#বাড়ির_নাম_বৃষ্টিলেখা
#পর্ব-১৯
পরের বার যখন আতিফের সঙ্গে পলিনের দেখা হলো তখন আতিফ পলিন কে জিজ্ঞেস করলো,
“এটা তুমি লিখেছো?”
পলিন না জানার ভান করে বলল,
“ওটা কী?”
আতিফ চিঠিটা পলিনের হাতে দিলো৷ পলিন ভালো করে পড়ে বলল,
“না আমি লিখিনি। এটা আমার হাতের লেখা না।”
আতিফ স্পষ্ট দেখলো পলিনের ঠোঁটের কোনায় হাসি। আতিফ বলল,
“তুমি ছাড়া এমন বোকা বোকা কথা আর কে লিখবে! ”
“আমি লিখিনি। আমার হাতের লেখা তো আপনি চিনেন। ”
“কাউকে দিয়ে লিখিয়েছো। ”
পলিন জোর গলায় বলল, ইশ! আমি কেন লিখতে যাব!
“তুমি কেন লিখেছো সেটা তুমিই ভালো বলতে পারবে।”
“শুনুন, এটা আমি লিখিনি। আর কাউকে দিয়েও লেখাই নি। আপনাকে কেন চিঠি লিখতে যাব! আমার জন্য এমনিই অনেক ছেলেরা পাগল। ”
আতিফ শ্লেষের সুরে বলল,
“আচ্ছা! কই কোনো পাগল তো চোখে পড়লো না!”
পলিন ভাব নিয়ে বলল,
“আমি যখন রাস্তা দিয়ে যাই তখন অনেক ছেলেরাই আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে।”
“তুমি তো রিকশা করে স্কুলে যাও। ”
“ওই তখনই থাকে।”
আতিফ তাকিয়ে রইলো পলিনের দিকে। পলিন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য বলল,
“আমার ওসব চিঠি, ফিঠি লেখার কোনো ইচ্ছে নেই, শখও নেই। সত্যিই আমার জন্য ছেলেরা লাইন দিয়ে আছে। একবার বুবুর বিয়েটা হয়ে যাক। দেখবেন ছো মেরে নিয়ে যাবে।”
“কে নিয়ে যাবে।”
“মানে তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাবে। ”
“তোমার সব কথা গিয়ে বিয়েতেই আটকে যায় কেন! বিয়ে ছাড়া লাইফে আর কিছুর ইচ্ছে নেই?”
“দেখুন বিয়ে তো করতেই হবে। তাহলে স্বপ্ন দেখতে দোষ কী?”
“মেয়েরা এখন কতো স্মার্ট হচ্ছে। আর তোমাকেই একমাত্র দেখলাম বিয়ে বিয়ে করে লাফাচ্ছো। ”
“আপনি তাহলে অনেক মেয়ে দেখেছেন তাই তো?”
আতিফ সরু চোখে তাকালো। বলল,
“তুমি অনেক চালাক। ”
“ধন্যবাদ। ”
“কিন্তু প্রতিপক্ষকে বোকা ভাবাটা ঠিক না। এই ষ্টুপিড চিঠি যে তুমি লিখেছো সেটা আমি জানি।”
“আমাকে ফাঁসাচ্ছেন কেন ভাই! আমি লিখিনি। আমি লিখলে নিজের নামসহ লিখতাম। ”
আতিফ আর কিছু বলল না। রাগী চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে চলে গেল। পলিন অনেক কষ্টে চেপে রাখা হাসিটা বের করে বাড়ির দিকে গেল। বাড়ি ফিরে বৃষ্টিকে বলল,
“বুবু জেরার মুখে পড়েছিলাম। ”
“বলেছিলাম না ধরা পড়বি। আতিফ কিন্তু চালাক। ”
“আর আমি হলাম অতি চালাক। ”
“হ্যাঁ। সাবধান আবার গলায় দড়ি যেন না পড়ে। ”
পলিন হাসতে লাগলো। হাসি থামিয়ে বৃষ্টিকে বলল,
“বুবু আরেকটা চিঠি লিখি। তুমি কপি করে দিও।”
বৃষ্টি এতক্ষন বই পড়তে ব্যস্ত ছিলো। বইয়ে চোখ রেখে পলিনের সঙ্গে কথা বলছিল। বইটা বন্ধ করে পলিনের দিকে তাকিয়ে বলল,
“তুই কী চাচ্ছিস। মানে তোর মতলব কী?”
“কোনো মতলব নেই। শুধু ছাগল টা’কে একটু ক্ষ্যাপাতে চাই। ”
“ভাষা ঠিক কর। ও মোটেও ছাগল না, ভালো ছেলে। তুই নিজেই একটা বদমায়েশ।”
“আচ্ছা যাও মেনে নিলাম। এখন বলো করে দিবে।”
“আচ্ছা তুই একটা সত্যি কথা বলতো? তুই ও কী আতিফের প্রেমে পড়েছিস?”
“না না।”
“তোর হাবভাব সন্দেহজনক।”
“ইশ! ওর প্রেমে আমি পড়তে যাব কেন! আমার পিছনে কত্তো ছেলেরা ঘোরে। রাস্তায় লাইন দিয়ে থাকে।”
বৃষ্টি চোখ পাকিয়ে বলল,
“এইসব বাসী, পঁচা, গল্প আমার সঙ্গে করতে আসিস না। আমি প্রায়ই তোর সঙ্গে যাই৷ কই কখনো তো কাউকে দেখলাম না।”
পলিন ভোতা মুখে বলল,
“আচ্ছা এবারই লাস্ট। আর করব না।”
“মনে থাকে যেন।”
“হ্যাঁ থাকবে।”
পলিনের আজ খুব আনন্দ লাগছে আতিফ কে জব্দ করতে পেরে। ব্যটা খুব জ্বালিয়েছে। পরীক্ষার আগে অংক করিয়ে প্রায় আধমরা বানিয়েছে। তার শোধ নিতে পেরে ভালোই লাগছে৷ এবারের চিঠিটায় আরেকটু মশলা ঢালতে হবে। যেন দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। ব্যটা শুধু দেখবে আর জ্বলবে। কিচ্ছু করতে পারবে না।
***
আবির বাড়ি এলো এক বৃষ্টির দিনে। সারাদিন অবিরাম বৃষ্টি। সন্ধ্যেবেলা এসে হাজির হলো। এসেই বৃষ্টিদের বাড়িতে এসেছিলো কিন্তু বৃষ্টির সঙ্গে দেখা হয় নি। এরপর দুটো দিন ঘরেই ঘাপটি মেরে রইলো। পলিন গেল আবিরের সঙ্গে দেখা করতে। পলিন কে দেখে আবির বলল,
“কী রে তোর খবর কী? কী মতলবে এসেছিস?”
“তোমাকে দেখতে এসেছি।”
“উঁহু। মতলব ছাড়া তোর তো এখানে আসার কথা না। ”
“উঁহু এমনিই এসেছি। এবার অনেক দিন বাদে এলে।”
“হু। একটু কাজ ছিলো। চাকরির ইন্টারভিউ দিলাম কয়েকটা। বয়স হয়েছে বিয়ে তো করতে হবে।”
পলিন হেসে ফেলল। আবির বলল,
“এবার বল তো তোর মতলব কী? টাকা লাগবে?”
“হু।”
“এই তো লাইনে এসেছিস। আগের এক টাকাও শোধ দিস নি। আমার কিন্তু হিসাব আছে।”
“আমার কাছে একটা জিনিস আছে। তোমার জিনিস ই। নিতে হলে একশ টাকা দিতে হবে। ”
“কী জিনিস? ”
“আগে একশ টাকা দাও তারপর। ”
“এই তোর লজ্জা নাই। যা ভাগ।”
“ভেবে দেখো। না নিলে তোমার ই লস।”
“লাগবে না। ”
“বুবু তোমাকে একটা চিঠি লিখেছে।”
আবির একটা কথাও খরচ না করে একশ টাকার নোট বের করে পলিন কে দিলো।
পলিন টাকাটা নিতে নিতে বলল,
“তুমিও কিন্তু লাইনে এসেছো।”
“তাড়াতাড়ি দে। আমার সঙ্গে ফাজলামো করিস না।”
পলিন চিঠিটা বের করে আবিরের হাতে দিতে দিতে বলল,
“ফাজলামো তো তোমার সঙ্গেই করব। কে জানে হয়তো পাশের বাড়ির বদমেজাজী, রাগী মেয়েটার বর হয়ে গেলে! তখন তো তুমি আমার দুলাভাই হবে।”
আবির হেসে ফেলল। পলিন কে বকতে গিয়েও থেমে গেল। পলিন কী সুন্দর করে দুলাভাই বলল। এরজন্য মাফ করে দেয়া যায়। আবির বলল,
“যা তোর সব টাকা মাফ। ভবিষ্যৎ শালী কে একটুকু ছাড় তো দিতেই হয়। ”
পলিন হেসে ফেলল শব্দ করে। আবিরও হেসে ফেলল।
চলবে….
#বাড়ির_নাম_বৃষ্টিলেখা
#পর্ব-২০
টুকুর বড় চাচা মারা গেছেন। বাড়ির বড়রা সবাই সেখানে চলে গেল। বাড়িতে পলিন, বৃষ্টি, পলিনের বাবা আর দাদী থেকে গেলেন। কয়েকদিন থেকেই টানা বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির মধ্যেই সবাই চলে গেল। কথা ছিলো যেদিন যাবে সেদিন ই ফিরে আসবে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য আটকে গেল। একটু বৃষ্টি শুরু হতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। সন্ধ্যেবেলা তাই দুই বোন মিলে বারান্দায় বসে আছে। দাদী ঘুমিয়ে পড়েছে। তার আবার সন্ধ্যা হলেই ঘুমানোর অভ্যাস। খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে উঠে এশার নামাজ পড়ে রাতের খাবার খায়। বারান্দায় একটা মোমবাতি জ্বলছে। গল্প যা করার সেটা পলিন ই করছে। বৃষ্টি হু, হা শব্দে জবাব দিচ্ছে। ওর মনোযোগ গল্পের বইয়ে। ইদানীং এতো বেশী গল্পের বই পড়ছে যে মাঝেমধ্যে খাওয়া দাওয়াই ভুলে যায়। পলিন বিরক্ত গলায় বলল,
“তোমার সঙ্গে গল্প করে মজা নেই। তুমি তো সব মনোযোগ বইয়ে দিয়ে রেখেছো।”
“এই বইটা ইন্টারেস্টিং রে। দারুণ গল্প।”
“ধুর! কী যে পড়! প্রেমের গল্প তো সব ই এক। প্রথমে একজনের ভাল্লাগবে অন্যজনের লাগবে না। পরে অন্যজনেরও লাগবে। দারুন প্রেম হবে, তারপর হয় বিচ্ছেদ নাহয় মিল। একই তো। ”
“এটা একটু ভিন্নরকম। ত্রিভুজ প্রেম।”
“ত্রিভুজ প্রেমের গল্প তো আরও ভয়ংকর। ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের বই পুড়িয়ে ফেলা উচিত।”
বৃষ্টি হেসে ফেলল। বলল,
“কেন?”
“একজন কে দুজন লোক ভালোবাসে এটার কোনো মানে হয়! এতে একজন থাকে যার কষ্ট পেতে হবে। প্রেম, ভালোবাসা আনন্দের ব্যাপার। সেখানে কষ্ট কেন আসবে। তাছাড়া দুনিয়ায় লোকের কী অভাব যে দুজন লোকের একজন কেই ভালোবাসতে হবে!”
বৃষ্টি হেসে বলল, দারুণ বলেছিস কিন্তু। কোনো কিছু না ভেবে বললেও কথাটা কিন্তু দারুণ। তুই কী জানিস মাঝেমধ্যে তুই কিছু চমৎকার কথা বলে ফেলিস। আর তখন মনে হয় যে তুই সত্যিই ছোট মার মেয়ে।
“ধন্যবাদ বুবু। নাহলে সকলের কথা শুনে আমার তো মনে হতো আমি রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে।”
বৃষ্টি আবারও হাসলো। বলল,
“গল্পটা শুনবি?”
“বলো।”
“এই গল্পের নায়িকাকে দুজন নায়কই ভালোবাসে। আর নায়িকা চরিত্রটা কনফিউজিং। দুজনের জন্যই তার মায়া।”
“কী আশ্চর্য! একটা গল্পে দুজন নায়ক কী করে হয়! নায়ক হবে একজন। ”
“উফ! সিনেমায় দুজন নায়ক থাকে না সেরকম। ”
“উঁহু সেটাও ভুল। নায়ক একজন ই হয়। যার সঙ্গে নায়িকার মিল হয় সেই নায়ক। আর অন্যজন ছ্যাকাখোর।”
“আচ্ছা যা বাদ দে। তোর গল্প শুনতে হবে না। ”
“আচ্ছা বলো। ”
“নায়িকা আসলে কাউকেই কষ্ট দিতে চায় না তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে কাউকেই বিয়ে করবে না। বিয়ে করবে অন্য একজন কে।”
“যাহ! তাহলে সেই অন্য একজন ই তো নায়ক। ওই দুইটা তো ছ্যাকাখোর। ”
বৃষ্টি বিরক্ত গলায় বলল, তোর সঙ্গে বলাই ভুল হয়েছে আমার।
“না তুমি একটা ব্যাপার দেখো। আবির ভাইয়ের সঙ্গে যদি তোমার বিয়ে হয় তাহলে সেই তো তোমার নায়ক। বিয়ে না হলে তো আর নায়ক হবে না। যার সঙ্গে বিয়ে হবে সেই নায়ক হবে।”
“এখানে আমার বিয়ে আসছে কেন! আমি কী কোনো গল্পের নায়িকা। ”
“হতেও তো পারো। কেউ তোমাকে নিয়ে লিখে ফেলল। ”
“কে লিখবে? তুই?”
পলিন একটু ভেবে বলল,
“আমি যদি লিখি তাহলে সবাই কে নিয়ে লিখব। বাবা, মা, বড় মা, কাকা, দাদী, ফুপু, টুকু ভাই, ভাবী, বলদা আতিফ সবাই কে নিয়ে।”
বৃষ্টি মৃদু হেসে বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ আতিফ কে নিয়ে তো লিখবিই।
পলিন একটু লজ্জা পেল। বলল,
“ধ্যাৎ! আমার ওসব প্রেম, টেম হবে না। ”
“কেন? তোর তো খুব ইচ্ছে বাড়ির পাশে বিয়ে করার তাহলে! ”
বৃষ্টির কথা বলার ধরন দেখে পলিন দুষ্টমি করে বলল,
“করতে পারি। তুমি আবির ভাইকে যদি বিয়ে করো।”
“ঘুরে ফিরে তুই আমার বিয়েতে এসে থামিস কেন!”
পলিন শব্দ করে হাসলো। বলল,
“তোমাকে রাগাতে একটা নাম ই যথেষ্ট। ”
বৃষ্টি চুপ করে রইলো কিছু বলল না। আবির ওর বারান্দা থেকে চিৎকার করে পলিন কে ডেকে বলল,
“রাত বিরাতে এমন রাক্ষসীর মতো হাসছিস কেন! তোর হাসির শব্দে ঝিঁঝি পোকা পর্যন্ত ডাকা বন্ধ করে দিয়েছে।”
পলিন কিছু বলার আগে বৃষ্টি বলল,
“বল মেয়েদের মতো আড়ি পাতা বন্ধ করো।”
পলিন বৃষ্টির বলা কথা আবির কে বলতেই আবির বলল,
“চামচামি বন্ধ কর পলিন। বাড়িতে খিঁচুড়ি রান্না হয়েছে। খেলে চলে আয়।”
পলিন বলল, আসছি আসছি।
“সূচিত্রা সেনের ইচ্ছে হলে আসতে পারে। তাকে আলাদা ভাবে না বললে তো হবে না। গণ্যমান্য মহিলা। ”
পলিন জিজ্ঞেস করলো,
“যাবে বুবু?”
বৃষ্টি কঠিন গলায় বলল, নাহ!
***
খিচুড়ির লোভে আবিরদের বাড়িতে গিয়ে পলিন কঠিন ধরা খেল। আবির ও’কে দেখেই হুংকার দিয়ে বলল,
“এই এদিকে আয়।”
পলিন প্রায় নাচতে নাচতে গিয়ে আবিরের সামনে হাজির হলো। আবির একটা চিঠি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“এটা তুই লিখিয়েছিস?”
পলিনের মুখটা শুকিয়ে গেল। বজ্জাত আতিফ আবির কে চিঠিটা দিলো। পলিন সাহস সঞ্চার করে বলল, না আমি কেন লেখাব?
“তুই ছাড়া এমন বদমায়েশী আর কে করবে? হাতের লেখা একটু বৃষ্টির মতো লাগছে। ও’কে দিয়ে লিখিয়েছিস?”
“না আমি এসব লিখিনি। আমি ভদ্র বাড়ির মেয়ে। আমি কিছু জানিনা। ”
“কিছু জানিনা মানে তুই সব জানিস। যে চিঠি লিখেছে তাকে ধরব। তোর ব্যবস্থা পরে নেব। তোর ভদ্রগিরি ছুটিয়ে দেব। ”
আতিফ ওখানেই উপস্থিত ছিলো। কোনো কথা খরচ না করে মজা দেখলো আর মিটিমিটি হাসলো। যেটা পলিন সবসময় করে। পলিন একবার আতিফ কে দেখে মনে মনে বলল,
এক মাঘে শীত যায় না।”
***
বৃষ্টির জন্য খিচুড়ি নিয়ে আবিরই এলো। এক হাতে হারিকেন আর অন্যহাতে খিচুড়ির প্লেট। প্লেট টা টেবিলে রেখে আবির বৃষ্টিকে বলল,
” তুই আতিফ কে চিঠি লিখতে শুরু করছিস কেন!”
বৃষ্টি চমকে উঠে বলল,
“মানে?”
“মানে তুই আমার ভাই কে কেন উল্টাপাল্টা লিখে পাঠাচ্ছিস। আমি বাড়িতে নেই এই সুযোগে আমার ভাইয়ের পিছনে লাগছিস। ”
“কিসের চিঠি? কোনো চিঠি লিখি নি। যা মুখে আসছে বলে যাচ্ছ?”
আবির কাগজ টা বৃষ্টির হাতে দিয়ে বলল,
“এই দেখ। ”
“এখানে আমার নাম লেখা আছে?”
“হাতের লেখা তো তোর। ”
“না আমার না। ”
“তুই তো দেখি ভালো মিথ্যেও বলতে পারিস। অবশ্য সেটার প্রমাণ আগেই পেয়েছি। তবে তোর কিছু মিথ্যে কিন্তু খুবই মিষ্টি। একদম ডায়বেটিস ধরিয়ে দেবার মতন। ”
বৃষ্টি বুঝতে না পেরে তাকিয়ে রইলো। আবির বিচিত্র ভঙ্গিতে হাসলো। আবির বলল,
“তবে তুই দারুণ চিঠি লিখিস। কার কাছ থেকে শিখলি রে? একদম কাব্যিক স্টাইলে!”
বৃষ্টি বুঝতে পারলো। আবির কে লেখা চিঠিটা বিছানার তোশকের নিচে রেখেছিল। পলিন সেটা…..
বৃষ্টি আর ভাবতে পারলো না। চোখ বন্ধ করে ফেলল।
আবির ফিসফিস করে বলল,
“তোর চিঠি আজ পাওয়ার পর সারাদিন রাত ওটাই পড়ছি। পরীক্ষার আগে বাংলা গ্রামারও এতো পড়িনি।”
বৃষ্টি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আবির বলল,
“যাই বাবা! নাহলে ভষ্ম হয়ে যাব।”
***
পলিনের এমনিতেই মন টা খারাপ ছিলো। আতিফ আর আবির মিলে আজ খুব ক্ষ্যাপিয়েছে। ঘরে ফিরতেই বৃষ্টির জেরার মুখে পড়লো। বৃষ্টি গম্ভীর গলায় বলল,
“তুই আবির কে আমার লেখা চিঠিটা কেন দিয়েছিস?”
পলিন চমকে উঠলো। আবির এই কথাও বলে দিয়েছে!
পলিন কিছু বলল না। চুপ করে রইলো। অপেক্ষা করলো গালে থাপ্পড় পড়ার। আজ নির্ঘাত মারবে ও’কে।
বৃষ্টি হঠাৎই শান্ত গলায় বলল, কাল থেকে তুই আমার সঙ্গে কথা বলবি না।
চলবে….