#ফাগুন_ছোঁয়া
#অন্তিম_পর্ব
#লেখিকা_সারা মেহেক
আদ্রিশকে দেখে মিমের পা থরথর করে কাঁপছে। দাঁড়িয়ে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। গতকাল রাতে সুস্থ স্বাভাবিক থাকা মানুষটি আজ র” ক্তে মাখামাখি হয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে আছে এটা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে তার।
আদ্রিশ স্ট্রেচারে শুয়ে ব্যাথায় গোঙাচ্ছে। চোখ দুটো আধ বোজা। মিমকে এখনও দেখেনি সে। হয়তো মিমকে দেখলে এ অবস্থাতেও অস্থির হয়ে পড়তো সে!
এদিকে মিমের কানে চারপাশের হুলস্থূল আওয়াজ ভেসে আসছে। নার্সরা ছুটে আসছে স্ট্রেচারের দিকে৷ তার দু চোখ জলে ভিজে আসছে। অনুভব করছে তুমুল জোরে লাফানো হৃদপিণ্ডের কম্পন। তার যে এ মুহূর্তে ট্রিটমেন্ট দিতে হবে সেটাও সে এ ধাক্কায় বেমালুম ভুলে বসেছে। হঠাৎ এক নার্স এসে তার হাত ধরে ঝাঁকি দিলো। বললো,
” ডক্টর, পেশেন্টের অবস্থা ভালো না। ট্রিটমেন্ট শুরু করুন।”
মিম বাস্তবে ফিরে এলো। তার দু চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সে কোনোমতে নিজেকে ধাতস্থ করে নিয়েছে। পালস রেট মাপার জন্য আদ্রিশের স্ট্রেচারের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো সে। কম্পিত হাতে আদ্রিশের হাত ধরলো। অমনিই আদ্রিশ ব্যাথায় গুঙিয়ে উঠলো। তৎক্ষনাৎ ভয়ে সে হাত ছেড়ে ছিটকে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। ওদিকে নার্স তার এ কান্ড দেখে ভীত হলো। ভাবলো, ডাক্তারের এ কাজে যদি এই রোগী মারা যায় তাহলে সব দোষ তাদের সবার ঘাড়ে পড়বে। সে আর দেরি করলো না। অন্যান্য নার্সের সহযোগীতায় তুলো দিয়ে আদ্রিশের কপালের র” ক্ত মুছতে লাগলো। ওদিকে আদ্রিশকে এক্সিডেন্ট স্পট থেকে হসপিটাল অব্দি নিয়ে আসা এক লোক নাক সিটকে মিমকে বললো,
” কেমন ডক্টর আপনি! কিছু করছেন না কেনো? লোকটা ম” রে যাচ্ছে তো!”
মিমের কানে ‘ম রে যাচ্ছে’ শব্দটি বাড়ি খেলো। তার মস্তিষ্ক সোচ্চার হলো। সে দাঁতে দাঁত চেপে চোখের পানি মুছলো। দ্রুত নার্সের কাছ থেকে গ্লাভস পরে তুলো নিয়ে হাতের কা’ টা অংশ পরিষ্কার করতে লাগলো। তার কান্না এখনও থামছে না। বারংবার তার চোখজোড়া ভিজে আসছে।
আদ্রিশ বেশ কষ্টেসৃষ্টে দৃষ্টি মেললো। দৃষ্টি মেলে মিমকে সম্মুখে দেখে দুর্বল হাসলো। বিড়বিড় করে বললো,
” মিশমিশ! তুমি আমার ট্রিটমেন্ট করছো!”
এমনিতেই মিম নিজের কান্না সংযত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিলো। উপরন্তু আদ্রিশের দুর্বল কণ্ঠের কথাগুলো শুনে সে নিজেকে আর সংযত রাখতে পারলো না। অঝোরে কেঁদে দিলো সে। কিন্তু তবুও আদ্রিশের শরীরের কা” টা অংশের র” ক্ত পরিষ্কার করছে সে। আদ্রিশ তার এ কান্না দেখে নিস্তেজ হেসে বললো,
” এই মেয়ে, কান্না করছো কেনো! আমার কি কিছু হয়েছে? আমি একদম সুস্থ আছি দেখো!”
মিমের দৃষ্টির সম্মুখ নোনজলে ঝাপসা হয়ে আসছে। তবুও সে হাত চালাচ্ছে। এ পর্যায়ে সে নার্সকে একটা ধমক দিয়ে বললো,
” কি ব্যাপার! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন! ভিতর থেকে ডক্টর ওমরকে ডেকে আনা যাচ্ছে না? ”
মিমের ধমক শুনে একজন নার্স ইন্টার্ন ডক্টরকে ডাকতে ছুটে গেলো ভিতরের দিকে। অপর নার্স আদ্রিশের কপালের র’ ক্ত মুছছে। আরেক নার্স পায়ের র” ক্ত মুছছে। ইমার্জেন্সি রুমে সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কারোর দিকে তাকানোর বা সাহায্য করার প্রয়োজন মনে করছে না। প্রত্যেকে নিজেদের রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত। তন্মধ্যে কয়েকজন উৎসক লোক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখছে আর নিজেদের মধ্যে কিছু একটা আলোচনা করছে।
আদ্রিশের এখন ভীষণ দুর্বল লাগছে। আর চোখজোড়া মেলে রাখতে পারছে না সে। ওদিকে মিম অঝোরে কান্না করেই যাচ্ছে। তার মনে হচ্ছে এই তুলো কা’ টা জায়গায় লাগলেই আদ্রিশ ভীষণ ব্যাথা পাবে। এই প্রিয় মানুষটিকে কি করে সে ব্যাথা দিতে পারে! কিন্তু এখন এই ব্যাথার ব্যাপারটি মস্তিষ্কে আনলেই সে ব্যর্থ। আদ্রিশের চিকিৎসা করতে পারবে না সে। জ’ খ’ ম সারিয়ে তুলতে পারবে না।
ইন্টার্ন রুম থেকে ডক্টর ওমর ছুটে এসেছে ততক্ষণে। আদ্রিশকে এ অবস্থায় দেখে সে আঁতকে উঠলো। এতক্ষণ পর ওমরকে দেখে মিম কাঁদতে কাঁদতে শক্ত কণ্ঠে বললো,
” এদিকে যে একটা এ’ ক্সি’ ডে’ ন্টে’ র পেশেন্ট এসেছে, সেটা শুনেছিস? কোথায় ছিলি তুই?”
ডক্টর ওমর আদ্রিশকে দেখে আতঙ্কিত স্বরে বললো,
” আদ্রিশ ভাই যে! কিভাবে এ’ ক্সি’ ডে’ ন্ট করলো? কখন করলো? ”
” এখন এসব উত্তর দেওয়ার সময় নেই ওমর। তুই কিছু কর। আমি আর পারছি না।”
বলেই মিমের হাত থেকে তুলো পরে গেলো। পা জোড়া নিস্তেজ হয়ে এলো। এই বুঝি এখনই পড়ে যাবে সে। একজন নার্স এসে তাকে ধরলো। জিজ্ঞেস করলো,
” আপনার হাজবেন্ড, ডক্টর?”
মিম মৃদু মাথা দুলিয়ে হ্যাঁসূচক জবাব দিলো। ডক্টর ওমর ততক্ষণে আদ্রিশকে নিয়ে ইমার্জেন্সি রুমে গেলো। এতক্ষণ সেখানে নরমাল ডেলিভারির এক পেশেন্ট ছিলো।
ডক্টর ওমর আদ্রিশকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলো। সাথে তার হাত, পায়ের এক্সরে করালো। পায়ে ফিবুলা বোন্সের ফ্র্যাকচার ও হাতে রিস্ট জয়েন্টে ইনজুরি হয়েছে। মাথায় কোনো ইন্টার্নাল ইনজুরি হয়েছে কি না তা দেখার জন্য সিটিস্ক্যান করলো। পেটে করলো আল্ট্রাসোনোগ্রাফি। সব রিপোর্ট নরমাল এলো।
এক্সটারনাল ইনজুরির জন্য আদ্রিশের হাত, পা, মাথায় ব্যান্ডেজ করিয়ে ওষুধ খাইয়ে ঘুমিয়ে রাখা হলো। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, সে ঘুম থেকে জেগে উঠলেই প্লাস্টার করার জন্য অর্থোপেডিক্স ডিপার্টমেন্টে পাঠানো হবে।
আদ্রিশের এহেন অবস্থার কথা শুনে জরুরি ভিত্তিতে তার ও মিমের পুরো পরিবার হসপিটালে চলে এলো। মিম ডিউটি বাদ রেখে তার পাশেই বসে থাকতে চাইলো। কিন্তু আদ্রিশের মা তাকে সাহস দিয়ে ডিউটি করতে পাঠালো। যদিও মিম ডিউটির পুরো সময়টুকু আদ্রিশকে নিয়ে চিন্তা করে গিয়েছে। তার চোখের সামনে থেকে এখনও র’ ক্তে মাখামাখি আদ্রিশের প্রতিচ্ছবি যাচ্ছে না।
দু ঘণ্টা পর আদ্রিশের জ্ঞান ফিরলে তাকে অর্থোপেডিক্স ডিপার্টমেন্টে ট্রান্সফার করা হলো। ডান হাত ও পা প্লাস্টার করিয়ে তিনদিনের জন্য হসপিটালে এডমিট করিয়ে রাখা হলো।
রাতে মিম ডিউটি শেষ করে এসে কেবিনে আদ্রিশের পাশে বসলো। আদ্রিশ তখন চোখ বন্ধ করে ছিলো। তার পাশে কেউ বসেছে টের পেতেই সে চোখ মেললো। মিমকে দেখে ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। কিন্তু তার এ হাসি দেখে মিম আচমকাই কাঁদতে শুরু করলো। কাঁদতে কাঁদতে তাকে জড়িয়ে ধরতেই সে ব্যাথায় ‘আহ’ শব্দ করলো। তৎক্ষনাৎ ভয়ে মিম তাকে ছেড়ে দিলো। বললো,
” সরি, সরি। খেয়াল করিনি আমি।
অনেক ব্যাথা তাইনা?”
আদ্রিশ মৃদু হেসে বললো,
” ব্যাথা তো আছেই। সমস্যা নেই, আমাকে জড়িয়ে ধরতে পারো। তবে হালকা করে। ”
” না থাক। আমি আপনার পাশেই বসে আছি।”
বলেই সে আদ্রিশের মুখখানার দিকে নিষ্পলক চেয়ে রইলো। তার এ চাহনি দেখে আদ্রিশ জিজ্ঞেস করলো,
” কি হলো? কি চিন্তা করছো?”
মিম চোখের পানি মুছে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
” আপনাকে তখন ঐ অবস্থায় দেখে আমার কি হয়েছিলো আপনাকে বুঝাতে পারবো না। বারবার মনে হচ্ছিলো, এই বুঝি আপনাকে হারিয়ে ফেলবো আমি। মনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হয়েছিলো, চোখের পলক ফেললেই যদি আপনাকে আর না দেখতে পাই! অনেক খারাপ খারাপ চিন্তা আসছিলো মাথায়। ”
” ওসব চিন্তা এখন মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও। আর এই দেখো, আমি তোমার সামনে সুস্থ সবল শুয়ে আছি!”
” কিসের সুস্থ সবল! হাত পা ভেঙে শুয়ে আছেন। চল্লিশ দিন এমন হাত পা নিয়েই চলতে হবে আপনাকে।
আর বলছেন, ওসব ভুলে যেতে! বিশ্বাস করুন,ঐ সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে থাকবে। নিজ হাতে আপনার শরীরের র’ ক্ত মুছেছিলাম আমি। সেসব কি করে ভুলবো! আপনি জানেন না, আপনার ঐ কা’ টা জায়গাগুলোয় তুলো দিতেও কি কষ্ট হচ্ছিলো আমার!”
আদ্রিশ মৃদু হাসলো। বললো,
” তুমি কিন্তু অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছো মিশমিশ। আমার এমন অবস্থাতেও শক্ত হাতে দাঁড়িয়ে কাজ করেছো তুমি। এমন কঠিন পরিস্থিতি তুমি সামলাতে শিখে গিয়েছো মানে ভবিষ্যতে আরো কঠিন পরিস্থিতি নিজ হাতে সামাল দিতে পারবে তুমি। এতে সন্দেহ নেই। ”
” এসব কথা বাদ দিন আপনি। এখন একটু ঘুমান। আমি বাসায় গিয়ে দেখি আম্মা কিছু রান্না করেছে কি না। নাহলে আমাকে গিয়ে রান্না করতে হবে। ”
” আচ্ছা যাও। আর রাতের আসার দরকার নেই। আব্বাকে বলেছি, আব্বা থাকবে কেবিনে। তোমার আবার সকালে ডিউটি আছে।”
” দেখি, পারলে আমিই থাকবো।”
” এমন করতে যেও না। এমনিতেই আমি রোগী মানুষ। আমার দেখভাল করায় আবার তুমিও না রোগী হয়ে যাও!”
” সে দেখা যাবে। আপনি এখন ঘুমান। আমি লাইট অফ করে দিয়ে যাচ্ছি।”
বলেই মিম আদ্রিশের কপালে আলতো ভালোবাসার পরশ দিলো। আদ্রিশ তৎক্ষনাৎ আবদার করলো,
” এবার এই গালে একটু ছোঁয়া দাও।”
মিম আদ্রিশের আবদার রাখলো। আদ্রিশ পুনরায় বললো,
” এবার ঐ গালে একটু দাও।”
মিম সে আবদারও রাখলো। মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো,
“হয়েছে?”
আদ্রিশ বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে বললো,
“উঁহু এখনও হয়নি।”
বলেই সে বাম হাতের তর্জনি আঙুল নিজের ঠোঁটের উপর রেখে বললো,
” এইখানে দেওয়া বাকি এখনও।”
মিম ভ্রু কুঁচকে ভেঙচি কেটে বললো,
” ছেলের আবদার তো দেখো! থাকতে দিলে বসতে চায়, বসতে দিলে শুয়ে পড়তে চায়, এমন অবস্থা।”
আদ্রিশ এবার বায়না ধরলো। বললো,
” আহহা, রোগী মানুষ আমি। রোগীর সব আবদার রাখতে হয়। জানো না?”
মিম পুনরায় ভেঙচি কেটে বললো,
“এ্যাহ,মামা বাড়ির আবদার নাকি!”
আদ্রিশ চওড়া হাসি দিয়ে বললো,
” উহুঁ, শ্বশুরবাড়ির আবদার।”
বলেই সে বাম হাত দিয়ে মিমের মাথা এগিয়ে নিজের কাছে আনলো। অতঃপর সামান্য মাথা তুলে মিমের অধরে ছুঁয়ে দিলো। অমনিই মিম দ্রুত আদ্রিশকে ছেড়ে কেবিনের লাইট বন্ধ করে দরজা খুললো। পিছে ফিরে লাজুক হাসি দিয়ে বললো,
” আপনার এই বদ অভ্যাস কি কখনও যাবে ডাক্তার সাহেব?”
আদ্রিশ আঁধারে তৃপ্তির হাসি দিয়ে বললো,
” নো, নেভার। আমার এ বাজে স্বভাব কোনোদিনও যাবে না বউপ্রেমিকা! ”
মিম প্রত্যুত্তর জানালো না। দরজা লাগিয়ে চলে এলো কেবিন থেকে।
————–
আর দশদিন বাদে আদ্রিশের হাত ও পায়ের প্লাস্টার খোলা হবে। আদ্রিশ এখন পুরোপুরি সুস্থ। ক’দিন পূর্বেও তার শরীরের কিছু কিছু জায়গায় সামান্য ব্যাথা ছিলো। কিন্তু এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ। শুধু প্লাস্টার খোলা বাকি। আজ রাতের ডিউটি অফ থাকায় মিম বাসায় আছে। খাটের উপর বসে বসে মার্কার দিয়ে সে আদ্রিশের পায়ের প্লাস্টারে নানারকম জিনিস আঁকছে। নানা ধরণের কোটস লিখছে।
পায়ের প্লাস্টার সম্পূর্ণ ভরে গেলে সে এগিয়ে এসে খাটে হেলান দিলো। আদ্রিশের হাতটা নিজের কোলের উপর রেখে লিখলো,
” সুস্থ হয়ে আমাকে নদীর পাড়ে ঘুরতে নিয়ে যাবেন।
সুস্থ হয়ে আমাকে নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দিবেন।
আমার সব আবদার কিন্তু রাখতে হবে ডাক্তার সাহেব।
আপনি ভীষণ রোমান্টিক একজন প্রেমিক।
সারাজীবন এমনটাই থাকবেন।”
এই লিখেই সে আদ্রিশের পানে চাইলো। নরম সুরে শুধালো,
” এই যে আমার, রোমান্টিক ডক্টর সাহেব, একটা প্রশ্ন করি আপনাকে?”
আদ্রিশ খানিক হেসে বললো,
” হ্যাঁ করো।”
“আমি ভীষণ অপ্রেমিক তাইনা? সত্যি বলবেন কিন্তু! ”
আদ্রিশ খানিকটা ভাবার ভান করে বললো,
” হুম।”
মিমের মুখটা তখন ছোট হয়ে এলো যেনো। তবুও সে অতি আগ্রহের সহিত প্রশ্ন করলো,
” তাহলে এই অপ্রেমিক মেয়ের প্রেমে পড়লেন কি করে?”
আদ্রিশ তৎক্ষনাৎ জবাব দিলো না। বাম দিয়ে মিমকে আগলে নিয়ে ছোট্ট নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো,
“জানি না। কিন্তু এই ভীষণ অপ্রেমিক মেয়েকেই বড্ড ভালোবাসি আমি। কেমন আর কতটুকু ভালোবাসি তা জানি না। কিন্তু অবাধ ভালোবাসি এই অপ্রেমিক মেয়েটাকে। ”
বলেই সে মিমের কানের নিকট মুখ এগিয়ে নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
” ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি তোমাকে মিশমিশ। আমার ভীষণ সাধের বউ, সাধের প্রেমিকা, আমার বউপ্রেমিকা। ধন্যবাদ আমার জীবনে আসার জন্য। ধন্যবাদ আমার জীবনে ভালোবাসার ছোঁয়া দেওয়ার জন্য।”
মিম লজ্জায় মুচকি হাসলো। উঠে গিয়ে আদ্রিশকে জড়িয়ে ধরলো। তার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
” আমিও আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি ডক্টর সাহেব। ধন্যবাদ আমার জীবনে এসে আমার ভরসার পাত্র হওয়ার জন্য, আমাকে এতোটা ভালোবাসার জন্য, আমাকে এভাবে আগলে রাখার জন্য!”
আদ্রিশ মুচকি হেসে মিমের গালে অধর পরশ দিয়ে তাকে জাপটে ধরলো। বললো,
” আমাদের জীবনের এ ভালোবাসার ছোঁয়া বসন্তের সেই উষ্ণ শীতল নরম ছোঁয়ার মতো সুন্দর। তাই এর নাম দিলাম, ‘ফাগুন ছোঁয়া’। আমি একটা স্মৃতির ডায়েরি লিখতে বসবো। যার শিরোনাম পাতায় বড় বড় অক্ষরে লিখা থাকবে ‘ফাগুন ছোঁয়া’। আদ্রিশ ও মিমের প্রেমের ছোঁয়া, ফাগুন ছোঁয়া।”
®সারা মেহেক
❤️সমাপ্ত❤️