#বছর_দুয়েক_পর
#পর্ব_৩
#সারিকা_হোসাইন
“আপনি আমাকে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে একা ফেলে কিভাবে চলে গেলেন ভিয়ান?একবারো ও কি আমার কথা মনে পড়লো না আপনার?দেখুন আপনাকে হারিয়ে কতোটা বিধ্বস্ত হয়েছি আমি!এভাবে কি বেঁচে থাকা যায় বলুনতো?আমাকেও সঙ্গে নিয়ে গেলে কি খুব ক্ষতি হতো?
দেয়ালে টানানো বিশাল ফটো ফ্রেমে মাথা হেলিয়ে কপাল ঠেকিয়ে কান্না জড়িত সিক্ত কন্ঠে কথা গুলো বলে যাচ্ছে তাথৈ।প্রতিদিন সে এতো এতো অভিযোগ অনুযোগ জানায় ভিয়ানের কাছে অথচ হৃদয়হীন মানবের ন্যায় চুপ করে তাথৈ এর পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ভিয়ান।তাথৈ খুব করে চায় স্বপ্নে হলেও ভিয়ান যেনো এসে তার মাথায় মমতার হাত বুলায়।অথচ নিষ্ঠুর মানব তাতেও নারাজ।
“দেখুন ভাইয়া আজো আমাকে মেরেছে।শুধু আজ নয় প্রায় ই মারে।কিন্তু এগুলোতে আমি না একটুও ব্যাথা পাই না জানেন?আর ব্যথা পেলেই বা কি?ব্যথার স্থানে আদর বুলানোর জন্য আপনি ই তো নেই!শরীরটাও হয়তো বুঝে গেছে তাকে দেখভাল করবার কেউ নেই।এজন্যই তো তা ধীরে ধীরে বোধ হীন হয়ে যাচ্ছে।ব্যাপার টা খুব মজার তাই না?
ভিয়ান এবারও নিশ্চুপ।ছবি কি কখনো কথা বলে ?বলে না তো।তাহলে ভিয়ানের ছবি কিরূপে কথা বলবে?
ছোট ছোট নরম দুই হাতের করপুটে চোখের গড়িয়ে পড়া জল মুছে ভিয়ানের লালচে ঠোঁটে হাত বুলায় তাথৈ।এরপর কান্না জড়িত কন্ঠে অস্ফুট স্বরে বলে উঠে
“আপনাকে আমি খুব ভালোবাসি ভিয়ান নাওয়াফ।সমগ্র পৃথিবী আমার বিপক্ষে গেলেও আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে গ্রহন করা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।এই দেহ এই মন সব কিছুর একমাত্র হকদার আপনি।যেই মুখে আপনার নাম জপে জপে পাগল হয়েছি সেই মুখে অন্য কারো নামে কিভাবে কবুল বলবো?ওরা কেনো আমাকে বুঝতে চায়না বলুনতো!
আর কোনো কথা বলতে পারে না তাথৈ।ক্রমশ শরীর ভারী হয়ে চোখ বুজে আসছে।গলার কাছে বুকে জমানো কথা গুলো দলা পাকিয়ে আটকে আসছে।কান্নার দমকে বুকে ভীষন ব্যথার আনাগোনা।বিবর্ণ এক বিভীষিকাময় জীবন।
হঠাৎই অজত্নে পরে থাকা মোবাইল খানা বেসুরে বেজে উঠলো।চোখের জল মুছে ভিভিয়ানকে বাই জানিয়ে ফোনের কাছে এসে দাড়ালো তাথৈ।স্ক্রিনে মৌটুসীর নম্বর আর নাম জ্বলজ্বল করছে।
প্রথম রিং বেজে কেটে গেলো।ইচ্ছে করেই তাথৈ ফোন তুললো না।কিন্তু পুনরায় সেই ফোন আবার বেজে উঠলো।এবার না চাইতেও কিছুটা বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করলো তাথৈ এরপর নিষ্প্রাণ কন্ঠে শুধালো
“কেনো ফোন করেছিস?
তাথৈ এর প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো মৌটুসী।এরপর সামান্য ভনিতা করে বলে উঠলো
“ফাহাদ স্যার পরশু দিন নতুন পড়ানো চ্যাপ্টার এর উপর এক্সাম নিবেন।তুই এই কদিন একদম উনার ক্লাসে এটেন্ড করিসনি।তুই তো জানিস উনি কতোটা কঠোর।এছাড়া সামনে ফাইনাল এক্সাম আছে।একটু এদিক সেদিক হলেই আজেবাজে রিপোর্ট লিখে উনি।তাই বলছিলাম নোটস গুলো যদি নিতি…..
কথাগুলো বলে উত্তরের আশায় ফোনের এপাশে চুপ করে রইলো মৌটুসী।
তাথৈ আর মৌটুসী একই ভার্সিটিতে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স করছে।দুজনেই খুবই তুখোড় স্টুডেন্ট।কিন্তু ইদানিং তাথৈ পড়াশোনাতে খুব একটা ভালো করতে পারছে না।যার জীবনের গতিরই কোনো ভিত্তি নেই তার আবার পড়াশোনা কিসের?তবুও জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদে ওই একটু আধটু প্রয়োজন পরে।নয়তো কবেই তাথৈ এসব থেকে মুক্তি নিয়ে গৃহ বন্দি করতো নিজেকে।
লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাথৈ শুধালো
“কোথায় আসতে হবে?
এবার যেনো মৌটুসীর মুখে হাসি ফুটলো ।সেই হাসির রেখা ধরে রেখেই তুষ্ট কন্ঠে বলে উঠলো
“যেই ক্যাফেটেরিয়ার কোল্ড কফি তোর অনেক পছন্দ”
আর কথা বাড়ালো না তাথৈ।অল্প করে নিভু স্বরে জানালো
“ঠিক আছে আসছি।
**********
হোটেলের ধবধবে সাদা নরম বিছানায় উপুড় হয়ে বালিশে মুখ গুজে শুয়ে আছে “ফক্স” নামের শক্তপোক্ত দেহের ছেলেটি।নামটা অদ্ভুত হলেও এই নামেই বিদেশী বিজনেস ম্যাগনেটদের কাছে পরিচিত সে।হয়তো অত্যাধিক চতুর আর উইল্ড এজন্যই নামটি তাকে দেয়া হয়েছে এবং বিশেষ ভাবে নামটি তাকে সুট করে গেছে।বিছানায় এলোমেলো হয়ে পরে থাকা অত্যাধিক লম্বা চওড়া শরীরটা যে কারো নজর কাড়তে সক্ষম।নিয়মিত জিম করার কারনে শেপ বাই শেপ পেশী গুলো দৃষ্টিনন্দন আর স্পষ্ট।গায়ে থাকা হাত বিহীন ঢিলেঢালা ব্ল্যাক স্যান্ডো যুবকের বাহ্যিক গড়ন খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।এই গরমের অসহনীয় ক্লান্তিতে এসি ছেড়ে আরামে গভীর নিদ্রা যাপন করছে ছেলেটি।
আকস্মিক ফোনের ভাইব্রেট এ যুবকের ঘুমের বোধহয় ব্যাঘাত হলো।ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু সময় বিলম্ব করে চোখে মুখে একরাশ বিরক্তি ফুটিয়ে ফোনের স্ক্রিনে ঝাপসা নজর বুলালো।
সেখানে লিসা নামটি স্পষ্ট।নামটি দেখেই যুবকের মাথায় আগুন ধরে গেলো।শোয়া ছেড়ে ধপ করে উঠে বসে ফোনের দিকে ক্রুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।এদিকে হাতের মধ্যেই ভাইব্রেট হয়ে কেটে গেলো কল খানা।ফোনটাকে দূরে ছুড়ে ফেলে আকর্ষণীয় রেকটেঙ্গলার শেপের মুখশ্রী খানা হাতের আজলায় ঢেকে ফস করে শ্বাস ছাড়লো যুবক।এরপর নিজের ঝলমলে শর্ট ওলফ কাটিং চুলগুলো খামচে ধরে দাঁতে দাঁত পিষে গর্জে উঠলো
“ফা*কিং ব্লাডি আমেরিকান বিচ কবে বুঝবি আমি তোর প্রতি ইন্টারেস্টেড নই!
বার বার ইগনোর করার পরও জ্বালিয়ে মারছে।পারলে যেনো শুয়ে যায় এমন অবস্থা।সাদা চামড়ার মেয়ে গুলো শালীন কম বেহায়া বেশি।শেইমলেস।
মুখে আরো বিশ্ৰী বাজে কথা এলো কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে সব গিলে খেলো যুবক।পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় রাগে মাথার মগজ চিরবিড়িয়ে উঠলো সহসাই।মাইগ্রেনের ব্যাথাটাও চাড়া দিয়ে উঠলো মুহূর্তেই।বিতৃষ্ণায় মুখ তেতো হয়ে উঠলো।বার কয়েক ফাঁকা ঢোক গিলে শুকিয়ে আসা গলাটা সামান্য ভিজিয়ে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো
“ফিরে যাবার আগে কোথাও একাকী সময় কাটালে মন্দ হয় না।ওখানে ফিরে আবার সেই এক ঘেয়ে ব্যস্ততা।দম ফেলার ফুসরত টুকুও যেনো নেই।
যেই ভাবনা সেই কাজ।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো সে।এই মুহূর্তে একটা আইসড আমেরিকানো খুব প্রয়োজন”।।
*********
দুপুরের তেজী সূর্যটা বেশ মিইয়ে এসেছে।সারা দিনের ভ্যাপসা গরমটাও নেই।অল্প অল্প শিরশিরে হাওয়া বইছে ধরণীর কোল ঘেঁষে।সারাদিনের কা কা করে গলা ফা/টা/নো দাঁড় কাক গুলো এবার একটু স্বস্তি নিচ্ছে।
গায়ে একটা সুতি থ্রিপিস জড়িয়ে নিজের হ্যান্ড ব্যাগ আর মোবাইল নিয়ে কক্ষ ত্যাগ করলো তাথৈ।নিজেকে সামান্য সজ্জিত করবার কোনো প্রয়াস ও করলো না সে।সূচনার পূর্বেই যার ফুলের ন্যায় জীবন খানা বেরঙ হয়ে গিয়েছে তার আবার কিসের সাজসজ্জা?ভেতরে দগদগে ক্ষ/ত রেখে উপরে ভালো থাকার প্রলেপ লাগালেই বুঝি ভালো থাকা যায়?যে ভালো রাখবে, সৌন্দর্যের প্রশংসা করবে সেই তো বেঁচে নেই।শুধু শুধু অন্যের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়ে কি লাভ?
“কোথাও যাচ্ছিস বাবা?
উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে ড্রয়িং রুমের সোফায় হেলান দিয়ে কথাটি শুধালেন মিসেস মেহেরিন।
“হ্যা আম্মু,মৌটুসী কিছু নোটস দেবে।আগামী পরশু নাকি সি
টি আছে আর তাছাড়া ফাহাদ স্যার একটু অন্য ধরনের।একটু এদিক সেদিক হলেই রিপোর্ট কার্ডে উল্টো পাল্টা মন্তব্য করেন।তাই নোটস গুলো আনতে যাচ্ছি।
নিষ্প্রাণ ধীর কন্ঠে কথা গুলো বলে মৌন দাঁড়িয়ে রইলো তাথৈ।
মেহেরিন জানেন তাথৈ অকারণে বাইরে যাচ্ছে না।তবুও তিনি চান মেয়ে বাড়ির বাইরে বাইরে ঘুরুক।ঘরের বদ্ধ কোণে বসে বসে গুমরে ম/রা/র চাইতে একটু বাইরের আলো বাতাস গায়ে মাখুক।তবুও যদি মেয়েটা একটু ভালো থাকে!
কিন্তু তাথৈ নারাজ এসবে।
“আচ্ছা মা আমি গেলাম।
“যাও বাবা যতক্ষন ভালো লাগে ঘুরে এসো যাও”
********
ঢাকার আকাশে বিকেল গড়িয়ে সন্ধের আগমন হয়ে গিয়েছে।সারা দিনের ব্যস্ত নগরী যেনো আরও ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই চারপাশ রঙিন আলোয় ভরে উঠেছে।দিনের সাধারণ সৌন্দর্য যেনো রাতে আরো হাজারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
ক্যাফেটেরিয়ার চেয়ারে হেলান দিয়ে কফি জার সামনে নিয়ে বসে আছে তাথৈ।তাথৈ’র সামনে বরাবর মৌটুসী বসে বসে কফির স্ট্র তে অল্প চুমুক দিচ্ছে আর নোটস গুলোর কোথায় কোন প্রবলেম আছে তা বিজ্ঞের ন্যায় তাথৈ কে বুঝিয়ে দিচ্ছে।
“আই হোপ অল্প বুঝিয়ে দিলেই তুই বুঝবি।যদিও এক রাতে এতো বড় চ্যাপ্টার কমপ্লিট করা সম্ভব নয়।তবে তুই চিন্তা করিস না আমি ঠিক কাভার করে নেবো তোকে।
মোটুসীর কথায় শুকনো হাসলো তাথৈ।
মৌটুসী আর অর্ক না থাকলে তাথৈ হয়তো এতদিন সার্ভাইভ ই করতে পারতো না।মানুষ দুটির চূড়ান্ত ভালোবাসা আর ভরসা যুক্ত হাত তাথৈ কে এই পর্যন্ত বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছে।বাপ আর ভাই তো কবেই হাত ছেড়েছে।শুধু মা আর বন্ধুরা সহানুভূতি দেখিয়েছে।তাথৈকে বুঝতে চেষ্টা করেছে।
“আচ্ছা আমি কি সত্যিই সাইফ আজমীর সন্তান?এরিক কি আমার মায়ের পেটের ভাই?তবে তারা আমি প্রতি এতটা নিষ্ঠুর কেনো?
“কি রে কি ভাবছিস এতো?
মৌটুসীর ডাকে ধ্যান ভাঙলো তাথৈ এর।নিজেকে ধাতস্থ করে তাথৈ বলে উঠলো
“তোকে অনেক থ্যাঙ্কস মোটুসী।তুই না থাকলে আমার স্টাডি কমপ্লিট করা সম্ভব হতো না।তুই আমার জীবনে বিশেষ কেউ।সৃষ্টি কর্তা আমার থেকে মূল্যবান সম্পদটা ঠিকই কেড়ে নিয়েছে কিন্তু বিনিময়ে তোকে আর অর্ক কে দিয়ে গেছে”
অর্কের কথা মনে পড়তেই মৌটুসী দ্রুত নিজের ফোন থেকে অর্কের নম্বর ডায়াল করলো।
“কিরে আসবি না নাকি?তাথৈ কি সারা রাত এখানে বসে থাকবে তোর জন্য?
“আরে এসে গেছি আর দুই মিনিট।
“তাড়াতাড়ি আয় বুদ্ধু”
মৌটুসী লাইন কেটে দিয়ে কিছুক্ষণ উশখুশ করে শুধায়
“সামার ভ্যাকেশনে যাবি?অনেক দিন কোথাও যাওয়া হচ্ছে না এছাড়া বাড়িতে বসে থেকেও বোর হচ্ছি।চল কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
এরই মাঝে হন্তদন্ত হয়ে অর্ক ক্যাফেটেরিয়ার ভেতর প্রবেশ করে দ্রুত পা চালিয়ে মৌটুসীর পাশে এসে ধপ করে বসে গেলো।বসেই মৌটুসীর কফি জার থেকে ঢকঢক করে কোল্ড কফি খেতে লাগলো।মৌটুসী কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্ক বলে উঠলো
“চিল্লাস না একটা খেয়েছি দুটো কিনে দেবো।বাইরে প্রচন্ড গরম।গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে।কতো দূর থেকে তোর ডাকে এসেছি জানিস?বাপরে…..
কথা বলতে বলতে হঠাৎই অর্কের নজর গেলো তাথৈ এর গালের দিকে।ফর্সা মলিন গালটি তে চারটা আঙুলের ছাপ স্পষ্ট সেই সাথে দুটো আঙুলের জায়গায় কালশিটে দাগ পরা।দেখে মনে হচ্ছে উপরের পাতলা চামড়াটা উঠে গেছে।
চোখে মুখে কাতরতা ফুটিয়ে অর্ক আহত স্বরে জানতে চাইলো
“এই তাথৈ তোর গালে এটা চড়ের দাগ না?কে মেরেছে তোকে এভাবে?
অর্কের প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো তাথৈ।কাঁধে ছড়ানো চুল গুলো দিয়ে কোনো মতে গাল ঢেকে বলে উঠলো
“ও ও কিছুনা।এমনি পরে গিয়ে একটু লেগেছে আরকি”..
তাথৈ এর পানে সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে মৌটুসী বলে উঠলো
“ভাইয়া তোকে আবার মে/রে/ছে?সে কি আদৌ তোর মায়ের পেটের ভাই সত্যি করে বলতো?
“লাস্ট সেমিস্টারের আগেও না উনি তোর হাত ভে/ঙে দিয়েছিলো?
চূড়ান্ত অবাকতা আর আহত কন্ঠে কথাটি শুধালো অর্ক।
লজ্জায় তাথৈ এর মাথা নিচু হয়ে যাবার উপক্রম।নিজের পরিবার সম্পর্কে এমন কথা কেউ জানা মানে নিজের সম্মান খোয়ানো।কিন্তু এরিক মাঝে মাঝে এমন ভাবেই তাথৈ কে আহত করে যা চেপে রাখবার কোনো উপায় থাকেনা।তাথৈ কে কেনো সে দেখতে পারেনা এটাও বেশ অজানা।হাজার হোক বোন তো হয় !
তাথৈ কিছু বলতে যাবে তার আগেই কাঁচ ভা/ঙা/র চূড় চূড় শব্দে সকলে পাশে থাকা টেবিলের দিকে নজর দিলো।
পাশেই বসা একটি যুবক সঠিক বয়স অনুমান করা যাচ্ছে না।মাথার কালো রঙের ক্যাপটা অর্ধেক চেহারা ঢেকে রেখেছে।এতটুকু অনুমান করা যাচ্ছে যুবকটি বেশ বলিষ্ঠ।তারই ধবধবে বৃহৎ হাতের থাবার ভেতর ভারী কফি জারটা ক্র্যাশ হয়েছে ।এখনো তার হাতের মুঠোয় ভাঙা জারের টুকরো গেঁথে রয়েছে সেগুলো থেকে চুইয়ে চুইয়ে র/ক্ত ঝরছে।লালচে ঠোঁট আর দাঁতের ক্রুরতা স্পষ্ট।থুনতিটা থরথর করে কাঁপছে।
হঠাৎই পুরো ক্যাফেটেরিয়া মানুষের কানাকানি তে মুখরিত হয়ে উঠলো।একজন ওয়াইটার দৌড়ে এসে বিনয়ী হয়ে শুধালো
“এনি প্রবলেম স্যার?
জারের টুকরো হাতে চেপে ধরেই ওয়ালেট থেকে এক মুঠো টাকা বের করে টেবিলের উপর রেখে হনহন করে বেরিয়ে গেলো যুবক।যুবকের যাবার পানে তাকিয়ে অর্ক আর মৌটুসী বলে উঠলো
“এ কেমন অদ্ভুত মানুষ রে বাবা?ইচ্ছে করে কেউ এমন করে?
#চলবে