বসরাই গোলাপের ঝাড় পর্ব-১০

0
408

#বসরাই_গোলাপের_ঝাড়
#ফারহানা_কবীর_মানাল

১০.
নববী নাইমার কাছেই ছিল। ঘুমানোর আগপর্যন্ত সে তার পাশে বসে রইল। আকাশে চাঁদ নেই। মেঘে ঢাকা পড়ে আছে। হাতে গোনা করেকটা তারা দেখা যাচ্ছে। সেগুলো খুব বেশি আলো দিতে পারছে না। নববী ঘরে ঢুকতেই হাবিব বিছানায় উঠে বসল। স্বাভাবিক গলায় বলল, “নাইমা ঘুমিয়ে পড়েছে?”

“হ্যাঁ, বলেছিলাম আমি থাকি। রাতে ভয় পাবে। রাজি হলো না।”

“ছোটবেলা থেকেই একা ঘুমাতে অভ্যস্ত। কাউকে পাশে রাখলে তার ঘুম হয় না।”

নববী সরল হাসি হাসলো। ঘরের বাতি নিভিয়ে দিয়ে হাবিবের পাশে বসতে বসতে বলল, “আমার খুব চিন্তা হচ্ছে। দুলাভাই সহজ মানুষ না। নাইমার কথা বুঝতে সময় নিবেন না। ভয় হচ্ছে যদি ওর কোন ক্ষ’তি করে দেয়।”

“দুলাভাই আমাদের বাড়িতে আছে। সবার চোখ এড়িয়ে এতদূর আসতে পারবে না। তবুও চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।”

“জিনিসগুলো উনার কেনা হতে পারে না?”

“কেনা হলেও বৈধ নয়। বৈধ কিছু লুকিয়ে রাখার প্রয়োজন হয় না।”

“জিনিসগুলো আমাদের বাড়িতে কেন রাখবে? সে তো নিজের বাড়িতেও রাখতে পারত।”

“ঝুঁকি নিতে চায়নি। তবে এসব করল কখন?”

“মনে করে দেখো। কয়েক মাস আগে, দুলাভাই আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান রাতের বেলা ছিল। আমার মনে হয় তখন এসব করেছে।”

“হতে পারে। অনুষ্ঠানের সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না, জরুরি কাজ আছে বলে বেরিয়ে গেছিলেন।”

নববী দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। হতাশ গলায় বলল, “মানুষ এমন হয় কেন? কেন খারাপ কাজ করে?”

“মানুষ এমন বলেই আল্লাহ বিচারের ব্যবস্থা রেখেছেন।”

“ঠিক বলছো।”

“নববী!”
হাবিবের গলার স্বর অন্যরকম শোনালো। নববী চমকে স্বামীর দিকে ফিরলো। তরল গলায় বলল, “কিছু বলবে?”

“অনেকদিন বাদে তোমাকে হাসতে দেখলাম। এই হাসি মুছে যেতে দিও না। জীবনে কষ্ট থাকে, কষ্ট মাড়িয়েই আমরা বেঁচে থাকি।”

নববী হাবিবের হাত চেপে ধরলো। ব্যস্ত গলায় বলল, “তোমাকে বলা হয়নি। আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম।”

“কি স্বপ্ন?”

“সোহেলেকে নিয়ে।” নববী গোটা স্বপ্নের বর্ণনা দিলো। বলতে গিয়ে খেয়াল করল সে কিছু ভুলে যায়নি। প্রতিটা কথা মনে রাখতে পেয়েছে। হাবিব খুব মনযোগ দিয়ে সব কথা শুনলো, তবে বিশেষ কিছু বলল না। শান্ত ভঙ্গিতে হাত দিয়ে নববীর কপল স্পর্শ করল। নববী মাথা নিচু করে রেখেছে। হঠাৎই তার ভীষণ লজ্জা লাগছে। বহুদিন ধরে এই মানুষটা সাথে সংসার করেছে, আড়ালের কিছু নেই। তবুও মাঝেমধ্যে সে ভীষণ লজ্জা পায়। ভালোবাসে সেজন্যই বোধহয় এমন অনুভূতি হয়।

আনিস সারারাত ঘুমাতে পারেনি। বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করেছে৷ শেষ রাতের দিকে তন্দ্রা মতো এসেছিল। তন্দ্রায় দেখল দুঃস্বপ্ন। সে চিৎকার করে বিছানায় উঠে বসল। তার সমস্ত শরীর ঘামে ভিজে গেছে। জেগে ওঠার পরেও সে অনেকক্ষণ ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপল। তীব্র ভয়ে তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। কনক বলল, “কি হয়েছে তোমার? শরীর খারাপ লাগছে?”

আনিস হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছল। নিজেকে শান্ত এবং স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে করতে বলল, “পানি দাও। পানি খাবো।”

কনক পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। সে চিন্তিত মুখে স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষটার চোখের নীচ বসে গেছে। তবে কি রাতে ঘুমাতে পারেনি? আনিস শান্ত ভঙ্গিতে পানি পান করল। বিছানা থেকে নেমে পুকুর ঘাটে চলে গেল। পুকুরের পানি বরফের মতো ঠান্ডা। চোখে-মুখে ছড়াতেই শরীর জুড়িয়ে গেল। তবে তখনও তার ভয় কাটেনি। দুঃস্বপ্নের ঘোর কাটিয়ে ওঠা সহজ কাজ নয়। অনেকে দীর্ঘদিন এই ঘোরের মধ্যে থাকে। স্বপ্নের সাথে বাস্তবতা মিলিয়ে নিজের কল্পনা সাজায় এবং নিজেকে কষ্ট দেয়।

তীব্র ভয় অনেকটা যেমন হঠাৎ তেমনি হঠাৎই চলে যায়। রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আনিসের ভয় কে’টে গেল। শুধু যে ভয় কাটল তাই না, হাসিও পেতে লাগলো। হাবিবের সাথে তার সম্পর্কে বিশেষ কিছু নেই। দেখা হলে কেমন আছেন কি এতটুকুই। তাকে ঘিরে দুঃস্বপ্ন দেখার কোন মানে হয় না। সকালের নাস্তার শেষে আনিস বরশী হাতে পুকুরপাড়ে বসল। উৎফুল্ল গলায় বলল, “মাছ ধরব আম্মা। ভোরে বিরাট এক কাতলা মাছ দেখেছি। ওটাকেই ধরব। আপনি পেঁয়াজ মরিচ বেটে রাখেন। অনেকদিন হলো বাটা মশলার তরকারি খাওয়া হয় না।”

শরিফা বেগম মাথা দোলালেন। কনক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে স্বামীর দিকে তাকালো। সকালে ভয় পেয়ে গেছিল। এখন তাকে দেখে ভয়ের কোন কারণ নেই। উৎসাহী ভঙ্গিতে মাছ ধরার আয়োজন করছে। মুখে চওড়া হাসি। রোহানও তার বাবার পাশে মাছ ধরতে বসল। জ্বলমলে গলায় বলল, “দুটো মাছ ধরবে। একটা মাথা তোমার একটা মাথা আমার।”

কনক হেসে বলল, “শুধু বাপ ছেলে খাবে। আমায় দেবে না?”

“হ্যাঁ, তাই তো। তাহলে তিনটে মাছ ধরবে।”

আনিস হেসে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। শরিফা বেগম রান্নাঘরে বসে মশলা বাটছিলেন। শত হলেও জামাইয়ের আবদার ফেলে দিতে পারেন না। কনকের চিৎকারে তার ঘ্যান ভাঙলো। মশলাপাতি ফেলে রেখে ছুট লাগালেন। গিয়ে যা দেখলেন তাতে তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। রোহান পানিতে পড়ে গেছে। আনিস তাকে উঠানো চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। বয়স অপেক্ষা রোহান বেশ ভারী, রিষ্ট-পুষ্ট শরীর। মহিউদ্দিন সাহেব বারান্দায় বসে খবরের কাগজ পড়ছিলেন। তিনি দৌড়ে এসে নাতিকে পানি থেকে তুললেন।
পানি থেকে তোলার পর প্রথমেই খেয়াল করলেন নিঃশ্বাস নিতে পারছে কি-না। রোহানের নিঃশ্বাস নিতে পারছে না এবং জ্ঞান নেই।
মহিউদ্দিন সাহেব রোহানকে উপুড় করে শুইয়ে, পেট ধরে উঁচু করতে হবে, যেন মাথা এবং বুক নিচের দিকে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে পিঠে চাপড় দিতে লাগলেন। পেটে পানি নেই নিশ্চিত হবার পর রোহানকে চিৎ করে শুইয়ে দিলেন। সিপিআর বা কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়ার জন্য থুতনি আলতো করে উপরের দিকে তুলে ধরে মুখে কয়েকবার ফু দিতে দিলেন। শ্বাস ত্যাগের জন্য কয়েক মিনিট সময় দিলেন। যতক্ষণ না রোহানের বুক ফুলে না ওঠে ততক্ষণ তিনি একই কাজ করলেন। ফুঁ দেবার পর তার বুকে ত্রিশবার চাপ দিলেন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তিনি একই কাজ করে গেলেন। তীক্ষ্ণ গলায় বললেন, “ কনক তাড়াতাড়ি করে শুকনো কাপড় নিয়ে এসো। আনিস গাড়ি ডাকতে যাও। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।”

আনিস ভেজা গায়ে গাড়ি খুঁজতে বের হলো এবং খুব দ্রুত গাড়ি পেয়ে গেল। বাচ্চা পানিতে পড়ে গেছে শুনেই লোকটা চলে এসেছে। দ্বিতীয় প্রশ্ন করেনি। কনক চিৎকার করে কাঁদছে। শরিফা বেগম মেয়েকে স্বান্তনা দিতে লাগলেন। মহিউদ্দিন সাহেবকে বললেন, “হাবিবকে কল দাও। ওদের সবাইকে আসতে বলো। আল্লাহ!”

মহিউদ্দিন সাহেব কড়া চোখে আনিসের দিকে তাকালেন কিন্তু কিছু বললেন না। আনিস বলল, “সদর হাসপাতালে নেবার দরকার নেই, বিভাগীয় শহরে চলেন।”

মহিউদ্দিন সাহেব শান্ত গলায় বললেন, “বিভাগীয় শহরে যেতে সময় লাগবে। এসব ক্ষেত্রে দেরি করার সুযোগ নেই। আপাতত এখানে যাওয়াটাই ঠিক মনে হচ্ছে।”

আনিস কিছু বলল না। শূন্য দৃষ্টিতে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

হাসপাতালের ইমার্জেন্সি রুমের সামনে ভীড় জমে গেছে। আগ্রহী জনতা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কেউ কেউ কানাঘুঁষা করছে। ডাক্তার সাহেব বেঁটেখাটো মানুষ। স্বাস্থ্যবান চেহারা, মাথায় টাক পড়ে গেছে, জুলফির কাছে কয়েকটা চুল সাদা। তিনি রুক্ষ গলায় বললেন, “এত বড় ছেলেকে সাঁতার শেখাননি কেন? জানেন না চার বছর বয়স হলে বাচ্চাদের সাঁতার শেখাতে হয়।”

আনিস মাথা দোলালো। মহিউদ্দিন সাহেব বললেন, “এখন কি অবস্থা?”

“দেখুন পানিতে ডুবে মৃ’ত্যুর প্রধান কারণ হলো ডুবন্ত ব্যক্তির শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া। পানি শ্বাসনালি ও ফুসফুসে ঢুকে যাওয়ার কারণেই মূলত এমনটা হয়ে থাকে। এ ছাড়া স্বরযন্ত্র ও শ্বাসনালির অনৈচ্ছিক পেশি সামান্য পানির সংস্পর্শে আসা মাত্র তীব্র সংকোচনের কারণেও শ্বাসনালিতে বায়ু চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এভাবে দুই থেকে তিন মিনিট শ্বাস বন্ধ থাকলে মস্তিষ্কের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। আর চার থেকে ছয় মিনিট যদি শ্বাসক্রিয়া বন্ধ থাকে, তাহলে মৃ’ত্যু ঘটে। রোগীর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আর সামান্য সময় পানিতে থাকলে বাঁচানো সম্ভব হতো না। প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার জন্য অবস্থা কিছুটা ভালো, মৃ’ত্যুর আশঙ্কা নেই। তবে এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।”

আনিস ক্ষিপ্র গলায় বলল, “আপনার থেকে ব্যাখ্যা জানতে চাইনি। কি করবেন তাই বলুন।”

“আপাতত অক্সিজেন দেব। বাকিটা আপনি বললেও বুঝবেন না।”

আনিসের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। কিন্তু সে কিছু বলল না। ডাক্তার সাহেব নার্সকে ডাকতে ডাকতে বেরিয়ে গেলেন। মহিউদ্দিন সাহেব বললেন, “লোকের সাথে গলাবাজি করতে তোমার জুড়ি মেলা ভার অথচ বাচ্চা ছেলেটাকে দেখে রাখতে পারলে না। তোমার পাশ থেকে পানিতে পড়ে গেল এবং এমন অবস্থা হয়েছে। কি করছিলে তুমি?”

আনিস মাথা নিচু করে সরে দাঁড়ালো। কনক বলল, “আব্বা রোহানকে বড় কোন হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভালো হত না?”

মহিউদ্দিন সাহেব কড়া চোখে তাকালেন। পকেট থেকে মোবাইল বের করে কানে চেপে ধরলেন। ওপাশ থেকে হাবিব বলল, “আব্বা কি হয়েছে? এতবার কল দিয়েছিলেন কেন?”

“রোহান পানিতে পড়ে গেছে। অবস্থা ভালো না হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার বলেছে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তোমরা ফিরে এসো।”

হাবিব কিছু বলল না। মহিউদ্দিন সাহেব কল কে’টে দিলেন। নববীরা যখন হাসপাতালে পৌঁছাল ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে গেছে। চারদিকে ইলেকট্রিক বাতি জ্বলছে। বিশেষ অন্ধকার নেই। তবে কেমন শীত শীত লাগে। নববী গায়ের চাদর টেনে দিলো। নাইমা বলল, “এসব হলো কিভাবে?”

শরিফা বেগম রোহানের পায়ের কাছে বসে ছিলেন। তিনি উঠে দাঁড়ালেন। ভেজা গলায় বললেন, “জানি না। আমি রান্নাঘরে ছিলাম। কনকের চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি নানা ভাই পানিতে ভাসছে। আনিস কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে আছে।”

নাইমা কিছু বলল না। ধীর পায়ে হেঁটে রোহানের কাছে বসল। কনক বোনের হাত চেপে ধরে কান্না করছে। হাবিব তার কাঁধে হাত রেখে বলল, “কাঁদে না আপা, কাঁদে না। আল্লাহ চাইলে সব ঠিক হয়ে যাবে। দুলাভাই কোথায়?”

“সে বাইরে গেছে। ডাক্তার কিসব ওষুধ আনতে বলল।”

“ওহ আচ্ছা।”

শরিফা বেগম বললেন, “তুই একটা কাজ কর। নববী নিয়ে বাড়ি যা। রান্নাবান্না করে নিয়ে আয়। হোটেলের খাবার-দাবার ভালো হবে না।”

হাবিব শুকনো মুখে আচ্ছা বলল। নাইমা বলল, “আমিও ভাইয়ার যাব।”

শরিফা বেগম বললেন, “তোর যেতে হবে না। কনকের কাছে থাক। ভরসা পাবে।”

নাইমা আর কিছু বলল না। অসহায় দৃষ্টিতে হাবিবের দিকে তাকালো। হাবিব অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। অল্প সময় পর হাবিব নববীকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেল। ওরা বেরিয়ে যাবার পরপরই আনিস আসলো। নাইমা দিকে তাকিয়ে লম্বা শ্বাস নিলো। রোহানের গায়ে হাত রাখতে গিয়ে ফিসফিস করে বলল, “অতিরিক্ত কৌতূহল এবং পাতি গোয়েন্দা স্বভাব বিপদের কারণ হতে পারে শালিকা। তোমার উচিত ছিল নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা।”

নাইমা বিছানার চাদর খামচে ধরলো। আনিস বলল, “কাউকে বলে দিয়েছ?”

নাইমা না সূচক মাথা দোলালো। শরিফা বেগম বললেন, “নাইমা ওখান থেকে সরে আয়। দেখছিস না জামাই বসবে।”

নাইমা শান্ত ভঙ্গিতে সরে এলো। তার মুখে ভয়ের ছাপ নেই। যেন কিছুই হয়নি।

নববীর রান্নাঘরে ঢুকতে সাতটা বেজে গেল। শীতের দিনে সাতটা কম রাত নয়। হাবিব বলল, “কোন সাহায্যে লাগলে বলো। এতটা পথ এসেছ। শরীর ক্লান্ত হয়ে আছে।”

“কিছু লাগবে না। তুমি গিয়ে বিশ্রাম নাও। আমি করে নিতে পারব।”

“কি রাঁধবে?”

“এখনও জানি না। প্রথমে কি আছে দেখে নিতে হবে তারপর সিদ্ধান্ত নেব।”

হাবিব গিয়ে ফ্রিজ খুলল। বিরক্ত গলায় বলল, “এখানে কয়েকটা ডিম আর গাজর ছাড়া কিছু দেখছি না।”

“বাজার শেষ হয়ে গেছে বোধহয়। ডাল চাল আলু দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে ফেলি। সাথে ডিম ভাজা আর শশা কেটে দেব।”

“এতেই হবে। রান্না শুরু করো।”

নববী রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। হাবিব ফ্রিজ থেকে গাজর বের করে ধুয়ে আনলো। চেয়ারে বসে গাজর চাবাতে চাবাতে বলল, “ভালোই মিষ্টি।”

নববী সেদিকে খেয়াল দিলো না। কাজে ব্যস্ত হয়ে রইল।

চলবে