বুকপকেটে তুমি পর্ব-০৭

0
18

#বুকপকেটে_তুমি
#লেখায়_জান্নাতুন_নাঈম
#পর্ব_৭

সন্ধ্যায় নীলাঞ্জনা বারান্দায় বসে আছে। সন্ধ্যার স্নিগ্ধ বাতাস চুলগুলোকে আলতো করে দুলিয়ে দিচ্ছে। আকাশে লাল-কমলা রঙের মেলা, যেন সূর্যাস্তের আঁচড়। চারপাশে পাখিরা শেষবারের মতো ডেকে উঠছে, তাদের ঘরে ফেরার তাগিদে। নীলাঞ্জনা গভীর প্রশান্তিতে ডুবে আছে, যেন সন্ধ্যার প্রতিটি মুহূর্ত তাকে নতুন করে শ্বাস নিতে শিখাচ্ছে।

হঠাৎ বারান্দায় সিনথিয়া এসে উপস্থিত হলো।হাতে ধোঁয়া উঠা চায়ের কাপ। সিনথিয়া বলল, “আম্মু বলল তোমার নাকি মাথা ব্যথা করছে।তাই আদা চা বানিয়ে আনলাম”

নীলাঞ্জনা বলল, “তোমাকে এইজন্যই আমার এত ভালো লাগে। না চাইতেই আমার সবকিছু বুঝে যাও।”

সিনথিয়া বলল, “কোন ব্যপার না। আচ্ছা একটা কথা বলি। কিছু মনে করবে না তো”

নীলাঞ্জনা বলল, “বলো”

সিনথিয়া বলল, “তোমার সাথে কি সত্যি সেলিম রহমানের বিয়ে হতে যাচ্ছে।একটু আগে সেলিম রহমানের বাবা কল দিয়ে সবকিছু বলল।এটাও বলল তোমরা দুইজন দুইজনকে ভালোবাসো। তুমি এতদিনে সেলিম রহমানের সাথে ডেটে ছিলে আর আমাকে বললে না”

নীলাঞ্জনা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল, “ফ্রি হয়ে একদিন তোমাকে সব খুলে বলবো”

সিনথিয়া বলল, “আচ্ছা আমি আসি। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে।আব্বু খিচুড়ি আর ইলিশ ভাজা খেতে চেয়েছে। এখন রান্না করতে হবে”

নীলাঞ্জনা বলল, “সাথে কিছু ভর্তা রেখো”

সিনথিয়া হেসে বলল, “তা তো করবোই। আমার একমাত্র ননদের পছন্দের খাবার।আর আমি বানাব না তা কি করে হয় বলো”

সিনথিয়া চলে গেল।
নীলাঞ্জনা এক হাতে মগ ধরা, ধোঁয়া ওঠা চা থেকে মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসছে। অন্য হাতে বারান্দার গ্রীলের বাইরে হাত বের করে দিয়ে সামান্য ঠাণ্ডা বাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে। নীলাঞ্জনার রুমের ভেতরে হালকা মৃদু গান বাজছে, শীতল সন্ধ্যার সাথে মিলেমিশে। আলো-আঁধারির খেলা বারান্দার কোণে ছায়া ফেলেছে। প্রকৃতির এই নীরবতার মধ্যে তার মন যেন এক অজানা স্মৃতির পথে হারিয়ে যাচ্ছে। একটি পাখি তার পাশের গাছে বসেছে, নীলাঞ্জনার মনে হয়, সেই পাখিটিও হয়তো তার মতোই সন্ধ্যার এই মায়ায় ডুবে আছে। বাইরের প্রকৃতির বৃষ্টি হওয়ার আগ মুহূর্তে সেইরকম হয় ঠিক সেরকম হয়ে আছে। নীলাঞ্জনা চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে ফোন হাতে তুলে নিল।ফোনে তাসনিমের নাম্বার সেভ করা ছিল। তাসনিমের নাম্বার সেভ করে তাসনিম কে ফোন করল। দুইবার ফোন কেটে যাওয়ার পর তৃতীয় বার রিসিভ হলো।ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে নীলাঞ্জনা বলল, “তো কেমন আছো অনামিকা?”

তাসনিম বলল, “তুমি জেনে গেছো সব?”

নীলাঞ্জনা বলল, “হ্যা আমি জানি।আমি নুরুল ইসলাম খানের ব্যপারে খোঁজ নিচ্ছি। তুমি যেটা বলেছে সেটা সত্যটা খুঁজে বের করছি”

তাসনিম বলল, “আমি মিথ্যা বলিনি আপু”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমি বলছিনা তুমি মিথ্যা বলছো।তবে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ দেখাতে গেলে প্রমান লাগবে ।আর আমি এটাই করছি। তুমি পরিচয় গোপন না করলে কাজটা আমার জন্য আরো সহজ হতো। আমি তোমার সাথে দেখা করবো।কাল অফিসে আমার জন্য অপেক্ষা করো।তোমার থেকে অনেক কিছু জানার আছে”

তাসনিম বলল, “অফিসের বাইরে হলে ভালো হতো”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমরা অর্কর ডেস্কে আলোচনা করবো। আমার সাথে নাদিয়া ও আছে। তোমার ভয় নেই। আমরা তোমার পাশে আছি”

তাসনিম বলল, “আমার কাছে কিছু প্রমাণ আছে”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমাকে এক্ষুনি মেইলে করে পাঠাও।আর শোনো অফিসে যাওয়ার আগে অফিসের বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করো”

তাসনিম বলল, “জী আপু”

নীলাঞ্জনা ফোন কেটে দিল। ফোন রেখে আবার গুনগুন করে গান গাইতে লাগলো।

রাতে সবাই খাবার খেতে বসলো। সিনথিয়া সবাইকে খাবার পরিবেশন করে দিচ্ছে। নীলাঞ্জনার বাবা বলল, “তোমার যে নিজের পছন্দের মানুষ আছে এই কথা তোমার আমাকে আগেই বলা উচিত ছিল। তাহলে আমি তোমার আর সরোয়ারের বিয়ে ঠিক করতাম না। সরোয়ার আর সেলিমের বাবা ফোন করেই সবকিছু বুঝিয়ে বলল।শেষে কিনা তুমি সরোয়ারের বউ না হয়ে ভাবি হয়ে গেলে। বেচারা এখন তোমাকে ভাবি বলে ডাকবে”

কথাটা বলেই নীলাঞ্জনার বাবা জোরে হেসে দিল।
সিনথিয়া বলল, “তবে যাই হোক বিয়ের তারিখ তো একই রইল।”
নীলাঞ্জনা বলল, “সবকিছুই হঠাৎ করেই হয়েছে। আমি কি জানতাম আমি যেমন সেলিম রহমান কে পছন্দ করি , সেলিম রহমান ও এইভাবে আমাকে পছন্দ করে। সেলিম গত দুই বছরে ধরে আমাকে পছন্দ করে আসছে। আজকে ওর সাথে দেখা করেছিলাম।আমাকে সবকিছুই বলল।”

নীলাঞ্জনা বলল, “সে যাই হোক সেলিমের পরিবারের লোকজনের অনেক ভালো। তুমি শুধু মন দিয়ে সংসার করো। ওদের সবাইকে আপন করে নিও। তুমি তো বুঝদার মেয়ে। তোমাকে বলার কিছু নেই”

নীলাঞ্জনা বলল, “প্রথম দিন ওই বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে ওরা আমাকে আপন করে নিয়েছে।”

নীলাঞ্জনার বাবা বলল, “তুমি তাহলে অফিস যাওয়া বাদ দিয়ে দেও। আপাতত বিয়ের আগে আর অফিস যাওয়ার দরকার নেই। বিয়ের আর মাত্র ৫ দিন বাকি”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমি জানি। কিন্তু আমার হাতে জরুরি কাজ আছে। আশাকরি সেলিম এই নিয়ে রাগ করবে না।”

নীলাঞ্জনার বাবা বলল, “খুব জরুরী কাজ?”

নীলাঞ্জনা বলল, “হ্যা বাবা। খুব জরুরী একটা কাজ। একটা মেয়ের প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে আমাকে। বিয়ের জন্য আরো পাঁচদিন সময় আছে কিন্তু এই মুহূর্তে একটা মেয়ের সাথে এত বড় অন্যায় হয়েছে জেনেও চুপ থাকতে পারি না।”

নীলাঞ্জনার বাবা নীলাঞ্জনার জেদ বুঝতে পারলেন। তিনি মাথা বললেন, “ঠিক আছে, কিন্তু যা করবে ভেবে চিন্তে করবে। দয়া করে কোনো ঝুঁকি নিও না। এমন কিছু করে বসো না যে নিজের ক্ষতি হয়”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমি ভয় পাচ্ছি না।কারন এখন আমার জীবনে এমন কেউ আছে যে আমাকে কোন বিপদে পড়তে দিবে না।সব বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়ে নিবে।”

নীলাঞ্জনার বাবা বলল, “তুমি খুব জেদি।বিয়ের আগে আর মাত্র দুইদিন অফিস যেতে পারবে। এরপর অফিসে গেলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না”

নীলাঞ্জনা হেসে বলল, “আমার জন্য দুইদিনই যথেষ্ট”

নীলাঞ্জনা বিছানায় শুয়ে আছে।রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে তাসনিমের পাঠানো ছবি গুলো দেখতে থাকে।ছবি দেখা শেষ হলে কাউকে মেসেজ পাঠিয়ে সাহায্য চায় নীলাঞ্জনা। এরপর বিছানার একপাশে মোবাইল রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।

নীলাঞ্জনা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলো সেলিম তার বাড়িতে এসে উপস্থিত। নীলাঞ্জনা কে দেখে বলল, “আমি কাল রাতের মেসেজ পেয়েই চলে এসেছি। আমার পরিচিত একজন উকিল আছে।যে তোমাকে এই কাজে হেল্প করবে। তোমার কাছে প্রমাণ আছে?”

নীলাঞ্জনা বলল, “অল্প কিছু প্রমাণ আছে। বাকিগুলো পরে আমি জোগাড় করে নিব”

সেলিম বলল, “আমি ওর সাথে অনেক কথাই বলেছি এই বিষয়ে।এখন তোমার কাছে যেসব প্রমাণ আছে তুমি সেগুলো উকিল কে পাঠিয়ে দিও। আমি তোমাকে উকিলের নাম্বার দিয়ে দিব”

নীলাঞ্জনা বলল, “আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু এসবের কোন দরকার নেই। আমাকে এখন অফিসে যেতে হবে। আপনি ওদের সাথে গল্প করুন”

সেলিম বলল, “ চলো তোমাকে অফিসে দিয়ে আসি”

নীলাঞ্জনা বলল, “হ্যা চলুন”

নীলাঞ্জনার বাবা বলল, “আরে বাবা হালকা চা নাস্তা করে যাও”

সেলিম বলল, “না আংকেল আজ থাক।অন্য এক দিন চা নাস্তা খাব।এখন আসি তবে”
সেলিম নীলাঞ্জনা কে অফিসের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।

“নীলাঞ্জনা ধীরে ধীরে গাড়িতে উঠল। সেলিম চুপচাপ নিজের চিন্তায় ডুবে গাড়ি চালাতে লাগল।”

অফিসে সামনে আসতেই সেলিম বলল, “তাহলে তুমি অফিসে চলে যাও। আমার খুব জরুরী একটা কাজ আছে”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমি জানি সামনে নির্বাচনের জন্য আপনার অনেক ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের বিয়ে ৫ দিন পর”

সেলিম বলল, “হ্যা”

নীলাঞ্জনা গাড়ি থেকে নেমে গেল। সেলিম গাড়ি ঘুরিয়ে তার গন্তব্যে রওনা দিল।

তাসনিম অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।প্রায় পনেরো মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও নীলাঞ্জনা আসছে না। হঠাৎ নীলাঞ্জনা দুর থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এগিয়ে আসলো।বলল, “আমি দুঃখিত তাসনিম। আমার আসতে আমার অনেক দেরি হয়ে গেছে”
তাসনিম বলল, “কোন ব্যাপার না আপু। তুমি তো আর ইচ্ছে করেই দেরি করোনি”

নীলাঞ্জনা বলল, “হ্যা। আমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে আজ”

তাসনিম বলল, “তুমি মনে হয় অনেক চাপে আছো?”

নীলাঞ্জনা হেসে বলল, “আরে না বোকা মেয়ে।চাপে থাকবো কেন?”

তাসনিম বলল, “আমার বিষয়ে?”

নীলাঞ্জনা বলল, “আরে না। আমি চাপে নেই। আমি আজ নুরুল ইসলাম খান কে অফিসে আসতে বলেছি”

তাসনিম বলল, “কেন?”

নীলাঞ্জনা বলল, “সে দরকার আছে? আমার বিয়ে তাই অফিস থেকে ছুটি নিব আর উনাকে দাওয়াত দিব”

তাসনিম বলল, “আচ্ছা বুঝতে পারছি”

নীলাঞ্জনা বলল, “এই আরকি বোঝোই তো। তুমি তোমার কথা বলো”

তাসনিম বলল, “আমার কাছে যেই প্রমাণ আছে তা যথেষ্ট নয়। এখন তুমি কি ভাবছো?”

নীলাঞ্জনা বলল, “নুরুল ইসলাম খানের পিসিতে হয়তো প্রমাণ পাওয়া যাবে।এই দায়িত্ব আমি অর্কর উপর ছেড়ে দিয়েছি। তুমি ভয় পেয়ো না আমি ঠিক কোন একটা ব্যবস্থা করবো”

তাসনিম আর কোনো কথা বলল না, দুজনেই চুপচাপ অফিসের ভেতরে ঢুকে গেল। নীলাঞ্জনা তার ডেস্কে বসে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করল। এক ঘণ্টা পর নুরুল ইসলাম খানের আসার কথা থাকলেও, কিন্তু অফিসে তার কোনো উপস্থিতির চিহ্ন নেই। বারবার ফোন দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায় না। নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন আসলো। নীলাঞ্জনা রিসিভ করতেই একজন ভদ্রমহিলার কন্ঠস্বর ভেসে আসলো। মহিলাটি বলল, “তোমাদের বস নুরুল ইসলাম খান কি অফিসে আছে? ওকে একটু ফোনটা দেও তো।বলো আমি ওর বউ সুমি”

নীলাঞ্জনা বলল, “উনি অফিসে আসেনি । আমি ও খুব চিন্তিত। ফোন করেছিলাম।ফোন বন্ধ বলছে”

সুমি বলল, “কোন খবর পেলে আমাকে জানি ও। আমি অফিসে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে চিনি না।তাই তোমাকেই ফোন দিলাম।”

নীলাঞ্জনা বলল, “আপনি চিন্তা করবেন না । আমি খবর পেলে আপনাকে জানাব”

হঠাৎ নীলাঞ্জনার সিনিয়র অর্ক পাশে এসে দাঁড়াল।বলল, “আপাতত আমরা সব প্রমাণ পেয়ে গেছি। এইগুলো আমাদের জন্য যথেষ্ট। এখন তুমি কি করবে?”

নীলাঞ্জনা বলল, “জানি না।তবে যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।জানেন তো আমার বিয়ে। বাসা থেকে অফিসে আসার অনেক বাহানা বানাতে হয়।আব্বু অফিসে আসতে মানা করেছে”

সিনিয়র বলল, “ঠিকি তো বলেছে।৫ দিন পর তোমার বিয়ে আর তুমি কিনা অফিসে চলে আসছো। তোমার কাল থেকে আসার দরকার নাই।বিয়ের পর ও ছুটি পাবা”

নীলাঞ্জনা বলল, “ তা ছুটি নিব কার কাছ থেকে।যিনি ছুটি দিবেন তিনি তো গায়েব। উনার বউ ফোন দিয়ে উনার খোঁজ জানতে চাইলো”

সিনিয়র বলল, “শোন আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিব। আমাদের চ্যানেলে এইসব দেখানো হবে। আমি এর জন্য সব ব্যবস্থা করে রেখেছি। এছাড়া ও আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে এই বিষয়ে কথা বলবো।”

নীলাঞ্জনা বলল, “তাহলে ঠিক আছে”

সিনিয়র বলল, “তুমি শুধু তাসনিম কে রাজি করাও সে যেন পুলিশ কে নিজে থেকে অভিযোগ দেয়ার জন্য রাজি হয়।সে লুকিয়ে থাকলে কোন লাভ হবে না”

নীলাঞ্জনা বলল, “আমি চেষ্টা করবো”

সিনিয়র বলল, “আমরা কাল থানায় যাব।আজ তুমি বাসায় চলে যাও। আমি তোমাকে বাসায় গিয়ে নিয়ে আসবো। তুমি নয়টার মধ্যে রেডি হয়ে থেকো। দেরি করো না যেন”

নীলাঞ্জনা কিছু বলল না। কেবল মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

ঝড়ের রাত। বাইরে বৃষ্টি যেন আকাশের সব রাগ একসাথে উড়িয়ে দিচ্ছে। বাড়ির জানালার বাইরে নুরুলের দৃষ্টি।
হঠাৎ, দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে তার ধ্যান ভেঙে যায়। এই ঝড়ের রাতে কে আসতে পারে? একটু সংকোচ নিয়েই সে দরজা খুলল।

দরজার বাইরে একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে ছিল।দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষটির চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। লোকটির গভীর কালো চোখ। নুরুল ইসলাম খান বলল, “এত রাতে কি চাই?”

অচেনা লোকটি বলল, “আপনি কি নুরুল ইসলাম খান?”

নুরুল ইসলাম বলল, “হ্যা”

অচেনা লোকটি বলল, “আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে”

নুরুল ইসলাম বলল, “কোথায়?”

অচেনা লোকটি বলল, “বলা যাবে না। তবে খুব জরুরী ভাবে যেতে হবে। নাহলে বড় লস হয়ে যাবে”

নুরুল ইসলাম বলল, “তুমি কি আমার অফিসের লোক? পাঁচ মিনিট দাঁড়াও আমি আসছি”

লোকটি কোন জবাব দিল না। কেবল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলো। নুরুল ইসলাম খান তার সাথে গাড়িতে উঠে বসলেন। হঠাৎ করেই নুরুল ইসলাম খান জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।যখন জ্ঞান ফিরে এলো দেখলো একটা ছোট রুমে তিনি শুয়ে আছে। একটা চার পাঁচ ফুট লম্বা ঘর। মাথার উপর খুব বেশি জায়গা নেই। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর মাথার উপর আর কোন জায়গা থাকে না। নুরুল ইসলাম খান অনেক ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না।

(চলবে)