#বসন্তপবনে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
০১.
১.
‘দেখুন, আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। আই এম প্রেগন্যান্ট।’
সেই ‘না’ না-ই থেকে গেলো। আদর, টিকলির বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেনি।
আদর টিকলির জার্নি’টা শুরু হয়েছিলো এক বৃষ্টির মৌসুমে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে। জার্নির পরিসমাপ্তি টাও গিয়ে ঘটলো ভুল বোঝাবুঝির আরেক বর্ষাতে। যে শ্রাবণের রাতে নিঝুম বৃষ্টি ছিলো। বাস চলার শব্দে আত্মা ছমছম করছিলো। ওরা ছয়জন এক সারির তিন-জোড়া সিট দখল করে নিরবে বসে জীবনের পসরা সাজাচ্ছিলো। হিসেব মেলাচ্ছিলো! সে বর্ষা’তে ওরা পালিয়েছিলো। হাতে হাত ধরে ছয়জন একসাথে…বুকে বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দের ঝিম ধরা মন্দ অনুভূতি নিয়ে। আদর-টিকলি, আর্দ্র-টায়রা, রাহুল-নিভা। সবার সবকিছু হলো। হলো না শুধু আদর, টিকলির।
‘শেষ পর্যন্ত তোদের বিয়েটা হলো না।’ টায়রা ফোনের স্ক্রিনে ওদের ছয়জনের ছবিতে হাত বুলালো। হাওয়ায় ভেসে এলো মনোয়ারা খানের ডাক,
‘টায়রা, একবার নিচে আয় তো মা।’
টায়রা ফোনের স্ক্রিন অফ করে গায়ে উড়না জড়িয়ে উঠে দাঁড়িয়ে শাশুড়ির কাছে গেলো। বিছানায় ফোনটা পরে রইলো উলটে। ফোনের উপর দু’ফোটা পানি। আর্দ্র গোসল থেকে এসে বাথরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে মুছতে মাথায় বহু চিন্তারা ধরা দিলো।
আর্দ্রর অটল বিশ্বাস, যেই গল্পটা বৃষ্টিতে শুরু হয়েছিলো সেই গল্প’টা আবার কোনো এক বসন্তে তরুর নতুন সাঁজের রঙ্গে নতুন রবে শুরু হবে। সে বসন্তে হয়তো নিগূঢ় মোলায়েম পবন থাকবে…থাকবে মৌসুমের প্রথম কোকিলের আনাগোনা….কুহু কুহু কলরবে ছেয়ে যাবে সারাবেলা!
২.
আদর ব্যস্ত পায়ে নিজের চেম্বারে ঢুকলো। রুমে ঢুকেই টাই ঢিলে করলো। বড় বড় শ্বাস ফেলে নিজেকে ধাতস্থ করতে চাইলো। ঢকঢক করে পানি খেয়ে গ্লাস’টা ছুড়ে মারলো একচোটে। কাচের গ্লাস ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে এদিক সেদিক ছড়িয়ে পরলো। নিউরোসার্জারি ডিপার্টমেন্টের সহকারী নার্স রিফা ভয়ে চোখ মুখ খিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলো। তার অপেক্ষার সময় দীর্ঘায়িত না করে আদরের বাঁজখাই গলার স্বর ভেসে এলো,
‘হু দ্যা হেল আর ইউ? তোমার সাহস কীভাবে হলো আমার পারমিশন ছাড়া রোগীকে এই ইঞ্জেকশন দেওয়ার?’
রিফা! বয়স সাতাশ। সবেমাত্র প্রমোশন পেয়ে নিউরোসার্জারি ডিপার্টমেন্টে ট্রান্সফার হয়ে এসেছে। ম্যারিটাল অবস্থা- অবিবাহিত। সে ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বললো,
‘সরি, স্যার।’
‘সরি? তোমার সরি ধুয়ে পানি খাবো আমি? রোগীর যদি হার্ট অ্যারিথমিয়া কিংবা হাইপোটেনশন হতো তার দায়ভার কে নিতো? আন্সার মি!’
আদর ডেস্কে বাড়ি দিয়ে উচ্চস্বরে বললো। তার চিৎকার দেয়ালে দেয়ালে বাড়ি খেয়ে রিফার মাথা ফাটিয়ে দিচ্ছে। জান’টা চলে এসেছে গলার কাছে। মুখ দিয়ে টু শব্দটুকু বের হচ্ছে না। কেবল অবলা, ভীত পাখির বাচ্চার মতো কাঁপছে। সে রোগীকে Inj. Phenytoin (IV) পুশ করেছিলো। যদিও ডাক্তার ছাড়া কোনো নার্সের এটা দেওয়া উচিত নয় কিন্তু সে ঠিকভাবে দিয়েছে এবং রোগীর কোনো ক্ষতি হয়নি। তবুও আদর রেগে মেগে অস্থির।
‘গেট আউট।’
রিফা নিঃশব্দে আস্তে করে রুম থেকে বেরিয়ে এসে বড় করে দম ফেললো। একটু দূরে তার দুজন সহকর্মী ভীত মুখে দাঁড়িয়ে ছিলো। রিফা মাথা নিচু করে তাদের কাছে যেতেই নিতু ওর মুখটা দু’হাতে ধরে বলল,
‘আহারে! মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে।’
কলি বলল, ‘আদর স্যার এতো রাগী কেনো? ধমকের শব্দে বাইরে থেকেই আমার আত্মা ধরফর করছিলো।’
নিতু নিচু আওয়াজে বলে, ‘আরে, স্যার আগে এরকম ছিলেন না। খুবই স্বল্পভাষী, বিনয়ী, হাসি-খুশি মানুষ ছিলেন।’
রিফা কৌতুহলী হলো,
‘হ্যাঁ, আমিও তো তাই দেখেছি। হঠাৎ স্যারের এমন পরিবর্তনের কারণ কি? হাসপাতাল যেনো থরথর করে কাঁপে তার জন্য। দেখ! আমার হার্ট এখনো কত জোরে বিট করছে!’
নিতু আগের চেয়েও নিচু আওয়াজে বলে, ‘আরে লাভ কেস নাকি! আদর স্যার তো একটা মেয়ে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলো। পরে নাকি মেয়েটা স্যারকে বিয়ে করেনি।’
রিফার চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে গেলো। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে বললো,
‘তুই কীভাবে জানলি এই গোপন তথ্য?’
‘আরে ডাঃ আসিফ স্যার তো আদর স্যারের বন্ধু। ওদের আলাপ একদিন শুনে ফেলেছিলাম।’
,
ব্যস্ত ঢাকা শহরের ব্যস্ত জ্যাম! আদর যাচ্ছিলো ‘খান’ বাড়ির দিকে। মনোয়ারা খান নাকি আবার আদরকে বিয়ে করানোর জন্য পাগলামি শুরু করেছেন। এ নতুন নয়। সেই টিকলির সময় থেকে তার পাগলামো শুরু হয়েছে। টিকলি! ঠোঁটের আগায় বেখেয়ালে নামটা উচ্চারিত হতেই মাথায় বলের মতো ঢপ খেলো। আদর স্টেয়ারিং চেপে ধরলো। জ্যাম ততক্ষণে ছেড়ে দিয়েছে। হাই স্পিডে গাড়ি টেনে কণ্ঠে রুঢ়তা নিয়ে বলল,
‘আমি আদর খান। কোনোদিন আপনার মুখ দেখবো না।’
কিন্তু সেই মুখের কথা টিকলো কতক্ষণ! আদরের ফোনটা আপনস্বরে বেজে উঠলো তৎক্ষণাৎ। কানে ব্লুটুথ অন করতেই ওপাশ থেকে বলল,
‘স্যার কতদূর এসেছেন?’
আদর স্টেয়ারিং এ বাড়ি মারে নিঃশব্দে। শিট! ওর তো আজ সন্ধ্যায় ইভেন্ট আছে। কপালে দুই আঙ্গুল ঠেকিয়ে আদর বড় করে মুখ ফুলিয়ে শ্বাস ছাড়লো। ঘড়িতে সময় দেখে নিয়ে বলল,
‘রফিক! আমি মাত্র হসপিটাল থেকে বের হতে পারলাম। বাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসছি।’
আদর দ্রুত খান বাড়ির দিকে গাড়ি টানলো। নীল রঙা বাড়ি’টায় নতুন রং করা হচ্ছে। আদর চেয়েছিলো ক্রিম হোয়াইট। কিন্তু আজিম খান বাড়ির রং করাচ্ছেন নেভি ব্লু। হালকা নীল থেকে গাঢ় নীল এইতো? এই নীলের মাঝে যে কি পেয়েছে বাবা আদর বুঝে না। অবশ্য বোঝার চেষ্টাও করে না। বাড়ির সামনের শিমুল তুলার গাছের নিচে আদর গাড়ি পার্ক করে রেখে দ্রুত বেগে উপরে উঠে যায়।
ড্রইংরুমেই বসে আছেন মনোয়ারা খান। টিভিতে চ্যানেল চলছে আর মায়ের গুনগুন কান্নার আওয়াজ। টায়রা পাশে বসে শাশুড়ির মাথা কাধে নিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে। আর্দ্র সোফার হাতলের উপর বসে বিরস মুখে ফোন টিপছে। আজিম খান নিজের ঘরে। আদর বিশেষ পাত্তা দিলো না। হন্তদন্ত হয়ে নিজের ঘরের দিকে ছুটতেই মনোয়ারা খান হায়হায় করে উঠলেন,
‘দেখো দেখো! কেমন অসভ্য ছেলে হয়েছে দেখো? মায়ের কান্নাও যেই ছেলের কানে যায় না সেই ছেলে বাড়িতে আসে কোন লজ্জায়?’
আদরের তেড়ছা উত্তর, ‘তবে বাড়িতে আর না আসি?’
শুনেই মনোয়ারা খান কান্নার আওয়াজ বাড়িয়ে দেন। আর্দ্র চোখ খিচে কানে নখ গুজে। মিনিট দুয়েক পর চেঁচিয়ে বলে,
‘ভাইয়া, ডেইলি বাসার চিৎকার-চেঁচামেচি ভালো লাগছে না।’
‘তো কি করবো বল? আমি বাড়ি থেকে চলে যাই তাহলে যদি তোর মা আমাকে একটু শান্তি দেয়।’
আদর বুকে হাত ভাঁজ করে দাঁড়ায়। মনোয়ারা খান ভেজা চোখে বলেন,
‘বুঝবি না তো। মায়ের কষ্ট বুঝবি না। হাতে পায়ে বড় হয়েছিস। মাকে আর কীসে দরকার? ছোটবেলায় না গু-মুত সাফ করার জন্য একটা বান্দি প্রয়োজন ছিলো বাপ-পোলার।’
আদর দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোফায় বসে টায়রার কাধ থেকে মায়ের মাথা’টা উঠিয়ে নিজের কাধে নেয়। মায়ের হাত’টা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে ধীর, গভীর কণ্ঠে বলে,
‘কেনো এমন করো, মা?’
‘আমি কি এই জীবনে আমার বড় ছেলের বউ দেখে যেতে পারবো না?’
‘না। ছোটছেলের বউ দেখছো তো।’
‘তুই কি বিয়ে করবি না?’
আদরের দৃঢ় উত্তর, ‘না।’
সেই থমথমে কণ্ঠের কাছে মনোয়ারা খান কান্না ব্যতীত আর কিছুই বলতে পারেন না।
‘বড় বউ দেখবে বলে আমার মাথা না খেয়ে তোমার ছেলেকে বলো তোমাকে নাতী-নাতনির মুখ দেখাতে।’
আর্দ্র ওমনি নিজের ফর্মে ফিরে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলে,
‘তোমার জন্যই তো আমার বাসর হচ্ছে না ভাইয়া।’
এতে আদরের তেমন কোনো অভিব্যক্তি প্রকাশ না পেলেও মনোয়ারা খান টায়রার দিকে বড় বড় চোখে তাকালেন। টায়রার বরাবরই লজ্জা সরমের বালাই নেই। সুতরাং সে এই মূহুর্তেও লজ্জা পেলো না। কিন্তু ভুল জায়গায় আর্দ্রর ভুল কথা শুনে নিজের হাতদুটো কচলালো। টায়রা জানে আদর টিকলির জীবনের সেই বসন্ত পবনের বেশি দেরি নেই। খুব শীঘ্রই ওদের জীবনে মিরাক্কেল হয়ে প্রেমের ছন্দ শুরু হবে। টায়রা সেই আশায় নিজের জীবনটাও গুছিয়ে নিচ্ছে না। যেখানে বোনের জীবন’টা যাচ্ছেতাই সেখানে সে কি করে ভালো থাকবে?
আদর যাওয়ার আগে টায়রার মাথায় হাত বুলিয়ে শুধু এতোটুকু বলে গেলো,
‘বিয়ের ছয় মাস হয়ে গেছে, টায়রা। বাচ্চামো করো না আর।’
টায়রা কি আর সবার মতো কলের পুতুলের ন্যায় আদরের কথায় জি স্যার জি স্যার করবে? সে মুখ ঝামটা মেরে বলে,
‘করবো। কারণ আমি নিজেই একটা বাচ্চা।’
আদর গম্ভীর হেসে চলে যায়। টায়রা তার প্রতিটা পদক্ষেপ গুণে রাখে। আদর নিজের ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ফ্রেশ হয়ে কালো স্যুট, সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট হাতে নেয়। পড়নে সফেদ রঙের ওলের টাওয়াল। ফর্সা গায়ে বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটা। ভেজা চুলগুলো শুকাতে শুকাতে আদর গভীর দুঃখী শ্বাস ফেলে চোখটা বন্ধ করে। সে টায়রার মুখের দিকে পরিপূর্ণ ভাবে তাকাতে পারে না। ওই মুখটা….. ওই মুখটা ঠিক যেনো টিকলির আদল। আদর পারে না বেশিক্ষণ তাকাতে। তার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। চক্ষুদ্বয় রক্তাভ হয়। শরীরের রক্তের বেগ বেড়ে যায়। আদর মানতে পারে না সেইদিনের করা টিকলির সেই বিচ্ছেদ। নেত্রপল্লব ভিজে আসে যার্তনার পিড়ায়!
৩.
টিকলি ব্যস্ত সময় পার করছে। টাইট শিডিউল! তার থার্ড ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের পদে যুক্ত আছে। আজকের ইভেন্ট হিউজ। ইভেন্ট ডিরেক্টর থেকে স্পন্সরশিপ ম্যানেজার সবাই উপস্থিত। ডাক্তারদের সংবর্ধনা জানানোর ইভেন্ট। এতো বড় ইভেন্টের মাঝখানে একটা গন্ডগোল লেগেছে তা হলো স্টেজ ম্যানেজারের পেট খারাপ। এই পর্যন্ত ১১ বার বাথরুমে দৌড়েছেন। তো সেই দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পরলো টিকলির। কারণ টিকলির ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার কাছে স্টেজ ডিজাইন কিচ্ছু না। সে তুড়িতে সব করে ফেলবে। যে স্টেজ ম্যানেজার সে আবার টিকলির বন্ধু নিরব। টিকলি ফোনে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
‘আসতি! কত ডাক্তার থাকবে! তোর পেটের চিকিৎসা’টা ফ্রিতে করাতে পারতাম। হাদারাম! সকালেই একটা মেট্রো খেয়ে নিতে পারলি না?’
টিকলি রাগে ফোন কাটলো। এই পর্যন্ত সমস্ত কাজে টিকলির ক্রিয়েটিভিটি প্রশংসনীয় হয়েছে। তাই ডিরেক্টর টিকলির কাধে দিলেন চাপিয়ে। যাও নিজের ক্রিয়েটিভিটির গুষ্টি মারো। অসহ্য! টিকলি ইনকিউবেশন সেন্টারের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। তার অসহ্য মুডকে একটু স্বস্তি দিতে দখিনা থেকে ছুটে এলো একদলা ফাগুন হাওয়া। টিকলি প্রাণভরে হাওয়া খেলো। এরমাঝে ফোন’টা বাঁজখাই গলায় বেজে উঠলো।
‘বল।’
‘কি করিস?’
‘নাচতেছি। নাচবি?’
‘রেগে আছিস?’
‘নাহ।’
‘কাজ করতেছিস?’
‘বা* করতেছি।’
টায়রা নিজের কান দু’হাতে চেপে ধরে বলে,
‘আস্তাগফিরুল্লাহ্। ছি ছি ছিহ! কান’টা পঁচে গেলো রে। আমার ওমন শান্ত শিষ্ট বোনের চরিত্রের এই শিষ্টাচার আমি কিছুতেই মানতে পারছি না।’
‘না মানতে পারলে পরের পরীক্ষার প্রিপারেশন নে। আমার ভরসা করিস না। আমি মাত্রাতিরিক্ত ব্যস্ত। এই পরীক্ষায় তুই না পড়লে দু’জনেই ফেইল। ফেইল! ফেইল!’
ফোন কেটে টিকলি আরেকজনকে ফোন লাগালো,
‘হ্যাঁ, সব কমপ্লিট? স্টেজের লাইটিং? সাউন্ড’টা চেক করেছো? লাইট জ্বলছে-নিভছে মানে কি? আমি তো ঠিকই দেখে এলাম। প্রডাকশন ম্যানেজারকে জানাও। কুইক! আর মাত্র হাতে দশ মিনিট সময় আছে।’
একটা হার্ড-বোর্ডের উপর রাখা পেপারে যেগুলোতে প্রবলেম সেগুলোতে ক্রস চিহ্ন দিতে দিতে টিকলি কথা বলে যায়। কান দিয়ে কাধে ফোন চেপে কথা বলতে বলতে টিকলি পেছন দিকে ঘুরতেই অকস্মাৎ থেমে গেলো। হাত থেকে বোর্ড পরে গেলো মাটিতে। তার চোখদুটো স্থির হলো। হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ দিয়েছে সেকেন্ড কতক হয়েছে। মনে হলো আশেপাশে ভূ-কম্পনের ন্যায় সবকিছু চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ফাটল ধরে যেতে লাগলো। জীবনটা থমকে দাঁড়ালো সে-ই বসন্তের মৃদু পবনে!
চলবে❤️