#প্রিয়_পৌষমাস ৩৫.
#মেঘা_সুবাশ্রী ®️
নিশুতি রজনী। মন কাননে চলছে ঘোর অন্ধকার। অমানিশার অতলে ডুবে আছে সে। দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নেই বোধহয়। আরিবা নিজের জীবনের ছক কষতে মরিয়া। হঠাৎই ভূকম্পন হল তার মুঠোফোনের। সে চমকালো এত রাতে কে কল দিল। স্ক্রিনে উঁকি দিতে দেখল, বাংলাদেশী নাম্বার। অবাক হয়নি তেমন। তার বাবা-মা ঘুমানোর আগে তাকে একবার করে ফোনকল দেয়। কল রিসিভ করতেই গৌরবের উচ্ছ্বসিত মধুর কন্ঠস্বর।
‘কেমন আছ আম্মু?
আরিবাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করল। বলল,
‘ভালো আছি পাপাহ। তুমি কেমন আছ?’
‘ভালো আম্মু। আমরা কিন্তু কানাডায় ফিরছি দু’দিন বাদে। তবে এবার আমাদের সাথে একজন অতিথি আসবে। তার জন্য অতিথিরুম সুন্দর করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখবে। সে এসে যেন কোন অভিযোগ না করতে পারে। ঠিক আছে আম্মু, ভালো থেক।’
গৌরব আরও কিছু কুশলাদি বিনিময় করে কল কাটল। কিন্তু আরিবার ঘোর যেন কাটছেই না। অতিথি কে আসবে এবার? সে বেশ চিন্তায় পড়ল। কিন্তু কোন সুরাহা মেলেনি তার।
সকালের ঘুম ভাঙলো পাখির মিষ্টি শব্দে। পৌষী নাস্তা রেডি করে তাকে ডাকল। সে ফ্রেশ হয়ে নীচে নামতেই দেখল তার ভাই তৈরি হয়ে আছে অফিস যাওয়ার জন্য। নাস্তা শেষ করে ছুটে যাবে অফিসের উদ্দেশ্য। সে হাই তুলতে তুলতে টেবিলে বসল। আরাভ বোনের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছে। এক ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
‘কি ব্যাপার বল তো! আজকাল ভার্সিটি যেতে চাস না কেন? আগে তো কখনই মিস হত না তোর?’
আরিবার স্থির ও শীতল দৃষ্টি। গলার স্বরও ভীষণ শান্ত। বলল, ‘ইচ্ছে করে না।’
‘কেন ইচ্ছে করে না?’
‘এমনিই।’
আরাভ দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করতে গিয়েও চুপ হয়ে গেল। কিন্তু প্রসঙ্গ ঘুরাতে বলে উঠল,
‘কিন্তু তোর ভাবী ভার্সিটি যাবে। তার সাথে অন্তত যাওয়া দরকার তোর। ও একা গিয়ে বোর হয়ে যাবে। তাছাড়া এ দেশের জন্য সে একেবারে নতুন। ভাষা জটিলতাও আছে তার। যা না বোন।’
আরিবা চুপচাপ উপর নীচ করে মাথা নাড়ালো। অর্থাৎ সে যাবে। আরাভ খেতে খেতে আরিবাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করল। আকস্মিক এমন পরিবর্তনের কারণ বুঝতে পারল না। তবে পৌষীকে ইশারায় বলল তাকে চোখে চোখে রাখতে। পৌষীও ইশারায় হ্যাঁ বলে জানান দিল। সে অবশ্যই খেয়াল রাখবে।
____________
ভার্সিটি পা রাখতেই আরিবার পা যেন থমকে দাঁড়াল। হৃদপিণ্ড কাঁপছে ভীষণ। ভয় যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে তাকে। কিন্তু তার যে ভয়কে জয় করতেই হবে। পৌষীর একহাত চেপে ধরল। অধরকোণে কিঞ্চিৎ হাসি ফুটিয়ে বলল,
‘চল ভাবী, আমাদের ক্যাম্পাসে।’
পৌষী চলল তার কথামত। কিন্তু কিছু দূর যেতে কারো করুণস্বর ভেসে এল, ‘হেই মিস।’
আরিবা তাকাল না। অথচ পৌষী কৌতুহলবশত পেছনে ঘাড় বাঁকাল। দেখল সুঠাম গড়নের সুদর্শন এক যুবক দাঁড়ানো। যার ঠোঁটে মিষ্টি হাসি ঝুলছে। পৌষী জিজ্ঞেস করল,
‘কাকে ডাকছেন?’
যুবকটি আরও কয়েক কদম এগিয়ে এল। আগের মতই হাসি ঝুলছে তার। বলল,
‘আপনার নাম পৌষী?’
পৌষী চমকে উঠল। চোখ পিটপিট করে বলল, ‘আপনি বাংলা জানেন? আবার আমার নামও জানেন? কীভাবে?’
যুবকটি মজা পেল বোধহয়। রগড় গলায় বলল, ‘আরও অনেক কিছু জানি ভাবী?
পৌষী ফের চমকালো। বলল,
‘ভাবী, আমি আপনার ভাবী কীভাবে হই?’
আরিবা চটজলদি জবাব দিল, ‘ও আমার সহপাঠী। তাই তোমাকে চেনে। এর বেশি কিছু না। চল আমরা ক্যাম্পাসে যাই।’
পৌষীর হাত টেনে আরিবা হনহনিয়ে ক্যাম্পাসের দিকে ঢুকল। অথচ ইয়ান পেছনে হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে আছে। সে আরিবার মতিগতি বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশ থেকে ফেরার পর থেকে তাকে বার বার এড়িয়ে যাচ্ছে। তার ফোনকল রিসিভ করে না। নাম্বার ব্লকলিষ্টে। রীতিমতো তাকে অপমান করে যাচ্ছে। এর সুরাহা কীভাবে করবে? কিছুসময় ভাবল। এরপর সেও পিছু ছুটল আরিবাদের অনুসরণ করে।
আরিবা ভয় পেলেও দমে গেল না। না তার হাঁটার গতি কমালো। পৌষী আন্দাজই ঢিল ছুঁড়ল। বলল,
‘ভালোবাসতে খুব। অনেক পছন্দের সুপুরুষ ছিল, তাই না?’
আরিবা হঠাৎই থেমে গেল। পৌষীকে ধরা হাতও ছুটে গেল তার হাত থেকে। থমথমে মুখশ্রী। তবে হুট করে মুখের আদল পরিবর্তন হয়ে গেল। বলল, ‘অ্যাই হেইট হিম।’
‘আমাকে বিশ্বাস করে বলতে পারও আরিবা। আমি এই বিষয়ে কারো সাথে শেয়ার করব না। প্রমিস।’
আরিবা হাসল। তবে সেই হাসি আনন্দের নয়, বরং নিজের উপর তাচ্ছিল্যের হাসি। পৌষীর দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ভাবী নিরিবিলি বসে আমরা এসব নিয়ে কথা বলব, ঠিক আছে। কিন্তু এখন না। দেখ ঐ বেয়াদবটা আমাদের পিছু নিয়েছে। দ্রুত ক্যাম্পাসে চল।’
পৌষীও সম্মতি জানাল। দু’জনে ছুটে গেল ক্যাম্পাসে। ইয়ান ফের হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে পড়ল। মিস হয়ে গেল আজকের জন্যও। তবে এরপর সে সুযোগ পেলে একদমই ছাড়বে না।
____________
পুরো ঘর জুড়ে উৎসব উৎসব ভাব। পৌষী নিজ হাতে ঘরের কাজ করছে। সঙ্গী হিসেবে আছে আরিবা। আর কিছুসময়ের মাঝে গৌরব আলিশবা আসবে। কিন্তু সাথে আসবে একজন অতিথিও। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি যেটা অজানা পৌষীদের। বাহারী রকমের রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। যার পুরো আয়োজন করেছে আরিবা পৌষী দু’জনেই মিলেই।
দুপুর গড়াতেই আরাভ এয়ারপোর্ট থেকে তার বাবা-মাকে নিয়ে আসল। গৌরব আলিশবাকে দেখে সেই আনন্দিত পৌষী। এতদিন পর বাড়ি ভরপুর লাগছে তার কাছে। তাদের জড়িয়ে ধরে আহ্লাদী হয়ে বলল, তোমরা কতদিন পর এলে। এবার থেকে আর একা একা লাগবে না। গৌরব আলিশবা পৌষীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। গৌরব রগড় গলায় বলল, তা এতদিন বুঝি ভালো লাগেনি আম্মাজান। পৌষী কিঞ্চিৎ লজ্জা পেল। বলল, বড় পাপাহ, বড় আম্মু যাও তোমরা ফ্রেশ হয়ে নাও। আজকে তোমাদের জন্য আমি আর আরিবা মিলে রান্না করেছি। খেয়ে বলবে কিন্তু কেমন হয়েছে।
আরিবা বাবা-মায়ের সাথে কুশল বিনিময় শেষ করে গাড়ির দিকে তীক্ষ্ণ নজর দিয়ে আছে। অতিথি কে দেখার জন্য? কিন্তু অতিথি নামার নামই নেই। কিন্তু যেই মাত্র নজর ঘুরালো, দেখল গাড়ি থেকে নামছে এক পুরুষ অবয়ব। চোখে কালো সানগ্লাস, গায়ে কালো হুডিসহ জ্যাকেট, পরনের প্যান্ট সাদা বর্ণের। হুডিতে মাথা ঢাকা, চোখেও সানগ্লাস। সে বুঝতে পারল না এই লোকটা কে? কিন্তু যখন তার মুখোমুখি হল হঠাৎই সেই লোক চোখের সানগ্লাস খুলে নিল। তারপর যাকে দেখল পুরো থ হয়ে গেল। সে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে সেই লোকের দিকে। তার এমন চাউনি বোধহয় সেই লোকের সহ্য হল না। সে বলে উঠল,
‘ম্যাডাম ভেতরে প্রবেশ করবো সাইড দিন।’
আরিবা বেকুব বনে গেল নিজের কৃতকর্মের জন্য। তবে তার রাগ হচ্ছে ভীষণ। এই পার্থের বাচ্চা এখানে কেন? সে হনহনিয়ে মায়ের কাছে গেল জানার জন্য। কিন্তু ততক্ষণে তার মা রুমে চলে গেছে ফ্রেশ হওয়ার জন্য। তার বাবাও নেই সামনে। সে আরও অবাক হল পার্থের আচরণ দেখে। তাকে দেখেও কেমন না দেখার ভান করছে। সে বুঝল না এই ছেলের এত ভাব কিসের?
দুপুরের খাবার শেষে পার্থকে অতিথিশালায় পাঠানো হল রেষ্ট করার জন্য। পার্থও নিশ্চুপ নিজের রুমে চলে গেছে। আরিবার দিকে ভুল করেও তাকায়নি। পৌষী অবশ্য বেশ অবাক হয়েছে পার্থকে দেখে। কিন্তু আরিবার মুখের ভঙ্গিমা দেখে হাসল। কেউ একজন তো এসেছে তাকে জব্দ করতে। আরিবা নিজের রুমে শুয়ে আছে। ভাবছে অনেক কিছুই। কিন্তু এর সমাধান খুঁজে নিল মা-বাবার কাছে গিয়ে। তার বাবার কাছ থেকে জানতে পারল, পার্থ দিন দু’য়েক থাকবে শুধু তাদের বাড়িতে। এরপর সে তার হোস্টেলে চলে যাবে। স্টুডেন্ট হিসেবে কানাডায় পড়তে এসেছে। এটা না’কি তার স্বপ্ন ছিল। তাই তাদের সাথে নিয়ে এসেছে তাকে। এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু আরিবার মনে হচ্ছে, পার্থ তাকে জ্বালানোর জন্য ইচ্ছে করে কানাডায় পড়তে এসেছে। এটা তার ড্রীম নয়। হয়ত প্রতিশোধ স্পৃহা হতে পারে।
দিন দু’য়েক শেষ হতেই পার্থ নিজের হোস্টেলের উদ্দেশ্য চলে গেল। এই দু’দিনে আরিবার সাথে ভুল করেও সে দৃষ্টি বিনিময় করেনি। বরং দূরত্ব রেখেছে হাজারগুণ। আরিবা আশ্চর্য হচ্ছে বারবার তার আচরণ দেখে। সে ভাবতেই পারছে না। ছ্যাবলার মত তার পেছনে ঘুরঘুর করা ছেলেটা সত্যিই বদল হয়ে গেছে। রাগ হল ভীষণ। কিন্তু কিচ্ছু করারও নেই তার।
আরাভ আজকাল ভীষণ ব্যস্ত। নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে সে। কিন্তু পৌষীর আহ্লাদীপনাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সে অবাক হয়। বউ তাকে হুঁশিয়ারী দিয়ে রাখে। সময়ের হেরফের যেন না হয়। দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে। রাতে তাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিতে হবে। নয়ত সে খাবার মুখে তুলবে না। আরাভ বিরক্ত নয়। তবে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় বউকে সময় দিতে পারে না। তখন রাগে বোম হয়ে থাকে তার বউ। কি আর করবে? একটাই বউ তার। তাই তো রাগ-অভিমান কমানোর জন্য হলেও রাতে ঠিক সময়ে বাসায় ফিরে আসতে হয়। তবুও বউয়ের অভিমান ভাঙ্গে না।
______
পৌষী আরিবা দু’জনেই একসাথে ভার্সিটি আসা-যাওয়া করে। পৌষী আরিবার সমস্যা সম্পর্কে জেনেছে। শুনে সে তাজ্জব বনে গেছে। দেখতে বেশ সুদর্শন যুবক ইয়ান। আর সেই ছেলে কি’না সমকামী ও বহুগামী। অর্থাৎ তার কাছে পুরুষও ভালো লাগে আবার নারীও। আস্তাগফিরু’আল্লাহ। আরিবা তাকে বলা শেষ করতেই পৌষীর গলার স্বর যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যতবার মনে পড়ে সেই কথা, ততবার সে আস্তাগফিরু’আল্লাহ পড়ে। বামে কয়েকবার থুথু নিক্ষেপ করে পড়ে উঠে,
‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজিম।’
পৌষীকে বলে উঠল, ‘তুমি কীভাবে জানলে এসব?’
আরিবা অকপটে বলে উঠল, ‘বাংলাদেশ থেকে ফিরে ওর সাথে দেখা করতে যাই। সারপ্রাইজ দেব ভেবে ওকে বলেনি। কিন্তু সেদিন ওকে এক হোটেলে যেতে দেখি। সাথে দুজন ছেলে। হোটেলে সেই ছেলের পর একটা মেয়ের সাথেও তার রঙ্গলীলা দেখতে পাই। বিশ্বাস কর, এসব দেখে আমি হোটেল থেকে বের হয়ে বমি করে দেই। নিজের প্রতি তখন বেশ ঘৃণা জন্মে। ছিঃ! এমন ছেলেকে সে পছন্দ করত। যেই কি’না! আমি আর ভাবতে পারিনি। ছুটে গিয়েছিলাম আমার এক মেয়ে ফেন্ড সিমলার কাছে। সেই মেয়ে বাংলাদেশী। কিন্তু তার কাছে এসব খুলে বলতেই সে হেসে উঠল। বলল, এসব তো স্বাভাবিক ব্যাপার কানাডার জন্য। তুই এত রিয়্যাক্ট করছিস কেন? এখানে এসবই চলে। বিশ্বাস কর ভাবী, আমি ভাবতেই পারিনি সে বাংলাদেশী হয়ে এসব বিষয়কে স্বাভাবিক ভাবে।’
পৌষী সান্ত্বনা দিল। বলল, ‘তুমি বড্ড বাঁচা বেঁচে গেছ এসব শয়তানের প্ররোচনা থেকে। সঠিক সময়ে আল্লাহ তোমায় পথ দেখিয়েছে। শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর কাছে।’
____
প্রায় ৪ মাস পর,,,
হঠাৎ একদিন সুখবর এল পৌষী মা হতে চলেছে। গৌরব আলিশবা তো সেই খুশি। অবশেষে দাদা-দাদু হতে যাচ্ছে তারা। সৌরভ প্রিয়াকে এ খবর পৌঁছাতেই তারাও খুশিতে আত্মহারা। অবশেষে তারাও নানা-নানি হতে যাচ্ছে। কিন্তু বেচারা পূর্ণী অসহায়। সে খালামণি হবে কিন্তু তাও নিজ চক্ষে দেখতেও পাবে না। পৌষীর এমন খবরে আরাভও উচ্ছ্বসিত। বউকে কাছে টেনে বলল,
‘কি চাও পৌষমাস? তোমাকে কি দিলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে, বল তো?’
পৌষী অকপটে বলল, ‘বাচ্চার খুশিতে জিজ্ঞেস করছো আমি কি চাই? তার মানে বাচ্চাই সব, আমি কিছু না। এতদিন তোমার অবহেলা দেখে এসেছি। যেই বাচ্চার কথা শুনেছো, আর অমনিই তোমার ভালোবাসা চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।’
‘আরে আমি তোমাকেই ভালোবাসি। কিন্তু নতুন প্রজেক্টের কারণে একটু সময়ের হেরফের হয়েছে। এজন্য এত রাগ করলে হবে?’
‘একদমই বাহানা দিবে না। তোমার কাজই সব, আমি না।’
‘আরে বউ এত চেতলে হবে?’
‘একদম কাছে ঘেঁষবে না, দূরে থাকো।’
আরাভ তব্দা খেয়ে বসে আছে। এখনো বাচ্চা আসেনি, তার আগেই তাকে আউট করে দিল। এ কেমন বিচার!
চলবে,,,,,