বছর দুয়েক পর পর্ব-০৭

0
1254

#বছর_দুয়েক_পর
#পর্ব_৭
#সারিকা_হোসাইন

*******
অপরিচিত আগত নতুন মেহমান এর মুখে এহেন হেঁয়ালি কথা শুনে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলো তাথৈ।নিচু মাথা কিঞ্চিৎ উঁচু করে সামনে দাঁড়ানো সুদর্শন যুবকের পানে বিস্ফারিত দৃষ্টিতে তাকালো সে।তাথৈ এর কাছে মনে হলে লোকটি রসিক টাইপের মানুষ।কিন্তু তার চোখে মুখে রসিকতার কোনো ছিটেফোঁটা দেখা গেলো না।বরং তার গভীর চোখের ভাষায় বোঝা যাচ্ছে সে যা বলেছে তা নিশ্চিত খাঁটি কথা।মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব পোষে তাথৈ ধীর কন্ঠে বলে উঠলো

“আপনি অনেক দূর থেকে এসেছেন আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন।দূতলার পূর্ব পাশের গেস্ট রুম টি আপনার জন্য বরাদ্দ।

কথাটি বলেই আর এক দন্ড দাঁড়ালো না তাথৈ।গুটি গুটি পায়ে সিঁড়ি বেয়ে ভিয়ান কে রেখেই নিজের ঘরে চলে এলো সে।কানের কাছে বার লোকটির হেঁয়ালি কথা খানা সুর তুলে বেজে যাচ্ছে সেই সাথে ভিন্ন এক অনুভূতির জন্ম নিচ্ছে।ছোট বুকটা এখনো ধক ধক করে কাঁপছে।

“এ কেমন শিহরণ জাগানো বাক্য?এমন মোহনীয় বাক্য তো আগে কখনো শুনিনি।

যুবকের ভয়ানক সুন্দর মুখশ্রী মনে পড়তেই শরীরের তাপমাত্রা কমে শূন্যের কোঠায় পৌঁছালো বোধ হয়।হাত পা জমে গিয়ে ঠকঠক করে কেঁপে উঠলো।তুলতুল মেয়েটা এখনো ঘুমাচ্ছে।তাকে ডাকা প্রয়োজন।কিন্তু তাথৈ এর গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না।অজানা ভয় মিশ্রিত শিহরনে তনু মন হয়েছে খুব কাবু।যুবকটিকে আরেকবার চোখের সামনে দেখার আশায় মন অকুলিবিকুলি করে উঠলো।সহসাই মনে পড়লো তুলতুল এর বলা কথা খানা

“কোনো মেয়ের সংস্পর্শ সে পছন্দ করে না।খুবই রাগী আর অহংকারী।

মনে মনে কথাটি ভেবে মনের সুপ্ত বাসনার গলা টিপে জীর্ণ মানুষের ন্যয় বিছানায় উঠে কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়লো তাথৈ ।এরপর কাঁপা কাঁপা হাতের তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে তুলতুলের ধবধবে নরম ফর্সা বাহুতে খোঁচা দিলো।
মেয়েটির ভারী ঘুমের ব্যঘাত হলো সেই খোঁচায়।পার্শ্ব পরিবর্তন করে আবারো ঘুমুতে চাইলে তাথৈ পুনরায় একই কাজ করলো।
মেয়েটি ঘুম জড়ানো অসহায় কন্ঠে বলে উঠলো

“প্রচন্ড ঘুমে ম/রে যাচ্ছি।প্লিজ একটু ঘুমুতে দাও।

উপায়ন্তর না পেয়ে অস্ফুট স্বরে তাথৈ বলে উঠলো

“বিদেশি লোকটা এসে গেছে।

ঘুম কাতর মস্তিষ্কে কথাটি ক্যাচ করতে সময় লাগলো তুলতুলের।কিন্তু চেতনা ফিরতেই শোয়া থেকে লাফিয়ে উঠে বড় বড় নেত্রে জানতে চাইলো

“কখন?

“মিনিট বিশেক আগে”

কথাটি বলেই কম্বল দিয়ে মাথা ঢেকে চোখ বন্ধ করে ফেললো তাথৈ।চূড়ান্ত ভয় আর অস্বস্তি হচ্ছে তার।এই নতুন অস্বস্তির সাথে আজকেই পরিচিত হলো সে।এমন অনুভূতি এই ষোল বছরের জীবনে কখনো হয়নি।

“তবে কি ভিয়ান নাওয়াফ এর প্রতি আমার অসম্ভব ভালো লাগা তৈরি হয়েছে?
নিজের মনের অবান্তর ভাবনায় নিজেই বেশ লজ্জিত হলো তাথৈ।

“ছি ছি এসব কি ভাবছি আমি?উনি এই বাড়ির মেহমান।দুদিন পরই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলেই উনি চলে যাবেন।তিহান ভাইয়া বউ নিয়ে বিদেশ চলে গেলে কারোর সাথে আমাদের আর যোগাযোগ থাকবে না।এসব আকাশ চুম্বী ভাবনা আমার সাজে না”

খুব বুঝদার তাথৈ নিজেকে নিজেই বেশ করে বুঝিয়ে সামান্য ঘুমের ঘোরে পাড়ি জমালো।রাত জেগে পড়াশোনা করতে হবে।এখানে এসে থেকে একদম কিচ্ছুটি পড়া হচ্ছে না।ভালো রেজাল্ট না করতে পারলে এরিক অবশ্যই পিঠের ছাল চাম/ড়া তুলে নেবে।

********
গায়ের লং শার্ট টাকে কোনো মতে টেনে টুনে গলায় একটা স্কার্ফ ঝুলিয়ে ভিয়ানের কক্ষে একপ্রকার হুড়মুড়িয়ে প্রবেশ করলো তুলতুল।ঘুমের প্রভাবে তার চোখ মুখ ফুলে বেশ গুলুমুলু হয়ে আছে।মাথার কালচে বাদামি চুল গুলো আলুথালু।হাই তুলতে তুলতে ভিয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশস্ত শুকনো হাসলো তুলতুল।এরপর গদগদ স্বরে বলে উঠলো

“হেই ব্রো ওয়েলকাম টু আওয়ার টিনি হোম’…

রুমের চারপাশে নজর বুলিয়ে মুখে হাসির রেখা টেনে ভিয়ান রসিকতা করে বলে উঠলো

“তেমন ছোট লাগছে না।অনায়াসেই হয়ে যাবে আমার।বাই দ্যা ওয়ে আম নট এ ডাইনোসর রাইট??

তুলতুল মুখে হাসি ধরে রেখেই বলে উঠলো

“সবাই তিহান ভাইয়ার এনগেজমেন্ট এ গিয়েছে।ইউ নো না?

ভিয়ান মাথা উপর নিচ করে হাত থেকে ঘড়ি খুলতে মনোযোগ দিলো।তুলতুল পুনরায় বলে উঠলো

“তুমি ফ্রেশ হয়ে কাপড় পাল্টে নাও।বড় কাকী মনি সালেহা আন্টিকে সব বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন।ডাইনিং টেবিলে আমি খাবার দিতে বলছি।খেয়ে রেস্ট নাও ভালো লাগবে।

তুলতুলের কথায় ভিয়ান সায় জানিয়ে ছোট লাগেজ থেকে কাপড় বের করতে করতে বলে উঠলো

“আহ তুলতুল….

কক্ষ পরিত্যাগ করতে নিয়ে ভিয়ানের ডাকে থেমে গেলো তুলতুল।উৎসুক হয়ে ভিয়ানের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই ভিয়ান কিছুটা লজ্জা মিশ্রিত হাসলো।এরপর দাঁত দিয়ে শুষ্ক লালচে ঠোঁট টা কামড়ে খানিক মাথা চুলকে বলে উঠলো

‘নাথিং,ইউ ক্যান গো…

আর দাঁড়ালো না তুলতুল।মেহমান কে স্পেস দিতে রুমের বাইরে বেরিয়ে ডেকে উঠলো

“সালেহা আন্টি……
________

আংটি বদলের শুভ কাজ শেষ করে সন্ধ্যা বেলায় ও ফিরতে পারলো না তিহানরা।সন্ধ্যার একটু পর পর তুলতুলের কাছে ফোন করে অনন্যা জানালো তারা মাত্র গাড়িতে উঠেছে।বাসায় পৌঁছাতে আরো ঘন্টা দুয়েক লাগবে।আর সালেহা যেনো রাতের মেনু অনুযায়ী রান্নার কাজ গুছিয়ে নেয়।সেই সাথে তিহানের বন্ধুর জন্য ভালো কিছু রান্না করে।
অনন্যার ফোনের লাইন কেটে ব্যস্ত গৃহিনীর ন্যয় রান্না ঘরে ছুটলো তুলতুল।এরপর সালেহাকে কি কি রান্না করতে হবে সব বুঝিয়ে নিজের ঘরে ফেরত এলো।

সারাটা বিকেল শুয়ে বসে হাঁপিয়ে উঠেছে ভিয়ান।প্রথম বার গ্রামে এসেছে সে।এখানকার আওভাও সব তার অজানা।সময় কাটানোর মতো একটা মানুষ নেই।যদিও সে ওতোটাও ফ্রাংকলি চলাফেরা করে অভ্যস্ত নয়।তবুও একা একা বেশ বোর হলো সে।এরই মাঝে তুলতুল এসে একবার কফি দিয়ে গিয়েছে তাকে।আর মেয়ে মানুষের একা একা একটা প্রাপ্ত বয়স্ক যুবকের ঘরে এসে সময় কাটানো ও ভিয়ানের পছন্দ নয়।বিষয়টা দেখতেও দৃষ্টি কটু।

ইতিমধ্যে মাগরিবের আজান পরে গিয়েছে আরো বেশ কিছুক্ষণ আগে।নিজের কক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো ভিয়ান।মেয়েদের মতো এরকম ঘর বন্দি থাকতে মোটেও তার ভালো লাগছে না।ধীর পায়ে কক্ষ ত্যাগ করে করিডোর এ পা রাখতেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো।একদিকে শীতের কুয়াশা ঘেরা কালচে সন্ধ্যা তার মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।সব মিলিয়ে কুচকুচে অন্ধকারে ডুবে গেলো ভিভিয়ান।বিরক্তিতে “চ” সূচক শব্দ বেরিয়ে এলো তার ঠোট গলিয়ে।কপালে বিতৃষ্ণার সুক্ষ ভাঁজ বজায় রেখে সামনে দৃষ্টি ফেলতেই মোমের হলুদ আলোয় নজর কাড়লো অনিন্দ্য সুন্দর মনোরম এক মুখশ্রী।সামনে এগিয়ে আসা মানবীর বড় বড় চোখের পাপড়ি ঝাপটানো ভিয়ানের হৃদয়ে উত্তাল ঢেউয়ের সৃষ্টি করলো।মনে হচ্ছে আগ্রাসী টাইফুন তার মনের সকল শক্ত বেষ্টনী ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।ভারী শীতের মধ্যেও কুলকুল করে ঘেমে উঠলো কপাল,নাক আর গ্রীবাদেশ।বুকে অসহনীয় যন্ত্রনা।প্রথম বারের মতো শিকল পড়ানো পুরুষ সত্তা জেগে উঠে মেয়েটিকে বুকে জড়ানোর তীব্র ইচ্ছে জাগলো।মনের কাঠিন্যতার পাহাড় ঝরঝর করে ভেঙে ভালোবাসায় টইটুম্বুর সমুদ্রের জোয়ার বইতে লাগলো।মুষ্টিবদ্ধ দুই হাত আরো শক্ত হলো।নড়বার শক্তি যেনো বহু আগেই হারিয়ে ফেললো শক্তিশালী এই যুবক ।ধীরে ধীরে তাথৈ এগিয়ে এলো ভিয়ানের কাছে।হাতে থাকা জলন্ত মোমটা ভিয়ানের পানে এগিয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে ধীর কন্ঠে বলে উঠলো

“এই টাইমটাতে প্রতিদিন ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়।সালেহা আন্টি এই মোমটা আপনাকে দিতে বলেছে।ময়নাল আংকেল নেই তাই জেনারেটর চালু করতে পারছে না কেউ।একটু কষ্ট করুন আধ ঘন্টা পরেই বিদ্যুৎ এসে যাবে।

মেয়েটির মুখের পানে তাকিয়ে শুধু অপলক দৃষ্টিতে ঠোঁট নড়ানো টাই দেখে গেলো ভিয়ান।কান দুটো যেনো আজ বধির।হাত বাড়িয়ে মোমটা নেবার শক্তিও যেনো তার নেই।এই ছাব্বিশ বছরের জীবনে কোনো দিন তার এরকম অনুভূতি হয়নি।তবে আজ কেনো?অপরিচিত নাম ধাম জানা হীন এই শীর্ন দেহের ষোড়শী মানবীর মধ্যে কি আছে তবে?মোহিত করার জাদু?

আচানক দমকা হাওয়ায় মুহূর্তেই ঢলে পরা মোমের আলো ধপ করে নিভে গেলো।কূটকুটে অন্ধকার ছেয়ে নিলো দুজন মানব মানবীকে।একজনের ভারী নিশ্বাস আরো ভারী হলো।আরেকজন ভয়ে শ্বাস নিতেই ভুলে গেলো।ভীত মানবী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পিছন ফিরতে নিলেই করিডোরের কোমড় সমান ইটের গাঁথুনিতে বেঁধে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেলো তাথৈ।

“আউচ্’ শব্দে উত্তাল যুবকের সম্বিৎ এলো।ধাতস্থ হয়ে অন্ধকারে হাত বাড়াতেই মেয়েটির তুলতুলে উদর স্পর্শ করলো শক্ত হাত খানা।ভয়ে দেয়ালের সাথে কুঁকড়ে সেটে রইলো তাথৈ।দুজনের মাঝে চুল পরিমাণ দূরত্ব।ভিয়ানের উত্তপ্ত শ্বাস তাথৈ এর শরীর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।দুই চোখ খিচে বন্ধ করে পরনের জামা সমেত মোমটি শক্ত হাতে খামচে ধরে অস্ফুট স্বরে তাথৈ বলে উঠলো

“আমার ভয় করছে”

নিজের স্নেহ ভরা থাবার ন্যয় হাত খানা তাথৈ এর মাথার উপর রেখে ভিয়ান অস্থির হাসকি স্বরে বলে উঠলো

“ভয় নেই তিলোত্তমা,আমি কোনো হরণকারী নই।সুযোগ বুঝে কাউকে ছুঁয়ে দেবার মাঝে পুরুষত্ব বিরাজ করে না বরং মমতা ভরা বুলি আর স্নেহ ভরা হাতটা মাথায় রেখে ভরসা সাহস দিয়ে মানুষটিকে আগলে রাখার মধ্যেই প্রকৃত পুরুষের ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।

হঠাৎই ফকফকে আলোয় আলোকিত হলো চারিপাশ।ভিয়ানের বলিষ্ঠ হাত খানা এখনো তাথৈ এর মাথার উপর।লজ্জা আর ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে তাথৈ জড়িয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে উঠলো

“আমাকে যেতে হবে”

আর একবিন্দু সময় অপচয় না করে এলোমেলো দৌড়ে পালালো তাথৈ।ভয়ে তার জ্ঞান হারাবার উপক্রম।গলাটা বেশ করে শুকিয়ে উঠেছে।ফ্রিজের বরফ মিশ্রিত জল খেতে পারলে বোধ হয় পিপাসা মিটতো।

********
রাত্রি সাড়ে ন’টায় তিহানরা ফিরলো আংটি বদলের কাজ শেষ করে।সকলের মুখে তৃপ্তি যুক্ত আনন্দ আর উচ্ছাস।মেয়ের পরিবার এবং মেয়ে দুই ই তাদের একদম মনের মতো হয়েছে।আগামী শুক্রবার বিয়ের পাকা কথা ঠিক হয়েছে।হাতে আর এক সপ্তাহ বাকি।এই এক সপ্তাহে যার যার যা কিছু কেনাকাটা করার রয়েছে তা কিনতে হবে।বিয়ের কিছু জিনিস তিহান অস্ট্রেলিয়া থেকেই নিয়ে এসেছে।যেহেতু লাভ ম্যারেজ।শুধু ভারী শাড়ি আর গহনা গুলো জেলা শহর থেকে কিনতে হবে।বাড়িতে ফিরেই মেহেরিন মেয়ের কক্ষে পা বাড়ালেন।মেয়েকে ছেড়ে এক মিনিট ও তিনি থাকতে পারেন না।সেখানে সারাটা দিন।সকল অমানুষের ভিড়ে মেয়েটাই তার বেঁচে থাকার অবলম্বন।এই মেয়ের কিছু হলে তার বেঁচে থাকার সকল দুয়ার রুদ্ধ হবে।

সন্ধ্যার পর থেকেই তাথৈ নিজেকে ঘর বন্দি করেছে।রাতের পূর্ব ভাগের স্মৃতি গুলো বারবার হৃদয়ে তোলপাড় করছে।মুখ ফুটে অসহনীয় ভয় মিশ্রিত যন্ত্রণার কথা কাউকে বলা যাচ্ছে না।লজ্জায় বার বার ম/রে যেতে ইচ্ছে করছে।

“কি রে বাবা শরীর খারাপ?

মেহেরিন এর আকষ্মিক ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে এলো তাথৈ।নিজেকে দ্রুত সামলে কাঁপা স্বরে বলে উঠলো

“না আম্মু।পরীক্ষা নিয়ে টেনশন হচ্ছে।এখানে এসে ভালো মতো কিচ্ছুটি পড়তে পারছি না।

মেহেরিন মেয়ের কথাকে বিশ্বাস করে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলেন

“এক সপ্তাহ পর আমরা আবার শহরে ফিরে যাব।তখন একটু বেশি করে পড়ে নিস।গ্রামের বিয়েতে অনেক মানুষের আগমন হয়।তাই একটু বেশি চিৎকার চেঁচামেচি….

মেহেরিনকে থামিয়ে তাথৈ বলে উঠলো

“আমি ঠিক আছি আম্মু।ঢাকায় ফিরে সিলেবাস কভার করে নিবো।তুমি কোনো তাড়াহুড়ো দেখিও না।তিহান ভাইয়া আর মামা মামী কষ্ট পাবেন।

মেয়ের সাথে আরো কিছুক্ষন আলাপ করে নতুন হবু বউয়ের ছবি দেখালো মেহেরিন।তিহানের হবু স্ত্রী দেখে তাথৈ স্মিত হেসে অবাক মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলো

“একদম তোমার মত লাগছে আম্মু।যে কেউ দেখে বলবে এ তোমার মেয়ে”

মেহেরিন বিগলিত হেসে বলে উঠলেন
“ওবাড়িতেও এটা নিয়ে কথা হলো।জানিস মানুষের মতো মানুষ দেখতে হয়।পৃথিবীর কোথাও না কোথাও সেই মানুষটা বাস করে।কিন্তু চোখে না দেখলে আমরা তা বিশ্বাস করি না।

#চলবে