২

0
48

গল্প: প্রিয় পরিনতি!
পর্ব: ০১+২
লেখক: তানভীর তুহিন!

বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে “মেঘ”। অপেক্ষা করছে তার প্রিয় মানুষটার ফোন দেবার অপেক্ষায়। পুরো দুটো দিন কথা হয় না। হঠাৎ ই ফোনের রিংটোন বেজে স্ক্রিনটা জ্বলে উঠলো। স্ক্রিনে সেই প্রিয়,পছন্দ আর ভালোবাসার নাম “আবিদ”। মেঘ কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো কারন সাথে সাথে ফোন রিসিভ করলে আবিদ মনে করবে আমি তার ফোনের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।কেনো অপেক্ষা করবো?ঝগড়া করে দুদিন কথা বলা অফ রাখবে আমার অভিমান হবে না বুঝি? অভিমান কেনো বলছি আমার তো রাগ হবার কথা কিন্তু হচ্ছে না কেনো? মেঘ এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনটা কেটে গেলো। মেঘ উঠে বসে ফোনটা হাতে নিয়ে বসলো। আবার কল আসলো। মেঘ এবার এক মুহুর্তও দেরী না করে ফোনটা রিসিভ করে নিলো।

দুদিকেই নিস্তব্ধতা। দুজনই অপেক্ষা করছে একে অপরের আওয়াজটা শোনার জন্য। আবিদ জানে মেঘ এখন আগবাড়িয়ে কথা বলবে না কারন মেঘ অভিমান করেছে। কিন্তু আবিদ যদি এখন একটু নরম হয় তাহলেই মেঘ চেপে বসবে। আবিদের খুব ইচ্ছে করছিলো সরিটা এক্ষুনি বলে ভালোবাসি কথাটা বলে দিতে কিন্তু মেঘ তাহলে আলহাদ শুরু করে দিবে। আবিদের মেঘের আলহাদগুলো খুব ভালোলাগে। এ পৃথিবীতে আবিদের সবচেয়ে পছন্দের জিনিস হলো তার “মেঘ এবং মেঘের সবকিছু” হোক না কেনো তা মেঘের বদ অভ্যাস। আবিদ নিস্তব্ধতা ভেঙে বললো।

– ” আমার তোমার বাসার সামনে যেতে বরাবর ১০ মিনিট লাগবে। তুমি ৫ মিনিটে নিচে এসো। দেখা করবো। ”

আবিদ কিছুটা রুক্ষতা মেখে কথাগুলো বললো। মেঘ বুঝলো আবিদের রাগ পড়ে নাই। এখন আবিদকে রাগালে আবার কয়দিন কথা না বলে থাকতে হবে কে জানে? কিন্তু এখন তো ভাইয়া বাসায়। আমি নিচে যাবো কীভাবে?

– ” শোনো না। ভাইয়া একটু আগে বাসায় আসছে। ড্রয়িংরুমে বসা।আমি কীভাবে নিচে আসবো বলো? ”
– ” আমি জানি না আমি এক্ষুনি দেখা করবো। তোমার কাছে ৫ মিনিট আছে! ”

কথাটা বলেই আবিদ ফোনটা কেটে দিলো।কারন আবিদ জানে ও আর কিছুক্ষন ফোনে কথা বললে মেঘ গুছিয়ে কথা বলে ওকে বশ করে নিতো। কিন্তু এখন বশ হলে চলবে না দুই দিন সে তার মেঘকে দেখে না।আজ জড়িয়ে ধরে মেঘের ঘ্রান না নিলে হয়তো রাতে ঘুম ই হবে না। আবিদ জ্যাকেট পড়ে গায়ে শালটা জড়িয়ে নিলো। আবিদ শাল পড়া একদম পছন্দ করে না। কিন্তু এটা মেঘ দিয়েছিলো তাই এই শালটা ওর খুব পছন্দের। বাইকের চাবি,লাইটার আর সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো আবিদ।

আবিদ এখন মেঘের বাসার সামনের বড় গাছটার পেছনে। বাইকটা স্ট্যান্ড করে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে। একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার। তার মধ্যে আলো শুধুই ওই জ্বলন্ত সিগারেট টা। মনের সুখে সিগারেটে টান দিচ্ছে আবিদ আর এই ভেবে মুচকি হাসছে যে একটু পরেই মেঘকে দেখতে পাবে।
পাশের বাসায় যাচ্ছি বলে মেঘ বের হয়ে লিফট দিয়ে সোজা নিচে চলে এলো। মেঘ জানে আবিদ কোথায় অপেক্ষা করছে। এ যায়গায় বহুবার দেখা করেছে তারা। মেঘ রাস্তাটা পার হয়ে ফোনের ফ্ল্যাশটা অন করে গাছের পেছনে চলে গেলো। আবিদ ফ্ল্যাশের আলো দেখেই সিগারেট টা ফেলে দিলো।কিন্তু মেঘ ঠিকই দেখে ফেললো আবিদ সিগারেট ফেলে দিচ্ছে।মেঘ আবিদের থেকে কিছুটা দূড়ে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে আছে। আবিদ একটু মুচকি হেসে মেঘের সামনে গিয়ে দাড়ালো। ফ্ল্যাশটা নিচের দিকে রেখে দাঁড়িয়ে ছিলো মেঘ। আবিদ কাছে গিয়ে মেঘ এর কানের কাছে মুখ নিয়ে মিষ্টি করে বললো “কেমন আছে আমার মেঘবানু?” মেঘ মাথা তুলে বললো “তুমি না বলছো সিগারেট কমিয়ে দিবা? এখন দেখা করতে এসেও সিগারেট কেনো খাচ্ছিলা?” আবিদ বুঝলো যে মেঘ দেখে ফেলেছে সিগারেট। আবিদ নরম ভাবে উত্তর দিলো ” দুদিন যদি আমার খোজ না নাও, দুদিন যদি আমি তোমায় না দেখতে পাই তাহলে সিগারেট খাবো না তো কী করবো?”। মেঘ চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বললো,” খোজ না নেওয়ার পেছনে, দেখা না হওয়ার পেছনের কারনটা আপনি নিজেই। আমি তো আর ইচ্ছে করে বলি নী যে ঝগড়া করুন। ঝগড়া করে আমার থেকে দুড়ে থাকুন। “।আবিদ খুব ভালো করেই জানে এই পরিস্থিতিতে ঠিক করলে মেঘ গলে যায়। আবিদ আর কোনো কথা না বলে মেঘকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ” জানোই তো আমার শর্ট টেম্পার মাত্রাতিরিক্ত, ইগো বেশি।তুমি ফোন দিলেই তো হতো! ” মেঘ আবিদকে জড়িয়ে ধরে নিজের মাথাটা আবিদের কাধে রেখে অভিমানের স্বরে বলছে ” কেনো করবো ফোন? তুমি নিজেই তো ফোন দিতে না করছিলে। আবিদ মেঘকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো ” সরি মেঘবানু!”
– “কীসের সরি? তোমার শাস্তি হবে কাল। কোনো সরি তে কাজ হবে না। অনেক জ্বালাইছো এই দুই দিনে।”

আবিদ মেঘের গলায় হালকা করে কামড় দিয়ে বললো, “আচ্ছা আমার মেঘবানু!”

মেঘ আবিদের কাধ থেকে মাথা উঠিয়ে আবিদের কলার ঠিক করতে করতে বললো, ” আজ বেশি প্রেম করার সুযোগ দিতে পারলাম না। ভাইয়া বাসায় তো তাই। আমি পাশের বাসায় যাচ্ছি বলে বের হয়ে আসছি। এখন বাসায় গিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে যাও। কাল সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৬ টা অবধি প্রেম করবো” বলেই জিহ্বায় কামড় দিলো মেঘ।তারপর আবার একটু আলতো ন্যাকা রাগ মিশিয়ে বললো, “আরকি তোমার শাস্তি কাল সারাদিন। এই দুদিন কষ্ট দিছো তাই!” বলেই মেঘ আবিদের দুই গালে চুমু দিলো। মেঘ আবিদের কপাল চুমু দিতে গিয়েও পারলো না।কারন আবিদ মেঘের চেয়ে যথেষ্ট লম্বা। মেঘ আবিদকে বললো ” এই লম্বু মাথা নামাও আমি কপালে চুমু খাবো! ” আবিদ মেঘের কোমড় ধরে উচু করে নিলো। মেঘের শরীরের রক্ত হিম হয়ে যাচ্ছে আবিদের স্পর্ষে।মেঘ আবিদের গলা জড়িয়ে ধরে আবিদের কপালে চুমু খেলো। তারপর বললো, ” ভালোবাসি মেঘবানুর জামাই। এখন আমি যাই নাহলে ভাইয়া আমার ক্লাস নিয়ে নিবে। কাল ৮ টায় কলেজের সামনে থাকবা। এখন গিয়েই ঘুম দিবা।”

আবিদ এখনও মেঘকে উপড়ে তুলে আছে। মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, ” প্রেম করবে আর পরিবারের বকা শুনবা না, ভাইয়ার কাছে কট খাবা না তা হয় নাকি? প্রেম করলে একটু সাহস রাখতে হয়!” মেঘ আবিদের নাক ধরে টান দিয়ে বললো ” আবিদের মতো ছেলে আমার কাছে মিয়াও মিয়াও করে তাহলে এবার ভাবো আমার কত সাহস!” বলে হেসে দিলো মেঘ। মেঘের কথা শুনে আবিদও হেসে দিলো।

– ” নামাও এবার, যেতে হবে!”
– ” আমার ঠোট দুটো কী দোষ করলো? ঠোটে চুমু খাবে না?”
– ” ঠোট দিয়ে সিগারেট খেয়ে মেঘবানুর ঠোটের স্পর্ষ পাবে ভাবলে কী করে? সিগারেট না খেলে অবশ্যই চুমু খেতাম।এবার নামাও লেট হচ্ছে! ”

আবিদ মেঘকে নামিয়ে দিয়ে মেঘের কপালে চুমু দিয়ে বললো, ” ভালোবাসি মেঘবানু!”
মেঘ একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়।

আবিদ বাইক স্টার্ট করে, একটা সিগারেট ধরিয়ে বাইকটা হালকা স্পিডে চালানো শুরু করলো। সিগারেটটা দু ঠোটের কোনায় চেপে ধরে পারদর্শিতার সাথে নাক দিয়ে ধোয়া ছাড়ছে আর বাইক চালাচ্ছে আবিদ। আর মুচকি মুচকি হাসছে তার “মেঘবানুর” কথা ভেবে। মেঘের পুরো নাম “আদনিন রহমান মেঘ” আবিদ আদর করে “মেঘবানু” বলে ডাকে। কিন্তু সমসময় মেঘবানু বলে না যখনই মেঘ রাগ করে তখনই মেঘবানু বলে মানিয়ে নেয় মেঘকে। আবিদ বাইক পার্কিং এ পার্ক করে। লিফট দিয়ে উঠে বাসার কলিং বেল বাজানো শুরু করলো। দুবার কলিংবেল বাজাতেই আবিদের ছোট বোন ইসরাত এসে দরজা খুলে দিলো। আবিদকে দেখেই ইসরাত ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো – “কীরে মেঘমেখে এলি নাকি?মুখ লাড্ডুর মতো লাগছে কেনো?”

আবিদ ইসরাতের মাথায় গাট্টা মেরে বললো, “হুম মেঘমেখেই আসছি। আম্মু কই? ভাত খাব!”

ইসরাত কিছুটা রেগে বললো “আগে মাইর খা তারপর ভাত খাইস। ”
– ” ইসু,মজার মুড নাই। খেয়ে ঘুম দিবো সকালে ৮ টায় আবার মেঘ মাখতে যেতে হবে!”
– “ইস আমি যে কবে প্রেম করবো তোর আর মেঘ ভাবির মতো।আমার প্রেমিকপুরুষ কোথায়?”
– ” আমি বেচে থাকতে তুই শান্তিতে প্রেম করতে পারবি না। আর তোর মতো মেয়েকে যে ছেলে প্রোপোজ করবে সে ছেলের রুচি নেই বললেই চলে! ”
ইসরাত আবির হাতে একটা রামচিমটি দিয়ে বললো আজকেও ৪ টা ছেলে প্রোপোজ করছে খালি আমায় কেউ ইম্প্রেস করতে পারে না বলে।

– ” হুম প্রোপোজ ঠিক আছে। কিন্তু তুই না বলার পরে কোনো ছেলে বিরক্ত করছে না তো?”

ইসরাত নিজের কোমড়ে হাত দিয়ে আবিদের সামনে দাঁড়িয়ে বললো আমায় বিরক্ত করবে এমন সাহস আছে নাকি কারো? ইসরাত তালুকদার সিস্টার অফ আবিদ তালুকদার ওরফে টেম্পার আবিদের বোন আমি। আরে ওরা প্রোপোজই তো করে মেয়েদেরকে দিয়ে। তোর ভয়ে সামনে এসেও প্রোপোজ করে না। কিন্তু ওরা তো জানেই না টেম্পার আবিদ আমায় কতটা ভয় পায়। বলেই হাসা শুরু করে দেয় ইসরাত। এর মধ্যেই “রিনা তালুকদার” মানে আবিদের মা এসে জিজ্ঞেস করে।

– “কিরে আবিদ কোথায় গেছিলি?”
ইসরাত বলে মেঘমা.. তার আগেই আবিদ ইসরাতকে চিমটি দিয়ে থামিয়ে দেয়।
– ” এইতো আম্মু নিচে গেছিলাম একটু! ”

রিনা বেগম ভালোভাবেই জানে তার ছেলে মেঘের সাথে দেখা করে এসেছে। তা তার ছেলের মুখেই স্পষ্ট!

আবিদ খেয়ে-দেয় মাত্র শুয়েছে। তখনই মেঘ ফোন দিলো।
– ” আজ অনলাইনে থাকবো না। কাল তোমার অপেক্ষায় রাত জেগেছিলাম তাই আজ ঘুম আসছে খুব। ঘুমাইয়া যাও সকালে দেখা হবে!”
– ” সরি কালকে রাত জাগিয়ে রাখানোর জন্য!”
– ” হুম ভালোবাসি, ঘুমাবো টাটা!”
– ” আচ্ছা টাটা, ভালোবাসি!”

মেঘ গ্যালারিতে ঢুকে আবিদের একটা ছবি দেখে। ফোনটা পাশে রেখে কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুম দিলো। আবিদ শুয়ে শুয়ে ভাবছে সেই কলেজের বিদায় বছরের জুনিয়রদের নবীনবরনটা। সেই নবীনবরনেই প্রথম দেখেছিলো তার প্রেয়সি, প্রিয়তমা তার মেঘবানু। আবিদ চোখ বন্ধ করে সেই নবীনবরনটা ভাবতে থাকে।।

চলবে!
গল্প: প্রিয় পরিনতি!
পর্ব: ০২!
লেখক: তানভীর তুহিন!

সেই নবীনবরনের কেটে গেছে প্রায় চার বছর। কিন্তু সে দিনটা আজও আবিদের একদম স্পষ্ট মনে আছে। সেদিনের সেই সকাল, সেই সারা বেলা, সেই পুরোদিনটা!

তারিখটা ছিলো জানুয়ারির ২ তারিখ। আবিদের ইঞ্জিনিয়ারিং এর শেষবছর। সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বিন্দাস লাইফ কাটাচ্ছিলো আবিদ। পরীক্ষার প্যারার জন্য গার্লফ্রেন্ডকে সময় দিতে পারছিলো না গার্লফ্রেন্ডও সহ্য না করে ব্রেকাপ করে দেয়। আবিদ ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে। প্যারামুক্ত বিন্দাস লাইফ কাটাচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর সারারাত বন্ধুদের সাথে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন করে ঘুমাচ্ছিলো আবির। বিকাল ৩ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে দেয়ে বের হয়ে যায়। আবার রাত ১২ টায় আসে। আবিদের বাবা-মা কিছুই বলে না কারন ইঞ্জিনিয়ারিং তো শেষই এবার নিজের মতো একটু সময় কাটাক। রেজাল্ট দিলেই তো আবার চাকরি নিয়ে দৌড়-ঝাপ। বছরের প্রথম দিনের বেশি সময়টাই আবিদের কেটে যায় ঘুমিয়ে। এবার শুরু হয় আবিদের জীবনের সেই স্মরণীয় দিন।

জানুয়ারির ২ তারিখ সকাল প্রায় ৯ টা বাজে। আবিদের ঘুম ভাঙলো বিরক্তিকর ফোনের আওয়াজে। ঘুম জড়ানো চোখে ফোনের দিকে তাকাতেই দেখলো স্ক্রিনে লেখা “পেত্নির বাচ্চা” মানে তামান্না। আবিদ ফোনটা কানের কাছে নিয়ে বললো,
– ” হ্যালো!”
– ” এই তুই কলেজে আসস নাই কেনো এখনো?”
– ” এই সকালবেলা কলেজে যাবো কেনো?”
– ” আজ নবীনবরন তো আর্লি আয় না রে ভাই! ”
– ” তামান্না, এই জন্যই বলি। আঙ্কেলের টাকাগুলা উড়াইয়া এইভাবে গাজা খাইস না। আমরা আর কয়দিন পরে বিদায় নিবো। আমাদের নবীনবরন তো আরো চার বছর আগেই হয়ে গেছে! ”
– ” তোর এই গাজার জবাব আমি ইয়াবা দিয়ে দিবো খালি কলেজে আয় তুই। আরে ব্যাডা নবীনবরন তো নতুন ব্যাচের। প্রিন্সিপাল আমাদের আসতে বলছিলো আমরাতো এমনিতেই অবসর তাই যাতে নবীনবরন এর বিভিন্ন দায়িত্বগুলো আমরা পালন করি তারজন্য আরকি। প্রধান দায়িত্ব তো তোর। ডায়েসে সভাপতিত্ব করবি। আর তুই হারামাজাদা এখনও ঘুমাচ্ছিস?”

আবির চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসলো!

– ” সত্যি বলতেসি, আমায় কেউ ই বলে নাই! ”
– ” আচ্ছা ভাই এখন আর দেরি করিস না। প্লিয ঝলদি আয়। আর হ্যা শোন তোর সাদা পাঞ্জাবিটা পড়ে তার উপরে চকলেট কালারের কটিটা পড়ে আসিস।অন্যকিছু ট্রাই করিস না তোর চয়েজ ভালো না। ঝলদি আসিস আমি কিন্তু আর তোকে ফোন দিবো না নেক্সট কল সোজা তোর যমের কাছে দিবো! “বলেই ফোন কেটে দিলো তামান্না। এতোক্ষন আবিদ যার হ্যাপা পোহাচ্ছিলো সেটা আবিদের বেষ্টফ্রেন্ড “তামান্না”। আসলে তামান্নার বাবা আর আবিদের বাবা বেষ্টফ্রেন্ড সেই সুবাদে ওদের বন্ডিংটাও বেশ মিষ্টি। আর তামান্না যাকে আবিদের যম বললো সে হলো আবিদের বাবা “রাশেদ তালুকদার” জেলার ম্যাজিস্ট্রেট।

আবিদ তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে কলেজে চলে যায়!

সবাই কলেজের অডিটোরিয়ামএ বসা। আবিদ ব্যাকস্টেজে যেতেই “তামান্না” এসে ঘুষি দেওয়া শুরু করে আবিরকে।
– ” আমি গাজা খাই বাপের টাকায়? হারামাজাদা!”
– ” আরে ভাই বাদ দে না এসব কোনো কিছু দে আমি ওখানে দাড়ায়ে কী বলবো?”
– ” সব ডায়েসে রেখে দিসি। আমি থাকতে তোর কোনো প্রব্লেম হইসে আজ পর্যন্ত? ”
– ” আমার লাইফে সবচেয়ে বড় প্রব্লেম তো তুই ই!”

কথাটা বলে শেষ করার আগেই আবিদ আরো কয়েকখানা কিল-ঘুষি খেয়ে ফেললো!

আবিদ ডায়েসে দাঁড়িয়ে একে প্রিন্সিপাল, মেয়র, চেয়ারম্যান, কমিটি হেড এদের স্টেজে আসন গ্রহন করার জন্য এনাউন্স করছে। তারপরে নাম আসে আবিদের অনুপ্রেরনা, আবিদের আদর্শের নাম। আবিদ মুচকি হেসে একটু উদ্যামের সাথে এনাউন্স করে, ” please come to the stage Mister Rashed Talukder! ” আবিদের বাবার চেয়ারটা আবিদের ডায়েসের পাশেই। আবিদের বাবা এসে চেয়ারে বসতেই আবিদ ডায়েস থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে বাবার কানে-কানে বলে ” কলেজের মেয়ে কী সব আজ তুমিই পটিয়ে ফেলবা?” ছেলের এমন উদ্ভট মন্তব্য আর রসিকতায় কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করে রাশেদ তালুকদার!

সমস্ত অনুষ্ঠান শেষে আবিদ মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। পাশে তামান্না দাঁড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছে। তখনই দেখতে পায় ডার্ক নেভি-ব্লু কালারের শাড়ি পড়ে একটা মেয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে হাটছে। চুলগুলো হালকাভাবে উরছে, আর কথাবলার মাঝে মাঝে হালকা করে হাসি দিচ্ছে। মেয়েটা আসলে পায়চারি করে কথা বলছিলো। আবিদ যেনো হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে। আবিদ কোনোদিন কোনো মেয়েকে প্রথম দেখাতেই এতোটা পছন্দ করতে পারে নী। আবিদের পছন্দের রঙটা গায়ে জড়িয়ে মেয়েটা আবিদের মনে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে। আবিদ তামান্নাকে দেখিয়ে বললো।

– ” মেয়েটা কেমন রে? ”
– ” তামান্না আইস্ক্রিম খাওয়া ছেড়ে বললো।মামা এই প্রথম তোর কোনো পছন্দের তারিফ করতে হচ্ছে।দাড়া আমি মেয়ের ইনফো নিয়ে আসতেসি! ”
– ” আজই ইনফো নেওয়া ঠিক হবে? ”

একথা বলার আগেই তামান্না গিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলো!

– ” হাই আমি তামান্না! ”
– ” হ্যালো আমি তামান্ন! ”
– ” নিউ ব্যাচ তো তুমি? ”
– ” জ্বি হ্যা! ”
– ” আমি ফাইনাল দিয়েছি এবার! ”
– ” ওহ আচ্ছা! ”

তামান্নার একদম ভনিতা করার অভ্যাস নাই। তাই একদম ডিরেক্টলি বলা শুরু করলো!

– ” ঐ যে দেখছো সাদা পাঞ্জাবি আর চকলেট কালারের কটি পড়া একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ওর নাম “আবিদ তালুকদার” আমাদের ব্যাচের টপার।ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ তালুকদার এর ছেলে। আমি ওর বেষ্টফ্রেন্ড তামান্না। ও এই অবধি তিনটা রিলেশনশিপ করছে। সবগুলো রিলেশনশিপ এ যাবার পরে আমায় বলছে।তাই একটাও টিকে নাই। একমাত্র এইটা রিলেশনশিপ এর প্রথমে বলছে ওর তোমাকে খুব পছন্দ হইছে। এবার তোমার নাম্বার দাও! ”

মেঘ পুরোই আহাম্মক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক কী উত্তর দিবে বুঝতেই পারছে না। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক রেখে বললো।

– ” আসলে আপু আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছে! ”
– ” কেনো? বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি তোমার? ”
– ” না সিঙ্গেলই!”
– ” তাহলে নাম্বার দাও,সমস্যা কোথায়? তোমার ইচ্ছা না থাকলে তোমায় বিরক্ত করবে না সে দায়িত্ব আমার! ”
– ” দেখুন আপু। আপনি আমার সিনিয়র, ঠিক কী বলা উচিত আমি বুঝতেসি না। কিন্তু একটা মানুষকে আমি চিনি না জানি না তাকে কীভাবে নাম্বার দেই বলুন। কাইন্ডলি মাইন্ড করবেন না। কিন্তু আপনার এই স্ট্রেইট ফরোয়ার্ডনেস আমার ভালো লেগছে! ”
– ” আরে চেনা-জানার বিষয়? ওয়েট! ” বলেই তামান্না চেচিয়ে আবিদকে ডাক দিলো। আবিইইদ এই আবিইদ এদিকে আয়!

আবিদ পড়লো মাইনকা চিপায়। এই মেয়েরে পাঠাইলো ডিটেইলস জানার জন্য এই মেয়ে এখন আমারেই ডাক দিচ্ছে!
আবিদ ঠিক লজ্বা পাবে, ভয় পাবে, খুশি হবে না রাগ হবে বুঝতে পারবে না। কিন্তু মেঘের সামনে যতই আগাচ্ছিলো ততই হৃদস্পন্দন বাড়ছিলো। একথা সত্য এর আগে এরকম অনুভুতি আবিদের কখন কোনো মেয়ের জন্যই হয় নী। আবিদ মেঘের দিকে না তাকিয়েই তামান্নাকে তুতলিয়ে তুতলিয়ে বলছে।

– ” কীরে ডাকছিস কেনো?”
– ” আমি ওরে বলে দিছি যে তুই ওরে পছন্দ করিস!”

আবিদ পারছেনা এখন একটা বড় গর্ত করে সেখানে তামান্নাকে পুতে দিয়ে নিজে পুতে যেতে। নিজেকে যথাসম্ভব স্থির আর স্বাভাবিক রেখে আবিদ মেঘের দিকে তাকালো। এই প্রথম কাছ থেকে মেঘকে দেখছে আবিদ। সৃদস্পন্দন,ভালোলাগা,শরীরে ঠান্ডা-গরম মিশ্র তাপ চলাচল করা। এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে আবিদের। একবার অসহায় দৃষ্টিতে তামান্নার দিকে তাকালো আবিদ। তাকাতেই তামান্না বললো,” আরে আবুল হাই বল না এগুলাও কী বলে দিবো নাকি?”

আবিদের এই আনাড়িপনা দেখে মেঘ মিটি-মিটি হাসছিলো। এর আগে বহু ছেলে প্রোপোজ করেছে মেঘকে সবার প্রোপোজই বিরক্ত হয়েছে মেঘ। আর ছেলেদের প্রোপোজ করা নিয়ে একটা থিউরিও সে আয়ত্ত করে নিয়েছে। আর সেই থিউরি অনুযায়ি স্পষ্ট আবিদ আনাড়িপনা করছে।

আবিদ একটা বড় শ্বাস নিয়ে মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো!

– ” হাই, আমি আবিদ তালুকদার! ”

কথাটা বলার সাথে সাথেই আবিদের মনে হলো সে যেনো ফিজিক্স এর ভাইবার উত্তর দিলো মাত্র। এতোটা রিলিফ লাগছে আবিদের।মেঘ নিজের মিটি-মিটি হাসি আর খানিক ভালোলাগাটা লুকিয়ে স্বাভাবিকভাবে বললো!

– ” হ্যালো, আমি আদনিন রহমান মেঘ! ”

মেঘ নামটা শোনার সাথে সাথেই আবিদের শরীরে যেনো একটা প্রবাহ বয়ে গেলো। আবিদের মুখ থেকে বেড়িয়েই গেলো,” তোমার নামটা কিন্তু আসলেই খুব সুন্দর! “। মেঘও র‍্যাপিডলি উত্তর দিলো, ” হুম সবাই ই বলে আমার নাম নাকি সুন্দর!”

আবিদের বলতে তো অনেক কিছুই ইচ্ছে করছিলো। আবিদের তো ইচ্ছে করছিলো মেঘের বারবার সামনে আসা চুলগুলো কানের পেছনে গুজে দিতে কিন্তু আবিদ কথা বলার সাহসই পাচ্ছে না। আবিদের চুপথাকা দেখে মেঘই বললো।

– ” আচ্ছা আপনি আমায় পছন্দ করেন? ”

এবার আবিদ কিছুটা সাহস পেলো। আবিদ নিজে মনে মনে আওড়াতে থাকলো। ছিঃ আবিদ, তুই এভাবে লজ্বা পাচ্ছিস কেনো? একটু কথাই তো বলবি বলে ফেল না। আবিদ নির্দিধ্বায় মেঘকে বলে,” হ্যা তোমায় খুব পছন্দ আমার! ”
– ” আচ্ছা, আপনার মনে হয় আপনি প্রোপোজ করলে আমি রাজি হয়ে যাবো? ”
মেঘ মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে যদি হ্যা বলে তাহলে এখানেই শেষ। আর সুযোগই দেবে না সে। কিন্তু আবিদ মেঘকে অবাক করে দিয়ে বললো, ” যদি এই কয়েক মুহুর্তের কনভারসেশনে তুমি আমার প্রোপোজে হ্যা বলে দাও তাহলে সেটা ভালোবাসা না এট্রাকশন। একটা মেয়ের একটা ছেলেকে পছন্দ হতে কিছুটা টাইম লাগে, ছেলেটার সমন্ধ্যে বিষদ জানতে হয় তারপর পছন্দের ব্যাপার আসে। মুলকথা হলো একটা মেয়ের ভালোবাসা পেতে হলে ইম্প্রেস করতে হয় একটা ছেলেকে। কিন্তু আমি এ পর্যন্ত তোমাকে ইম্প্রেস করার মতো কিছুই করি নী। তাই অবশ্যই আমি প্রোপোজ করলে তুমি না বলবে! ” কথাগুলো বলেই আবিদ কিছুটা থামলো।

মেঘের মনের কাজতো সেরে গেছে। মেঘের মাথা আর মনের মধ্যে খালি ঘুরছে ছেলেটা কি সুন্দর মনের কথা পড়তে পারে, কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ছেলেটা তো আমার থিউরিই ভুল প্রমান করে দিয়েছে।

আবিদ আবার বলা শুরু করলো। আমি তোমায় ইম্প্রেস করার জন্য সুযোগ চাচ্ছি শুধু, যদি তোমার ইচ্ছে বা তোমার দিক থেকে কিছু থাকে আরকি। আমি মেয়েদের যথেষ্ট সম্মান করি। আর আমি কোনো রোডসাইড রোমিও না যে তুমি না বলার পরেও তোমায় বিরক্ত করবো। তাই তোমার দিক থেকে অল্পকিছুও যদি থেকে থাকে তাহলে আমরা নাম্বার এক্সচেঞ্জ করতে পারি!!

মেঘের মনের মধ্যে তো হাতুড়ি দিয়ে ইট ভাঙা শুরু হয়ে গেছে। এর আগে কেউ এভাবে গুছিয়ে প্রোপোজই করে নাই মেঘকে তাই হতো মেঘ আজ অবধি সিঙ্গেল। মেঘ বললো, ” আপনার কথাগুলো যুক্তিসংগত। কিন্তু আমি তো হুট করেই কোনো উত্তর দিতে পারবো না। তাই কিছুদিন সময় আপনি নিজেও নিন আমায়ও দিন। আপনিও আমাকে জানুন আমিও আপনাকে জানি। তারপর নাহয় স্বিদ্ধান্ত নিবো!” কথাগুলো বলে মেঘ একটু থেমে যায়। মেঘ ভাবছে তার নিজেরও তো আবিদের স্বমন্ধে জানতে হবে। তাছাড়া মেঘ চায়না জীবনের প্রথম প্রেম কোনো ভুল মানুষের জন্য সৃষ্টি হোক। আমরা নাম্বার এক্সচেঞ্জ করতেই পারি আমার কোনো সমস্যা নেই তাতে!!

আবিদ তো পারছেনা খুশিতে ফোনের নাম্বার হয়েই মেঘের কাছে চলে যায়। আবিদ নিজের নাম্বারটা মেঘকে দেয়। কিন্তু মেঘ নাম্বার না দিয়েই বলে আমিই আপনাকে ফোন দিয়ে নিবো।আমার একটু তামান্না আপুর সাথে কথা ছিলো যদি আপনি একটু যেতেন আরকি। আবিদ একটু মুচকি হেসে বললো ” তোমার ফোনটা যত তাড়াতাড়ি আসবে। আমি তত বেশি খুশি হবো! “। মেঘ উত্তর একটু মুচকি হাসি ফিরিয়ে দিলো আর কিছুই বললো না। আবিদ ওখান থেকে যেতেই মেঘ তামান্নাকে বলা শুরু করলো!

– ” আপু আমার তোমার হেল্প লাগবে! ”
– ” হুম আপু বলো! ”
– ” আসলে আপু তুমি যেমন স্পষ্টভাষী আমিও ঠিক তেমন।এর আগে আমায় বহু ছেলে প্রোপোজ করেছে কিন্তু আমার কারো জন্যই ভালোলাগা তৈরী হয় নাই। বরং আমি বিরক্তবোধ করছি। কিন্তু এই প্রথম ওনার জন্য ভালোলাগা তৈরী হয়েছে। আমি এ অবধি একটা রিলেশনশিপ এ ও যাই নাই। আমি চাই না আমার জীবনে প্রথম প্রেম হিসেবে কোনো ভুল মানুষ আসুক। তাই ওনার স্বমন্ধে সব ভালো আর খারাপটা তোমায়ই বলতে হবে! ”
– ” আরে এই সামান্য ব্যাপার, তুমি কলেজের যেকোনো পুরোনো ব্যাচ এর থেকে আবিদের স্বমন্ধে জানতে পারবা। এমনকি কলেজের টিচার্সদের থেকেও জানতে পারো। আবিদের খারাপ অভ্যাস বলতে আবিদ সিগারেট খায়, আবিদের শর্ট টেম্পার একদম মাত্রাতিরিক্ত, আর আবিদের ধৈর্য্য নেই বললেই চলে। এসব ছাড়া আবিদের কোনো খারাপ দিকই নেই! ”
– ” আচ্ছা আপু থ্যাংকস এ লট। আমি ফোনে কথা বলে নিবো ওনার সাথে। তোমার নাম্বারটা দাও!”

মেঘ তামান্নার নাম্বার নেবার পর তামান্নাকে বললো, ” আপু প্লিজ ওনাকে বইলো না যে আমি তোমার থেকে এসব জিজ্ঞেস করছি!”
– ” আচ্ছা নিশ্চিন্তে থাকো আমি বলবো না। আবির এসব জিজ্ঞেস করবে না। আর যদি করে তাহলে সত্যিই তোমার প্রেমে ডুবে গেছে!” বলেই হেসে উঠলো তামান্না সাথে মেঘও হেসে উঠলো!

মেঘ চলে গেলো। তামান্না এখন আবিদের সাথে হাটছে ক্যাফেতে গিয়ে বসবে তাই। আবিদ ক্যাফেতে বসেই জিজ্ঞেস করলো, ” কীরে কী বললো মেঘ? ”

– ” যা বলছে বলছে। তোরে বলা যাবে না শুধু আমি এককথায় বলবো তোর গ্রিন সিগনাল আছে মাম্মা।গো এহেড! ”

আবিদের খুশি যেনো বাধ মানছেনা!!

ক্যাফে থেকে বের হয়ে আবিদ তামান্নার সাথে তামান্নার বাসায় চলে গেলো। সেখানে লাঞ্চ করে নিলো। ধরতে গেলে তামান্নার বাসা আবিদের জন্য ২য় বাসা কোনো ফর্মালিটিই নেই সেখানে। তামান্নার বাবা-মা আবিদকে নিজের ছেলের মতই দেখে। সারা বিকাল আবিদ আর তামান্না ছাদে বসে অপেক্ষা করলো মেঘের ফোনের জন্য তারপর। কিন্তু মেঘ ফোন করলো না। সন্ধ্যায় আবিদ বাসায় চলে এলো।

রাত প্রায় ৮ টা বাজে তখন মেঘ ফোন করলো।

চলবে!