প্রিয় সুখ-৪
________________
আষাঢ় মাস।রাতের আকাশ গভীর কাল।ভাসছে ধূসর রঙ্গের মেঘ আকাশ জুড়ে।একটা অবাধ্য দমকা হাওয়া হু হু করে ঘাসে বিলি কেঁটে উড়ে এসে চুলের সাথে মিশে যাচ্ছে যেন।নববধূর দোপাট্টার মত কাঁপছে গাছের নরম সবুজ পাতা।দু’পাশ থেকে ঝিঁঝিঁ পোকার রাজত্বের একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে।কানে এসে বাড়ি খাচ্ছে বার বার শব্দ।জোনাকি পোকারা আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে বাতাসের সাথে পেরে উঠছে না।ব্যথিত হৃদয় নিয়ে তারা আবার উল্টো পথ ধরছে।অন্ধকার নিরিবিল পরিবেশ ধরে বাতাসের সাথে হাঁটছে সাত জন মানুষ।দূর থেকে এদের এক মনে হচ্ছে।ঠিক আলাদা করা যাচ্ছে না।অনেক গুলো পায়ের ধ্বনির শব্দে মুখরিত ঠান্ডা নির্জন ভূতুরে শব্দচয়ন।কান পেতে সেই শব্দ পরিবেশ অবশ হয়ে শুনছে।হঠাৎ হঠাৎ শিয়াল ডাকছে বনের গহীন অরন্যের মাঝ থেকে।কুকুরের বিশ্রী ডাকটা কানের পর্দা ভেদ করে মাথার মগজে লাগছে।টনটন করে উঠছে।আবহাওয়া ভালো না।যে কোন সময় ঝপাং করে নিজের জোর খাঁটিয়ে বোসতে পারে বর্ষা।গায়ের সাথে লেপ্টে যেতে পারে বৃষ্টির সৌন্দর্যের প্রকৃত বিন্দু জল।সাত জোড়া পা একত্রে হলেও পায়ের শব্দ ছ’জোরা।একজোরা পা নিঃশব্দে হাঁটছে।মাঝে মাঝে পায়ের উপরে পাথর নিয়ে কেমন করে যেন ছুঁড়ে মারছে সামনে।আপন খেঁয়ালি মানুষটার মাঝে চিন্তা নেই।সে আনন্দ পাচ্ছে।ভালো লাগছে যেন এই ভয়াবহ ছাদ বিহিন পরিবেশটা।মাথার উপরে যে মস্ত আকাশটা কালো হয়ে আসছে, সেদিকে সময় ব্যয় করা তার কাজ নয়।দূর থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে নীহারিকা চমকে উঠে।ভয়ে আঁকতে উঠে আঁকড়ে ধরে পাশে থাকা মানুষটাকে।সে লক্ষ করেনি।তার পাশে থাকা মানুষটা একজন পুরুষ।সাবধানী চোখে চারপাশ পরোক্ষ করে নিয়ে যেই পাশে তাকাল সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে পেয়ে উঠে একটু পিছিয়ে গিয়ে বলল,’ সমস্যা কি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?’
বিমুগ্ধ কিঞ্চিত হাসির একটা শব্দ করে উঠে বলল,’যার নিজের সর্বস্বে সমস্যা সে আর একজনের সমস্যার কথা শুনে কি করবে?’
আবার হাসলো বিমুগ্ধ।আদো আদো কন্ঠে নীহারিকা বলল,’ আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?’
চমকের একটা অদ্ভুত ভাব নিয়ে বিমুগ্ধ বলল,’ কি কি?’
‘ ওই পিছন থেকে কেউ ডাকছে মনে হয়।’
এবার ভয়ের ভঙ্গ ধরল বিমুগ্ধ।বেশ কম্পিত কন্ঠ ছেড়ে বলল,’ হুম পাচ্ছি।এই অন্ধকার পথ।আমরা একা।পরিবেশ উশৃঙ্খল,আবহাওয়া বীভৎস,চুপচাপ নিরিবিলি পরিবেশ হচ্ছে কি জানেন?’
চাপা ভয়ে ভয়ে নীহারিকা বলল,’ কি?’
‘ জ্বিন আস্তানা।যেহেতু পরিবেশ এমন জঘন্য হয়ে আছে তার মানে আশেপাশেই জ্বিন আছে।’
গলা শুঁকিয়ে কাঠ নীহারিকার।জ্বিন জাতির উপর সে বিশ্বাসী।প্রতিটি মুসলিম বিশ্বাসী।সে হিসেবে তার মনে হচ্ছে সত্যি হলেও হতে পারে।এমন নির্জন অঞ্চলেই তো এদের বাসস্থান হয়।বিমুগ্ধের উজ্জ্বল চোখ জ্বল জ্বল করে জ্বলছে।নীহারিকা আরো এক ধাপ ভয়ে শিউরে উঠে বলল,’ আপনি কি সত্যি মানুষ ??’
গম্ভীর হওয়া কন্ঠে জবাব দেয় সে,’ হতেও পারি আবার নাও হতে পারি।মানুষের মনোভাবের উপরে নির্ভর করে সেটা।’
‘ এভাবে ভয় দেখাচ্ছেন কেন?যদি জ্বিন হন বলে দিন।আর না হলেও বলে দিন।শুধু শুধু ভয় দেখিয়ে মারতে চাইছেন কেন?’
‘ যদি বলেদি তাহলে কি হবে?জ্বিন বললে কি ভয় পাবেন না?প্রেমে পড়ে যাবেন? জ্বিন মানুষের প্রেমের ক্যামেস্টি অস্থির হয়।’
‘ ফালতু কথা বলবেন না।’
‘ ফালতু কথা কই বললাম?শুধু জানতে চাইলাম।ধরেন আমি জ্বিন।আপনার সাথে নাটকীয় ভাবে আমার প্রেম হয়ে গেলো।তারপর দুজনে বিয়ে করে নিলাম।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের ছেলে মেয়ে জ্বিন হবে না মানুষ??’বিমুগ্ধকে চিন্তিত দেখালো।‘ আপনি কিন্তু মাথা গরম করছেন?’ বেশ রেগে বলল নীহারিকা।বিমুগ্ধ সিরিয়াস ভাব নিয়ে আবার বলল,’আমি নিজেই বলে দিচ্ছি।কিন্তু আপনি যদি শুনতে চান তাহলে আগ্রহ প্রকাশ করতে হবে।’
‘ আমি তো আপনার প্রেমেই পড়বো না জীবনেও।এটা জানার প্রতি আমার বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই।প্রেমে পড়ার মানুষের কি অভাব পড়েছে পৃথিবীতে?যে আপনার মত এমন অদ্ভুত প্রানীর প্রেমে পড়ছে যাবো?আশ্চর্য।’
জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব নিয়ে বিমুগ্ধ ডান হাতের দুটি লম্বাটে আঙ্গুল তুলে চুল সরিয়ে দেয় নিজের কপাল থেকে।তারপর রয়ে সয়ে বলে,’ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সুন্দর মেয়ে গুলো প্রেমে পড়ে পিছনের সিটের ব্যাক বেঞ্চারদের।সবচেয়ে বুদ্ধিমান ছেলে গুলো প্রেমে পড়ে বেছে বেছে বোকা সোকা কম বুদ্ধি সম্পূর্ন মেয়েদের উপরে।ব্যতিক্রম আছে।তবে সচরাচর এমনটাই হয়।বুঝতে পেরেছেন মিস ক্ষেপা মহিলা।’
‘ না পারছি না।আপনার মাঝে কি এমন আছে যে প্রেমে পড়বো??আর নিজেকে কি মনে করেন?টম ক্রুজ না কি রবার্ট প্যাটিনসন না কি এলজিন আলতান?’
‘ বাপরে এত নাম জানেন?কিন্তু দুঃখিত টম।ওদের মত আমি মুভিতে রঙ্গো ঠঙ্গো করি না।তাই ভুলেও আমি নিজের দাম কমিয়ে ওদের জায়গায় রাখবো না নিজেকে।আমি তো নিজেকে আল্লাহর রহমতে খুবই বুদ্ধিমান ভাবি।আমি নিজেই আপনার সাথে প্রেম করতে চাইবো না।আমি জেনে শুনে ভুল করিনা।’
নীহারিকা মুখ ফিরিয়ে হাঁটতে নেয়।বিমুগ্ধ ভয়ঙ্কর গলা করে চাপা স্বরে কানের কাছে বলে বসে,’ আপনার আশিক জ্বিন মনে হয় আপনাকে স্বরন করেছে।’
‘ আবার এসব শুরু করেছেন?আশ্চর্য তো।’
‘ ভয় করছে?’কোমল গলায় বলল বিমুগ্ধ।
নীহারিকার দম বন্ধ।নিঃশ্বাসের বিন্দু মাত্র শব্দ বের হচ্ছে না তার শ্বাস নালী থেকে।একদম নিস্তেজ মানুষ কথা বললে যেমন শুনায় ঠিক তেমন শুনাচ্ছে।বিমুগ্ধ এবার শব্দ করে হেসে উঠে।বাকিরা কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল।পিছনে তাকিয়ে ওদের দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পিছিয়ে আসে।অর্পন বেশ রেগে বলল,’ বিমুগ্ধ সব কিছুতে মজা নিস ঠিক আছে কিন্তু ভয় দেখাচ্ছিস কেন?মিস আপনি কিছু মনে করবেন না।ও মানুষই।আমরা সবাই মানুষ।’
হালকা ঝুঁকে বিমুগ্ধ নীহারিকার মুখ বরাবর মুখ রাখে।মাথা পিছনে এলিয়ে দেয় নীহারিকা।মুখ ভর্তি হাওয়া ফুঁ দিয়ে মুখের উপর উড়িয়ে দিয়ে বিমুগ্ধ বলল,’ আপনার কি মনে হয় আমি মানুষ?না কি জ্বিন,না কি জানোয়ার।আসলে প্রকৃত অর্থে এখন মানুষের সংখ্যা খুবই নগন্য।এখন কেউ হচ্ছে ভূতরে।কেউ হচ্ছে জানোয়ার,কেউ ভালো কেউ খারাপ।চারিত্রিক দিক দিয়ে বুঝা যাবে কে কেমন।আমাকে কেমন মনে হয়?বলুন মিস ক্ষেপা মহিলা?’
শেষ কথাটা সুর টেনে বলল বিমুগ্ধ।মনে মনে নীহারিকা বলল,’আমার আপনাকে একটা প্রচন্ড অসভ্য ছেলে বলেই মনে হয়।’
বিমুগ্ধ উদাসীন কন্ঠে বলল,’ তাহলে আমি সেটাই।পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই আলাদা আলাদা প্রতিটি ব্যক্তিবর্গের কাছে।পিছনে কোন মানুষ আছে।যে আপনাকে ডাকছে।আপা বলে।আপনার কি কোন পরিচিত মানুষ ছিল ট্রেনে??’
নীহারিকা বেশ সচ্ছ কন্ঠে বলল,’ আপনি তো সব আগে থেকেই জানেন।আপনিই বলুন ছিল কি না?’
‘ না ছিল না।আপনি একাই ছিলেন।’
‘ আচ্ছা আপনি সব আগে থেকে বলতে পারেন কিভাবে?’ বেশ কৌতুহলি শুনালো নীহারিকার গলাটা।বিমুগ্ধ রসিকতা করে বলল,’ ম্যাজিক।’ কথা শেষ করেই হাত দিয়ে মাথায় টোকা দেয় সে।নিজের মাথায় হাত দিয়ে আহাম্মকের মত তাকিয়ে থাকে নীহারিকা।
‘ আপনি চিন্তার বাহিরে চিন্তাবিদ।তবে লাভ নেই।আমাকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য অনেক গার্লফ্রেন্ড রয়েছে।এই কিছুক্ষণ পরে একজন ফোন করবে।’
সত্যি সত্যি ফোন বেজে উঠে।বিমুগ্ধ কানে ধরে ফোন।সতেজ হয়ে সে বলে,’ শুনুন আমি এখন রাস্তায় হাঁটছি খালি পায়ে।কথা বলার সময় নেই।ফোনটা যদি নিজ দায়িত্বে রেখে দেন আমি খুবই খুঁশি হবো।’
ফোন রেখে বিমুগ্ধ হাঁটতে হাঁটতে বলল,’ আচ্ছা আপনি পালাতক আসামী কেন হলেন?প্রতিটি আসামীর পিছনে মরাত্নক কষ্টের কাহিনী থাকে।আহারে কি কষ্ট।’
বিমুগ্ধ কান্নার মন করে বলল।নীহারিকা রাগ দমিয়ে রাখতে চেয়েও পারছে না।সে রেগে উঠে বলল,’ আপনি সব কিছুকে মজা ভাবেন?’
‘ জি না।আমার আশেপাশে সব মজার কাহিনী ঘটে।আমার কি দোষ।না বুঝি দুনিয়া না বুঝি আপনায় আমার কি দোষ খালি পাপ জমাই।গানটা শুনেছেন?’
‘ আপনায় হবে না তোমায় হবে।’নীহারিকা বিরক্ত হয়ে চুপ করে হাঁটতে শুরু করলো।এবার সে তিশার সাথে হাঁটছে।ফিসফিস করে নীহারিকা বলল,’উনার কি মাথায় সমস্যা?’
তিশা হেসে উঠে বলল,’ না।ও একটু এমনই।যারা ওর প্রতি খুব বিরক্ত হবে।তাদের ও আরো বিরক্ত করে।প্রচন্ড ভাবে করে।করতে করতে কাঁদিয়ে ছাড়ে।ওর কর্মকান্ডে যত অবাক হবে ও ততো অবাক করবে।মানুষকে চমকে দেওয়ার অসীমক্ষমতা আছে তার।
নীহারিকা মাথার পাশে হাত ঘুরিয়ে বলল,’ মাথা নষ্ট মনে হয়।’
‘ জি না।মাথা নষ্টদের ঠিক করা ওর কাজ।’
‘ উনিও এটাই বলেছে।কারণ কি??’
‘ ও সাইকিয়াট্রিস্ট।সাথে সাইকোলজিস্ট ও বলা চলে।ওর বাবা একজন নাম করা সাইকোলজিস্ট।সেই সাবজেক্টেও সে খুবই প্রখর দক্ষ।এখন পড়ছে সেই বিষয়ে।’
‘ দুইটা বিষয় এক সাথে??’
‘ না।আগে একটা শেষ করে এখন আর একটা পড়ছে।’
অস্পস্ট স্বরে নীহারিকা বলল,’ পাগলের ডাক্তার??’
‘ আরে না।পাগলকে ঠিক করার ডাক্তার।’
একবার পিছনে তাকিয়ে নীহারিকা লোকটিকে খুঁজে।নেই।ভাউ করতে পাশে তাকিয়ে দেখে মানুষটা পাশে।ভয় পেয়ে যায় নীহারিকা।বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে সে।এই লোক ডাক্তার!!তাও আবার পাগলের??
পিছন থেকে চিৎকার শুনে নীহারিকা তাকিয়ে দেখে ঝালমুড়ির সেই ছেলেটি।অবাক হয়ে সে প্রশ্ন করে,’ কিরে তুই এখানে কি করছিস??’
‘ আরে আপা দাঁড়ান।’ হাঁটুতে হাত দিয়ে সে হাঁপাতে শুরু করে।কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস নিয়ে সে বলল,’ আপা আপনি আমারে ভুল করে তিন হাজার টাকা দিয়া দিছেন।পাঁচশো টাকার ভিতরে যে এতকটা নোট আছিল আমি তো কইতেই পারতাম না।অর্ধেক রাস্তায় গিয়ে দেখছি।’
‘ সেটা তো আমি তোকে ইচ্ছে করেই দিয়েছি।’
‘ কিন্তু আপনি তো কইছেন পাঁচশো আছে।’
‘ আরে তুই বললি না বেশি নিবি না তাই বলিনাই।’
‘ আমি তো মনে করছি ভুল করে দিয়া দিছেন।তাই ছুঁটতে ছুঁটতে আইছি।একজনরে যখন কইছি কালা বোরকা নেকাব সে তখন কইলো আপনি এই দিকে আসছেন।আল্লাহ বাঁচাইছে পাইছি।কিন্তু এখন তো ভুল করে হালাইছি।’
চোখ ফাঁটিয়ে তাকিয়ে আছে নীহারিকা।ছেলেটি কি অবুঝ!ভালো।সৎ চরিত্রের অধিকারী।সে চাইলেই তো টাকা গুলো নিজের কাছে রেখে দিতে পারতো।শুধু মাত্র জিজ্ঞেস করার জন্য এত দূর ছুঁটে আসা?নীহারিকা ঘোর লাগা গলায় জানতে চাইল,’ তোর নাম কিরে?’
‘ ফয়সাল।’
পিছন থেকে কেউ পিঠ থাপড়ে ধরে।ছেলেটা সংকীর্ণ হয়ে পিছনে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কে?বুঝতে পারছে না।আবছা আলোয় মুখটা কেমন যেন ঘোলাটে।মুহিতা ফোন বের করে লাইট অন করে।মুখের উপরে পড়তেই ছেলেটি চমকিত হয়ে আহ্লাদি গলায় বলে উঠে,’ আরে ভাইজান আপনি?’
‘ হ আমি।তুই এখানে কিরছিস?’
‘ সে অনেক কাহিনী হুনতে গেলে তো বহুত সময় লাগবো।’
‘ থাপড়ে গাল লাল করে দিবো।হুনতে,বহুত,এসব কি ভাষা।তোকে না তখন নিষেধ করেছি এসব ভাষায় কথা বলবিনা?বলবি শুনতে,বেশি সময় লাগবে।বুঝছিস?’
বাধ্যের মত মাথা ঝাঁকালো ছেলেটি।তারপর কাহিনী খুলে বলল।বিমুগ্ধ হেসে উঠে বলল,’ শুন তোকে একটা ফ্রী তে জ্ঞান দি।এই মেয়ে থেকে দূরে থাক।উনি রোগী মানুষ।খুব ক্ষেপা মহিলা।দেখা যাবে এর সাথে কথা বলে তুইও ক্ষেপা টাইপের হয়ে যেতে পারিস।তখন আমাকে তোর লাফাঙ্গা,অসভ্য,বেয়াদপ আরো কত কি যে মনে হবে আল্লাহ মালুন।’
ফয়সাল বলল,’আরে না ভাইজান আপা ভালা মানুষ।’
ভ্রু নাচিয়ে বিমুগ্ধ বলল,’ মেয়েরা কখনো ভালো হয় না।যতক্ষণ তার নামের পাশে কিছু যুক্ত হচ্ছে।তুই আপা ডাকছিস তাই ভালো মনে হচ্ছে।আমার মনে হয় না ভালো।’
নীহারিকা কান চেপে হাঁটছে।লোকটা সুযোগ পেলেই তার পিছনে লাগে।পাগলের ডাক্তার একটা।বিমুগ্ধ ছেলেটির কাঁধ চেপে হাঁটতে হাঁটতে বলল,’ ওই বেটা একটা ভালো ঝালমুড়ি তৈরি কর।কম ঝাল দিবি।শত হোক ছেলেরা ঝাল খায় না।আমি যদি খাই ছেলেদের রেপুটেশন নষ্ট হয়ে যাবে।’
‘ আমি বাড়ি যামু না?’
ফয়সাল অবাক হয়ে বলল।বিমুগ্ধ বলল,’ না কাল আমাদের সাথে যাবি।বাসায় তো বলেছিলি কাল যাবি।আজ কাজ দ্রুত শেষ হয়েছে বলে তাড়াতাড়ি যেতে চাইছিস।কেউ চিন্তা করবে না।তোর মা তো অসুস্থ।তার সাথে তো তোর বোন আছে তাই না??’
ফয়সাল আকাশ থেকে পড়ার মত মুখ করে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।বিমুগ্ধ পিঠ চাপড়ে তাকে হুঁশে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।হতভম্ভ গলায় সে বলল,’ ভাইজান আপনি কিভাবে জানলেন মায়ের অসুখের কথা?আর আমার যে বোন আছে সেটা কেমনে জানছেন?আমি যে কাল বাড়ি যামু সেটা কেমনে জানছেন।’
বিমুগ্ধ মুগ্ধ করা হাসি হেসে বলল,’ হাঁটতে থাক বেটা।এত জেনে কি করবি।’
‘ আপনি কি আগে থেকে সব কইতে পারেন?পারলেও কেমনে পারেন?কেমনে?’অবাক ফয়সাল উত্তেজিত হয়ে উঠে।বিমুগ্ধ চাপা স্বরে বলল,’ আমি ভবিষ্যৎ বলতে পারি না।আগে কিছুই বলতে পারি না।যা পারি সে সবই ম্যাজিক।’
বিমুগ্ধ হাসতে শুরু করলো।তার প্রতি কেউ চমকে উঠলেই তার হাসি পায়।সৃষ্টিছাড়া আনন্দ হয়।আড়চোখে নীহারিকা দেখে।মানুষটা একটু বেশিই হাসিখুশি।মনটা ভালো।না একটু বেশি ভালো।নিজের প্রতি উশৃঙ্খল ব্যবহারের জন্যে সে আবার বলল না বেশি ভালো না।মাত্র একটু খানি ভালো।’
__________________
পিচঢালা রাস্তা ভিঁজা।মনে হয় এদিকে বৃষ্টি হয়েছে।কিছু কিছু বৃষ্টি একটা এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে।অন্য এলাকা গুলো দেখলে বুঝাই যায় না এই দেশের এক জায়গায় এক এক রকম বৃষ্টি হয়।তিশা হোঁচট খেয়ে পড়ে অর্পনের গায়ের উপরে।অর্পন অন্যরকম ছেলে।বদ রাগী।জ্ঞানী জ্ঞানী।সব সময় সিরিয়াস।মজা তার একদম পছন্দ না।তার প্রতি যাদের ইন্টারেস্ট থাকে শূন্য,অদ্ভুত ভাবে তাদের প্রতি সে মনোযোগী হয় খুব।যেমন বিমুগ্ধ!এই ছেলেটাকে কখনো নিজের বন্ধু মানতেই চাইতো না সে।যদিনা স্পেশাল কিছু থাকত।কলেজের যেদিন প্রথম পরীক্ষার রেজাল্ট পাবলিশ হয় আর সে প্রথম হয় তখন ক্লাসের সব ছেলে মেয়ে হুমড়ি খেয়ে তার বন্ধু হতে চেয়েছিল।শুধু এই অদ্ভুত ছেলেটি বাদে।বিমুগ্ধ প্রায় সবার সাথে কথা বলত।শুধু তার সাথে বাদে।এক সাথে ভুলে বসে গেলেও বিমুগ্ধ সিট ছেড়ে উঠে যেত।সামনে যতই অর্পনকে সবাই দাম দিতো পিছনে তার চেয়েও বেশি জনপ্রিয় নাম ছিল বিমুগ্ধ।অসাধারণ চরিত্রের এই ছেলেটি তাকেও মুগ্ধ করেছে।কখনো কাঁদতে,বিরক্ত হতে,রেগে যেতে দেখেনি সে।সব সময় খুবই ঠান্ডা বরফের নেয় নিজেকে সবার কাছে প্রকাশ করেছে।কিভাবে?ভেবে পায় না সে।একটা মানুষ এত ঠান্ডা!এত হাসি খুশি!কিভাবে?অবাক হয়ে শেষ পরীক্ষার দুই তিন দিন আগে সে কথা বলতে যায় বিমুগ্ধের সাথে।প্রথমে বিমুগ্ধ তার সাথে কথা বলতে চায়নি।জানতে চাইলে বিমুগ্ধ বলে,অর্পন খুব স্বার্থপর ছেলে।অহংকারের একটা পাহাড় আছে বুকে।খুবই গম্ভীর হয়ে সে নিজেকে সবার থেকে আলাদা প্রকাশ করতে চায়।যেখানে তার চরিত্র উল্টো।বাসায় সে হাসে।কথা বলে।মজা করে।শুধু বাহিরে আসলেই তার রূপের পরিবর্তন হয়ে যায়।আর যারা নিজের প্রকৃত রূপকে ছোট করে।পছন্দ করে না।নিজেকে প্রকৃত ভাবে মানুষের চোখে ফুঁটিয়ে তুলতে পারে না বিমুগ্ধ তাদের প্রচন্ড ঘৃণা করে।তার মতে মানুষকে সব সময় আসল রূপে থাকতে হবে।এতে যদি সে অদ্ভুত,পাগলাটে,বোকা,হাবা,জ্ঞানী,মুর্খ যাই হোক না কেন সেটাই সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে।আলাদা আবরণ তার মোটেও পছন্দ না।
“নিজেকে,নিজের সত্ত্বাকে যে ভালোবাসতে জানে না তাকে পৃথিবীর কেউ ভালোবাসতে পারে না।”
অর্পন তখন অহংকার করে বলেছিল সে ফাস্ট বয়।ক্লাসের সবার চোখে সে কত ব্রিলিয়ান্ট সেটাও প্রকাশ করেছে।বিমুগ্ধ শুধু হেসেছে।পরের পরীক্ষায় সবার শেষ বয় থেকে প্রথম হয়ে সে অর্পনের দিকে তাকিয়ে বলেছিল,আমি শেষ বয় হতে পছন্দ করতাম তাই সব সময় শেষে অবস্থান করতাম।কিন্তু এখন আমার প্রথমে থাকতে ইচ্ছে করছে।তাই আমি প্রথমে থাকবো।নিজেকে আমি প্রচন্ড সম্মান করি।নিজেকে সম্মান করতে শিখ।’
অর্পন নিজেকে তেমন পাল্টাতে পারেনি।কিন্তু বিমুগ্ধের সাথে গড়ে তুলেছে গভীর সম্পর্ক।পাল্টাবে পাল্টাবে বলে পাল্টে নিতে পারছে না।কেন সে জানে না।তিশাকে ঝারি মেরে অর্পন বলল,’গায়ে পড়া একদম পছন্দ না আমার তিশা।’
মুখ মলিন করে তিশা বলল,’ ইচ্ছে করে করিনি।’
বিরক্ত মুখে অর্পন বলে,’ দূরে থাক প্লিজ।’
নীহারিকার খুব খারাপ লাগে।ক্ষোভ নিয়ে সে বলে,’ উনি কিন্তু ইচ্ছে করে করেনি।এভাবে মানুষের সাথে কথা বলেন কেন আপনি?’
বেশ অবাক হয়ে অর্পন বলল,’ কিভাবে কথা বলি?’
‘ খুবই রুডলি।’
মুচকি হাসলো অর্পন।অবাক তিশা।নীহারিকা বিরক্ত হয়ে মুহিতার পাশে চলে যায়।অর্পন উঁচু করে চোখ তুলে একপলক দেখে নীহারিকাকে।মেয়েটা অন্যরকম!
একটা তিন তলা হোটেল।আশেপাশে আর কিছু নেই কাক পক্ষীও নেই।বিমুগ্ধ আগে আগে ঢুকে পড়ল।পিছনে বাকিরা।খালি পায়ে এলোমেলে তাকে দেখে সামনে বসা একটা মেয়ে নাক সিঁটকালো।যেন সে ময়লা আবর্জনা।অর্পনকে বিমুগ্ধ বলল,’শুন তিনটে রুম নিবি।একটা তোর আর শান্তর,মুহিতার আর মুহিতের একটা।তিশা আর মিস ক্ষেপা মহিলার জন্য একটা।আর আমার আর এই বেটার জন্য একটা।’
অর্পন অবাক হয়ে বলল,’আমরা এখানে থাকবো?’
‘ আজ থাবো।’
‘ তুই কি পাগল?আমাদের বাড়ি যাওয়া দরকার।’
‘ কেন তোর বিয়ে করা বউ আছে ঘরে?বাসর সাজাই বসে আছে?না কি বিয়ে করার জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে?গার্লফ্রেন্ড আছে?না কি রুম ডেট আছে?’
‘ একটাও না।’মুখে রাগ নিয়ে বলল অর্পন।
‘ তাহলে যা রুম ঠিক কর।’
নীহারিকা অর্পনের কাছে এসে বলল,’ ভাইয়া আমার জন্য আলাদা রুম নিবেন।আমি বেড শেয়ার করতে পারি না।’
‘ পালাতক আসামীর নবাবীর মত আবদার।’বিমুগ্ধ বলল।নীহারিকা অর্পনকে বলল,’ আমি নিজের টাকা নিজে দিবো।’
‘ মিস ক্ষেপা মহিলা আপনি কি আপনার বেচারা বাপের পুরো লকার চুরি করে নিয়ে এসেছেন?আহারে বেচারা বোকা সোকা লোক।দুঃখ!’
‘ মোটেও না।নিজের জমানো টাকা নিয়ে ভেগেছি।’
‘ মনে তো হচ্ছে অনেক টাকা জমিয়েছেন।বাড়ি গাড়ি কিনতে পেরেছেন কিছু?আচ্ছা আপনার তো বয়ফ্রেন্ডও নেই ভেগেছেন কেন শুধু শুধু?’
‘ আপনি কিভাবে জানলেন?’ নীহারিকা চোখ উল্টে নিয়ে বলল।বিমুগ্ধ আহ্লাদি করে হাসল।খালি পায়েই মেয়েটির কাছে গিয়ে সোফায় বসলো।নীহারিকা রাগে জুতো,শার্ট ছুড়ে দিল ফ্লোরে।মেয়েটি বিমুগ্ধের চোখের দিকে তাকিয়েই যেন গলে গেল।তার চোখ দেখে বুঝা যাচ্ছে তার মনে হচ্ছে লোকটির টাকা আছে।চিন্তিত কন্ঠে সে বলল,’ আপনার জুতো কই?এ অবস্থা কেন?’
বিমুগ্ধ কি যেন প্রথমে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খুঁজে নিল।তারপর হাবলার মত হেসে বলল,’ আসলে হইছে গিয়ে আমি খুবই গরীব মানুষ।জুতা কিনার টাকা নাই।তাই খুলে হাঁটি।’
অবাক হয়ে মেয়েটি বলল,’ জুতাই যদি না থাকে খুলে হাঁটেন কি?’
‘ জুতাই খুলে হাঁটি।ক্ষয় হয়ে গেলে আবার কিনতে হবে তাই।’মেয়েটি বুঝে বিমুগ্ধ মজা করছে।সেও হাসছে।
নীহারিকা একটু একটু করে পা টিপে নিজেকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।কথা শুনে তার চোখ চরম অবাকতায় ভুগছে।বিমুগ্ধ এমন এমন কথা বলছে মেয়েটা ইমপ্রেস।একটা সময় বিমুগ্ধ বলল,’ আপনিও আমার মত জুতো খুলে রাখুন।দু’জনের তখন খালি পা হবে।
মেয়েটি সত্যি খুলে রাখলো। সে এখানে নিজের বয়ফ্রেন্ডের সাথে এসেছে।তার নাম মৌলি।বিমুগ্ধের কথায় সে প্রেমে পড়ে গেছে।এমন কি সে এটা বলেও দিয়েছে।বিমুগ্ধ হঠাৎ বলে উঠে,’ একটা কাজ করুন।ওই দরজায় জানতো।আমি আপনার একটা ছবি নিবো।’
মৌলি দ্রুত উঠে দরজার কাছে যায় খালি পায়ে।বিমুগ্ধ সোফায় আয়েশ করে বসে পায়ের উপরে পা তুলে ঠিক মেয়েটির মত নাক উঁচু করে তাকিয়ে থেকে পায়ের একটা ছবি তুলে নিলো।কিছুক্ষণ হাঁটিয়ে নিয়ে বলল,’ এই হচ্ছে আপনার জুতো।আমার জুতো আমি বরং পড়ি।’
‘ছবিগুলো কেমন হয়েছে দেখাবে না?’
‘ তুমি করে ডাকছেন দেখছি ওরে বাপরে!
বিমুগ্ধ হায় হায় একটা ভাব করলো।তারপর ফোন বের করে ছবি দেখালো।শুধু খালি পায়ের ছবি দেখে মেয়েটি রেগে বলল,’ শুধু পায়ের ছবি তুললে যে?’
‘ যাতে ভবিষ্যৎে কারো খালি পায়ের দিকে তাকিয়ে নাক সিঁটকাতে না পারেন।মানে তখন আপনাও মনে হবে কোন এক হোটেলে আপনি খালি পায়ে ক্যাটওয়াক করেছিলেন।আর তুমি করে ডাকার জন্য আমি খুবই খুবই খুশি মিশানো রাগে আছি।দূরে গিয়ে বসুন।’
‘ মিস ক্ষেপা মহিলার দেখছি তথ্য চুরিরও দোষ আছে।’
দ্রুত সরে যেতে নেয় নীহারিকা।পা দিয়ে ল্যাং মেরে ফেলে দিতে চায় বিমুগ্ধ।পড়ে যেতে গিয়ে বিমুগ্ধের বুকের উপরে মুখ থুবড়ে পড়ে নীহারিকা।চোখ মুখ খিঁচে আল্লাহ আল্লাহ করে সে যখন নিজের কোমড়ে কারো গরম হাত বুঝতে পারে সাথে সাথে চোখ খুলে তাকায়।প্রথম বারের মত নীহারিকা অদ্ভুত বিমুগ্ধের চোখে সাধারণ একটা শান্ত ভাব দেখতে পেলো।খুব কাছ থেকে মানুষকে দেখছে সে।চোখ যে এত আকর্ষণীয় হয় কারো সে এই প্রথম নিজের মনের অনুভুতি মিশিয়ে অনুভব করছে।নীহারিকার শরীর কাঁপতে শুরু করে।চোখের পালক জ্বলে উঠে।গায়ে ঘাম হচ্ছে খুব।ঝাঁ ঝাঁ করছে কান নাক।বুকের মাঝে একটা হিম করা অনুভুতি হচ্ছে।সে নিজের মাঝে নেই।হারিয়ে যাচ্ছে।তলিয়ে যাচ্ছে।অচেনা গন্তব্যে বিলিন হয়ে পড়ছে।সে জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছে।তার হৃদয়ের স্পন্দন বেড়ে গিয়েছে।হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ের মত একটা হাওয়া তার সব সত্ত্বাকে উল্টে পাল্টে রেখে দিয়েছে।এই শান্ত চোখ!স্থির দৃষ্টি!কিভাবে এত শীতল! সে কি বরফের মত জমে যাচ্ছে?জমে একদম শক্ত বরফের পাথর হয়ে যাচ্ছে?নীহারিকা কোন অনুভুতি খুঁজে পাচ্ছে না।কোমড়ের স্পর্শের অনুভুতি কাজ করা ছেড়ে দিয়েছে।অবশ শরীরে সে শুধু তাকিয়ে আছে।একটা পা তার টি-টেবিলের নিচে ঢুকে গিয়েছে।এক হাঁটু ভাঙ্গা দ হয়ে আছে।সেদিকে লক্ষ নেই তার।একটা হাত মানুষটার শক্ত বাহু চেপে ধরে আছে।কি হয়ে গেলো!কি?কারো চিৎকারে হুশ ফিরে নীহারিকার।সাথে সাথে সে জনমানবের পৃথিবীতে নিজেকে আবিষ্কার করে।নিজের কোমড়ে অন্য পুরুষের হাত!বুঝতে পেরে গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে উঠে সে।হোটেলের প্রতিটি কোনা কেঁপে উঠে।সমান তালে চিৎকার শুরু করে বিমুগ্ধ।একটা সময় অবাক হয়ে নিজের চিৎকার থামিয়ে নীহারিকা জিজ্ঞেস করল,’ আপনি কেন চিৎকার করছেন?’
‘ আপনি কেন করছেন?’ পাল্টা প্রশ্ন বিমুগ্ধের। প্রতীয়মান হওয়া কন্ঠে নীহারিকা বলল,’ কারণ আপনি আমাকে ছুঁয়েছেন।কিন্তু আপনি কেন চিৎকার করছেন?’
‘ আপনিও তো আমাকে ছুঁয়েছেন।তার চেয়ে বড় কথা মেয়েরা চিৎকার করা মানেই সবাই নেগেটিভ চিন্তা।মনে করে হয় তো মেয়েটি বিপদে পড়েছে?বা তাকে কেউ টর্চার করছে।যদি সবাই তার সাথে কোন ছেলেকে দেখে তাহলে যদি তার দোষ নাও থাকে তাও গনপিটুনি খেতে হয়।নিজেকে বাঁচাতে আমিও চিৎকার করলাম।সবাই ভাববে আমিও বিপদে আছি।দু’জনে চিৎকার করলে নেগেটিভ ভাবার প্রশ্নই আসে না।’বিমুগ্ধ নীহারিকাকে ছেড়ে দু পা উঁচু করে সোফায় বসে চিৎকার শুরু করে।নীহারিকা হা করে থেকে একটা সময় নিজেও চিৎকার দিয়ে উঠে।
__________
#চলবে…………
@হাফসা আলম……………..