#ভাগ্যলিপি(৬)
#মায়মুনা_সালসাবিল
বিয়ের পর আজ শ্বশুরবাড়িতে দ্বিতীয় রাত কাটালাম। শাশুড়ি আমার দরজা খুলে বের হলেও আমার সঙ্গে তো কথা বললেনই না, ছেলের সাথেও একটি শব্দ বললেন না। তুরাব এমনিতেই রাগী মানুষ, তবুও আমি তাকে বুঝিয়ে বললাম— আরেকদিন থাকি,প্লিজ।তুরাব আমার কথা শুনলো।
শ্বশুর কিছুটা স্বাভাবিক ছিলেন। আমি সালাম দিয়ে তার শরীর-স্বাস্থ্যের খবর নিলাম, তিনি হাসিমুখে উত্তর দিলেন। তার জন্য আমি একটি পাঞ্জাবি আর একটি লুঙ্গি এনেছিলাম, সেটি তার হাতে দিলাম।
আমি যে জব করছি তা শুনে তিনি ভীষণ খুশি হলেন। আমাকে অনুপ্রাণিত করে বললেন,
“শিক্ষকতার পেশা যখন বেছেই নিয়েছো, তখন আরও ভালো জায়গায় চেষ্টা করছো না কেন? এবার সার্কুলার বের হলে প্রাইমারি, নিবন্ধন কিংবা অন্য ভালো গ্রেডের চাকরিগুলোতেও পরীক্ষা দিও।”
শ্বশুরের কথা শুনে আমার খুব ভালো লাগল। হ্যাঁ, ঠিকই তো—আমি তো অন্য জবের জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করতে পারি, কারণ আমার জব করতে সত্যিই খুব ভালো লাগছে।
দুপুর বেলা খাবারের টেবিলে আমার শাশুড়ি তুরাবের সব পছন্দের খাবার রান্না করেছিলেন। এতে বোঝা যাচ্ছিল, তিনি খুশি হয়েছেন যে তার ছেলে এই বাড়িতে এসেছে। শুধু অভিমানের জন্য কথা বলছেন না। অনেক দিন পর মায়ের হাতে তার পছন্দের খাবার খেয়ে তুরাব ভীষণ খুশি হলো। মন ভরে আনন্দে, আজ সে একটু বেশিই খেয়ে ফেলল।
আমি শুনেছি, শাশুড়ি মা ভীষণ জেদি স্বভাবের মানুষ। তাকে সহজে বোঝানো যায় না। তবুও মনকে শক্ত করে আবারও গেলাম তার ঘরে। আমার একটাই ইচ্ছে—মা-ছেলের সম্পর্ক যেন আগের মতোই অটুট থাকে।
কিন্তু তিনি যেন আমাকে সহ্যই করতে পারেন না। ডিভোর্সি হওয়াটা তার কাছে একধরনের কলঙ্ক—যা তার ছেলের বউয়ের পরিচয়ে তিনি লজ্জা পান। তবুও সব অভিমান গিলে বললাম,
“মা… আপনার ছেলে আপনাকে খুব মিস করছে। জানেন তো, আপনার মতো ওরও জিদ প্রচণ্ড। তবুও কত আশা নিয়ে দেখতে এসেছিল আপনাকে! অথচ আপনি একবারও তার সঙ্গে কথা বললেন না। আমার সঙ্গে কথা না বললেও চলবে, কিন্তু নিজের ছেলের সঙ্গে অন্তত দুটো কথা বলুন।”
শাশুড়ী তখন উচ্চস্বরে বলে উঠলেন,
“তোমার জন্যই তো আজ আমার ছেলে দূরে চলে গিয়েছে! শুধু তোমার কারণে আজ মা-ছেলের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। এক সংসার শেষ করে এসে আবার আমার সংসার শেষ করতে এসেছো।আমার ছেলের পিছু ছেড়ে দিলেই কথা বলবো তার সাথে।
শাশুড়ীর কথাগুলো শুনে আমি কেঁদে ফেললাম। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। তবুও নিজেকে সামলিয়ে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বললাম,
“আমি কি করেছি, মা? আমি তো জোর করে আপনার ছেলেকে বিয়ে করি নি। আপনাদের ফ্যামিলি আর আমার ফ্যামিলি—দুই পরিবারের সম্মিলনে তো বিয়ে হয়েছে। আপনার যখন এই বিয়েতে মত ছিল না, তাহলে কেন রাজি হয়েছিলেন? বিয়ের দিনই বলে দিতে পারতেন,তাহলেই তো আমার বাবা মা এই বিয়েটা আর দিতেন না।”
আমার শাশুড়ী সঙ্গে সঙ্গে চেঁচিয়ে বললেন,
“আমার ছেলের মাথা পাগল করে এখন সতী নারী সাজছো? স্বামী থাকাকালীন আমার ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েই তো আগের স্বামীকে ছেড়েছো, ভেবেছো কেউ কিছু বুঝবে না? তোমাদের মতো মেয়েদের আমি ভালো করেই চিনি।”
তুরাব দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। সব শুনে সে নিজের রাগ আর কন্ট্রোল করতে পারল না। আমার হাত ধরে টেনে বলল,
“ঊষা, চলো। আর কখনোই তোমাকে এই বাড়িতে আনবো না। আমার আগেই বুঝা উচিত ছিল—আমার মা শোধরানোর মানুষ নয়। এই বাড়িতে এলে তোমাকে বার বার এভাবে অপমানিত হতে হবে।”
আমি তুরাবের হাত থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে বললাম,
“প্লিজ, তুরাব, শান্ত হও। মা গুরুজন, উনি কথা শুনাবেন—এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। প্লিজ রাগ করো না ওনার কথায়। মাথা ঠান্ডা করে মাকে বোঝাও। ভালোভাবে বোঝালেই উনি বুঝবেন।”
তুরাব তখন উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে বলল,
“ঊষা, আমাকে রাগিও না। উনি মা হয়েছেন দেখে কি যেটা ঠিক নয় সেটাও বলবেন তোমার নামে? আমি তো জানি, তোমার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল কি না। তারপরও মা তোমার নামে কিভাবে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন? আমার কিন্তু গা জ্বলে যায় এসব মিথ্যা কথা শুনলে।”
আমার শাশুড়ী হঠাৎ কেঁদে উঠলেন। চিৎকার করে বললেন,
“জীবনে কি পাপ করেছিলাম, এমন ছেলে জন্ম দিয়ে? যদি জানতাম ছেলে আমার এতো বউ ভাউরা হবে তাহলে তারে দুনিয়াতেই আসতে দিতাম না।আরেকজনের বউ বিয়ে করে যেভাবে মাথায় তুলে নাচতেছিস একদিন দেখিস, এই বউয়ের কারণে তোর জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে।”
“তুই বের হয়ে যা, তুরাব!দয়া করে বের হয়ে যা,খবরদার, আমার চোখের সামনে আর কোনোদিন আসবি না। আমি মরে গেলেও না। তোর কাছে এখন বউই সব, যা তুই।”
আমার শশুর এবার এগিয়ে এসে বললেন,
“তুরাবের মা, কি শুরু করলে বলো তো? ঊষা কি এমন ক্ষতি করেছে যে তাকে সহ্য করতেই পারছ না? মানুষের জীবনে কি দুর্ঘটনা ঘটে না? তাই বলে কি বার বার তাকে সেটা মনে করিয়ে দিতে হবে? মেয়েটা কত কষ্ট পাচ্ছে তোমার এসব আজেবাজে বকবকানি শুনে—একবার ভেবে দেখেছিলে?”
তুরাবের মা তবুও বদলালেন না। বরং এবার আরও কষ্টের মতো কথা ছুঁড়ে দিলেন আমার দিকে—
“দুনিয়ায় কি মেয়ের অভাব ছিল নাকি? এর মতো সুন্দরী আর সে কি পেতো না? দুনিয়ায় এমন রূপবতী কেউ নাই নাকি? রাশিকে বিয়ে করলে এমন কী ক্ষতি ছিল? কোন দিক দিয়ে সে কম ছিল? অবিবাহিত, সুন্দরী, শিক্ষিত মেয়ে—তারপরও বিয়ে করলো না তাকে। আমি তো আমার বোনকে কথা দিয়েছিলাম, সেই কথা রাখতে পারলাম না। এখন উল্টো আমি নিজেই লজ্জায় ঘরের বাইরে বের হতে পারি না। সবার মুখে মুখে একটাই কথা—তুরাব পরকীয়া করে বিয়ে করেছে। তা না হলে, ডিভোর্স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো মেয়ে কি আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসে? ছি: ছি:… কত লজ্জাজনক!”
রাশি তুরাবের খালাতো বোন। শাশুড়ির অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল, তুরাব যেন তাকে বিয়ে করে ঘরে আনে। কিন্তু তুরাব কেন রাশিকে বিয়ে করলো না? কেন তার বদলে আমাকে বেছে নিলো?—এই প্রশ্নটাই যেন তাকে পুড়িয়ে খাচ্ছে।
হয়তো এ কারণেই তিনি আমাকে চোখে চোখেই সহ্য করতে পারেন না। নিজের বোনের মেয়েকে পুত্রবধূ করে না আনতে পারার অভিমান, রাগ, আর অপুর্ণ ইচ্ছা—সব মিলিয়ে আমার প্রতি তার আচরণ আরও তিক্ত হয়ে উঠেছে। আর আমি, বলদ-সুলভ জেদে, বারবার চেষ্টা করছি তাকে বোঝাতে—মা-ছেলের সম্পর্কটা যেন ভেঙে না যায়। কিন্তু তিনি যেন কারো কথা শুনে চলার মানুষ ই নন।
মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শোনার পর তুরাব একটিও শব্দ উচ্চারণ করলো না। শুধু হঠাৎ এক ঝটকায় আমার হাত ধরে রুমের বাইরে টেনে বের করে আনলো। তার চোখে তখন এমন এক কঠিন দৃষ্টি—যেন ভেতরে জমে থাকা ঝড় আর অপমান একসঙ্গে জ্বলছে।
কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা রাস্তায় এসে থামলো। আমার হাত এমনভাবে চেপে ধরেছিল যে আমি একটুও নড়তে পারছিলাম না। সিএনজি থামিয়ে সে আমাকে ভেতরে উঠিয়ে দিল, তারপর নিজেও উঠে বসল।
তুরাবের পরিচিত ড্রাইভার এজন্য কোনো প্রশ্ন ছাড়াই গাড়ি স্টার্ট দিল। পুরো রাস্তা তুরাব একবারের জন্যও আমার হাত ছাড়েনি—চোখও একবারও আমার দিকে ওঠেনি। কেবল তার চোয়াল শক্ত হয়ে ছিল, যেন ভেতরে আগুন জ্বলছে। তার সেই নীরবতা, সেই অটল চেপে ধরা হাত—আমাকে বলে দিচ্ছিল, সে ভীষণ রাগান্বিত।
তুরাবের এমন রাগান্বিত লুক দেখে বুঝতে পারলাম—আমাকে কেউ অপমান করলে সে ঠিক থাকতে পারে না। আমার অপমান তাকে অনেক বেশি ব্যথিত করে। জানি না জীবনে কি সওয়াব করেছি, যার জন্য আমার রক্ষার জন্য ঢাল হিসেবে এমন একজনকে দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা।আমার প্রতি তুরাবের এই ভালোবাসা কত দিন থাকবে জানি না, তারপরও আমি নির্দ্বিধায় আজীবন বলব—এরকমভাবে কেউ আমাকে কখনো ভালোবাসেনি।
দুই টোনাটুনির সংসার বেশ ভালোই চলছিল আমাদের। দেখতে দেখতে বিয়ের এক বছর কেটে গেল। এর মধ্যে আর কখনোই শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হয়নি আমার। তবে তুরাব মাঝেমধ্যে আমাকে বাপের বাড়ি নিয়ে যেতো। যেহেতু আমরা দুজনেই চাকরি করি, বেশিদিন থাকা হতো না কোথাও।
এই সময়ে আমি নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলাম। শ্বশুরের অনুপ্রেরণায় ভালো একটি সরকারি চাকরির আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তুরাব অবশ্য রাত জেগে পড়তে দিতো না—বলতো, শরীর খারাপ হয়ে যাবে। তবুও, সে ঘুমিয়ে পড়লে আমি চুপিচুপি টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়া শুরু করতাম। মাঝেমধ্যে সে টের পেলে হেসে বা রাগ করে আমাকে টেনে নিয়ে যেত বিছানায়। আর যেদিন টের পেত না, সেদিন টানা কয়েক ঘণ্টা পড়াশোনা চলতো নিরবচ্ছিন্নভাবে।
হঠাৎ একদিন শ্বশুরমশাই চলে এলেন আমাদের বাড়িতে। আমরা তখন দু’জনেই বাইরে, তাই তিনি তুরাবকে ফোন করেছিলেন। খবর শোনামাত্র তুরাব আমাকে কল দিয়ে বলল—
“বাবা এসেছে, তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরো।”
আমি তৎক্ষণাৎ স্কুলের পরিচালককে বলে ছুটি নিলাম। বাসায় ফিরতে ফিরতে মনে হচ্ছিল, কতদিন পর শ্বশুরমশাইকে দেখবো! ঘরে ঢুকেই তাঁকে সালাম জানালাম, তারপর সস্নেহে রুমের ভেতরে নিয়ে গেলাম।
তিনি জানালেন, বেশি দেরি করতে পারবেন না। আসলে তিনি এসেছেন রিয়ার বিয়ের নিমন্ত্রণ জানাতে। আমি অনেক অনুরোধ করলাম তুরাব আসা পর্যন্ত থাকতে, কিন্তু তিনি রাজি হলেন না। শুধু বললেন—
“হঠাৎ করেই রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছে। ছেলে সরকারি চাকরি করে, বংশও ভালো। তাই দেরি করিনি আমরা। তুরাবকে নিয়ে তুমি এসো বিয়েতে।”
এই বলে তিনি বেরিয়ে গেলেন।
এদিকে তুরাব বাসায় ফেরার পথে, বাপকে দেখার আনন্দে মন ভরে উঠেছিল তার। কিন্তু তুরাব পৌঁছানোর আগেই শ্বশুরমশাই চলে গেলেন।
তুরাব এজন্য ভীষণ কষ্ট পেলো। আমি রিয়ার বিয়ের কার্ড হাতে দিয়ে বললাম,
“রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তোমাকে আর আমাকে যেতে বলেছে।”
তুরাব চুপচাপ কার্ডটা হাতে নিলো। কিছু না বলে, হঠাৎ সেটাকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেললো। তারপর সোজা অফিসের দিকে চলে গেল।
সেদিন রাতে তুরাব বাসায় ফিরলে আমি আর এ নিয়ে কোনো কথা তুললাম না। কিন্তু রিয়ার বিয়ের আগের দিন সাহস সঞ্চয় করে জিজ্ঞেস করলাম—
“আগামীকাল তো তোমার বোনের বিয়ে… যাবে না তুমি?”
তুরাব একটু থেমে, নিচু গলায় বললো—
“ও বাড়ির কেউ চায় না আমরা বিয়েতে যাই। সেদিন শুধু ভাই বলে জানাতে এসেছিলো। যদি তারা চাইতো, অন্তত আমাকে ফোন করে বলতো—‘রিয়ার বিয়ের কথা হচ্ছে’… বা ‘আমরা রিয়াকে বিয়ে দিতে চাচ্ছি।’ আমার কি কোনো অধিকার ছিল না, জানতে বোনের কার সাথে বিয়ে হচ্ছে, কেমন পরিবারে যাচ্ছে সে?”
তুরাবের চোখ তখন ছলছল করছিলো। সেই ভেজা চোখে ছিল রাগ, অভিমান আর একরাশ অবহেলার কষ্ট—যা আমি কোনো সান্ত্বনার শব্দ দিয়েও মুছে দিতে পারছিলাম না।
তুরাবের কান্নাভেজা চোখ দেখে আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। ধীরে ধীরে বললাম,
“তোমার যাওয়া উচিত বিয়েতে, তুরাব। প্লিজ, আমার এই অনুরোধটা রাখো। না গেলে তোমার বোন কষ্ট পাবে… আর তোমারও ভালো লাগবে না পরে।”
তুরাব নিঃশব্দে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর গলা শক্ত করে বললো—
“না… আমি যাবো না।”
এই বলে সে আলতোভাবে আমাকে সরিয়ে দিলো। তারপর কোনো কথা না বলে, সোজা বাইরে বেরিয়ে গেল। দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দটা যেন আমার বুকের ভেতরেও ধাক্কা দিলো।
সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, হঠাৎ একদিন তুরাব জানালো—অফিসের কাজে তাকে কয়েকদিনের জন্য বাইরে যেতে হবে। খবরটা শুনেই বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো। বিয়ের পর একদিনও তাকে ছাড়া থাকিনি আমি। কিভাবে যে এই কয়েকটা দিন কাটাবো, ভাবতেই গলা শুকিয়ে এলো।
আমি যেন চিন্তায় ডুবে যাচ্ছি, তুরাব আমার মা-বাবাকে ফোন করে বললো,
“আমি না থাকলে ও যেন একা না থাকে, আপনারা এসে কিছুদিন থাকবেন।”
সে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু আমি বারবার খুঁজছিলাম তার মুখ—তার চোখে মুখে অনেক কষ্ট লুকায়িত অথচ সে এমনভাবে আচরণ করছিল, যেন সব স্বাভাবিক। শুধু যাওয়ার সময়, নিচু চোখে আমার হাত ধরে বললো—
“সাবধানে থেকো… আর নিজের যত্ন নিও।”
তার হাত যখন আস্তে করে আমার হাত থেকে সরে গেল, মনে হলো কলিজাটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে। বুকের ভেতরে তখন একটাই প্রশ্ন ধকধক করছে—না গেলে হয় না তুরাব?
চলবে…..