#বাতাস_বলে_দেয়
#ফারহানা_কবীর_মানাল
১৫.
হামজা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। ঝাঁ-ঝাঁ রোদে শরীর জ্ব’লে যাচ্ছে, তবু নড়ছে না। তার চোখ-মুখ শক্ত হয়ে গেছে। ভ্রু কুঁচকে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। খানিকক্ষণ আগে নাইমা একটা ছেলের সাথে কথা বলছিল। ছেলেটার অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হয় তারা দু’জন পূর্বপরিচিত। কথা শেষে একসাথে অটোরিকশায় উঠেছে। ব্যাপারটা তার কাছে ভালো লাগেনি৷
গতকাল রাতের পর সে আর বাড়ি ফেরেনি৷ হাসপাতালেই ছিল। শেষ রাতের দিকে মশায় কা’ম’ড়ে গায়ে লাল লাল দাগ বসিয়ে দিয়েছে। গরমে ঘেমে একাকার অবস্থা। শরীরের ক্লান্তি এবং মনের বিরক্তি মিলেমিশে একাকার অবস্থা।
হামজা ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলল। রোদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে হাত উঁচু করে রিকশা ডাকল। তার গা কুটকুট করছে। গা ধুতে না পারলে আর ভালো লাগবে না।
নাইমা ব্যস্ত স্বরে বলল, “চাচা একটু দ্রুত চালান। ওই যে ওই রিকশাটা ধরতে হবে।”
অটোওয়ালা গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিলো। রোহান বলল, “কে হয় তোমার? এমন ছটফট করছ কেন সেটাই বুঝতে পারছি না।”
“আপনার বুঝতে হবে না। চুপ করে থাকুন।”
“বা রে! আমিই কথাটা বললাম আর এখন আমাকেই চিনছ না? চমৎকার মেয়ে তুমি।”
নাইমা শক্ত চোখে রোহানের দিকে তাকাল। ততক্ষণে অটোওয়ালা রিকশা ধরে ফেলেছে। রোহান চিৎকার করে বলল, “মামা রিকশা থামাও। রিকশা থামাও মামা।”
রিকশা থেমে গেল। তারা দু’জন অটো থেকে নেমে কাছে গিয়ে দেখল রিকশায় কেউ নেই৷ নাইমা বিস্মিত চোখে রোহানের দিকে তাকাল। রোহান বলল, “মামা, তুমি একটু আগে হাসপাতালের সামনে থেকে দু’জন লোক নিয়ে এসেছ না?”
রিকশাওয়ালা মাথা দোলালো। স্বাভাবিক গলায় বলল, “মাত্রই ওদিকেই নামিয়ে দিয়ে এলাম। কেন কিছু হয়েছে?”
নাইমা বলল, “কোথায় নামিয়ে দিয়ে এসেছেন? আমাকে দেখাতে পারবেন?”
“পারব না কেন? রিকশায় ওঠেন, নিয়ে যাচ্ছি।”
“আপনার রিকশায় বসে উনারা কোন কথা বলেছে? সাধারণ কথাবার্তা বা যে-কোন কিছু?”
রিকশাওয়ালা মাথা দোলালো। সহজ গলায় বলল, “তারা কোন কথাই বলেনি। শুধু জায়গায় নাম বলেছিল। এই!”
নাইমা ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস গোপন করল। ব্যাগ থেকে টাকা বের করে অটোওয়ালার হাতে দিলো। কৃতজ্ঞ গলায় বলল, “আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এটা রাখুন।”
রোহান আঁড়চোখে তার দিকে তাকাল। নিচু গলায় বলল, “এত টাকা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না৷ এতটুকু রাস্তায় দু’জনের ভাড়া খুব বেশি হলে পঞ্চাশ টাকা। তুমি দ্বিগুণ দিয়েছ।”
“খুশি হয়ে দিয়েছি। উনি যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।”
“হয়তো তুমি অনেক ধনী পরিবারের মেয়ে। তাই এভাবে খরচ করতে পারছ। পঞ্চাশ টাকা আমার কাছে অনেক কিছু। হিসাব করলে দু’বেলা খাওয়া হয়ে যায়।”
নাইমা আঁড়চোখে রোহানের দিকে তাকাল। ছেলেটা বেশ সহজ গলায় কথাগুলো বলছে। কোন প্রকার সংকোচ ছাড়াই বলেছে। এমনভাবে বলছে যেন সে তার খুব পরিচিত কেউ একজন। নাইমা আর ভাবল না। তড়িঘড়ি করে রিকশায় উঠে বসল৷ বসেই রিকশা চালাতে বলল। রোহানও লাফিয়ে তার পাশে গিয়ে বসল।
নাইমা বলল, “আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
রোহান ভাবলেশহীন গলায় বলল, “আপাতত মামা যেখানে নিয়ে যাচ্ছে সেখানে যাচ্ছি। এত সময় নষ্ট করলে কিন্তু তোমার সেই লোকের দেখা পাবে না। কাজেই চুপচাপ থাকো।”
রিকশা বেশ দ্রুত চলছে। বাতাসের ঝাপটায় নাইমার হিজাব উড়ছে। দু-জনের মাঝে বেশ অনেকটা জায়গা ফাঁকা। তবুও সে যবুথবু হয়ে একপাশে সরে বসেছে। চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। রোহান নাইমার দিকে তাকিয়ে আরও একটু দূরে সরে বসল। নরম গলায় বলল, “খুব বেশি অস্বস্তি লাগলে তোমার কাঁধের ব্যাগটা মাঝখানে রেখে দাও।”
নাইমা ব্যাগ রাখল না। কঠিন মুখে বলল, “এই মুহূর্তে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারি।”
“তাই?”
“কোন স’ন্দে’হ আছে? আমি কুজুশি জানি। আয়কিডো কৌশলও জানি। এক মুহূর্তে আপনাকে ফেলে দিতে পারব।”
“কিন্তু তুমি তো তেমন কিছু করছ না। বরং বিব্রত হয়ে সরে সরে বসছ। যেন প্রথমবার তোমার পছন্দের..”
রোহান কথা শেষ করতে পারল না। রিকশাওয়ালা রিকশা থামিয়ে হাত উঁচু করে বলল, “লোক দু’টো ওদিকে গিয়েছে।”
জায়গাটা বেশ নিরিবিলি। গাছপালায় ঘেরা ইটের পথ দক্ষিণে চলে গেছে। নাইমা রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মেটালো। সাধারণত রিকশাওয়ালারা বেশ বাঁচাল প্রকৃতির হয়। সারাক্ষণ কথা বলতে থাকে। তবে এই লোকটা তেমন নয়। নিজে থেকে কোন কথাই বলছে না৷ এতটা পথ একটা কথাও বলেনি। এমনকি ভাড়ার টাকা দেওয়ার পরও কিছু বলেনি৷ রিকশা ঘুরিয়ে চলে গিয়েছে।
নাইমা তীক্ষ্ণ চোখে চারদিকে তাকাল। ইটের পথে হাঁটতে লাগল।
রোহান বলল, “এই পথটা বেশ নিরিবিলি। এভাবে যাওয়া ঠিক হবে না। তোমার ভাই পুলিশ নিয়ে আসলে তারপর যেও। সে কোথায় আছে কল দিয়ে দেখো।”
নাইমার তার কথার জবাব দিলো না। হাঁটতে লাগল। রোহানও তার পেছনে হাঁটছে। বেশ আয়েশ করে হেলে-দুলে হাঁটছে। যেন হাঁটতে তার বেশ আরাম লাগছে।
হঠাৎই নাইমা থামল। বিরক্ত গলায় বলল, “আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
“তোমাকে অনুসরণ করছি।”
“কেন অনুসরণ করছেন? কি চান আমার কাছে?”
“আপাতত কিছুই চাই না। একা একটা মেয়েকে ফাঁকা রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া ঠিক মনে হচ্ছে না। যে কোন সময় বিপদ হতে পারে।”
“আপনার কি থেকে মেয়েরা নিরাপদ থাকে যে আপনি আমার নিরাপত্তা দিচ্ছেন?” কথাটা সে বেশ তাচ্ছিল্যের সুরে বলল। রোহান তার কথায় দমে গেল না। সামান্য কোন প্রতিক্রিয়াও দেখাল না। নিজের মতো করে হাঁটতে লাগল।
নাইমা তার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চারপাশে দেখতে দেখতে সামনে এগিয়ে গেল।
হামজা বাড়ি ফিরেই গোসলে ঢুকছে। ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে বালতিতে চুবিয়ে রেখেছে। বরফ মেশানো পানি বেশ ঠান্ডা হবে। সে পানিতে হাত দিয়ে পানির শীতলতা পরীক্ষা করল। বেশ ঠান্ডা হয়ে এসেছে। এক মগ উঠিয়ে গায়ে ঢেলে দিলো। গায়ে পানি ঢালতেই তার শরীর জুড়িয়ে গেল। মনে হলো– পৃথিবীর অন্য কিছুতে এই সুখ নেই। তবে তার সুখের সময় দীর্ঘস্থায়ী হলো না। মোবাইল বাজছে। সমানে বেজেই চলেছে। সে তড়িঘড়ি করে গায়ে গামছা পেঁচিয়ে কল রিসিভ করল।
ওপাশ থেকে আকরাম সাহেব বললেন, “নাইমা নাকি আরিফকে দেখেছে। হাবিব পুলিশ নিয়ে সেখানে যাচ্ছে। তুমি গেলে যেতে পারো।”
“কোথায় দেখেছে?”
আকরাম সাহেব জায়গার নাম বললেন। হামজা কোন রকমে গা মুছে কাপড় পরে নিলো। তানজিলার ঘর থেকে চিঠি দু’টো নিয়ে বেরিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেল।
এখানেই পথ শেষ। সামনে ম’রা খাল। খালে সামান্য পানি আছে। বিশ্রী রকমের কালো এবং পঁচা গন্ধ। নাইমা খালের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখ-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। রোহান একটু দূরে হাত পা ছড়িয়ে মাটিতে বসে আছে৷ এতটা পথ হেঁটে এসে সে বেশ ক্লান্ত। হাবিব তার পাশে দাঁড়িয়ে মোবাইল ঘাঁটছে। পুলিশেরা এদিক-ওদিক আরিফের খোঁজ করছে।
দারোগা সাহেব বেশ গম্ভীর গলায় বললেন, “এই ছেলে তুমি আরিফকে চেনো কিভাবে?”
রোহান চমকে তার দিকে তাকাল।
নাইমা বলল, “ইনান হাসপাতালে ভর্তি। জীবন-ম’র’ণ অবস্থা। পৃথিবীর কোন বাবাই এই পরিস্থিতিতে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে না। আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল আরিফ ভাই ইনানকে দেখতে আসবে। অন্তত নিজের কানে ওর অবস্থা জানতে চাইবে। তাই হামজা ভাইয়ের কাছ থেকে আরিফের ভাইয়ের একটা ছবি নিয়েছিলাম। উনি হাসপাতালে সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল। তাই উনাকে আরিফ ভাইয়ের ছবি দেখাই। উনি বললেন– মাত্রই এই লোকটাকে রিকশায় যেতে দেখেছেন।”
দারোগা সাহেব গাড় ফিরিয়ে নাইমাকে দেখলেন। রোহানের দিকে তাকিয়ে বললেন, “এসব সত্যি?”
রোহান বলল, “হ্যাঁ সত্যি। ছবি চেহারার সাথে লোকটার চেহারা হুবহু মিলে যায়।”
“সে না হয় বুঝলাম। কিন্তু তুমি এতদূর আসতে গেলে কেন?”
“মেয়ে মানুষকে সঙ্গ দিতে। এমনিতে আমার কোন কাজ নেই। বেকার ঘুরে বেড়াই। বয়সটাও বাউণ্ডুলে। মেয়ে মানুষ কিছু বললে তাকে সাহায্য না করে কিভাবে থাকব?”
সে এত স্পষ্ট গলায় কথাগুলো বলল যে দারোগা সাহেবও চমকে গেলেন।
ঘন্টা দুয়েক খোঁজাখুঁজির পরও আরিফে দেখা মিলল না। দারোগা সাহেব বললেন, “ফসকে গিয়েছে। কিন্তু কতক্ষণ এমন করে পালিয়ে থাকবে! ধরা তো ওকে পড়তেই হবে।”
হাবিব অল্প হাসল। নাইমা কিছু বলল না। ওখানেই দাঁড়িয়ে রইল।
পুলিশ চলে যাওয়ার পর হামজা সেখানে পৌঁছাল। হতাশ গলায় বলল, “আরিফ ভাইকে পাওয়া যায়নি না?”
হাবিব তার কথার জবাব দিলো।
“না তাকে পাওয়া যায়নি৷ অনেক খোঁজা হয়েছে।”
“হয়তো সে এখানে আসেনি। ভুলভাল মানুষের কথা শুনে সবার এত খাটাখাটুনি হলো।” কথাগুলো সে নাইমাকে টিটকারি করেই বলল।
নাইমা বলল, “আপনার এখানে আসতে এতো দেরি হলো কেন? ভাইয়া তো বলল– তাকে জানানোর প্রায় সাথে সাথেই আকরাম চাচাকে কল দিয়ে সব বলেছে।”
“বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাছাড়া জায়গাটা আমার পরিচিত নয়। খুঁজে খুঁজে আসতে দেরি হয়ে গিয়েছে।”
“পুলিশ প্রায় দুই ঘন্টার মতো খোঁজা খুঁজি করেছে। এতটুকু পথ খুঁজতে এত সময় লাগে না।”
“কি বলতে চাইছেন?”
“আপনার কাঁধের কাছে সামান্য কে’টে গিয়েছে। মনে হচ্ছে এখানে আসার পথে কিছু হয়েছে। কেউ আপনাকে আ’ক্র’ম’ণ করেছিল?”
হামজা বিড়বিড় করে বলল, “শকুনের চোখ! কাঁধের কাছে কে’টে গিয়েছে সেটুকুও দেখে ফেলেছে।”
“কি হলো? কথা বলছেন না কেন?”
“গাছের ডালে খোঁচা খেয়েছি। যাইহোক, আরিফ ভাইয়ের চিঠি। সুমি বিছানার উপর রেখে গিয়েছিল।”
নাইমা চিঠি দু’টো হাতে নিলো। নেড়েচেড়ে দেখে বলল, “এই চিঠির লেখা নতুন নয়। বেশ পুরনো মনে হচ্ছে।”
“কিভাবে বুঝতে পারলেন?”
“এদিকে দেখুন– চিঠির উল্টো পাশে লেখা বেশ স্পষ্ট এবং লেখার চারপাশে কালি ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও খুব অল্প তবুও পড়েছে। পুরনো কাগজ তাই একটু ভাঁজ, মলিনতা বা হলদেটে ভাব চলে এসেছে। তাছাড়া বলপেনের কালি সময়ের সাথে কিছুটা বিবর্ণ হয়ে যায়। মাত্র কদিন হলো আরিফ ভাই নিখোঁজ হয়েছে। সে এই চিঠি পাঠালে লেখা অন্যরকম থাকতো।”
“এর মানে চিঠিটা অন্যকেউ লিখেছে। কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব? তানজিলা আপা নিজে বলেছেন– হাতের লেখাটা আরিফ ভাইয়ের।”
“চিঠি কে লিখেছে জানি না। তবে এদিকে দেখেন চিঠির ‘বিশ্বাস করো তোমাদের থেকে দূরে সরে গিয়ে আমি ভালো নেই। পরিস্থিতি বাধ্য করছে। আমি খুব দ্রুতই ফিরে আসব।’ এই কথাগুলো পরে লেখা। মানে সদ্যই লেখা হয়েছে। আপনি কি আমার কথা বুঝতে পারছেন?”
“পারছি। আমাদেরকে সুমির বাড়িতে যেতে হবে। তার সাথে দেখা করলেই সব প্রশ্নের উত্তর পাব।”
হাবিব বলল, “সুমি তার বাড়িতে নেই। খোঁজ নিয়ে জেনেছি সে তার বোনের বাড়িতে গিয়েছে। কাল রাতের বাসেই চলে গিয়েছে।”
নাইমা হতাশ গলায় বলল, “ভাইয়া এখন আমরা কি করব?”
“আপাতত বাড়িতে ফিরব। দুপুরের খাওয়ার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। হামজা সাহেব বাইক চালাতে পারেন?”
হামজা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল। হাবিব বলল, “তাহলে আপনিই চালান। নাইমা দাঁড়িয়ে থাকিস না। বাইকে ওঠ।”
নাইমা বাইকে উঠল। হাবিবের কাঁধে হাত রেখে বলল, “ভাইয়া, তোমাকে আরও একটা কাজ করতে হবে। আমার মন বলছে– এসব খু’নি এবং তার সঙ্গীদের সাজানো নাটক। মিষ্টির বি’ষ বাড়ির যে কেউই খেতে পারত। এতে করে কে’সের স’ন্দে’হ সুমি উপর পড়বে। পুলিশ সুমিকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এই সুযোগে সে পালিয়ে যাবে।”
“তুই কাকে সন্দেহ করছিস?”
“আরিফ ভাইকে। আজকের ঘটনা থেকে বোঝা যায় সে কোন বিপদে পড়েনি। বিপদে থাকলে হাসপাতাল পর্যন্ত আসতে পারত না।”
“ভালো বলেছিস।”
“তুমি বাসস্ট্যান্ডে চলো। আরিফ ভাই আজকেই শহর ছেড়ে চলে যাবে। হয়তো এতক্ষণে রওনা দিয়ে দিয়েছে।”
“চিন্তা করিস না। পুলিশ এই ব্যাপারটা দেখছে। ওরাই খোঁজ নেবে।”
নাইমা চুপ করে গেল। হামজা বেশ ভালো বাইক চালায়। ধীরেসুস্থে শান্ত ভঙ্গিতে। তাড়াহুড়ো নেই। হাবিব তাকে আর একটু জোরে চালাতে বলল। দুপুরের রোদ পড়ে গেছে প্রায়। ছায়া বড় হয়ে এসেছে।
হামজা বাইকের গতি বাড়াল। তার মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই সাথে সে খুবই বিস্মিত হয়েছে। আশা করেনি চিঠির ব্যাপারে নাইমা এতটা বুঝে ফেলবে। মেয়েটা বেশ বুদ্ধিমতী। তবে তার বুদ্ধির ধার ঠিক কতটা সময়ের সাথে বোঝা যাবে।
দারোগা সাহেব চেয়ারে বসে পা দোলাচ্ছেন। তার ভ্রু জোড়া কুঁচকে আছে। গলার স্বরে শুষ্কতা।
“খোঁজ পেয়েছ?”
তমা বলল, “ইয়েস স্যার। আপনার ধারণাই ঠিক। আরিফ ঢাকার বাসে রওনা দিয়েছে। এতক্ষণে পদ্মাব্রিজ কাছাকাছি চলে গিয়েছে।”
“ইনফর্ম করে দিয়েছ?”
“দিয়েছি স্যার। সে আর পালাতে পারবে না। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে আমাদের হাতে ধরা পড়বে।”
দারোগা সাহেব হাসলেন। তার কুঁচকে থাকা ভ্রু জোড়া মসৃণ হয়ে এসেছে।
চলবে