#প্রেম_প্রেম_পায়
#স্বর্ণালী_সন্ধ্যা
পর্ব আঠারো
১৮.
ফায়াদ এবং তার পরিবার চলে গেল বেশ কিছুক্ষন হলো।অপরাজিতা এখনো শাড়ি পরে সোফায় বসে আছে।বসে একা একাই মুচকি মুচকি হাসছে সে। আসিফ ইসলাম এসে মেয়ের মাথায় হাত রাখলেন।রামিসা ইসলামও এসে সামনের সোফায় বসলেন। আপাতত তার কাজ বাবা মেয়ের কান্ড দেখা।
আসিফ ইসলাম মোলায়েম কন্ঠে বললেন,
‘আমার মা টা দেখতে দেখতে কতো বড় হয়ে গেলো। তার জন্য বিয়ের সম্বন্ধও আসছে। আম্মাজানের তার ছেলেটাকে রেখে চলে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে বুঝি!’
এতোক্ষণ খুশিতে নাচতে থাকা মনটা হুট করেই ধক করে উঠলো। অপরাজিতা বাবার দিকে তাকালো। বাবা তার দিকে খুব নরম চোখে তাকিয়ে আছেন। আসলেই তো! বিয়ে হলে বাবাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। ছেড়ে যেতে হবে মায়ের আচল। এতো বছর নিজের বাড়ি দাবী করা বাড়িটাও ছেড়ে যেতে হবে। এভাবে তো ভেবে দেখে নি। ভালোবাসাকে পাওয়ার আনন্দে সে ভুলেই বসেছিল যে কিছু পেতে হলে কিছু ছেড়ে দিতে হয়। চোখ টা টলমল করে উঠলো অপরাজিতার। ইশ বাবা তাকে ইমোশনাল করে দিল।
মাথা টা নিচু করে ফেলল সে।
আসিফ ইসলাম অপরাজিতার হাত টা নিজের হাতে নিয়ে বললেন,
‘মনে হয় এইতো সেদিন কোলে নিলাম। ডাক্তার এসে আমার হাতে ছোট একটা পুতুল ধরিয়ে দিয়েছিল। বলেছিল আমার মেয়ে হয়েছে৷ আমি বলেছি আমার মেয়ে না, আমার মা হয়েছে। আমার মা আমার কাছে ফিরে আসছে। এই ছোট হাত গুলো যখন ধরতাম আমার কি যে খুশি হতো। মনে হয়েছিল এক মায়ের হাত ধরে হাটা শিখেছি, আর এখন আমার আরেক মা কে হাতে ধরে হাটা শিখাব।আজ আমার মা টা মাশাআল্লাহ অনেক বড় হয়েছে।’
অপরাজিতার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মাথা নিচু করে আছে সে। রামিসা বেগমের চোখ দিয়েও পানি ঝরছে।তার দুষ্ট মেয়েটা কারো বাড়ির বউ হবে। মা মা করে মাথা খাবে না। ওড়না দিয়ে চোখ মুছলেন তিনি। আসিফ ইসলাম কাদছেন না৷ হাসি মুখে কথা গুলো বলছেন। কিন্তু তার কণ্ঠ কাপছে।
মেয়ের মাথা টা উচু করে বললেন,
‘আমার সামনে মাথা নিচু করবা না আম্মা।আমি তোমাকে মাথা উচু করে বাচতে শিখিয়েছি আমার সামনে মাথা নিচু করতে নয়। আর কাদছো কেন?’
মেয়ের মুখ নিজেই মুছে দিলেন।তারপর কৌতুক করে বললেন,
‘ইশ কেদে কি অবস্থা। এই ফেস ছেলেপক্ষ দেখলে ভাববে বিয়ে করার জন্য কান্না করছো!’
হেসে দিল অপরাজিতা।মেয়েকে হাসিয়ে আসিফ ইসলামের মনটা যেন জুড়িয়ে গেল৷
তারপর তিনি বললেন,
‘ফায়াদ ছেলেটাকে আমার খুব পছন্দ। আর পরিবারটা আমার জানাশোনা। ফারদিন ভাই খুব ভালো মানুষ।ছেলে হিসেবে ফায়াদকে আমার কাছে চমৎকার লাগে। এখন তুমি বলো তোমার কোনো পছন্দ আছে? তোমার মতামত কি? আমি তোমাকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়ে আর অঢেল ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছি।কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।’
অপরাজিতা কিছুক্ষণ চুপ রইলো। তারপর নিচু স্বরে বলল,
‘আমার আর কোনো পছন্দ নেই বাবা।তোমার এখানে ভালো লাগলে এখানেই দেখো।’
আসিফ ইসলাম বললেন,
‘চাপ নিবা না আম্মা। তুমি বললে আমি বাদ দিয়ে দিব। তোমার থেকে দামী আমার কিছু নেই। ‘
অপরাজিতা তাড়াহুড়ো করে বলল,
‘না না বাবা।এখানেই এখানেই৷ উনাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।’
বলার সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে ফেলল।বাবার সামনে এভাবে নির্লজ্জের মতো কিভাবে বলে ফেলল। এখন বাবা কি ভাববে!
রামিসা বেগম সোফা থেকে উঠে রান্না ঘরে যাওয়ার আগে স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘আপনার মেয়ের হাবভাব দেখে লাগছে এখানে ছাড়া সে বিয়ে করবে না।’
আসিফ ইসলাম হেসে ফেললেন৷ কিন্তু অপরাজিতা তার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। মা কি বুঝালো? সে কী জানে এটাই তার পছন্দের ছেলে? ভাবনার মাঝেই বাবার কথায় সম্বিত ফিরলো তার।
‘আচ্ছা রুমে যাও। আমি বাকি কথা তাদের সাথে বলবো। তুমি যেয়ে আরাম করো যাও।’
অপরাজিতা রুমে ফেরত এসেই আগে ফোন হাতে নিল। সেই তখন ফায়াদকে হুমকি দেওয়ার পর তো আর ফোন হাতে নেওয়া হয় নি। ফোনের লক খুলতেই ফায়াদের ম্যাসেজ সামনে আসলো তার। ম্যাসেজ দেখে এবার বুঝলো আসলে হয়েছে কি। ব্যাপার টা বুঝতে পেরে জোরে হেসে দিল সে।
তার হাসির শব্দ শুনে রামিসা বেগম আসলেন রুমে। এসেই ধমকে বললেন,
‘কি হইসে? পা’গলের মতো হাসিস কেন?’
মা কে দেখে অনেক কষ্টে হাসি থামালো সে। বলল,
‘কই? হাসি না তো!’
বলতে বলতে আবারো হেসে দিল। রামিসা চোখ রাঙানি দিয়ে বললেন,
‘শেষ? আর হাসতে হবে না৷ হাসলে কিন্তু বিয়ে ক্যান্সেল করায় দিব। পা’গলের মতো না হেসে চেঞ্জ কর এসব ‘
বলেই চলে গেলেন। অপরাজিতা হেসেই চলছে।সে জানে মা এমন কিছুই করবে না। কারন ফায়াদকে তার মায়ের সেই হাসপাতালে দেখেই পছন্দ হয়েছিল।নিজের মেয়ের জামাই হিসেবে পেয়ে তিনি মনে মনে খুশিই হবেন।বেশ কিছুক্ষণ হেসে তারপর শান্ত হলো সে।
অপরাজিতা শাড়ির সেফটিপিন খুলতে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো। আয়নাতে নিজেকে দেখেই ছাদের সেই মুহুর্তের কথা মনে পড়লো তার। শাড়ির আচল দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে নিল। তারপর আয়নার নিজের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘হুম, একদম লাগছে প্রেমিক পুরুষের বউ এর মতো।’
টিপের পাতা টা নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিল। আর টিপ পড়বে না সে। এখানে ভালোবাসার অধিকার আদায় করবে। ভেবেই লজ্জা পেয়ে ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলল।
—————
ফায়াদ বাসায় পৌছানোর পর পর ই ফোন এলো ফারাজের। ফোন কানে দিতেই ওপাশ থেকে চিল্লানি ভেসে আসলো,
‘কিরেএএ আজ নাকি মেয়ে দেখতে গিয়েছিস ভাই। আমি দেখবো না পুচকি ভাবি?’
ফায়াদ ফোনটা কান থেকে সরিয়ে ফেলল।তারপর আবার কানে দিয়ে বলল,
‘মায়ের সাথে কথা বলেছিস নিশ্চয়ই’
ফারাজ হেসে বলল,
‘তা নয় তো কি? আর কার কাছ থেকে খবর নিব। রাফিয়া তো নেই যে সে আমাকে নিজে থেকে খবর পাঠাবে।’
ফায়াদ দুঃখী ভাব করে বলল,
‘রাফিয়া আমাকে পাগল করে ফেলবে যখন জানবে আমার বিয়ে কার সাথে হবে। মেয়েটা আমাকে পেরেশান করার একটা চান্স ও ছাড়ে না।’
ফারাজ হাসছে। হেসে কৌতুক করে বলল,
‘মা তোর বিয়ের সাথে আমাকে আবার বিয়ে দিতে চায়। পুচকি ভাবির ছোট বোন টোন আছে নাকি?’
ফায়াদ আবারো সঠিক করার চেষ্টা করে বলল,
‘তোরা সবাই মিলে কি শুরু করছিস বলতো?পুচকি না।অপরাজিতা অপরাজিতা।’
‘একই একই’
ফারাজ কথা বলার মাঝেই নীতি এসে বলল,
‘স্যার আপনি যে বললেম কাল বাং—‘
নীতির কথা শেষ হওয়ার আগেই ফারাজ নীতি কে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বলল।ফোনের দিকে ইশারা করে বুঝালো যে ফায়াদ ফোন করেছে। নীতি সাথে সাথে চুপ করে গেল। কারন তারা কাউকে না জানিয়ে যাচ্ছে। সারপ্রাইজ দিবে তাই।
ফায়াদ নীতির গলা শুনেই বলল,
‘ওটা নীতি ছিল না?বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বলছিল!’
‘হ্যা হ্যা নীতিই।বাংলাদেশ না, সে বাংলো বলতে চেয়েছিল।’
‘ওহ আচ্ছা।আছে কাছে? দে কথা বলি।’
ফারাজ তাড়াতাড়ি বলল,
‘নেই।চলে গেছে।’
তারপর কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিল। নীতি সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু নীতিকে ফারাজ কথা বলতে দেয় নি কারন নীতি এক্সাইটেড থাকলে কথা চেপে রাখতে পারে না। নীতি জানে
ফারাজ এবং ফায়াদ যে জমজ ভাই। সে এক্সিডেন্ট থেকে সুস্থ হওয়ার পর থেকে ডিপ্রেশনে ভুগেছিল বেশ কিছুদিন।তখন সাহায্যের জন্য ফারাজ ফায়াদকে কল করে বলেছিল সাহায্য করতে কারন ফায়াদ বুঝদার বেশি। ফায়াদ নীতিকে ফোনে উৎসাহিত করতো জীবন নিয়ে। জীবনের ভালো দিক গুলো ধরিয়ে দিত। বলেছিল তাকে বড় ভাই ভাবতে এবং তার কথা মানতে। এভাবে সে ফায়াদকে চিনে এবং খুব সম্মান করে।
ফোন রাখার পর ফারাজ নীতিকে বলল,
‘বাংলাদেশ যাওয়ার পর একটা বিয়ে খেতে পারবেন।’
নীতি খুশিতে লাফিয়ে উঠে বলল,
‘ফায়াদ ভাইয়ার? ওয়াও!’
ফারাজ চেয়ার থেকে উঠে নীতির সামনে এসে টেবিলে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বলল,
‘ফায়াদকে ভাইয়া বলেন। আবার তুমি করে সম্বোধন করেন। ফায়াদের থেকে তো আমি বেশি পরিচিত আপনার।’
নীতি জ্ঞানীদের মতো করে বলল,
‘আপনি তো বস।আপনাকে তো তুমি সম্বোধন করা যাবে না।’
ফারাজ টেবিল থেকে কফি নিয়ে খাচ্ছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। নীতির কথা শুনে বলল,
‘তা না বললেন।তবে অফিসের বাহিরে স্যার ডাকাটা তো এভয়েড করতে পারেন।’
নীতি ভ্রু কুচকে বলল,
‘তো কি ডাকবো?’
‘ফায়াদের মতো ভাইয়া বলেই ডাকতে পারেন।’
নীতি সাথে সাথে চোখ বড় বড় করে বলল,’ একদম না’
নীতির কথা শুনে ফারাজ কফি চুমুক দিতে দিতে বলল,
‘কেনো?’
নীতি এদিক ওদিক তাকিয়ে গলার স্বর কিছুটা নিচু করে বলল,
‘আপনাকে আমার কাছে ভাইয়া ভাইয়া লাগে না।’
কথাটা শুনে ফারাজ বিষম খেয়ে গেল। ভাইয়া ভাইয়া লাগে না মানে? এইটা আবার কেমন কথা?সে কিছু বলতে নিবে তার আগেই নীতি বলল,
‘স্যার আমার অনেক কিছু গোছানো বাকি। আমি বাসায় গেলাম।’
বলেই সে দৌড় দিল।ফারাজ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। নীতি না বলেছিল তার সব গোছানো শেষ! যেতে যেতে দরজায় ধুম করে একটা বারি খেল। তা দেখে ফারাজ বলল,
‘আরে আস্তে ব্যাথা পেয়েছেন তো!’
নীতি পিছনে না ঘুরেই যেতে যেতে জোরে করে বলল,
‘পাই নি পাই নি।’
নীতি নিজেকে বকছে মনে মনে। পেটের কথা এভাবে হুট করে মুখে বলে ফেলবে সে ভাবতেও পারে নি। এখন যদি এটা নিয়ে তাকে জেরা করে? সে ভাবলো,
‘ধুর এতো টেনশন ভালো লাগে না। কিছু বললে মামা চাচা নানা ডেকে দিব। তাও ভাইয়া ডাকবো না। উনি আমার কোন জন্মের ভাই?’
————–
আজ রাতে ঘুমানোর সময় রামিসা এসে আবিরকে নিয়ে গেলেন।
‘ওকে কোথায় নাও?’
রামিসা বেগম বললেন,
‘ ঘুমাতে নিয়ে যাচ্ছি। রাতে বারান্দায় যাবি না।’
বলে আবিরকে নিয়ে চলে গেলেন তিনি। অপরাজিতা হা করব তাকিয়ে রইলো। মা কি তাকে কথা বলার সুযোগ করে দিয়ে গেলো?আরে বাহ!
দেড়ি না করে ভিডিও কল দিল সে ফায়াদকে। ফায়াদ মাত্রই শুয়েছে। কল রিসিভ করেই বলল,
‘কি ব্যাপার আবির নেই আজ?’
কিন্তু অপরাজিতার তো মুখে কথা নেই। সে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে ফায়াদের দিকে। মনে হচ্ছে জীবনে দেখে নি। ফায়াদ অপরাজিতার এমন দৃষ্টি দেখে বলল,
‘কি হলো?’
অপরাজিতা নিজেকে সামলে বলল
‘আপনার জা জামা কই?’
ফায়াদ এবার স্বাভাবিক ভাবে বলল,
‘ঘুমানোর সময় নিশ্চয়ই শার্ট পড়ে ঘুমাবো না।’
অপরাজিতা অন্যদিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে বলল,
‘ওহ স্যরি এভাবে দেখি নি কখনো তাই একটু’
অপরাজিতা যেই বুকে আজ মাথা রেখেছিল তা এভাবে খোলা অবস্থায় দেখে সেই বুকেই আবার লুটিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে তার।এটা তো আর বলা যায় না।নিজের খেয়ালে নিজেই লজ্জিত সে। তাই অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। ফায়াদ অপরাজিতার ভাব বুঝতে পেরে পাতলা টিশার্ট জড়িয়ে নিল গায়ে। তারপর বলল,
‘তাকাও!’
অপরাজিতা প্রথমে আড়চোখে তাকালো। যখন দেখলো ফায়াদ টিশার্ট পড়েছে তখন পুরোপুরি তাকিয়ে ধরে রাখা নিশ্বাস টা ছেড়ে দিল৷ অপরাজিতা কান্ড দেখে ফায়াদ মিটমিট করে হাসছে। হাসি লক্ষ্য করতেই সে প্রতিবাদ করে বলে উঠলো,
‘হাসবেন না! আপনার লজ্জা নাই থাকতে পারে। আমার আছে।’
ফায়াদ দুষ্টুমি করে বলল,
‘আচ্ছা? বিয়ের পর যখন আমার খোলা বুকে মাথা রেখে ঘুমাবা তখন লজ্জা কোথায় রাখো দেখবো তো’
অপরাজিতা এক হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বলল,
‘এই আপনি রোমান্টিক হলেন কিভাবে?মুভি টুভি দেখেন নাকি?’
‘হুম অপরাজিতা মুভি দেখি। এই মুভিটা আমাকে প্রেম শিখিয়েছে।’
অপরাজিতা লজ্জা পেয়ে বলল,
‘হায় আল্লাহ!’
‘তোমার লেখা পড়ার কি খবর?’
‘আবার লেখা পড়া কই থেকে আসলো?’
ফায়াদ এবার সিরিয়াস হয়ে তাকালো।ফায়াদের দৃষ্টি পরিবর্তন দেখে অপরাজিতা আমতা আমতা করে বলল,
‘ভা ভালো খখবর।’
‘কিছুদিন ধরে পড়তে বসছো না তুমি আমি জানি। এসব আমার পছন্দ না। ভালোবাসায় গা ভাসিয়ে বসে থাকবা না। আমি তো হারিয়ে যাবো না।’
অপরাজিতা নিচু করে অভিযোগ এর সুরে বলল,
‘এমন করেন কেন? ২/৩ দিনই তো।’
ফায়াদ শান্ত গম্ভির আওয়াজে বলল,
‘ভার্সিটি তে যখন চান্স না পাবা তখন তোমার খবর আছে!’
এই স্বর শুনলে অপরাজিতা আর কিছু বলতে পারে না।কিছুটা অভিমান নিয়েই বলল,
‘বসছি পড়তে’
বলেই ফোন কেটে দিল। কিভাবে হুমকি দিল! তার নাকি খবর আছে। দিবে না ফোন! পড়বে সারাক্ষণ পড়বে।টেবিলে গিয়ে স্টিকি নোট লিখলো,
‘দেখিয়ে দিব ডাক্তারকে।হুহ!’
ফোন কান থেকে নামিয়ে ফায়াদ মুচকি হাসলো।এটা দরকার ছিল। কারন ফায়াদের সায় পেয়ে অপরাজিতা অনুভূতিতেই হারিয়ে যাচ্ছিল। তাই বাস্তবতায় নিয়ে আসলো তাকে। অপরাজিতার বাবা ফোন দিয়েছিল ফারদিন আহমেদ কে। তিনি তার মেয়েকে ভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার পর বিয়ে দিবেন। আপাতত আংটি বদল করিয়ে রাখার কথা বলেছে ফারদিন আহমেদ।তারা রাজি হয়েছে। অপরাজিতার বাবা তার মেয়েকে অনেক ভালোবাসেন। তিনি চান তার মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হোক। ফায়াদ সে পথে বাধা হবে না। বাবার মেয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করুক।
ফোনটা পাশে রেখে বালিশে মাথা এলিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিতে দিতে বিরবির করে বলল,
‘ ভালোবাসি ভালোবাসি’
কথাটা যাকে উদ্দেশ্য করে বলা সে শুনলো না। শুনলো শুধু সেই আবছা অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা চারটি নিস্তব্ধ দেওয়াল।
(চলবে)
#প্রেম_প্রেম_পায়
#স্বর্ণালী_সন্ধ্যা
পর্ব ঊনিশ
১৯.
আজ সারাদিন পার হয়ে রাত নামলো। খুবই ব্যস্ত দিন থাকায় ফায়াদ খুব ক্লান্ত। তাই ড্রাইভারকে কল করে আসতে বলল।এই ক্লান্তিতে গাড়ি ড্রাইভ করা তার আজ ইচ্ছা করছে না। দেহ ক্লান্তের সাথে মনটাও যেন ক্লান্ত। আজ সারদিনে চির পরিচিত সেই কন্ঠটা একবারো শোনা হয় নি।কাজের ফাকে মনে হচ্ছিল এই বুঝি কল দিল।এই বুঝি চলে এসেছে দেখা করতে। কিন্তু তা শুধুই তার মনে হচ্ছিল। মেয়েটা অভ্যাস বানিয়ে দিয়েছে তার কণ্ঠ প্রতিদিন শুনার। তার সেই মুখ প্রতিদিন দেখার। আজ একদিন না শুনে বা না দেখে মনে হচ্ছে সারাদিন কি যেন একটার অভাব ছিল।তাকে দেখার জন্য মনটা আনচান করছে ফায়াদের। নতুন আরেক প্রেমের অনুভূতির সাথে পরিচিত হলো ফায়াদ।
কাল রাতে হুমকি দেওয়ার পর মেয়েটা আর কল দেয় নি তাকে৷ অভিমান করে আছে বোধহয়। মনে মনে হয়তো অভিমান ভাঙানোর অপেক্ষায় আছে। গাড়ির সিটে গা এলিয়ে দিল।পকেট হাতরে মোবাইল বের করে কল করলো প্রিয় নারীর কাছে। চোখ বন্ধ করে কানে ফোন ধরে আছে ফায়াদ।
অপরাজিতা পড়ার টেবিলে বসে আছে। সে প্রতিজ্ঞা করেছে পাবলিকে চান্স পেয়ে দেখিয়ে দিবে যে সে ভালোবাসায় গা ভাসিয়ে দুনিয়া ভুলে যায় নি। তখনি ফোন আসলো৷ নাম্বারটা দেখে সাথে সাথে রিসিভ করতে নিয়েও নিজেকে দমিয়ে ফেলল।তারপর আস্তে ধীরে রিসিভ করে চুপচাপ ফোন কানে দিয়ে বসে আছে৷ কথা বলছে না।
ফোন রিসিভ হওয়ার পর নিরবতা দেখে ফায়াদ ক্লান্ত কণ্ঠে বলল,
‘কথা বলবে না?’
ফায়াদের কণ্ঠ শুনে বুঝা যাচ্ছে সে আজ খুবই চাপের মধ্যে ছিল। অপরাজিতার খুব মায়া লাগলো৷ সে আর রাগ দেখাতে চাইলো। চাইলো না বলতে সে আসলে রাগ দেখাতে পারলো না। এই গম্ভীর পুরুষের সামান্য কষ্ট তাকে কষ্ট দেয়।
নিরবতা ভেঙে অপরাজিতা আস্তে করে সুধালো,
‘বাসায় গিয়েছেন? আপনাকে খুব ক্লান্ত শুনাচ্ছে। বাসায় পৌছে ঘুমান।’
ফায়াদ তার গম্ভীর পুরুষালি কন্ঠে নিচু স্বরে বলল,
‘হুম খুব ক্লান্ত। তার থেকেও ক্লান্ত লাগছে তোমাকে না দেখতে পেরে। তুমি কি একটু আসবে?’
অপরাজিতা বুঝার চেষ্টা করে বলল,
‘আসবো বলতে?’
‘আমি তোমার বাসার সামনে আছি। আসো।’
বলে ফোন রেখে দিল। অপরাজিতা অবাক হলো।বাসার নিচে মানে? এখন রাতে সে কি বলে বের হবে? বাবা বাসায়। যদি জানে তাহলে তো অন্যকিছু ভাববে। অপরাজিতা চায় না বাবা ফায়াদকে খারাপ ভাবুক।
অপরাজিতা মাথায় উড়না চাপিয়ে ড্রয়িং রুমে গেল। বাবা নেই সেখানে। তারমানে বাবা রুমে। মেয়েকে এমন উঁকিঝুঁকি মারতে দেখে রামিসা জিজ্ঞেস করলেন,
‘কোথায় যাচ্ছিস?’
অপরাজিতা তাড়াতাড়ি করে তার মা কে ইশারায় আস্তে করে কথা বলতে বলল।সে তার মা কে মিথ্যা বলে যেতে চাচ্ছে না। বলতেও লজ্জা পাচ্ছে তবুও বলল,
‘আম্মু উনি নিচে আসছে। একটু দেখা করে আসি?’
রামিসা ভ্রু কুচকে বললেন,
‘উনি কে?’
‘ফা-ফায়াদ’
ফায়াদের নাম ধরে কখনো সে ডাকে নি তাই একটু ইতস্ততবোধ করছিল।রামিসা তীক্ষ্ণ ভাবে বলল,
‘রাতের বেলা কিসের দেখা? এখন যাওয়া যাবে না।’
‘আম্মু প্লিজ! আমাকে বিশ্বাস করো না?’
রামিসা এবার স্বাভাবিক ভাবে বললেন,
‘বিশ্বাস করি বলেই এতো টা ছাড় পাচ্ছো নাহলে কোনো মেয়ে এসে সাহস পেতো না মায়ের কাছে এভাবে বয়ফ্রেন্ড এর কথা বলতে।’
অপরাজিতা মাথা নিচু করে ফেলল।রামিসা বললেন,
‘যাও। তাড়াতাড়ি আসবা। দেড়ি যেন না হয় বলে দিলাম।’
অপরাজিতা খুশি হয়ে বলল,
‘থ্যাংক ইউউউউ।উম্মাহ!’
মায়ের গালে টুকুস করে একটা চুমু খেয়ে দৌড় মারলো সে। রামিসা মেয়ের কান্ডে হেসে দিয়ে বললেন,
‘পাগল মেয়ে!’
অপরাজিতা গেটের বাহিরে গিয়ে দেখলো বাসার একটু সামনে কালো গাড়িটা পার্ক করা। উড়না মাথা ভালো ভাবে চাপিয়ে গাড়ির সামনে যেতেই দেখল গাড়ির সামনে ড্রাইভার দাঁড়িয়ে আছে।সে যেতেই ড্রাইভার তাকে পিছনের সিটের দরজা খুলে দিয়ে বলল,
‘আপামনি ভিতরে বসেন।আমি একটু পর আসছি।’
বলে সে চলে গেল অন্যদিকে। অপরাজিতা গাড়ির পিছনে বসতেই দেখলো ফায়াদ সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। তাকে দেখতে আসলেই ক্লান্ত লাগছে।ফায়াদের কাধে হাত রাখলো সে। ফায়াদ মাথা বাকিয়ে তাকে দেখে নিচু কন্ঠে বলল,
‘গাড়ির লাইটটা অফ করবে? চোখে লাগছে৷’
অপরাজিতা গাড়ির লাইটটা অফ করে দিল৷ সিটে বসতেই ফায়াদ তাকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো। পিঠে হাত রেখে জড়িয়ে নিল অপরাজিতাকে নিজের সাথে।কাধে মাথা গুজে দিল। অপরাজিতা কেপে উঠলো। এসব তার কাছে নতুন। এই স্পর্শ গুলো সে আগে কখনো অনুভব করে নি৷ শিরায় শিরায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন শিহরণ বইয়ে দেয়। অপরাজিতার উন্মুক্ত ঘাড়ে ফায়াদের গরম নিশ্বাস পড়ছে।যার দরুন অপরাজিতা কেপে উঠছে ক্ষণে ক্ষণে।
সে ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করলো,
‘আআপনি ঠিক আছেন?’
ফায়াদ কাধে মাথা রেখেই বলল,
‘ঠিক আছি। একটু জ্বর এসেছে তাই দুর্বল লাগছে।’
জ্বরের কথা শুনে অপরাজিতা অস্থির হয়ে উঠলো। পটর পটর আর নড়া চড়া শুরু করায় ফায়াদ তাকে হালকা করে ধমক দিয়ে বলল,
‘আহহা এমন করছো কেন?থাকো এভাবে। ভালো লাগছে আমার।’
স্থির হলো অপরাজিতা। তার কান্না পাচ্ছে। ফায়াদের পিঠে হাত রেখে ব্যাকুল হয়ে বলল,
‘বেশি খারাপ লাগছে?আমাদের বাসায় চলুন।’
ফায়াদ অপরাজিতাকে আরেকটু কাছে শক্ত করে ধরে বলল,
‘তুমি একটু থাকো তাহলেই হবে।’
অপরাজিতা ফায়াদের পিঠে হাত বুলিয়ে শুধু বলল,
‘হুম।’
কারন ফায়াদ এর বেশি কথা শুনবে না।ফায়াদ আবার বলল,
‘রাগ করেছো?’
‘না’
ফায়াদ অপরাজিতার ঘাড়ে চুমু খেল। একটা নয় পর পর দুটো চুমু খেল সে।তারপর আবারো কাধে মাথা দিয়ে বলল,
‘তোমাকে আমি শাসন করবো, ভালোওবাসবো৷ তুমি রাগ করবা না।’
অপরাজিতা তো ফায়াদের কান্ডে জমে গেছে। তার গলা শুকিয়ে গিয়েছে। ফায়াদের পিঠের শার্ট খামছে ধর কাপা কন্ঠে বলল,
‘আপনি–‘
এতোটুকু বলতেই ফায়াদ অপরাজিতার কাধ থেকে মাথা উঠিয়ে অপরাজিতা ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিল। বলল,
‘জ্বর আমাকে কাবু করে নি।কাবু তুমি করছো। হুশ হারাই নি এখনো। তবে হুশ হারাতে চাচ্ছি।তাই তোমার এখানে থাকা যাবে না।নাহয় হুশ হারিয়ে বেহুশের কিছু করে ফেলবো লাগছে। নাহ এখন আর তোমার এখানে থাকা যাবে না। বাসায় যাও এখন। ‘
এতোটুকু বলে সে অপরাজিতার কপালে অধর ছুয়ে গাড়ির গেটটা খুলে দিল।
অপরাজিতা বাধ্য মেয়ের মতো গাড়ি থেকে বের হলো।এখন বের না হলে ধমকিয়ে বের করতো তাকে৷ বেরিয়ে গাড়ির ভিতরে তাকিয়ে বলল,
‘আপনি তো একা। ‘
‘তুমি বাসায় যাও। ড্রাইভার এসে পড়বে। ‘
অপরাজিতা ফায়াদের দিকে তাকিয়ে আদেশের মতো করে বলল,
‘বাসায় গিয়ে খেয়ে মিডিসিন নিয়ে ঘুমাবেন।কালকে ছুটি নিবেন।ঠিক আছে?’
ফায়াদ বাচ্চাদের মতো করে বলল,
‘ইয়েস ম্যাম’
ফায়াদের বলার ভঙ্গিতে অপরাজিতা না হেসে পারলো। তারপর সে পা বাড়ালো বাসার দিকে। কিন্তু মনটা যেন গাড়িতেই পড়ে আছে। বাসার মধ্যে ঢুকে উকি দিয়ে দেখলো ড্রাইভার এসেছে কিনা! যখন দেখলো এসেছে, তারপর সে স্বস্থির নিশ্বাস ছেড়ে ঘরে গেল।
ঘরে প্রবেশ করতেই মায়ের সম্মুখীন হলো।
‘হলো দেখা’
‘হুম’
মেয়ের মনটা খারাপ বুঝতে পারলেন তিনি। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
‘কি হয়েছে? ঝগড়া করেছিস!’
অপরাজিতার চোখ টলমল করে উঠলো।
‘উনি অসুস্থ’
রামিসা চিন্তিত হয়ে বললেন,
‘সে কি? কি হলো?’
‘জ্বর আর সারাদিন হাসপাতালে অনেক কাজ ছিল আজ তাই খুন দুর্বল হয়ে গিয়েছে।’
‘ওহ ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করিস না।’
তারপর অপরাজিতাকে রুমে পাঠিয়ে দিলেন তিনি। অপরাজিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। তার ছোট্ট মেয়েটা এখন ভালোওবাসতে জানে।মেয়েটা বড় বুঝি হয়েই গেল! বাবার ছোট্ট পুতুলটার এখন মন পুড়ে অন্য কারো জন্য। মেয়েটা পরের বাড়ি চলে যাবে ভাবলেই চোখের কোণ ভিজে আসে তার।
—————-
এয়ারপোর্টে ওয়েটিং এ বসে আছে ফারাজ আর নীতি। অ্যানাউন্সমেন্ট হলে ফ্লাইটে উঠবে। ফারাজ মোবাইল চালাচ্ছে। নীতি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে। হঠাৎ তার মাথায় আসলো একটা কথা। ফারাজের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য গলা খাকারি দিল সে। ফারাজ ভ্রু কুচকে তাকালো।
নীতি বলল,
‘আমি যে জিন্স টপস পড়ি এগুলো কি বাংলাদেশে পড়তে পারবো?’
ফারাজ আবারো মোবাইলে মমনোযোগ দিয়ে বলল,
‘হ্যা পারবেন।’
নীতি খুশি হয়ে গেল। কারন সে এগুলোতেই অভ্যস্ত। তারপর কিছু মুহুর্ত পর ফারাজ মোবাইল পকেটে রেখে বলল,
‘পড়তে পারবেন কিন্তু পড়বেন না।তাই আমরা বাংলাদেশ গিয়ে রেস্ট আস্তে ধীরে শপিং মলে যাবো।’
‘কেন?’
ফারাজ নীতির দিকে ঘুরে বলল,
‘এখানে মেয়েদের এগুলো নরমাল কারন সবার ড্রেসাপ এরকম। কিন্তু বাংলাদেশে এগুল পরে কিছুদূর হাটলেই শুনতে পাবেন কেউ বলছে চুমকি চলেছে একা পথে…’
নীতি কপাল চাপড়ে বলল,
‘স্যাড লাইফ!’
ফারাজ নীতির মাথায় হালকা করে বারি দিয়ে বলল,
‘আপনার কম্ফোর্ট এর মধ্যে কিছু একটা কিনে নিবেন।আর আপনি আজ শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমাকে কিসব গলা খাকারি দিয়ে তারপর কেশে ডাকছেন। এসব কি?’
‘আপনি তো বলছেন অফিসের বাহিরে স্যার ডাকতে না। ‘
ফারাজ পরাজয় স্বীকার করে বলল,
‘ওকে ম্যাডাম! স্যারই ডাকেন।’
এরই মধ্যে অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে গেল। ফারাজ উঠে দাড়ালো। নীতি উঠে দাড়াতে গিয়েই পিছে কিছুর সাথে আটকে তার পরণের লং শার্ট টা পিঠ বরাবর ছিড়ে গেল। নীতি চোখ বড় বড় করে দাঁড়িয়ে গেল। ছেড়ার আওয়াজ শুনে ফারাজ পিছে তাকালো।নীতি আবারো বসে পড়লো।ফারাজ নীতির দিকে তাকাতেই নীতি কাদোকাদো মুখ করে তাকালো।তাদের কাছে ব্যাগও নেই এই মুহুর্তে। ব্যাগ এর কাছে যেতে হলে নীতিকে হাটতে হবে কিছুদূর। এভাবে তো সম্ভব না।
ফারাজ নীতিকে তার পরণের উপরের ব্লেজার খুলে দিতে দিতে বলল,
‘আপনি কি যে করেন!’
নীতি জড়োসড়ো হয়ে আছে। ব্লেজার পড়ে ফ্লাইটে উঠার জন্য হাটা শুরু করলো দুজন। ফারাজ আগে আগে হাটছে। নীতি তার পিছে পিছে। হাটতে হাটতে নীতি খুব সুন্দর একটা সুগন্ধ পেল খুব কাছ থেকে। উৎস খুজতে গিয়ে বুঝলো ব্লেজার থেকে আসছে। দারুন মন মাতানো সুগন্ধ। নীতি একবার ফারাজের দিকে তাকালো।ফারাজ সামনের দিকে মনোযোগী। নীতি ব্লেজার টা ভালোভাবে আকড়ে ধরে অনুভব করছে সেই সুগন্ধ।মিষ্টি এক অনুভুতি কাজ করছে তার মধ্যে। কিসের জন্য এই অনুভূতি?
(চলবে)