বধূ_কোন_আলো_লাগলো_চোখে পর্ব-৪১

0
1195

#বধূ_কোন_আলো_লাগলো_চোখে
#পর্বসংখ্যা_৪১
#Esrat_Ety

“আজ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
আলো সামিনের দিকে তাকিয়ে বলে। সামিন একমনে ড্রাইভ করতে থাকে। মৃদু স্বরে বলে,”একটা নতুন যায়গায়।”

_আপনি একজন মেয়র হয়ে এতো ঘোরাঘুরি করেন কেন এভাবে একা একা। আপনার তো শত্রু অনেক।

সামিন আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি আমার কথা ভাবো?”

আলো চুপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সামিনের হাতের দিকে তাকিয়ে বলে,”ব্যা*থা সেরেছে? ব্যা/ন্ডেজ খুলে ফেললেন যে?”

_হ্যা সেরেছে।
একবাক্যে জবাব দেয় সামিন। তারপর বলে,”দু চারদিনে আমরা সিঙ্গাপুর যাচ্ছি। প্রস্তুতি নাও। একসপ্তাহ কিংবা দশ বারো দিন লাগবে।”

_আর এখানকার কাজ?

_আমার ছেলেরা আছে। ওরা নিজেরাই এক একজন সামিন ইয়াসার মির্জা।

আলো কয়েক মূহুর্ত পরে বলে,”ভাগ্য করে কিছু মানুষ পেয়েছেন আপনি। আপনার ভাই, বোন, ভাইয়ের বৌ, আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড, জামিল ভাই, দলের ছেলেরা। সবাই খুব ভালোবাসে আপনাকে।”

সামিন চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ফেলে আলোর দিকে তাকায়, তারপর বলে,”হ্যা ভাগ্য করে সবাইকেই সেরা পেয়েছি, শুধু বৌ ছাড়া। বৌ টা পঁ*চা খুব।”

_সেটা তো আপনার দো*ষে।
কাট কাট জবাব দেয় আলো। সামিন আর কথা বাড়ায় না। ঝ*গড়া শুরুর পূর্ব লক্ষণ দেখা দিয়েছে। কথাবার্তা এখানেই থামিয়ে দেওয়া ভালো। সামিন শান্তি পছন্দ করে। সামিন ম*হাত্মা গান্ধীর ফ্যান।

গাড়ি থেমে গেলে আলো অবাক চোখে আশেপাশে তাকায়। সামিনের দিকে তাকিয়ে বলে,”কোথায় এনেছেন? এখানে কি?”

_কাজ আছে। নামো।
সামিন গাড়ি থেকে নামে। আলো শাড়ির আঁচল টেনে লম্বা একটা ঘোমটা টেনে নেয়। তারা এসেছে থানা*রোডের এতিম*খানায়।

গাড়ি থেকে নামতেই সামিন আলোকে দেখে থমকে যায়। ঘোমটায় কত সুন্দর স*ভ্য শান্ত লাগছে মেয়েটিকে। এর মুখ দেখে বোঝার উপায় আছে এই মেয়েটা কি সাং*ঘাতিক?

আলো সামিনের দৃষ্টি দেখে অস্বস্তিতে পরে যায়। লোকটা এভাবে কি দেখছে!
কয়েক মূহুর্ত পরে সামিন বলে,” এসো আমার সাথে।”

গেইটের কাছে দুজন লোক দাঁড়িয়ে সামিনকে স্বাগত জানায়। তারপর তাদের নিয়ে ভেতরের দালানে প্রবেশ করে। চারতলা বিশিষ্ট এই দালানটিতে মোট একশ নয়জন অ*নাথ শিশু থাকে।

সামিন এগিয়ে যেতে যেতে তার সামনে থাকা লোকটাকে বলে,”আজ আমি সাথে করে কিছু আনিনি। আপনাকে টাকা দিচ্ছি। ওদের জন্য কিছু কিনে আনুন কাইন্ডলি।”

_সমস্যা নেই। আজ আপনি দাতা নয়। একজন গেইস্ট। আজ ওরা আপনাকে আর ভাবীকে আপ্যায়ন করবে।

হেসে জবাব দেয় লোকটা। তারপর সামিন আর আলোকে নিয়ে চলে যায় বড় একটা খোলা মাঠে। সেখানে তাদের অপেক্ষায় বসে আছে একঝাঁক প্রজাপতির দল।

সামিনকে দেখে একশ নয়জন বাচ্চা একসাথে চেঁচিয়ে ওঠে। আলো চ’ম’কে যায়। সবাই দৌড়ে এসে সামিনকে ঘিরে ধরে। সামিনকে পেয়ে তাদের চোখে মুখে আনন্দের ছটা।

আলো পাশে কিছুটা দূরত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখতে থাকে। হঠাৎ করে তার মনটা ভালো হয়ে গিয়েছে। বাচ্চাগুলো কি প্রানবন্ত! কি বিনয়ী! কি চমৎকার!
বাচ্চাদের মধ্যে দুজন দলনেতা সামিনকে টেনে একটা টেবিলের কাছে নিয়ে যায়। সামিন আলোকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আলো হাত নেড়ে মুখ হাসি হাসি করে সবাইকে “হাই” বলে।

সে যায়গা থেকে নড়ছে না। সামিন আবারো আলোর কাছে এগিয়ে এসে বলে,”কই এসো। ওদের কাছে এসো!”

আলো অস্ফুট স্বরে বলে,”এখানে আনলেন যে আমাকে!”

সামিন ম্লান হেসে বলে,”ঐ যে নীল ফ্রক পরা ছোট পরীটাকে দেখছো? ওর নাম খুকুমণি। বয়স চার বছর হয়েছে আজ। তার বহুদিনের ইচ্ছা একটা পরী দেখবে, তাই তাকে দেখানোর জন্য একটা পরী আনলাম।”

আলো কিছুক্ষণ চুপ করে সামিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর বলে ,”খুব সুন্দর চেষ্টা ছিলো। এমন সংলাপ বলে ক্লাস ইলেভেনের মেয়েদের পটানো যায়। একজন পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের ভদ্রমহিলাকে নয়।”
সামিন হেসে ফেলে, তারপর বলে,”আপাতত কাউকে পটাতে চাইছি না। এসো খুকুমণির সাথে পরিচিত হবে।”

তারপর আলোর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায় বাচ্চাদের কাছে।

হাসি মজার ছলে পুরো সকালটা বেশ কেটে গেলো আলোর বাচ্চা গুলোর সাথে। যখন আলো বাচ্চাদের সাথে দুষ্টুমিতে মত্ত ছিলো তখন সামিন মুগ্ধ চোখে আলোকে দেখেছে। যখন সামিন বাচ্চাদের সাথে খেলছিলো তখন আলো সামিনকে দেখেছে। সে না জানলেও তার অবচেতন মনে মুগ্ধ হয়ে দেখেছে সামিনকে।

একপাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সামিন। তার দৃষ্টি আলোর দিকে। হাত নেড়ে নেড়ে গল্প করছে বাচ্চাদের সাথে। হঠাৎ সামিনের চোখে চোখ পরতেই সামিন চোখ সরিয়ে নেয়। আলো ধীরপায়ে এগিয়ে আসে।

“ধন্যবাদ আপনাকে।”
সামিন আলোর দিকে তাকিয়ে আছে। আলো অত্যন্ত সাবলীল ভাবে বলে,”আজকের দিনটা খুবই সুন্দর করে দিয়েছেন আমার। আপনি ধন্যবাদ ডিজার্ভ করেন।”

সামিন নাটকীয় ভঙ্গিতে বলে,”তাই? আমি সার্থক।”

আলো কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সামিনকে বলে,” আচ্ছা, কোনটা আসল আপনি বলুন তো? সেদিনের সেই সামিন ইয়াসার মির্জা নাকি এই সামিন ইয়াসার মির্জা? কোনটা সত্যি? সেদিনের সেই আতং*কিত রাত নাকি আজকের এই সকাল। আমি যতদূর জানি একটা খা*রাপ মানুষ বাচ্চাদের কখনোই পছন্দ করবে না। কোনটা সামিন ইয়াসার মির্জার আসল রূপ?

সামিন ম্লান হেসে আলোর দিকে এগিয়ে যায়। আলো সামিনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আলোর গালে হাত রেখে সামিন অস্ফুট স্বরে বলে,”তোমার কোনটা মনে হচ্ছে?”

আলো চুপ করে থাকে। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বলে,”জানি নাহ।”

সামিন আলোর গাল থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে মৃদু হেসে বলে,”জেনে যাবে। ধীরে ধীরে জেনে যাবে। মনের উপর একদম চাপ দিও না আছিয়া!”

***

“ইশিতা আপু”

আলোর ডাকে ইশিতা চ’ম’কে উঠে ঘুরে দাঁড়ায়। তার হাত থেকে ফোনটা নিচে পরে যায়।
আলো অবাক হয়ে যায় ইশিতার এমন আচরণে। ইশিতা বুকে হাত দিয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলে,” ও তুমি।”

_তুমি এভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছো কেন? কার সাথে কথা বলছিলে? শান্ত ভাইয়ার সাথে?

ইশিতা আলোর মুখ চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে,”চুপ চুপ। ভাইয়া বাড়িতে। শুনতে পেলে আমি শেষ।”

আলো অবাক হয়ে যায়।
“কেনো তোমার ভাইয়া শান্ত ভাইয়ার কথা জানে না? সে তো জানে!”

ইশিতা মুখ কাচুমাচু করে বলে,”ভাইয়াকে বলেছি রিলেশন নেই আর। সব শে*ষ।”

_কিন্তু এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে কতদিন? একদিন তো জানাতেই হবে।

_ও একটা চাকরী পেলেই জানাবো। প্লিজ ভাবী তুমি এখন কিছু বলবে না ভাইয়াকে প্লিজ। ভাইয়া ওকে এখন একদম পছন্দ করছে না।

আলো ইশিতার হাত ধরে হেসে বলে,”ঠিকাছে বলবো না। তুমি একটু শান্ত হও এখন।”

ইশিতা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে,” কেন এসেছিলে বলো।”

_ওই, তোমার ভাইয়ের জামাকাপড় ধুয়েছি আজ। সেটাই তোমাকে জানাতে এসেছি। এবার সবাই শান্তিতে ঘুমাতে পারবে।

স্বাভাবিক গলায় বলে আলো।
ইশিতা হেসে ফেলে, তারপর নাটকীয় ভঙ্গিতে বলে,”আমি,মেজো ভাবী,মেজো ভাইয়া, ইশমাম,ইহান,পরী, সিতারা, ফুলির মা,পোনা চাচা,দাড়োয়ান রিয়াজ ভাই, এমনকি মেজো ভাবীর পেটের মধ্যে থাকা পুচকু, সবাই তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ ভাবী। আমরা ধন্য হয়ে গিয়েছি। আমাদের উদ্ধার করে দিলে তুমি আজ।”

আলো চুপ করে ইশিতার দিকে তাকিয়ে আছে। ইশিতা তাকে বিদ্রুপ করছে।
আলোর থুতনিতে হাত রেখে ইশিতা হাসতে হাসতে বলে,”ইশশশ! তুমি যে কি মিষ্টি ভাবী! এখন প্লিজ ভাইয়ার সামনে যেও না। ভাইয়া তোমাকে মিষ্টি ভেবে খে*য়ে ফেলবে। ভাইয়া মিষ্টি খুব পছন্দ করে।”

আলো ইশিতার হাত নিজের থুতনি থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে একপ্রকার ছুটে যায় নিজের ঘরে। সামিন তখন ঘর থেকে বের হচ্ছিলো। দু’জনের ধা*ক্কা লেগে যায়। সামিনের ব*লিষ্ঠ বুকের সাথে বারি খেয়ে আলো দুই পা পিছিয়ে যায়। সামিন নিজের যায়গায় দাঁড়িয়ে আছে টানটান হয়ে। অবাক চোখে আলোকে দেখতে থাকে সে, কয়েক মুহূর্ত কেটে গেলে বলে ওঠে,”কি আশ্চর্য। তুমি সবসময় এতো ছোটা*ছুটি করো কেন? কোথাও আ*গুন লাগেনি। একটু ধীরস্থির হও।”

আলো চুপ করে সামিনকে পাশ কাটিয়ে ঘরে ঢোকে। সামিন নিচে নামে।

জামিল আর হেনা লিভিং রুমে বসে আছে। জামিলের মুখ শুকনো হয়ে আছে। হেনা উঠে দাঁড়াতে গেলে সামিন ওকে হাত দিয়ে ইশারা করে দাঁড়াতে নিষেধ করে। সিতারা হেনার ব্যাগ পত্র নিচতলার গেস্ট রুমে নিয়ে যায়।
সামিন জামিলকে বলে,”নিচতলায় থাকুক। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে না। আর তুই এতো ঘা*বড়ে যাচ্ছিস কেনো? এখনো তো একসপ্তাহ সময় আছে হাতে। তুই তো আগামী পরশু চলে আসবি। আমরা তো আছি। হেনা যত্নে থাকবে এখানে।”

জামিল আমতা আমতা করে বলে,”তা জানি ভাই, কেনো জানি মন সায় দিচ্ছে না যেতে।”

_উনি তোর চাঁচা জামিল, চাঁচার জা*নাজায় থাকবি না? এক্ষুনি বেরিয়ে পর। হেনার কিচ্ছু হবে না। তুই যা।

জামিল শুকনো মুখে হেনার দিকে তাকায়। হেনা তার দিকেই তাকিয়ে আছে। দুজন দুজনের থেকে দূরে থাকতে পারে না। কেউ কাউকে কাছ ছাড়া করতে চাচ্ছে না, কি সুন্দর একটা দৃশ্য। সামিন মুগ্ধ চোখে ওদের দেখতে থাকে। জামিল চোখের ইশারায় হেনার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। হেনা কিছুটা জড়তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। রিতু এসে তাকে গেস্ট রুমে নিয়ে যায়। ইশিতা সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে সামিনের দিকে তাকায়। সামিন বলে,”তুই কাইন্ডলি হেনার সাথে দু’দিন নিচতলার গেস্ট রুমে থাকবি? জামিল খুবই টেন্সড!”

_নিশ্চই থাকবো।
একবাক্যে রাজি হয়ে যায় ইশিতা। সামিন বোনকে দেখে বলে,”তুই কোথাও বের হচ্ছিস?”

_না ওই রিদি আসবে বাড়িতে আজ। গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

_রিদি? হঠাৎ কি মনে করে? আমি তো বিয়ে করে নিয়েছি।

হাসতে হাসতে বলে সামিন‌। ইশিতা কপাল কুঁচকে বলে,” এ ধরনের মজা ভুলেও তোমার বৌয়ের সামনে করো না। তীরে এসে তরী ডুববে। ”

ইশিতা বাড়ির বাইরে যায়। সামিন দোতলায় ওঠে। আলো বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে একটা বই পরছিলো। কি বই পড়ছে তা বুঝতে পারছে না সামিন,চোখে মুখে মুগ্ধতা মেয়েটার। এই মেয়েটা সামিন বাদে পৃথিবীর সবকিছুর দিকে মুগ্ধ চোখে তাকায়। সামিনের দিকে তাকালে মনে হয় ভ*ষ্ম করে দেবে।
গলা খাঁকারি দিয়ে সামিন বলে,”ও বাড়িতে যেতে চাও?”

আলো বই থেকে মাথা তুলে সামিনের দিকে তাকায়। তারপর ঠান্ডা গলায় বলে,”হ্যা।”

_নিয়ে যাবো।

_আমি তো যেতে পারি। পথ চিনি আমি।

_ওটা আমার শশুর বাড়ি। তাই আমিও যাবো।
কাটকাট বলে সামিন।
আলো আপত্তি জানিয়ে কোনো কথা বলে না আর‌ । আবারও বইয়ের পাতায় চোখ রাখে। সামিনের ইচ্ছা করছে ঘর থেকে বই গুলো সব বের করে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঐ মেয়েটার মুখোমুখি গিয়ে বসতে। তারপর থুতনি ধরে বলতে,”এই মেয়ে! একটু আমাকেও দেখো। একপলক দেখো।”

ইচ্ছাকে দমিয়ে রেখে সামিন বারান্দায় চলে যায়। আলো মাথা তুলে পেছন থেকে সামিনের দিকে তাকিয়ে থাকে ‌। সামিন তা দেখলো না।

***
দোতলার লিভিং রুমে হাসাহাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আলো ঘর থেকে বেরিয়ে একবার উঁ*কি দিয়ে দেখে। ইশিতা আর একটা মেয়ে বসে গল্প করছে‌ । আলো মেয়েটিকে চেনে না। ইশিতার বন্ধু হবে হয়তো‌ । ইশিতার চোখে আলো পরতেই ইশিতা উঠে এসে আলোকে টেনে নিয়ে যায়‌ ।
মেয়েটা উঠে দাঁড়িয়ে আলোকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে থাকে। ইশিতা বলে,”ভাবী ও হচ্ছে আমার বান্ধবী রিদি। তোমাকে দেখতে এসেছে ‌।”

আলো রিদির দিকে তাকায়। লম্বা,ফরসা, সুন্দরী একটা মেয়ে। আলোকে বিনয়ের সাথে সালাম দেয়। আলো সালামের উত্তর দিয়ে বসতে বলে ওদের। টুকটাক কথা বলে চা বানাতে আলো নিচতলায় নেমে আসে।
রান্নাঘরে সিতারা আর ফুলির মা ছিলো। ফুলির মা অবাক হয়ে বলে,”আপনি রান্নাঘরে আসছেন?”

_হ্যা। কেনো? আসতে পারি না?

_অবশ্যই পারেন ভাবী। আসলে কখনো আসেন না তো তাই বললাম।

আলো মৃদু হেসে চায়ের পানি বসিয়ে দেয় চুলায়, তারপর বলে,”আসলে ইশিতা আপুর বান্ধবী এসেছে আমাকে দেখতে, এখন আমি যদি আপ্যায়ন না করি তাহলে ইশিতা আপুর মুখ থাকবে না।”

আলোর হঠাৎ এমন কর্তব্য জ্ঞান দেখে সিতারা এবং ফুলির মা দুজনেই অবাক হয়। হেনা এসে পেটে হাত দিয়ে রান্নাঘরে দাঁড়ায়। আলো হেসে তাকেও বলে,”তুমি চা খাবে? বানাই?”

হেনা মাথা নাড়ায়। আলো চায়ের পানি বারিয়ে দেয়। টুকটাক কথা বার্তা বলতে থাকে সবার সাথে। হুট করে ফুলির মা বলে বসে,”আপনি রিদি আপার জন্য চা বানাতে আসছেন, খুবই অবাক করা বিষয়।”

আলো অবাক হয়ে বলে,”তা কেনো? ওনার সাথে কি আমার শত্রুতা আছে যে চা বানাতে পারবো না?”

_শত্রুতা না ঠিক…
ফুলির মা আমতা আমতা করে বলে,”আপনি কি কিছু জানেন না?”

আলো ঘুরে দাঁড়ায়,”কি? কোন ব্যাপারে কথা বলছো?”

সিতারা ফুলির মাকে ইশারা করে চোখ দিয়ে কিছু না বলতে। আলো সিতারাকে ধ*মক দিয়ে বলে,”ওকে বলতে দাও।”

ফুলির মা এদিক ওদিক তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,”রিদি আপা বড় ভাইজানরে ভালোবাসতো। ইশিতা আপা তো ঠিক করেও রাখছিলো বড় ভাবী বানাবে ঐ রিদি আপাকে। মাঝখান থেকে বড় ভাইজান আপনাকে বিয়ে করে ফেলছে।”

সিতারা ধ*মকের সুরে ফুলির মাকে বলে,”হ্যা তো? এসব কথা বড় ভাবীকে বলছিস কেন? পছন্দ করতেই পারে‌ । আমাদের বড় ভাইজান তো কিছু করেনি তাই না। সে তো ইশিতা আপুর সব বান্ধবীকে বোনের নজরে দেখেছে।”

ফুলির মা বলতে থাকে,”আমি নিশ্চিত। ঐ মেয়ে এখনো বড় ভাইজানকে ভালোবাসে। তখন দেখলি না বড় ভাইজানকে দেখার সাথে সাথে চোখে মুখে কি আনন্দ!”

আলোর মুখটা হঠাৎ থম*থমে হয়ে যায়। কাপে চা ঢেলে সিতারাকে বলে,”এগুলো উনাদের দিয়ে এসো সিতারা।”

সিতারা ট্রে নিয়ে চলে যায়। ফুলির মা আমতা আমতা করে বলে,”আপনি কি মন খারাপ করলেন ভাবী? বড় ভাইজান কিন্তু কিছু করেনি। সে বোনের নজরে দেখে। মন খারাপ করবেন না।”

আলো কয়েক পলক ফুলির মায়ের দিকে তাকিয়ে তাকে দেখে চলে যায়। ধীরে ধীরে সিঁড়ি ভে*ঙে দোতলায় উঠে লিভিং রুমের দিকে দৃষ্টি যেতেই থ’ম’কে দাঁড়ায়।

সামিন আর রিদি হেসে হেসে কথা বলছে। ইশিতা কোথাও নেই। আলো একদৃষ্টে ওদের দেখে। সামিনকে দেখে মনে হচ্ছে সে জীবনে হাসেনি, আজ সব হাসি হেসে নিতে হবে। আর হাসির কি ছি*ড়ি!
যেন একজন আরেকজনের গায়ে পরে যাবে! বোনের নজরে না ছাই! যতসব ফালতু কথাবার্তা! কেউ কাউকে বোনের নজরে দেখলে এভাবে গায়ে হে*লে পরে? আরে এতো দূরে বসে আছিস কেনো? কোলে নিয়ে কথা বল! যত্তসব পুরুষ মানুষ! ছাগলের মতো শুধু ছুক ছুক ভাব! যেই এক যায়গায় সহজে চান্স পেলো না অমনি আরেক জায়গায় চান্স মা*রতে বসে গিয়েছে!
আর এই মেয়েরাও আছে, যে পুরুষের বৌ আছে সেই পুরুষটাকে বেশি মধু মনে হয় এদের কাছে, কোনো অবিবাহিত পুরুষ এদের চোখে পরে না। ফা*লতু!

শাড়ির আঁচল শক্ত করে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে আলো। সামিন আর রিদি হেসেই যাচ্ছে। আলোর কপালে সূক্ষ্ম রেখা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ সামিনের চোখে চোখ পরতেই গুটিয়ে যায় আলো। চোখ সরিয়ে নিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে ঘরে ঢোকে, মুখটা থম*থমে। সামিন কিছু টা অবাক হয়ে যায়, বিড়বিড় করে বলে,”যা বাবা! এর আবার কি হলো!”

***
ঘরে ঢুকে দরজার সিটকিনি তুলে দিয়ে একবার ড্রয়ার খুলে কিছু একটা রাখে। আলোর দৃষ্টি বইয়ের দিকে থাকলেও মনোযোগ সামিনে।
আলমারির কাছে গিয়ে একটা কোলবালিশ বের করে এনে বিছানার মাঝখান টাতে রাখে, তারপর আলোকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে,”ভুল বলতাম আমি, স্ত্রী বেডফেলো নয়, স্ত্রী হচ্ছে Bed o*ccupier । স্ত্রী শয্যাসঙ্গী নয়,স্ত্রী হচ্ছে শয্যা দখলকারী। পুরো খাট টা দখল করে বসে আছে।”

আলো একপাশে চুপচাপ সরে বসে। সামিন টান টান হয়ে শুয়ে পরে। আলোর মন সেই কখন থেকে উ’শ’খু’শ করছে সামিনকে কথা শোনানোর জন্য। এখনি সুযোগ। আজ এই লোককে শান্তিতে ঘুমাতে দেবে না আলো।

“এখানে এখন কি?”

আলোর কথা শুনে সামিন চোখ মেলে তাকায়, তারপর বলে,”ঘুমাবো বলে। বিকেলে ঘুমানো বারণ আছে নাকি?”

_আচ্ছা আপনার আর কোনো কাজ নেই? আপনি কি আদৌও প*লিটিশিয়ান?

_কেন? এমন কথা বলছো কেনো? প*লিটিশিয়ান বলে সারাদিন রাজ*পথে থাকবো? বাড়িতে এসে নিজের বিছানায় আরাম করবো না?

_না না, তা করবেন না কেনো। পলিটিশিয়ান তো আপনি নামে, আপনার একটা কাজও প*লিটিশিয়ানদের মতো নয়।

_কেনো? কি করেছি আমি? দেখো ঘুরে ফিরে আবার তোমাকে তুলে এনে বিয়ে করার কাহিনীতে যাবে না বলে দিলাম।

_না না, চোখের সামনে আপনার এতো কান্ড দেখতে পাচ্ছি। শুধু শুধু অতীত ঘে*টে কথা শোনানোর দরকার কি!

_কি কান্ড করেছি আমি?

_কি কান্ড? একজন মেয়র একটা বাইরের মেয়ের সাথে কিভাবে কথা বলে জানেন না? কোনো ফরমাল বিহেভিয়ার মেইন*টেইন করেন না। ওভাবে কোলে নিয়ে কি কথা বলছিলেন এতো?

সামিন হা করে আলোর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর আমতা আমতা করে বলে,”রিদির কথা বলছো? কোলে কখন নিলাম? এভাবে কেনো বলছো?”

_আরেকটু হলেই তো নিয়ে নিতেন।
কাটকাট জবাব দেয় আলো। সামিন কিছুক্ষণ আলোর দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বলে,”তুমিও দু’টো হেসে কথা বলবে না, অন্য কাউকেও বলতে দেবে না। এটা তো জু*লুম আলো।”

আলো সামিনের দিকে শীতল চোখে তাকিয়ে আছে। তারপর ক*ঠিন গলায় বলে,”নামুন।”

_মানে?

_মানে বিছানা থেকে নামুন।

_ওমা! কেনো? এই বিছানা আমার। বেডটাকে নগদ চৌষট্টি হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি।

আলো সামিনকে অবাক করে দিয়ে তাকে ঠেলতে থাকে,”নামুন, নামুন‌ । ঘর থেকে বেরিয়ে যান।”

_কোথায় যাবো?

_মহিলা কলেজের সামনে, ওখানে ক্লাস ইলেভেন থেকে শুরু করে মাস্টার্স, সবাই উদগ্রীব হয়ে আছে আপনার সাথে হেসে হেসে কথা বলার জন্য।

_কিন্তু এখন তো বিকাল চারটা। কলেজ তো ছুটি হয়ে গিয়েছে।

আলো সামিনের দিকে তাকিয়ে আছে। সামিন দাঁত বের করে হাসতে থাকে কথাটি বলে। আলো ঠান্ডা গলায় বলে,”বেশ তবে রিদির কাছেই যান। দাঁড়ান আমি ইশিতা আপুকে বলছি আবারও তাকে ডেকে নিতে।”

কথাটি বলে আলো উঠে পরতে যায়, তখনই সামিন হুট করে শাড়ির আঁচল টেনে ধরে আলোর।

আলো চ’ম’কে উঠে সামিনের দিকে তাকায় । সামিন আলোর মুখের দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকে তার শাড়ির আঁচল ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। টেবিলের ড্রয়ারের কাছে গিয়ে ড্রয়ার থেকে একটা বিয়ের কার্ড বের করে আলোর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,”রিদির বিয়ের কার্ড। পাত্র এখানকার এসিল্যান্ড আসিফুল হক। মাথায় চুল কম, মানে টাকলা। সেটা নিয়েই ওকে ক্ষে*পাচ্ছিলাম। হাসাহাসি করছিলাম। এখন বলো, একজন মেয়র তার ছোটো বোনের সমতুল্য কারো সাথে মজাও করতে পারবে না?”

আলো বিয়ের কার্ড টার দিকে তাকিয়ে আছে। সামিন আলোর দিকে খানিকটা ঝুঁকে চোখ সরু করে বলে,”আচ্ছা একটা কথা বলো! তুমি এতো ক্ষে*পেছো কেন? ভালো টালো বেসে ফেললে নাকি আমাকে?”

আলো চুপ করে থাকে। সামিন হাসতে থাকে, হাসি থামিয়ে বলে, “তোমার মধ্যে কেমন বৌ বৌ একটা ভাব এসেছে। রিদিকে একটা ধন্যবাদ দিতে হবে।”

আলোর পুরো মুখ অ*স্বস্তিতে ছেয়ে গেছে। খুবই আশ্চর্য জনক ভাবে সে এই লোকটাকে ক*ড়া কথা শোনাতে পারছে না।

সামিন উঠে দাঁড়ায়। নরম গলায় বলে,”মজা করছিলাম। দুঃখিত। এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ফিল করতে শুরু করবে সেটা আমি আশা করি না। টেইক ইউর টাইম আছিয়া। শুধু আমাকে হারিয়ে দিও না। ”

কথাটা বলে সামিন চলে যায়‌ । আলো তখনও তার হাতের কার্ড টার দিকে তাকিয়ে থাকে।

***
“ভাই এই জাবিরের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ শুনছি। পার্টির নাম ডোবাবে।”

সামিন কিছু কাগজ দেখছিলো। সেগুলো থেকে চোখ না সরিয়েই রাহাতকে বলে,”কবির আংকেল জানে। সে ব্যবস্থা নিবে।”

_কি ব্যবস্থা? ভাগ্নে বলে সবসময় ছাড় পেয়ে যায়। পার্টির ক্রিড়া স*ম্পাদক অথচ কোনো যোগ্যতা নেই। খালি মেয়েলী যত ব্যাপারে আছে। সেদিন স্থানীয় সরকার দিবসের অনুষ্ঠানে কোথা থেকে দুটো মেয়ে এনে নাচিয়েছে। ছিঃ‌ লজ্জায় মাথা কা*টা যাওয়ার মতো অবস্থা!

_এগুলো হলো খু*জলির মতো বুঝলি রাহাত। একটা চুলকে শেষ করবি। আরেকটা উঠবে। চাপ নিস না। সময় মতো ঝে*রে ফেলবো। আচ্ছা ওর বোন জুঁইয়ের ব্যাপারে আপডেট থাকলে বল। ইলহামের অফিসে যায় নাকি?

_না ভাই, খবর তো পাইনি। তবে শুনেছি ইদানিং এন আর এইচ এন্টার*প্রাইজের মালিকের সাথে খুব ভাব। ভাই ইদানিং সমাজ টা গোল্লায় গিয়েছে একেবারে, অল্পবয়সী মেয়ে গুলো কোথায় ক্যারিয়ার গড়বে তা না করে কখনো বিবাহিত পুরুষ কখনো সু*গার ড্যা*ডি নিয়ে পরে আছে। ন*ষ্ট পুরো। এদিক থেকে আমাদের আলো ভাবী সেরা, কতটা আত্মনির্ভরশীল, পরিশ্রমী, একটা বা*জে রেকর্ড নেই, শুধু মাথায় একটু সমস্যা।‌

সামিন ম্লান হাসে। তারপর বলে,”ভুল বললি। একটু নয়, মাথায় পুরোটাই সমস্যা!”

***
“এভাবে লাইট জ্বে*লে বসে আছেন কেনো? নিজে না ঘুমাতে না চাইলে ঘুমাবেন না। আমাকে ঘুমাতে দিন।”
ধ*মকের সুরে বলে আলো।

সামিন বাঁকা হাসি হেসে মনে মনে বলে,”বিকেলে আমাকে শান্তিতে ঘুমাতে দাওনি। এখন আমিও তোমাকে ঘুমাতে দেবো না।”

মুখে বলে,”আমার বাতি। নগদ বারো হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। আমি জ্বে*লে রাখবো।”

আলো কপাল কুঁ’চ’কে শুয়ে থাকে। সামিন ঠোঁট টিপে কিছুক্ষণ হেসে নেয়। সে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে বসে ছিলো। হুট করে আলোর মাথায় আলতো করে হাত রাখে।
আলো ধরফরিয়ে উঠে বসে সামিনের দিকে তাকায়,”এভাবে মাথায় হাত বুলাচ্ছেন কেন?”
_আমার বৌ। নগদ তিন লক্ষ টাকা এবং ধীরে ধীরে একসমুদ্র ভালোবাসা জমা রেখে কিনেছি । আমি হাত বোলাবো।

_কার কাছ থেকে কিনেছেন?
_সাংবাদিক আতাউর আলমের কাছ থেকে।

_হ্যা, ঠিকই। আমরা মেয়েরা তো গরু ছাগল। বাপ আর স্বামী কেনা বে*চা করে।

সামিন আলোর কথায় পাত্তা না দেওয়ার ভান করে নকল হাই তুলে গুনগুন করে কিছু একটা বলে তারপর আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,”গান শুনবে আছিয়া?”
_না। ঘুমাবো।
_আমি তো গান গাইবো।

কথাটা শেষ করেই সামিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভাবে গাইতে শুরু করে,
“চান্দ ছুপা বাদাল-মে, শারমা-কে মেরি জানা,
ছিনে-ছে লাগ-যা তু, বালখা-কে মেরি জানা।”

আলো কান চেপে ধরে বলে,”থামুন। কি বাজে গান করেন আপনি!”

সামিন উচ্চশব্দে হেসে ওঠে, তারপর বলে,”ঠিক বলেছো। আমি রাজনীতি আর গান দুটোতেই অদক্ষ। খুব বাজে করি।”

আলো চুপ করে থাকে। সামিন বলতে থাকে,”একটা মজার ঘটনা বলি তোমাকে আছিয়া। সবুজ তো পলি*টিশিয়ান। তো ওদের বাসর রাতে ওর বৌ ওকে একটা গান গাইতে বলেছিলো। ও গলা খাঁকারি দিয়ে গাইতে শুরু করে,”যদি রাত পোহালে শোনা যেতো, বঙ্গবন্ধু মরে নাই।”

আলো জানপ্রাণ লাগিয়ে চেষ্টা করেও তার হাসি আটকে রাখতে পারলো না। বাচ্চাদের মতো খিলখিল করে হাসতে থাকে। সামিন মুগ্ধ চোখে আলোকে দেখছে। এমন ক*ঠিন মেয়েটার হাসি কি ভয়ং*কর সুন্দর!
সামিনের দৃষ্টি দেখে আলো হাসি থামিয়ে চোখ মুখ ক*ঠিন করে অস্ফুট স্বরে বলে,”আমি ঘুমাবো।”

সামিন আলোর দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বলতে থাকে,”রাজনীতি আর গান আমি দুটোই বাজে করি। কিন্তু একটা জিনিস খুব ভালো করি আছিয়া। আমি অনেক ভালো আদর করতে পারি দেখবে?”

আলো চ’ম’কে ওঠে। চোখ মুখ ফ্যা*কাশে হয়ে যায় তার। সামিন একটা বাকা হাসি দিয়ে হুট করে আলোর কপালে একটা চু*মু দিয়ে দেয়। আলো চুপচাপ বসে থাকে।

সামিন ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে,”ভয় পেয়ে গিয়েছিলে বুঝি? ভয় পেয়ো না, আমি কথার বরখেলাপ করবো না। যতক্ষন না তুমি অনুমতি দেবে, যতক্ষন না তোমার মন সায় দেবে, আমি আমার অধিকার ফলাবো না। কিন্তু এতো সুন্দর হাসি দেখার পরে , এই চু*মু টা না দিতে পারলে আজ আমি ছটফট করতাম সারা রাত। আত্মার উপর এতো জুলুম করা ঠিক নয় আছিয়া।”

চলমান……