#প্রেমসুধা(দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৭১
দেনামোনা করতে করতে দিনগুলো যেন পার হচ্ছে না। পৌষ যেন উদাসীন হয়ে উঠছে। পৌষ মাস যেভাবে এবার না বলে, না কয়ে চলে গেলো। পৌষও ঠিক তেমন কথা-বার্তা কমিয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো। আজ-কাল তার ভাবসাব বুঝা যাচ্ছে না। একদমই চুপ করে গিয়েছে। তৌসিফ কথা বললে শুধু তাকিয়ে থাকবে যেন ওর কিছু বলার নেই। তৌসিফ ভেতর ভেতর ছটফট করে। পৌষ’র কথা শুনতে সে এখনও ততটাই উদগ্রীব যতটা পূর্বে ছিলো। ভালোবাসা ম’রণব্যাধি। এই ব্যাধিতে খুব করে আক্রান্ত তৌসিফ। বাচাল স্বভাবের পৌষ’কেই তার মনে ধরেছে। এখন যেন এক ম’রণ জ্বালা তাকে ঘিরে ধরেছে। দরজায় বেল বাজতেই তৌসিফ তারাতাড়ি উঠে দাঁড়ালো। ছুটে গেলো দরজা খুলতে। আজ অনেক চেষ্টার পর শ্রেয়া’কে আনিয়েছে ও। ওদের বাবুটার শরীর খারাপ। তৌসিফ স্বার্থপর হয়ে হেমন্তকে বলেছিলো যাতে ও বউ বাচ্চা নিয়ে এখানেই চলে আসে কিন্তু এটা সম্ভব না। হেমন্তের নাকচ করেছে এই প্রস্তাব। এছাড়া কি ই বা করার ছিলো তার? বোনের বাড়ী বউ নিয়ে এসে থাকা। অসম্ভব! দরজা খুলতেই পা দুটো কেউ জড়িয়ে ধরায় তৌসিফ নিচে তাকালো। ইনি,মিনি ওর দুই পায়ের হাঁটু জড়িয়ে ধরেছে। বিমর্ষ, ভঙ্গুর প্রায় তৌসিফে’র ঠোঁটে হাসি চলে আসে। কোমড় ঝুকিয়ে ওদের দুই হাতে টেনে নিজের দুই বাহুতে কোলে তুলে। সম্মুখে দৃষ্টি দিতেই দেখা গেলো ওর দুই চাচি সহ এসেছেন। তৌসিফ ভালোই অবাক হলো। এদের স্বামীরা আসতে দিলো?
তৌসিফ হাসিমুখে তাদের ভেতরে নিতেই দেখা গেলো তাদের পিছনে দুইজন লোক নানান জিনিস নিয়ে দাঁড়িয়ে। প্রথম বার আসায় চাচারা পাঠিয়েছেন। তৌসিফ কাউকে অপমান করলো না। বুয়াদের রাখতে বলে সবাইকে বসালো। শ্রেয়া জিজ্ঞেস করে,
— পৌষ কোথায়?
— ঘুমাচ্ছে।
শ্রেয়া থেকে ঘুমন্ত বাচ্চাটাকে কোলে তুলে পুণরায় বললো,
— রুমে যাও। ডেকো না এখন। নিজ থেকেই উঠবে৷ ডাকলে আবার মাথা ধরবে এখন।
শ্রেয়া মাথা নাড়লো। পা বাড়ালো তৌসিফে’র বেড রুমে। তৌসিফ চোখের ইশারা পেতেই বুয়ারা কাজে লেগে পড়লো। হাতে হাতে নাস্তা বানাচ্ছে তারা। প্রথম বার শশুর বাড়ী থেকে দুজন মুরুব্বি এসেছেন৷ তৌসিফ চৈত্র’র পাশে বসে চাচিদের উদ্দেশ্য করে বললো,
— চাচারা কেউ এলেন না যে।
বড় চাচি মৃদু হাসার চেষ্টা করলেন। ছোট্ট ঢোক গিলে বললেন,
— একটু কাজে আটকে তাই আমরা চলে এলাম দেখতে। পৌষ তো গেলো না এই কয় মাসে।
তৌসিফ ভদ্র ভাবে বললো,
— বাসা থেকে বের হয় না৷ শুধু ভার্সিটি যাচ্ছে তাও স্বল্প সময়ের জন্য। ডাক্তার দেখাতেই জোর করতে হয়।
বড় চাচি কি বলবেন ভেবে কুল পেলেন না৷ কিছু কি আদৌ বলার আছে। হঠাৎ ছোট চাচির খোঁচায় তার মনে পরলো কেন এসেছেন। একটু এদিক ওদিককার কথা বলে সরাসরি বললেন,
— প্রথম বাচ্চা তো বাপের বাড়ীতেই হয়। পৌষ’কে সাত মাসে নিতে চাইছিলাম৷ এখন তো পাঁচ মাস চলছে।
— হ্যাঁ।
চাচি একটু অপ্রস্তুত হলেন। ‘হ্যাঁ’ মূলত কিসের জন্য বললো? নিতে দিবে তার জন্য নাকি পাঁচ মাস চলে তার জন্য?
তৌসিফ অবশ্য পেঁচালো না কিছু৷ সে সোজাসাপটা বললো,
— পৌষরাত যাবে না।
মুখের উপর প্রত্যাখ্যান শুনে ভালোই চমকালো চাচিরা। হেমন্ত চুপচাপ বসে। সে জানতো উত্তর এটাই। তৌসিফের মতো পুরুষ বউ ছাড়বে? নিজের মায়ের কথায় তারই যেন হাসি পাচ্ছে। কি আশ্চর্য! এতদিন না খোঁজ না খবর এখন এলো তো এলো তৌসিফ তালুকদার থেকে বউ চাইছে। বুয়ারা ততক্ষণে একে একে খাবার টেবিল সাজাচ্ছে। পিহা হেমন্তের পেটে খোঁচা দিয়ে বললো,
— আপার কাছে যাই?
হেমন্ত ইশারায় না বললো। শ্রেয়া’র সাথে কিছুক্ষণ একা থাকুক পৌষ। মা হারা মেয়েটা মাতৃত্ব হঠাৎ সামলাতে পারছে না হয়তো। এদিকে আবার শাশুড়ীও নেই। হতাশার শ্বাস ফেললো হেমন্ত। তৌসিফ নানান আলোচনা জুড়েছে শালাদের সাথে। চাচিদের এদিক ওদিকের কথা বলছে। এ যেন নতুন এক তৌসিফ দেখলো তারা। সে হাজার কথার মাঝেও হেমন্তের ছোট্ট বাচ্চাটাকে বুকে আগলে রেখেছে। হেমন্তের মায়া হলো। বাবা হওয়ার স্বাদ অতুলনীয় তাই বলে কেউ এতটা পা’গল হয়? তৌসিফ তালুকদারের মতো?
.
শ্রেয়া’র কোলে মাথা দিয়ে চুপ করে আছে পৌষ। ঘুম ভাঙলো আনুমানিক দশ মিনিট ধরে। চোখ খুলেই শ্রেয়া’কে কাছে পেয়েছে ও। শ্রেয়া ওর চুলে হাত বুলালো। কাছে বসে কোলে মাথা নিলো। গালে হাত রেখে আদর করতে করতে বললো,
— পাঁচমাসে আমার কি যে খারাপ লেগেছে পৌষ। মনে হয়েছিলো জানটা বেরিয়ে যাবে। নড়চড় শুরু হলে তো কথাই নেই। তোর ভাই তো নড়তে দিলো না। তোর এখানে ঝামেলা হচ্ছে? সাত মাসে ঐ বাড়ী নিতে চাইছে সবাই।
— কিন্তু আমি তো যাব না৷
শ্রেয়া হতবাক। পৌষ এটাও জানে না তৌসিফ কি উত্তর দিবে বা দিয়েছে। ও শুধু জানে ও যাবে না৷ প্রথম প্রথম যতটা বাড়ী যেতে মন চাইতো এখন ততটা চায় না বরং চাহিদার কোটা শূন্য। এখন কিছুই যেন ভালো লাগে না। শ্রেয়া মুচকি হাসে। বলে,
— বাহ। জামাই বাড়ী এত ভালো লাগে?
— হ্যাঁ। এটাই তো আমার বাসা।
শ্রেয়া একটু চুপ রইলো অতঃপর বললো,
— তোর কি খারাপ লাগে? আমার যে কি খারাপ লাগতো। ডিলেভারীর পরও খারাপ লেগেছে।
— ওহ।
শ্রেয়া’কে বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলো পৌষ। জিজ্ঞেস করলো,
— ওরা কোথায়?
— বাইরে।
— এলো না যে?
— আম্মা আর চাচি এসেছে।
শ্রেয়া যতটা ভেবেছিলো তার এক কোণাও প্রতিক্রিয়া দেখালো না পৌষ বরং উঠতে উঠতে বললো,
— আচ্ছা, দেখা করে আসি। আগে বলবে না? নাস্তা দিতে…
— তৌসিফ ভাই দিয়েছেন।
— ওহ।
শ্রেয়া অবাক হয়ে লক্ষ করলো যতটা সংক্ষিপ্ত করা যায় ঠিক ততটাই সংক্ষিপ্ত পৌষ’র কথাবার্তা। নতুন মা হবে। প্রথম অনুভূতি কুঁড়াতে গিয়ে এলোমেলো পৌষ। কোনটা যে তার ভালো লাগছে বা কোনটা খারাপ তাই বুঝতে পারছে না। উলঝানো সবকিছুর মাঝে না পেরে চুপ করে গিয়েছে। শ্রেয়া উঠে ওর পিছনে গেলো। পৌষ’কে দেখে যেন একদমই ভিন্ন লাগছে। মনে হচ্ছে ও থমকে গিয়েছে।
___________________
— মেহেদী আপনি ব্যাস্ত?
হাতের বইটা রেখে মেহেদী তারাতাড়ি উঠে এলো। ঢিলাঢালা পোশাকে সোহা দরজা ধরে দাঁড়িয়ে। মেহেদী ওর হাত ধরলো। সোহা পেটে এক হাত দিয়ে ক্লান্ত গলায় বললো,
— চা খাবেন?
— তুমি খেতে চাইছো?
— খাওয়া যায়। কফি হলে ভালো হয়।
— একদমই না। এত ক্যাফেইন! বেবির ক্ষতি হবে।
ছোট্ট বারান্দায় সোহা’কে বসিয়ে মেহেদী দৌড়ে গিয়ে পানি দিলো চুলায়। গ্যাস বাড়িয়ে দুই বলক আনলো পানিতে। চা পাতি অল্প দিয়ে চিনি দিলো দুচামচ। পুণরায় বলক উঠতেই দুধ দিয়ে মিশিয়ে তিন কাপে ঢাললো। এক কাপ মায়ের কাছে দিয়ে দুই কাপ হাতে বারান্দায় গেলো। সোহা’র হাতে এক কাপ দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— রুটি দেই?
— ভালো লাগে না।
— বিস্টুক বা মুড়ি?
— উহু।
মেহেদী হাঁটু গেড়ে সোহা’র সামনে বসলো৷ এক হাত সোহা’র কোলে। মাঝেসাঝে পেটে হাত দিয়ে বলে,
— আর মাত্র কিছুদিন।
— হু।
— সোহাপাখি?
— জ্বি।
— আমাদের মেয়ে হবে।
— ছেলে হলে?
— তাও আলহামদুলিল্লাহ।
— আপনার মা ছেলে চায়।
— চাওয়া দোষের না।
— প্রত্যাশা ভাঙলে কষ্ট পাবেন।
মেহেদী চায়ে চুমুক দিয়ে কথাটা যথাসাধ্য এরিয়ে গেলো। তার মেয়ে চাই। ছোট্ট একটা রাজকন্যা যে তাকে বাবা ডাকবে। সোহা চায়ে চুমুক দিয়ে বললো,
— চিনি বেশি হয়েছে।
— চিনি খাও। চিনি একটা ভালো জিনিস। যত খাবে তত মিষ্টতা আসবে জীবনে।
— শিক্ষক হয়ে ভুলভাল পড়ান।
— নিজে যখন বই নিয়ে পড়ে থাকো?
— খবরদার আমার বই নিয়ে খোঁটা দিবেন না। আপনি জানেন রোদ আদ্রিয়ান এই প্রথম বইয়ের পাতায় এসেছে। আমার কত আদরের ওরা। ওদের সম্পর্কের মতো চিনিমিশ্রিত ভালোবাসা আমাদেরও হোক।
মেহেদী মৃদু হেসে সোহার পেটে চুমু দিলো। বললো,
— ডেলিভারির জন্য কথা বলেছি আজ। একদিন আগে হাসপাতালে যাব। সব গুছিয়ে রাখতে হবে আজ থেকে। সময় তো নেই বেশি।
সোহা মুচকি হাসলো। একটা ছোট্ট জানের অপেক্ষা যে খুব শিঘ্রই আসছে।
________________
তৌসিফে’র হাতাশা বাড়লো বৈ কমলো না৷ এতগুলো মানুষ এলো। এত ঘন্টা থাকলো লাভ হলো না৷ পৌষ কারো সাথেই তেমন কথা বললো না। তৌসিফ এখন জিনিসটা পজিটিভ ভাবে দেখতে পাচ্ছে না। ওর ভেতর থেকে যেন আওয়াজ আসছে যে পৌষ এই প্রেগন্যান্সি নিয়েই খুশি না৷ চাইলেও এটা বাদে কিছু মাথায় আসে না। কথাটা ভাবতেই রাগ হলো ওর। নিজের চুল দুই হাতে খামচে ধরলো। ওর পৌষ নরমমনা। পৌষ রাজি ছিলো । ওর হেরে যাওয়া মনের জিতে যাওয়া বাজি এই পৌষরাত যার নাম তৌসিফ ঢোকে ঢোকে নেয়। দুই হাতে মুখ চেপে ধরে তৌসিফ। ক্রমশ তার ভেতর খয়ে যাচ্ছে। তৌসিফ ভেঙে যাচ্ছে। পাঁচটা মাস দুটো জান নিজের ভেতর নিয়ে কতই না অবলীলায় সে চুপ করে বসে আছে। কেন সে কথা বলবে না? কেন সে আগের মতো আদর করবে না?
সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো তৌসিফ। সোজা রান্নাঘরে ঢুকলো। খুব স্বাভাবিক স্বরে বললো,
— হয়েছে? এবার অন্তত বের হও।
পৌষ অল্প করে বললো,
— শেষ।
হাত ধুঁয়ে বেরিয়ে এলো পৌষ। স্বেচ্ছায় সে এক পদ করে রান্না করে। তৌসিফ কঠোর ভাবে না করলেও ডাক্তার বললো ওর যা মন চায় করুক। রান্না করা তেমন কিছু না। তৌসিফে’র বুঝি মন মানে? এক পদের অনুমতি দিয়েছে শুধু তাও তৌসিফ সামনে থাকলে। এরমধ্যে পৌষ’র ভোতা মুখ দেখে বুয়া তাড়াতে হলো। নতুন বুয়ার সাথে ওর বনাবনি হচ্ছেই না৷ ইদানীং মিনুর সাথে ভাব ভালো।
রাতে খেয়ে রুমে গেলো তৌসিফ। পৌষ’র পাশে বসে হাত দুটো ধরলো। চুমু খেলো তাতে। ধীরে জিজ্ঞেস করলো,
— তোমার কেমন লাগে পৌষরাত?
— বুঝতে পারছি না।
— একটু কাঁদো?
— আসে না।
— মন খুলে হাসো নাহয়? ভালো লাগবে।
— পাচ্ছে না তো।
আচমকা পৌষ’কে অবাক করে দিয়ে তৌসিফ কেঁদে ফেললো। পৌষ অবাক হয়ে গেলো। চোখ দিয়ে সমান তালে পানি পড়ছে তৌসিফে’র। লাল চোখ জোড়ায় শুধু আকুতি আর্তচিৎকার। কেন? পৌষ’র মাথা এলোমেলো হয়ে গেলো। তৌসিফ ওর দুই গালে হাত দিয়ে সারা মুখে অনবরত চুমু খেলো। বিরবির করে শুধু বললো,
— আগের মতো হয়ে যাও৷ প্লিজ পৌষরাত। আমাকে আমার পৌষরাত ফেরত দাও।
পৌষ’র বুকে মুখ গুজে চুপচাপ কাঁদছে তৌসিফ। বুকের দিকে ভেজা অনুভব করে পৌষ। ও হতভম্ব। বাকহারা। এক হাত তৌসিফে’র পিঠে আরেকহাত মাথায় দিয়ে অস্থির কণ্ঠে বললো,
— আমার বাবুদের আব্বু কেন কাঁদছে? অ্যাই আপনি কেন কাঁদছেন? কি হলো? কথা বলুন। উঠুন। উঠুন না।
কিসের আর উঠাউঠি। দেখা গেলো তৌসিফে’র জ্বর চলে এসেছে। এলাহি এক কান্ড ঘটলো যেন। বউয়ের প্রেগন্যান্সির সময় চিন্তায় চিন্তায় জামাই অসুস্থ। এটাই হওয়ার ছিলো? বাবা হওয়ার সুখ পাওয়ার আগেই তপ্ত দেহে গুঙিয়ে উঠে তৌসিফ। আধ রাতে পৌষ কি করবে বুঝলো না। কাউকে ডাকতেও দিচ্ছে না। পৌষ’র নিজেরই ভালো লাগছে না কিন্তু তৌসিফ’কে এভাবে দেখে কি নিজের খারাপ লাগা ভুলে গেলো। কোনমতে বাড়তি হওয়া পেট নিয়ে টাওয়াল ভিজিয়ে মুছালো তৌসিফে’র শরীর। মুখে জোর করে প্যারাসিটামল দিলো। বিছানায় এসে কপালে হাত রেখে দেখলো এখনও গরম। পৌষ হাপিয়ে উঠেছে। মিনমিন করে বলে,
— এটা কি হলো? আমার জামাই কেন অসুস্থ?
তৌসিফ ওর হাত ধরে শুয়য়ে দিলো। বুকে নিজের মাথা রেখে এত বড় দেহী মানুষটা হাত-পা কুঁকড়ে ছোট্ট হয়ে গেলো যেন৷ ওর শরীরের উষ্ণতায় পৌষ ঘেমে গেলো। প্রচন্ড অস্থির লাগা শুরু করলো। এদিকে তৌসিফ আবার কাঁদছে। পৌষ ফোন হাতে তুললো। ডায়াল করলো এক বিদেশি নাম্বারে।
#চলবে….