বিরোধীদলীয় প্রেম
পর্ব – ১৭
আফরোজা আক্তার
[দয়া করে কেউ কপি করবেন না]
মাহার সারাদিন কাটে এখন সা’দকে ভেবে। গত দুইদিন হলো মাহা তার বাবার বাড়ি আছে। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার পর সা’দই মাহাকে তার বাবার বাড়ি রাখার কথা জানায় সবাইকে। এতে সা’দের বাবা মায়েরও আপত্তি ছিল না। এই দুইদিনে সা’দ একবারও মাহাকে ফোন দেয়নি। তাকে মাহার বাবা মায়ের সঙ্গেই কথা বলতে দেখা গেছে।
ফিরোজের সাথে যোগাযোগের ব্যাপারটা সা’দ জানার পরেও এইভাবে চুপচাপ থাকবে এটা মাহা ভাবতেই পারেনি। তবে অনুতাপের আগুনে পুড়ে হওয়া মাহা এখন সা’দের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। সা’দকে বার দুয়েক ফোনও করেছিল কিন্তু সা’দ তার ফোনটা রিসিভ করেনি। সা’দকে একবার দেখতে চাওয়ার ইচ্ছাটা তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সা’দের চিন্তাধারার প্রশংসা না করে থাকতে পারছে না সে। তার এই কিডন্যাপ হওয়া, তার উপর ফিরোজের এমন অমানবিক অত্যাচার সবটাই সা’দ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। সবাইকে এটাই বুঝিয়েছে তার সঙ্গে শত্রুতার জের ধরেই মাহাকে কিডন্যাপ করেছে ফিরোজ। সম্পূর্ণ জ্ঞান ফেরার পর মায়ের মুখে সব শুনেছে মাহা। আর তারপর থেকেই সা’দের সঙ্গে কথা বলার জন্য মনিটা ব্যকুল হয়ে ওঠে তার।
মেয়েকে বিছানায় এইভাবে পড়ে থাকতে দেখে আমিনা বেগম মেয়ের কাছে আসেন। পাশে বসেন। ঠোঁটের কোণের কাটা দাগটা এখনও পুরোপুরি ভাবে ভালো হয়নি। আঙ্গুলের ছাপগুলো অনেকটাই কমেছে। মেয়ের মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে চাপা কান্না করছিলেন তিনি। তার এমন ফুলের মতো মেয়েকে কীভাবেই মারল ওই নরপিশাচটা।
মাথায় মায়ের হাতের স্পর্শ পেয়ে এপাশে ঘুরে শোয় মাহা। হাত উপরে তুলে মায়ের চোখ মুছে মুচকি হাসি দেয় মাহা। মায়ের কোলে মাথা রেখে ভাঙা কন্ঠে বলে, ‘কাঁদছ কেন মা, আমি তো এখন ভালো আছি। কেঁদো না মা।’
আমিনা বেগম কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলে, ‘আমার মেয়েটাকে কীভাবে মারল ওই জানোয়ারটা।’
ফিরোজের ওই ভয়ানক চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে মাহা। কাঁপা কাঁপা গলায় সে বলল, ‘মা, ওর কথা আর মনে করিও না। আমার ভয় লাগে।’
আমিনা বেগম মেয়ের মানসিক স্থিতি বুঝতে পারছেন। মেয়ে যে তার ভীষণ ভয় পেয়ে আছে এটা তার বুঝতে বাকি নেই। মাহা আবারও বলল, ‘আমি খুব খারাপ মা। তোমার মেয়েটা খুব খারাপ মা।’
‘না মা। আমার মেয়ে খুব ভালো।’
‘তোমার মেয়ে ভালো হলে এমন হতো না মা। সা’দকেও এইভাবে কষ্ট দিতাম না।’
‘সা’দের সঙ্গে যা করেছিস সেটা ঠিক হয়নি। তবে তুই যে খারাপ সেটাও না।’
মায়ের কথার পরিপ্রেক্ষিতে মাহার ভেতর থেকে কেবল দীর্ঘশ্বাস বের হয়। মনে মনে বলে, মা, তুমি জানো না তোমার মেয়ে কতটা নিচু কাজ করেছে। তোমার মেয়ের এই অবস্থার জন্য তোমার মেয়েই দায়ী মা। তোমার মেয়েই দায়ী।
★★
পার হয় আরও তিনটা দিন। সা’দ আগের মতোই নিজের শ্বশুর কিংবা শাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে মাহার খোঁজ খবর নেয়৷ সা’দের এই ব্যবহারটা নিতে পারছিল না মাহা। সে সা’দের কাছে যেতে চাইছে। অনিচ্ছাকৃতভাবে মাহার চোখে পানি আসে। তার ভাবনায় এখন সা’দ ঘুরপাক খাচ্ছে। অনুভব করতে পারছে এই একই ব্যবহারটা সে সা’দের সঙ্গে করে এসেছে এতদিন। এই দুই তিনটা দিনেই সে হাঁপিয়ে গেছে তাহলে এতদিন এতটা মাস সা’দ কী করে সহ্য করেছে। পুরুষ হিসেবে সা’দের ধৈর্যের তারিফ না করে থাকতে পারে এমন কেউ নেই।
বিকেলে কলিংবেল বাজতেই আমিনা বেগম দরজা খোলেন। দরজার ওপাশে সা’দের মা’কে দেখে অবাক হোননি তিনি। আমিনা বেগম সাদরে গ্রহণ করেন বেয়াইনকে। রাহেলা বেগম এ নিয়ে দু’দিন আসলেন এই বাড়িতে। হাসপাতালের বিছানায় ছেলের বউকে ওইভাবে দেখে ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন রাহেলা। তার শুধু একটাই ভয় হচ্ছিল তখন বউয়ের কিছু হয়ে গেলে ছেলেকে সামলানো যেত না। মাহার অসুস্থতাই রাহেলা বেগমের মনে মাহার প্রতি সমস্ত রাগ গলে জল করে দিয়েছে।
রাহেলা বেগম এটা ওটা বানিয়ে ছেলের বউয়ের জন্য নিয়ে এসেছেন। মাহা তখন তার ঘরেই ছিল। ওপাশে মুখ করে সা’দের নাম্বারটা দেখছে। এ যাবৎ দশবার ফোন করেছে সে সা’দকে। কিন্তু সা’দের দিক থেকে নো রেসপন্স। রাহেলা নিঃশব্দে মাহার বিছানায় বসে। তারপর মাহার মাথায় রাখেন। মাহাও পাশ ঘুরে নিজের শাশুড়িকে দেখে চমকে যায়। শোয়া থেকে উঠে বসে। এ সময় শাশুড়িকে একদম আশা করেনি মাহা। অন্যদিকে রাহেলা, তিনি মাহার মুখের এই বিষন্নতা ধরে ফেলতে পেরেছেন। হালকা হেসে বললেন, ‘সা’দ ভীষণ ব্যস্ত। বাসায় ঠিক মতো আসেও না। ভার্সিটিতে ইলেকশন হচ্ছে না এবার। ফিরোজকে পুলিশে দিয়েছে। ফিরোজ এখন জেলে। ও যাতে বের হতে না পারে সেই চেষ্টাই করছে সা’দ। আগামীকাল ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান। সা’দকেই লিডারশীপ দেওয়া হয়েছে। এইসব নিয়েই ব্যস্ত ছিল এতদিন।’
রাহেলা বেগম একনাগারে কথাগুলো বললেন। মাহা রাহেলা বেগমের হাত জোড়া চেপে ধরে বলল, ‘আমি বাড়ি যাব মা। এখানে আর থাকতে ভালো লাগে না আমার।’
রাহেলা খানিকটা অবাকই হোন। সা’দের জন্য যে মাহা ব্যকুল হয়ে রয়েছে তা তিনি বুঝতে পারেন। এই অধ্যায়টা এক সময় তিনিও পার করে এসেছেন। মাহার চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে তিনি বললেন, ‘আর কয়েকটা দিন থাকো। একদম সুস্থ হয়ে ওঠো। এরপর সা’দ এসে নিয়ে যাবে।’
মাহা মাথা নাড়ে।
‘না মা। আমি এখন ভালো আছি। আমাকে নিয়ে চলো।’
‘সা’দ তোমাকে এখানে রেখেছে। এখন আমি নিয়ে গেলে হাজারটা কথা শোনাবে যে।’
‘শোনাক। আমার তাতে কিচ্ছু আসে যায় না। আমাকে আপনি নিয়ে চলেন।’
রাহেলা আবারও হাসেন। বলেন, ‘এত উতলা কেন? সা’দকে মনে পড়ছে বুঝি?’
মাহা বিনাবাক্যে হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ল। রাহেলা মাহার কপালে চুমু খেলেন। তারপর আমিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে মাহাকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।
★★
রাত বারোটা বেজে দশ। ঘরে পায়চারি করছে মাহা। মাঝেমধ্যে মাথাটা ঘুরে। খানিক পরে আবার ঠিক হয়। আবার বারান্দায় যায় দেখার জন্য সা’দের গাড়ি বাড়ির মধ্যে ঢুকছে কি-না। দুর্বল শরীরটা নিয়ে আর হাঁটতে ভালো লাগছে না মাহার। বিছানায় বসে একটা চাপা নিঃশ্বাদ ফেলে বলে, সা’দ, তুমি কোথায়? তুমি কি জানতে পেরেছ আমি বাড়ি এসেছি। সেইজন্যই কি তুমি বাড়ি আসছ না? তবে কি এতদিন যা আমি চেয়েছি এখন তুমি সেটা চাইছ? সা’দ, প্লিজ বাসায় আসো।
হঠাৎ ফোন বাজে মাহার। সে ভেবেছিল সা’দ ফোন করেছে। তার ভাবনা ভুল প্রমাণিত হলো। ফোনটা সা’দের না মিমির ছিল। এত রাতে মিমি কখনো ফোন করে না তাকে। আজ যখন করেছে তাহলে বুঝতে হবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনেই ফোন করেছে। মাহা ফোন রিসিভ করে কানে ঠেকায়।
‘হ্যালো মিমি, কেমন আছিস?’
মিমিও স্বাভাবিক কন্ঠে জবাব দেয়,, ‘আমি ভালো। গলার অবস্থা তো যাচ্ছে তাই হয়ে যাছে।’
‘গলার ব্যথাটা আছে এখনও।’
‘এমনিতে অন্যান্য দিকের কী অবস্থা?’
‘ভালোই আছি। আসলি না যে আমায় দেখতে।’
‘এসেছিলাম তো। হাসপাতালে এসেছিলাম। তুই ঘুমোচ্ছিলি তাই আর বিরক্ত করিনি।’
‘হ্যাঁ। মা বলেছিল। পরে তো আর আসলি না।’
‘ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তুই কোথায় আছিস?’
‘এতদিন বাবার বাসায় ছিলাম। আজকেই শাশুড়ির সঙ্গে এই বাড়ি চলে আসছি।’
‘শাশুড়ির সঙ্গে এসেছিস। কেন, সা’দ ভাই আনতে যায়নি?’
মিমির প্রশ্নের উত্তরে কী বলত মাহা। তাই নিশ্চুপ থাকল। মিমিও বলতে শুরু করল, ‘বলেছিলাম না, পরে সামাল দিতে পারবি না। দেখলি তো, যাকে এতটা দিন ধরে অবহেলা করলি, তাচ্ছিল্য করলি, যাকে ঘেন্না করলি সেই মানুষটাই তোকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসল। এমন পুরুষ ভাগ্য করেই নারীরা পায়। আফসোস সেই পুরুষটা আমাদের মতো নারীর ভাগ্যে না থেকে তোর ভাগ্যে গেল।’
সুযোগ পেয়ে মিমিও তাকে কথা শোনাচ্ছে। মিমি যে তাকে কথা শোনাবে এটা সেও জানত। কারণ সা’দকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার একমাত্র স্বাক্ষী তো মিমিই। মাহা বলে, ‘তুই কি আমাকে টন্ট মেরে কথা বলার জন্যই ফোন দিয়েছিস?’
‘নাহ। তোর চোখটা যাতে এবার খোলে, সেইজন্যই ফোন দিয়েছি।’
‘আমার চোখ খুললে কী হবে। অন্যজন যে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।’
‘চোখ বন্ধ হলে সেই বন্ধ চোখ খোলার দায়িত্ব তোর। কাল আনুষ্ঠানিকভাবে সা’দ ভাইকে লিডারশীপ দেয়া হবে। আসবি ভার্সিটিতে?’
‘সে আগে ঘরে ফিরুক। কালকের টা না হয় কাল দেখা যাবে।’
‘এখনও বাসায় যায়নি?’
‘নাহ। চলে যাওয়ার কথা তো। আশিকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। ও তো বলল ভাই নাকি অনেকক্ষণ আগেই চলে গেছে।’
মাহার কথা বলতে ভালো লাগছে না। সে ফোন রাখে। এমনিতেই গলায় ব্যথা। তার উপর চাপা কান্নার আক্রমণ। গলা আরও ব্যথা করছে তার। কথা বলার মতো একদম ইচ্ছে নেই তার। ঘড়িতে তখন পৌনে একটা। বাইরে গাড়ির হর্ন শোনা যাচ্ছে। মাহা দৌড়ে বারান্দায় যায়। সা’দের গাড়ি ততক্ষণে বড় গেট দিয়ে ঢুকেছে। মাহা আবারও দৌড়ে ঘরে আসে। দরজার পাশে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়ায়। যাতে সা’দ ঘরে ঢুকেই তাকে দেখতে না পায়।
সা’দ ঘরে ঢুকে ফোনটা বিছানায় রাখে। ক্লান্ত শরীরে বিছানায় বসে দুই হাতে মাথা চেপে ধরে। কয়েকটা বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে। ড্রয়ার থেকে তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়। তখনই মাহা সা’দের সামনে এসে দাঁড়ায়। এত রাতে মাহাকে নিজের সামনে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে যায় সা’দ। চারপাশে তাকায়। চোখ বন্ধ করে। সে ভেবেছিল মাহাকে দেখাটা তার চোখের ভুল। চোখ খুলেই দেখবে সামনে কেউ নেই। কিন্তু তা আর হলো না। মাহা সা’দের চোখ বন্ধ দেখে দুই পা এগিয়ে আসে। সা’দের গলাটা নিজের দুই হাতে আবদ্ধ করে বলে, ‘তোমার সামনে যে আছে সে তোমার চোখের ভুল না। সে আমিই। চোখ খোলো।’
সা’দ চোখ খুলে তাকায়। মাহাকে নিজের সঙ্গে মিশে থাকতে দেখে। কিন্তু মাহার এই জড়িয়ে ধরা তাকে উৎসাহ দিচ্ছে না। বরং তার অস্বস্তি হচ্ছিল। মাহার দুটো হাত নিজের হাতের সাহায্যে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, ‘এখানে কেন এসেছ তুমি? তুমি তো এখনও পুরোপুরি সুস্থ হওনি।’
সা’দের এইভাবে দূরে সরে যাওয়া দেখে মাহার ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। মুখের হাসিটা নিমিষেই বিষণ্ণতায় ছেয়ে গেল। সা’দ তোয়ালে ঠিক করতে করতে বলে, ‘কখন এসেছ? কার সঙ্গে এসেছ?’
মাহা নিশ্চুপ। সে সা’দের প্রশ্নের উত্তর দেয় না। সা’দও কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে যায়। মাহা বিছানায় বসে। চোখ বেয়ে দু ফোটা নোনাজল গড়ায়। মুহুর্তেই চোখের পানি মোছে মাহা। তাকে কাঁদলে হবে না। তাকে সা’দের মন জয় করতে হবে। সে যা ভুল করেছে তার খেসারত তো তাকেই দিতে হবে। তাকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দশ মিনিট পর সা’দ ওয়াশরুম থেকে বের হয়। ট্রাউজার পরে খালি গায়ে তোয়ালটা গলায় ঝুলিয়ে। মাহা আর চোখে তাকায় সা’দের দিকে। সা’দ তখন ড্রয়ারে নিজের টি-শার্ট খুঁজছে। সা’দের পিঠের বিন্দু বিন্ধু জমা পানি মাহাকে আকৃষ্ট করছে। মাহা উঠে দাঁড়ায়। এক পা দুই পা করে সা’দের দিকে তাকায়। ফর্সা পিঠে পানিগুলো যেন মুক্তোকণার মতো লাগছিল। মাহা কম্পিত হাতে সা’দের পিঠে হাত রাখে।
মাহার হাত পিঠে পড়তেই সা’দ ঘুরে দাঁড়ায়। মাহার চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। গলার নিচের দুইপাশের হাড়গুলো ভেসে আছে। মাহা ঢোক গিলছে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মাহার নজর তখন সা’দের মুখশ্রীতে। কপালের এক পাশ বেয়ে পানি বেয়ে পড়ছে। পুরো মুখেই পানি জমে আছে। মাহা আরও এগোয়। সা’দ তখন কাবার্ডে লেগে আছে। পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই। চুপচাপ দাঁড়িয়ে মাহার আচরণ পর্যবেক্ষণ করছে সে। মাহা পা জোড়া উঁচু করে এক হাত দিয়ে সা’দের ঘাড়টা জড়িয়ে ধরে। অন্যহাতটা বুকের ঠিক বা পাশে রাখে। নিজের ঠোঁটের আলতো স্পর্শে সা’দের মুখশ্রীতে লেগে থাকা কিছু পানি শুষে নেয়। সা’দের হার্টবিট তখন দ্রুতগতিতে ছুটছে। সে চোখ জোড়া বন্ধ করে। নিজেকে সংযত রেখে মাহাকে সরিয়ে দিয়ে বলে, ‘অনেক ক্লান্ত আমি। আমার ঘুম পাচ্ছে। আমরা পরে কথা বলব।’
সা’দ শুয়ে পড়ে। মাহা তখনও দাঁড়িয়ে আছে। পলক ফেলতেই চোখের পানি গড়ায়। সেই সাথে নাকের নিচেও পানি এসে জমে। তারপর সে দ্রুত পায়ে ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা লক করে দেয়।
চলমান………………..