প্রেমে ডুবি পর্ব-০৯

0
43

#প্রেমে_ডুবি
#ছনিয়া_তাবাচ্ছুম_অনি
#পর্ব_৯

শায়রা ক্যাম্পাসের এক সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। সিফাত বাইক পার্ক করে এখনো ফেরেনি। একটুপর সিফাত কে আসতে মুখে হাসি ফুটে ওঠে শায়রা’র বাট পরক্ষণে হাসি মিলিয়ে যায়।। সিফাতের পাশের ব্যক্তিকে দেখে শায়রা চমকে নিজের নিকাপ ঠিক আছে নাই সেটা দেখে। দু’জনে গল্প করতে করতে শায়রা’র দিকে এগিয়ে আসে। যত এগিয়ে আসছে তত ঘামছে শায়রা। ভয়ে বারবার শুকনো ঢোক গিলছে।

সিফাত হাসি মুখে এগিয়ে এসে শায়রা কে উদ্দেশ্য করে বলে, বনু এটা হচ্ছে আমার বন্ধু সেহরিশ। শায়রা চমকে ওঠে ভাইয়ের কথা শুনে। মনে মনে বলে, দুনিয়ায় কি ছেলের অভাব পড়ছিল ভাইয়া এই লোকটাকেই তোমার বন্ধু বানাতে হলো। শায়রা কে চুপ থাকতে দেখে সিফাত ফের বলে, বনু কি হয়েছে? এভাবে চুপ করে আছিস কেন? ভাইয়ের কথায় ভাবনার ছেদ ঘটে শায়রা’র। ভদ্রতার খাতিরে মৃদু হেসে বলে, হাই ভাইয়া।

সেহরিশ এতক্ষণ চুপ করে ছিল। দু’ভাই বোনের কথা শুনছিল। মেয়েদের কাছ থেকে সবসময় একশ হাত ধুরে থাকে সেহরিশ বাট এখন বন্ধুর জন্য পারছে না। সেহরিশ মৃদু হেসে বলে ,

“হাই, কেমন আছো?

” জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া,আপনি কেমন আছেন?

” আলহামদুলিল্লাহ।

সেহরিশ তোরা তো একই ভার্সিটিতে পড়িস। আমার বোনটার একটু খেয়াল রাখিস। সেহরিশ মৃদু স্বরে বলে, অবশ্যই।

তৎক্ষনাৎ শায়রা সিফাত কে বলে নিজের মতো ক্লাস রুমের দিকে হাঁটা ধরে।

সেহরিশ আর সিফাত দুজনের পরিচয় হয় বছর তিনেক আগে। যখন সিফাত বাসা থেকে বেড়িয়ে আসছিল। এই তিনটা বছরে সেহরিশের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব। সিফাত সেহরিশের ব্যাপারে সব জানে আর সেহরিশ সিফাতের ব্যাপারে সব জানে। সিফাত সেহরিশ রাফি তিন জনের বন্ধু অন্য সবার থেকে আলাদা। এই তিন বছরে সিফাত কারোর সাথে যোগাযোগ করেনি। রাগ অভিমান করে। নিজের কলিজার টুকরা বোনের সাথে পর্যন্ত না।

****

শায়রা ক্যাম্পাস থেকে সোজা ক্লাস রুমে গিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। শায়রা ভেবে পাচ্ছে না এভাবে লুকিয়ে কত দিন সে নিজেকে আড়াল করে রাখবে। শায়রা’র ভাবনার মাঝেই শিলা হিরা রিপা এসে দাড়ায় শায়রা’র কাছে। শায়রা কে কিছু ভাবতে দেখে হিরা গুতা দিয়ে বলে,

” আমাদের শায়ুবেবি কি এমন ভাবছে শুনি হ্যা। আমরা যে তার পাশে এসে দাড়িয়েছি সে খেয়াল কি আছে।

শায়রা তাকিয়ে এক নজর দেখে সবাইকে কিন্তু কিছু বলে না। শায়রা চুপ থাকতে দেখে শিলা বলে, বুঝলাম না শায়ুবেবি এত চুপচাপ কেন উহু? কিছু কি হয়েছে তোর কিছুটা সিরিয়াস হয়ে। বিষয় টা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে দেখে শায়রা হালকা হেঁসে বলে, কিছু না ইয়ার। তোরা অযথা টেনশন করছিস। তাদের কথার মাঝেই ক্লাসে স্যার চলে আসে। সবাই যে যার মতো তাদের সিটে বসে পরে।

__________

শায়রা ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ছাদে চলে যায়। কয়েকদিন হলো ছাদে আসে না। জীবনের সাথে লড়াই করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছে। নিজের জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে গেছে শায়রা। দুদিন হলো সিফাত এসেছে। আবারও নতুন করে জীবনের মানে খুজে পেয়েছে।

*****

ইদানীং প্রচুর শীত পড়ছে। শীত তো পড়ছেই তার সাথে অনেক বাতাস হচ্ছে। আজ আকাশে রোদ ওঠেনি। হালকা একটু রোদ উঠেই আবারও চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। কুয়াশায় ঢাকা পড়ে গেছে চারদিকে। দেখে মনে হচ্ছে বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে যেন আরও বেশি শীত লাগছে। শায়রা গায়ে শাল জড়িয়ে নিরিবিলি দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর শায়রা’র পাশে এসে দাঁড়ায় নিধি। নিধির গায়ে সয়েটার পড়ে এসেছে। শীতকালে নিধির একটু বেশিই শীত লাগে। মাথায় টুপি পরে চোখ মুখ ঢেকে এসেছে। নিধি শীতে কাঁপতে কাঁপতে বলে,

” কিরে এই শীতে ছাদে দাড়িয়ে আছিস কেন? যা বাতাস হচ্ছে এখানে টিকে থাকা যায়। আমার তো দাড়িয়ে থাকতেই কষ্ট হচ্ছে। একটুপর সন্ধ্যা নেমে আসবে। শায়রা মৃদু হেসে বলে,

” তাহলে চলো যাওয়া যাক।

” কোথায় যাবি? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে নিধি। নিধির অবাক হওয়া দেখে শায়রা বলে,

” তুমিই তো বললে,নিচে যাবে। তোমার না খুব শীত লাগছে। এখনই বলে যদি ভুলে যাও তাহলে হবে কি করে আপু ভ্রু নাচিয়ে। নিজের কান্ডে নিজেই বোকাবনে যায় নিধি। দু’জনে হাসতে হাসতে ছাদ থেকে নেমে আসে।

**

সেহরিশ অনেক্ক্ষণ যাবত ল্যাপ্টপে কি যেন করছে। খুব মনোযোগ দিয়ে ই কাজটা করছে। মাঝে মাঝে বিরক্ততে কপাল কুচকে যায়। হঠাৎ তার ফোনে একটা কল আসে। সেহরিশ কল টা রিসিভ করে এক হাতে ফোন কানে নেয়। আরেক হাত দিয়ে ল্যাপ্টপ চাপছে। সেহরিশ কিছুক্ষণ ওভাবেই কথা বলে কেটে দেয়।

অনেক রাত সাথে শীত সব মিলে পরিবেশ টা অন্য রকম। শীতের সময় সবাই একটু তাড়াতাড়ি কম্বলের নিচে চলে যায়। সেহরিশ ও তার ব্যতিক্রম না। বাকি কাজ টুকু ফোনে করবে বলে শুয়ে পরে।

____

অন্ধকার রুমের ভিতর দাড়িয়ে আছে এক যুবক। কালো জ্যাকেট দ্বারা পুরো শরীর ঢেকে রাখা। শুধুমাত্র তার চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে। যুবকের সামনে পাঁচ-ছ-জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একই ভাবে তাদের শরীরও ঢাকা। কোনো একটা বিষয় নিয়ে সকলে আলোচনা করছে। সবাইকে নেতৃত্ব দেওয়া লোকটার ঠোঁটে রহস্যময় হাসি।

চলবে ইনশা আল্লাহ

-বিঃদ্রঃ
শীতে হাত চলছে না পাঠকগণ। লিখতে গেলে এক শব্দ থেকে আরেক শব্দে চলে যাচ্ছে কি একটা অবস্থা বলেন। যাই হোক আসল কথায় আসি। গল্পটা দুদিন পরপর দেব। আমার এডমিশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। সেজন্য প্রচুর চাপে থাকতে হবে। এতদিন ভেবেছি এডমিশন দেব না বাট হুট করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করি আমার প্রবলেমটা আপনারা বুঝবেন। আমি সময় পেলেই দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করব। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।ধন্যবাদ সবাইকে । আসসালামু আলাইকুম।