প্রেমে পরা বারণ পর্ব-০৪

0
45

#প্রেমে_পরা_বারণ
পর্ব -৪
#Nosrat_Monisha

পুরুষের দৃষ্টি বুঝার এক অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে নারীরা জন্মায়। সে ক্ষমতা গুণেই নির্জনা বুঝতে পারছে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষটির দৃষ্টি কোনভাবেই এমন কারো হতে পারে না যার মানসিক বয়স কি-না মাত্র এগারো। কিন্তু তার সেই সন্দেহ ভুল প্রমাণিত করে অর্ক নিজের পিছন থেকে একটা ব্যাগ বের করে কতগুলো তেলাপোকা মেঝেতে ছড়িয়ে দিলো।
ক্ষণিকের জন্য পথভ্রষ্ট হলেও অর্ক নিজেকে অনেকটা সামলে নিয়েছে । পরিকল্পনা মাফিক নির্জনাকে ভয় দেখানোর জন্য অনেক কষ্ট করে কতগুলো তেলাপোকা যোগাড় করেছে কিন্তু নির্জনা তার আশায় এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে ঘরেের এককোণে পরে থাকা স্যান্ডেল দিয়ে তেলাপোকা গুলো মারতে শুরু করে। এরপর অর্কর হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে মৃত তেলাপোকাগুলো ব্যাগে ভরে তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভ্রুকুটি করে অর্ক কে জিজ্ঞেস করে ,
–এগুলো কোথায় পেলেন?
অর্ক তার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে,
– তুমি তেলাপোকায় ভয় পাও না?
নির্জনা ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দেয়,
–তেলাপোকাকে ভয় পাওয়ার কি আছে
এক মিনিট নিরব থেকে পুনরায় জিজ্ঞেস করে,
– তারমানে আপনি আমাকে ভয় দেখানোর জন্য তেলাপোকা নিয়ে এসেছেন?
অর্ক মুখভার করে মাথা উপর নিচে করে সায় দেয় ।
নির্জনা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মরা তেলাপোকাগুলো গারবেজবাক্সে ফেলে দেয়।
তখনই একজন মেইড এসে নির্জনাকে বলে জাফর সিদ্দিকী তাকে ডকে পাঠিয়েছে । নির্জনা মেইডের সাথে বের হয়ে যায়। অর্ক আর আরশির ঘর পাশাপাশি হওয়ায় আরশি আর ডা.প্রীতি নির্জনাকে বেরিয়ে যেতে দেখেই দৌড়ে অর্কের ঘরে এসে দরজা লাগিয়ে দেয় ।
আরশি অত্যাধিক উৎসাহের সাথে জিজ্ঞেস করে,
–কি কাজ হলো?
অর্ক একরাশ হতাশা নিয়ে বিছানার উপর বসে বলে,
–বাবা আমার জন্য ডাইনী না একটা ডাকাত নিয়ে এসেছে। এই মেয়ে তেলাপোকা ভয় পায় না।
ডা. প্রীতি অবাক হয়ে বলে,
–কি? তেলাপোকা ভয় পায় না! এ আবার কেমন মেয়ে?
অর্ক আবার মুখ ভার করে বলে,
– কয়দিন পর পর পেস কনট্রোল করানোর জন্য এমনিতেই আমাদের বাড়িতে তেলাপোকা খুঁজেই পাওয়া যায় না, তোমরা জানো আমি কত কষ্ট করে তেলাপোকাগুলোকে স্টোর রুম থেকে খুঁজে ধরে এনেছি। মেয়েটা তো ভয় পেলোই না উল্টো সবগুলো নিরীহ তেলাপোকাগুলোকে নির্দয় ভাবে হত্যা করেছে।
প্রীতি আর আরশি অবাক হয়ে একসাথে বলে,
–কিন্তু কি করে।
অর্ক বিছানা থেকে উঠে এসে সেই স্যান্ডেলটা তুলে ধরে বলে,
–এটা দিয়ে।
প্রীতি আর আরশি দুজনেই গোল গোল চোখে স্যান্ডেলটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
এক পর্যায়ে অর্ক গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতে বলে,
– মেয়েটার কাছ থেকে সাবধানে থাকতে হবে। বলা যায় না , কোন কারনে রাগ উঠলো আর স্যান্ডেল দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে ঐ তেলাপোকা গুলার মত আমাকেও মেরে ফেলল।
অর্কর এমন কথা শুনে আরশি আর প্রীতি দুইজনেই হুহু করে হেসে উঠলো।
অর্ক দুজনকেই ধমকে ওঠে,
–আমি হাসির কি বলেছি? তেলাপোকা কে মারার সময় যদি তোমরা মেয়েটাকে দেখতে কি ভয়ংকর লাগছিল ।
আরশি হাসি থামিয়ে বলে,
–সরি সরি আর হাসবো না। (কিছুক্ষন থেমে আবার বলে) আচ্ছা
আমি একটা কথা ভাবছি মেয়েটা যদি সত্যি তোমাকে জুতোপেটা করে মেরে ফেলে তাহলে কি নিউজ হবে?(হাতটা মাইকের মতো ধরে) ব্রেকিং নিউজ “ সুন্দরী বউয়ের হাতে জুতার বারি খেয়ে স্বমীর মৃত্যু”।
–তাই না? খুব হাসি পাচ্ছে। বের করছি তোমার হাসি।
বলেই অর্ক আরশিকে মারার জন্য ধরতে যায় কিন্তু তার আগেই আরশি ছুট লাগায়। অর্কও ঘরের এক প্রান্ত একে অপর প্রান্তে আরশিকে ধরার জন্য ছুটতে থাকে।
তাদের দেখে ডা. প্রীতির মুখে সন্তুষ্টির হাসি ফুটে উঠে। পরক্ষণেই সেই হাসি মিলিয়ে যায়।
সে মনে মনে বলে,
–আল্লাহর কাছে দোয়া করি অর্ক, এবার তোমার এই হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা কষ্টটা দূর হোক। আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে , নির্জনা নামের মেয়েটা তোমাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারবে। আমার বিশ্বাস সেই দিন আর বেশি দূরে না, যেদিন তুমি পুরো দুনিয়ার সামনে থেকে এই পাগল হওয়ার মুখোশটা খুলে ফেলবে। তোমার বন্ধু আর ডাক্তার হিসেবে এটাই আমার চাওয়া।


নির্জনার ছবির সামনে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে রুহান। কিছুটা কাঁচ বুকের মধ্যে বিঁধে যাওয়ার ফলে সেখানেও ড্রেসিং করতে হচ্ছে। বিদেশি এক কম বয়সী মেইড কাজটা করছে।
মেয়েটা অনেকদিন যাবতই এ বাড়িতে কাজ করে। শুরু থেকেই সে রুহানের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে কিন্তু আজ অব্দি রোহান তার দিকে ফিরেও তাকায়নি। অবশেষে মেয়েটি আজ সুযোগ পেয়েছে, রোহানের মেজাজ অত্যাধিক খারাপ থাকায় অন্য কোন মেইড ভয়ে তার রুমে আসতে চাইছে না । তাই এই বিদেশী মেয়েটি একাই রুহানের কাছে এসেছে, ড্রেসিংয়ের জন্য।
হঠাৎই মেয়েটি রুহানকে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করতে লাগলো। বিদেশি রমনীটি রুহানে শক্ত-সামর্থ্য শরীর দেখে আর নিজেকে সামলাতে পারে না । সে তার নরম তুলগুলে হাত দিয়ে রুহানের জিম করা পেটানো বুকের উপর থেকে হাতটা আবেদনময়ী ভঙ্গিতে ধীরে ধীরে তার সিক্স প্যাক অ্যাবসের উপর নিতেই রুহান মেয়েটাকে এক ধাক্কায় ঠেলে নিচে ফেলে দিলো।
রাগে গজ গজ করে বললো,
–হাউ ডেয়ার ইউ, টাচ মি? গেট লস্ট আই উইল ডো ইট মাইসেলফ।
মেয়েটা দাঁড়িয়ে তার সামনে মাথা নিচু করে ক্ষমা চেয়ে বলে,
–Sorry,sir. I was just distracted for a moment. (আমাকে ক্ষমা করবেন স্যার। কিছু সময়ের জন্য আমার মতিভ্রম হয়ে গেছিল)
–get lost. You are fired.(বের হয়ে য়াও তোমাকে বরখাস্ত করা হলো)
–বাট স্যার
রুহান চিৎকার করে উঠে,
–আই উইল নট রিপিট ।
মেয়েটি নতমস্তকে রুহানকে বলে,
–Ok sir. But I have a question. Why do you love that girl who doesn’t even like you a little bit.Why are you destroying your life for that simple girl? While there are thousands of girls outside who are ready to die for you. (আমার একটা প্রশ্ন ছিলো। আপনি এমন একটা মেয়েকে কেন ভালবাসেন যে আপনাকে বিন্দুমাত্র পছন্দও করে না। কেন আপনি ঐ সাধারণ মেয়েটার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করেছেন? যেখানে হাজার হাজার মেয়ে আপনার দিওয়ানা হয়ে আছে। ।

–I am not answerable to you.(তোমার কাছে জবাবদিহি করতে আমি বাধ্য নই).. Get lost.
মেয়েটা চলে যায়।

নির্জনার ছবির দিকে তাকিয়ে রুহান বলে,
–কেন তোমাকে ভালোবাসি সেটার উত্তর তো আমি নিজেই খুঁজে পাইনি? তাহলে মানুষকে কিভাবে এর কারণ বলবো সুইটহার্ট। হ্যাঁ এটা সত্যি হাজারটা মেয়ে আমার জন্য পাগল। কিন্তু তারা কেউই নির্জনা না । নিজেকে মাঝে মধ্যে খুব অসহায় মনে হয়। আচ্ছা আমাকে কি একটুও ভালোবাসা যেতো না?ভেবেছিলাম আমার ভালবাসা বুঝতে পেরে একদিন না একদিন আমাকে করুণা করে হলেও আমার হয়ে যাবে । কিন্তু তুমি তো অন্য কাউকে জীবনে নিয়ে এলে। । তোমাকে ভালবেসে নায়ক হতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি ভিলেন বানিয়ে দিলে। দেখো আমি এখন কতো পারফেক্ট ভিলেন যাকে ভালবাসি সেও আমাকে ঘৃণা করে। অনেক হয়েছে সুইটহার্ট, আমার আর ধৈর্য্য নেই । এটাই তোমার লাস্ট চান্স এবার যদি তুমি আমার না হও তবে রুহান খন্দকারের ভয়াবহ রূপ তুমি দেখবে। তোমার জন্য প্রয়োজনে আমি পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দিবেো৷


জাফর সিদ্দিকীর ঘরের সামনে গিয়ে মেইড দরজায় নক করে। তিনি তখন রকিং চেয়ারের উপর বসে ধূমপান করছিলেন। সিগারেটের আগুনটা নিভিয়ে তিনি বলে গলা বাড়িয়ে বলেন,
–দরজা খোলা আছে ভেতরে এসো।
মেইড নির্জনাকে রুমের ভেতরের দিয়ে চলে যায়। জাফর সিদ্দিকীর নির্জনার দিকে তাকিয়ে রুমে রাখা ডাবল সোফার দিকে ইশারা করে বলে,
–বসো, তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
নির্জনা ডিভাইনে গুটিসুটি হয়ে বসে।
জাফর সিদ্দিকী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,
–অর্কর ব্যবহারের জন্য আমি খুবই লজ্জিত। সে কেন তোমাকে অপছন্দ করছে তা আমি বুঝতে পারছি না। আমি তোমার কাছে মাফ চাইছি।
নির্জনা মৃদুস্বরে বলে,
–স্যার একজন মানুষ আমাকে পছন্দ না-ই করতে পারে এতে মাফ চাওয়ার মতো কিছু নেই ।
–তবুও। আমি..
নির্জনা জাফর সিদ্দিকীকে কথার মাঝখানে থামিয়ে চোখ-মুখ শক্ত করে বলে,
–স্যার আপনি পয়েন্টে আসুন। যে কথা বলতে ডেকেছেন তা বলুন।
জাফর সিদ্দিকী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। বরাবরের মতো তিনি এবারও এই মেয়েটার ব্যক্তিত্বের কাছে হেরে যায়
তিনি নরম স্বরে বলেন,
–আমার বড় ছেলে অর্ণব অনেক বেশি খেপাটে আর নীতিবান । সে তোমার আর অর্কর বিয়ের আসল কারণটা জানে না।শুধু অর্ণবই না আমি ছাড়া কেউই জানে না তুমি কেন এই বিয়েটা করতে রাজি হয়েছ ।
নির্জনা আবার কথার মাঝখানে বলে,
–সমস্যা নেই, আমি কাউকে জানাবো না। আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
–আরে না আমার অন্য সবাইকে কারণ বলতে সমস্যা নেই। আমার সমস্যা শুধু অর্ণবকে নিয়ে। সে যদি জানতে পারে আমি তোমার খারাপ অবস্থার সুযোগ নিয়েছে তাহলে ভীষণ ক্ষেপে যাবে।
–আমার উপর আপনি এটুকু ভরসা রাখতে পারেন যে আমি নিজে থেকে আপনার বড় ছেলেকে কিছু জানাবো না।
–সেটা আমি জানি তুমি নিজে থেকে কিছু জানাবে না। কিন্তু সত্য একদিন না একদিন প্রকাশ পায়। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমিই সবাইকে সব বলবো তোমার আর বিহানের কথা, তোমার বাবা-ভাইয়ের কথা, আমাদের শর্তের কথা শুধু রুহান খন্দকারের নামের বদলে অন্য কোন নাম ব্যবহার করবো । তাই আমার তোমার কাছে একটাই অনুরোধ যাই হোক না কেন রুহান খন্দকার নামটা যেন এ বাড়িতে কেউ জানতে না পারে।
–আমি আপনার কথা কোন কিছু বুঝতে পারছিনা স্যার। আপনি বলছেন সত্য প্রকাশ করবেন কিন্তু রুহান খন্দকারের নাম ব্যবহার করবেন না। স্যার আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য হলো রুহান খন্দকার। তাহলে এমন কথা বলার মানে কি?
–রুহানের বাবা তমিজউদদীন খন্দকারের সাথে আমার কথা হয়েছে তিনি অর্কর সাথে তোমার বিয়ের কথা জানতে পেরে ফোন করেছিলেন। তিনি আমাকে বললেন তার ছেলেকে তিনি ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি ওয়াদা করেছেন রুহান যদি কখনো এ দেশে আসেও তবু সে তোমাকে আর তোমার মাকে বিরক্ত করবে না। তাই তিনি চান আমরা যাতে রুহানের উপর থেকে কেসটা তুলে নেই।
–অসম্ভব!(বলে নির্জনা বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়)আপনি এই কথা বলার জন্য আমাকে ডেকেছেন? আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি আপনার এই অন্যায় আবদার মেনে নিব তাহলে ভুল করছেন।

– মাথা ঠান্ডা করো। শান্ত হয়ে আমার কথা শোনো। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি খন্দকারদের বিরুদ্ধে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও যায় না সেখানে আমি তো সামান্য মন্ত্রী। যদি হাজারটা প্রমাণ থাকতো তবু আমি রুহান খন্দকারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারতাম না, সেখানে একটা মার্ডারেরও কোন প্রমাণ নেই। কিন্তু সব ঘটনা জানলে অর্ণব সেটা বুঝতে চাইবে না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করতে চাইবে। এতে রুহান খন্দকারের কিছুই হবে না মাঝখান থেকে আমি আমার ছেলেকে হারিয়ে ফেলবো। সবাই জানে, অর্ণবের মত যুবনেতা আর আমার মতো মন্ত্রী খন্দকারদের বাঁ পকেটে থাকে। তাই আমি ভেবেছি রুহান খন্দকারের জায়গায় একটা কাল্পনিক নাম ঠিক করে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এমনটাই বলবো। এতে সবারই ভালো হবে।

নির্জনা এবার ধপ করে সোফার উপর বসে পড়ে।
জাফর সিদ্দিকী আবার বলতে শুরু করে,
–আমি তোমার খারাপ চাইনা নির্জনা। সেজন্য বলছি খন্দকাররা একটা জিনিসেই ভয় পায় সেটা হলো তাদের রেপুটেশন, যা এখন তোমার হাতে। কিন্তু একবার যদি সেটা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর কোনভাবেই তাদেরকে আটকানো যাবে না। হয়তো তোমার সাথে সাথে তোমার মা আর আমার পুরো পরিবারটাও শেষ হয়ে যাবে।
নির্জনা এবার ছলছল চোখে অসহায় দৃষ্টিতে জাফর সিদ্দিকীর দিকে তাকিয়ে বলে,
–তবে কি ঐ রুহান খন্দকার নিজের পাপের সাজা পাবে না? বিহান আর আমার বাবা-ভাই কি বিচার পাবে না?
জাফর সিদ্দিকী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন,
–কেন পাবে না? নিশ্চয়ই পাবে। মানুষ যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন সৃষ্টিকর্তার নিয়মের উপরে না। মহান রবই এ নিয়ম তৈরি করেছেন যে, কেউ অন্যায় করে সে তার সাজা পাবেই । রুহান খন্দকারও তার করা অন্যায় অবিচারের সাজা পাবে। কিন্তু সেজন্য তোমাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে আর আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। নিশ্চয়ই তিনি রুহান খন্দকারকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিবেন। এখন তুমি ভেবে দেখো তুমি কি করবে।
এক মিনিটের জন্য নিজের চোখ বন্ধ করে নির্জনা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
–বেশ! আমি কেসটা তুলে নেবো।
জাফর সিদ্দিকী স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
–তোমাকে থানায় যেতে হবে না, কাল আমার পি.এস. এসে তোমার সই নিয়ে যাবে।
–ঠিক আছে। আমি তাহলে এখন আসি স্যার।
–একটু বসো আমার আরো কিছু বলার আছে।
–জ্বি বলুন।
জাফর সিদ্দিকী চেয়ার থেকে উঠে কিছুক্ষণ অস্থির ভাবে পায়চারি করে। তারপর এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের চোখমুখ শক্ত করে দৃঢ় গলায় বলেন,
–আমার মা জোহরা সিদ্দিকী এবং আমার স্ত্রী আসরা সিদ্দিকীর মৃত্যুর জন্য অর্ক দায়ি।

–চলবে?