#বৃষ্টিস্নাত_তুমি – (৩২/শেষাংশ)
হুযাইফা মাইশা
ইয়াভকিনদের ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গড়াল। অধীর আগ্রহে সকলে বসে আছে। ইয়াদ নতুন বউ নিয়ে ঢুকে সর্বপ্রথম। হুলুস্থুল কান্ডে বাঁধে এরপর। নতুন বউকে নিয়ে নিজের রুমে নিয়ে যান কাজল। পিছু পিছু আরো কিছু সংখ্যক মানুষ। পূর্ণতা গেল ঊর্মির কাছে। মেয়েটার ছোট বোন টোন নেই যে সাথে আসবে। পূর্ণতাকে সে বড় বোন মানে ছোটবেলা থেকেই। পূর্ণতা মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
–” কেঁদেকুটে কি অবস্থা করেছিস! আমরা কি তোর অপরিচিত!”
ঊর্মি নাক টেনে বলে,
–” মায়ের কান্না দেখে আমার ভীষণ খারাপ লাগছিল।”
–” লাগারই কথা। পানি খাবি? মাথার ওড়নাটা খোল বোন। গরম লাগছে?”
মাথা নাড়ায় ঊর্মি। ঘর থেকে মানুষদের এই সেই বলে বের করেন কাজল। হন্তদন্ত পায়ে পানি নিয়ে আসেন। পূর্ণতার উদ্দেশ্যে বলেন,
–” শুনো বড় বউ, আমি ওর সাথে আছি। তুমি বরং তোমার মেয়েকে দেখে আসো। বড় আপা আর সায়মা বাকি দিক সামলাচ্ছে।”
রোকেয়া প্রবেশ করেন ইতিমধ্যে। পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায় পূর্ণতা। মানুষে গিজগিজ করছে চারপাশ। রুমে যাওয়ার পথে দেখা হয় ইয়াদের মামাতো বোন নোহার সঙ্গে। ষোড়শী এই মেয়েটা বেশ চঞ্চল আর ভুলোমনের। হাঁটা থামিয়ে বলে,
–” আল্লাহ! ভাবি তুমি এখানে? ইয়াভকিন ভাই সারা বাড়ি খুঁজছে।”
–” উনি রুমে?”
–” হ্যাঁ!”
উত্তর পেয়ে রুমে ছুটে পূর্ণতা। বাপ মেয়ে নিশ্চয়ই এক সঙ্গে।
রুমে এসে দেখে উল্টো চিত্র। ইয়াভকিন মেয়েকে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে। কোলবালিশ ধরে মেয়ে আরামে ঘুমোচ্ছে। অপরিচিত মানুষদের ভীড়ে ফুঁপালেও ওখানে গিয়ে নানুকে পেয়ে শান্ত ছিল। কাঁদেনি বেশি। আসার পথে ঘুমিয়ে পড়েছে। এটুকুন মেয়ে! পূর্ণতা মেয়ের গায়ে হাত বুলোয় একবার। ফর্সা গায়ে লাল একটা পার্টি ফ্রক জড়ানো। পাতলা চুল। আর চোখ দু’টো কিঞ্চিৎ বাবার মতো, ঘোলাটে। ভ্রু কুঞ্চিত করে পূর্ণতা প্রশ্ন রাখে,
–” আপনি নাকি সারা বাড়ি খুঁজছেন আমায়?”
–” মাত্রই তো রুমে এলাম। এ কথা কে বলল?”
–” তার মানে একটুও খোঁজেন নি আমায়?”
মিইয়ে যাওয়া কণ্ঠ পূর্ণতার। ইয়াভকিন চওড়া হাসে। গায়ে শার্ট জড়িয়ে বলে,
–” মনে মনে খুঁজি তো সারাবেলা। কিন্তু তোমার দেখা কি আর মিলে?”
–” সব জানি। প্রতিভা কাঁদেনি?”
–” না তো, তুমি শুধু শুধু চিন্তা করো। নানা নানু আর মামাকে পেয়ে সে কি খুশি ছিল,জানো?”
একটু থামে ইয়াভকিন। আবার বলে,
–” খালামণি ভীষণ রাগ করেছেন যাওনি বলে। মা বাবাও বারবার জিজ্ঞেস করছিলেন তোমার কথা। কতোদিন তোমাকে দেখেননি। আসার সময় বলেছেন, বাড়ি ফিরে উনাদের কাছে যেতে।”
পূর্ণতা উঠে দাঁড়ায়। বলে,
–” চা খাবেন?”
–” ক্ষিদে নেই। বাইরে কি দরকার আছে তোমার?”
–” আছে না? ঊর্মির কাছে যাব। মেয়েটার একা একা লাগবে।”
–” ওর সঙ্গ দিতে আমার ভাই আছে কি করতে! আসার সময় কিভাবে সামলিয়েছে, যদি দেখতে!”
–” ইশ, আপনার কি! নিজে তো সেসব করেননি!”
স্পষ্ট খোঁ-চা মা*রতে চায় পূর্ণতা। বিয়ের রাত নিয়ে তার যত আক্ষেপ। তবে সেসব বর্তমানের কাছে অবশ্যই ঠুন’কো। এত এত সুখের মধ্যে সেসব আক্ষেপের ঠা’ই আর কই!
ইয়াভকিন ভ্রু কুঁচকায়,
–” বিয়ের পর কম কাঁদলে? সেসময় কে সামলালো?”
পূর্ণতা জবাব দেয়না। বেরিয়ে যেতে উদ্যত হয়।
.
ঊর্মির বাসরঘরটা আগে থেকেই সাজানো। কতশত ফুল বিছানায়! ঠিক মাঝখানটায় সে বসে। গায়ে ভারি বেনারসি। মাথার ওড়নাটা সেসময় খুলে দিয়েছেন কাজল। ইয়াদ রুমে ঢুকে ঠিক বারোটা নাগাদ। ইয়াজিদ, ইশরাত, নোহা আর আরো কিছু কাজিন তাকে ধরে বেঁধে রেখেছিল। ইয়াভকিন তাদের উস্কে দিচ্ছিল বারংবার। ইয়াদ কোনোমতে ছুটে এসেছে। দরজাটা লাগিয়ে সে ধীর পায়ে এগিয়ে এল। বসে থাকা ঊর্মির দিকে তাকিয়ে এককোণে বসে বলল,
–” এত কাঁদো তুমি!”
ঊর্মি উঠে আসে। সালাম করে তারপর উত্তর দেয়,
–” বিয়ের সময় সবাইই কাঁদে।”
–” ফ্রেশ হলে না কেন! এত সময় এসব গয়না আর কাপড় পরে আছে কেন?”
আড়চোখে তাকায় ঊর্মি। সুতি একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বিড়বিড় করে বলে,
–” স্টেজে বলল বিয়ের সাঁজে নাকি আমাকে প্রাণভরে দেখতে পাচ্ছেনা।”
বিড়বিড় করে বললেও কথাগুলো কানে এল ইয়াদের। হেসে মাথা নাড়িয়ে বলল,
–” তোমাকে কষ্ট দিয়ে বসিয়ে রাখব? দেখব প্রাণভরে? প্রাণভরে দেখতে দেখতে জীবনই শেষ হয়ে যাবে, ঊর্মি!”
.
প্রতিভা বিছানার ঠিক মাঝখানে আসন পেতে বসে আছে। হাতে ইয়াভকিন আর পূর্ণতার ফোন। আসার পর থেকে ঘুমিয়েছে এতক্ষণ। এখন জেগে জেগে ইয়াভকিন আর পূর্ণতার ঘুম উড়াচ্ছে। পূর্ণতা ফোন দু’টো নিতে চাইল, বলল,
–” আম্মু, লক্ষীটি আমার, শুয়ে পড়ো। চলো।”
–” না।” প্রতিভার একরোখা জবাব। ফোন দু’টো পেছনে নিয়ে লুকায় সে।
পূর্ণতা রাগী স্বরে প্রত্যুত্তর দিল,
–” তাহলে এভাবে জেগে থাকবে?”
–” খেলবো।”
–” আল্লাহ! এখন কয়টা বাজে জানিস? বারোটার উপর। এখন খেলবি মানে?”
ইয়াভকিন পাশ থেকে জবাব দেয়,
–” তুমি ওকে সময় বুঝাচ্ছ কেন! আমার মেয়ে এসব বুঝবে?”
–” একশবার বুঝবে।”
–” তুমি ঘুমাও, পূর্ণতা। আমি ওকে দেখে রাখছি।”
–” কতোক্ষন দেখে রাখবেন শুনি? আপনি কি ঘুমাবেন না? কালকে যে অনুষ্ঠান আবার!”
–” তুমি ঘুমাও তো। এত টেনশন করো কেনো?”
বলে প্রতিভাকে কোলে তুলে নেয় ইয়াভকিন। বারান্দায় যেতে উদ্যত হয়। পূর্ণতা শুয়ে পড়ে।
প্রতিভা বাবার বুকে মাথা রেখে এইসেই বলে চলেছে। দু’চোখে বিন্দুমাত্র ঘুমের লেশ নেই। ইয়াভকিন হাই তুলে। বলে,
–” মামনী, একটু ঘুমাও?”
–” আমার ঘুম আসেনা, বাবা।”
ঠোঁট ফুলায় মেয়েটা। ইয়াভকিনের গলা জড়িয়ে বলে,
–” আম্মু।”
পূর্ণতা পাশে এসে দাঁড়ায়। আধ ঘন্টা যাবত বাপ মেয়ের কান্ড সে দেখছিল। ঘুম তো আসছেই না ওর। ইয়াভকিন চমকে পাশ ফিরে বলে,
–” ঘুমাও নি?”
–” বাপ মেয়েকে ছাড়া ঘুম আসেনা আমার। অভ্যাস হয়ে গেছে।”
হাসে ইয়াভকিন। কি মনে করে প্রতিভাও হাসে।
ঘুমোতে ঘুমোতে দেড়টার উপর বাজলো। প্রতিভা ঘুমানোর পরই দু’জনে ঘুমালো। ফলস্বরূপ উঠতে উঠতে বাজলো আটটা। বাইরে তখন হুলুস্থুল কান্ড।
বৌভাতের অনুষ্ঠানটা বাইরে করা হবে। ইয়াদের বন্ধু বান্ধবরা আসবে খানিক পরে। পূর্ণতা উঠে ছুটলো রান্নাঘরে। মেয়েকে খাইয়ে রেখে গেল ইশরাতের কাছে।
দুপুরের আগে ঊর্মিকে সাজিয়ে দিল গেল পার্লারের মেয়েরা। পূর্ণতা সেই ফাঁকে গিয়ে হাজির হলো। ঊর্মি কাঁদো কাঁদো মুখে বলল,
–” তুমি কই থাকো আপু!”
–” কেন? তোর কি খারাপ লাগছে? ইশরাতকে ডেকে দেই?”
ডাকার আগেই হাজির হয় ইশরাত। ঊর্মির পাশে বসে বলে,
–” তোমাকে সঙ্গ দিতে আমি আর প্রতিভা আছিনা, ছোট ভাবি? মন খারাপ করোনা। একটু পর তোমার বাবার বাড়ির সবাই আসবেন।”
পূর্ণতা বেরিয়ে রুমে আসে। আপাতত তার হাতে কাজ একটাই, তৈরি হয়ে প্রতিভাকেও তৈরি করা। রান্নাবান্নার ঝা’মেলা শেষ।
ইয়াভকিন রুমে ঢুকে পরপরই। স্টেজ সাজানো বাইরে। বেশ বড়ো করে অনুষ্ঠান হবে। পূর্ণতা আলমারি হাতড়ে শাড়ি বের করে। কালো রঙের শাড়িটা দেখে ভ্রু কুঁচকায় ইয়াভকিন। বলে,
–” এটা না। মা যেটা দিয়েছে সেটা পড়ো।”
পূর্ণতা সেই জামদানীটা বের করে। মেরুন রঙের জামদানীটা বেশ সুন্দর। ইয়াভকিন কি কাজে আবার বেরিয়ে যায়। সেই ফাঁকে শাড়িটা পড়ে আয়নার সামনে বসে পূর্ণতা। সাজগোজ সে সর্বদাই কম করেছে। আজকেও করতে মন চাইলোনা। চুলগুলো খোঁপা করল খুব সুন্দর করে। মুখে একটু মেকাপ দিল। সেই সময় রুমে আসলো ইয়াভকিন। দরজা ভিড়িয়ে রেখে পাঞ্জাবি পড়ে রেডি হলো সর্বপ্রথম। পূর্ণতার পিছনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করতে করতে দৃষ্টি রাখে পূর্ণতার পানে। বলে,
–” কিসের যেন অভাব!”
–” কিসের?”
–” একটা বেলি ফুলের মালার। খোঁপা গুঁ’জে দিতাম, কিন্তু ইচ্ছেটা মনের মধ্যে মাটিচাপা দিতে হলো।”
পূর্ণতা হাসে। বলে,
–” এত ইচ্ছে?”
–” অনেক।”
.
অনুষ্ঠানটা মিটলো ভালো ভাবে। ফারুক মির্জা আর হেনাও এসেছিলেন। তাদের যাওয়ার সময় পূর্ণতা লুকিয়ে কেঁদেছে। সংসারের চাপে বাড়িতে কম যাওয়া হয়। তবুও হাসিমুখে বিদায় দিয়েছে। তার কান্না করা কেউ খেয়াল না করলেও ইয়াভকিন ঠিকই খেয়াল করেছে। মানুষের মধ্যে পূর্ণতাকে ধ’মকিয়ে বলতে পারেনি, ” কাঁদবেনা আর। তোমার কান্না দেখলে আমার হৃদয় কেমন যেন করে!”
আজ রাতটা প্রতিভা কাজলের নিকটই থাকলো। পূর্ণতা ঊর্মির সাথে সময় কাটিয়ে রুমে আসে। বেশিরভাগ মেহমানই বাড়ি ফিরে গেছেন। অতি আপন আত্মীয় ছাড়া আর কেউ নেই বাড়িতে। বাড়ির বাকি সব লাইট নিভিয়ে রাখা। ঘোর অন্ধকার হাতড়ে রুমে এল পূর্ণতা। রুমটাও অন্ধকার দেখে খানিকটা ঘাবড়ালো। আস্তে আস্তে ডাকলো,
–” ইয়াভকিন?”
ইয়াভকিনের জবাব আসেনা। তবে খট করে বারান্দার দরজাটা খুলে যায়। চাঁদের আলো মুহূর্তে রুমে ঢুকে। ঝলমলে করে তুলে ঘরটাকে। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ক্রমশ বেগ বাড়ছে। পূর্ণতা আকস্মিক এমন কান্ডে ভয় পায়। নিজেকে ধাতস্থ করে বারান্দায় যায়। ইয়াভকিন বসা চেয়ারটায়। এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে পূর্ণ চাঁদটার দিকে। পূর্ণতা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে জিজ্ঞেস করে,
–” আবার ভূতের ভয় দেখাতে চাচ্ছিলেন?”
ইয়াভকিন কিছু বলেনা। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকায়। ভড়কায় পূর্ণতা। এগিয়ে আসে কোমল হাতটা ইয়াভকিনের গালে রেখে শুধায়,
–” আপনার কি মন খারাপ?”
ইয়াভকিন হেসে উঠে। কোলের উপর বসায় পূর্ণতাকে। উল্টো ঘুরিয়ে ঘাড়ে মুখ গুঁজে শুধায়,
–” তুমি থাকতে মন খারাপরা শত চেষ্টায়ও আমায় ছুঁতে পারেনা, পূর্ণতা।”
পূর্ণতা স্থির চিত্তে বসে। বলে,
–” আপনি সত্যিই পা’গ’ল হয়ে গেছেন।”
–” নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ছি প্রতিনিয়ত। সেজন্য পা’গ’ল হয়ে যাচ্ছি পূর্ণতা। বৃষ্টি দিচ্ছে, ভিজি। চলো?”
কি সুন্দর আবদার! পূর্ণতা হাসে। ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,
–” আপনি ভিজবেন?”
–” না ভিজি! বৃষ্টিস্নাত তুমিটা আবার দেখতে চাই। চলো।”
ইয়াভকিন আর কোনো কথাই কানে তুলেনা। হাত চেপে ধরে ছাদে নিয়ে যায় পূর্ণতাকে। দু’জনে দাঁড়ায় ছাদের মাঝখানটায়। আধো আধো আলো আর বৃষ্টি ঠান্ডা ফোঁটায় মোহগ্রস্ত লাগছে সবকিছু। পূর্ণতা একবার চাঁদের দিকে তাকায়। দৃষ্টি সরিয়ে ইয়াভকিনের দিকে তাকিয়ে বলে,
–” আপনায় আমি এত ভালোবাসি কেন, বলুন তো?”
–” ভালোবাসতে কারণ লাগে? আমি তো তোমায় কারণে-অকারণে ভালোবাসছি, ভালোবাসবো, পূর্ণতা।”
পূর্ণতা মুখ থমথমে করে বলে,
–” তাই?”
–” হুহ! সেটা তুমি জানোই। তবে সেই ভালোবাসা পরিমাপ করতে যেওনা, তলিয়ে যাবে।”
ইয়াভকিনের কণ্ঠে মুগ্ধতা ঝরে পড়ল যেন। কপালে কপাল ঠে’কিয়ে সে আবার বলল,
–” আমার জীবনে এসে, আমায় পূর্ণতা দেয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদের বদলে আরো বেশি ভালোবাসা দিলে চলবে?”
–” দৌঁড়াবে। শেষ বয়সে যেন আপনার ভালোবাসা পাই।”
ইয়াভকিন চওড়া হাসে। একটু দূরে সরে বলে,
–” সেই প্রথমবারের প্রেমে পড়ার মতো অনুভূতি হচ্ছে। তোমায় ভীষণ স্নিগ্ধ লাগছে, পূর্ণতা। কাজল লেপ্টানো চোখের মায়ায় পড়ে আমি ধন্য, ধন্য, ধন্য!”
পূর্ণতা অধর গলিয়ে হাসে। লজ্জা মিশ্রিত সেই হাসি!
কপালে বেয়ে বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির ফোঁটা বেয়ে পড়ছে। সময় গড়ায়। অনুভূতিরা আরো গাঢ় হয়। খোলা আকাশের নিচে এক জোড়া কপোত-কপোতী দাঁড়িয়ে বৃষ্টিবিলাশ করছে। দু’জনের নেত্রযুগলে উপচে পড়া মুগ্ধতা, প্রণয় এবং ভালোবাসা।
পূর্ণতা ধীর পায়ে এগিয়ে আসে। পা হালকা উঁচু করে ইয়াভকিনের অধরে প্রথমবারের মতো নিজ থেকে অধর মিলিয়ে দেয়। লজ্জারা আর তাকে আটকাতে পারেনা। ইয়াভকিন পূর্ণতার কোমর আঁ’কড়ে ধরে। গভীর এক চুম্বন শেষে দু’জনে ফের কপালে কপাল, নাকে নাক ঠে’কায়। ইয়াভকিন ফিসফিস করে বলে,
–” বৃষ্টির একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।”
লজ্জিত বধনে কেবল হেসেই যায় পূর্ণতা। নীলিমা সেই অপরুপ চাঁদটাও যেন দু’জনের ভালোবাসা দেখে হিং’সায় মেতে উঠে।
সমাপ্ত।