বিকেলের যতো রঙ পর্ব-০৫

0
34

#বিকেলের_যতো_রঙ
পর্ব সংখ্যা-০৫
#রুবাইদা_হৃদি

মিনু খালা নিজের কানের একটা দুল খুলে লোকটার হাতে তুলে দিয়ে বললো,

‘আমি তোমাকে টাকা দিয়েছি এই কথাটা কাউরে কোনদিন কইবা না৷ এইজন্য এই ছোট একটা উপহার৷’

লোকটা আর কথা না বাড়িয়ে পা টিপে টিপে জঙ্গলের রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলো৷ মিনু খালার মুখে স্বস্তির হাসি দেখে আমার ইচ্ছে হচ্ছে এখুনি উনাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে৷ তবে,লোকটাকে আমার কিছুটা চেনা চেনা লাগলেও আমি ঠাহর করতে পারলাম না উনাকে কোথায় দেখেছি৷ মিনু খালা চারদিকে চোখ বুলিয়ে ঘরে বাড়ির রাস্তার দিকে এগিয়ে গেলো৷ আমাদের ভাই বোনের জীবন টা বিষবৃক্ষের ছায়ায় বেড়ে উঠছে যেন৷ আমার দম বন্ধ হবার উপক্রম হচ্ছে৷ যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি সবাই নিজের আঁখের গোছাতে ব্যস্ত৷
আমার ভাবনার রেশ কাটলো ঝুমা আপার ডাকে৷ আপা কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পারিনি৷ আপা আমাকে দেখে কিছুটা অভিমান মিশ্রিত কন্ঠে বললো,

‘কিছু লাগবে তোমার?’

‘তুমি করে বলছো কেন আপা!’

‘সম্পর্কের বন্ধন অনেকটা তাল কেটেছে মিথি৷ আমরা আর আগের মতো নেই৷’

ঝুমা আপা হাতে থাকা কাপড় গোছাতে গোছাতে বললো৷ এতোসব কিছুতে আপার অভিমান ভরা কন্ঠে আমি কেঁদে ফেললাম৷ আমার কান্না দেখে আপা কিছুটা ভড়কে গেলো৷ আমাকে দু’হাতে আগলিয়ে বললো,

‘কাঁদিস না মিথি৷’

আমি আপাকে ধরে অনেক ক্ষণ কাঁদলাম৷ সত্য হোক আর মিথ্যা একমাত্র ঝুমা আপার কাছে আসলেই আমার কিছুটা শান্তি লাগে৷ তবে মিনু খালার কার্যকলাপ গুলা আমার মস্তিষ্কে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে৷ আপাকে বলতে চেয়েও কথাটা এড়িয়ে গেলাম৷ আপা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,

‘তোকে আর আশরাফ ভাইকে শক্ত থাকতে হবে মিথি৷ তোদের আশেপাশে কালো ছায়ার অভাব নেই৷ যারা ক্ষণে ক্ষণে রঙ পাল্টাচ্ছে৷’

আপার কথা শুনে আমার মনে সন্দেহের বীজ টা আরো ভালো ভাবে রোপণ হলো৷ মিনু খালাকে সরাসরি প্রশ্ন করলে সে এড়িয়ে যাবে৷ আমি কিভাবে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না৷ অনেকক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে ঝুমা আপার কাছে থেকে সরে দাঁড়ালাম৷ আপাকে ক্ষীণ স্বরে বললাম,

‘খালা আর আব্বার কি আগে থেকেই সম্পর্ক ছিলো?’

আপা আমার প্রশ্নে কিছুটা বিচলিত বোধ করলো বোধহয়৷ কথা এড়িয়ে যাবার জন্য বললো,

‘এইগুলা পরে আলোচনা করলেও হবে৷ আগে খালুর সুস্থ হওয়া টা জরুরি৷’

‘আপা আমার আম্মার মৃত্যু থেকে শুরু করে সবটাতে বোধহয় আব্বার হাত আছে৷ তবুও আমার জানাটা প্রয়োজন৷’

‘খালুর সাথে মায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আমি কখনো দেখি নাই৷ সাধারণ ভাবেই খালু আমাদের খোজ খবর নিতেন আব্বা মারা যাবার পর৷ জানিস ই তো আমার চাচারা আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে৷’

‘আপা তুমি আমাকে ভরসা করে সবটা বলতে পারো৷

‘শোন খালু আর মায়ের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক থাকলে আমার আর আশরাফ ভাইয়ের বিয়েটা কোনোদিন খালু নিজে ঠিক করতো?’

‘বিয়েটা তো আর হয় নি আপা৷’

আমি কিছুটা উদাস কন্ঠে বললাম৷ আপা দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে বললো,

‘আমার জানামতে তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিলো না৷ এরপর বাকিটা আমি জানি না মিথি৷ দোয়া করি সবটা যেন ঠিক হয়ে যায়৷’

বলেই ঝুমা আপা মলিন হাসলো৷ এরপর আবার বললো,

‘জানিস মিথি আমি যখন ভালোবাসা বুঝতে শিখলাম আশরাফ ভাইকে মন দিয়ে বসলাম৷ আমার মনের মধ্যে একটা সাজানো গোছানো সংসার রয়েছে জানিস! সেখানে আমার ছোট একটা সংসার৷ আশরাফ আর আমি৷ আমার স্বপ্নটা মাটিতে চাঁপা পরে গেলো৷ আমার সেই স্বপ্নে সংসার টাতে ইদানীং মরীচিকা ধরে গেছে৷’

আপার কথা শুনে আমি প্রত্যুত্তরে কিছু বলতে পারলাম না৷ শত হোক সমাজের একটা অদৃশ্য বেড়া আছে৷ যে বেড়া ভেঙ্গে মুক্ত হবার সাধ্য আমাদের কারো নেই৷

.

শ্রাবণ মাসের আজ শেষ সপ্তাহ৷ টানা বৃষ্টির পর আজ সকাল থেকে আকাশে রোদের মেলা বসেছে৷ সোনালি ঝিকঝিক রোদ৷ আশেপাশে জমে থাকা পানির উপর পরতেই সব চিকচিক করছে যেন৷ আমি আর কুলসুম ধীরে ধীরে পা ফেলে এগিয়ে চলেছি৷ পেছনে ঝুমা আপা আর মিনু খালাও আছে৷ চারদিকে কাঁদার ফলে সামনে এগোনো বেশ ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে৷ মিনু খালা পেছন থেকে ডেকে বললো,

‘উনারা কি খেয়াঘাটে আসছে?’

আমি উত্তর দিলাম না৷ তবে আমার বদলে কুলসুম হাইহুঁই করে বললো,

‘হ আইসা পরছে৷ তাড়াতাড়ি পা চালান৷ রোগী মানুষ লগে৷’

আমি কিছুটা দ্রুত পাঁ চালিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি৷ আজকে আব্বাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছে৷ পুরোপুরি সুস্থ না হলেও আগের থেকে কিছুটা ভালো৷ আব্বার মাথার মধ্যে ছুড়ি দিয়ে নাকি দুবার আঘাত করা হয়েছে৷ এর ফলে আব্বা হাটা চলার ক্ষমতা হারিয়েছে৷ আমার কিছুটা আফসোস হলেও আমাদের সাথে অন্যায় করার ফল পেয়েছে ভেবে নিজ মন কে শান্ত করছি৷
অন্য কোনো সময় হলে আব্বার জন্য সবথেকে বেশি কান্নাকাটি আমি করতাম কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস!
আজকে আব্বাকে দেখার এতোটা তাড়া শুধুমাত্র আমার আম্মাকে কিভাবে উনি খু’ন করলেন সেটা জানার৷
নদীর পাড়ে আসতেই একগুচ্ছ হাওয়া শরীরের ভেতর দিয়ে হু হু করে ঢুকে গেলো যেন৷ এক পাল কচুরিপানা নদীর স্রোতে উজানের দিকে যাচ্ছে৷ আমরা এসে দাঁড়াতেই ঝুমা আপা আর মিনু খালা সে দাঁড়ালো৷ মিনু খালা উত্তেজিত কন্ঠে বললো,

‘অসুখ মানুষটারে নিয়া এখনো আসে না কেন!’

‘আপনার দেখি আব্বাকে দেখার খুব তাড়া৷’

‘কি কও তুমি! আমার জামাই উনি৷ কতোদিন চোখের দেখা দেখি না৷’

বলেই উনি আঁচলে মুখ ঢাকলেন৷ এ যেন কুমিরের কান্না৷ আমি রাগ ধরে না রাখতে পেরে বললাম,

‘আব্বাকে মারার জন্য সুপারিশ দেওয়ার সময় মনে ছিলো না৷’

মিনু খালা আমার কথায় চমকে উঠলেন৷ এরপর উদগ্রীব কন্ঠে বললো,

‘তোমাগো বাড়ির এখন পাতা পরলেও আমাগো মা মাইয়ার দোষ হইবো দেখতাছি৷’

‘খালা আপনে বেশি বকবক করবেন না৷’

কুলসুম খালার কথার মাঝেই বলে ফেললো৷ কিন্তু এতো কথা কাটাকাটির মাঝে ঝুমা আপা নিশ্চুপ৷ তার চোখে মুখে রাজ্যের চিন্তা ভর করেছে যেন৷ আমি আর কথা বাড়ালাম না৷ এর মাঝেই দেখলাম মাঝ নদীতে নৌকার উপর ভাইয়াকে দেখা যাচ্ছে৷ ভাইয়াকে দেখে কিছুটা স্বস্তি মিললো৷ মনে হচ্ছে কতোকাল পরে নিজের আপন কাউকে দেখতে পাচ্ছি৷
নৌকা ঘাটে ভিড়তেই ভাইয়া নামলো আমাকে দেখে শুষ্ক হেসে বললো,

‘মতিন চাচারে ভ্যান নিয়ে আসতে বলিস নাই?’

ভাইয়ার কথার মাঝেই ভ্যান নিয়ে মতিন চাচা ঘাটের পাড়ে এসে দাঁড়ালো৷ ভাইয়াকে পাশ কাটিয়ে মিনু খালা এক প্রকার লাফিয়ে নৌকায় উঠে পরলো৷ আমি উঁকি দিয়ে দেখলাম আব্বাকে নৌকার পাটাতনে শুইয়ে রাখা হয়েছে৷ আব্বাকে দেখে আমার বুকের ভেতর মোঁচড় দিয়ে উঠলো৷ না চাইতেও চোখে অশ্রু এসে জমা হলো৷ ওইদিকে মিনু খালা আব্বাকে দেখে গুনগুনিয়ে কান্না করে উঠলো৷ নৌকায় থাকা আমার মামা উনাকে ধমকে বললেন,

‘আহ! কি শুরু করলি মিনু? দুলাভাইয়ের সামনে কান্নাকাটি করিস না৷’

‘ভাইজান আমার কি হইবো৷ উনার পোলা মাইয়া আমারে দেখবার পারে না৷ আহারে আমার জীবন৷ আমারে তো লাথি মাইরা বাড়ি থাইকা বাইর করবো৷’

মিনু খালা আহাজারি করে বললেন৷ ভাইয়া কিছুটা বিরক্ত সুরে বললো,

‘আপনি আর একটা শব্দ করলে বাড়ির ত্রিসীমায় ঢুকতে দিবো না৷ এই ঝুমা তোমার মাকে সামলাও৷’

ভাইয়ার ডাক শুনে ঝুমা আপা এক পলক তাকিয়ে নৌকায় উঠে মিনু খালাকে বললো,

‘সব কিছুতে তোমার কাহিনি না করলে হয় না! উঠো এখান থেকে৷ খালুকে ভ্যানে উঠাতে দাও৷’

মেয়ের ধমক শুনে মিনু খালা থামলেন৷ শুরুশুর করে নেমে রাস্তায় এসে দাঁড়ালেন৷ ভাইয়া আর মামা আব্বাকে ধরে ভ্যানে উঠাতে গিয়ে দুইজনেই হাঁপিয়ে উঠলো৷ এরপর ভাইয়া,মামা আর মিনু খালা আব্বাকে নিয়ে বাড়ির পথ ধরতেই আমি আর কুলসুম নৌকা থেকে যাবতীয় জিনিস পত্র নিয়ে তাদের পিছুপিছু গেলাম৷ তবে যাবার আগে দেখলাম ঝুমা আপা কাঁদছে৷ আমি ডাকতেই আমাকে বললো,

‘মিথি তুই বাড়ি যা৷ আমি একটু পরে আসতেছি৷’

আমি ঝুমা আপাকে না ঘেটে কুলসুমের সাথে ফিরে আসলাম৷ বাড়ি ফিরতেই দেখলাম অনেকে আব্বাকে দেখতে এসেছে৷ সাথে থানা থেকে দুজন লোক ও এসেছে৷ হোসেন চাচা উনাদের চা নাস্তা দেওয়ার জন্য কুলসুম কে ডাকলেন৷ আমি সেদিকে মন দিয়ে আব্বার ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম৷ সেখানে আশেপাশের বাড়ির অনেকেই আছে৷ আমাকে দেখে দু একজন বললো,’আব্বারে মাফ কইরা দিয়ো৷ বেডা মানুষ বউ ছাড়া আর কয়দিন থাকতো৷ সেবাযত্ন ভালো ভাবে কইরো৷’

আমি শুধু মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম৷ আব্বা চোখ বুজে পা সটান করে শুয়ে আছে৷ আমি উনার পাশে দাঁড়াতেই আব্বা চোখ মেলে তাকালো৷ আব্বার চোখের নিচে কালো দাগ পরেছে৷ চেহারা ভেঙে গেছে৷ আমাকে দেখেই আব্বা কেঁদে ফেললো৷ চোখ দিয়ে ইশারা করতেই আমি আব্বার পাশে চেয়ার টেনে বসলাম৷ আব্বাকে দেখে আব্বার প্রতি জমে থাকা ক্ষোভ ধূলিসাৎ হয়ে গেলো৷ আব্বার নিস্তেজ হাতের উপর হাত রাখতেই আব্বা ধীর কন্ঠে বললো,

‘কেমন আছেন আম্মা৷’

কথাটা এতোটাই অস্পষ্ট আমি শুনেই কান্না করে ফেললাম৷ আমার আব্বার গলার স্বর ভরাট৷ সে যখন কথা বলে ঝমঝম করে উঠে চারপাশ৷ আজ আব্বার কন্ঠে যেন প্রাণ নেই৷ আমি কাঁদতে কাঁদতেই বললাম,

‘ভালো আছি৷ আপনার এখন সুস্থ লাগে?ব্যথা করে?’

আমার ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে আব্বা কিছুটা মলিন হাসলো৷ আমাকে অভয় দিয়ে বললো,

‘ঠিক আছি৷ আপনার রাগ কমছে?’

‘কমছে আব্বা কমছে৷ আপনি আর কথা বইলেন না৷ আগে সুস্থ হয়ে উঠেন৷’

আমার কথাতে আব্বা চুপ হলো৷ তার চোখ বেয়ে একফোঁটা অশ্রু গাল বেয়ে গড়িয়ে পরতেই আমি মুছে দিলাম৷ আব্বার হাতটা আরো ভালোভাবে আঁকড়ে ধরে ভাবলাম, আব্বার অপরাধ ক্ষমা করে দিবো৷উনি যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছে৷ আমি আজ বা কাল পুলিশের কাছে আম্মার মৃ’ত্যুর ব্যাপারে জানাতে চেয়েছিলাম৷ তবে পিতার শোক টা বোধহয় আমার আঠারো বছরের এই মন টা মানতে পারবে না৷
আমি আব্বার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম৷ ঘরে মানুষের আনাগোনা কমলো পুলিশ দুজন ঢুকতেই৷ উনারা ঢুকেই সবাইকে বেরিয়ে যেতে বললেন৷ আমি উঠতে চাইলে আব্বা আমার হাত ছাড়লো না৷
ভরাট চেহারার কালোমতো লোকটা এই ব্যাপার টা খেয়াল করে বললো,

‘আপনি থাকেন৷’

এর মাঝে ভাইয়া ও এসে উপস্থিত হলো৷ একে একে মিনু খালা থেকে শুরু করে দাদি,হোসেন কাকা সবাই ঘরে এলো৷ ভরাট চেহারার লোকটা আব্বার সামনে এসে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো,

‘আমজাদ সাহেব কেমন আছেন?’

আব্বা মাথা একটু কাঁত করতেই লোকটা আবার বললো,

‘আপনার ওইদিনের ঘটনা কিছু মনে পরে?’

আব্বা এবারের একই ভাবে উত্তর দিলো৷ আমি ভাইয়ার দিকে তাকাতে দেখতে পেলাম ভাইয়া এক দৃষ্টিতে আব্বার দিকে তাকিয়ে আছে৷ এর মাঝে দাদি আর মিনু খালা লোকটাকে আব্বাকে বেশি প্রশ্ন করতে মানা করলো৷
তবে লোকটা তাদের কথা অগ্রাহ্য করে আব্বাকে আবারো প্রশ্ন করলো,

‘আপনি লোকগুলার চেহারা দেখেছিলেন ওইদিন?’

‘না সবাই মুখে গামছা বেঁধে ছিলো৷’ আব্বা অস্পষ্ট ভাবে উত্তর দিলো৷ তবে পুলিশের লোকটা হাসলো৷ হাসি হাসি ভাব নিয়ে বললো,

‘কাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন আমজাদ সাহেব?’

এই পর্যায়ে গিয়ে আব্বা ছটফট করে উঠলো৷ তার চোখ মুখ বিবর্ণ হয়ে উঠলো যেন৷ মামা লোকটাকে ভদ্রতার সুরে বললো,

‘স্যার দুলাইভাইকে বেশি চাপ দিবেন না৷ উনাকে যথাসম্ভব শান্ত রাখতে হবে৷’

‘হ্যাঁ তা তো রাখতেই হবে৷ তা আশরাফ সাহেব আপনাকে প্রশ্ন করলে তো কোনো অসুবিধা নেই তাই না?’

লোকটার কথায় ভাইয়া চমকে উঠলো৷ ভাইয়ার চোখে মুখে ভয়ের রেশ যেন নিগড়ে বেরিয়ে আসছে৷ লোকটার প্রশ্নে আমার বুকের ভেতরেও কেমন করে উঠলো৷ ভাইয়া নিশপিশ করছে৷ লোকটা ভাইয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে ভাইয়ার কাঁধে হাত রেখে বললো,

‘সব কথা কি আপনি বলবেন!নাকি আমাদের কষ্ট করতে হবে?’

ভাইয়া আমতা আমতা করে মুখ ঘুরিয়ে নিলো৷ আমি এই পর্যায়ে গিয়ে লাফিয়ে উঠে বললাম,

‘আমার ভাইকে জেরা করা বন্ধ করুন৷ খু’নের চেষ্টা মিনু খালা করেছে৷’

লোকটা আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে আবারো বাঁকা হাসলো৷ হাঁসতে হাঁসতেই বললো,

‘তাহলে কেসটা আপনিই সমাধান করুন৷’

লোকটার কথা শুনে আমার গলা শুকিয়ে এলো যেন৷

চলবে…