বিধুর রজনী পর্ব-২৭

0
252

#বিধুর_রজনী
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২৭]
___________________
৬৬.
মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্তের দিকে তাকিয়ে পুণরায় চোখ সরালেন সম্রাজী।হাতের ব্যথায় শরীর অবশ হয়ে আছে।পালঙ্কে থাকা রেশমি চাদরটা রক্তে মাখামাখি।তাসবীর কক্ষ ছেড়েছেন বেশ কিছুক্ষণ আগে।বর্তমানে একাই কক্ষে অবস্থান করছেন আরওয়া।বাইরের আলো ফুটছে চারিদিকে পাখিদের কলরবে ব্যস্ত হয়ে উঠছে ধরণি।গায়ে থাকা পাতলা আস্তরণের পোষাকের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত পিষলেন তিনি।গত রাতের কথা ভাবতে গায়ে আগুন লেগে যায়।শেষ রাতে তাসবীরের ভালোবাসা নামক অত্যাচারে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয়।ভোর হওয়ার আগ পর্যন্ত তার শরীরে বুঁদ ছিলেন সম্রাট তাসবীর।ভোরের আলো ফুটতে দু’চোখের পাতা এক করার আর সুযোগ হয়নি আরওয়ার।তাসবীর স্নান করা উদ্দেশ্যে দাসীদের কুসুম পানির ব্যবস্থা করতে বলেন দাসীরাও চটজলদি তাদের কাজ সারেন।গোলাপের পাপড়ির আস্তরণে গা ডুবিয়ে অবগাহনে প্রস্তুত হন সম্রাট।কিন্তু তাতে বাঁধে আরেক বিপত্তি সম্রাজী আরওয়া যতটা দূরে যেতে চাইছে তাকে ততটা কাছে আনার পাঁয়তারা করছেন সম্রাট তাসবীর।কুসুক পানিতে দু’জনে এক সঙ্গে অবগাহনের প্রস্তাব রাখেন সম্রাট, কিন্তু তাতে কিছুতেই সম্মত হননি সম্রাজী।তার চাওয়া না চাওয়ায় মাথা দিলেন না সম্রাট বরং তিনি তার নিজের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে একসাথে অবগাহন সমাপ্ত করেন।

অবগাহন শেষে পাতলা রেশমি কাপড়ের বস্ত্র পরিধানে সাহায্য করেন সম্রাট।সম্রাজীর ভেজা চুল নরম কাপড়ের সাহায্যে মুছে দেন যত্ন নিয়ে।তাসবীর দাসীদের আদেশ করেন সকালের হালকা খাওয়ারের ব্যবস্থা করার।নিজ হাতে আরওয়াকে খাইয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে বলেন,

” আমি গেলাম দাসীরা এসে চাদর পালটে যাবেন।আপনি কড়া ঘুম দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করুন অন্য কোন ছলছাতুরীর চেষ্টা করবেন না।”

তারপর বেশ খানিকটা সময় কেটে গেল।কক্ষের দ্বারে এসে উপস্থিত হয় তিনজন দাসী তাদের আসতে ইশারা করে নিজে ফিরে গেলেন অলিন্দে।আরওয়ার পেছনে তখন এসে দাঁড়ান একজন দাসী।

” সম্রাজী কবিরাজ মশাই পথ্য পাঠিয়েছেন।”

” রেখে দাও।”

দাসীরা তাদের কাজ সেরে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান।আরওয়া তখন কক্ষে ফিরে আরশির কাছে দাঁড়ায়।গালে লালছে দাগ দেখে মুহুর্তে শিউরে উঠে সে।এতক্ষণ এসব তো তার নজরে আসেনি নিশ্চই দাসীরা দেখে ফেলেছে, ছিহ ছিহ ছিহ!আরওয়া খানিকটা কাছে গিয়ে ঘাড় গলা সবটা দেখে দাঁতে দাঁত পিষে।আজ আর কক্ষের বাইরে যাওয়া যাবে না এসব যদি কেউ দেখে ফেলে লজ্জায় ম/রেই যাবেন সম্রাজী।

ক্লান্ত শরীরটা টেনে আরওয়া পালঙ্কে শুয়ে পড়েন।চোখটা বড্ড জ্বালাতন করছে এই মুহুর্তে ঘুমের বড্ড প্রয়োজন।হাতের ব্যথা সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে ওষুধ গ্রহণ করেন।এরপর চোখে নেমে আসে ঘুম।স্বপ্ন ঘোরে অতীতের কথা পুনঃপুন স্মরণে আসে সম্রাজীর।তাসবীরের প্রতি তার ভালোলাগা কবিতার সুরে হারিয়ে যাওয়া হঠাৎ হঠাৎ দেখা করার মতো রোমাঞ্চকর মুহূর্ত স্মরণে আসতে ঘুম ছুটে যায় আরওয়ার।

তার দুচোখের কোনে আপনা আপনি চিকচিক অশ্রু ঝরছে।এ মুহুর্তে তাসবীরের কথা ভীষণ মনে পড়ছে।রাতে তাসবীরকে সে আঘাত করছে ভাবতেই ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে উঠেন আরওয়া।দ্রুত পোষাক পরিবর্তন করে মুখে উত্তরীয়’র সাহায্যে নিজেকে ঢেকে বেরিয়ে পড়েন কক্ষ ছেড়ে।
প্রতিদিনের ন্যায় আজ সভা বসেছে।সেখানে উপস্থিত সভা সদস্যগন।তাদের সম্মুখে যাওয়া নিশ্চই বোকামির কাজ হবে। সম্রাট নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন আরওয়া উপস্থিতির কারণ।সবটা ভেবে নিজেকে আড়ালে রেখে সম্রাট তাসবীরকে দু’চোখ জুড়িয়ে একবার দেখেন সম্রাজী।সে সময়টাতে তার চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত।সময়টা এমন কেন পালটে গেল?এই মানুষটার ভালোবাসায় সিক্ত থাকতো সে অথচ মনের কোণে কেন তার বিতৃষ্ণা ধরা দিয়েছে?সম্রাজীর নিশ্চয়ই ভুল হচ্ছে তাসবীর কেন মারবে তার পিতামাতাকে।

সম্রাজী যখন ভাবতে ভাবতে নিজের কক্ষে ফিরছিলেন তখনি মুখোমুখি হন ফুফুমার।

” কোথায় ছিলে তুমি?তোমার কক্ষে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছো?”

” ক..কই না তো।”

” তাহলে তোমার কক্ষে আমার প্রবেশ কেন নিষিদ্ধ করেছে তাসবীর?দ্বাররক্ষীরা আমায় প্রবেশ কর‍তে দেয়নি।জানো কতটা অপমানিত হয়েছি আমি।”

” ফুফুমা আমি এসব সম্পর্কে কিছু জানি না।এ প্রাসাদ সম্রাটের তার আদেশ মানতে বাধ্য সকলে এখন আমি কি করতে পারি?”

” তোমায় কিছু করতে হবে না আমার কক্ষে এসো।”

ফুফুমা আসমা রাগ নিয়ে টেনে ধরলেন আরওয়ার হাত।কাটা হাতের ব্যথায় মুহুর্তে কুঁকড়ে উঠেন তিনি।

” কি হয়েছে?কাঁদছো কেন?”

” কিছু হয়নি।”

” আমি হাত ধরায় এমন করলে কেন?”

” ক..কিছু না আপনি চলুন।”

ফুফুমার কক্ষে আরওয়া প্রবেশ করতে দ্বার রুদ্ধ করেন তিনি।তীব্র অপমানে গা জ্বালা করছে তার।আরওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলেন,

” কিছু করতে পারোনি রাতে?বলেছিলাম না এক কো/পে ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দিতে।”

আরওয়া নিশ্চুপে তাকিয়ে রয় মেঝেতে।তার সাড়াশব্দ না পেয়ে তেতে উঠেন আসমা।

” আরওয়া তুমি বুঝতে পারছো না তাসবীর কখনো তোমায় ভালোবাসেনি সে সর্বদা তার বোনের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছে।”

” ভালোবাসেনি এই শব্দটা আর বলো না শুনতে আমার কষ্ট হয়।”

আরওয়া আনমনে কথাটা আওড়ালেন।একই সময়ে ফুফুমার সামনে হুহু শব্দে কেঁদে উঠলেন আরওয়া।তার চোখের জল মুছতে গিয়ে অসাবধানে মুখ ঢেকে রাখা উত্তরীয়টি একপাশ থেকে খুলে পড়লো সহসা।ঠোঁটের কোনে,গালের কিছু কিছু অংশে তাসবীরের দেয়া সে রাতের দাগ মুহুর্তে চোখে পড়লো আসমার।লজ্জায় নিজের মুখ ঢাকতে গেলে আরওয়ার হাত দ্রুত ধরে নেন আসমা।

” ছিহ ছিহ ছিহ সারারাত ঢলাঢলি করেছিস।তোকে বলেছিলাম ওই সম্রাটকে হ/ত্যা করে প্রতিশোধ নিতে আর তুই লীলা খেলায় মত্ত ছিলি।তুই তোর বাবার মেয়ে না।তোর জন্মের দোষ আছে কোন মেয়ে নিশ্চয়ই তার পিতামাতার খুনির সাথে রাত কাটায় না।”

আরওয়া চমকে যান।একের পর এক কথায় গায়ে কাঁটা বিঁধে তার।

” এতই দেহের ক্ষুদা তোর।তুই থাক একটা খু/নির সঙ্গে আমি চলে যাব।চলে যাবো আমি।কৌশলে নিশ্চয়ই এবার আমাকে মারার ফন্দি আঁটবে।আসলে আমার ভাই ঠিকি বলেছে তুই তার মেয়ে হওয়ার যোগ্য না।”

” ফুফুমা মুখ সামলাও।”

” তুই তোকে সামলা।প্রমাণ কর তুই তোর বাবার মেয়ে।তাসবীরকে হত্যা করে প্রমাণ কর তুই আব্বাস রাশীদের মেয়ে।বেরিয়ে যা আমার কক্ষ ছেড়ে যতদিন না প্রমাণ কর‍তে না পারবি আমার মুখোমুখি হবি না।”

৬৭.
ন্যাড়া মাথায় তেল মালিশ করে আরাম কেদারায় গা এলিয়ে বসলেন ইবনুল রাশীদ।তার বৃহৎ মোচের আড়ালে ঢেকে আছে সরু ঠোটের ফালি।অল্প তেল চোখের পাতায় মর্দন করে দুই পা এগিয়ে দিলেন দুজন দাসের দিকে।

” মালিশ কর ভালো ভাবে মালিশ কর।”

” করছি, করছি মশাই।”

” আজকের রান্নার আয়োজন কি?”

” আজ মাংসের আয়োজন চলছে সাথে শাহী ডাল।”

” তোদের সম্রাট বড্ড বিরক্তিকর স্বভাবের।অনন্য সম্রাটরা যেখানে আহামরি খানাপিনার আয়োজন করে সেখানে তোদের সম্রাট সাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কি সব নিরামিষ রাঁধতে বলেন।”

” আগের সম্রাট ভালোই ছিলেন। বর্তমান সম্রাট একটু বেশি খুঁতখুঁতে।”

” চিন্তা করিস না সম্রাটের পতন হতে দেরি নেই।আমি একবার সম্রাটের আসনে বসি তোদের আমার সহচর বানিয়ে ফেলবো।মহলের রাজকীয় কক্ষে তোদের অবস্থান হবে ভাবতে পারছিস কতটা সুখে থাকবি তখন।”

” তাই তো আপনার পায়ে মাথা ঠুকাই।”

দাসদের অনুগত দেখে হা হা শব্দে হেঁসে উঠলেন ইবনুল রাশীদ।দিনকাল তার ভালোই চলছে।আড়ালে নিড়ালে একেরপর এক কার্য হাসিলে ব্যস্ত তিনি।

৬৮.
বুকের দিকে ভারী ভাব অনুভব হওয়ায় আচমকা ঘুম ছুটে গেল সম্রাজী আরওয়ার।চোখ মেলে তাকাতে তাসবীরকে দেখে এক হাতের সাহায্যে সরিয়ে দিতে চাইলেন।আরওয়ার পানে তাকিয়ে মাথা তুলে পুণরায় শুয়ে পড়লেন তাসবীর।

” বেগমজান আজ সারাটা দিন ঘুমে কাটিয়েছেন।আপনি তো বড্ড চালাক হয়ে গেছেন আপনি বুঝেই ফেলেছেন আজকের রজনীতেও আপনাকে ঘুমাতে দেব না।”

” যা তা না বকে সরুন আমার কষ্ট হচ্ছে।”

” হোক কষ্ট।”

তাসবীর তার হাত বাড়িয়ে চেপে ধরলেন আরওয়ার আঘাতপ্রাপ্ত বাহু।লহমায় ব্যথায় চিৎকার দিয়ে উঠেন আরওয়া।দু’চোখ তার ঝাপসা হয়ে গেল নোনাজলে।

” কষ্ট হচ্ছে বেগম?আমারো কষ্ট হয়েছে যখন কবিরাজ মশায়ের কাছ থেকে পাঠানো পথ্য মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখছি।”

” ছেড়ে দিন।”

” দিলাম ছেড়ে, পথ্য মেঝেতে কেন ছিল?”

” আমি খাইনি তাই।”

” হাতের ঘা যে বেড়ে যাবে সেদিকে হুস ছিল না?”

” তাতে আপনার কী?আমাকে তো মে/রেই ফেলবেন।”

” মা;রবো কেন?”

” যে কারন আমার পিতামাতাকে মেরেছেন।”

তীব্র রাগ নিয়ে প্রিয়তমার শরীর ছেড়ে উঠে বসলেন তাসবীর।রাগে শরীর কাঁপছে।সারাদিনের ঝুটঝামেলায় শান্তি মিলে প্রিয়তমার স্পর্শে আর সেই প্রিয়তমা যদি গা জ্বালিয়ে কথা বলেন তবে মন মস্তিকে বেসামাল রাগের সঞ্চার ঘটে।তবুও স্থিতি রইলেন তাসবীর।পুণরায় আগলে ধরলেন আরওয়াকে।

” আমায় ভুল বুঝোনা আরওয়া।আমার ভালোবাসার কসম আমি তাদের মারিনি।”

আরওয়া ঢোক গিললেন।অস্পষ্ট স্বরে বলেন,

” আমায় আপনি ভালোবাসেননি তাসবীর।তাই ভালোবাসার কসম দেওয়া বোকামি ছাড়া কিছুই না।”

” এতকিছুর পরেও বলবেন ভালোবাসিনি?”

” আপনি আপনাকে নির্দোষ প্রমাণ করুন তিন দিনের সময় দিলাম।”

তাসবীর হতাশার শ্বাস ছাড়লেন।সারাটা দিনের ক্লান্তি কাটেতে প্রত্যেক রাতের ন্যায় বিভোর হলেন আরওয়ার মাঝে।প্রিয়তমার এলোমেলো চুলে বিলি কেটে তাসবীর বলেন,

” আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন হাতে ওষুধ লাগিয়েছি ব্যথা শীঘ্রই সাড়বে।”

” ঘুম ভাঙ্গিয়ে এখন বলছেন ঘুমাতে।”

” তাহলে আপনি কী অন্য কিছু চাইছেন?আজ রাতে আবার হোক।”

আরওয়া বিরক্তে মুখ কুচকালো।মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লেন সহসা।

৬৯.
“সম্রাট তাসবীর তিন দিনের সময় নিয়েছেন এর মাঝে তিনি নিশ্চয়ই হত্যাকারীকে খুঁজে বের করবেন।”

” আর যদি না পারে?তবে তুমি তাকে নিজের হাতে মা/রবে।”

ফুফু আসমার নির্দেশে কেঁপে উঠলেন আরওয়া।ভয় কাতুরে কন্ঠে বলেন,

” আ…আমি… ”

” চুপ করো তুমি।তুমি একজন সম্রাটের কন্যা হাজার খানেক মানুষকে হ/ত্যা করার সাহস তোমার আছে।”

” কিন্তু হাজার খানেক মানুষ আর সম্রাট তাসবীর তো এক নয়।”

” আমার কথা যদি সত্যি প্রমাণিত হয়?এ রাজ্যের প্রাসাদে তোমার পিতার শত্রু আর কে?কে হবে তুমি বুঝতে পারছো না?নাকি বুঝতে চাইছো না?আমাকে কথা দাও যদি তাসবীর প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় তবে তিন দিন পর তুমি সম্রাট তাসবীরকে হ/ত্যা করবে।কি পারবে না?”

” পারবো।”

” এরপর যা হবে বাকিটা আমার হাতে ছেড়ে দাও।তোমার পালানোর ব্যবস্থা আমি করে দেব।”

সময় কেটে গেল দুইদিন।পাখির কলরবে সম্রাট তাসবীরের ঘুম ভেঙ্গে যায় পাশে তাকিয়ে আরওয়াকে না পেয়ে খানিকটা অবাক হলেও শৌচাগারে আছে ভেবে পুণরায় শুয়ে পড়েন।এরপর কেটে যায় অনেকটা সময় তবে আরওয়া আর কক্ষে ফিরেনি হয়তো ফিরবেও না।লতাকে ডেকে পাঠালেন সম্রাট তাসবীর।সারা মহল, প্রাসাদ খুঁজেও আরওয়ার হদিস মিলেনি।সম্রাট তাসবীরের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো আরওয়া যে পালিয়ে যাবেন সেটা আগেও সন্দেহে এসেছিল তার কিন্তু অসাবধানতার কারণে আজ আরওয়া কি সত্যি পালিয়ে গেল!

” সেনাপতি মশাই।”

” আদেশ করুন সম্রাট।”

” আমার বেগমজানকে যেখান থেকে পারবেন অক্ষত অবস্থায় আমার সামনে হাজির করুন।আগামী প্রত্যুষের আলো উঠার আগে তাকে আমি চাই।”

” যথা আজ্ঞা সম্রাট আমি বেরিয়ে পড়ছি।”

” আরেকটা কথা বাইরে যেন এসব ছড়াছড়ি না হয়।তাহলে প্রজারা দুর্নাম করবে যে, তারা রটিয়ে দেবে সম্রাটের বউকে ধরে রাখতে পারে না সে আবার রাজ্য ধরে রাখবে?ইহা হাস্যকর।”

সম্রাট তাসবীর হাস্যরসে শেষোক্ত কথাটি বললেন।সেনাপ্রধান ততক্ষণে ঘাবড়ে গেছেন এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সম্রাট মজা করছেন।অদ্ভুত মানুষ বটে!সবাই কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে আরাম কেদারায় গা এলিয়ে দিলেন সম্রাট।তর্জনির আঙুল ঠোঁটে ঘুরিয়ে মনে মনে বলেন,

” বেগমজান আড়াল হলেন কেন? আমার ভালোবাসা কি কম পড়ে গেছে?একবার ফিরে আসুন আমার ভালোবাসার বন্ধনে টিকে থাকার লড়াইয়ে আপনি ক্ষীণ হয়ে উঠবেন।”
#চলবে___