বছর দুয়েক পর পর্ব-০৪

0
1498

#বছর_দুয়েক_পর
#পর্ব_৪
#সারিকা_হোসাইন

উত্তপ্ত গ্রীষ্মের দিন পেরিয়ে গভীর রাতের হাতছানি।নিস্তব্ধ নিগুড় অন্ধকার রাত।অসীম আকাশের বুকে জ্বলতে থাকা তারারাও বোধ হয় ঘুমিয়ে গিয়েছে।মৃদুমন্দ বাতাসে তাথৈ এর কক্ষের ডোর বেলটা টুং টাং শব্দে মূর্ছনা তুলেছে।খোলা বেলকনির রেলিং ধরে বিশাল আকাশের দিকে নিশ্চুপ তাকিয়ে রয়েছে তাথৈ। হালকা বাতাসে তার রেশমের ন্যায় কাঁধ পর্যন্ত চুলগুলো অশিরিরির ন্যায় উড়ুউড়ি করছে।অশ্রু সজল দৃষ্টি পলক হীন দূর আকাশে মেলা।

রাত দিন এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে তার।মন কারো শান্তনা, বোঝ ,ভরসা কিচ্ছুটি মানে না।অবুঝ মন শুধু বারবার একটি কথাই আওড়ায়

“ভিয়ান কেনো আমাকে ছেড়ে চলে গেলো?গেলোই যখন আমাকেও সঙ্গে নিলো না কেনো?বিধাতা কে ফাঁকি দিয়ে কোনো ভাবেই কি ভিয়ান আমার কাছে চলে আসতে পারে না?

তাথৈ জানে এসব কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।কিন্তু কল্পনা করতে মন্দ কি?এমন মিরাকল তো কখনো হয়েও যেতে পারে!

ভিয়ানের সাথে কাটানো কিছু সুমধুর স্মৃতি মনে করতেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো তাথৈ।সেই কান্না খোলা আকাশ আর মৃদু বাতাসে মুহূর্তেই মিলিয়ে গেলো।

“আরেকটি বার আমার বুকে ফিরে আসুন প্লিজ।কথা দিচ্ছি একদম বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখবো।কেউ জানবে না কেউ দেখবেও না।খুবই যত্ন করে রেখে দেবো প্রমিস ।আরেকটা বার আমার মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে বলুন “ভালোবাসি তাথৈ।আপনাকে ছাড়া আমি যে আর শ্বাস নিতে পারছি না ভিয়ান”

উন্মাদের ন্যায় দুই হাত আকাশে উঁচিয়ে পুনরায় ডুকরে কেঁদে উঠলো তাথৈ।

“আমাকে শুনতে পাচ্ছেন আপনি?আপনাকে ছাড়া ভালো নেই আমি।আপনি বড়োই নিষ্ঠুর কঠিন হৃদয়ের মানব।একটা বার এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলে কি হয়?

ভিয়ান…….

তাথৈ এর ছোট হাত দুটোকে অবজ্ঞা করে বিশাল আকাশ চিড়ে স্বশব্দে উড়ে চলে গেলো একটি এরোপ্লেন।সেই ধীর গতির এরোপ্লেন এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আহত স্বরে তাথৈ বলে উঠলো

“সবাই চলে যায়,কেউ ফিরে আসে না”

রাত কতো গভীর হয়েছে তাথৈ জানেনা।সে শুধু জানে ভিয়ানের ছবিটা একবার জড়িয়ে ধরে বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন কে নিভাতে হবে।ধীর পায়ে বেলকনি ছেড়ে নিজের কক্ষে এসে লাইট নিভিয়ে ধপ করে শুয়ে পড়লো তাথৈ।বালিশের নিচ থেকে ভিয়ানের ছোট ছবিটা বের করে বুকে জড়িয়ে সিক্ত কন্ঠে বলে উঠলো

“শুভরাত্রি মিস্টার নাওয়াফ”

*********
“আজকে না গেলেও পারতেন স্যার,সেই তো প্রতিমাসে কারি কারি টাকা খরচা করে এখানে আসেন।প্রতিমাসে না এসে একবারে বেশি সময় নিয়ে থেকে গেলেই তো পারেন”

ছোট স্বরে কথা গুলো বলে কানে হেডফোন গুজলো অভীক।বার বার এতো দূরে জার্নি করতে করতে তার জীবন তেজপাতা হয়ে গিয়েছে।আগে যদি জানতে পারতো এই লোকের চক্করে পড়লে এতো এতো অদ্ভুত জিনিস ফেইস করবে হবে তাহলে আয়ারল্যান্ডে গিয়ে একাকী বসে থাকতো তবুও এই লোকের সংস্পর্শে আসতো না।

অভীকের কথায় তাচ্ছিল্য হাসলো ফক্স।এরপর ঠোঁট কামড়ে নিষ্প্রাণ কন্ঠে বলে উঠলো

“অস্তিত্ব হীন জীবনের মানে তুমি কি বুঝবে?এখানে তো আমি মানসিক শান্তির জন্য আসি।কিন্তু শান্তির বদলে বারবার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।সেই র/ক্তা/ক্ত হৃদয় নিয়ে আবার ফিরে যাই।কবে মিলবে এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি?

নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করে কোনো উত্তর পায়না যুবক।শুধু এক দৃষ্টিতে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।কিছু সময় অতিবাহিত হতেই তপ্ত শ্বাস ফেলে বিমানের সিটে মাথা হেলায়।

“অনেক লম্বা সফর,একটু বিশ্রাম প্রয়োজন।আরো কতো লম্বা পথ হাটতে হবে কে জানে?”

মনে মনে কথা গুলো ভেবে চোখ বুঝলো যুবক।চোখের পাতা বন্ধ করতেই চোখের সামনে ধরা দিলো অনিন্দ্য সুন্দর এক কোমলমতি।
ধবধবে ফর্সা ছোট পাতলা গড়নের মুখশ্রী।বড় বড় কুচকুচে মনি যুক্ত লম্বা পাপড়ি ওয়ালা চোখ।কি গভীর তাদের চাহনি!টনটনে ছোট নাক,গোলাপি ঠোঁট আর ঠোঁটের নিচের কুচকুচে কালো ওই ছোট তিলটা।হাসি তো নয় যেনো তীরের ফলা।একদম বুকে এসে বিধে।পুরো মুখশ্রী জুড়ে রাজ্যের মায়া।কতো চঞ্চল আর দুস্টু সেই মেয়েটি।যাকে ভালোবেসে নাম দেয়া হয়েছিলো “তিলোত্তমা”
যাকে আজীবন খুশি রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো।কিন্তু নিমিষেই ভঙ্গ হলো সেই কঠিন প্রতিশ্রুতি।

আর ভাবতে পারে না যুবক ।নিজেও কানে হেডফোন গুঁজে নিজেকে অন্য দিকে ডাইভার্ট করার বৃথা চেষ্টা করে।কিন্তু যার অস্তিত্ব শরীরের পুরোটা জুড়ে ছলাকলা করেও কি তাকে ভুলে থাকা যায়?

*********
পুব আকাশের টকটকে লাল সুর্য টা হালকা মাথা চাড়া দিয়ে জানান দিলো এখন ভোর হয়েছে।কিছুক্ষন আগেই রাতের সকল কালিমা দূর হয়ে মৃদু আলোর ছটক দেখা যাচ্ছে।পাশের প্রকান্ড আম গাছের পাতার ফাঁক থেকে দুই একটা টুনটুনি লাফিয়ে বের হয়ে কিচ কিচ গান তুলেছে।ঠান্ডা সমীরণ মিষ্টি সুবাস আর স্নিগ্ধ প্রকৃতি।
ফজরের নামাজ আদায় করে কোরআন নিয়ে বসেছিলো তাথৈ।সকালের নির্মল ইবাদত টাই তাকে সামান্য প্রশান্তি দেয়।এরপর রাত দিন সব একই যন্ত্রনায় কাটে।সৃষ্টিকর্তার কাছে তার নিজের জন্য কিছুই চাইবার নেই।তার চাওয়া পাওয়া যা কিছু আছে সব ভিয়ান কে ঘিরে।

“হে মাবুদ তুমি ভিয়ান কে ভালো রেখো শান্তিতে রেখো,যদি ওকে কোনো কষ্ট দেবার মর্জি হয় তবে সেটা আমাকে দিও”

নিজের প্রার্থনা শেষ করে কিছু সময় বই নিয়ে বসলো তাথৈ।বার বার মনোযোগ ছুটে যাচ্ছে তবুও ধরে বেঁধে মনের সাথে দ্বন্দ্ব চালিয়ে মস্তিষ্ক কে জয়ী করলো।।

কখন ঘড়ির কাটা তরতর করে সাতের ঘর পেরিয়ে আটের ঘরে ঠেকলো তাথৈ টেরই পেলো না।অনেক দিন ভার্সিটিতে যাওয়া হয়না।আজ একবার ক্লাসে এটেন্ড করা প্রয়োজন।

বই ফেলে ফ্রেশ হয়ে ঝটপট রেডি হয়ে নিলো তাথৈ এরপর প্রয়োজনীয় নোটস ডায়েরি কলম আর বই নিয়ে কক্ষ ত্যাগ করলো।

********
ডাইন ইন টেবিলে মুখোমুখি বসে আছেন সাইফ আজমী আর তাথৈ।বিজনেস ট্রিপ থেকে গত রাতেই ফিরেছেন তিনি।সাইফ আজমী বাড়িতে না থাকলেই তাথৈ সবচেয়ে বেশি খুশি হয়।লোকটির মধ্যে বাবা বাবা কোনো গন্ধ নেই।সব সময় কেমন একটা গা ছাড়া ভাব।নিজের বাবার এহেন আচরণে তাথৈ প্রথম প্রথম খুব কষ্ট পেতো।যখন ভিয়ান এলো তখন সব কষ্ট ভুলে সুখের লহরিতে ভাসতে লাগলো তাথৈ।কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন কপালে সহ্য হলো না।ভিয়ান চলে গেলো খুবই মর্মান্তিক ভাবে।ভিয়ান যাবার পর তাথৈ নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছে।প্রয়োজন ছাড়া কক্ষ থেকে খুব একটা বের হয় না বললেই চলে।

“নিজের জীবন নিজের খুশি মতো চালাবে এটাই তোমার লাস্ট ডিসিশন তাইতো?

ডাইন রুমের সকল নীরবতা খাবার খেতে খেতে ভঙ্গ করলেন সাইফ আজমী।কর্কশ স্বরে প্রশ্নটি করে পুনরায় খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন।

“এই বিষয়ে অনেক বার কথা হয়ে গেছে পাপা,আমি এভাবেই ভালো আছি”
মাথা নিচু করে চিকন নিচু স্বরে সাবলীল উত্তর জানালো তাথৈ

“স্বার্থপরের মতো শুধু নিজের দিকটাই ভাবলি আমরা যে গর্তে পরে আছি আমাদের চোখে দেখতে পাস না?

হিসহিস করে কথাটি বলে তাথৈ এর পাশের চেয়ার টেনে বসে গেলো এরিক।তাথৈ এর পানে ক্রুর নজর বুলাতেই গালের কালশিটে দাগ গুলো স্পষ্ট নজরে এলো।সেই দাগ দেখে বাঁকা হেসে বললো

“দেবো নাকি আরেক ডোজ?

এরিকের এহেন আগ্রাসী কথায় টলমল জল এসে ভিড় করলো তাথৈ এর নেত্র সমুদ্রে।মাথা নিচু করে পলক ঝাপটিয়ে সেই জল বিন্দু রোধ করে তাথৈ বলে উঠলো

“আ আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে পাপা।

সাইফ আজমী তাথৈ এর পানে শক্ত নজর বুলিয়ে বলে উঠলো

“এরিক যা বলেছে তাতে রাজি হয়ে যাও নইলে আমার চাইতে খারাপ আর কেউ হবে না”

মেহেরিন চৌধুরী সবটাই অবলোকন করে আর চুপ থাকতে পারলেন না।নিজের স্বামী সন্তান সময় সুযোগ বুঝে এভাবে রূপ বদল করবেন তা তিনি ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাননি।যদি পেতেন তবে…..দীর্ঘ তপ্ত শ্বাস লুকিয়ে প্রতিবাদী স্বরে বলে উঠলেন

“আর কতো খারাপ হবে তোমরা?অবশিষ্ট কি কিছু রেখেছো?সবই তো করছো।

মেহেরিনের চিৎকারে নিজের ক্রোধের নিয়ন্ত্রণ হারালেন সাইফ আজমী।স্ত্রী নামক মানুষটার এতো ভালমানুষী তার সহ্য হলো না।টেবিলের উপর থাকা সবজির বাটি মেহেরিনের দিকে ছুড়ে মেরে সাইফ আজমী বলে উঠলেন

“এই মুহূর্তে কারো বকবক শুনতে রাজি নই আমি।বেশি বাড় বাড়লে চিরতরে শেষ করে দেবো ।বেহুদা মেয়ে মানুষ কোথাকার।

ধোয়া উঠা সবজির উত্তপ্ততায় শরীরের অনেকটা ঝলসে গেলো মেহেরিন চৌধুরীর।কিন্তু মুখে টু শব্দ পর্যন্ত করলেন না।ঠোঁটে ঠোঁট চেপে শুধু শক্ত হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলেন।তাথৈ নিজের মায়ের এহেন নিগ্রহ দেখে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো এরপর গায়ের সবজি ঝাড়তে ঝাড়তে বলে উঠলো

“আমার হয়ে আর কথা বলো না আম্মু।আমি নিজেকে সামলে নিতে পারবো কিন্তু তোমার কিছু হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।

নিজের অবস্থানে বহাল থেকে মেহেরিন শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো

“ক্লাসে যাও তাথৈ,সময় চলে যাচ্ছে।

মেহেরিনের পানে তাকিয়ে এরিক দাঁতে দাঁত চেপে চিবিয়ে চিবিয়ে শুধালো
“এতো নাটকবাজ কবে থেকে হয়েছো মম?তোমাকে যেনো চিন্তেই পারছি না”

স্ত্রীর পানে তাকিয়ে সাইফ আজমী মুখ বেকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসলেন এরপর ক্রোধ মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলেন

“যতো সব আদিখ্যেতা…মা মেয়ে কান খুলে শুনে নাও।এই বাড়িতে থাকতে হলে আমার কথাকেই শেষ কথা মেনে নিয়ে থাকতে হবে বুঝতে পেরেছো আমি কি বলেছি.?আগামী মাসে ভিসা পাসপোর্ট করে দেবো ।অস্ট্রেলিয়া গিয়ে রেইন এর সাথে থাকবে।চেনা জানা হলে বিয়ে করতে অসুবিধা কোথায়?ছেলে লাখে এক।একবার ছেলেটিকে হাতের মুঠোয় করতে পারলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তরতর করে উপরে উঠে যাবে।ছেলেটি তোমাকে দেখে নিজে প্রস্তাব দিয়েছে।এতো ভালো সুযোগ যদি হাতছাড়া হয়ে যায় মা মেয়ে দুজনেই ভুগবে।আমাকে আরো কঠোর হতে বাধ্য করো না…।নিজেদের ভালো চাইলে রাজি হয়ে যাও।

কথা গুলো বলে পরোটা ছুড়ে ফেলে গটগট পায়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন সাইফ আজমী।ভালো মানুষের খোলস কতদিন পরে থাকা যায়?একদিন না একদিন তো বিশ্ৰী রূপ খানা বেরিয়েই আসবে।সাইফ আজমী চাননা তার এই রূপের প্রতি কেউ আঙ্গুল তুলুক।এক জন তুলতে চেয়েছিলো কি হাল হয়েছিলো তার?এক সপ্তাহ ও টিকতে পারেনি তার ভয়ানক থাবার তোপে।

স্বামীর যাবার পানে ঘৃণা পূর্ণ নজরে তাকিয়ে মেহেরিন চিৎকার করে উঠলেন

“এখনো কেনো দাঁড়িয়ে আছিস ?তুই ক্লাসে যা তাথৈ।

মেহেরিন চৌধুরী কে যেনো আজ তাথৈ চিনতে পারছে না।এরকম কঠিন কন্ঠে কখনো কথা বলেন নি তিনি।তবে আজ কেনো?

নিজের চোখের জল মুছে ধীর পায়ে বাইরে বেরিয়ে এলো তাথৈ।আজকাল চোখ দুটো যেনো একটু বেশিই সিক্ত হচ্ছে।কিছু হলেই জল খসে পরে।সকালের নির্মল রূপে যেই স্বস্তি টুকু মিলেছিলো মুহূর্তেই তা যেনো বিষাদে রূপ নিলো।খসে পরা জলধারা মুছে তাথৈ ডেকে উঠলো
“রহমান চাচা”

******
নিউ ইয়র্ক পৌছেই হাত ধুয়ে কাজে লেগেছে অভীক আদনান।বসের সাথে সাথে তাকেও হতে হয়েছে চটপটে আর ব্রিলিয়ান্ট।কারন বোকা আর অলস লোক একদম পছন্দ নয় তার বসের।প্রত্যেকটা এমপ্লয়ীর উপর শকুনের নজর তাক করে রাখে সারাদিন।একটু এদিক সেদিক হলেই
“ফায়ার্ড”

মানুষের মনের কথা শুনে নেবার অদ্ভুত ক্ষমতা আছে এই লোকের,কারো চোখের চাহনি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত সে।বড় বড় বিজনেস ম্যান দের ঢপ দিয়ে উপরে উঠে যাওয়া পাক্কা খিলাড়ি এই যুবক।তার আরেকটা ভালো গুন রয়েছে।

“কোনো অন্যায় মানতে নারাজ তিনি।হোক সেটা ছোট অথবা বড়”

চতুরতা আর উগ্রতা সব মিলিয়ে সমানে সমান। তার এহেন সুনাম বা দুর্নাম যাই হোক তার জন্য পুরো নিউইয়র্ক জুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন উদ্ভট এক নামে

“উয়াইল্ড ফক্স”

ল্যাপটপে গভীর মনোযোগ এর সহিত কাজ করছে ফক্স ।অভীক কিছু সময় ধরে কতগুলো ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কিন্তু এই লোকের সেসবে কোনো হেলদোল নেই।পারলে একদম ল্যাপটপের মাঝে ঢুকে যায় এহেন অবস্থা।

অভীক শুনেছে প্রেমে পড়লে কঠোর হৃদয়ের মানুষ নরম হয়।প্রেম ভালোবাসায় এমনই এক জাদু আছে।অভীকের মতে তার বস একটু বেশিই কঠিন দিলের মানুষ।তাই তার চাওয়া তার বস খুব করে কঠিন এক প্রেমে পড়ুক।

কিছুক্ষন উশখুশ করে গলা খাকরি দিলো অভীক।এরপর তার বসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বলে উঠলো

“কিছু না মনে করলে আপনার ব্যাক্তিগত বিষয়ে একটা প্রশ্ন করতে চাই”

অভীকের কথায় কিছুটা কপাল কুঁচকে এলো গম্ভীর যুবকের।ল্যাপটপ থেকে নজর সরিয়ে জিজ্ঞাসু নজর বুলিয়ে ভ্রু উঁচিয়ে গম্ভীর গলায় শুধালো

“কোন বিষয়ে?

আশকারা পেয়ে অভীক ঠোঁটে সামান্য হাসি ঝুলিয়ে বলে উঠলো

“আপনি কি কখনো কাউকে ভালোবেসে ছিলেন?
কাজের সময় এহেন ফালতু প্রশ্নে কিছুটা বিরক্ত হলো যুবক।আজকাল অভীক ছেলেটা আশকারা পেয়ে সব কিছুতে লম্বা হাত ঢুকাতে চাইছে।অভীকের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ল্যাপটপের কীবোর্ড এ খটখট করতে করতে যুবক ভারী কন্ঠে বলে উঠলো

“বেসে ছিলাম আর এখনো বাসি

#চলবে